08-03-2022, 11:57 PM
(This post was last modified: 08-03-2022, 11:59 PM by marich. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
কদিন পরেই কৃষ্ণার সেকেন্ড ইয়ারের ফাইনাল এক্সাম হবে | এখন ও খুব মন দিয়ে পড়াশোনা করে | একদিন দেখলাম ও একটা সেকেলে আমলের চশমা পরে বই পড়ছে |
আমি ওকে জিজ্ঞাসা করলাম যে কিরে তোর চশমা হলো কবে রে |
কৃষ্ণা বললো যে প্রায় মাসছয়েক হলো চোখে মাইনাস পাওয়ার এসছে | সবসময় পড়তে কেমন একটা লজ্জা লাগে | তাই পড়াশোনা করার সময়তেই চশমা পরি |
আমি: তা চশমা নিবি যখন একটা ভালো দেখে নে | এরকম একটা সেকেলে আমলের চশমা কেউ পরে নাকি আজকাল | তুই আজ বিকালে আমার সঙ্গে চশমার দোকানে চল, একটা ভালো চশমা করে দেবো তোকে |
কৃষ্ণা: আবার চশমা না করলেও তো হয় | বেশ ভালোই তো কাজ চলছে |
আমি: বড়রা বললে শুনতে হয় | আরে এটা পরে তোকে বুড়িদের মতো লাগছে |
আমার এই কথা শুনে কৃষ্ণা অবাক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে ছিল | শেষে মৃদু হেসে বললো যে ঠিক আছে চলো তাহলে |
সেদিন বিকালে কৃষ্ণাকে সঙ্গে নিয়ে একটা চশমার দোকানে গেলাম | অনেক বেছে শেষে একটা হাফ রিমলেস ফ্রেম পছন্দ হলো ওর জন্য | চশমার দোকান অর্ডার নেওয়ার সময় বললো যে তিনদিন পরে ডেলিভারি দিয়ে আসবে বাড়িতে | আমরা বাড়ির ঠিকানা লিখে দিয়ে ওখান থেকে চলে এলাম |
এরপর কৃষ্ণা বললো যে তাকে কলেজ স্ট্রিট যেতে হবে কয়েকটা বই কেনার জন্য | আমি ওকে বললাম যে সঙ্গ দিলে আপত্তি নেই তো | ও হেসে বললো যে তুমি সঙ্গে গেলে আবার আপত্তির কি থাকবে | আমরা তখন একটা ট্রামে চেপে কলেজ স্ট্রিট রওনা হলাম |
কলেজ স্ট্রিট পৌঁছে রাস্তা পার হওয়ার সময় আমি নিজের অজান্তে ওর একখানা হাত ধরে নিলাম | রাস্তার ওপারে গিয়ে খানিকটা দূর হাঁটার পর সেটা আমার খেয়াল হলো | আমি তখন লজ্জায় ওর হাতটা ছেড়ে দিলাম | বললাম যে একদম খেয়াল ছিল না রে | আমার এই কথায় ও খিল খিল করে হেসে উঠলো |
কলেজ স্ট্রিট গিয়ে কৃষ্ণা ওর নিজের জন্য পড়ার বই কিনলো | আর আমাকে সুনীল গাঙ্গুলির লেখা একটা বই কিনে দিলো | বই কেনার পর দুজনেরই খিদে পেয়ে গেলো | আমরা কফি হাউসে গিয়ে ফিশ ফ্রাই আর কফি অর্ডার করলাম | এখানে টেবিলে খাবার ডেলিভারি দিতে এরা একটু সময় নেয় | তো আমরা সেই ফাঁকে একটু গল্প করছিলাম | আমাদের কথোপকথন এখানে তুলে ধরলাম |
কৃষ্ণা: আচ্ছা তোমায় একটা কথা জিজ্ঞাসা করবো, কিছু মনে করবে না তো |
আমি: কি জিজ্ঞাসা করবি বল |
কৃষ্ণা: তুমি কখনো কাউকে ভালোবেসেছো ?
আমি: হ্যাঁ , একসময় ছিল একজন | সে পরে আমায় ছেড়ে দিয়ে চলে যায় | সেটা অবশ্য আমারি দোষ, কেননা তাকে আমি বিশ্বাস করেছিলাম |
কৃষ্ণা: না না, সে দোষ কখনোই তোমার নয় | ছাড়ো সে কথা | আচ্ছা তুমি কি আর কখনো কাউকে ভালোবাসতে পারবে?
