Thread Rating:
  • 89 Vote(s) - 3.45 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance মন ২ - কাহিনীর নাম- শিবের শিব প্রাপ্তি- সমাপ্ত
আগের পর্বের কিছু অংশ......

আমি ওকে আটকে দিচ্ছিলাম ততই ও রেগে যাচ্ছিল। ফোঁস ফোঁস করছিল। সিনেমা শেষ হবার আগেই আমাকে নিয়ে বেরিয়ে এলো ও। তখন রোদ পরে গেছে বেশ। কি যে করে ছেলেটা আমি বুঝতে পারি না। যখন ওর বাড়ি এলাম তখন আন্টি কাজ থেকে ফেরেন নি। একটা কথাও বলে নি রাস্তায়। আর স্কুটার টার প্রান বেরিয়ে যাবে এমন জোরে চালালো। আক্কেলহীন ছেলে একেবারে।
    
                                                                       পর্ব কুড়ি
ঘরে এসে চাবি খুলে কোন কথা নেই। সোজা পিছনের বাগানের পোড়ো বাড়িতে। আমি কই কই করে পিছনে পিছনে যাচ্ছিলাম।
-     কি রে? ওই দেখ। কথা নেই কিছু। চললি কোথায়। দাঁড়া??? আমি শাড়ি পরে আছি তো। দৌড়োতে পারছি না তোর মতন। রাকা!!! শোন!!!!! উফফ কি রাগ বাবা। কই রে??

কে কার কথা শোনে। সে দৌড়ে চলে গেল আমাদের আড্ডার জায়গায়, পোড় বাড়িতে। আমার বুক ধকধক করছিল।

আমি বাগানের রাস্তা ধরে এগোতে লাগলাম। ওকে দেখলাম সেই ঘরে ঢুকে গেল। এতো রাগলে হয় নাকি? কি করে রাগ ভাঙ্গাই এখন আমি ওর? রাগ তো করে না আমার উপরে। মানে এখন আশা করে আমার উপরে অনেক কিছু। কিন্তু কি ভাবে ওকে বোঝাই ওর আশা আমি পূর্ন করতে পারব না। উফ আগে ছিল ভাল। এখন ওই সব চিন্তা ওর মাথায় ঘুরছে সর্বদা। সব দিলেও তো শান্তি নেই। একেবারে বাচ্চাদের মতন করছে শুয়োর টা। আমি ততক্ষনে ঘরে ঢুকে গেলাম। ঢুকে দেখি যেখানে ওর এমপ্লিফায়ার টা থাকত সেই টেবিলে ঝুঁকে দাঁড়িয়ে আছে আমার দিকে পিছন করে। হাঁপাচ্ছে রীতিমত। আমার ভয় করছে এবারে। কি হলো কি ওর?

নিজেকে একটু স্থির করলাম আমি। বুঝে গেছি, টিপিক্যাল পুরুষ ও। ওকে শান্ত না করলে কোন দিকেই মন দিতে পারবে না ও। রাগে ফুঁসবে। সব থেকে জোর যার উপরে, তার কাছ থেকে সিনেমা হল এ রিজেকশন ও মানতেই পারছে না। কিন্তু ও যা চাইছে, আমি দিই কি করে? চুমু খাবে ও আমি জানি। কিন্তু ওর হাত আমার শরীরে ঘোরে। ও কেন বুঝছে না, আমি তো ছেলে ছিলাম। আমার কি এই গুলো ভালো লাগে? আর ওকে সুখ আনন্দ দিতে পারব না জেনেই আমি ওর থেকে পিছিয়ে আসছি। সাড়া জীবন ও পস্তাবে আমাকে নিয়ে থাকলে। ধীরে ধীরে এগিয়ে গেলাম আমি ওর দিকে। কাঁধে হাত রাখলাম।

ঝিনকে ছুঁড়ে দিল আমার হাত টা। আমার দিকে ফিরল যেন খেয়ে ফেলবে আমাকে। আমার দিকে তাকিয়ে আছে একেবারে রেগে। একেবারে বাচ্চা ছেলেদের মতন ঠোঁট ফুলিয়ে আছে। কেমন দেখতে লাগে?  রাগে ফোঁস ফোঁস করছে আর এদিকে ঠোঁট ফুলিয়ে আছে। আমি হেসে ফেললাম ওকে ওই ভাবে দেখে। কি জানি, আমার হাসি দেখে কি ভাবল ও। আমাকে জাপটে ধরে আমার মুখের কাছে ওর মুখ টা নামিয়ে আনল। ঘটনার আকস্মিকতায় আমিও ঘাবড়ে গেলাম। ইন্সটিঙ্কট এই আমি ওর মুখ টা আমার দুই হাতে আটকে ধরলাম যাতে আমাকে চুমু খেতে না পারে। আর ও আমাকে জোর করে চুমু খেতে চাইছে। আমি যত ওর মুখ টা সরিয়ে দিচ্ছি আমার থেকে ও ততই বল্পুর্বক আমাকে চেপে ধরছে। ও যেন বিশ্বাস করতে পারছে না সেটা, যে আমি ওকে চুমু খেতে দিচ্ছি না।

