27-03-2022, 12:12 PM
সৈকত অধিরাজ হয়ে উঠে দাঁড়িয়ে বললো " জজ সাহেব আমার বন্ধু উকিলের কোনো কথাতেই প্রমান হয় না আসামি রিয়াজ সাহেব কে খুন করেন নি ! ওনার কথা মতো দ্বিতীয় ব্যক্তি কে কোর্টে হাজির হওয়ার অনুরোধ জানানো হোক । "
জজ টুকে নিলেন প্ৰায়োজনীয় তথ্য ।
দি কোর্ট ইশ এডযৌর্নড ফর টুডে । সৈকত বাবু নেক্সট হিয়ারিং এ আমি চাই আপনি আপনার সাক্ষী আর তথ্য পেশ করবেন । পুলিশ ডিপার্টমেন্ট কে আমি অনুরোধ করছি ঘটনার স্বচ্ছতা আর নিরপেক্ষতা বিচার করে সঠিক সাক্ষ্য আদালতে পেশ করুক । মদন খুঁজে বার করার ব্যাপারে আরতি দেবী কে পুলিশ সর্বত ভাবে সাহায্য করবে কোর্ট এই আশা রাখে । এই কেসের তৃতীয় উইটনেস , নিখোঁজ মেয়েটি । পুলিশের উচিত দ্বিতীয় মেয়েটিকে খুঁজে বার করা আর সঠিক ভাবে আদালতে পেশ করা । যেহেতু অপরাধের গুরুত্ব অনেক গভীর , তাই আসামি কবিতা দেবী ওরফে বিশাখা দেবী কে কোর্ট নিরাপত্তার কারণে কোনো সরকারি নারী আশ্রয় কেন্দ্রে রাখতে পারে না । যতদিন না ঘটনার সত্যতা যাচাই হয় ততদিন বিশাখা দেবী কে পুলিশ কাস্টডি তে রাখবার হুকুম দেয়া হলো । নেক্সট হিয়ারিং ফেব্রুয়ারী মাসের 18 তারিখে ।
পুলিশ বিসি কে ভ্যানে তোলার আগে কয়েক পা বিসির সাথে সাথে হাঁটলেন । বিসি তুই কিন্তু ধৈর্য হারাবি না , আমি তোর সাথে আছি আর আমি কালই জেলে তোর সাথে দেখা করবো । টু কিছু ভাবিস না বুঝলি ! বাধ্য মেয়ের মতো মাথা নাড়ে বিসি !লোকের কৌতূহলের শেষ নেই । বাইরে নিয়ে আসতেই কালো সালে মুড়ে ফেলা হলো বিসি কে আর দুজন মহিলা বিসি কে জড়িয়ে ধরলেন যাতে কেউ দেখতে না পারে । আর তার পরই বৃত্তের মতো জানা দশ বারো পুলিশ লাঠিয়ে উঁচিয়ে উঁচিয়ে জায়গা দিতে দিতে পুলিশ ভ্যানে তুললো বিসি কে । খুব একা হয়ে গেলো বিসি কয়েক মুহূর্তে । যে এখন এক বিশেষ প্রাণী , তার আর স্বাধীনতা নেই শ্বাস নেবার , খাবার , গান গাইবার , বা নিদেন পক্ষ্যে দূর্গা বাড়ির সেই জানলায় দাঁড়িয়ে একটা সন্ধ্যে দেখবার । বেনুর কথা ভেবে খালি হয়ে যায় মনটা । ওর উপর অত্যাচার কম হয় নি , নাহলে এভাবে মিথ্যে কথা বলতে পারে কেউ । হয়তো মিচুর উপর অত্যাচার করেই বেনু কে কোর্টে তুলেছে শ্যামলের লোক জন ।
বিসি মনে মনে ভাবে না জানি জেল কেমন । এই প্রথম সে মহিলা সংশোধনাগারে ঢুকছে । শহরের একদম শেষ প্রান্তে জেল , আর তা পুরুষদের জেলের পাশা পাশি । তবে পুরুষ আর মেয়েদের কম্পাউন্ড-এ কেউ কাউকে দেখবার সুযোগ পর্যন্ত নেই । বড়ো উঁচু পাঁচিল ঘেরা তাতে উঁচু অনেক উঁচু কাটা তারের বেড়া । তও দশফুট তো হবেই । বড়ো গেট পেরিয়ে গাড়ি ঢুকলো একটা ফাঁকা জায়গায় কিন্তু চারি দিকেই দেয়াল । আর দেয়ালের শেষে মেশিন দেয়া গেট ব ব করে সাইরেনের আওয়াজ হলো , গেত খুলে গেলো । সেখানে এক সান্ত্রী দাঁড়িয়ে মান্ধাতা আমলের গাদা বন্দুক নিয়ে । কাঠের হাতলটা আবার একটু ভাঙা । এক হাতে লাঠিও আছে । সেটাকে কঞ্চি বলাই ভালো । তার ঘেরা ভ্যানের থেকে একজন টুপি পড়া পুলিশ কোর্টের কাগজ ধরিয়ে দিলো ।
কাগজ নিয়ে সে অফিসে গিয়ে কার সঙ্গে কথা বললো ফোনে । বিসি দেখলো ত্রিয়ো বড়ো গেট টাও খুলে গেলো ঘর ঘর করে । দ্বিতীয় গেট থেকে তৃবিয়ো গেটের রাস্তা খোলা আকাশে দু দিকে দেব দারু গাছ লাগানো । পাঁচিল যত উঁচু তাতে মানুষ কেন জিরাফ ও গলা উঁচু করে দেখতে পাবে না । সম্ভবত এর বাইরেও আরেকটা উঁচু দেওয়াল আছে । দেয়ালের গায়ে লোহার খাম্বা বসিয়ে স্টিলের ফলা ফলা দেওয়া পাত লাগলো । যদিও কেউ পাঁচিল -এ উঠেও যায় , তার পা চিরে দু ভাগ হয়ে যাবে ইস্পাতের ধার লেগে ।
ওই দরজার সামনেই কলাপ্সিবল গেট আর দুতলা বড়ো অফিস যেখানে অনেক মেয়েই খয়েরি শাড়ী পরে কাজ করছে , সবাই মেয়ে পুলিশ , আর জানা চারেক মেয়ে পুলিশের উর্দি পরে আড় গোড় ভাঙছে । পুলিশভ্যান দেখে কৌতূহলে এগিয়ে আসলো । বিসির সাথে বসে থাকা মহিলা কনস্টেবল বিসি কে না গাড়ি থেকে নামিয়ে , ঘেরা গাড়ির দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে দিলেন । আড় মহিলা উর্দিপরা পুলিশ গুলো বাইরে দাঁড়িয়ে রইলো । ওদের কোমরে রিভালবার সাজানো রয়েছে মাথায় পুলিশের টুপি , আড় টুপিতে লাল পালক ফুর ফুর করে উড়ছে । এক জন মাঝবয়েসী ভারী গোছের মহিলা , চলাফেরা তার ছেলেদেরই মতো চশমা পড়া বেরিয়ে এসে দেখে গেলেন বিসি কে ।
আড় অল্প বয়েসী আরেকটি মহিলা ইশারা করলেন দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ গুলো কে বিসি কে ভিতরে নিয়ে আসতে । এটাই বন্দি গৃহের কার্যালয় ।
সম্ভবত চশমা পড়া মহিলাই জেলার হবেন । বিসির হাতের হাত করা খুলে দেয়া হলো । পুলিশের ভ্যান বেরিয়ে গেলো । আর দরজা বন্ধ হয়ে গেলো চিরতরে । এর নাম জেল । নতুন সমাজ নতুন জীবন । আবার মানিয়ে নিয়ে চলা , নতুন আইন , নতুন বন্ধ হওয়া এর নামইতো জীবন ।
জজ টুকে নিলেন প্ৰায়োজনীয় তথ্য ।
দি কোর্ট ইশ এডযৌর্নড ফর টুডে । সৈকত বাবু নেক্সট হিয়ারিং এ আমি চাই আপনি আপনার সাক্ষী আর তথ্য পেশ করবেন । পুলিশ ডিপার্টমেন্ট কে আমি অনুরোধ করছি ঘটনার স্বচ্ছতা আর নিরপেক্ষতা বিচার করে সঠিক সাক্ষ্য আদালতে পেশ করুক । মদন খুঁজে বার করার ব্যাপারে আরতি দেবী কে পুলিশ সর্বত ভাবে সাহায্য করবে কোর্ট এই আশা রাখে । এই কেসের তৃতীয় উইটনেস , নিখোঁজ মেয়েটি । পুলিশের উচিত দ্বিতীয় মেয়েটিকে খুঁজে বার করা আর সঠিক ভাবে আদালতে পেশ করা । যেহেতু অপরাধের গুরুত্ব অনেক গভীর , তাই আসামি কবিতা দেবী ওরফে বিশাখা দেবী কে কোর্ট নিরাপত্তার কারণে কোনো সরকারি নারী আশ্রয় কেন্দ্রে রাখতে পারে না । যতদিন না ঘটনার সত্যতা যাচাই হয় ততদিন বিশাখা দেবী কে পুলিশ কাস্টডি তে রাখবার হুকুম দেয়া হলো । নেক্সট হিয়ারিং ফেব্রুয়ারী মাসের 18 তারিখে ।
পুলিশ বিসি কে ভ্যানে তোলার আগে কয়েক পা বিসির সাথে সাথে হাঁটলেন । বিসি তুই কিন্তু ধৈর্য হারাবি না , আমি তোর সাথে আছি আর আমি কালই জেলে তোর সাথে দেখা করবো । টু কিছু ভাবিস না বুঝলি ! বাধ্য মেয়ের মতো মাথা নাড়ে বিসি !লোকের কৌতূহলের শেষ নেই । বাইরে নিয়ে আসতেই কালো সালে মুড়ে ফেলা হলো বিসি কে আর দুজন মহিলা বিসি কে জড়িয়ে ধরলেন যাতে কেউ দেখতে না পারে । আর তার পরই বৃত্তের মতো জানা দশ বারো পুলিশ লাঠিয়ে উঁচিয়ে উঁচিয়ে জায়গা দিতে দিতে পুলিশ ভ্যানে তুললো বিসি কে । খুব একা হয়ে গেলো বিসি কয়েক মুহূর্তে । যে এখন এক বিশেষ প্রাণী , তার আর স্বাধীনতা নেই শ্বাস নেবার , খাবার , গান গাইবার , বা নিদেন পক্ষ্যে দূর্গা বাড়ির সেই জানলায় দাঁড়িয়ে একটা সন্ধ্যে দেখবার । বেনুর কথা ভেবে খালি হয়ে যায় মনটা । ওর উপর অত্যাচার কম হয় নি , নাহলে এভাবে মিথ্যে কথা বলতে পারে কেউ । হয়তো মিচুর উপর অত্যাচার করেই বেনু কে কোর্টে তুলেছে শ্যামলের লোক জন ।
বিসি মনে মনে ভাবে না জানি জেল কেমন । এই প্রথম সে মহিলা সংশোধনাগারে ঢুকছে । শহরের একদম শেষ প্রান্তে জেল , আর তা পুরুষদের জেলের পাশা পাশি । তবে পুরুষ আর মেয়েদের কম্পাউন্ড-এ কেউ কাউকে দেখবার সুযোগ পর্যন্ত নেই । বড়ো উঁচু পাঁচিল ঘেরা তাতে উঁচু অনেক উঁচু কাটা তারের বেড়া । তও দশফুট তো হবেই । বড়ো গেট পেরিয়ে গাড়ি ঢুকলো একটা ফাঁকা জায়গায় কিন্তু চারি দিকেই দেয়াল । আর দেয়ালের শেষে মেশিন দেয়া গেট ব ব করে সাইরেনের আওয়াজ হলো , গেত খুলে গেলো । সেখানে এক সান্ত্রী দাঁড়িয়ে মান্ধাতা আমলের গাদা বন্দুক নিয়ে । কাঠের হাতলটা আবার একটু ভাঙা । এক হাতে লাঠিও আছে । সেটাকে কঞ্চি বলাই ভালো । তার ঘেরা ভ্যানের থেকে একজন টুপি পড়া পুলিশ কোর্টের কাগজ ধরিয়ে দিলো ।
কাগজ নিয়ে সে অফিসে গিয়ে কার সঙ্গে কথা বললো ফোনে । বিসি দেখলো ত্রিয়ো বড়ো গেট টাও খুলে গেলো ঘর ঘর করে । দ্বিতীয় গেট থেকে তৃবিয়ো গেটের রাস্তা খোলা আকাশে দু দিকে দেব দারু গাছ লাগানো । পাঁচিল যত উঁচু তাতে মানুষ কেন জিরাফ ও গলা উঁচু করে দেখতে পাবে না । সম্ভবত এর বাইরেও আরেকটা উঁচু দেওয়াল আছে । দেয়ালের গায়ে লোহার খাম্বা বসিয়ে স্টিলের ফলা ফলা দেওয়া পাত লাগলো । যদিও কেউ পাঁচিল -এ উঠেও যায় , তার পা চিরে দু ভাগ হয়ে যাবে ইস্পাতের ধার লেগে ।
ওই দরজার সামনেই কলাপ্সিবল গেট আর দুতলা বড়ো অফিস যেখানে অনেক মেয়েই খয়েরি শাড়ী পরে কাজ করছে , সবাই মেয়ে পুলিশ , আর জানা চারেক মেয়ে পুলিশের উর্দি পরে আড় গোড় ভাঙছে । পুলিশভ্যান দেখে কৌতূহলে এগিয়ে আসলো । বিসির সাথে বসে থাকা মহিলা কনস্টেবল বিসি কে না গাড়ি থেকে নামিয়ে , ঘেরা গাড়ির দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে দিলেন । আড় মহিলা উর্দিপরা পুলিশ গুলো বাইরে দাঁড়িয়ে রইলো । ওদের কোমরে রিভালবার সাজানো রয়েছে মাথায় পুলিশের টুপি , আড় টুপিতে লাল পালক ফুর ফুর করে উড়ছে । এক জন মাঝবয়েসী ভারী গোছের মহিলা , চলাফেরা তার ছেলেদেরই মতো চশমা পড়া বেরিয়ে এসে দেখে গেলেন বিসি কে ।
আড় অল্প বয়েসী আরেকটি মহিলা ইশারা করলেন দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ গুলো কে বিসি কে ভিতরে নিয়ে আসতে । এটাই বন্দি গৃহের কার্যালয় ।
সম্ভবত চশমা পড়া মহিলাই জেলার হবেন । বিসির হাতের হাত করা খুলে দেয়া হলো । পুলিশের ভ্যান বেরিয়ে গেলো । আর দরজা বন্ধ হয়ে গেলো চিরতরে । এর নাম জেল । নতুন সমাজ নতুন জীবন । আবার মানিয়ে নিয়ে চলা , নতুন আইন , নতুন বন্ধ হওয়া এর নামইতো জীবন ।