Thread Rating:
  • 63 Vote(s) - 2.92 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
কাজলদীঘি শ্মশান/পীরবাবার থান--মামনজাফরান (জ্যোতি বন্দোপাধ্যায়)
অনাদিরা সবাই চলে গেলো, সঞ্জুর দুটো ছেলে রয়েছে, আমি বললাম সব লাইট জ্বেলে আর লাভ নেই যে কটা প্রয়োজন জ্বেলে রাখ। আমি আমার ঘরে চলে এলাম। নতুন পাজামা পাঞ্জাবী ছেড়ে আমার চিরাচরিত পাজামা-পাঞ্জাবী পরলাম, একটা সিগারেট ধরালাম, জানলাটার ধারে এসে বসলাম। লাইটটা ইচ্ছে করে নেভালাম না। ভাবছিলাম আজ বিকেলের ঘটনা, কেমন যেন সব ওলট পালট হয়ে গেলো, প্রত্যেকটা মানুষের জীবনে কিছু ইচ্ছে থাকে, সেই ইচ্ছেগুলো পূরণ করার জন্যই আমাদের ভাবনা চিন্তার পরিকাঠামোর রদ বদল ঘটে নিরন্তর। আমি আমার চিন্তায় মগ্ন, বড়মা বড়মার চিন্তায়, ছোটোমা ছোটোমার চিন্তায় আর মিত্রা আছে মিত্রাকে নিয়ে, ও জানে ওর অনি আছে। সবচেয়ে বেশি বিপদজনক এই নির্ভরশীলতা, তাও আবার অন্ধের মতো, তারমানে আমার ভালো খারাপ সব তোমার। মাঝে মাঝে মিত্রার ওপর রাগ হয়, অভিমান হয়, আবার দুঃখও হয়, সত্যিতো ওরই বা কি করার আছে, এই রকম একটা পজিশনে ও যে পরতে পারে এটা ও কোনোদিন ভাবে নি। কলেজ লাইফে ওকে যতটুকু দেখেছি, তাতে এটুকু বুঝতাম, মিত্রা পয়সা ওয়ালা ঘরের মেয়ে কিন্তু ওর মধ্যে কোনো দম্ভ কোনোদিন দেখতে পাই নি। তবে চলনে বলনে একটা বনেদিয়ানার ছাপ ওর মধ্যে সব সময় ছিল।
 
-কিরে একা একা কি করছিস।
ছোটোমা কখন পাশে এসেছে বুঝতে পারিনি। পোষাক বদলানো হয়ে গেছে, আমার কাছে এগিয়ে এলো, আমি সোজা হয়ে বসলাম।
-ওরা শুয়ে পরেছে?
-না বিছানা হচ্ছে।
-মিত্রা গেলো কোথায়?
-বাবা, এরি মধ্যে চোখের আড়াল করতে চাইছিস না যে।
-না সেরকম কিছু না। ওষুধগুলো খেয়েছে।
-হ্যাঁ।
-তুমি এই সময়।
-কেনো আসতে নেই বুঝি।
-এসো, বোসো। আমি খাটটা দেখালাম।
-না বাবা যাই অনেক কাজ, ভজু দিদির হাঁটু মালিশ করছে, কই রে আয় আর লুকিয়ে থাকতে হবে না।
মিত্রা ঘরে এলো। তোকে কি রকম সাসপেনসের মধ্যে রাখলাম বল।
মিত্রার পোষাক এখনো চেঞ্জ হয় নি।
-সব কিছু করে এসেছিস তো, এখানে কিন্তু কিছু পাবি না। সেই আগেরবারের মতো অবস্থা হবে।
-হ্যাঁ রে বাবা হ্যাঁ, ছোটোমাকে জিজ্ঞাসা কর।
-আমার জিজ্ঞাসা করার দরকার নেই, অসুবিধে হলে ও বাড়িতে গিয়ে বড়মার কাছে শুয়ে পর।
-উরি বাবারে কি হয়েছিস রে অনি তুই।
-কেনো।
-আজকের দিনে ও বড়মার কাছে শোবে।
-এটাতো আমার ঘর না এটাচ বাথরুম আছে সামলে দেবো।
-এটা কার ঘর।
