19-03-2022, 02:04 PM
মিটিক কুড়ি বাদে ঢেউ এর পর ঢেউ আরো বেশি করে ঝম ঝম করে আছড়ে পড়তে শুরু করলো হটাৎ জাহাজ কে পুরো দস্তুর াগ মাথা স্নান করিয়ে । আর খোলাম কুচির মতো ছোট্ট শিপ লাফিয়ে লাফিয়ে উঠতে লাগলো জলের ঢেউ এর মাথায় ২ -৩ মিটারের মতো । বিশ্রী ভাবে লাফাচ্ছে ছোট্ট জাহাজ , এটাকে জাহাজ না বলে বোট বললেই ভালো হতো । সেফটি জ্যাকেট পড়তে বলা হয় নি এখনো কিন্তু স্যাফটি সাইন অন আর সাইরেন বাজছে চারি দিকে , তাই বসে থাকা জানা বিশেক লোক এর ওর দিকে তাগিয়ে মারতে চাইছিলেন বিপদের গভীরতা । কখনো দু একজন তাল সামলাতে না পেরে ঘরের পড়েতে মেঝেতে পড়ে গড়াগড়ি খেলেন ধুয়ে যাওয়া সমুদ্রের জলের মধ্যে ।
বয়স্ক দু একজন বেশ চোট পেয়েছেন তাতে । কিন্তু বোঝা গেলো আবহাওয়া মোটেই নিরাপদ নয় । এবার ঝুমার দেবীর আহমক বুদ্ধির জন্য তার মুখে ভয়ের প্রতিবিম্ব ধরা পড়লো । এমন আকাশ ভেঙে কালো সমুদ্রের জল আছড়ে পড়ছে ছোট্ট কাগজের নৌকার মতো শিপে , আর ঝড়ের গতিতে মুষল ধরে বৃষ্টি তিনি দেখেন নি জীবনে ।
বিলটুর হাত ধরে বললেন "কি শুরু হলো বলতো , কি হবে এবার !" বিলটু জুল জুল করে চারিদিক চেয়ে দেখতে লাগলো ছোট্ট ছোট্ট দেওয়ালের কাঁচের জানলা দিয়ে বাইরে বসে বসে । শুধু সামনের পেল্লাই খোলা গেট দিয়ে জল আছড়ে ভিতরে ঢুকছে । সেই গেটের ডেকোরেশন আছে মেলায় সার্কাস এর মতো তাতে কোনো দরজা নেই । মাথার উপরে সিলিং এর ছোট্ট ছোট্ট সাজানো ঝড় বাতি গুলো টং টং করে নড়ছে ।
এমনি সময় জাহাজের ক্যাপ্টেন এর কেবিন থেকে হন্ত দন্ত হয়ে সেফটি জ্যাকেট পড়ে টুপি দেয়া আর সাদা পোশাকে কাঁধে দু তিনটে নীল হলুদ রিবন লাগলো একজন সহ নাবিক এসে বললো "দেখুন কেউ অধৈর্য হবেন না , GPS , কম্পাস সহ ইঞ্জিনের কিছু যান্ত্রিক ত্রূটি ধরা পড়ায় আমরা নিকোবর থেকে ৩৮ নটিক্যাল মাইল তফাতে গভীর সমুদ্রে চলে এসেছি । স্যাটেলাইট ফোন -এ যোগাযোগ করা হয়েছে কন্ট্রোল রুম কে , তবে রিলিফ নাভাল শিপ ১ ঘন্টার মধ্যেই এসে যাবে । আর এই সময় টুকু আমাদের সেইলর আটটেন্ডেন্ট আপনাদের সেফটি বেল্ট পড়িয়ে দেবে । কেউ নিজের জায়গা ছেড়ে এদিক ওদিক ঘুরবেন না , ডেকের দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে । জাহাজের ছাদে , বা জাহাজের ক্যাফেট লাউঞ্জে যাবার চেষ্টা এই মুহূর্তে করবেন না ।টয়লেট যাওয়া নিষেধ করা হয়েছে সম্পূর্ণ রূপে ! প্রচন্ড কারেন্ট এর জন্য আমরা লোয়ার বেসমেন্ট এর সব পাম্প চালাতে বাধ্য হয়েছি । তবে আমরা চেষ্টা করছি আবহাওয়া সাধারণ রাখতে ।
