11-03-2022, 10:25 PM
(This post was last modified: 11-03-2022, 11:06 PM by MNHabib. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
মিত্রা আমার হাতটা ধরলো। আমার মুখের দিকে তাকালো। সূর্য সবে অস্ত যাচ্ছে। পশ্চিম আকাশের রং একবারে গাড় কমলা। তার ছোঁয়া মিত্রার মুখে।
-কিরে মিষ্টি মুখ করাবি না। এতবড় একটা কাজ করবি।
আমি ওর দিকে তাকালাম। না পারছি হাসতে না পারছি কিছু বলতে।
বড়মা আমার পাশে এসে দাঁড়ালো।
-তুই ওর কথায় হ্যাঁ বল না। আব্দার করে চাইছে।
-এই ফাঁকা মাঠে আমি কি ভেজে খাওয়াব?
-হুর-রে বলে চিকনা গাড়ির দিকে ছুট মারলো। মিত্রা পেছন পেছন দৌড়চ্ছে।
নিরঞ্জনদা বড়মার দিকে তাকিয়ে বললো। পাগলিটা দৌড়লো কেনো?
-ওই বা কি নিয়ে থাকে বল। একটু আনন্দ করতে চাইছে করুক।
নিরঞ্জনদা হেসে ফেললো। তুমি, ছোট এদের নিয়ে বেশ আছো।
মিত্রা ছুটতে ছুটতে এলো। সেই জিলিপিগুলো নিয়ে। আর রসগোল্লার হাঁড়ি।
আমি বললাম এগুলো বাড়ি থেকে নিয়ে এসেছিস?
-সব হজম হয়ে গেছে বিশ্বাস কর। খিদে পেয়ে গেছে। আর বমি হবে না।
নীপা আমার দিকে তাকিয়ে বললো। ওরকম করো কেনো অনিদা। মিত্রাদি আনন্দ করে বলছে।
-উরি বাবা এতো সব দেখছি মিত্রার দলে!
ইসলাম ভাই আমার দিকে তাকিয়ে বললো বউনি কর নাহলে আমরা পাবো না।
সবাই হো হো করে হেসে ফেললো।
ফেরার পথে নিরঞ্জনদা আমাকে নিজের গাড়িতে তুলে নিলো। ওরা সবাই এক গাড়িতে। বুঝলাম নিরঞ্জনদা আমার সঙ্গে আলাদা করে কথা বলতে চায়। যতই হোক রাজনীতি করে। আলাদাভাবে আমাকে বুঝে নিতে চায়। বড়মা একবার আপত্তি করেছিলো। তারপর মেনে নিলো।
গাড়ি চলছে। আমি চুপচাপ বসে আছি। বেশ কিছুক্ষণ পর নিরঞ্জনদা কথা বলা শুরু করলো।
-অনি?
-বলো।
-আজকে তোর আর্টিকেলটা পরলাম। বেশ ভালো লিখেছিস।
আমি নিরঞ্জনদার দিকে তাকালাম। শেয়ানে শেয়ানে কোলাকুলি শুরু হলো। নিরঞ্জনদা আমার চোখ দেখে বুঝতে পারলো। এতক্ষণ দেখা অনির সঙ্গে এই অনির অনেক পরিবর্তন।
-ঝেড়ে কাশো। ভনিতা কোরো না।
-আমি জানতাম। তুই এই কথাটা বলবি।
-বলো কি বলতে চাও।
-তোর আর্টিকেলটা নিয়ে ওখানে অনেক সমস্যা তৈরি হয়েছে।
-কোথায়?
-কলকাতায়।
-তোমাদের পার্টিতে না আমার অফিসে?
-দু’জায়গাতেই।
-আমার অফিসে হলে আমার বুঝে নেবার ক্ষমতা আছে। তোমাদের পার্টিতে হলে তার দায়িত্ব তোমাদের।
-তোকে যদি হ্যারাস করে!
-তাহলে বুঝবে তোমাদের অনেক মন্ত্রীর স্বরূপ আমি প্রকাশ করে দেবো। বলতে পারো নাঙ্গা করে দেবো। তাতে তোমাদের সরকারে অনেক সমস্যা তৈরি হবে। সেটা চাও।
-তুই কি বলতে চাস?
-তোমরা কেউ ধোয়া তুলসীপাতা নও। এটা মানো।
-মানি।
-আমার কাছে মলের মতো তোমাদের অনেক মন্ত্রীর উইথ ডকুমেন্টস মেটেরিয়াল রেডি করে পরে আছে। যদি ছেপে দিই তোমাদের সরকারের ভিত আমি একাই কাঁপিয়ে দেবো।
-এর একটা উল্টো রি-এ্যাকসন আছে!
