19-03-2022, 06:48 PM
প্রচন্ড মাথায় আঘাত লাগলো লোহার কিছু ভারী অংশ । মনে হলো শরীরটা ছিটকে অনেক দূরে গিয়ে আছড়ে ফেললো কোথাও সমুদ্রের গভীর জলের মধ্যে । শেষ বার চোখ খুলে দেখবার চেষ্টা করলো , লাল রক্ত তে ভিজে গেছে তার মুখ , শুধু বুঝতে পরলো কাত হয়ে হেলে থাকা জাহাজ টা থেকে সে অনেক দূরে চলে এসেছে সমুদ্রের মরণ ঢেউ তে। চোখ খুলে পড়ে দুলতে লাগলো তার দেহ অশান্ত সাগরের বুকে ।
কতক্ষন সমুদ্রের নোনা জলে ভেসেছে বিলটু আর তার শরীর খেয়াল নেই । মুখের উপর সূর্যের সোজা তীরের ফলার মতো বিকিরিত কিরণে চোখ চাইবার চেষ্টা করলো সে । উফফফ খুলতে পারছে না চোখ । কপাল ফেটে গেছে বিশ্রী ভাবে তাতে নোনা জল লেগে দগদগে ঘা তাও শুকিয়ে গেছে ভিতরে আর জলে বাইরের চামড়া পচে গেছে । জ্বর জ্বর লাগছে তার । তাও চোখ খুললো , জলে ভাসছে তাঁর শরীর ।
বেঁচে যাওয়ার চরম আনন্দে জলের মধ্যে হাঁচোড় পাঁচর করলো সে । পায়ে নুড়ি কাঁকর এর স্পর্শ । বাঁ চোখটা খুলতে পারছে একটু । উঠে দাঁড়িয়ে দেখলো চারিদিকে । পিছনে অতলান্ত শান্ত নির্মল সমুদ্র আর কিছু দেখা যায় না । এই সমুদ্রই কিনা ভয়াল ভয়ঙ্কর হয়ে গিলে খেয়ে নিতে চেয়েছিলো । দূরে দেখতে পেলো সমুদ্রে তাঁর লাইফ জ্যাকেট । না চোখ খুলতে পারছে ঠিক মতো করে , সামনে একটা সবুজ বালিয়াড়ি দ্বীপ । সমুদ্র সৈকত বড্ডো ছোট , এদিক থেকে ওদিকে হাটতেই শেষ হয়ে যায় এমন , যেন বিন্দুর মতো সমুদ্রে ভেসে আছে এই একখণ্ড জমি । আস্তে আস্তে এগিয়ে আসলো সমুদ্রের হাটু জল থেকে দ্বীপের দিকে । খুব বড়ো জোর ১ কিলোমিটার হবে , চোখেই দেখা যাচ্ছে শেষ টা, তার পায়ের সামনের সমুদ্র সৈকত বড়ো জোর 500 মিটার হবে , তার শেষেই পাথুরে হালকা টিলার মতো সমুদ্রে নেমে গেছে পাথর খন্ড , সেটাই শেষ সীমা সেখানে সমুদ্র ঢেউ তুলে আছড়ে পড়ছে পাথরের দেয়ালে কোনো বালি নেই , কিন্তু তার পায়ের সামনে তীর তীর করে সমুদ্রের জল খেলা করছে এদিকে সমুদ্র্রের ঢেউ নেই বললেই চলে । হাজারো রঙের ছোট ছোট মাছ , এই এক আঙ্গুল হবে , আর ছোট ছোট গেঁড়ি . সামুদ্রিক শঙ্খ আর তাদের মরা খোলশ মিশিয়ে আছে বালিতে না জানি কত হাজার বছর ধরে । নিজের দিকে তাকিয়ে অস্থির হয়ে গেলো বিলটু , প্যান্ট ছিঁড়ে গেছে লোহায় ধারালো কিছুতে লেগে আর পরনের জামাটাও তার শখের নতুন জামা , একটা হাত নেই ছিঁড়ে চলে গেছে কোথাও সমুদ্রের গর্ভে ।
একটু হাটতেই পায়ে যন্ত্রনা অনুভব করলো সে । পায়ের দিকে দেখলো একবার , উরু তাও চিড়ে গেছে এক আঙ্গুল , ভিতরের সাদা মাংস বেরিয়ে গেছে জলে ভিজে ভিজে । পা টেনে টেনে এগিয়ে এসে বসলো বালিয়াড়ি তে । তাকে বাঁচতে হবে , অপেক্ষা করতে হবে যদি কোনো জাহাজ এদিকে আসে । কিন্তু মা বাবা কি বেঁচে আছে ?
