Thread Rating:
  • 63 Vote(s) - 2.92 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
কাজলদীঘি শ্মশান/পীরবাবার থান--মামনজাফরান (জ্যোতি বন্দোপাধ্যায়)
আমরা নিরঞ্জনদার গাড়ির পেছন পেছন। আমি ইসলাম ভাই মাঝের সিটে, ভজু সামনের সিটে। ইসলাম ভাই আমার দিকে তাকালেন
-তুই সত্যি অনি অনেক ম্যাচুয়র হয়ে গেছিস এই কদিনে।
-কেনো।
-দিদি একবার নামটা বললো, আর তুই সেটা দিয়ে কি খেলা খেলে দিলি।
-এছাড়া উপায় কি বলো।
-দাঁড়াও অনেকক্ষণ ফোন করা হয় নি একবার ডায়াল করে নিই সব কটাকে।
প্রথমে অনাদিকে ফোন করলাম।
-কিরে তোরা এখন কোথায়।?
-কেনো?
-আমরা চকে এসে সব বসে আছি!
-তার মানে!
-ওপরতলা থেকে খবর এসেছে, নিরঞ্জনদা তোদের সঙ্গে আসছে, তুই সত্যি অনি খেল দেখাচ্ছিস।
-কাজের কথায় আয়।
-বল।
-বাড়িতে যা যা বলেছিলাম সব রেডি।
-একেবারে, বরং একটু বেশিই আছে।
-বাঃ একটা কাজ করতে হবে।
-বল।
-আমার সঙ্গে দুজন গেস্ট আছে। বাড়তি বিছানার ব্যবস্থা করতে হবে।
-তোকে চিন্তা করতে হবে না। দুজন কেনো, দু হাজার জন যদি আসে তোকে চিন্তা করতে হবে না। তুই এতো করছিস আমার জন্য, আমি এটুকু করতে পারবো না।
-পোস্ট মর্টেমের খবর কি।
-এখনো সরকারি ভাবে পাই নি, বেসরকারী ভাবে, শেলি প্রেগনেন্ট ছিলো। সেটাতো তোকে সকাল বেলা বললাম। বিষ খেয়েছে, তবে গলায় হাতের চিহ্নও আছে, তার মানে বোঝায় গলা টিপে খুন।
-আর কিছু।
-না মাথা থেকে সব ঝেরে ফেলে দিয়েছি।
-ওকে এ্যারেস্ট করেছে কিনা কিছু জানিস।
-না। নিরঞ্জনদা বলেছে এর মধ্যে একেবারে মাথা গলাবি না, বাকিটা আমি বুঝে নেবো।
-ঠিক আছে আমরা ঘন্টাখানেকের মধ্যে পৌঁছে যাবো।
-আয়।
ইসলাম ভাই-এর দিকে তাকালাম। ইসলাম ভাই হাসছে।
সামনের গাড়িটা থামলো। পেছন পেছন রবিন গাড়ি দাঁড় করালো। আমি নামলাম, মিত্রা মুখ বাড়িয়ে বললো দাদা তোকে চাইছে।
আমি ফোনটা নিলাম।
-বলো।
-লাস্ট আপডেট কিছু দিলি নাতো।
-কেনো, মুখার্জীর সঙ্গে কথা বলো নি।
-বলেছিলাম, সকালে যা বলেছিলো তাই বলেছে।
-পোস্টমর্টেম রিপোর্ট।
-এসপি বললো এখনো হাতে আসে নি, ওরা তো জানেইনা ছেলেটা এ্যারেস্ট হয়েছে।
-তাই।
-কি করবি এদের নিয়ে।
-নিরঞ্জনদা গাড়িতে বসে আছে, জিজ্ঞাসা করো নি কেনো।
-ও তোদের সঙ্গে যাচ্ছে!
