Thread Rating:
  • 63 Vote(s) - 2.92 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
কাজলদীঘি শ্মশান/পীরবাবার থান--মামনজাফরান (জ্যোতি বন্দোপাধ্যায়)
বড়মা আমাকে ধরে বললো দাঁড়া পা টা বড্ডো ধরে গেছে। ভজু বড় মার পায়ের কাছে বসে পরলো, একটু ঝাড়াঝাড়ি করে টিপে দিলো, বড়মা আমার কাঁধে হাত দিয়ে আস্তে আস্তে হেঁটে ভেতরে এলো, আমরা সবাই একটা কেবিনে বসলাম, ভজু বললো, অনিদা আমি খাটে, ভজুর সাথে সাথে রবিনও বললো।
আমরা সবাই বসলাম। মিত্রা চেঁচিয়ে উঠলো, বুবুন আলুপরোটা, চিকেন ফ্রাই, মটর পণির।
ইসলাম ভাই ছোটমার দিকে তাকালো, ইশারায় কি কথা হলো। ইসলাম ভাই বুঝেছে আমার চোখ এড়ায় নি।
-বড়মা তোমারটা বলো।
-কিরে ছোটো সবার জন্যই এক থাকুক।
ছোটো মা মাথা দোলালো। আমি ইসলাম ভাই-এর দিকে তাকালাম।
-আমার কোনো ফ্যাসিনেসন নেই ছোটো ম্যাডাম যা বললো তাই বলে দে।
ছেলেটাকে ডেকে বলে দিলাম একটু তাড়াতাড়ি করিস ভাই।
-আচ্ছা।
ফোনটা অন করলাম, পর পর অনেকগুলো মিস কল দেখলাম। দেখলাম মিঃ ব্যানার্জীও তার মধ্যে আছে, আমার পাশে বড়মা বসে আছে, কনুইয়ের গোঁতা মারলাম, মিঃ ব্যানার্জীর নম্বরটা দেখালাম, বড়মার চোখে বিস্ময়, সব নিস্তব্ধে হয়ে গেলো। ইসলাম ভাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে। মুচকি হাসলো।
আমি সন্দীপকে ফোন করলাম।
-লেটেস্ট নিউজ বল।
-সব কাজ সেরে সবে মাত্র অফিসে ঢুকলাম।
-দাদা কোথায়।
-দাদা দাদার ঘরে, মল্লিকদা মল্লিকদার টেবিলে।
-তুই কোথায়।
-প্রচুর খিদে পেয়েছিলো, ক্যান্টিনে এসেছি।
-ছেলেগুলো।
-পাশেই আছে।
-ঠিকঠাক কাজ করেছে।
-তোর চোখ আছে অনি।
আমি ভয়েজ অন করলাম রেকর্ডিং চালু করলাম।
-ছোটো করে ডিটেলস দে।
-তোর কথা মতো সব কাজ হলো। একটা খারাপ খবর আছে।
-বল।
-শালা মরেও মরেনি, মরলে ভালো হতো।
ইসলাম ভাই আমার দিকে তাকিয়ে গোগ্রাসে গিলছে।
-ছোটো না বড়।
-বড়।
-কেনো
-চেষ্টা করেছিলো, মুখার্জী চালু, হাত ধরে ফেলেছে, উডল্যান্ডে নিয়ে গেছে। মাছি গলতে পারবে না।
-বেঁচে আছে।
-লাস্ট আপডেট মুখার্জী বলছে বাঁচালাম বটে, ডাক্তার কোনো গ্যারেন্টি দিচ্ছে না।
-কোমা না অজ্ঞান।
-সেটা মুখার্জী বলে নি, তুই ফোন করে জেনে নে, তোকেই একমাত্র বলবে।
-ঠিক আছে, লেখাটা গোছা আমি ফোন করবো।
ফোনটা কেটে দিলাম, খাবার এলো, ইসলাম ভাই-এর দিকে তাকালাম, ইসলাম ভাই একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো। খাওয়া শুরু করলাম।
মিত্রা আমার দিকে তাকিয়ে হাসলো।
-সব খেতে পারবি তো।
-আমি আমার মতো খাবো, তুই খা না।
-তোর তো অনেক খিদে আমার থেকেও।
-তোর খাওয়া আমার খাওয়ার মধ্যে পার্থক্য আছে। দেখছো বড়মা, তুমি কিছু বলো।
-আচ্ছা আচ্ছা তুই খা।