তার কথা শেষ হলো না পুরো জাহাজ অন্ধকার হয়ে গেলো । ইঞ্জিনের ত্রূটি যখন হয়েছে , তখন জেনারেটার এ দুর্ভোগ হবে না এমন ধরে নেয়া বোকামি । আর্তনাদ করে উঠলো সবাই ইষ্ট দেবতার নাম নিয়ে । এদিকে আরো চার জন ইউনিফর্ম পড়া জাহাজের সেফটি ক্যাডেট হবে দৌড়িয়ে ভিতরে এসে টর্চ এর আলো জ্বেলে , এক জন কে ধরে ধরে কোমরে LED দেয়া সেফটি বেল্ট লাফাতে লাগলো। ঝপাং ঝপাগ করে অফুরন্ত জলের রাশি গোগ্রাসে গিলতে আসছে বলরুম কে । তারই মধ্যে লোহার ধাতব সফট এ সিই হার্নেস লাগিয়ে চারজন এক একজন কে সেফটি জ্যাকেট পড়াচ্ছে ।সাধারণত জাহাজের সেফটি বেল্ট , উড়োজাহাজের সেফটি বেল্ট এর থেকে মাপে বড়ো হয় । আর অবিচ্ছিন্ন নয় । সিলিন্ডার এর পিন টেনে খুলে দিলে গলায় কমলা লুমিনিসেন্ট চাকতি হয়ে জলে জ্বলতে থাকে তাতে মানুষের মাথা ভেসে থাকে জলের উপরে । অনেক দূর থেকেই হেলিকপ্টার বা উড়োজাহাজ থেকে এগুলো দেখা যায় । সবাই কে লাইফ জ্যাকেট পরানোর কাজ শেষ , তখনও জলের অশান্ত রাশি ঝাঁপিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ছিলো জাহাজ কে ভিজিয়ে স্নান করিয়ে । ওয়ার্নিং ব্যারিকেট যেটা নাকি রাস্তার পাশে দেখা যায় হামেশা ডিভাইডার এর মতো কাজ করে সেই ধরণের তিন চারটে ফাঁপা ড্রামের মতো তাতে অনেক বড়ো রাবারের কম্বল জড়ানো । সেটা আনা হলো । বিলটু বিড় বিড় করে ঝুমা দেবী কে বললো : এতো লাইফ বোট !"
বিকট আওয়াজে দুলে প্রচ্ছদ বিস্ফোরণের মতো ঝাকুনি দিয়ে শিপ টা শুন্যে দাঁড়িয়ে উঠে পাক খেয়ে উঠলো । কিছু বুঝে নেবার আগে চোখে অন্ধকার দেখলো বিলটু , বসে না শুয়ে আছে জ্ঞান নেই , খুব জোরে আছড়ে পড়েছে সামনের লোহার দেয়ালে কপাল ফেটে গেছে সেখানেই , পাশে ঝুমা দেবী উল্টে পড়েছেন মাথা তারই পাশের একটা লোহার থামে ঠুকে মুখ গুঁজে । শুয়ে থেকে ঘাড় বেঁকিয়ে দেখবার চেষ্টা করলো বল রুমের মেঝে টাকে । অবিশ্রাম জল বাঁধ ভাঙা ড্যামের মতো আছড়ে পড়ছে জাহাজের ভিতরে , এদিক ওদিক ছিটকে পড়ে আছে জনা চারেক লোক , সবাই কে কি ভাবে ছিটকে পড়েছে বোঝা যাচ্ছে না । বাবাকে বুঝতে পারলো না কোথায় । জাহাজের হল এক দিকে হেলে পাক খাচ্ছে জলের স্রোতের মধ্যে , সমুদ্রের ফুলে ফেঁপে উঠা অশান্ত অতল জলের দিকে কাত হয়ে জাহাজ লাফিয়ে উঠলো খড় কুটোর মতো , আর মারণ আকাশ জুড়ে আছড়ে পড়া দানবীয় জলের রাক্ষস এর সাথে যুদ্ধ করবার চেষ্টা করেও ভেসে গেলো বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ।