-ইসলাম ভাই-এর সম্বন্ধে তোমাকে নতুন করে বলতে হবে না।
-তুই কি বলতে চাইছিস।
-তোমার কথার পৃষ্ঠে কথা বলছি। তুমি বুঝে নাও। দীর্ঘদিন রাজনীতি করছো।
-আমি জানি তোর শেকড়টা অনেক দূর পর্যন্ত।
-জানলে আমাকে বাজাচ্ছ কেনো।
-আমি জানতে চাইছি।
-তুমি অনেক কিছু জানো। প্রকাশ করছো না। তোমার জানা উচিত তোমাদের হাই কমান্ডের সঙ্গে আমার খাতিরটা খুব একটা কম নয়। আমাকে তাদের প্রয়োজন আছে। মলকে নিয়ে তারা ভাবে না। কয়েকটা আমলার কথায় তারা উঠবে বসবে না।
-অনি! তুই কি বলছিস ভেবে বলছিস।
-তুমি যদি বড়মা, অমিতাভদার ক্লোজ না হতে তোমার ভিঁতটাও নড়িয়ে দিতাম। তুমি অস্বীকার করতে পারবে?
নিরঞ্জনদা মাথা নীচু করলো।
-আমি ঠিক তোকে গেইজ করতে পারিনি।
-এতদিন রাজনীতি করছো। তুমি কি ভাবলে আমি ছেলে খেলা করতে বসেছি।
-না আমি ঠিক ততটা তোকে আন্ডার এস্টিমেট করিনি।
-তোমাকে তোমার হাই-কমান্ডের কে আমাকে মনিটরিং করতে বলেছে। নামটা বলো।
নিরঞ্জনদার গালে কেউ যেন একটা থাপ্পর মারলো। আমার দিকে অবাক হয়ে তাকালো।
-তুই বিশ্বাস কর কেউ বলে নি।
-তুমি যদি ভেবে থাকো আমাকে কিছু পাইয়ে দিয়ে কাজ হাসিল করবে, তাহলে মনে রাখবে বড়মা. অমিতাভদা আমাকে আটকে রাখতে পারবে না।
-বৃথা তুই রাগ করছিস আমার ওপর।
-আমি রাগিনি। আমার প্রেডিকসনগুলো কেন জানি অব্যর্থ ভাবে মিলে যায়!
-তুই বিশ্বাস কর আমাকে কেউ কিছু বলেনি।
-তোমার এটা জানা উচিত ছিল ইসলাম ভাই-এর মতো লোক আমার একটা কথায় এখানে চলে এলো আমার সঙ্গে। তোমাদের পার্টির সঙ্গে ইসলাম ভাই-এর রিলেসনটা আমাকে তোমায় নতুন করে বলে দিতে হবে না।
-না, সেটা আমি জানি।
-তুমি ইসলাম ভাই-এর নাম শুনেছো, আগে দেখো নি।
-এটা সত্যি।
-আজ তুমি জানলে ইসলাম ভাই ছোটমার ভাই।
-হ্যাঁ।
-আমি ইসলাম ভাই-এর সঙ্গে দশ বছর ঘুরছি আমি জানতে পারিনি।
-এটা কাকাতালীয়।
-ঠিক। যাক তুমি তোমার কথা বলো। ট্র্যাক থেকে বেরিয়ে যেওনা।
-না তুই আমাকে বোঝার চেষ্টা কর।
-তুমি সত্যি বলছো না মিথ্যে বলছো আমি এখুনি একটা ফোন করলেই ধরে ফেলবো। তুমি প্রমাণ চাও।
-না আমি প্রমাণ চাইনা। আমি জানি তোর নেটওয়ার্ক স্ট্রং।
-এবার ঝেড়ে কাশো। আমি কাল সকালে কলকাতা যাবো।
-আমি তোর সঙ্গে যাবো।
-যেতে পারো। কিন্তু আমি তোমার সঙ্গে যাবো না আমি সোজা অফিসে যাবো।
নিরঞ্জনদা আমার হাতটা ধরে ফেললো। কাকুতি মিনতি করে উঠলো।
-তুই আমার ছোটো ভাই-এর মতো। জানিসতো সব পার্টির ভেতরের ব্যাপার। আমাকে কিছু কিছু আদেশ মানতে হয়।
-ওটা তোমার ব্যাপার।
-তুই আমার এই রিকোয়েস্টটা রাখ। তাহলে আমার কিছুটা সম্মান বাঁচে।
-বলো। শুনি।
-কালকে একবার মহাকরণে যাবো। তুই আমার সঙ্গে যাবি।
-কার কাছে যাবে?