ছেড়ে দিল আমাকে। হাঁপাতে লাগল খুব। আমিও হাঁপাচ্ছি। আমি আঁচল টা ঠিক করে নিলাম সেই ফাঁকে। টানা হেঁচড়া তে, কাঁধের পিন টা ছিঁড়ে গেছিল। বুঝতে পারছি না এবারে।ও হাঁ করে তাকিয়ে ছিল, আমার খুলে যাওয়া আঁচলের ভিতরে যা ছিল তার দিকে।কেমন লাগছে এবারে আমার।  না ভয় পাচ্ছি না। খুব বেশী হলে ও কত দূর যেতে পারে আমি জানি। আর চরম দূরে গেলেও আমার আপত্তি নেই। জানি ব্যাথা পায় মেয়েরা। সেটা সয়ে নেব আমি, কিন্তু সামান্য দূর ও আমি আলাউ করতে রাজী নই আর। আজকে না হয় হয় ব্যাথা পাব আমি, কিন্তু এটা হলে সারা জীবন ও আমাকে নিয়ে ও ব্যাথা পাবে,জ্বলব দুজনাই। না পারবে আমাকে গিলতে না পারবে ওগরাতে। ওকে বললাম
-     এই কি হয়েছে রে তোর? এই রকম করছিস কেন তুই?

সাড়া দিল না ও। আমার দিকে চেয়ে আছে।আমার প্রশ্নে ওর চোখে মুখে অবজ্ঞার ছাপ স্পষ্ট। মানে ও যেটা করছে, সেটার কৈফিয়ত ও দেবে না আমাকে। মানে দেবার প্রয়োজন কি ওর? ওর জিনিস এ ও যা খুশী করবে তাতে কার কি?  তাই ওর এই কাজের জন্য আমাকে জবাব দিহি করবে কেন ও? এই রকম ভাব নিয়েই দাঁড়িয়ে ছিল ও। আমি ভাবছি, এ আবার কেমন পুরুষ ইগো। আমি কি সম্পত্তি নাকি ওর। আমাকে বলবেও না, কেন ওমনি করছে আমাকে? বলতে পারে আমার তোকে চাই। সেটাও তো বলছে না। শুধু ব্যস চুমু খাবে। কোন পারমিশন নেবে না। ওর ইচ্ছে মাফিক হবে ব্যাপার টা, আর সেটা হচ্ছে না বলেই রাগ এতো। আমি শাড়ির আঁচল টা কাঁধে চেপে ধরে দাঁড়িয়েছিলাম, ওর দিকে চেয়ে। রাগ ধরছে এবারে আমার ওই শুয়োর টাকে। কিন্তু ওর তাতে বয়েই গেছে। ও সহসা আমার আমাকে চেপে ধরল। আমি আর ওর সাথে যুদ্ধে গেলাম না। পারছিলাম ও না যুঝতে আর। নিজের মুখ টা হাতে চেপে ধরে রইলাম শুধু। ও আমার ঠোঁট দুটো না পেয়ে, গলায় বুকের উপরে মুখ টা ইচ্ছে করে ঘষতে লাগল যাতে আমি ওকে চুমু খেতে দি। আমি তাও দিলাম না। মনে মনে বলছিলাম,

-     তুই আমাকে আজকে মেরে ফেললেও আমি তোকে চুমু খেতে দেব না। ভাল করে বল, চা ঠিক ভাবে, তাহলে ভাবব। কিন্তু এ ভাবে দেব না তোকে আমি।

আমার ঠোঁট না পেয়ে ক্ষেপে গেল একেবারে। প্রথম বার কথা বলল, এতোক্ষন পরে,

-     শিব, ঝামেলা করিস না। আমাকে চুমু খেতে দে। না হলে আরো জোর করব কিন্তু বলে দিলাম

বোঝ!! এ কি রকম অধিকার। আমার ভাল লাগা মন্দ লাগা নেই? ব্যাস ও চাইছে বলে আমাকে চুমু খেতে দিতে হবে? বন্ধু আবার বন্ধু কে এই ভাবে সেক্স এ ভরা চুমু খায় নাকি? এটা ভালবাসা নয় এটা ওর লালসার জেদ। রাগ ধরে গেল আমার। বললাম
-     দেব না।

ফেটে পরল ও রাগে। আমার হাত টা মুচড়ে ধরল। আমি সেটা আলাউ করে দিলাম। না দিলে হাতে লাগত আমার। আর আমার মধ্যে শক্তি অবশিষ্ট বিশেষ ছিল না। আমি ঘুরে গেলাম। বুঝতে পারছি না ওকে কি ভাবে শান্ত করব আমি। ও আমার হাত টা মুচড়ে ধরে আমাকে ঘুরিয়ে নিয়ে নিজের কাছে টেনে নিল। আর অন্য হাত টা ওর বাকি হাতে শক্ত করে হরে রইল। আজ থেকে বছর চারেক আগে হলেও আমি ওর সাথে কিছু টা লড়তে পারতাম। কিন্তু এখন শাড়ি পরে, আর ইস্ট্রোজেনের কৃপা তে সেটা সম্ভব হয়ে উঠছে না। আমি কিছু বলার আগেই ও দাঁতে দাঁত চেপে বলল
-     কি বললি? দিবি না?
-     উহহহ মা গো!!! লাগছে রাকা আমার।