-বড়মা আমার দিকে তাকালো, এবার কি করবি।
-কিচ্ছু না, আমাকে কিছু করতে হবে না, মুখার্জী তার প্রয়োজন মতো ওকে রাখবে।
-তোর কি মনে হচ্ছে।
-ভেন্টিলেসনে রেখেছে।
-তুই বুঝলি কি করে।
-সন্দীপকে বলে নি আমি জানি। এখানে বসেই বলছি, মুখার্জীর ফাইল তৈরি হয়ে গেলেই, ভেন্টিলেসন খুলে দেবে। দেখলে না সন্দীপ কি বললো, মাছি গলতে পারবে না। ম্যাক্সিমাম সাত দিন।
এমনকি বড়মা তোমায় একটা কথা বলে রাখছি এ্যাডভান্স, তুমি মিলিয়ে নিও, ইসলাম ভাই যে আমার সঙ্গে আছে এটাও মুখার্জীর কাছে খবর আছে।
-সে কি রে।
-তুমি বলবে, তা সত্বেও তুই ইসলাম ভাইকে নিয়ে এলি কেনো।
-কলকাতায় থাকলে ও এই মুহূর্তে সেফটি নয়, জিজ্ঞাসা কর ইসলাম ভাইকে আমি বলেছি কিনা।
বড়মা ইসলাম ভাই-এর দিকে তাকালো, ইসলাম ভাই মাথা নীচু করে বসে আছে।
-ইসলাম ভাই-এর নেটওয়ার্ক থেকে ওদের নেটওয়ার্ক আরো বেশি স্ট্রং। আমি দুটো নেটওয়ার্ক দেখেছি, তাই আমার নেটওয়ার্ক আরো বেশি স্ট্রং হওয়া উচিত।
বড়মা আমার কথা শুনে থ।
-তুমি বলছো আমি কি করে অবলিলায় তোমায় গল্পের মতো এসব বলছি।
-হ্যাঁ।
-আমি দাবা খেলি, দাবার বোর্ডে ৬৪ ঘর। আমি একটা চাল দিয়ে ৫০টা পরের চাল মনে রাখতে পারি, আমার অপনেন্ট কি চাল দিলে আমি কি চাল দেবো, মানে ১০০ চাল আমায় মনে রাখতে হয়, ইসলাম ভাই ৩২টা পারে মুখার্জী ৪০টার বেশি পারে না। তাই এদের থেকে আমি এগিয়ে। কিন্তু এইটা ভেবো না, আমি মিঃ মুখার্জী বা ইসলাম ভাইকে ছোটো করছি। আজকের চালটা আমি ঘোড়ার চাল দিয়েছি, একটা ঘোড়া একটা ঘরে বসে আটটা ঘর বল্ক করে রাখেআমি আমার দুটো ঘোড়া দিয়েই ১৬ ঘর বেঁধে রেখেছি, এরপর গজ, নৌকা তো আছেই ওগুলো হাতের পাঁচ। আমি আজ তাই করেছি।
-একি বলছিস অনি, ইসলাম ভাই কখনো এরকম ভাবে না।
-আমি জানি। জানি বলেই তোমার সামনে বড়মা ছোট মাকে বলছি। ছোট মা তোমার নাম শুনেছে, দেখেনি, তুমি যে ছোটোমার ভাই সেটাও আজ কাছে এলো।
বড়মা ফ্যাল ফ্যাল করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে, মিত্রার খাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। ছোটমার চোখ স্থির।
-মল তার স্টেটমেন্টে ইসলাম ভাই-এর নাম জড়াবে। অবশ্য যদি জ্ঞান থাকে, তাই ওকে খোঁজাখুঁজি হবে, আমার সঙ্গে থাকলে ওকে ধরা অতো সহজ হবে না। ইসলাম ভাইকে আমার কাছে রেখে মিঃ মুখার্জীকে একটা বার্তাই পৌঁছে দেওয়া, ইসলাম ভাই এখন আমার পকেটে আছে, আমার পকেটে তুমি হাত দিও না, বেশি নড়াচড়া করলে তোমারও বিপদ আছে, তোমাকে যেমন সোহাগ করছি, শাসনও করতে জানি।
বড়মা আমার মাথায় হাত রাখলেন।
-ভাবছ নাক টিপলে দুধ পরে একটা বাচ্চা ছেলে এরকম পাকা পাকা কথা বলছে কি করে।