-মুখ্য সচিবের কাছে। চিফ মিনিস্টারের হুকুম।
-ওটা তার হুকুম। উনি তোমাকে আদেশ করতে পারেন আমাকে নয়।
-আমি জানি।
-ঠিক আছে। তুমি ঘরের লোক বলে তোমার সঙ্গে যাবো। কিন্তু নখরামি করলে তার উত্তর আমি কলম দিয়ে দেবো।
-না না আমি তোকে কথা দিচ্ছি।
-আমি কি পাবো।
-তোকে তিনশো একর জায়গাটা ব্যবস্থা করে দেবো।
-আর।
-খালি তোকে লেখাটা স্টপ করতে হবে।
-আমি যাবো না, তুমি ফোন করে বলে দাও। ওদের দম থাকলে কিছু করে দেখাক।
-তুই এরকম করলে চলে কি করে।
-লেখার তিনটে ইনস্টলমেন্ট আছে। আগামীকাল একটা বেরোবে পরশু দিন একটা বেরোবে বাকিটা বেরোবে না। এতে যদি রাজি হয় যাবো নাহলে যাবো না।
-ঠিক তিনটের বেশি তুই আর লিখবি না?
-কথা দিচ্ছি।
-এটা নিয়ে তুই আর বেশি জল ঘোলা করবি না।
-আমার স্বার্থে আঘাত লাগলেই করবো, নচেত নয়।
-ঠিক আছে। আমি কথা বলে নিচ্ছি।
-বলো।
নিরঞ্জনদা ফোন করলো। অপর প্রান্তে বুঝলাম ফোনটা রিসিভ করেছে। কথা হচ্ছে। নিরঞ্জনদা আমার কথা ওনাকে বলছেন। মাঝে মাঝে আমার দিকে তাকাচ্ছেন। নিরঞ্জনদা বুঝতে পারছেন আমি সব ব্যাপারটা বুঝতে পারছি। প্রথমে উনি কিছুতেই মানছেন না। নিরঞ্জনদাও অনেকভাবে কথা বলে ওনাকে বোঝাতে চাইছেন। উনি কিছুতেই বুঝবেন না। শেষ পর্যন্ত নিরঞ্জনদা বললেন তাহলে আমার হাত থেকে গেমটা বেরিয়ে যাবে।
-এই ইনস্টলমেন্ট শেষ হলে আরো বেরোবে। আপনি পারলে আটকান।
নিরঞ্জনদার পরবর্তী কথা শুনে মনে হলো ভদ্রলোক একটু ব্যাকফুটে চলে গেলেন।
আমি চুপচাপ বসে আছি। নিরঞ্জনদা কথা বলে চলেছেন। শেষে ঠিক আছে, ধন্যবাদ বলে ফোনটা রাখলেন।
নিরঞ্জনদা আমার দিকে তাকালেন। মুখে তৃপ্তির হাসি।
-তুই আমাকে বাঁচালি।
-আমি বাঁচাবার কে।
-তুই জানিসনা অনি। পার্টি করছি। লতায় পাতায় সকলের সঙ্গে ভাব রাখতে হয়।
-এই ব্যাপারটা আমার নেই। আমি ব্যাবসা করতে বসেছি। নোট ফেলবো, ব্যবসা করবো। পারলে তোমাদের নিয়ে দু’চারটে লিখে টাকা ইনকাম করবো।
-তুইযে বললি হাই কমান্ডের সঙ্গে বসবি।
-প্রয়োজন পরলে বসবো। তুমি অতদূর এখনো পৌঁছতে পারোনি।
-তুই এইভাবে বলিস না।
-যা সত্যি তাই বললাম।
-ঠিক কথা তবু আমার কিছু ক্ষমতা আছে।
-ক্ষমতা থাকলে তোমাকে একটা সচিব বলবে তুমি শুনবে। কাল চলো ওর প্যান্ট আমি খুলবো।
-তুই এরকম করিস না।
-ছাড়োতো তুমি। বলোতো মালটা কে?
-তুই এভাবে বলিসনা।
-ওই যে বললাম তুমি নিরঞ্জনদা না হলে আরো রাফ ভাবে বলতাম।
-আবাসন সচিব।
-আবাসন সচিব! ওটার সঙ্গে তোমার কি সাঁট গাঁট।
-কেনো তুই চিনিস নাকি?