কিছু শব্দ আর শুনতে পেলো না বিলটু কানে । শুধু হাত বাড়িয়ে মায়ের পেটে লাগানো স্যাফটি জ্যাকেটের নব টেনে নিতে পারলো কোনো ভাবে । বুঝতে পারলো ভোস করে জলের মধ্যেই ফুলে উঠলো সেটা বেলুনের মতো । চোখ বন্ধ হয়ে গেলো জলে , নোন জলে খাবি খেয়ে নিঃস্বাস নেবার চেষ্টা করলো প্রাণ বাঁচাতে । ডূবে গেলো কালো অতল জলের অন্ধকারে । প্রাণ বাঁচানোর মরিয়া চেষ্টায় নিজের কোমরের সেফটি জ্যাকেটের দড়ি টা টানলো প্রাণ পন শেষ চেষ্টা করে । ভোস করে শুধু আওয়াজ পেলো সে , আর জলের উদ্দাম ঢেউ এ ডূবে বুঝতে পারলো সব কিছু ভেসে যাচ্ছে জলের অশান্ত তোড়ে ।
বয়স্ক দু একজন বেশ চোট পেয়েছেন তাতে । কিন্তু বোঝা গেলো আবহাওয়া মোটেই নিরাপদ নয় । এবার ঝুমার দেবীর আহমক বুদ্ধির জন্য তার মুখে ভয়ের প্রতিবিম্ব ধরা পড়লো । এমন আকাশ ভেঙে কালো সমুদ্রের জল আছড়ে পড়ছে ছোট্ট কাগজের নৌকার মতো শিপে , আর ঝড়ের গতিতে মুষল ধরে বৃষ্টি তিনি দেখেন নি জীবনে ।
বিলটুর হাত ধরে বললেন "কি শুরু হলো বলতো , কি হবে এবার !" বিলটু জুল জুল করে চারিদিক চেয়ে দেখতে লাগলো ছোট্ট ছোট্ট দেওয়ালের কাঁচের জানলা দিয়ে বাইরে বসে বসে । শুধু সামনের পেল্লাই খোলা গেট দিয়ে জল আছড়ে ভিতরে ঢুকছে । সেই গেটের ডেকোরেশন আছে মেলায় সার্কাস এর মতো তাতে কোনো দরজা নেই । মাথার উপরে সিলিং এর ছোট্ট ছোট্ট সাজানো ঝড় বাতি গুলো টং টং করে নড়ছে ।
এমনি সময় জাহাজের ক্যাপ্টেন এর কেবিন থেকে হন্ত দন্ত হয়ে সেফটি জ্যাকেট পড়ে টুপি দেয়া আর সাদা পোশাকে কাঁধে দু তিনটে নীল হলুদ রিবন লাগলো একজন সহ নাবিক এসে বললো "দেখুন কেউ অধৈর্য হবেন না , GPS , কম্পাস সহ ইঞ্জিনের কিছু যান্ত্রিক ত্রূটি ধরা পড়ায় আমরা নিকোবর থেকে ৩৮ নটিক্যাল মাইল তফাতে গভীর সমুদ্রে চলে এসেছি । স্যাটেলাইট ফোন -এ যোগাযোগ করা হয়েছে কন্ট্রোল রুম কে , তবে রিলিফ নাভাল শিপ ১ ঘন্টার মধ্যেই এসে যাবে । আর এই সময় টুকু আমাদের সেইলর আটটেন্ডেন্ট আপনাদের সেফটি বেল্ট পড়িয়ে দেবে । কেউ নিজের জায়গা ছেড়ে এদিক ওদিক ঘুরবেন না , ডেকের দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে । জাহাজের ছাদে , বা জাহাজের ক্যাফেট লাউঞ্জে যাবার চেষ্টা এই মুহূর্তে করবেন না ।টয়লেট যাওয়া নিষেধ করা হয়েছে সম্পূর্ণ রূপে ! প্রচন্ড কারেন্ট এর জন্য আমরা লোয়ার বেসমেন্ট এর সব পাম্প চালাতে বাধ্য হয়েছি । তবে আমরা চেষ্টা করছি আবহাওয়া সাধারণ রাখতে ।
তার কথা শেষ হলো না পুরো জাহাজ অন্ধকার হয়ে গেলো । ইঞ্জিনের ত্রূটি যখন হয়েছে , তখন জেনারেটার এ দুর্ভোগ হবে না এমন ধরে নেয়া বোকামি । আর্তনাদ করে উঠলো সবাই ইষ্ট দেবতার নাম নিয়ে । এদিকে আরো চার জন ইউনিফর্ম পড়া জাহাজের সেফটি ক্যাডেট হবে দৌড়িয়ে ভিতরে এসে টর্চ এর আলো জ্বেলে , এক জন কে ধরে ধরে কোমরে LED দেয়া সেফটি বেল্ট লাফাতে লাগলো। ঝপাং ঝপাগ করে অফুরন্ত জলের রাশি গোগ্রাসে গিলতে আসছে বলরুম কে । তারই মধ্যে লোহার ধাতব সফট এ সিই হার্নেস লাগিয়ে চারজন এক একজন কে সেফটি জ্যাকেট পড়াচ্ছে ।সাধারণত জাহাজের সেফটি বেল্ট , উড়োজাহাজের সেফটি বেল্ট এর থেকে মাপে বড়ো হয় । আর অবিচ্ছিন্ন নয় । সিলিন্ডার এর পিন টেনে খুলে দিলে গলায় কমলা লুমিনিসেন্ট চাকতি হয়ে জলে জ্বলতে থাকে তাতে মানুষের মাথা ভেসে থাকে জলের উপরে । অনেক দূর থেকেই হেলিকপ্টার বা উড়োজাহাজ থেকে এগুলো দেখা যায় । সবাই কে লাইফ জ্যাকেট পরানোর কাজ শেষ , তখনও জলের অশান্ত রাশি ঝাঁপিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ছিলো জাহাজ কে ভিজিয়ে স্নান করিয়ে । ওয়ার্নিং ব্যারিকেট যেটা নাকি রাস্তার পাশে দেখা যায় হামেশা ডিভাইডার এর মতো কাজ করে সেই ধরণের তিন চারটে ফাঁপা ড্রামের মতো তাতে অনেক বড়ো রাবারের কম্বল জড়ানো । সেটা আনা হলো । বিলটু বিড় বিড় করে ঝুমা দেবী কে বললো : এতো লাইফ বোট !"
বিকট আওয়াজে দুলে প্রচ্ছদ বিস্ফোরণের মতো ঝাকুনি দিয়ে শিপ টা শুন্যে দাঁড়িয়ে উঠে পাক খেয়ে উঠলো । কিছু বুঝে নেবার আগে চোখে অন্ধকার দেখলো বিলটু , বসে না শুয়ে আছে জ্ঞান নেই , খুব জোরে আছড়ে পড়েছে সামনের লোহার দেয়ালে কপাল ফেটে গেছে সেখানেই , পাশে ঝুমা দেবী উল্টে পড়েছেন মাথা তারই পাশের একটা লোহার থামে ঠুকে মুখ গুঁজে । শুয়ে থেকে ঘাড় বেঁকিয়ে দেখবার চেষ্টা করলো বল রুমের মেঝে টাকে । অবিশ্রাম জল বাঁধ ভাঙা ড্যামের মতো আছড়ে পড়ছে জাহাজের ভিতরে , এদিক ওদিক ছিটকে পড়ে আছে জনা চারেক লোক , সবাই কে কি ভাবে ছিটকে পড়েছে বোঝা যাচ্ছে না । বাবাকে বুঝতে পারলো না কোথায় । জাহাজের হল এক দিকে হেলে পাক খাচ্ছে জলের স্রোতের মধ্যে , সমুদ্রের ফুলে ফেঁপে উঠা অশান্ত অতল জলের দিকে কাত হয়ে জাহাজ লাফিয়ে উঠলো খড় কুটোর মতো , আর মারণ আকাশ জুড়ে আছড়ে পড়া দানবীয় জলের রাক্ষস এর সাথে যুদ্ধ করবার চেষ্টা করেও ভেসে গেলো বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ।
কিছু শব্দ আর শুনতে পেলো না বিলটু কানে । শুধু হাত বাড়িয়ে মায়ের পেটে লাগানো স্যাফটি জ্যাকেটের নব টেনে নিতে পারলো কোনো ভাবে । বুঝতে পারলো ভোস করে জলের মধ্যেই ফুলে উঠলো সেটা বেলুনের মতো । চোখ বন্ধ হয়ে গেলো জলে , নোন জলে খাবি খেয়ে নিঃস্বাস নেবার চেষ্টা করলো প্রাণ বাঁচাতে । ডূবে গেলো কালো অতল জলের অন্ধকারে । প্রাণ বাঁচানোর মরিয়া চেষ্টায় নিজের কোমরের সেফটি জ্যাকেটের দড়ি টা টানলো প্রাণ পন শেষ চেষ্টা করে । ভোস করে শুধু আওয়াজ পেলো সে , আর জলের উদ্দাম ঢেউ এ ডূবে বুঝতে পারলো সব কিছু ভেসে যাচ্ছে জলের অশান্ত তোড়ে ।