হেসে ফেললাম।
-যাই বাবা তোর জিনিষ তুই সামলা।
-চলো তোমায় এগিয়ে দিয়ে আসি।
-না। আমি যেতে পারবো।
-নিচের দরজাটা বন্ধ করতে হবে তো।
আমি ছোটোমার সঙ্গে নিচে নামলাম।
-সব ঠিক আছে ও বাড়িতে।
-তোর ব্যবস্থার ত্রুটি থাকতে পারে।
-তখন আমার প্ল্যানগুলো সম্বন্ধে কিছু বললে নাতো।
-কি বলবো, সবিতো ঠিক করে রেখেছিস।
-তুমিওতো নিরঞ্জনদার মতো কথা বলছো।
ছোটোমা আমার দিকে তাকালো।
-দুপুরে কি স্বপ্ন দেখলি বললি নাতো।
-বলবো, পালিয়ে যাচ্ছি নাতো। মল্লিকদাকে জানিয়েছো।
-খালি মাথায় দুষ্টু বুদ্ধি কিলবিল করে না।
-তুমি খুব ভালো ব্রিফ করো।
-তোদের পাশে থেকে থেকে শিখে গেছি
আমি নীচু হয়ে ছোটোমাকে প্রণাম করলাম।
-অনেক দায়িত্ব তোমরা বারিয়ে দিলে।
ছোটোমা আমার কপালে চুমু খেলো
-তুই কি নিতে চাস নি।
-চাইনি বললে মিথ্যে বলা হয়, একটু সময় চেয়েছিলাম। মাটিটা এখনো সামান্য নরম আছে।
-আমরাতো আছি তোর ভাবনা কি। যা দরজা বন্ধ কর।
ছোটোমা ও বাড়ির বারান্দায় উঠলো আমি দরজা বন্ধ করে চলে এলাম।
মিত্রা খাটের ওপর বসে বসে পা দোলাচ্ছে।
-কি হলো রে জামাকাপড় ছাড়।
-তুই ছোটোমাকে বললি কেনো।
-কি বললাম।
-আমি পটি করেছি কিনা।
-আমি কি পটির কথা উচ্চারণ করেছি।
-ছোটোমা বোকা, না।
-বাবা গোসসা হয়েছে।
-আমার কোনো প্রেসটিজ নেই।
আমি এগিয়ে গিয়ে ওর দুটো গাল টেনে ধরলাম, কি রকম দেখতে লাগছে জানিস, হিরিম্বার মতো।
উঠে দাঁড়িয়ে আমাকে জাপ্টে ধরলো।
-কি হলো, জামা কাপড় ছাড়।
-বড়মা বারণ করেছে।
-কেনো।
-জানিনা।
-তাহলে কি হবে।
-তুই বল।
-ছেড়ে নে, কে দেখতে পাবে, কাল সকালে আবার পরে নিবি।
-ইসলাম ভাই একটা দারুণ নাইটি দিয়েছে, পরবো।
-হ্যাঁ।
-দাঁড়া আলমারি থেকে বার করি। মিত্রা আলমারি খুললো
-হ্যাঁরে অনি এটা কি রে।
ইসলাম ভাই-এর মেশিনটা দেখাচ্ছে।
-কেনো তুই জানিস না ওটা কি।
-তখন দেখেতো আমার আত্মারাম খাঁচা।
-কেনো।
-তুই কবে এসব ব্যাবহার করতিস। তারপর মনে হলো ইসলাম ভাই হয়তো তোকে রাখতে দিয়েছে।
-রেখে দে।
-এই দেখ ইসলাম ভাই-এর দেওয়া নাইটিটা।
টুপিস ফিতের ওপর পুরোটা ঝুলছে, হাল্কা আকাশী কালারের, মিত্রা বুকের ওপর রেখে বললো, ভালো লাগছে। আমি পায়ে পায়ে এগিয়ে গেলাম।
-একবারে হাত দিবি না।
-তাহলে শুয়ে পরি।
-শো না তারপর দেখবি।
-আমার ঘুম পাচ্ছে। কালকে ঘুমোতে দিস নি।
আমি খাটের কাছে চলে এলাম। চিতপটাং হয়ে শুয়ে পরলাম।