-হ্যাঁ।
-তোর বড়মা যে ভাবে মুখ ঝামটা দিলো।
-কথা বলে নাও।
-দে।
নিরঞ্জনদার হাতে দিলাম ফোনটা।
-বলো।
-আমি কি বলবো…..বাবা এত ঘটনা ঘটে গেছে…….সময় পেলাম কোথায় দিদি যা তাড়া লাগালো…..ঠিক আছে আমি দিয়ে দিচ্ছি।
আমায় আবার ফোনটা দিলো।
বড়মা আমার দিকে তাকিয়ে বললো, এখনো কথা শেষ হয় নি। দিস তো আমায় ফোনটা।
-হ্যাঁ বলো।
-তোর বড়মা রাগ করছে না।
-সে তো সব সময় করে।
মিত্রা বুঝতে পেরেছে হাসছে।
-তাহলে তুই যে ভাবে বলেছিলি সেই ভাবেই দাঁড় করাই।
-তুমি যা ভালো বোঝো। ছেলেদুটো কেমন লিখেছে।
-দারুন, তোর চোখ আছে।
-ঠিক আছে আমি মিঃ মুখার্জীর সঙ্গে কথা বলে তোমায় জানাচ্ছি, হ্যাঁগো অফিসের পরিস্থিতি।
-পুরো ঠান্ডা।
-যাক এটা গুড নিউজ।
-সবাই যে যার ঘর গোছাতে ব্যস্ত। চম্পকের মুখ একেবারে শুকিয়ে গেছে।
-এই প্রেসারটা কনটিনিউ করতে বলবে সনাতন বাবুকে। এখন থেকে তুমি আমার ফোনে ফোন কোরো বড়মাকে আর বিরক্ত করতে হবে না, আমি ফোন অন করে রাখছি। বড়মা কথা বলবে।
-একটু ঘুরতে…… সহ্য হচ্ছে না……কেনো ছেলেটা সকাল থেকে সব তো গুছিয়ে দিয়ে এলো……কি খেলে…….
আমি ফিক করে হেসে ফেললাম।
বড়মা ফোনটা কেটে আমার দিকে তাকালো, চোখের ভাষা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। আমি গাড়িতে এসে বসলাম। রবিন গাড়ি স্টার্ট দিলো। ইসলাম ভাই আমার দিকে তাকালো।
-কি হলো। ওই ভাবে তাকিয়ে আছো কেনো।
-তোকে দেখছি।
-আমি অত্যন্ত নগন্য মানুষ তোমার কাছে।
-আর বলিস না।
-কেনো।
-এখুনি ফোন এসেছিলো, তোর কথা ঠিক।
-কি বলছে
-আমাকে একটু দরকার ছিলো এই বললো। হাসলাম
-দাঁড়াও মিঃ মুখার্জীকে একবার ফোন করি।
-কর। কি বলে শোন।
-তোমাকেও শোনাচ্ছি।
-আরে অনিবাবু বলুন।
-খাওয়া দাওয়া করে হাত ধোয়া হোলো।
-সে তো অনেকক্ষণ
-লাস্ট আপডেট দিলেন না।
-কেনো দাদাকে দিয়ে দিয়েছি।
-ভেন্টিলেশন কখন খুলছেন।
-এটা আবার আপনাকে কে বললো।
-খবর পেলাম।
-আচ্ছা, ওই ঘরে কেউ যেতে পারবে না, আমি সেই ব্যবস্থা করে এসেছি। আপনার লোক ঢুকলো কি করে।
-আমি কিন্তু কালকে ছবিটা ছাপবো।
-না না এসব করতে যাবেন না, তাহলে আমার কাজ আটকে যাবে।
হাসলাম। আর বলুন।
-আপনি যা যা নথি পত্র দিয়েছিলেন, সেই সব জায়গায় হানা দিয়েছি। কাজ হয়েছে।
-তাহলে ঘটনাটা ঘটলো কি করে।
-আর বলবেন না। বললো বাথরুমে যাবো। কারুর বাথরুমে যে ওয়েপনস থাকে এটা প্রথম জানলাম। তাও দরজা বন্ধ করতে দিই নি, কিছুটা খুলে রেখেছিলাম।
-কোথায় লেগেছে।
-কানের নিচে, তাই টেঁকাতে পারলাম।
-কি মনে হচ্ছে।
-ওই যে আপনি বলে দিলেন, কাজ ফুরোলেই খুলে দেবো।
-এইবার আমার একটা উপকার করতে হবে।
-বলুন।
-আমার কিছু টাকার প্রয়োজন।
-কতো।
-এখন নয়, মাসখানেক পর।
-কেনো।
-আমি যেখানে আঠারো মাস কাটিয়েছিলাম, সেখানে কিছু কাজ করতে চাই। বলতে পারেন একটা এনজিও। আমার দাদা করতে চাইছেন, ওই সব অর্গানাইজ করছে।
-সত্যি অনিবাবু আপনার বুদ্ধির প্রশংসা করি।
-কেনো।
-তার টাকার অভাব, সেতো আপনার সঙ্গেই আছে। আপনি নিশ্চিন্তে থাকুন আমি হাত দেবো না। আর টাকার কথা বলছেন, এই কাজে টাকা দেওয়ার লোকের অভাব হবে না।
-কি করে বুঝলেন।
-আপনি দুটো বাড়ির এ্যাড্রেস দিয়ে দেখতে বলেছিলেন, আমি অত্যাধিক ইনিসিয়েটিভ নিয়ে আপনার বাড়ির ওপরও লক্ষ্য রেখেছিলাম।
-গুড। কালকে নিউজে আপনার নামটা ঢুকিয়ে দিই। আর একটা ছোট্ট ইন্টারভিউ।
-করতে পারেন।
-তাহলে কাউকে পাঠিয়ে দিচ্ছি।
-দিন, আপনার দেশের বাড়িতে আমাকে ইনভাইট করলেন না।
-এপ্রিলে।
-কেনো।
-সেই সময় আর একটা বড় কাজ করবো তখন।
-ঠিক আছে, অপেক্ষায় রইলাম।
ফোনটা কেটে দিয়ে, ইসলাম ভাই-এর দিকে তাকালাম। ইসলাম ভাই মুচকি মুচকি হাসছে।
-আমাকে নিয়ে কি করবি বলছিলি।
-তাড়াহুড়ো করছো কেনো, দেখো না কি করি।
-না মনে হচ্ছে তোর কথাই ঠিক, আমাকে এবার থিতু হতে হবে, অনেক দৌড়েছি।
-দাঁড়াও দাদাকে লাস্ট আপডেটটা জানিয়ে দিই।
চকে এসে গাড়িটা দাঁড়ালো।
আমি গাড়ি থেকে নেমে নিরঞ্জনদার গাড়ির দিকে এগিয়ে গেলাম, বড়মা বললেন
-ও অনি আমি আর এ গাড়িতে বসবো না, সরকারের যেমন অবস্থা, নিরঞ্জনের গাড়ির অবস্থাও ঠিক তাই।
আমি দরজা খুলে বড়মাকে ধরে ধরে নামালাম, এটা চক।
-সে তো বুঝলাম, আমার কোমর ভেঙে ফেললে রে। দিয়েছি নিরঞ্জনকে আচ্ছা করে, ও নাকি এখানের মুখ্যমন্ত্রী, মরণদশা।
অনাদি এগিয়ে এসেছে, বাসু এসেছে, চিকনাকেও দেখতে পেলাম। ওরা হাসছে। এছাড়াও আরও অনেকে এসেছে, চিনতে পারছি না, হয়তো এলাকার ছেলেপুলে, নিরঞ্জনদা এসেছে বলে। নিরঞ্জনদা কাছে এসে বললো
-তুমি দেখবে যাওয়ার সময় রাস্তা একেবারে ঝক ঝকে।
-অনি ঠিক কথা বলে, তোদের দুরমুশ করা উচিত। চোরের দল সব।
বড়মার কথায় সকলে হেসে কুটি কুটি খাচ্ছে।
-চা খাবে তো।
-হ্যাঁ খাবো, ও ভজু, দে তো বাবা পা টা টেনে।
ভজু যাই বড়মা বলে পায়ের কাছে বসে পরলো।
আমি বড়মাকে ধরে দাঁড়িয়ে আছি। মিত্রা কাছে এগিয়ে এসে বললো, কিরে রসগোল্লা খাওয়াবি না। বড়মা শুনতে পেয়েছে।
আমি মিত্রার দিকে তাকালাম, বড়মা হেসে ফেললেন, সত্যি মিত্রা তুই পারিসও বটে।
-তোমার খিদে পায় নি, কিরকম নাচানাচি করতে করতে এলাম বলোতো, সব হজম হয়ে গেছে।
-আচ্ছা তোর মুখ রাখতে একটা খাবো।
-দেখলি। অনাদিকে বল।
-বলতে হবে না, একটু অপেক্ষা কর চলে আসবে।
অনাদিকে বললাম পরিদার দোকানে বসার জায়গা হবে।
-হবে মানে তুই কি বলতে চাস।
-কিগো বাঁশের বেঞ্চে বসবে।
-চল একটু বসে নিই। আর আসবো কিনা কে জানে।
-আসবেনা মানে, তোমাকে আমরা সবাই ধরে নিয়ে আসবো। অনাদি বললো।
-আচ্ছা, ও ছোটো কোথায় গেলি রে।
ছোটোমা কাছে এলেন, আমার দিকে তাকিয়ে ইশারায় বললেন, বাথরুম। আমি মাথা চুলকালাম। মিত্রা মুচকি মুচকি হাসছে।
ছোটোমাও হাসছে।
অনাদিকে ইশারায় কাছে ডাকলাম।
বড়মাকে কানের কাছে ফিস ফিস করে বললাম বাথরুমে যাবে নাকি।
বড়মা মুখের দিকে তাকিয়ে হাসলো।
-ঠিক আছে দাঁড়াও ব্যবস্থা করে আসি।
অনাদি চকের ওপরের যে বাড়িটা তাতেই ব্যবস্থা করে আসলো, মিত্রাকে বললাম বড়মাকে ধরে নিয়ে যা। ওরা তিনজনে গেলো। অনাদি পেছন পেছন, নিরঞ্জনদা দেখলাম, কাদের সঙ্গে কথা বলছে, দেখে মনে হচ্ছে হোমরা চোমরা ব্যক্তি। আমার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে, চোখের অভিব্যক্তি বলছে, এখানে থাকে আর আমরা জানি না।
এতোক্ষণ ইসলাম ভাই-এর দিকে তাকাই নি। ও গাড়ি থেকে নেমে চারিদিক দেখছে। ওকে দেখে মনে হচ্ছে জায়গাটা ওর পছন্দ। কয়েকটা বাচ্চা ওর পেছন পেছন ঘুরছে, ওর অদ্ভূত পোষাক দেখে ওরা অবাক।
চিকনাকে বললাম, সবাইকে চা দিতে বল।
-সবাইকে।
-হ্যাঁ। যারা এখানে আছে।
-পার্টির লোককে তুই খাওয়াতে যাবি কেনো।
-চুপ কর ছাগল।
-ঠিক আছে।
চিকনা আমার কথা মতো সবাইকে চা দিচ্ছে।
বাসুকে বললাম, গ্রামের অবস্থা।
-সকালে গরম ছিলো, তারপর তোর ফোন আসার পর থেকে একেবারে ঠান্ডা, কালকে যে এরকম একটা ঘটনা ঘটেছে, বুঝতেই পারবি না। তার ওপর সভাধিপতি তোর সঙ্গে আসছে। ব্যাপারটাই আলাদা।
অনাদি বড়মার হাত ধরে নিয়ে আসছে। পেছনে বড়মা ছোটোমা। কাছে আসতে আমি বললাম, শান্তি।
-সত্যিরে অনি কি শান্তি, তোকে ভয়ে বলতে পারছিলাম না, যদি গালাগালি করিস।
-তোমায় কি সেরকম কখনো করেছি।
-না মিত্রার মুখ থেকে শোনা আগের বারের অভিজ্ঞতাটা মনে পরে গেলো কিনা, তাই।
-তোমার আগে ছোটোমা হিন্টস দিয়েছিলো।
-মেয়েদের অনেক সমস্যা বুঝলি।
-বুঝলাম।
-বড়মা আমার দিকে তাকিয়ে হাসলো। নিরঞ্জন গেলো কোথায় রে।
-ওইতো কথা বলছে।
-নিশ্চই সাকরেদরা এসে জুটেছে।
হাসলাম।
পরিদার দোকানে নিয়ে এসে বসালাম। পরিদা একটা ঠক করে বড়মাকে প্রণাম করলো, ছোটমাকে প্রণাম করতে যাচ্ছিল, ছোটমা হাত ধরে ফেললেন। এরা তখন ছোটো ছোটো আমার দোকানে আসতো।
-হ্যাঁ তোমার গল্প শুনেছি ভাই অনির মুখ থেকে।
-অনি আমাদের গর্ব। ও বকনা মায়েদের প্লেটগুলো এগিয়ে দে।
একটা বাচ্চা মেয়ে এগিয়ে এলো। বড়মা আমার দিকে তাকালো, হেসে ফেললাম
-নামের অর্থ খুঁজতে চাইছো।
-হ্যাঁ।
আস্তে করে কানের কাছে ফিস ফিস করে বললাম, গ্রামে গরুর যদি মেয়ে বাছুর হয় তাহলে তাকে বকনা বাছুর বলে, কেউ হয়তো আদর করে ওকে ওই নাম দিয়েছে।
বড়মার মাথায় হাত।
পরিদা সকলকে চারটে করে রসগোল্লা দিয়েছে।
বড়মাকেও দিয়েছে। নিরঞ্জনদা এলো তার সাকরেদদের নিয়ে, একে একে পরিচয় করিয়ে দিলো, যা ভেবেছিলাম ঠিক তাই, কেউ লোকাল কমিটির, কেউ জেলা কমিটির, কেউ জোনাল কমিটির হোমরা চোমরা লোক। সবাই বড়মাকে প্রণাম করলো, পরিদা ওদেরও মিষ্টি দিলো, বড়মা চারটেই খেলো।  আমি আস্তে করে বললাম
-কি গো চারটেই সাঁটিয়ে দিলে।
-সত্যিরে অনি খিদে পেয়েছিলো।
মিত্রা আমার দিকে তাকিয়ে হাসছে, তুই হেরে যাবি, এখানে জিততে পারবি না।
ছোটোমা মিত্রাকে সাপোর্ট করলো। আমি চুপ।
-বড়মা। মিত্রা বললো।
-বল।
-মিষ্টির পর একটু নোনতা খেলে ভালো হয় না তাহলে চাটা বেশ জমবে।
-খাসা বলেছিস, ও পরি তোমার ওগুলো কি ভাজছো গো।
-বেগুনি, আলুর চপ।
-একটা করে দাও দিখিনি। খেয়ে দেখি।
আমি বড়মার দিকে তাকালাম, মিত্রা আমাকে একটা কনুইয়ের গুঁতো মারলো, ছোটোমা হাসছে, ইসলাম ভাই আজ খালি মজা লুটে যাচ্ছে। না হ্যাঁ কিছুই বলছে না, গা ভাসিয়ে দিয়েছে।
চা এলো, এক কাপে কারুর পোষালো না, দুকাপ করে খেলো, সবাই ভীড় করে আছে আমাদের ঘিরে। নিরঞ্জনদা বাইরে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কথা বলছে।
বড়মাকে বললাম, পায়ের ধুলো আমার জন্য একটু রেখো।
বড়মা আমার দিকে তাকিয়ে হেসে ফেললো।
আমি বাইরে বেরিয়ে এলাম, বাসুকে বললাম, অনাদি কোথায়।
-নিরঞ্জনদা কোথায় পাঠালো।
-ও। চিকনা।
-ওকে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছি। বললাম ওখানটা গোছা গিয়ে।
-ভাল করেছিস।
-গাড়ি রাখবি কোথায়।
-ও নিয়ে তোকে ভাবতে হবে না।
-চল এবার বেরোব
নিরঞ্জনদার কাছে গিয়ে বললাম, কিগো রেডি।
-অনি আমার একটা উপকার করবি।
-বলো।
-দিদিকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে তুই নিয়ে যাএই দিকে যখন এসেছি, কয়েকটা কাজ সেরে যাই।
-আমার কোনো আপত্তি নেই। গালাগাল কে খাবে তুমি না আমি।
-কিছুক্ষণের জন্য তুই খা, তারপর আমি গিয়ে খাবো।
নিরঞ্জনদাকে ঘিরে থাকা সকলে মুচকি হাসছে, আমিও হাসলাম।
বড়মাকে গিয়ে সব ব্যাপারটা বললাম।
-ডাক ওকে।
-উঃ তুমি ……
-ঠিক আছে চল।
আমরা সবাই গাড়িতে উঠলাম। নিরঞ্জনদা কাছে এলো।
-তুই কখন যাবি।
-চারটের মধ্যে।
-খেয়ে নেবো না তোর জন্য বসে থাকবো।
-একবারে আমার জন্য বসে থাকবে না।
-মনে থাকে যেনো।
-আচ্ছা।
আমরা বেরিয়ে এলাম। যেভাবে কলকাতা থেকে এসেছিলাম, সেই ভাবে। খালি আমার পাশে এসে মিত্রা বসলো।
[+] 1 user Likes MNHabib's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: কাজলদীঘি শ্মশান/পীর সাহেবের থান--মামনজাফরান (জ্যোতি বন্দোপাধ্যায়) - by MNHabib - 09-02-2022, 11:56 PM



Users browsing this thread: