15-03-2022, 12:24 PM
২০. শিখা - বাবান
দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন... উজ্জ্বল হলুদ রশ্মিতে চারিদিক আলোকিত। এই আলোতে শেষ হয়ে যাচ্ছে অন্ধকারে লুকোনো কিছু কুকর্ম। পাগলটা হাসছে.... সে আজ দারুন খুশি। হাততালি দিচ্ছে সে..... সবাই থামানোর চেষ্টা করছে সে আগুন কিন্তু তার তেজের কাছে মানুষ কোথায়?
রোগা প্যাটকা পাগল ছেলেটা হাততালি দিচ্ছে আনন্দে. আজ যে দারুন আনন্দ হচ্ছে তার। তার মায়ের খুনিটা ওই আগুনে জ্বলছে.... সাথে কারণটাও যে কারণ ওই লোকটাকে বাধ্য করেছিল পাল্টে যেতে। হ্যা.. ওই লোকটা ওই ছেলেটার বাবা.... এক হারিয়ে যাওয়া মানুষ.... যে অসৎ সঙ্গে পড়ে নিজেও হয়ে উঠেছিল এক পিশাচ। নিজের আপন দুজনকে ঘেন্না করতে শুরু করে সে, আর উত্তেজিত হতে শুরু করে তাদের পিটিয়ে। পাগল ছেলেটার কবজ হয়ে ছিল এতদিন তার জন্মদাত্রিণী... কিন্তু তাকেও ছিনিয়ে নিয়েছে এই লোকটা। হোক সে পিতা কিন্তু সে এক খুনি!
পাগলটা হাসছে... হাততালি দিচ্ছে... ভেতরে জ্বলে যাচ্ছে সব জিনিস পত্র, জামা কাপড়, খাতার পৃষ্ঠা.... সাথে দুটো শরীর... মানুষের কি সেগুলো? নানা হতেই পারেনা... নইলে কদিন আগেই এই বাড়ির একজন চিরতরে বিলীন হয়ে যাবার পরেই কিকরে ওই লোক বাড়িতে নিজের সঙ্গিনী নিয়ে আসতে পারে ফুর্তি করার জন্য? আহহহহ ওই মেয়েমানুষটার নোংরা চিৎকার অসহ্য লাগতো পাগল ছেলেটার... ওকে যখন বাবা পেটাতো তখনও হয়তো এতো কষ্ট হয়নি যতটা নিজের পিতাকে ওই অচেনা নারীর সাথে উন্মুক্ত অবস্থায় দেখে হতো।
বিকৃত মানুসিকতার নেশায় মত্ত পিতা ওই পাগল ছেলেকে দেখিয়ে দেখিয়ে নারীভোগ করে যেন আলাদাই মজা পেতো। পাগল ছেলের কান্না ভরা ঘেন্নার চিৎকার শুনে দুই পুরুষ নারী হাসিতে ফেটে পড়তো।
পাগল ছেলেটা হাসছে... হাততালি দিচ্ছে... কারণ আজ থেকে সে মুক্ত... সে অনাথ.... সে একলা.. এর থেকে আনন্দের আর কি হতে পারে? এই নরক যন্ত্রনা আর পেতে হবেনা... এবারে সে রাস্তায় ঘুরে ঘুরে পাগলামি করবে। শুধু একটা পালাবার রাস্তা খুঁজছিলো সে... কিন্তু তার পিতা পালাতে দেয়নি তাকে... আটকে রেখে দিতো। আজ ওই দুজনের মাতাল সুখের ডুবে যাওয়ার সুযোগ নিয়ে পালিয়ে আসে পাগলটা.... কিন্তু পালাবার আগে একবার যায় রান্নাঘরে কিছু খুঁজতে.....
দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে... পাগল ছেলেটা হাসছে.... হাততালি দিচ্ছে কিন্তু.... কিন্তু চোখে তার অশ্রু।
বাবান