24-12-2018, 04:07 PM
৩।।
সামনের সেন্টার টেবিলটার ওপরে পা তুলে সোফায় শরীর এলিয়ে কাগজের মধ্যে ডুবে পৃথা... আজ সেকেন্ড সাটার্ডে, অফিস ছুটি... তাই একটু বেলা করেই ঘুম থেকে উঠেছে... এখনও ঘুমের মেজাজটা কাটেনি পুরোপুরি... একবার চা খেলেও হাই উঠছে বার বার... হাতের কাগজটাকে পাশে রেখে দিয়ে সামনে ঝুঁকে সেন্টার টেবিলের ওপর থেকে গোল্ড ফ্লেক লাইটের প্যাকেটটা টেনে নেয়, ভেতর থেকে একটা সিগারেট বের করে ঠোঁটের কোনে ঝুলিয়ে প্যাকেটটা ছুঁড়ে রেখে দেয় টেবিলের ওপরে ফিরিয়ে, লাইটারটা তুলে সিগারেটটা ধরিয়ে একটা লম্বা সুখ টান দিয়ে ধোয়া ছাড়ে মুখটাকে ওপর দিকে তুলে... ঘরের মধ্যেটায় হাল্কা কুয়াশার সৃষ্টি হয় সিগারেটের ধোঁয়ায়... আরো একটা টান দেয় সিগারেটএ... ফের ধোয়া ছেড়ে দুই আঙুলের ফাঁকে সিগারেটটাকে চেপে ধরে মোবাইলটাকে তুলে নেয়... ‘ইশশশশ... কাল ফোনটাকে চার্জে বসাতে ভুলে গিয়েছি... বন্ধই হয়ে গেছে...’ টেবিল থেকে পা নামিয়ে উঠে দাঁড়ায়... দেওয়ালের ধারে রাখা শো’কেসটার সামনে গিয়ে চার্জারটা বের করে আনে, প্লাগে গুঁজে দিয়ে চার্জে বসায় মোবাইলটাকে... ‘কেমন যেন পটি পটি পাচ্ছে মনে হচ্ছে... যাই করেই আসি...’ ভাবে পৃথা... বাথরুমে ঢুকে কোমডের ওপরে পরনের পাজামাটাকে টেনে হাঁটু অবধি নামিয়ে বসে... কলকল ধারায় সোনালী হিসি ঝরে পড়ে কোমডের জমা জলে.. বসে বসে সিগারেট টানতে থাকে পটির বেগ আসার অপেক্ষায়।
এই ফ্ল্যাটে আসা ইস্তক এক দিনের জন্যও সে কোন রান্না বান্না করে নি, বাইরের থেকেই আনিয়ে চালিয়ে নিয়েছে। অবস্য রান্না করেনি ভালো লাগেনি বলে নয়, আসলে গ্যাস কানেকশনটাই তো পায় নি গতকাল অবধি। কালকে সুশান্তই একটা সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করে দিয়েছে কাজ চালাবার মত করে। সত্যিই, সুশান্ত অনেক হেল্প করছে ওকে। কতটুকুই বা চেনে ওকে? শুধু মাত্র নিছক অফিস কলিগ বই তো আর কিছুই নয়। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই নিজের থেকেই এগিয়ে এসে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বারে বারে। ও না থাকলে যে কি করত পৃথা এই অচেনা শহরে এসে কে জানে। কিছুই তো প্রায় চিনতো না। মোটামুটি প্রথম দিন থেকেই বেশ ভালো বন্ধুত্বের সম্পর্ক হয়ে গিয়েছে ওদের মধ্যে। প্রথম প্রথম একটা সংকোচ ছিল বটে দুজনার মধ্যে, কিন্তু সেটাও কেটে যেতে বেশিদিন লাগে নি। আপনি থেকে তুমি তে নেমে এসেছে খুব সহজেই, কখন তা বোধহয় নিজেরাও খেয়াল করে নি।
‘গ্যাস যখন পেয়েই গেছি, দেখি, আজ একবার কাছাকাছি কোথাও গিয়ে কিছু জিনিস পত্তর কিনে নিয়ে আসব’খন... এই দুই’দিনের ছুটিতে যতটা সম্ভব গুছিয়ে নেবার চেষ্টা করতে হবে...’ পটি করতে করতে ভাবে পৃথা। ‘মা ক’দিন ধরেই পেছনে পড়ে রয়েছে, নিজে রান্না কর, নিজে রান্না কর, বলে, বাইরের খাবার খেয়ে নাকি শরীরের বারোটা বাজাচ্ছি আমি... আরে বাবা, সেধে কি কেউ সব সময় বাইরের খাবার খায়?’ চলতে থাকে পৃথার ভাবনা। সেই সাথে মুখ থেকে নির্গত সিগারেটের ধোয়ার কুন্ডুলী সারা বাথরুমের মধ্যেটায় একটা হাল্কা কুয়াশার জাল বিস্তার করে চলে... খানিকটা ধোঁয়া উঠে ঘুলঘুলি দিয়ে বেরিয়ে যায়, আর খানিকটা এগিয়ে যায় খোলা বাথরুমের দরজার দিকে।
‘কি কি কেনা উচিত এখন? হুমমম... চিনি, চা পাতা, নুন, চাল, একটু ডাল, কিছু সবজি, আর আর...’ মাথা নিচু করে চিন্তা করে পৃথা, মনের মধ্যে একটা লিস্ট তৈরী করার চেষ্টা করে।
হটাৎ যেন গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে তার... হাতের লোমগুলো খাড়া হয়ে ওঠে... চোখের কোন দিয়ে তার যেন মনে হয় বাথরুমের দরজার দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া ধোঁয়াগুলো একটা কারুর শরীরে ধাক্কা খেয়ে দাঁড়িয়ে গিয়েছে... ধোঁয়ার কুন্ডুলি একটা শরীরকে ঘিরে ধরে কেমন যেন একটা অস্পষ্ট অবয়ব তৈরী করে তুলেছে... বুকের মধ্যেটায় কেমন ধকধক করে ওঠে... গলাটা শুকিয়ে ওঠে মুহুর্তে... পটি হওয়া যেন বন্ধ হয়ে যায় নিমেশে। মুখ তুলে দেখতেও ভিষন ভয় করতে লাগে তার। বুকের মধ্যেটায় হৃদপিন্ডটা যেন সবেগে ধকধক করে ধাক্কা মারতে শুরু করেছে... গলার মধ্যেটা শুকিয়ে ওঠে... সারা শরীরে কাঁটা দেয়... হাতের সুক্ষ্ম লোমগুলো জেগে দাঁড়িয়ে পড়ে... তবে কি... তবে কি...
না, না, তাই বা কি করে সম্ভব? সে ছাড়া আর কেউ এই ফ্ল্যাটে আছে... সেটাই বা কি করে হবে? তবে কি সুশান্তর কথাই ঠিক... কেউ বা কিছু আছে এই ফ্ল্যাটে? সেই জন্যই এতদিন ফাঁকা পড়েছিল ফ্ল্যাটটা? বেশিই সাহস দেখিয়ে ফেলেছে সে? সত্যিই যদি কিছু বা কেউ ওই অশরীরি টাইপের থাকে? না, না, এই সাতসকালে ভুত আসবেই বা কোথা থেকে? যাঃ... ভুত বলে আবার কিছু হয় নাকি? ও...ও সব তো মনের ভুল... চোখের ভ্রম... সত্যিই ভুত বলে কিসসু নেই... শুধু শুধুই হয়তো একটা ভয় ভয় লাগছে... ‘ছি ছি পৃথা, দিনের বেলায় এই ভাবে ভয় পাচ্ছিস?’ নিজেকেই সাহস যোগাবার চেষ্টা করে মনে মনে, মনের মধ্যে সাহস সঞ্চয় করে শেষমেষ মুখ তুলে তাকায় খোলা দরজাটার দিকে... ফাঁকা... কিচ্ছু নেই... কারুর উপস্থিতির লেশমাত্রও নেই সেখানে। একটা বড় হাঁফ ছাড়ে সে... তারপর নিজেকেই মনে মনে গাল পাড়ে নিজের বোকামীর কথা ভেবে। সত্যিই তো, তার মত অমন একটা ডাকাবুকো সাহসী মেয়ে, বেকার বেকার ভয় পেয়ে গেল? তাও কি না এই সাত সকাল বেলায়? ছ্যাঃ। লোকে শুনলে বলবে কি তাকে? কিন্তু... কিন্তু তাও, তাও সে একেবারে নিঃসন্দেহ যেন হতে পারে না। এটা নিয়ে দু’বার তার এই ধরণের অনুভূতি হল। সত্যিই এ সবই তার মনের ভুল? সে যেন স্পষ্ট দেখল ধোঁয়াগুলো দরজার সামনে গিয়ে যেন কারুর শরীর ঘিরে জড়িয়ে ধরেছিল... তৈরী করেছিল একটা ঝাপসা দেহের কাঠামো... নাঃ, নিশ্চয়ই ভুল দেখেছে সে... হতেই পারে হয়তো সেই মুহুর্তে ধোঁয়াগুলো বাতাসের অভাবে ওই জায়গাটায় ঠিক সেই মুহুর্ততেই থমকে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল, আর তাই তার মনে হয়েছিল সেটা কারুর শরীরের সাথে জড়িয়ে রয়েছে... যেমনটা দেখতে লাগে আকাশের মেঘগুলোকে, কেমন মাঝে মধ্যে এক একটা অবয়েব তৈরী করে মেঘের দল... সেই রকমই হবে নিশ্চয়। নিজের মনকে বোঝানোর চেষ্টা করে প্রবল ভাবে ঠিকই, কিন্তু মনের কোন এক কোনে তখনও যেন একটা সংশয় লুকিয়ে থাকে তার... সত্যিই চোখের ভুল? নাকি...?