কি জানো বড়মা দারিদ্রতা, অভাবের কোনো জাত নেই ধর্ম নেই, আমার একটা পিরিয়ড এরকম কেটেছে, তখন আমি দারিদ্রতার আগুনে পুরে অভাবের কাঠ কয়লা তৈরি হয়ে গেছিলাম, কিন্তু দেখো আমার সব ছিলো, কোনো অভিভাবক ছিল না। সেই অভিজ্ঞতাগুলো এখন কাজে লাগাচ্ছি।
এরপর তুমি বলবে, ওরা কি তোর কোনো ড্র ব্যাক জানে না, জানে একটাই ড্রব্যাক, আমার এই পৃথিবীতে আপন বলতে কেউ নেই, বছর খানেক পরে ওরা জানবে আমার কিছু রিলেসন তৈরি হয়েছে, এবার তাদের ওরা ডিস্টার্ব করবে, আমাকে ধাক্কা দেওয়ার চেষ্টা করবে, যেমন তুমি ছোটো মা মিত্রা এখন এই মুহূর্তে আমার কাছের লোক, তোমাদের ওপর ওদের নজর পরেছে।
-তুই মাথায় রাখিস অনি তোর কথা যদি সত্যি হয় তাহলে ইসলাম ভাই-এর থেকে হিংস্র আর কেউ হবে না।
-এটা তোমার রাগের কথা ইসলাম ভাই
-কেনো বলছিস।
-ওরা গেজ করছে তারপর একটু নারা চারা দেবে। তুমি বলোতো ইসলাম ভাই তুমি যার সঙ্গে টক্কর নিতে যাবে তার ক্ষমতা কতটা, তুমি মেপে নেবে না।
-অবশ্যই।
-তুমি মলের সঙ্গে টক্কর নিতে পারো নি, কমপ্রোমাইজ করেছো, এতে তোমার কিন্তু ক্ষতি হয়েছে, হয়নি।
-হ্যাঁ তা হয়েছে।
-আমি কমপ্রোমাইজ করিনি, তোমার কাছে কতদিন আমি গেছি।
-সাতদিন।
-এরপরও তোমার মনে হয় নি, আমি একটা আঘাত করতে পারি মলকে, এবং মল সেটা মেনে নিতে বাধ্য।
-শেষদিন সেটা বুঝেছিলাম।
-কেনো তুমি প্রথম দিন বুঝতে পারোনি।
-সেদিন তোকে এতোটা সিরিয়াস দেখি নি।
-দেখো ইসলাম ভাই আজ বলছি, আমি প্রথম দিনও সিরিয়াস ছিলাম, শেষ দিনও সিরিয়াস থেকেছি। তখন হয়তো আমার উগ্রতা আমার চোখে মুখে ফুটে বেরোচ্ছিল তাই তুমি ধরতে পেরেছিলে তাই না।
-হ্যাঁ।
-আমি এখন আইনের জটিল ব্যাপারগুলো নিয়ে একটু পড়াশুনো করছি, তোমাদের তিনজনকে সেফটি রাখার জন্য, ওটা সংবিধান স্বীকৃত, রাষ্ট্রপতি পযর্ন্ত মানতে তা বাধ্য।
-কি রকম।
-একটা উদাহরণ দিচ্ছি তোমায়, বুঝে নিতে হবে তোমাদের আমার নেক্সট পদক্ষেপ। ইসলাম ভাই তুমিও শোনো মন দিয়ে, অনেক ছুটেছো সারা জীবন, বয়স হয়েছে, ক্লান্তি আসবে, এখন তোমার থিতু হওয়ার সময়।
-বল।
-ধরো ভজু তোমার বাড়িতে এখন সারাক্ষণ আছে, মানে ২৪ ঘন্টা, তোমার দেখভাল করে ও। তোমার দায় অদায়ে ও তোমার নিত্যসঙ্গী, আর আমি আদার ব্যাপারী, তোমার কাছে যাই, কিছুক্ষণ সময় কাটাই, তোমায় বড়মা বড়মা বলি, তুমি আমায় খেতে পরতে দাও, বেশ এই পযর্ন্ত তারপর চলে যাই। তোমাকে আমি খুন করবো, আমার একটা শাস্তি হবে, আবার ভজু তোমায় খুন করবে তার একটা শাস্তি হবে। বল কি শাস্তি হতে পারে আমার আর ভজুর।
-মৃত্যুদন্ড কিংবা যাবজ্জীবন।
-ইসলাম ভাই তুমি।
-দিদি যা বলল তাই।
-মিত্রা তুই।
-বলতে পারবো না।
-ছোটোমা।
-তোর কথা এতো গভীর আমার বোধগম্য হচ্ছে না।
-আমার যাবজ্জীবন হবে, ভজুর মৃত্যুদন্ড।
-কেনো!