মিত্রা আলমারি বন্ধ করে কাপড় খুলতে শুরু করলো। আমি বিছানায় হেলে পরে ওকে দেখছি। সত্যি অনেক মেয়ের শরীরের সঙ্গে শরীর মেশালাম কিন্তু মিত্রার সঙ্গে যতবার শুয়েছি ততবারই একটা আলাদা স্বাদ উপভোগ করেছি, একটা আলাদা অনুভূতি। বার বার নিজের মনকে প্রশ্ন করেছি এটা কেনো। মিত্রার মতো তাদের দিক থেকেও সমান রেসপন্স পেয়েছি, তবু মিত্রা আলাদা কেনো।
মিত্রা ব্লাউজের বোতাম খুলছে, ভীষণ ইচ্ছে করছিলো ওকে গিয়ে জড়িয়ে ধরি, এতদিন ও আমার ছিলো না, আজতো ও আমার, সম্পূর্ণ আমার, তাহলে বাধা কোথায়, তবু উঠতে ইচ্ছে করলো না। ওর দিকে তাকিয়ে বসে আছি।
-বুবুন আটকে গেছে।
-কিরে।
-হুকটা সুতোর সঙ্গে প্যাঁচ খেয়ে গেছে।
-টেনে ছিঁড়ে দে।
-যাঃ, আয়না একটু খুলে দে।
আমি উঠে গেলাম, হুকটা সুতোর মধ্যে আটকে আছে, কিছুক্ষণ টানাটানি করলাম।
-একটা হুক খুলতে পারিস না।
-দুদিন গাদা গাদা খেয়ে যা মুটিয়েছিস টাইট হয়ে আছে।
মিত্রা হো হো করে হাসছে। কালকের থেকে দারুন খাচ্ছি বুঝেছিস, আবার আগামীকাল।
আমি হুকটা খুলে ফেললাম, একটু মাইটা টিপে দিলাম।
-তুই হাত দিলি কেনো।
-বেশ করেছি, আমার জিনিস আমি হাত দিয়েছি, তুই বারণ করবার কে।
মিত্রা আমাকে জড়িয়ে ধরলো। বুক খোলা, ব্রেসিয়ার পরা বুকটা আমার বুক ছুঁয়েছে।
-তুই বলছিস আমি তোর।
-হ্যাঁ, তোর বিশ্বাস হচ্ছে না।
-তুইতো এতদিন বলিস নি।
আমি ওর চিবুকটা ধরে মুখটা তুলে ধরলাম, চোখের কোল দুটো চিক চিক করছে।
-আবার কি হলো।
-জানিস বুবুন আজ আমার জীবনের স্মরণীয় দিন।
-আমারও।
-এই দিনটার জন্য কতদিন অপেক্ষা করেছি, বড়মা যেদিন ডেকে বললো, আমি বড়মাকে বললাম, ও আমাকে মেনে নেবে? বড়মা বলেছিলো যে তোর জন্য এত করতে পারে, সে তোকে না ভালবাসলে করবে কি করে। আমি বড়মার কথা বিশ্বাস করতে পারিনি। বিশ্বাস কর। সেদিন অফিস থেকে বেরিয়ে আসার পর তোকে পাগলের মতো ফোন করেছি, তোর ফোন অফ। তুই এতো বড়ো একটা কাজ করলি, ফার্স্ট সারপ্রাইজটা তোকে দেবো ভেবেছিলাম, তারপর ওই বাস্টার্ডটা ফোন করলো, ভাবলাম যাই আজই শেষ মোলাকাত ওর সঙ্গে। যাই একবার দেখা করে বলে আসি। যেতে আমাকে উল্টোপাল্টা কথা বললো, আমি তোকে নিয়ে শুই যা নয় তাই, আচ্ছা করে ঝেড়ে দিলাম, তোকে আবার ফোন করলাম, তোর স্যুইচ অফ। দিশেহারার মতো লাগলো। মল এলো, আমাকে দুজনকে নিয়ে গেলো পিয়ারলেস ইনে, খাওয়ালো, বললো ম্যাডাম আপনি ভুল করছেন, অনি আপনাকে ইউটিলাইজ করে ছুঁড়ে ফেলে দেবে, দেখলেন না কি ভাবে আমাকে দিয়ে লিখিয়ে নিলো, আমি ওকে ছাড়বো না এটা মনে রাখবেন, আমাকে কয়েকটা ব্ল্যাঙ্ক