আমি: খুব কঠিন প্রশ্ন | এখনো পাইনি সেরকম কাউকে, তবে সেরকম যদি কাউকে পাই তোকে অবশ্যই বলবো |
কৃষ্ণা: খুঁজতে থাকো, ঠিক পেয়ে যাবে | তোমার হাইট ভালো, দেখতে ঠিক ঠাক, তার উপর সরকারি চাকরি করো | যেকোনো মেয়ে তোমায় পছন্দ করবে | এই বলে সে হেসে ফেললো |
আমি: তুই না বড্ডো দুষ্টু হয়ে যাচ্ছিস | গম্ভীর ভাবে বললাম যে সত্যিকারের ভালোবাসা খুঁজে পাওয়া সত্যি খুব কঠিন | এই বলে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললাম |
পরিবেশ গম্ভীর হয়ে যাচ্ছে বুঝে এবার ও চুপ করে গেলো | এরপর ওয়েটার টেবিলে ফিশ ফ্রাই আর কফি দিয়ে গেলো | খাওয়া দাওয়া হয়ে গেলে আমরা ট্রামে চেপে বাড়ি ফিরে এলাম | আসার সময় আমরা রাস্তায় দেখতে পেলাম যে বসন্তবাবু আর ডলিদি একটা মিষ্টির দোকানে বসে খাওয়া দাওয়া করছে | ওরা অবশ্য আমাদের দেখতে পাইনি | সেদিকে দেখিয়ে কৃষ্ণা বললো যে দেখো দেরিতে হলেও ওরা কিন্তু সত্যিকারের ভালোবাসা খুঁজে পেয়েছে |
আমি বললাম যে এরকম ভাগ্য সবার হয় না | কৃষ্ণা বললো যে সেকথা কেউ বলতে পারে না | এরকম তো হতে পারে হয়তো ভালোবাসা তোমার চোখের সামনেই রয়েছে, কিন্তু তুমি তা দেখতে পাচ্ছ না | হাঁটার সময় অন্যমনস্ক ছিলাম বলে খেয়াল করিনি, এখন দেখলাম যে বাড়ির সামনে চলে এসেছি | এরপর আমায় 'শুভ রাত্রি' বলে কৃষ্ণা বিদায় নিলো | আমি শুধু ভাবতে লাগলাম যে যাবার আগে কি বলে গেলো ও |
আমি ওকে জিজ্ঞাসা করলাম যে কিরে তোর চশমা হলো কবে রে |
কৃষ্ণা বললো যে প্রায় মাসছয়েক হলো চোখে মাইনাস পাওয়ার এসছে | সবসময় পড়তে কেমন একটা লজ্জা লাগে | তাই পড়াশোনা করার সময়তেই চশমা পরি |
আমি: তা চশমা নিবি যখন একটা ভালো দেখে নে | এরকম একটা সেকেলে আমলের চশমা কেউ পরে নাকি আজকাল | তুই আজ বিকালে আমার সঙ্গে চশমার দোকানে চল, একটা ভালো চশমা করে দেবো তোকে |
কৃষ্ণা: আবার চশমা না করলেও তো হয় | বেশ ভালোই তো কাজ চলছে |
আমি: বড়রা বললে শুনতে হয় | আরে এটা পরে তোকে বুড়িদের মতো লাগছে |
আমার এই কথা শুনে কৃষ্ণা অবাক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে ছিল | শেষে মৃদু হেসে বললো যে ঠিক আছে চলো তাহলে |
সেদিন বিকালে কৃষ্ণাকে সঙ্গে নিয়ে একটা চশমার দোকানে গেলাম | অনেক বেছে শেষে একটা হাফ রিমলেস ফ্রেম পছন্দ হলো ওর জন্য | চশমার দোকান অর্ডার নেওয়ার সময় বললো যে তিনদিন পরে ডেলিভারি দিয়ে আসবে বাড়িতে | আমরা বাড়ির ঠিকানা লিখে দিয়ে ওখান থেকে চলে এলাম |
এরপর কৃষ্ণা বললো যে তাকে কলেজ স্ট্রিট যেতে হবে কয়েকটা বই কেনার জন্য | আমি ওকে বললাম যে সঙ্গ দিলে আপত্তি নেই তো | ও হেসে বললো যে তুমি সঙ্গে গেলে আবার আপত্তির কি থাকবে | আমরা তখন একটা ট্রামে চেপে কলেজ স্ট্রিট রওনা হলাম |
কলেজ স্ট্রিট পৌঁছে রাস্তা পার হওয়ার সময় আমি নিজের অজান্তে ওর একখানা হাত ধরে নিলাম | রাস্তার ওপারে গিয়ে খানিকটা দূর হাঁটার পর সেটা আমার খেয়াল হলো | আমি তখন লজ্জায় ওর হাতটা ছেড়ে দিলাম | বললাম যে একদম খেয়াল ছিল না রে | আমার এই কথায় ও খিল খিল করে হেসে উঠলো |
কলেজ স্ট্রিট গিয়ে কৃষ্ণা ওর নিজের জন্য পড়ার বই কিনলো | আর আমাকে সুনীল গাঙ্গুলির লেখা একটা বই কিনে দিলো | বই কেনার পর দুজনেরই খিদে পেয়ে গেলো | আমরা কফি হাউসে গিয়ে ফিশ ফ্রাই আর কফি অর্ডার করলাম | এখানে টেবিলে খাবার ডেলিভারি দিতে এরা একটু সময় নেয় | তো আমরা সেই ফাঁকে একটু গল্প করছিলাম | আমাদের কথোপকথন এখানে তুলে ধরলাম |
কৃষ্ণা: আচ্ছা তোমায় একটা কথা জিজ্ঞাসা করবো, কিছু মনে করবে না তো |
আমি: কি জিজ্ঞাসা করবি বল |
কৃষ্ণা: তুমি কখনো কাউকে ভালোবেসেছো ?
আমি: হ্যাঁ , একসময় ছিল একজন | সে পরে আমায় ছেড়ে দিয়ে চলে যায় | সেটা অবশ্য আমারি দোষ, কেননা তাকে আমি বিশ্বাস করেছিলাম |
কৃষ্ণা: না না, সে দোষ কখনোই তোমার নয় | ছাড়ো সে কথা | আচ্ছা তুমি কি আর কখনো কাউকে ভালোবাসতে পারবে?
আমি: খুব কঠিন প্রশ্ন | এখনো পাইনি সেরকম কাউকে, তবে সেরকম যদি কাউকে পাই তোকে অবশ্যই বলবো |
কৃষ্ণা: খুঁজতে থাকো, ঠিক পেয়ে যাবে | তোমার হাইট ভালো, দেখতে ঠিক ঠাক, তার উপর সরকারি চাকরি করো | যেকোনো মেয়ে তোমায় পছন্দ করবে | এই বলে সে হেসে ফেললো |
আমি: তুই না বড্ডো দুষ্টু হয়ে যাচ্ছিস | গম্ভীর ভাবে বললাম যে সত্যিকারের ভালোবাসা খুঁজে পাওয়া সত্যি খুব কঠিন | এই বলে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললাম |
পরিবেশ গম্ভীর হয়ে যাচ্ছে বুঝে এবার ও চুপ করে গেলো | এরপর ওয়েটার টেবিলে ফিশ ফ্রাই আর কফি দিয়ে গেলো | খাওয়া দাওয়া হয়ে গেলে আমরা ট্রামে চেপে বাড়ি ফিরে এলাম | আসার সময় আমরা রাস্তায় দেখতে পেলাম যে বসন্তবাবু আর ডলিদি একটা মিষ্টির দোকানে বসে খাওয়া দাওয়া করছে | ওরা অবশ্য আমাদের দেখতে পাইনি | সেদিকে দেখিয়ে কৃষ্ণা বললো যে দেখো দেরিতে হলেও ওরা কিন্তু সত্যিকারের ভালোবাসা খুঁজে পেয়েছে |
আমি বললাম যে এরকম ভাগ্য সবার হয় না | কৃষ্ণা বললো যে সেকথা কেউ বলতে পারে না | এরকম তো হতে পারে হয়তো ভালোবাসা তোমার চোখের সামনেই রয়েছে, কিন্তু তুমি তা দেখতে পাচ্ছ না | হাঁটার সময় অন্যমনস্ক ছিলাম বলে খেয়াল করিনি, এখন দেখলাম যে বাড়ির সামনে চলে এসেছি | এরপর আমায় 'শুভ রাত্রি' বলে কৃষ্ণা বিদায় নিলো | আমি শুধু ভাবতে লাগলাম যে যাবার আগে কি বলে গেলো ও |