-তোমার সঙ্গে ওই দপ্তরের মন্ত্রীর কি রিলেসন সত্যি করে বলো।
-কেনো?
-ওর ওপর একটা লেখা লিখছি। যখন পঞ্চায়েত ছিলো তখন বহু বড় বড় কথা বলেছিলো। এখন সেখানেই প্রমোটিংয়ে সাহায্য করছে। শালা বহু কামিয়েছে।
নিরঞ্জনদা আমার হাত ধরে ফেললেন।
-কি হলো আবার।
-ওর জন্যই তোকে নিয়ে যাচ্ছি।
-তুমি খেপেছো। শালা পার্টিটাকে শেষ করে দিচ্ছে।
-আমি জানি কিন্তু ওর দোষ নয়। পার্টিকে মাসে মাসে আমাদের ডোনেসন দিতে হয়।
-তাবলে সরকারী সম্পত্তি ঝেড়ে দেবে!
-আরে ওর ওপর এখন প্রচুর প্রেসার।
-থাকবেই। দু’নম্বরী করবে মাল কামাবে আর প্রেসার ভোগ করবে না।
-মুখ্য সচিব, চিফ মিনিস্টার ফাইল চেয়ে পাঠিয়েছে। তুইতো সব নম্বর উল্লেখ করে করে দিয়েছিস।
-হ্যাঁ, আমার কাছে সব ডকুমেন্টস আছে।
-পেলি কোথায় ?
-গোয়েন্দাগিরি করছো? পারবে না।
-না না বিশ্বাস কর।
-সরষের মধ্যে ভূত। তুমি ভূত তাড়াতে পারবে না। বরং বেশি ভূতের জন্ম হবে।
নিরঞ্জনদা হো হো করে হেসে ফেললো।
-তোমায় একটা কথা বলবো নিরঞ্জনদা মনে কিছু করবে না।
-বল।
-তোমাদের অনেক মন্ত্রী-সন্ত্রী আমলাদের একটা বউ-এ পোষায় না। ওদের অনেক বউ-এর দরকার। আর জানোতো এটা সাপ্লাই আসে কোথা থেকে। আমি আমার জীবনের আঠারো মাস ওখানে কাটিয়েছি।
নিরঞ্জনদা চুপ করে গেলো। আমার মুখের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে।
-কি ভাবছো। অনি কি বিষ মাল।
-না। তোর ইনটেলেক্ট দেখে অবাক হয়ে যাচ্ছি।
-বটগাছ, অশ্বত্থ গাছ দেখেছো। ওদের লালন পালন করার কেউ নেই কিন্তু ওরা মাটি ফুঁড়ে ওঠে। ঝড়ে কোনোদিন কোনো বটগাছ কিংবা অশ্বত্থ গাছকে উপরে পরে যেতে দেখেছো?
-না।
-আমার আদর্শ এই গাছদুটো। আমি ওদের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়েছি। তোমরা আমার কি রি-এ্যাকশন নেবে।
-না আমি সেইভাবে বলতে চাই নি।
-তুমি হা করলে হাওড়া বোঝার ক্ষমতা আমার আছে। আমার জায়গায় মিত্রা হলে অন্য কথা ছিলো।
-আমি জানি যা ডিসিসন তুই নিবি ও নেবেনা তাই তোর সঙ্গে আলোচনা করছি।
-এবার আসল কথায় আসি।
-বল।
এই ডিলে তোমার কি লাভ?
-তুই এইভাবে বলিস না।
-শোনো আমি অমিতাভদা, বড়মা নই। এটা মাথায় রাখো।
নিরঞ্জনদা হো হো করে হেসে ফেললো।
-আমি একটা জেলা সভাধিপতি তুই আমাকে পাত্তাই দিচ্ছিসনা!
-তোমার মতো জেলা সভাধিপতি এই পশ্চিম বাংলায় ১৭টা আছে।
-জানি।
-তুমি আমার পাশে বসে যেতে পারছো। তারা স্বপ্ন দেখে। এটা মানো।
-তুই এটা বাড়িয়ে বলছিস।
-তোমার পাশের জেলার সভাধিপতিকে একটা ফোন করো। সে কি বলে দেখো। আমি তোমার পেছনে বলছি না।
-তাবলে তুই আমাকে একেবারে এলেবেলে পর্যায়ে নামিয়ে আনছিস!