স্টাম্প পেপারের ওপর সই করতে বললো, আমি করি নি। সোজা বেরিয়ে এলাম, কি মনে হলো জানি না, মাথার মধ্যে খালি চক্কর কাটছে সত্যি তুই আমাকে বিট্রে করবি, নিজেকে ঠিক বোঝাতে পারলাম না, সোজা চলে গেলাম ক্লাবে। আকণ্ঠ মদ গিললাম, ভাবলাম আর কিছু না হোক কয়েকঘন্টার জন্য রিলিফ পাওয়া যাবে। তারপর জানি না, সকালে বুড়িমাসির কাছ থেকে সব শোনার পর আমি নিজেকে আর ধরে রাখতে পারি নি, বার বার একটা কথাই মনে হলো, মুরগীকে তুই দানা খাওয়াচ্ছিস জবাই করবার জন্য, আমার শেষ বিশ্বাসের আশ্রয়টুকু ভেঙে যেতে বসেছে। আমি সোজা চলে এলাম দাদার বাড়িতে, বিশ্বাস কর তোর কাছে জবাবদিহি করতে এসেছিলাম, তোকে মারতে চাই নি। মিত্রা ঝড় ঝড় করে কেঁদে ফেললো।
-কাঁদিস না, নিজেকে নিজের ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে, সেদিনের ঘটনায় আমি রাগ করিনিতো, আমার একটুও অভিমান হয় নি।
-হয়নি বলেই তুই রাতে আমাকে ওইভাবে বুক দিয়ে আগলে রাখতে পেরেছিলি।
-মিত্রা আমার মিত্রা, আমি মিত্রাকে আরো গভীর ভাবে বুকের সঙ্গে চেপে ধরলাম, তুই কাঁদিস না আজ তুইই আমার সবচেয়ে বড় বল ভরসা, তুই দুর্বল হয়ে গেলে আমি দিশেহারা হয়ে পরবো।
-আমি আর কোথাও যাবো না, তুই আমাকে দাদার বাড়িতে রাখার ব্যবস্থা কর।
-তোর বাড়ি।
-ওই বাড়িতে বিষাক্ত নিঃশ্বাস আছে।
-না। সব ঠিক হয়ে যাবে দেখিস।
-হবে না বুবুন। আমি জানি।
-ঠিক আছে, এখন তাড়াতাড়ি চেঞ্জ করে নে। রাত হোলো।
আমি ওর চোখ মুছিয়ে দিলাম। কেঁদে কেঁদে চোখটা লাল করে ফেলেছে।
পেছন দিক ফিরে বললো, খুলে দে।
আমি ওর ব্রার ফিতেটা খুলে দিলাম, আবার একটু হাত দিলাম, ও হাত সরিয়ে দিলো না।
-তাড়াহুড়ো করিস না আজকে অনেক প্ল্যান আছে মাথায়।
-সে কি রে, কিসের প্ল্যান।
-করার সময় দেখতে পাবি।
-ঠিক আছে তুই প্ল্যান ভাঁজ আমি একঘুম দিয়ে নিই।
মিত্রা আমার দিকে বাঁকা ভ্রু নিয়ে তাকালো।
আমি গিয়ে খটটাঙ্গে চিত হোলাম।
-বড় লাইটটা নিভিয়ে দিয়ে ছোটো লাইটটা জ্বালাস।
-আমি পারবো না, তুই জ্বালিয়ে দিয়ে যা।
মিত্রা শায়া খুলেছে, উলঙ্গ অবাস্থায় মিটসেফের কাছে দাঁড়িয়ে নাইটিটা দেখছে।
-মিত্রা!
মিত্রা ঘুরে তাকালো।
-ওই দেখ।
-কি!
-তোর পায়ের কাছে!
[+] 3 users Like MNHabib's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: কাজলদীঘি শ্মশান/পীর সাহেবের থান--মামনজাফরান (জ্যোতি বন্দোপাধ্যায়) - by MNHabib - 25-02-2022, 08:36 AM



Users browsing this thread: