Thread Rating:
  • 89 Vote(s) - 3.45 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance মন ২ - কাহিনীর নাম- শিবের শিব প্রাপ্তি- সমাপ্ত
চলে গেলো মা। কি হবে এখন আমার? আমি তো এটার ভয় ই পাচ্ছিলাম। কথা কি ছিল, ও ওর মতন থাকবে আর আমি আর ছেলে আমাদের মতন। ও কেন এখন তাহলে শুতে আসছে আমার কাছে? গা ঘিন ঘিন করে উঠল আমার। একে তো ও, ছেলে, আমার নিজের ই গা ঘিন ঘিন করে। তারপরে যতই অঞ্জনা বড়লোকের মেয়ে হোক, রাকার সাথে শারীরিক সম্পর্ক তো ছিল? ওয়াক!!!! ভেবে পাচ্ছি না, শুতে আসছে কেন রাকা আমাদের সাথে। শুতে আসছে???????  না না, তেমন হলে রাকা,বাপি আর ভাই শুয়ে পড়ুক, আর আমি মা আর ছেলে শুয়ে পড়ব। যাই মা কে বলি।

আমি উপরে গিয়ে দেখি, বাপি ছেলেকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে, আর ততক্ষনে মা একটা দামী চাদর বিছানায় পেতে ফেলেছে। ওর সাথেই ম্যাচিং করা বালিশের ওয়ার, মা লাগিয়ে একেবারে রেডি করে ফেলেছে। ড্রেসিং টেবিল এ একটা গোলাপের বোকে সাজানো। এসব দেখছি আর মাথা গরম হয়ে যাচ্ছে আমার। বাপি আছে কিছু বলতেও পারছি না আমি মা কে। বাপির কোল থেকে ছেলেকে নিতে বাপি চলে গেলো। ততক্ষনে মা বিছানা র উপরে খানিক গোলাপের পাপড়ি ছড়িয়ে সেটা কে ফুলশয্যার খাট বানিয়ে ফেলেছে। উফফ দেখলেই রাগ ধরে এই সব। আমি জানি কিছু হবার নয়। কারন আমি রিপালসিভ এই ব্যাপারে। কিন্তু সবাই কি ভাববে? ছিঃ। আমি ছেলেকে শুইয়ে দিলাম বিছানায়। তারপরেই মা কে ধরলাম।
-     ও মা!!

মা আমার দিকে তাকিয়েই বলল,
-     এই নিয়ে আর কোন কথা নয়। ঘ্যানঘ্যানানি মেয়ে একদম পছন্দ নয় আমার। তুই তো এমন ছিলিস না?

কি আশ্চর্য্য কথা তো। ভাবছি, আমাকে তুমি ফাঁসালে, আর কিছু বললেই, আমি ঘ্যান ঘ্যান করছি? মা কে আবার কিছু বলতে যেতেই একেবারে রে রে করে তেড়ে এলো মা। বলল,
-     একদম চুপ করবি। না হলে তিন থাবড়া খাবি। আর শোন, তোর আলমারি তে, রাকার রাতে পরার একটা ব্ল্যাক পাতলা শর্টস আর একটা সাদা টি শার্ট রেখে দিয়েছি। ও এলে ওকে ওটা পড়তে বলিস। আর আমি তোদের তিন জনের ঢাকা রেখে দিয়েছি। পায়ের তলায়। দরকারে নিয়ে নিস।আজকে আমি করে দিলাম। কাল থেকে নিজে করবি এই সব।
-     মানে? আমি কেন বলতে যাব? ও কোথাকার খয়ের খাঁ যে আমাকে এগিয়ে দিতে হবে ওকে এই সব ওর হাতে হাতে? আর আমি বুঝছি না, আমি এসব করবই বা কেন? মা আমি এসব জানিনা, কেন বুঝতে পারছ না? এর পর থেকে নিজে করব মানে কি? মানে কালকেও ও এখানে শুতে আসবে নাকি?
-     কারন তুই ওর বউ। তোকে শিখতে হবে। যখন তোর বাপি আমাকে বিয়ে করেছিল, আমি রান্না করতেও জানতাম না। তো কি হয়েছে? শিখেছি আমি। আর আসবে নাই বা কেন এখানে ও কালকে? তোর বাবার তিন সন্তান। রাকা , এক সন্তানের স্বামী। পূর্ন অধিকার আছে এ বাড়িতে ওর।

মেজাজ গরম হয়ে গেল। মনে হলো, তোমার জামাই পুরো রুদ্রপুরের অধিকার নিক। ব্যস আমাকে আর আমার ছেলেকে ছেড়ে দিক। জেদ ধরে বসে গেলাম আমি বিছানায়,
-     অদ্ভুত তো!! আমি কিচ্ছু করব না। ব্যস বলে দিলাম। আমার কোন দায় নেই।

মা কিছু বলল না। সেই অদ্ভুত হাসতে হাসতে বলল,
-     সে তুই যদি না পারিস ওকে বলে দিস। ও নিজের ব্যবস্থা করে নেবে। আমার কোন মানসিক হেল্প তুই পাবি না।

আচ্ছা ঝামেলা হলো তো! এর পরে ওই টুকু শর্টস পরে আমাদের কাছে শোবে ও? ছিঃ, একেবারে থাই অব্দি দেখা যাবে। আমার তো ভেবেই গা ঘিন ঘিন করছে, জানিনা দেখলে কি হবে। দাঁড়িয়ে গিয়ে, মা কে জোর দিয়েই বললাম,
-     আর তুমি ওকে এই সব শর্টস দিয়েছ কেন। এতে তো সব বেরিয়েই থাকবে শরীরের।
-     হ্যাঁ। রাতে শোবে একটু হালকা হয়ে শোবে না? আজকে তোকে এই সব শাড়ি টারি পরে শুতে হয়। কিন্তু, কাল থেকে আমি তোর জন্য নাইট ড্রেস কিনে এনেছি, পড়বি।

মায়ের মাথা টা খারাপ হয়ে গেছে একেবারে। মা ভুলে গেছে আমি কি ছিলাম। কেন এই সব বলছে মা। মা আমাকে পরিষ্কার ব্ল্যাক মেল করছে আমি বুঝতে পারছি এবারে। মা কে বললাম,
-     ও হালকা হয়ে শোবে মানে? আমি একদম পছন্দ করি না হালকা হয়ে শোয়া অন্য কারোর সাথে। না না তুমি ওর জন্য কোন ফুল প্যান্ট জাতীয় কিছুর ব্যবস্থা কর। আমি একবার বাথরুম যাই। ব্রা টা লাগিয়ে আসি।

মা অবাক হয়ে গেলো। আমার হাত টা টেনে ধরল মা । বলল
-     ব্রা পরতে যাচ্ছিস কেন? ঠিক ই তো আছে। সারা রাত কেউ ব্রা পরে থাকতে পারে নাকি?

আচ্ছা পালটি বাজ তো আমার মা!! তখন বাপি বা রাকা থাকলেও বলত ব্রা পরে নিতে। এই কিছুদিন আগেই, একটা রবিবারে, মা আমাকে ব্রা পরে নিয়ে বলল, বাড়িতে ভাই ছিল বলে। হ্যাঁ মানছি, আমার ব্রেস্ট বড়। কিন্তু এখন আবার আটকাচ্ছে। রাকা তো বাইরের লোক। বললাম,
-     মেয়ের বিয়ের আনন্দে সব গুবলেট হয়ে গেছে তোমার। তুমি ই তো বলতে রাকা আসছে ব্রা টা পরে থাকবি।
মা হেসে ফেলল এবারে। বলল
-     একেবারে আমার সরলা। ওরে তখন কার রাকা আর এখন কার রাকা এক নাকি?
-     যা বাবা, আলাদা কি?
-     এই রাকা তোর স্বামী বুঝলি?
-     কী???????
-     স্বামী, মানে বর । স্বামির কাছে কি পরলি না পরলি কি ম্যাটার করে?
ঝন ঝন করছে মাথা আমার রাগে। স্বামী আবার কি কথা? ও কি আমার প্রভু নাকি? যে স্বামী বলছে মা? অদ্ভুত তো!  শাঁখা, পলা আর এই টুকু সিঁদুরে স্বামী হয়ে গেল? সে না হয় মায়ের জন্য হলো ও। কিন্তু এই সব কি কথা আবার? আর কি পরলি না পরলি ম্যাটার করে না মানে? আমার মা পাগলে গেছে একেবারে। নিজের মেয়েকে এই সব বলছে? আমি একটা মেয়ে আর রাকা একটা ছেলে, মা কেন বুঝতে পারছে না? মা কে বললাম,

-     আমি না তোমার কথা কিচ্ছু বুঝতে পারছি না। আমি সেই রকম মেয়ে নই, যে রকম তুমি বা বোন। তাও তো চেষ্টা করছি। ও মা প্লিস বোঝ না একটু খানি। আমি কি তোমার মতন নাকি? আর আমার অস্বস্তি হয় কারোর সামনে ব্রা না পরে থাকলে। প্লিস এই সব বলো না তো আর।
-     কিচ্ছু যায় আসে না তাতে। তুই এখন কমপ্লিট একটা মেয়ে। ছেলে চেয়েছিলি। পেয়েছিস। আমি চেয়েছিলাম আমার মেয়ের স্বামী হোক। সেটাও পেয়েছিস। এখন স্বামী আর সন্তান নিয়ে তোর ভরা সংসার। তোর সমস্যা টা এখন মানসিক। সেই সমস্যা কাটিয়ে এখন এদের এক করে কি ভাবে রাখবি তোর হাতযশ। ভগবান বানিয়ে তো দেন, কিন্তু ধরে রাখতে কোন সাহায্য করেন না। অতএব যা বুঝবি তুই। আমি পাশে থাকতে পারি। কিন্তু এর বেশী আর কি করব?

মা আমার দিকে খানিক তাকিয়ে রইল, হয়ত চাইল আমি মায়ের কথা গুল বুঝি। আমি তো হাঁ হয়েই আছি। এতো এতো সুইং করছে মায়ের কথার শট গুল, আর আমার নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। আমাকে ওই রকম দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বলল,
-     যাই হোক, এখানে ও শুলে অসুবিধা নেই তো? শুধু পা অব্দি কিছু পরলে ঠিক আছে। তাই তো?
-     না একদম না। তুমি কিছু ওকে বলবে না তাই আমি বললাম তাহলে ঠিক আছে। আজকে শুলে শুক ও।
-     ও তবে তোর বাপির লুঙ্গি দিচ্ছি একটা। নতুন আছে।

ছ্যাঃ ছ্যাঃ। লুঙ্গী উঠে গেলে আব্রু ইজ্জত আর কিচ্ছু থাকবে না। জানিনা ছেলেদের কি হয়, কিন্তু আমার নজরে আসলে মনে হবে আমার ইজ্জত চলে গেল। এহ, কি নোংরা লাগে। ছিঃ ছিঃ ছিঃ ছিঃ। মাকে একবারে রুখে গেলাম আমি,
-     কি, লুঙ্গী? ছ্যাঃ, ওর থেকে শর্টস ভাল। আর আমি বের করে দিতে পারব না ও এলে আলমারি থেকে। তুমি বের করে রেখে দাও বিছানার উপরে।

তখন নীচে রাকার আওয়াজ পেলাম। মা তো পড়িমরি করে ছুটে চলে গেল। এই এক আজব হয়েছে আমার মা। কাল অব্দি রাকা আসলে, এমন হোঁচট খেয়ে দৌড়ত না। আজকে কি হলো একেবারে মাথায় বসিয়ে নিল? কি আমার বালের জামাই রে? ওই বালের জামাই আগে হয়ে গেল আমার থেকে? ভারী মুশকিল এ পরলাম আমি। এখন ওকে আলমারি থেকে সব কিছু বের করে দিতে হবে, যাতে ও সেইগুলো পরে? না বাবা, ওই সময়ে আমি হয় রাগে ফেটে পরব, না হলে লজ্জায় মরে যাব। তারপর আমার ছেলের কি হবে? সুমনার হাতে পরবে। না না লজ্জায় মরে যাওয়া কাজের কথা নয়। রাকার পরের বউ টাও মরে গেলে ওকে আর কেউ বিয়ে করবে না। ভয়ে, রাকা আসার আগেই, আমি তাড়াতাড়ি আলমারি থেকে বের করে নিয়ে রেখে দিলাম বিছানায়, শর্টস টা আর টি শার্ট টা।

আমি দাঁড়িয়ে রইলাম, স্থানুর মতন। মানে সামনে যেটা ঘটতে চলেছে, সেই ব্যাপার টাই হজম হচ্ছে না আমার। মনে হচ্ছে আমার মা এই যড়যন্ত্র টা করল আমার সাথে। ঠিক আছে আমি মেনে নেব যদি আজকের দিন টা হয় শুধু। কিন্তু মায়ের মতি গতি তো ভাল ঠেকছে না আমার। আমাকে রাকার হাতে তুলে দিলো? আমি কি কোন মাল পত্র নাকি? বিয়ে হলে কি এমনি ই হয়? মেয়েকে তুলে দেয় ছেলেটার হাতে? আমার কোন চাওয়া নেই? মানে না চাইলেও ওর হাতে থাকতে হবে আমাকে? আমার ঘর টা সুদ্দু রাকার হয়ে গেল? ও চাইলেই আমাকে আর ছেলেকে যেখানে চাইবে নিয়ে যেতে পারে? জোর করলেও মা কিছু বলবে না আমার হয়ে? আমি তো কিছু বলতে পারব না আর। ছেলের সামনে রাকা কে কিছু বলব না কথা দিয়েছি আমি। এ কেমন নিয়ম রে বাবা। মেয়েদের এতো ঝামেলা থাকে? উফফ কেন যে বিয়ে টা করতে রাজী হলাম মরতে? 
[+] 10 users Like nandanadasnandana's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: মন ২ - শিবের শিব প্রাপ্তি অধ্যায় চার- নতুন পর্ব ২১ - by nandanadasnandana - 19-02-2022, 11:42 AM



Users browsing this thread: 3 Guest(s)