-দুজনে একই কাজ করেছে শাস্তি আলাদা আলাদা কেনো।
-হ্যাঁ।
-এটাই আইন, তারও সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা আছে।
-কি রকম।
-ভজু তোমার কাছে, মানে দাদা তোমায় ভজুর কাছে রেখে নিশ্চিন্ত। তার জিনিস ভজুর কাছে ঠিকঠাক গচ্ছিত আছে, এই বিশ্বাসটুকু সে অর্জন করতে পেরেছে বলেই, দাদা ভজুকে তোমার কাছে রেখেছে। এখানে ভজুর খুনটা দেখা হবে, রক্ষক যখন ভক্ষক তার পানিশমেন্ট মৃত্যুদন্ড, আর আমার সঙ্গে তোমার রিলেসন আছে ঠিক কিন্তু আমি ততটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি নই ভজুর মতো, তাই তার পানিশমেন্ট যাবজ্জীবন।
ইসলাম ভাই চেয়ার ছেড়ে উঠে এসে আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরলো।
-অনি এতদিন তোকে আমি আন্ডার এস্টিমেট করেছিলাম, ভাবতাম তুই পড়ালেখা করা ছেলে, আমাদের লাইনের ঘাঁত ঘুঁত তুই বুঝিস না, তুই সাংবাদিক আমার কাছে সংবাদ সংগ্রহ করতে আসিস, এখন দেখছি তুই আগুন, তোর আগুনে পুরে মরতেও ভালো লাগছে।
-মুন্না ওকে ছাড় তোর দশাসই চেহারার মধ্যে ওর রোগা পেঁটকা শরীর ঢাকা পরে গেছে, ওর দম বন্ধ হয়ে যাবে। ছোটোমা বললেন।
সত্যি তাই, ইসলাম ভাই আমাকে আবেগের বশে এমন জাপ্টে ধরেছিল আমার প্রায় দম বন্ধ হয়ে যাবার দশা।
আমি কিছুক্ষণ খাওয়ার দিকে মনোনিবেশ করলাম। সবাই চুপচাপ।
-তার ওপর কি জানো বড়মা মিত্রা আমাকে ফোঁকটসে একটা সিলমোহর উপহার দিয়েছে। মালিক।
-শয়তান। দেখছো বড়মা, এই সিরিয়াস কথার মধ্যেও ও কিরকম আমায় টিজ করছে।
-উঃ তুই কি ওকে খোঁচা না দিয়ে থাকতে পারিস না।
-আমার জীবনের সবচেয়ে বড় মিত্র, আবার বড় শত্রুও।
-বলবি না। জানো বড়মা কলেজ লাইফে নোট লিখে দিয়ে আমার কাছ থেকে দুটাকা করে গেঁড়াতো।
সবাই হো হো করে হেসে ফেললো। ছোটোমা বিষম খেলো।
-সেখান থেকেই তুই শুরু করেছিস, আরো বলবো তোর গুণকীর্তন, নুন দেওয়ার তো জায়গা রাখিস নি, এখনোতো সব বলিনি, আমি শত্রু হবো নাতো কে হবে।
ইসলাম ভাই না পারছে হাঁসতে, না পারছে কিছু বলতে, ছোটমার বিষম থামলো, জলের গ্লাসে মুখ দিলো।
-বাবাঃ তোর কি রাগের শরীর।
-আবার খোঁচা দিচ্ছিস। ছোটমা বললো।
-আচ্ছা খা মন দিয়ে খা। আইসক্রিম বলি।
-বল প্লীজ বল। এরপর আইসক্রিমটা খেলে বেশ ভালো জমবে।
-ঠিক আছে খেয়ে নে বলছি।
আমার বলার ধরনে ইসলাম ভাই এবার হেঁসে ফেললো। ইসলাম ভাই-এর হাঁসির চোটে ছোটো কেবিনটা গম গম করে উঠলো। বড়মাও হাঁসছে, ছোটো মাও হাসছে।
-শয়তান, দাঁড়কাক, মেনিবিড়াল।
-সেটা কি রে।
-এই নামেই তো ওকে কলেজে সবাই ডাকতো।
-আইসক্রীম বন্ধ।
-না না এরকম করিস না, আর বোলবো না।