ও শুনলোই না। আমার ঘাড়ে, কাঁধে, ইচ্ছে করে নিজের জিভ টা চালাতে লাগল। আমার দুটো হাত ই ওর হাতে বন্দী। একটা মোচড়ানো অবস্থায় আরেক টা, ওর হাতের মুঠোয়। আমি ছটফট করছিলাম জাস্ট। নিতে পারছিলাম না ওর এই অত্যাচার। মনে হচ্ছিল রাজী হয়ে যাই। পারছিলাম না ওর এই ডাক টা উপেক্ষা করতে। মনে হচ্ছিল, ওর তো দোষ নেই। আমি বেশ সুন্দরী তারপরে ওর সব থেকে কাছের মানুষ। আমাকে চাওয়া টা ওর দোষ না। বা আমাকে কৈফিয়ত দিতে না চাওয়া ওর অসভ্যতা হতে পারে না। এটা তো ওর অধিকার। কিন্তু পরবর্তী জীবনের চিন্তা আমাকে আবার শক্ত করে দিল। ও আমার ঘাড়ে মুখ গুঁজেই বলল,
-     লাগুক। আমি আগে যেমন চাইব তেমন চুমু খাব তারপরে ছাড়ব।

উফ এখনো ধরে রেখে দিয়েছে ও নিজের মনে। আমি কাতর হয়ে অনুরোধ করলাম ওকে
-     লাগছে খুব আমার। প্লিস ছেড়ে দে!!! পায়ে পরি তোর আমি।

ছেড়ে দিল আমাকে ও। আমি এগিয়ে গেলাম দরজার দিকে। ওর দিকে তাকালাম ও না আমি। মনে একটা অদ্ভুত কষ্ট। এই কী প্রেম? এমন ই কি ভালোবাসা? ব্যাস ওর ইচ্ছে মতন ও আমাকে ওই সব করবে, আর আমি না দিতে চাইলে এতো রাগ? আমাকে কষ্ট দেবে? ওকে ঘুরে বললাম,

-     বেশ আমি চলে যাচ্ছি। আমাকে ডাকতেও তুই আসবি না। কষ্ট দিলি আমাকে খুব।

আমি চলেই যাচ্ছিলাম। কিন্তু ওই যে ওকে ছেড়ে যেতেও ইচ্ছে করে না। ইচ্ছে করছিল ও ছুটে এসে আমাকে থামাক। থামাল, কিন্তু পিছন থেকে আমার চুলের গোছা টা পাকিয়ে টেনে ধরে। আআআহহহহহহ। চোখে জল চলে এল আমার।
-     আআআআআহহহ রাকা!!!!!!

তাকিয়ে রইলাম আমি ওর দিকে তাকিয়ে চোখে জল নিয়ে। ফুঁপিয়ে উঠলাম আমি। ওকে বললাম আমি ফুঁপিয়েই
-     আমার ব্যাথা লাগে না?

রাকা যেন একেবারে থেমে গেল। আমার চোখে জল দেখে ও যেন কেঁপে গেল একটু। আমাকে জাপটে টেনে নিল বুকে। ওর এই টেনে নেওয়া তে কোন লালসা ছিল না একেবারেই। কাঁদতে কাঁদতেই মনে মনে আমি খুশী হলাম। ওকে জড়িয়ে ধরলাম। ও আর আমাকে জোর করছে না। বরং অনেক আদরে আমার মাথায় চুলে পিঠে হাত বোলাচ্ছে। আমিও পুরোন বন্ধু কে ফিরে পেয়ে জাপটে ধরে রয়েছি। ওর ভিতরের পুরুষ টাকেই আমার ভিতরের পুরুষ আর নারী দুটোই ভয় পায়। মনে হচ্ছে এবারে আগের রাকা টা ফিরে এলো। চোখের জল তখনো বেরোচ্ছে আমার।সাহস করে জিজ্ঞাসা করলাম আদুরে গলায়,

-     এবারে শান্ত হয়েছে রাকা বাবু?
-     হুম।

তারপরে একটু পরেই বলল
-     তোর ব্যাথা লাগল?

ওর বুকে থেকেই বললাম
-     হুম, চুল ধরে টানলি কেন?  

আমাকে বুকে আরো চেপে ধরে বলল
-     সরি, আমার রাগ উঠে গেছিল। তুই চুমু খেতে দিচ্ছিলি না কেন?

আমি ওকে ছেড়ে দরজার কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম। মনে হলো ওর সাথে আমার কথা বলার দরকার। ওকে ছাড়তে তো পারব না আমি কোন ভাবেই। কিন্তু ওর এই ব্যাপার টা বন্ধ করতে হবে, তার থেকেও আগে বোঝাতে হবে আমাদের এই ব্যাপার টার কোন ভাবেই কোন ভবিষ্যৎ নেই। ওকে এই ব্যাপার থেকে বের করে দিতে হবে। তারপরে ও যা ভাল বুঝবে। ওকে বললাম আমি
-     কেন দেব তোকে আমি চুমু খেতে। তুই কি আমার বয় ফ্রেন্ড? না আমি তোর গার্লফ্রেন্ড?

আমার কথা শেষ ও হলো না। ও দুম করে বলে বসল
-     হতে কে আপত্তি করেছে?

অবাক হয়ে গেলাম আমি। ওকে বলে উঠলাম,

-     মানে তুই কি পাগল হয়েছিস নাকি? ছোট থেকে তুই আমাকে দেখছিস। আমি মেয়ে নাকি যে তুই আমাকে গার্লফ্রেন্ড করবি?
-     কই আমার তো কিছু আলাদা মনে হয় না। ইউ আর মোর ফেমিনাইন দ্যান এনি ফিমেল। এত কত কষ্ট পেলি এক বছর আগে মেয়ে হতে গিয়ে। এখন আবার বলছিস তুই মেয়ে নোস। কনফিউজড কেন তুই এতো?

অদ্ভুত তো? কি ভাবছে ও, আমি মেয়ে হয়েছি বলে কি আমার, মনন ও মেয়ের হয়ে গেছে? না, হয়েছে, কিন্তু একটা পুরুষ কে জীবনে মানিয়ে নিতে একটা ট্রান্স মেয়ের সময় লাগবে না? তাছাড়াও অনেক অনেক ব্যাপার আছে। তাও ওকে বললাম আমি,

-     বস আগে তুই। এটা নিয়ে কথা বলা দরকার। কারন যাই হয়ে যাক, তোর সাথে সামান্য দুরত্ব বাড়লে আমি মরে যাব।

ও বসল, কিন্তু সাথে সাথেই বলল
-     দুরত্ব তো তুই বাড়াচ্ছিস। তুই তো আমার কাছে আসতে চাইছিস না।

ওর পিঠে বুকে হাত বোলাচ্ছিলাম আমি।দূরত্ব মানে গান্ডু টা ফিজিক্যাল দূরত্ব ভাবছে। যা নমুনা দেখলাম আমি রাগের, আবার না রেগে যায়। আমি তো কোনদিন ওকে এই ভাবে তুতিয়ে পাতিয়ে ঠাণ্ডা করিনি। এখন যেন আমারি দায়িত্ব ওর রাগ ভাঙ্গানোর। আগে রাগা রাগি হতো আবার ঠিক হয়ে যেত। আমাদের মাঝে এই শরীর, আমাকে পাওয়া, আমাকে চাওয়া এই সব ব্যাপার গুলো আসে নি। ওর সামনে সারাজীবন নিজেকে আমি শক্তিশালী পেয়েছি। এখন উল্টো টা। আমি না সত্যি বুঝতে পারছিলাম না কি করব। নার্ভাস লাগছিল। নয় বছর আগের সেই দিনে ফিরে যাচ্ছিলাম আমি, যখন রাকাকে আমার ওরিয়েন্টেশন টা বলতেই ভয় লাগত ওকে হারিয়ে ফেলার ভয়ে। আজকেও সেই ভয় পাচ্ছি আমি। ওকে বললাম আমি,

-     আচ্ছা তোকে আমি মেয়ে হবার আগে বা পরে কোন দিন বলেছি, আমার ছেলেদের ভালো লাগে? আমি তোকে বলতাম না, আমি মেয়ে তাই মেয়ে শরীর টা নিতে চাই? আর তুই কেন বুঝছিস না, আমার সাথে তুই সুখী হতে পারবি না।
-     কেন? সুখ বলতে কি বুঝিস তুই? আমি যা বুঝি , তাতে আমি শিওর তুই ছাড়া আমার সুখ নেই।

ভাল। যে নিজেই কোন কাজ ভেবে করে না, সে আমাকে এতো বড় কথা বলল। চুপ করে গেলাম আমি। কি বলি? ওর সুখ মানে আমার সাথে থাকা, চুমু খাওয়া, ওর ইচ্ছে মতন আমার শরীর টা কে ঘাঁটা এই গুলো ভাবছে। বা এটা ভাবছে, ও আমাকে অন্ধের মতন ভালো বাসে। বা এটা কল্পনা করছে, আমি ওর সাথে আছি। ওর জন্য রান্না করছি, ওর জন্য অপেক্ষা করছি। বা ভাবছে বাড়িতে ওর বউ হয়ে ওর জন্য সেজে গুজে ঘুরে বেরাচ্ছি।তাতে আমার আপত্তি ছিল না বা আপত্তি নেই ও। কারন এই ভাবনা গুলো আমিও ভেবেছিলাম বছর দুয়েক আগে যখন আমার ইস্ট্রোজেন চলত। এখন সে সবে একটা গা ঘিন ঘিন করে কিন্তু ওর জন্য সব মেনে নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু এখন বুঝি, সুখের সংজ্ঞা, বয়েস আর সময় আর পরিস্থিতির সাথে পাল্টায়। সুখের সংজ্ঞা এক রকম থাকে না পুরো জীবন জুড়ে। এক ই মানুষের জীবনে সুখের চেহারা নানান বয়েস নানান পরিস্থিতি তে বদলায় । কৈশোরের সুখ যৌবনে বদলে যায়। যৌবনের সুখ বার্ধক্যে অন্য মানে নিয়ে সামনে দাঁড়িয়ে পরে। গরীবের কাছে, দু বেলা দু মুঠো ভাতের সন্ধান পাওয়া সুখ, আর বড়লোকের সুখ সম্পর্ক মধুর করাতে। ছাত্রের সুখ ফাঁকি দিয়ে, আর সেই ছাত্র বড় হয়ে বাবা মা হলে ছেলের পড়াশোনাতে নাম হলে সুখ হয়। কি করে বোঝাই সেটা ওকে আমি। ও আগামী দশ বছরের সুখ ভাবছে। ও বুঝছে না দশ বছর পরে ওর কাছেই সুখের মানে টা বদলে যাবে। ওর থেকে জীবন টা আমার অনেক কঠিন, তাই আমি জানি, সুখ কাকে বলে। ও জানে না বোঝে না। একেবারে কাদার তালের মতন ও। আমাকে ও ভালবাসে এ নিয়ে আমার মনে সন্দেহ নেই। কিন্তু আমাতে ও সেটা পাবে না যেটা ওকে একটা ঠিক ঠাক মেয়ে দিতে পারবে। আমি তাও বললাম,

-     রাকা একটু বোঝ, তুই যেমন ভাবে দুনিয়া দেখিস, তেমন নয় দুনিয়া টা। না না আমি চাই তুই সবাই কেই বিশ্বাস কর। আর তোকে যেন ঠকতে না হয় কোন দিন। কিন্তু আমি তোর সেই সুখের ঠিকানা নই রে। তোকে আমি সুখ কাকে বলে বলতে পারব না। কিন্তু এটা বুঝেছি তুই আমার থেকে অনেক অনেক বেশি সরল আর ভাল। আমি কোন দিন ই তোর যোগ্য নই। তোকে বলে বোঝাতে পারব না আমি, তুই আমার কাছে কি?

বেশ মজা পেল মনে হলো ও আমার কথায়। মুখ টা হাসি হাসি করে আমাকে জিজ্ঞাসা করল,
-     শুনি আমি কি তোর কাছে?

আমি তো বলছিলাম একটা বলার তোড়ে। কিন্তু ওর ওই হাসি মুখ টা দেখে আমি লজ্জা পেয়ে গেলাম।এখন কি ভাবে বলি ও আমার কাছে কতটা? সে সব তো ফিমেইল ব্যাপার। উজার করে বলে দেওয়া। আমি কি ভাবে বলি?  কিন্তু বলতে আমাকে হবেই। ওকে বের করে দিতে হবে আমার থেকে। আর সেটা করতে হবে, ওর মনে কোন দুঃখ না দিয়ে। দুঃখ পেলে ওর কেরিয়ার শেষ হয়ে যাবে। আর এখন ই বের না করে দিতে পারলে পুরো জীবন টাই নষ্ট হয়ে যাবে। ঠান্ডা হলাম একটু আমি। ওকে বললাম,

-     তুই আমার কাছে? বলতে পারিস প্রায় সব টা।
-     বুঝলাম না।
-     উফ এটাও বুঝলি না?
-     না
-     আচ্ছা বলি, তুই আমার আয়না, তুই আমার সখা, তুই আমার আমি, তুই আমার ইশ্বর, তুই আমার কৃষ্ণ, তুই আমার সাথী, তুই আমার সাফল্য, তুই আমার দুঃখ, তুই আমার সর্বস্ব। কি বুঝলি?
-     কিসসু না। তুই কবিতা কবে থেকে পড়ছিস? বোঝা না ভালো করে।
-     আচ্ছা বোঝাই। জানতাম নিরেট মাথা তোর, বুঝবি না। তবে শোন। উম্মম্মম্ম… তোকে, না দেখলে মনে হয়, কেউ নজরে আসছে না আমার। তোর সাথে কথা না বলতে পারলে, কারোর কথা কানে আসে না আমার। তোকে ঘুম থেকে উঠে নিজের মনে না পেলে, সারা দিন নিজেকেই চিনতে পারি না আমি। তোর সাহস না পেলে মনে হয় আমি বাড়ি থেকেও বের হতে পারব না। তুই রেগে গেলে খুব কষ্ট পাই আমি। তোর একটা বকুনি বা কস্টের কথা আমাকে যে তার কয়েক কোটি গুন কষ্ট দেয় সেটা তুই বুঝবিও না। সেজেগুজে বের হলে তুই না দেখলে মনে হয় বৃথা আমার সাজাগোজা। তুই সে, যে আমার আমি কে চিনিয়েছিল। কাজেই তুই আমাকে সামান্য কষ্ট দিলে আমি ভেঙ্গে পড়ি। এবারে বুঝলি?

রাকা হাঁ করে চেয়ে রইল আমার দিকে। জানিনা যা বলতে চাইলাম বুঝল কিনা। বা এটাও বুঝতে পারছি না আমি ঠিক ঠাক বললাম কিনা ওকে। শুধু হাঁ করে চেয়ে থাকলে কি বুঝি আমি এবারে? ও বলল বেশ কিছুক্ষন পরে,

-     দ্যাখ তুই যা বললি সেটা আর তোর কাজে কোন মিল নেই। একেই তো প্রেম বলে।
-     হ্যাঁ একেই বলে প্রেম। আমি কোথায় বললাম আমি তোকে ভালবাসি না। কিন্তু, কেন মিল কেন নেই?
-     আমি যদি তোর সব হব তবে আমাকে নিজের করছিস না কেন তুই?

বোঝ! কিচ্ছু বোঝে নি গান্ডু টা। বললাম,

-     নিজের করছি না মানে। তুই আমার আজ থেকে নিজের নাকি? তুই কবে থেকে আমার, তুই সেটা জানিসই না। তুই আজকে ভাবছিস, আমি তোর। কিন্তু অনেক বছর আগে আমি তোকে আমার মেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু তুই বলছিস সম্পর্কে যেতে। কি সেটা? তুই আমাকে প্রেমিকা হিসাবে চাইছিস। সেটা র তো দরকার নেই। কারন আমি সেটা অলরেডি আছি।আর তারপরে কি চাইবি? বিয়ে করতে। আমি সেখানে তোকে বলছি, আমাকে বিয়ে করে তুই সেটা পাবি না যা তুই চাস।

-     কেন পাব না। দুজনে ছোট থেকে একসাথে বড় হয়েছি আমরা। বড় হয়েও একে অপরের হয়ে থাকতে সমস্যা কি? আর কি পাব না তোর থেকে আমি? তুই বউ হতে পারবি না আমার? তোর থেকে বেটার খেয়াল আমার তো আর কেউ রাখতে পারবে না। বা ভাইসি ভার্সা।

রেগে গেলাম খুব। আমি বলে উঠলাম ওকে থামিয়ে দিয়ে।
-     আর কিছু লাগে না জীবনে? আন্টি র একটা নাতি লাগবে না?  দশ বছর পরে আন্টি তো ভাবতেই পারেন, শিব কে বিয়ে না করে অন্য কাউকে করলে, একটা নাতি অন্তত উনি পেতেন? ব্যস নিজেদের টাই ভাবছিস। নিজের বাবা মা এদের কথা ভাববি না? আর তাছাড়া…… আমি তো মেয়ে ছিলাম না। আমার ও সমস্যা হয় ছেলেদের সাথে এই ব্যাপার টা মেনে নিতে। তুই একটা মেয়ের থেকে যা এক্সপেক্ট করিস, আমি তা তোকে দিতে পারব না। কেন বুঝছিস না?

রাকা অবাক হয়ে গেল। আমাকে থামিয়েই দিল প্রায়। বলল,

-     কোন ব্যাপার টা মেনে নিতে? আর বাচ্চা দরকার নেই আমার। আর তুই তো প্রিপেয়ার্ড যে তোর বাচ্চা হবে না।

কথাটা ও রাগের মাথায় বলে দিল। কিন্তু আমার হৃদয় একেবারে ছিন্নভিন্ন করে দিল। এই প্রথম মেয়ে হবার একটা আফসোস, না জানি মনের কোন গভীর থেকে একেবারে বুদবুদের মতন উঠে এলো উপরে। ওর হয়ত বলতে গায়ে লাগছে না কথা টা। কারন ও জানে ট্রান্সফর্মড মেয়েদের বাচ্চা আসবে না জেনেই তারা ট্রান্সফর্মড হয়। কিন্তু আমার শুনতে গায়ে লাগল। নিজের এতো বড় একটা খামতি নিয়ে নিজের প্রিয়তম র সাথে থেকে, তাকেই অভিশাপ টা দি কি করে? জানিনা এখনো কেন ভাবি, নিশ্চই কোন দিন একটা অঘটন হবে আমার পেটে। তাই,যেমন উৎসাহ নিয়ে ওকে বলছিলাম সেই উৎসাহ টা একেবারে নষ্ট হয়ে গেল আমার। মির‍্যাক্যাল এর ভরসায় তো আর মোটিভেশন পাওয়া যায় না। মোটিভেশন বিশ্বাস থেকে আসে। ওকে বললাম ধীরে ধীরে,

-     মানতে পারি না, একটা বর হবে আমার। তার সাথে শোয়া। মেয়েলি ছলা কলা। মেয়েদের মতন ভাবা। আম জানি তুই আমার শরীর চাইবি। চাইবি তো? সেখানেও আমার সমস্যা।ভেবে দেখ, তুই সকালে উঠে দেখলি মেয়ে হয়ে গেছিস, আর একটা ছেলে তোকে চাইছে যে ভাবে তুই আমাকে চাইছিস।

আমার শেষ কথা টা শুনে রাকা মনে হলো ঘেন্নায় সিটিয়ে গেল একেবারে। আমি বলেই চললাম। ঠিক জায়গাতেই আঘাত করেছি বলে মনে হচ্ছে। বললাম,

-      ভাব তুই, তোর যেমন ফিলিং টা হলো, তেমন আমার ও হয়। তোকে তো আমি কতবার বলেছি, আমি মেয়ে 
হচ্ছি শুধু মেয়ে হয়ে বাঁচব বলে। বিয়ে করতে না। আমি তো ভাবতেও পারিনি তুই ও শেষে এই ফাঁদে পা দিবি।

আগের মতন তেড়েফুঁড়ে নয়, বেশ ঠাণ্ডা মাথায় জবাব দিল রাকা এবারে,
-     ফাঁদ কেন বলছিস? তুই কি আমাকে ভালোবাসিস না?
-     কতবার বলব? তুই ভাবতেও পারবি না, তোকে আমি কত টা ভালোবাসি। আমার বলতে কোন সমস্যা নেই। আর এতোটাই ভালবাসি যে, তোর ভালো টা আমি তোর থেকে অনেক অনেক বেশী ভালো বুঝি। আর সেই জন্যেই এতো টা জোর আমি ধরে আছি।
-     বাল বুঝিস আমার ভালো।

বহুকাল বাদে খিস্তী মারল ও আমাকে। আমি তাকিয়ে রইলাম। বুঝে গেলাম, খিস্তী মারছে মানে, মন টা অনেক টা ক্লিয়ার হয়ে গেছে ওর। আমাকে ও বলেই চলে
-     ভালো বুঝলে আমার কষ্ট টা বুঝতিস তুই।

মনে মনে ভাবলাম, তুই আমাকে বুঝলে, বুঝতে পারতিস, মনে কত বড় পাথর রেখে তোর থেকে আলাদা হবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমি। এ সিদ্ধান্ত তোর নেবার কথা না। আমারি নেবার কথা ছিল। আর আমি নিয়েওছি। আমি জানি, আন্টি বা আমার মা কেউ ই এই সিদ্ধান্তে অখুশী হবে না। কিন্তু ও যে বুঝছে না। আর পারি না আমি। কত দূরে ঠেলব আমি ওকে? আমিও যে ও ছাড়া দুর্বল। আমি জানি, আমি ওর প্রস্তাবে রাজী হব না। ওর বিয়ে হবে। ও দূরে সরে যাবে অনেক। কোন বউ ই চাইবে না আমার মতন একটা বন্ধু থাক ওর জীবনে। ওর বিয়ে হয়েছে, আমার থেকে দূরে চলে গেছে ভেবে আমি রেগে গেলাম। কিন্তু অসহায় লাগল নিজেকে মারাত্মক ভাবে। বুঝছি না কিছুই। একবার মনে হচ্ছে আমার শরীর টা ও পেলেই স্বাভাবিক হয়ে যাবে। আবার ভয় পাচ্ছি তার পরে যদি ওর আমাকে পাবার নেশা আরো বেড়ে যায়? যত বুঝতে পারছি না ততই রাগ হচ্ছে। আর ততই মনে হচ্ছে, ওর জেদের কাছে হেরে যাচ্ছি। বস্তুত ওর জেদের থেকে বেশি আমার ভিতরের উচ্ছ্বল মেয়েটার কাছে আমি হেরে যাচ্ছি। রাগ আরো বাড়ছে নিজের উপরে। নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেলছি আমি। তাই বেশ রেগেই ওকে বললাম,

-     তোকে আর বোঝাতে পারব না আমি। তোকে বোঝানো মানে তো হাতি কে জাঙ্গিয়া পরানো। আমার কিচ্ছু বলার নেই আর। নে যা খুশি কর আমাকে।

বলে আমি শাড়ির আঁচল টা নামিয়ে দিলাম বুক থেকে। সিনেমা তে দেখেছিলাম, মেয়েরা এই ভাবেই সারেন্ডার করে। তাই করেছিলাম। মানে ওটা আমার সাবমিশন ছিল। তর্কে আর পেরে উঠছিলাম না। রাকাও রেগে যাচ্ছিল। আমাকে, ও বারবার হিপোক্রীট বলছিল। ওকে রাগাতে পারি না আমি আর। মনে হচ্ছিল, আমি পছন্দ না করি, ওর তো ভাল লাগবে করে, তাহলে করুক। আমার কষ্ট তো ও বুঝছেও না। তাহলে দুজনাই কেন কষ্ট পাই? একজন পাই। ও আনন্দে থাকুক।

বলে তো দিলাম। কিন্তু নিজের উপরে কেমন একটা অদ্ভুত গা ঘিনঘিনানি এল। ও তো আসবে কাছে। যা খুশি করতে পারে আমাকে নিয়ে। কিন্তু আমি যে একদম ই তৈরি নই। চুমু খাওয়া অব্দি ঠিক আছে। কিন্তু তার পরেও ও এগোলে আমি কি করব। মেনেই নেব? তাই হোক। দাঁড়িয়েই আছি। কিন্তু হলো উল্টো। আমাকে ওই ভাবে দেখে, একেবারে গলে গেলো ও। উঠে এসে আমার আঁচল টা আগের মতন বুকে উঠিয়ে দিল। এ আবার কি রূপ ওর? একটু আগেই তো না পেয়ে পাগলের মতন করছিল। এখন সামনে পেয়েও কি হলো। আমার দিকে তাকিয়ে বলল,

-     পাগল হলি নাকি তুই? তুই যেটা পছন্দ করিস না সেটা আমি করব কেন?

আমি বললাম, ওর দিকে তাকিয়ে,
-     তুই তো কষ্ট পাচ্ছিস?
-     আমি কষ্ট পাচ্ছি বলে তুই মেনে নিবি?  
-     কি করব আর? তখন একটা ছেলে তোকে চাইছে ভেবে যে ঘেন্না পেলি আমার ও সেই হাল হয়। কিন্তু তুই বলে আমি মেনে নিই। কারন তোর থেকে এই ভাবে রাগ করে দূরে থাকতে পারব না আমি।
-     তাই বলে পছন্দ করিস না সেটা বলবি না আমাকে? চাঁচরের রাতে তো দিলি, তাই ভেবেছিলাম আমি তুই আমাকে পছন্দ করিস।
-     এক থাপ্পড় লাগাব, পছন্দ করি না কখন বললাম তোকে আমি। আমার থেকে বেশি পছন্দ তোকে আর কেউ করে না জানবি। তখন ইস্ট্রোজেন চলছিল। অজান্তেই তোর গায়ের গন্ধ, তোর স্পর্শ আমার ভাল লাগত।
-     তাই বলে একবার বলবি না আমাকে? তোর ভিতরে কি চলছে? আমি কি না কি করেছি তোর সাথে।
-     এতো অনুশোচনার কিছু নেই। বেশ করেছিস করেছিস। আমাকেই তো করেছিস। তুই না থাকলে আমি তো আর বেঁচেই থাকতাম না। 

আমার কাছে সরে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরল। আমি মানা করলাম না। কোন জোর ছিল না তাতে। জড়িয়ে ধরে বলল
-     ধুর পাগলী, কোথায় আমি তোর সাথে জীবন কাটানোর স্বপ্ন দেখছি, আর তুই আমার ভুল মেনে নিচ্ছিস? আমার ভুল আমাকে বলে না দিলে, আমি যে সব জায়গায় হোঁচট খাব।

তাকিয়ে রইলাম ওর দিকে। আচ্ছা এতো ভালো হলে থাকা যায়? হাঁ করে দেখছিলাম ওকে। এই জন্যেই তো ওকে কলির কেষ্ট বলি। একী অঙ্গে এতো রূপ নিয়ে কি করে ঘুরে বেড়ায় কে জানে!! এতোক্ষন বুঝছিল না। যেই আমি সারেন্ডারড হলাম, ওমনি ওর সুবুদ্ধি ফিরে এলো। আমার ভালো লাগল ব্যাপার টা। বিশ্বাস টা ফিরে এল, ও আমার থেকে দূরে যাবে না। বুকে মাথা রাখলাম ওর। ও বলল,

-     তবে তোকে বলে দিলাম আমি, তোকে আমার কাছে ফিরে আসতেই হবে। তুই যতই দূর দুরান্ত দেখতে পাস এখানে থেকে। আমার বিশ্বাস তোকে আমাকে কাছেই আসতে হবে।

ওকে দেখলাম আমি মাথাটা তুলে।ভাবলাম তুই জানিস ও না, আমি কতখানি তোর কাছেই থাকি। ছেলে থাকার সময়েও তোকেই জানতাম, আর মেয়ে হয়েও তুই ছাড়া কাউকে ভাবতেও পারি না। মনে হলো, আসলে আসব। এ আর বড় কথা কি?  কিন্তু ওকে বললাম,

-     আসব না। কোন দিন তোর গার্ল ফ্রেন্ড হতে আসব না আমি।
-     আমি নিশ্চিত তুই আসবি।
-     দেখা যাবে। এখন আমাকে দিয়ে আসবি চল, অন্ধকার হয়ে গেছে।
-     থাকবি না আর একটু?
-     ইশ কখন আমাকে নিয়ে বেড়িয়েছিস খেয়াল আছে তোর?

এই বলে ওর গালে একটা কষে চুমু খেয়ে, দৌড় লাগালাম ঘর থেকে। ঘুরে দেখলাম, গোলাপি রঙের ঠোঁট আঁকা হয়ে গেছে ওর গালে। পিছন থেকে ও চেঁচাচ্ছে,
-     ভাল করলি নাআআআ। আমি চাইলাম দিলি না, এখন নিজেই দিয়ে গেলি কেনওওওও?

আমি দৌড়চ্ছিলাম অন্ধকারেই। গালে চুমু খাবার পরে, ওকে দেখার ক্ষমতা ছিল না। ভয় লাগছিল, পায়ে শাড়ি জড়িয়ে গেলে পরে যাব। শাড়ি টা কোমরের কাছে, হাত দিয়ে কিছু টা তুলে নিয়ে বাঁই বাঁই দৌড়চ্ছিলাম আন্টির কাছে আমি। ছুটতে ছুটতেই চেঁচিয়ে বলে দিলাম ওকে,
-     তোর সব কেনর উত্তর দিতে পারব নাআআআআআআআআআআআআআ। এটা আমি আমার ইচ্ছে তে দিলাআআআআআআআআম।
[+] 9 users Like nandanadasnandana's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: মন ২ - শিবের শিব প্রাপ্তি অধ্যায় তিন- নতুন পর্ব ১৯ দুটি খন্ডে( পৃষ্ঠা ১৩ ১৪) - by nandanadasnandana - 15-02-2022, 12:38 PM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)