26-01-2022, 07:16 PM
(This post was last modified: 29-01-2022, 12:13 PM by nandanadasnandana. Edited 24 times in total. Edited 24 times in total.)
টিজার
শিবের শিব প্রাপ্তি
মন সিরিজের দ্বিতীয় গল্প। এটাও প্রেমের গল্প। অনন্য কিনা জানিনা। তবে এ এক মেয়ের কাহিনী। মেয়ে কি? কি জানি। মাঝে মাঝে বুঝি না। মনে হয় মায়া মমতা সব কি মেয়েদের ই সম্পত্তি? না মনে হয়। মা এর একটা আলাদা মানে হয়। আর সেই মানের সংজ্ঞা লিখতে গেলে দু চারটে বই হয়ে যাবে। সে আমার মতন কোন নভিশ লিখলেও তাই হবে। তাই সে চেষ্টা করিনি।
মা যেমন ই হোক, ছেলের কাছে মায়ের থেকে প্রিয়তম জায়গা আর কিছু থাকে বলে মনে হয় না। আর পুত্রের থেকে বড় সম্পদ মায়ের জীবনে কিছু হয় না। কাহিনীর মোড়কে সেই কথাই ছড়ানো আছে।
পুত্রের জন্য এক জন মা তার আজন্ম লালিত, ধারনা, জেদ, ইগো সব বিসর্জন দিতে এক মুহুর্ত দ্বিধা করে না। আমরা কৃতজ্ঞ ভগবানের কাছে। উনি থাকতে পারেন না আমাদের কাছে , তাই মা কে পাঠান আমাদের জন্য।
এই কাহিনী, এক মায়ের, এক বন্ধুর এক ভালবাসার ।
এই টিজার এ তার ই একটু ঝলক দেবার প্রচেস্টা করলাম মাত্র।
কিছু কথা বার্তা। কাহিনীর কিছু মোড় , আপনাদের সাথে ভাগ করে নিলাম। নিজের জবানী তেই লিখলাম, এই সত্য কাহিনী। পুরো সত্য না। কিছু কল্পনা আর কিছু বাস্তবের মিশেল। তবে হ্যাঁ মা ছেলেকে মিলিয়ে দিতে পেরে আমি আনন্দ পেয়েছি। মা হওয়া আর ছেলেকে বড় করার জার্নি টাই তো আনন্দের। অন্তত আমার তাই মনে হয়েছে।আমারও দুটো দৈত্য আছে।
কিছু কথোপকথন আর কাহিনীর মোড় টিজার হিসাবে দিলাম –
১। একে অপর কে চেনা খুব জরুরি। সেটা সব সময়ে চিনব বলে আমরা চিনি এমন না, ঘটনা, পরিস্থিতি আমাদের একে অপর কে চিনিয়ে দেয়-
- কালকে আমার ম্যাচ আছে। আর কেমন বেদো ভাব? আমার পায়ে মারতে আসছিল রনি? মেরে দিলে চাপ ছিল আমার। পাঁচশ টাকা অলরেডি নিয়ে নিয়েছি। খেলার পরে আরো পাঁচশ দেবে বুঝলি?
আসলে আমিও সেই জন্যেই রেগে গেছিলাম। ছেলেটা ভাল খেলে, আর সেই খেলার সব থেকে দামী জিনিস টা কে আক্রমন করায় আমিও রেগে গেছিলাম। রাকার ফুটবলের মতন মুগ্ধকর ব্যাপার আর নেই। কেন যে ও সিরিয়াসলি নেয় না ফুটবল টা কে জানে? ওকে বললাম
- ও তুই খেপ ও খেলছিস? খেলিস না বাইরে। কোথায় লেগে যাবে। ইনজিওর হয়ে যাবি।
- হলে হব। আমি আর কোথায় ইন্ডিয়া খেলব? আমার দৌড় এই রুদ্রপুর বুঝলি?
- কি করে জানলি? হতেও তো পারে তুই আরো দূরে খেলতে গেলি?
- ছাড় বালের কথা!
এই টা শুনলে আমার মাথা খুব গরম হয়। মনে হয় আমাকে পাত্তা দেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু কিছু বললাম না ওকে। ওকে গম্ভীর হয়ে বললাম,
- তোর কাছে সব ই বাল।
- আরে রাগিস না ভাই। তবে আজকে তুই আমাকে বাঁচিয়েছিস। তোর হক আছে যা খুশী বলার আমাকে।
- বাবাহ, একটু আগেই তো বলছিলি, আমি নাকি বেকার ভাবছিলাম, তোকে মারতে এসেছিল বলে ওরা।
- না না পরে ভেবে দেখলাম, একদম ঠিক সময়েই দিয়েছিলি পাঞ্চ টা। ওকে তো আমি পরে দেখে নোব তুই দেখিস।
- না না পরে এই সব আর বাড়াস না বুঝলি।
- ছাড় তুই এই সব কথা, তখন বলতে গেলি একটা কথা আমাকে, আর ওই তিনটে বাল এসে ঝামেলা করল, আর আমার শোনা হল না । বল এবারে।
বুকের ভিতরে আবার আমার ধুকপুকুনি শুরু হল। সন্ধ্যে বেলায় মন তৈরি করে নিয়েছিলাম আমি। মেনে নিয়েছিলাম, এটা শোনার পরে ও আমাদের বন্ধুত্ব মানতে নাও পারে। আর মানলে কেন মানবে, তার পিছনে অনেক যুক্তিও সেট করে নিয়েছিলাম আমি। কিন্তু এখন আবার সেই ভয় টা ফিরে এলো। বন্ধুদের মধ্যে অনেক ঘটনা ঘটে, যা বন্ধুত্ব কে মজবুত করে। আজকেও একটা ঘটনা ঘটেছে, আর আমার বিশ্বাস এতে আমাদের বন্ধুত্ব, শক্ত হয়েছে কিছু টা হলেও। তাই বলতে ইচ্ছে করছে ওকে আমার মনের কথা গুলো। ওদিক থেকে প্রশ্ন ধেয়ে এল
- কি রে বল। আবার দেরী করছিস কেন? আরে বল। ভাবিস না অতো আর
স্থির করলাম বলেই ফেলি। ফোনে আছে তো ও। তখন সামনে সামনে বলতে একটা অস্বস্তি হচ্ছিল আমার। এখন বলেই দি। বললাম……………………………….
২। এ টানের কোন ব্যাখ্যা হয় না। এ ভালোবাসার কোন কারন হয় না।
ঠিক সেই সময়েই একটা বাচ্চা ছেলে দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরল। আমি ঝুঁকে গেলাম সামনের দিকে। একেবারে জাপটে ধরেছে এসে। আমি চমকে উঠলাম একেবারে। শুধু আমি ই না, বাড়ির সবাই অবাক। আমি নিচের দিকে তাকিয়ে দেখলাম। মাথাটা গুঁজে আছে আমার পেটে। জাপটে ধরে আছে আমাকে। বুক টা ধড়াস ধড়াস করছিল আমার। মুখ টা দেখতেও কি মারাত্মক উত্তেজনা হচ্ছে বলে বোঝাতে পারব না আমি। আমি আরো ঝুঁকে বাচ্চা টা কে কোলে তুলে নিলাম। মুখ টা দেখেই , আমার মুখ থেকে বেরিয়ে এল
- শিভ!!!!!
চোখে জলের বাঁধ মানল না আর। ওকে বুকে নিয়ে নিলাম আমি। চারদিকে সবাই আমার দিকে চেয়ে আছে। এটা কি হলো কেউ বুঝতেও পারছে না। আমিও কি ছাই বুঝছি কিছু। তবে মিলিয়ে নিলাম ব্যাপার টা। হয়ত ভগবান ই আমাকে ওর সাথে দেখা করিয়ে দিয়েছে। একটা মা মরা ছেলে কে বুকে পেয়ে আর যেন ছাড়তেই ইচ্ছে করছিল না আমার। জানিনা কেন প্রথম দিন থেকেই ও আমাকে ওর কাছে এক্সেপ্ট করে নিয়েছে। ঘটনা টা তে সবাই এতোক্ষন চুপ করেই ছিল। রাকার মা কথা বললেন প্রথম,
- দাদুভাই তুমি চেন আন্টি কে? কই বলনি তো?
এতোক্ষনে, শিভ কথা বলল। কি মিস্টি করে যে বলল ও
- হ্যাঁ চিনি তো। আমরা ফুটবল খেলি রোজ।
সবাই সবার মুখের দিকে তাকাতে লাগল। আমি কিছু বললাম না কাউকে। শুধু রাকার শালী ছুটে এসে শিভ কে আমার কোল থেকে নামিয়ে নিতে যেতেই শিভ কেঁদে উঠল। যাবে না আমার কোল থেকে ও। আর সুমনা মানে রাকার শালী টেনে ওকে নামানোর চেস্টা করতে লাগল। বুক টা আমার ফেটে যাবে মনে হলো। এ কি দুর্বিপাকে পড়লাম আমি। ওদের ছেলে ওরা আমার বুক থেকে শিভ কে নিয়ে যাচ্ছে আমি বলার কে? কিন্তু ইচ্ছে করছে না ছাড়তে শিভ কে আমার থেকে। মনে হচ্ছে পায়ে পরে যাই সুমনার, আর বলি- দোহাই তোর, একটু থাকুক আমার কাছে।
আমাকে বলতে হলো না কিছু। রাকার শশুর বলল সুমনা কে
- সোনা! বিহেভ ইয়োরসেলফ। শিভ বাচ্চা ছেলে। ওর যাকে পছন্দ হবে, যেখানে ও কম্ফর্টেবল, ও তো সেখানেই যাবে। টেন না ওকে।
শুরু করব এই গল্প আগামী শনিবার থেকে।