সমুদ্রের ধার ধরে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাটা শুরু করলো , পরনে তার আডিডাসের জুতো , ভিজে ঢোল হয়ে আছে , খুব অসুবিধা হচ্ছে হাটতে । কিন্তু বালিতে অনেক ধারালো ঝুনিকের খোলা পা কেটে যাবে , তাই ভিতরের মোজা টা খুলে নিলো সে , পায়ের ক্ষতর জন্য পা ভাজ করতে পারছে না ।
একটা আয়নাও নেই, কপালের ঘা টা যদি একটু দেখতে পারতো । হাত লাগিয়ে লাগিয়ে অনুভব করার চেষ্টা করলো কত টা ফেটে গেছে কপাল ।
উফফ অনেকটা ।
এতক্ষন সে অনুভব করে নি তৃষ্ণা কি , কিন্তু এবার শরীরের সব অঙ্গ গুলো এক এক করে জেগে উঠেছে , মরে যায় নি বলে । প্রচন্ড তৃষ্ণা পাচ্ছে । কিন্তু জন মানব হীন এই ছোট্ট একটা ভূ খন্ডে সে কোথায় পাবে খাবার আর কোথায় পাবে জল ? একটা বিশেষ ধরণের ঘাস গোত্রের জঙ্গল পিছনে , জঙ্গল নয় ঝোপ বলা চলে । বড়ো জোর দু একটা মাঝারি মাপের গাছ , নাম জানা নেই , আর এই ঝোপ বড়ো জোর হাটু পর্যন্ত , আর কলমি শাকের মতো লতানো হলদেটে একটা লতা , যেখানে সেখানে বেড়ে উঠেছে দ্বীপ জুড়ে । দু একটা বাক্স , সমুদ্রের জলে ভেসে উঠেছে ।
হরে কৃষ্ণ এক্সপোর্টস "নেচার কেয়ার প্রোডাক্টস "। হাত দিয়ে ভিজে বাক্স গুলো ছিড়ে দেখতে চাইলো কি আছে । ইসবগুল এর বাক্স , শালা খাবার কিছু নেই , সেখানে আবার ইসব গুল। আরেকটু এগিয়ে আরেকটা বাক্স , ছেড়বার চেষ্টা করলো , নাঃ কাপড়ের জালি দিয়ে বাধা , একটা চাকু থাকলে ভালো হতো ।বুঝতে পারলো আমূল স্প্রে । না এটা খাওয়া যাবে অন্তত কয়েক দিন । দুধ বলে কথা । যদি কিছু খেতে না পায় , অন্তত দুধ খেয়ে কাটাতে পারবে । তৃষ্ণায় বুকের ছাতি ফেটে যাচ্ছে । আরেকটু এগিয়ে মনে হলো একজন মাঝবয়েসি লোক তারই মতো ভেসে এসেছে। কিন্তু জ্ঞান ফেরেনি । পায়ে আগের থেকে সচ্ছলতা এসেছে হাঁটা চলা করবার । কিন্তু গোড়ালি তে ব্যাথা । এতো বাঁচা মরার লড়াই , ব্যাথা পেলে কি চলবে ।
কতক্ষন সমুদ্রের নোনা জলে ভেসেছে বিলটু আর তার শরীর খেয়াল নেই । মুখের উপর সূর্যের সোজা তীরের ফলার মতো বিকিরিত কিরণে চোখ চাইবার চেষ্টা করলো সে । উফফফ খুলতে পারছে না চোখ । কপাল ফেটে গেছে বিশ্রী ভাবে তাতে নোনা জল লেগে দগদগে ঘা তাও শুকিয়ে গেছে ভিতরে আর জলে বাইরের চামড়া পচে গেছে । জ্বর জ্বর লাগছে তার । তাও চোখ খুললো , জলে ভাসছে তাঁর শরীর ।
বেঁচে যাওয়ার চরম আনন্দে জলের মধ্যে হাঁচোড় পাঁচর করলো সে । পায়ে নুড়ি কাঁকর এর স্পর্শ । বাঁ চোখটা খুলতে পারছে একটু । উঠে দাঁড়িয়ে দেখলো চারিদিকে । পিছনে অতলান্ত শান্ত নির্মল সমুদ্র আর কিছু দেখা যায় না । এই সমুদ্রই কিনা ভয়াল ভয়ঙ্কর হয়ে গিলে খেয়ে নিতে চেয়েছিলো । দূরে দেখতে পেলো সমুদ্রে তাঁর লাইফ জ্যাকেট । না চোখ খুলতে পারছে ঠিক মতো করে , সামনে একটা সবুজ বালিয়াড়ি দ্বীপ । সমুদ্র সৈকত বড্ডো ছোট , এদিক থেকে ওদিকে হাটতেই শেষ হয়ে যায় এমন , যেন বিন্দুর মতো সমুদ্রে ভেসে আছে এই একখণ্ড জমি । আস্তে আস্তে এগিয়ে আসলো সমুদ্রের হাটু জল থেকে দ্বীপের দিকে । খুব বড়ো জোর ১ কিলোমিটার হবে , চোখেই দেখা যাচ্ছে শেষ টা, তার পায়ের সামনের সমুদ্র সৈকত বড়ো জোর 500 মিটার হবে , তার শেষেই পাথুরে হালকা টিলার মতো সমুদ্রে নেমে গেছে পাথর খন্ড , সেটাই শেষ সীমা সেখানে সমুদ্র ঢেউ তুলে আছড়ে পড়ছে পাথরের দেয়ালে কোনো বালি নেই , কিন্তু তার পায়ের সামনে তীর তীর করে সমুদ্রের জল খেলা করছে এদিকে সমুদ্র্রের ঢেউ নেই বললেই চলে । হাজারো রঙের ছোট ছোট মাছ , এই এক আঙ্গুল হবে , আর ছোট ছোট গেঁড়ি . সামুদ্রিক শঙ্খ আর তাদের মরা খোলশ মিশিয়ে আছে বালিতে না জানি কত হাজার বছর ধরে । নিজের দিকে তাকিয়ে অস্থির হয়ে গেলো বিলটু , প্যান্ট ছিঁড়ে গেছে লোহায় ধারালো কিছুতে লেগে আর পরনের জামাটাও তার শখের নতুন জামা , একটা হাত নেই ছিঁড়ে চলে গেছে কোথাও সমুদ্রের গর্ভে ।
একটু হাটতেই পায়ে যন্ত্রনা অনুভব করলো সে । পায়ের দিকে দেখলো একবার , উরু তাও চিড়ে গেছে এক আঙ্গুল , ভিতরের সাদা মাংস বেরিয়ে গেছে জলে ভিজে ভিজে । পা টেনে টেনে এগিয়ে এসে বসলো বালিয়াড়ি তে । তাকে বাঁচতে হবে , অপেক্ষা করতে হবে যদি কোনো জাহাজ এদিকে আসে । কিন্তু মা বাবা কি বেঁচে আছে ?
সমুদ্রের ধার ধরে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাটা শুরু করলো , পরনে তার আডিডাসের জুতো , ভিজে ঢোল হয়ে আছে , খুব অসুবিধা হচ্ছে হাটতে । কিন্তু বালিতে অনেক ধারালো ঝুনিকের খোলা পা কেটে যাবে , তাই ভিতরের মোজা টা খুলে নিলো সে , পায়ের ক্ষতর জন্য পা ভাজ করতে পারছে না ।
একটা আয়নাও নেই, কপালের ঘা টা যদি একটু দেখতে পারতো । হাত লাগিয়ে লাগিয়ে অনুভব করার চেষ্টা করলো কত টা ফেটে গেছে কপাল ।
উফফ অনেকটা ।
এতক্ষন সে অনুভব করে নি তৃষ্ণা কি , কিন্তু এবার শরীরের সব অঙ্গ গুলো এক এক করে জেগে উঠেছে , মরে যায় নি বলে । প্রচন্ড তৃষ্ণা পাচ্ছে । কিন্তু জন মানব হীন এই ছোট্ট একটা ভূ খন্ডে সে কোথায় পাবে খাবার আর কোথায় পাবে জল ? একটা বিশেষ ধরণের ঘাস গোত্রের জঙ্গল পিছনে , জঙ্গল নয় ঝোপ বলা চলে । বড়ো জোর দু একটা মাঝারি মাপের গাছ , নাম জানা নেই , আর এই ঝোপ বড়ো জোর হাটু পর্যন্ত , আর কলমি শাকের মতো লতানো হলদেটে একটা লতা , যেখানে সেখানে বেড়ে উঠেছে দ্বীপ জুড়ে । দু একটা বাক্স , সমুদ্রের জলে ভেসে উঠেছে ।
হরে কৃষ্ণ এক্সপোর্টস "নেচার কেয়ার প্রোডাক্টস "। হাত দিয়ে ভিজে বাক্স গুলো ছিড়ে দেখতে চাইলো কি আছে । ইসবগুল এর বাক্স , শালা খাবার কিছু নেই , সেখানে আবার ইসব গুল। আরেকটু এগিয়ে আরেকটা বাক্স , ছেড়বার চেষ্টা করলো , নাঃ কাপড়ের জালি দিয়ে বাধা , একটা চাকু থাকলে ভালো হতো ।বুঝতে পারলো আমূল স্প্রে । না এটা খাওয়া যাবে অন্তত কয়েক দিন । দুধ বলে কথা । যদি কিছু খেতে না পায় , অন্তত দুধ খেয়ে কাটাতে পারবে । তৃষ্ণায় বুকের ছাতি ফেটে যাচ্ছে । আরেকটু এগিয়ে মনে হলো একজন মাঝবয়েসি লোক তারই মতো ভেসে এসেছে। কিন্তু জ্ঞান ফেরেনি । পায়ে আগের থেকে সচ্ছলতা এসেছে হাঁটা চলা করবার । কিন্তু গোড়ালি তে ব্যাথা । এতো বাঁচা মরার লড়াই , ব্যাথা পেলে কি চলবে ।