সবাই হাসছে।
কেবিনের দরজা ঠেলে নিরঞ্জনবাবু ঢুকলেন, বাবাঃ এতো দেখছি জোর মজলিশ বসিয়েছো।
বড়মা বললেন থাম কথা বলিস না, এখানে এসে বসে পর।
নিরঞ্জন বাবু বসলেন।
-কি করে জানলি আমরা এখানে।
-বাইরে একখানা জব্বর গাড়ি দাঁড় করিয়ে রেখেছো, গায়ে লেখা প্রেস। তারপর এদের জিজ্ঞাসা করলাম। বলে দিলো।
একটা ছেলে এসে বললো, স্যার আপনার জন্য।
-না কিছু লাগবে না।
-কেনো।
-পান্তা খেয়ে বেরিয়েছি।
মিত্রা মুচকি মুচকি হাসছে।
-হাসছিস কেনো রে মিত্রা।
-দেখলেনা কিরকম কম কম খেলো, আমাকে বললো তুই খা না খা, বাড়িতে গিয়ে পান্তা গিলবে, তুই কি ভাবছিস একা খাবি, আমিও খাবো।
-কচুপোরা।
-দেখিস তোকেও খেতে দেবো না। চিংড়িমাছের টক দিয়ে ওঃ বড়মা কি বলবো তোমায়। জিভ দিয়ে টকাস করে আওয়াজ করলো মিত্রা।
মিত্রার রকম সকম দেখে সবাই হেসে খিল খিল।
-এই চলছে তখন থেকে। বুঝলি নিরঞ্জন তাই এতো হাসি।
-সত্যি দিদি তুমি তোমার ছেলে মেয়ে দুটিকে ভালো পেয়েছো।
-কি দাদা নতুন অতিথিকে ঠাহর করতে পারছো না। তাই না।
-সত্যি অনি তোর চোখ।
-আমার ফ্রেন্ড ফিলোজফার গাইড, মুন্না ভাই। থাকেন বোম্বাই, তিনটে জাহাজ আছে। মিডিল ইস্ট থেকে তেল আনে খালিমুন্নাভাই ইনি হচ্ছেন নিরঞ্জনবাবু, এই জেলার সভাধিপতি, বলতে পারো মুখ্যমন্ত্রী।
-যাঃ কি বলিস তুই।
-কি খাবে বলো, ঠান্ডা না গরম।
-আমি আনাচ্ছি।
-ও সব ব্যাপার অন্য জায়গায়, তুমি এখন আমাদের গেস্ট, আমরা যা বোলবো তাই।
-তোরা কি খাবি।
-মিত্রা বাদে সবাই গরম। তাই তো।
-আমি ঠান্ডা গরম দুটোই খাবো।
বড়মা হাসতে হাসতে বললো, সত্যি মিত্রা তুই পারিস।
-খরচ ওর, খাবোনা কেনো, ও যে কি হার কিপ্টা জানো না, হাত দিয়ে জল গলে না।
আবার সবাই হো হো করে হেসে উঠলো।
মিত্রা দুটোই খেলো, তবে গরম খেয়ে ঠান্ডাটা হাতে নিয়ে নিলো, আমরা কফি খেয়ে সবাই বেরিয়ে এলাম। বড়মাকে বললাম, তুমি মিত্রা ছোটোমা নিরঞ্জনদার গাড়িতে ওঠো দেখছি টাটাসুমো নিয়ে এসেছে। আমরা এই গাড়িতে উঠি। কি নিরঞ্জনদা অসুবিধে আছে নাকি।
-একেবারে না, অনেক দিন গল্প করা হয় নি দিদির সঙ্গে, গল্প করা যাবে।
-আর একটা ফাউ দিলাম, মালকিন।
-বড়মা তুমি কিছু বলবে না, আগে ওর কান ধরো
-আচ্ছা আচ্ছা ধরবো।
আমরা আমাদের মতো গাড়িতে উঠলাম। বড়মারা নিরঞ্জনদার গাড়িতে। গাড়ি চলতে শুরু করলো
[+] 4 users Like MNHabib's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: কাজলদীঘি শ্মশান/পীর সাহেবের থান--মামনজাফরান (জ্যোতি বন্দোপাধ্যায়) - by MNHabib - 08-02-2022, 06:26 PM



Users browsing this thread: