04-04-2022, 12:52 PM
(This post was last modified: 21-04-2022, 01:14 AM by nextpage. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
পর্ব-এক
বাস চলতে শুরু করেছে জেলা শহরের দিকে।
গত ১৫/১৬ বছরে কত কি পাল্টে গেছে। রাস্তা-ঘাট, যানবাহন, পরিবেশ তার সাথে যেটা সবচেয়ে বেশি বদলে গেছে সেটা মানুষ। মানুষ আর এখন মানুষ নেই কেমন যন্ত্রের মত হয়ে গেছে। বাস ছুটে চলছে, তখন ৫ টাকা ভাড়া ছিল সেটা এখন ৩০ শে ঠেকেছে। সুযোগের সদ্ব্যবহারে সেটা প্রায়ই ৫০/৬০ টাকাও হয়ে যায়। তাতে কি আসা যায়, মানুষের হাতে এখন টাকা এসেছে, সময় কমেছে। যে যার মত করে ছুটছে। জীবনের তাগিদে, জীবিকার চাপে।
গত ১৫/১৬ বছরে কত কি পাল্টে গেছে। রাস্তা-ঘাট, যানবাহন, পরিবেশ তার সাথে যেটা সবচেয়ে বেশি বদলে গেছে সেটা মানুষ। মানুষ আর এখন মানুষ নেই কেমন যন্ত্রের মত হয়ে গেছে। বাস ছুটে চলছে, তখন ৫ টাকা ভাড়া ছিল সেটা এখন ৩০ শে ঠেকেছে। সুযোগের সদ্ব্যবহারে সেটা প্রায়ই ৫০/৬০ টাকাও হয়ে যায়। তাতে কি আসা যায়, মানুষের হাতে এখন টাকা এসেছে, সময় কমেছে। যে যার মত করে ছুটছে। জীবনের তাগিদে, জীবিকার চাপে।
পাশে বসা মেয়েটির ডাকে হঠাৎ চিন্তায় ছেদ পড়েছে নিলয়ের। ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি লম্বা স্বাস্থ্যবান, মাথায় পাতলা চুল, চোখের নিচে হালকা কালো দাগ আর রোদে পোড়ে গায়ের রঙ শ্যামলা হয়ে যাওয়া নিলয়।
-দাদা বাচ্চাটাকে একটু ধরবেন। ওর ডায়পার টা চেঞ্জ করতাম।
সম্মতিসূচক মাথা দুলিয়ে বাচ্চাটাকে কোলে তোলে নেয়। বাচ্চাদের প্রতি অসম্ভব দূর্বলতা কাজ করে ওর। বাচ্চারা ঈশ্বরের অংশ, কিন্তু বড় হতে থাকে আর আসুরিক শক্তির প্রভাবে পড়ে যায়। বাচ্চাটার মুখের হাসিটা ওর মুখেও চিলতে হাসির কারণ হয়ে যায়। ইশ কত্ত মায়াবী মুখটা। গোল গোল চোখ, সূচালো নাক, দাঁত না উঠা লালচে মাড়ি বের করা হাসি। দেবতার হাসি, আবার দেবীও হতে পারে। বাচ্চাটার মুখটা দেখে আরও একজনের মুখাবয়ব টা মনে পড়ে যায়, হাসিটার দুরন্ত মিল। একইরকম মায়াভরা সেই মুখ, যেন মুক্ত ঝরে পড়ে। ডায়পার চেঞ্জ শেষে বাচ্চাটি আবার তার মায়ের কোলে ফিরে গেছে।
জানালার দিকে মাথাটা হালকা বের করে দিয়ে আবার পুরনো স্মৃতি পুকুরে পড়তে চলেছে সে।
নিলয় অনার্স পাশ করে একটা প্রাইভেট বেভারেজ কোম্পানির সেলস এ কাজ করছে। অনেকদিন হলো মা- বাবা পরপারে চলে গেছেন। গ্রামের বাড়িটা ফাঁকাই থাকে। এখানে সে নিজেও থাকে না। শহরের ৪ তলা বাড়ির ছাদঘরে ওর ঠিকানা৷ এই খরুচে শহরে সস্তায় থাকতে গেলে এ ছাড়া আর উপায় কি। সে সহ দুটো মানুষের খরচ ওকেই দেখতে হয়। দুর্মূল্যের বাজারে এখন টেকা দায়। এই সেলসের টাকায় টানাটানি হয়ে যায়। ওর একার হলে দিব্যি চলে যেত। কিন্তু ঘরে আরেকটা প্রাণ যে আছে। নিজের খরচের চেয়ে ওই প্রাণটার পিছনেই ব্যয় সবচেয়ে বেশি। না সে ব্যয়ে ওর বিন্দুমাত্র আফসোস নেই, বরং এটা করতে পেরে ওর একটু হলেও শান্তি আসে মনে। ঐ দেবতাতুল্য মানুষটা ওর জন্য যা করেছে সেটাই আজকাল নিজ রক্তের কজন করে।
নিলয় অনার্স পাশ করে একটা প্রাইভেট বেভারেজ কোম্পানির সেলস এ কাজ করছে। অনেকদিন হলো মা- বাবা পরপারে চলে গেছেন। গ্রামের বাড়িটা ফাঁকাই থাকে। এখানে সে নিজেও থাকে না। শহরের ৪ তলা বাড়ির ছাদঘরে ওর ঠিকানা৷ এই খরুচে শহরে সস্তায় থাকতে গেলে এ ছাড়া আর উপায় কি। সে সহ দুটো মানুষের খরচ ওকেই দেখতে হয়। দুর্মূল্যের বাজারে এখন টেকা দায়। এই সেলসের টাকায় টানাটানি হয়ে যায়। ওর একার হলে দিব্যি চলে যেত। কিন্তু ঘরে আরেকটা প্রাণ যে আছে। নিজের খরচের চেয়ে ওই প্রাণটার পিছনেই ব্যয় সবচেয়ে বেশি। না সে ব্যয়ে ওর বিন্দুমাত্র আফসোস নেই, বরং এটা করতে পেরে ওর একটু হলেও শান্তি আসে মনে। ঐ দেবতাতুল্য মানুষটা ওর জন্য যা করেছে সেটাই আজকাল নিজ রক্তের কজন করে।
-নীইইইইইলু
চিৎকার শোনেই নিজের মাথাটা গাড়ির ভিতরে নিয়ে আসে, আর তখনি সাই করে আরেকটা গাড়ি ওদের বাসের একদম পাশ কেটে চলে যায়। ভাগ্যিস মাথা টা ভিতরে নিয়ে এসেছিল। কিন্তু পরক্ষণেই চিন্তা করে ডাকটা দিলো কে। আশেপাশে চেয়ে দেখলো না কেউ তো নেই যে ওকে এই নামে ডাকে। নীলু নামে তো আমাকে ঐ একজনই ডাকতো। কিন্তু কই সে তো এখানে নেই, থাকার কথাও না। কপালে ভাঁচ পরার চিহ্ন স্পষ্ট। বারবার ও আমাকে ঠিকই বিপদ থেকে বাঁচিয়ে দেয়। কিন্তু আমি, আমি কি করেছি...
হাত বাড়িয়ে ছুঁই না তোকে, মন বাড়িয়ে ছুঁই।
দুইকে আমি এক করি না, এক কে করি দুই।।