-তোমায় একটা সত্যি কথা বলছি শুনে রাখ নিরঞ্জনদা। আমার লেখাটা তোমার হাই কমান্ডের অন্ততঃ একজন বড় মাথা প্রকাশ হওয়ার আগেই পরে ফেলেছে। আর সে পরা মানেই অন্ততঃ সাতজন মাথা জানে অনি এইটা একদিন নয় একদিন প্রকাশ করবে। তাতে তাদের কিছুটা উপকার হবে। সেখানেও কিছু নিয়মনীতি আছে তো। আমি কি বলতে চাইছি বুঝতে পারছো?
নিরঞ্জনদা আমার দিকে হাঁ হয়ে তাকিয়ে আছে।
-কি দেখছো?
-দাঁড়া দাঁড়া আমার হজম করতে একটু অসুবিধে হচ্ছে।
-হবে। কেনোনা তুমি একটা পরিবারের ছোটো ভাই। খাও, দাও, ফুর্তি করো। কি ভাবে সংসারটা চলছে তার খোঁজ খবর রাখো না। তোমারটা পেলেই তুমি খুশি। তাই তোমাকে যতটুকু দেওয়ার ততটুকু দেওয়া হয়েছে। তাতেই তুমি তিড়িং বিড়িং করছো।
-অনি!
-আর তোমার হাইকমান্ড পার্টিটা চালাচ্ছে। একটা নিয়ম-শৃঙ্খলার মধ্যে। তুমি দোষ করলেও পার্টির চোখে তুমি দোষী নও। যতক্ষণ না প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। আমি মলের কেসটায় এরকম দু’চারজনের প্রমাণ পার্টির হাইকমান্ডের হাতে তুলে দিলাম। ছিঁচকেগুলো তিড়িংবিড়িং করবে পার্টির হাইকমান্ড নয়।
-অনি!
-অনি বলে কোনো লাভ নেই। আমি যা করার করে দিয়েছি। ওদের তুমি বাঁচাতে পারবে না। ওরা সাসপেন্ড হবে। হয়তো পার্টি থেকে চিরবিদায় নিতে হবে। তুমি যদি তোমার রাজনৈতিক কেরিয়ার স্ট্রং করতে চাও তাহলে যা বলবো শুনে যাও। আখেরে তোমার উপকার হবে। তোমার গদিটা আর তিনবছর। তারপর কি করবে কিছু ভেবে রেখেছো।
-তুই কি বলছিস আমার মাথায় ঢুকছে না।
-একটু ভাবো। দীর্ঘদিন পার্টি করছো। তোমাকে আমি বোঝাবো এই ধৃষ্টতা আমার নেই।
-না মনে হচ্ছে তোর সঙ্গে আমাকে রেগুলার যোগাযোগ রাখতে হবে। তুই আমাকে দিন সাতেক সময় দে।
-দিন সাতেক নয় তুমি আরো বেশি সময় নিতে পারো। আমার সম্বন্ধে ভালো করে হোমওয়ার্ক করে নাও।
নিরঞ্জনদা হেসে ফেললো। তুই টিজ করছিস আমায়।
-তুমি দাদার সমসাময়িক তোমায় টিজ করবো! এবার আমার কাজের কথায় আসি। অনেক হ্যাজালাম।
-বল।
-রেজিস্ট্রি বুধবার করবো। সব রেডি করেছো?
-না।
-তাহলে ?
-দলিল তুই লিখবি।
-যা বাবা তুমি বললে সব রেডি করে রাখবে।
-চল লোকটাকে ডেকে পাঠাই। দলিলটা নিয়ে আসুক। তুই বানিয়ে নে।
-সেটা আগে করোনি কেনো।
-সময় পেলাম কোথায়। তুই যে ভাবে পরপর কাজ করে যাচ্ছিস। তারপর কালকে একটা আনন্দের দিন গেলো ভালো লাগলো না।
-ঠিক আছে গিয়ে দলিলটা আমাকে এনে দাও। আমি বানিয়ে নিচ্ছি। কালকে কলকাতায় থাকবে। পর্শু আমার সঙ্গে আসবে। এটা মাথায় রেখো।
-না আমি চলে আসবো।
-থাকলে ভালো করতে তোমার উপকার হতো।
-আবার এখানেও আমাকে ঝোলাবি।
-তোমার কি কাজ আছে বলোতো।
-তুই জানিসনা।
-আমার জেনে লাভ নেই। কাল একজনকে দাদার বাড়িতে ডাকবো। থাকলে তোমার উপকার হতো।
-কাকে?
-তোমার জেনে লাভ।
-উঃ তুই ভীষণ তেঁয়েটে।
হাসলাম।