23-01-2022, 05:28 PM
দৃষ্টিশক্তি
শুরু:
শুরু:
নিরিবিলি দুপুরবেলা। বিস্তৃত ছাত। পাশাপাশি।
প্যান্টি: "এই, একটা দূরদৃষ্টির গল্প শুনবি?"
জাঙিয়া: "বলে ফ্যাল, শুনছি।"
পাশের বাড়ির ছেলেটি (ছাত থেকে ঝুঁকে): "ও কাকু, সাবধানে বাথরুমে যাবেন; আপনাদের কলতলায় যা পিছল, না ঠাওর করে গেলেই কিন্তু, আছাড় খেয়ে পড়বেন…"
নিরীহ ভদ্রলোক: "আচ্ছা-আচ্ছা, খুব ভালো কথা বলেছিস রে, বাবা।"
পাশের বাড়ির ছেলেটি (ছাত থেকে হাঁক পেড়ে): "ও কাকু, আপনাদের কলতলার বাল্বটা তো কেটে, নষ্ট হয়ে গেছে; শিগগিরই নতুন একটা লাগিয়ে নিন। না হলে তো, অন্ধকারে পড়ে-ঝরে, একটা অ্যাক্সিডেন্ট বাঁধাবেন…"
নিরীহ ভদ্রলোক (ঘাড় নেড়ে): "ঠিক বলেছিস, বাবা। একদম উচিৎ কথা বলেছিস।"
পাশের বাড়ির ছেলেটি (ছাত থেকে হাত নেড়ে): "ও কাকু, আপনাদের কলতলায় নর্দমার ঝাঁঝরিটা, বোধ হয় খুলে, পড়ে গেছে। খোলা নর্দমার মুখটা দিয়ে, অনবরত বাথরুমের মধ্যে, ধেড়ে-ধেড়ে ছুঁচো-ইঁদুর ঢুকে পড়ছে কিন্তু…"
নিরীহ ভদ্রলোক (ব্যস্ত হয়ে): "তাই নাকি রে? ভাগ্যিস তুই লক্ষ্য করেছিস! খুব বুদ্ধিমান ছেলে রে তুই…"
পাশের বাড়ির ছেলেটি (ছাত থেকে মুখ বাড়িয়ে): "ও কাকু, আপনাদের ওই বাথরুমের টিনের দরজার নীচের কব্জাটা না, গতকালের ঝড়ের ধাক্কায়, খুলে, আলগা হয়ে গেছে। বাথরুমের দরজাটা, ওই জন্যই ভালো মতো বন্ধ হচ্ছে না, দেখুন গিয়ে…"
নিরীহ ভদ্রলোক (নীচু হয়ে, দেখে): "হ্যাঁ রে, ঠিক বলেছিস তুই। ধন্যবাদ, তুই খুব ভালো ছেলে রে…"
পাশের বাড়ির ছেলেটি (ছাত থেকে আবার উঁকি দিয়ে): "ও কাকু…"
এইবার সেই নিরীহ ভদ্রলোকের যুবতী, আর ফর্সা স্ত্রী, কোমড়ে হাত দিয়ে বেড়িয়ে এলেন: "এই ছেলে, তোমার আর কোনও কাজ নেই! সারাদিন কী খালি, আমাদের ওই একতলার কলতলাটার দিকে, শকুন-নজর রেখে, বসে থাক নাকি?"
পাশের বাড়ির ছেলেটি (ভাজা মাছ না উল্টে খাওয়ার মতো মুখ করে): "ডাক্তার আমার দৃষ্টিশক্তি প্রখর করবার জন্য, সারাদিন ধরে, দূর থেকে ভালো-ভালো জিনিস দেখা প্র্যাকটিস করতে বলেছেন তো, তাই জন্যই…"
নিরীহ ভদ্রলোক (অবাক হয়ে): "তাই জন্য তুই কী দেখিস?"
পাশের বাড়ির ছেলেটি (মুচকি হেসে): "ওই তো… নতুন কাকিমা দুপুরের দিকে স্নান করতে ঢোকে, পটাং-পটাং করে ব্লাউজ়ের বোতাম খোলে, মাই, আর পাছার দাবনায় ডলে-ডলে কেমন সুন্দর করে সাবান মাখে, মাঝে-মাঝে বগোল উঁচু করে, বগোলের ঝাঁটে রেজ়ার চালায়, কখনও-কখনও কলকল করে হিসি করতে বসে, দু-পা ফাঁক করে, প্যান্টি নামিয়ে, তার মধ্যে এক্সট্রা-লার্জ ন্যাপকিন সেট করে, আবার কখনও ঘ্যাষঘ্যাষ করে সায়ার মধ্যে হাত গলিয়ে, ওইখানটায় খুব চুলকায়, আর ঠোঁট কামড়ে, চোখ বুজিয়ে, আরাম করে হাত মারে, এমনকি মাঝে-মধ্যে তো কলতলার খরখরে দেওয়ালটার গায়েও, নিজের তলপেটটা ঘষে-ঘষে, মুখ দিয়ে আহঃ-উহঃ শব্দ তুলে-তুলে…"
নিরীহ ভদ্রলোক এখন পুরোপুরি কোমায় চলে গিয়েছেন।
আর তাঁর সেই যুবতী ও ফর্সা স্ত্রীটিকে, গত সাতদিন ধরে, এলাকায় কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না!
শেষ:
প্যান্টি: "কী হল রে, তুই হঠাৎ এমন চোখ পিটপিট করছিস কেন?"
জাঙিয়া: "ভাবছিলাম, 'চোখের বালি'-টা কে যেন লিখেছিল?…"
১৫.০১.২০২২