যে ভাবে পটিটা চমকে গিয়েছে, আর নতুন করে হবার সম্ভবনা নেই... তাই উঠে কোমড শাওয়ারটা হাতে নিয়ে পরিষ্কার হয়ে নেয়... আরো একবার চোখ তুলে তাকায় দরজাটার দিকে, তারপর কেন জানে সে, এগিয়ে গিয়ে বাথরুমের দরজাটা ভিজিয়েই দেয় হাত দিয়ে... ফিরে এসে শরীর থেকে রাতের পোষাকগুলো খুলে কোনে রাখা বালতিটার মধ্যে রেখে শাওয়ারটা চালিয়ে জলের ধারার নীচে দাঁড়ায়। মাথার চুলটাকে ভিজিয়ে হাত বাড়িয়ে শাওয়ারের কলটা বন্ধ করে তাক থেকে শ্যাম্পুর বোতলটা পেড়ে নেয় পৃথা।
সামনের সেন্টার টেবিলটার ওপরে পা তুলে সোফায় শরীর এলিয়ে কাগজের মধ্যে ডুবে পৃথা... আজ সেকেন্ড সাটার্ডে, অফিস ছুটি... তাই একটু বেলা করেই ঘুম থেকে উঠেছে... এখনও ঘুমের মেজাজটা কাটেনি পুরোপুরি... একবার চা খেলেও হাই উঠছে বার বার... হাতের কাগজটাকে পাশে রেখে দিয়ে সামনে ঝুঁকে সেন্টার টেবিলের ওপর থেকে গোল্ড ফ্লেক লাইটের প্যাকেটটা টেনে নেয়, ভেতর থেকে একটা সিগারেট বের করে ঠোঁটের কোনে ঝুলিয়ে প্যাকেটটা ছুঁড়ে রেখে দেয় টেবিলের ওপরে ফিরিয়ে, লাইটারটা তুলে সিগারেটটা ধরিয়ে একটা লম্বা সুখ টান দিয়ে ধোয়া ছাড়ে মুখটাকে ওপর দিকে তুলে... ঘরের মধ্যেটায় হাল্কা কুয়াশার সৃষ্টি হয় সিগারেটের ধোঁয়ায়... আরো একটা টান দেয় সিগারেটএ... ফের ধোয়া ছেড়ে দুই আঙুলের ফাঁকে সিগারেটটাকে চেপে ধরে মোবাইলটাকে তুলে নেয়... ‘ইশশশশ... কাল ফোনটাকে চার্জে বসাতে ভুলে গিয়েছি... বন্ধই হয়ে গেছে...’ টেবিল থেকে পা নামিয়ে উঠে দাঁড়ায়... দেওয়ালের ধারে রাখা শো’কেসটার সামনে গিয়ে চার্জারটা বের করে আনে, প্লাগে গুঁজে দিয়ে চার্জে বসায় মোবাইলটাকে... ‘কেমন যেন পটি পটি পাচ্ছে মনে হচ্ছে... যাই করেই আসি...’ ভাবে পৃথা... বাথরুমে ঢুকে কোমডের ওপরে পরনের পাজামাটাকে টেনে হাঁটু অবধি নামিয়ে বসে... কলকল ধারায় সোনালী হিসি ঝরে পড়ে কোমডের জমা জলে.. বসে বসে সিগারেট টানতে থাকে পটির বেগ আসার অপেক্ষায়।
এই ফ্ল্যাটে আসা ইস্তক এক দিনের জন্যও সে কোন রান্না বান্না করে নি, বাইরের থেকেই আনিয়ে চালিয়ে নিয়েছে। অবস্য রান্না করেনি ভালো লাগেনি বলে নয়, আসলে গ্যাস কানেকশনটাই তো পায় নি গতকাল অবধি। কালকে সুশান্তই একটা সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করে দিয়েছে কাজ চালাবার মত করে। সত্যিই, সুশান্ত অনেক হেল্প করছে ওকে। কতটুকুই বা চেনে ওকে? শুধু মাত্র নিছক অফিস কলিগ বই তো আর কিছুই নয়। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই নিজের থেকেই এগিয়ে এসে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বারে বারে। ও না থাকলে যে কি করত পৃথা এই অচেনা শহরে এসে কে জানে। কিছুই তো প্রায় চিনতো না। মোটামুটি প্রথম দিন থেকেই বেশ ভালো বন্ধুত্বের সম্পর্ক হয়ে গিয়েছে ওদের মধ্যে। প্রথম প্রথম একটা সংকোচ ছিল বটে দুজনার মধ্যে, কিন্তু সেটাও কেটে যেতে বেশিদিন লাগে নি। আপনি থেকে তুমি তে নেমে এসেছে খুব সহজেই, কখন তা বোধহয় নিজেরাও খেয়াল করে নি।
‘গ্যাস যখন পেয়েই গেছি, দেখি, আজ একবার কাছাকাছি কোথাও গিয়ে কিছু জিনিস পত্তর কিনে নিয়ে আসব’খন... এই দুই’দিনের ছুটিতে যতটা সম্ভব গুছিয়ে নেবার চেষ্টা করতে হবে...’ পটি করতে করতে ভাবে পৃথা। ‘মা ক’দিন ধরেই পেছনে পড়ে রয়েছে, নিজে রান্না কর, নিজে রান্না কর, বলে, বাইরের খাবার খেয়ে নাকি শরীরের বারোটা বাজাচ্ছি আমি... আরে বাবা, সেধে কি কেউ সব সময় বাইরের খাবার খায়?’ চলতে থাকে পৃথার ভাবনা। সেই সাথে মুখ থেকে নির্গত সিগারেটের ধোয়ার কুন্ডুলী সারা বাথরুমের মধ্যেটায় একটা হাল্কা কুয়াশার জাল বিস্তার করে চলে... খানিকটা ধোঁয়া উঠে ঘুলঘুলি দিয়ে বেরিয়ে যায়, আর খানিকটা এগিয়ে যায় খোলা বাথরুমের দরজার দিকে।
‘কি কি কেনা উচিত এখন? হুমমম... চিনি, চা পাতা, নুন, চাল, একটু ডাল, কিছু সবজি, আর আর...’ মাথা নিচু করে চিন্তা করে পৃথা, মনের মধ্যে একটা লিস্ট তৈরী করার চেষ্টা করে।
হটাৎ যেন গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে তার... হাতের লোমগুলো খাড়া হয়ে ওঠে... চোখের কোন দিয়ে তার যেন মনে হয় বাথরুমের দরজার দিয়ে বেরিয়ে যাওয়া ধোঁয়াগুলো একটা কারুর শরীরে ধাক্কা খেয়ে দাঁড়িয়ে গিয়েছে... ধোঁয়ার কুন্ডুলি একটা শরীরকে ঘিরে ধরে কেমন যেন একটা অস্পষ্ট অবয়ব তৈরী করে তুলেছে... বুকের মধ্যেটায় কেমন ধকধক করে ওঠে... গলাটা শুকিয়ে ওঠে মুহুর্তে... পটি হওয়া যেন বন্ধ হয়ে যায় নিমেশে। মুখ তুলে দেখতেও ভিষন ভয় করতে লাগে তার। বুকের মধ্যেটায় হৃদপিন্ডটা যেন সবেগে ধকধক করে ধাক্কা মারতে শুরু করেছে... গলার মধ্যেটা শুকিয়ে ওঠে... সারা শরীরে কাঁটা দেয়... হাতের সুক্ষ্ম লোমগুলো জেগে দাঁড়িয়ে পড়ে... তবে কি... তবে কি...
না, না, তাই বা কি করে সম্ভব? সে ছাড়া আর কেউ এই ফ্ল্যাটে আছে... সেটাই বা কি করে হবে? তবে কি সুশান্তর কথাই ঠিক... কেউ বা কিছু আছে এই ফ্ল্যাটে? সেই জন্যই এতদিন ফাঁকা পড়েছিল ফ্ল্যাটটা? বেশিই সাহস দেখিয়ে ফেলেছে সে? সত্যিই যদি কিছু বা কেউ ওই অশরীরি টাইপের থাকে? না, না, এই সাতসকালে ভুত আসবেই বা কোথা থেকে? যাঃ... ভুত বলে আবার কিছু হয় নাকি? ও...ও সব তো মনের ভুল... চোখের ভ্রম... সত্যিই ভুত বলে কিসসু নেই... শুধু শুধুই হয়তো একটা ভয় ভয় লাগছে... ‘ছি ছি পৃথা, দিনের বেলায় এই ভাবে ভয় পাচ্ছিস?’ নিজেকেই সাহস যোগাবার চেষ্টা করে মনে মনে, মনের মধ্যে সাহস সঞ্চয় করে শেষমেষ মুখ তুলে তাকায় খোলা দরজাটার দিকে... ফাঁকা... কিচ্ছু নেই... কারুর উপস্থিতির লেশমাত্রও নেই সেখানে। একটা বড় হাঁফ ছাড়ে সে... তারপর নিজেকেই মনে মনে গাল পাড়ে নিজের বোকামীর কথা ভেবে। সত্যিই তো, তার মত অমন একটা ডাকাবুকো সাহসী মেয়ে, বেকার বেকার ভয় পেয়ে গেল? তাও কি না এই সাত সকাল বেলায়? ছ্যাঃ। লোকে শুনলে বলবে কি তাকে? কিন্তু... কিন্তু তাও, তাও সে একেবারে নিঃসন্দেহ যেন হতে পারে না। এটা নিয়ে দু’বার তার এই ধরণের অনুভূতি হল। সত্যিই এ সবই তার মনের ভুল? সে যেন স্পষ্ট দেখল ধোঁয়াগুলো দরজার সামনে গিয়ে যেন কারুর শরীর ঘিরে জড়িয়ে ধরেছিল... তৈরী করেছিল একটা ঝাপসা দেহের কাঠামো... নাঃ, নিশ্চয়ই ভুল দেখেছে সে... হতেই পারে হয়তো সেই মুহুর্তে ধোঁয়াগুলো বাতাসের অভাবে ওই জায়গাটায় ঠিক সেই মুহুর্ততেই থমকে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল, আর তাই তার মনে হয়েছিল সেটা কারুর শরীরের সাথে জড়িয়ে রয়েছে... যেমনটা দেখতে লাগে আকাশের মেঘগুলোকে, কেমন মাঝে মধ্যে এক একটা অবয়েব তৈরী করে মেঘের দল... সেই রকমই হবে নিশ্চয়। নিজের মনকে বোঝানোর চেষ্টা করে প্রবল ভাবে ঠিকই, কিন্তু মনের কোন এক কোনে তখনও যেন একটা সংশয় লুকিয়ে থাকে তার... সত্যিই চোখের ভুল? নাকি...?
যে ভাবে পটিটা চমকে গিয়েছে, আর নতুন করে হবার সম্ভবনা নেই... তাই উঠে কোমড শাওয়ারটা হাতে নিয়ে পরিষ্কার হয়ে নেয়... আরো একবার চোখ তুলে তাকায় দরজাটার দিকে, তারপর কেন জানে সে, এগিয়ে গিয়ে বাথরুমের দরজাটা ভিজিয়েই দেয় হাত দিয়ে... ফিরে এসে শরীর থেকে রাতের পোষাকগুলো খুলে কোনে রাখা বালতিটার মধ্যে রেখে শাওয়ারটা চালিয়ে জলের ধারার নীচে দাঁড়ায়। মাথার চুলটাকে ভিজিয়ে হাত বাড়িয়ে শাওয়ারের কলটা বন্ধ করে তাক থেকে শ্যাম্পুর বোতলটা পেড়ে নেয় পৃথা।