22-01-2022, 06:10 PM
বাড়ি থেকে বেরিয়ে হীনমন্য এই পুরুষ জাতিকে খেদাতে খেদাতে তিনি জেট এয়ার ওয়েস এর দমদম থেকে ফ্লাইটে করে স্ব পরিবারে এসে পৌঁছালেন নিকোবর । পরের দিনই নিকোবরে থেকে যাবেন লঞ্চ -এ করে আন্দামান । সেখানে থাকবেন ৭ দিন আর ফিরে এসে নিকোবরে , ৩ দিন থেকে ফিরে যাবেন তারা কলকাতায় । ৩৫০ টা দ্বীপ নিয়ে এই আন্দামান নিকোবর । বিমান পোত্ এর সুরক্ষা কর্মী থেকে বিমানের ছেলে সেবক , আর হোটেলের বেয়ারাদের গুষ্টির তুষ্টি করতে করতে তার যাত্রা বেশ মসৃন ভাবে চলছিল । আর বিলটু তার বাবার এগুলো গা সওয়া হয়ে গেছে ।
" অনুগ্রহ করে শুনবেন , আন্দামান গামী সমস্ত যাত্রীদেরকে সি গল্ ক্যারিয়ার এর পক্ষ থেকে জানানো যাচ্ছে আলিয়াত ঘূর্ণি ঝড়ের জন্য সমস্ত জাহাজের অবগাহন প্রক্রিয়া এই মুহূর্তে বন্ধ রাখা হয়েছে । যাত্রীদের একান্ত অনুরোধ তারা আগামী কাল ঠিক এই সময়ে উপস্থিন হয়ে তাদের যাত্রা সম্পূর্ণ করতে পারেন । সমস্ত জাহাজ কে বন্দরে স্থগিত রাখতে নির্দেশ করা হলো । যারা তাদের পূর্ব নির্ধারিত টিকিট বাতিল করতে চান অনুগ্রহ করে সি গল্ এর কাউন্টার অফিস এ যোগাযোগ করুন । আজগের সমস্ত টিকিট আগামী কাল অর্থাৎ ২২ তারিখে এবং প্রজায় ক্রমে ২৩ তারিখে বৈধ বলে গণ্য হবে । আমরা সেই সমস্ত যাত্রী কেই আন্দামান যাবার অনুমতি বিবেচনা করবো যাদের দূরসংযোগের একমাত্র বিমান অপেক্ষারত অথবা যারা দূর পাল্লার ভ্রমণ করছে আন্দামানে বিমান বন্ধরের মাধ্যমে আবহাওয়ার পূর্ভাবাস অনুযায়ী ।প্রক্রিয়ায় সরলীকরণ নিয়ম অনুযায়ী ভারত সরকারের বন্দর আধিকারিক বিভাগের কার্যরত অধ্যক্ষের সাথে তাদের যোগাযোগ করতে অনুরোধ করা হচ্ছে । "
" সব হচ্ছে কারসাজি , এদের বুঝি না, এই চল তো বিল্টু আমার সাথে , ৯০০০ টাকা নষ্ট হয়ে যাবে , মামার বাড়ি , ঝড়ে নৌকা ডুবি হয় , জাহাজ ডুবে যায় নাকি ! এক হাটু জল । ব্যবসার ধান্দা ! কাল টিকিটের দাম দ্বিগুন করবে । এই যে কি শুধু লুকিয়ে লুকিয়ে হাতে খইনি ডলে তো জীবন কাটলো , একটু কোমরটা নাড়াও এবার । নাকি হোটেলের ভাড়া গুনবে আজকের জন্য । হ্যারিকেন না লম্ফো বুঝে নেবো আমি , ঝুমা কাঞ্জিলালের কাছে ওসব ধানাই পানাই চলবে না !"
ব্যাগ পত্তর নিয়ে স্বামী আর ছেলে কে হিড় হিড় করতে টেনে নিয়ে চললেন ঝুমা কাঞ্জিলাল । ধুমসো পাছা এদিক ওদিক করছে বিশ্রী ভাবে শাড়ির পিছন থেকে । বিলটু দেখে একটু লজ্জা পায় । তার হাত ধরে থাকা মায়ের হাতে , ঘাড় কাত করে মায়ের ঘামে ভিজা বগলে সাদা ব্লাউসের উপর ফুটে ওঠা ব্রেসিয়ার দেখে । আর মাথা নাড়িয়ে হেলতে দুলতে বাধ্য পুরুষের মতো মনে রবীন্দ্র সংগীত আওড়াতে আওড়াতে লাহিড়ী বাবু পিছনে চললেন কুলির মতো , মাথায় কাঁধে দুটো করে ব্যাগ । মনে মনে গর্ব হয় স্বাধীনতা সংগ্রামী দের জন্য । মনে বিদ্রোহের আগুন জ্বলে ওঠে " ইনকিলাব জিন্দাবাদ !" আছাড় মেরে ফেলবেন এই ঝুমা কাঞ্জিলাল কে সেলুলার জেলে । তার পর ফাটা বেলুনের মতো ভয়ে চুপসে যান বাকি রাস্তা টুকু " বাবা মেয়ে তো নয় হিটলার " এই ভাবনার জন্য লাহিড়ী বাবু কে না জানি কত বার আছাড় মারেন ঝুমা দেবী ।
ঝুমা: আচ্ছা কি ভেবেছেন বলুন তো আপনারা, হ্যাঁ? আমার টুর আছে , আমি আপনার জন্য এতো টাকা নষ্ট করবো ? আমার অটো টাকা নেই, আর পাঠাতে না পারলে দিন আমায় এক দিনের থাকা খাওয়া হোটেল খরচ আর তৌরের পয়সা আমি যাবো না । না হলে আমাকে আজি যেতে হবে , আমি কিছু শুনতে চাইনা । ঝড়ের বাহানা দিয়ে আপনারা ব্যাসাব্স করবেন , আর দুর্ভোগ পোহাবে জন গণ !
আধিকারিক: ম্যাডাম শান্ত হন, এলিয়াস আসছে ১৬০ কিলোমিটার বেগে , ভেবে দেখুন আপনার সেফটি বড়ো না , ঘুরতে যাওয়া বড়ো ।
ঝুমা: দেখুন আমি কলেজের প্রিন্সিপাল আমাকে বোঝাতে আসবেন না , সামান্য দু ঘন্টার তফাতে ঝড় এসে উড়িয়ে নিয়ে যাবে জাহাজ, আর এই সব টুকি টাকি ঝড়ের জন্য জাহাজের নেভিগেশন সিস্টেম থাকে , তোর চেয়ে ইটা বলুন না আপনারা কার্গোর জন্য মোটা টাকা নিয়েছেন বলে সাধারণ ফ্রেইট এর যাত্রীদের বাহানা দিয়ে মোটা টাকা নিচ্ছেন অসাধু ব্যবসায়ী দের কাছ থেকে ।
আধিকারিক অত্যন্ত ভদ্র লোক , বুঝে গেলেন এ মহিলা কারোর কথা শোনার লোক নয় , বুঝিয়েও লাভ নেই ।
আধিকারিক: সুবোধ সেলফ ডিক্লারেশন ফর্ম 18b নিয়ে আসুন তো তিনটে । একটা লোক তিনটে হলুদ পাতার ফর্ম এনে দিলো । ঝুমা দেবীর দিকে তাকিয়ে বললেন ৩৩২ এ ৩০ মিনিটে ছাড়বে বোর্ডিং পাস রেডি করে দিচ্ছি , তার আগে এই তিনটে ফর্ম এ তিনজন সই করুন ।
ঝুমা: কেন ফর্ম এ সই করতে হবে কেন , কিসের ফর্ম ?
আধিকারিক: আপনি সরকার কে প্রতিলিপি দিচ্ছেন যে আপনার সুরক্ষার জন্য ভারত সরকার কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না ।
ঝুমা: মুখ ঝামটা মেরে বললেন " সব ভোঁতা বাজি বুঝি না , এই বিল্টু না সই কর !"
তিন জন্যে সই করে হন হন করে বেরিয়ে গেলেন ঝুমি দেবী নিদ্দিষ্ট শিপ বোর্ডিং জেটটি তে । জাহাজ হারার আগেই আকাশ কালো করে মেঘ করে আছে, জহির জহির বৃষ্টি পড়ছে । ভাব গতিক ভালো বুঝছিলেন না লাহিড়ী বাবু । " বলছিলাম কি আরেক বার ভেবে দেখতে !" বলে ঝুমার দিকে অপরাধ বোধ করে তাকিয়ে রইলেন লাহিড়ী বাবু । " মেনি মুখ তুমি কি পুরুষ না কি , হাতে চুরি পরে ঘরে বসে থাকলেই তো পড়তে ! বীরত্ব নিয়ে ছেলে বৌ সমেত বেড়াতে বের হলে কেন !"
" অনুগ্রহ করে শুনবেন , আন্দামান গামী সমস্ত যাত্রীদেরকে সি গল্ ক্যারিয়ার এর পক্ষ থেকে জানানো যাচ্ছে আলিয়াত ঘূর্ণি ঝড়ের জন্য সমস্ত জাহাজের অবগাহন প্রক্রিয়া এই মুহূর্তে বন্ধ রাখা হয়েছে । যাত্রীদের একান্ত অনুরোধ তারা আগামী কাল ঠিক এই সময়ে উপস্থিন হয়ে তাদের যাত্রা সম্পূর্ণ করতে পারেন । সমস্ত জাহাজ কে বন্দরে স্থগিত রাখতে নির্দেশ করা হলো । যারা তাদের পূর্ব নির্ধারিত টিকিট বাতিল করতে চান অনুগ্রহ করে সি গল্ এর কাউন্টার অফিস এ যোগাযোগ করুন । আজগের সমস্ত টিকিট আগামী কাল অর্থাৎ ২২ তারিখে এবং প্রজায় ক্রমে ২৩ তারিখে বৈধ বলে গণ্য হবে । আমরা সেই সমস্ত যাত্রী কেই আন্দামান যাবার অনুমতি বিবেচনা করবো যাদের দূরসংযোগের একমাত্র বিমান অপেক্ষারত অথবা যারা দূর পাল্লার ভ্রমণ করছে আন্দামানে বিমান বন্ধরের মাধ্যমে আবহাওয়ার পূর্ভাবাস অনুযায়ী ।প্রক্রিয়ায় সরলীকরণ নিয়ম অনুযায়ী ভারত সরকারের বন্দর আধিকারিক বিভাগের কার্যরত অধ্যক্ষের সাথে তাদের যোগাযোগ করতে অনুরোধ করা হচ্ছে । "
" সব হচ্ছে কারসাজি , এদের বুঝি না, এই চল তো বিল্টু আমার সাথে , ৯০০০ টাকা নষ্ট হয়ে যাবে , মামার বাড়ি , ঝড়ে নৌকা ডুবি হয় , জাহাজ ডুবে যায় নাকি ! এক হাটু জল । ব্যবসার ধান্দা ! কাল টিকিটের দাম দ্বিগুন করবে । এই যে কি শুধু লুকিয়ে লুকিয়ে হাতে খইনি ডলে তো জীবন কাটলো , একটু কোমরটা নাড়াও এবার । নাকি হোটেলের ভাড়া গুনবে আজকের জন্য । হ্যারিকেন না লম্ফো বুঝে নেবো আমি , ঝুমা কাঞ্জিলালের কাছে ওসব ধানাই পানাই চলবে না !"
ব্যাগ পত্তর নিয়ে স্বামী আর ছেলে কে হিড় হিড় করতে টেনে নিয়ে চললেন ঝুমা কাঞ্জিলাল । ধুমসো পাছা এদিক ওদিক করছে বিশ্রী ভাবে শাড়ির পিছন থেকে । বিলটু দেখে একটু লজ্জা পায় । তার হাত ধরে থাকা মায়ের হাতে , ঘাড় কাত করে মায়ের ঘামে ভিজা বগলে সাদা ব্লাউসের উপর ফুটে ওঠা ব্রেসিয়ার দেখে । আর মাথা নাড়িয়ে হেলতে দুলতে বাধ্য পুরুষের মতো মনে রবীন্দ্র সংগীত আওড়াতে আওড়াতে লাহিড়ী বাবু পিছনে চললেন কুলির মতো , মাথায় কাঁধে দুটো করে ব্যাগ । মনে মনে গর্ব হয় স্বাধীনতা সংগ্রামী দের জন্য । মনে বিদ্রোহের আগুন জ্বলে ওঠে " ইনকিলাব জিন্দাবাদ !" আছাড় মেরে ফেলবেন এই ঝুমা কাঞ্জিলাল কে সেলুলার জেলে । তার পর ফাটা বেলুনের মতো ভয়ে চুপসে যান বাকি রাস্তা টুকু " বাবা মেয়ে তো নয় হিটলার " এই ভাবনার জন্য লাহিড়ী বাবু কে না জানি কত বার আছাড় মারেন ঝুমা দেবী ।
ঝুমা: আচ্ছা কি ভেবেছেন বলুন তো আপনারা, হ্যাঁ? আমার টুর আছে , আমি আপনার জন্য এতো টাকা নষ্ট করবো ? আমার অটো টাকা নেই, আর পাঠাতে না পারলে দিন আমায় এক দিনের থাকা খাওয়া হোটেল খরচ আর তৌরের পয়সা আমি যাবো না । না হলে আমাকে আজি যেতে হবে , আমি কিছু শুনতে চাইনা । ঝড়ের বাহানা দিয়ে আপনারা ব্যাসাব্স করবেন , আর দুর্ভোগ পোহাবে জন গণ !
আধিকারিক: ম্যাডাম শান্ত হন, এলিয়াস আসছে ১৬০ কিলোমিটার বেগে , ভেবে দেখুন আপনার সেফটি বড়ো না , ঘুরতে যাওয়া বড়ো ।
ঝুমা: দেখুন আমি কলেজের প্রিন্সিপাল আমাকে বোঝাতে আসবেন না , সামান্য দু ঘন্টার তফাতে ঝড় এসে উড়িয়ে নিয়ে যাবে জাহাজ, আর এই সব টুকি টাকি ঝড়ের জন্য জাহাজের নেভিগেশন সিস্টেম থাকে , তোর চেয়ে ইটা বলুন না আপনারা কার্গোর জন্য মোটা টাকা নিয়েছেন বলে সাধারণ ফ্রেইট এর যাত্রীদের বাহানা দিয়ে মোটা টাকা নিচ্ছেন অসাধু ব্যবসায়ী দের কাছ থেকে ।
আধিকারিক অত্যন্ত ভদ্র লোক , বুঝে গেলেন এ মহিলা কারোর কথা শোনার লোক নয় , বুঝিয়েও লাভ নেই ।
আধিকারিক: সুবোধ সেলফ ডিক্লারেশন ফর্ম 18b নিয়ে আসুন তো তিনটে । একটা লোক তিনটে হলুদ পাতার ফর্ম এনে দিলো । ঝুমা দেবীর দিকে তাকিয়ে বললেন ৩৩২ এ ৩০ মিনিটে ছাড়বে বোর্ডিং পাস রেডি করে দিচ্ছি , তার আগে এই তিনটে ফর্ম এ তিনজন সই করুন ।
ঝুমা: কেন ফর্ম এ সই করতে হবে কেন , কিসের ফর্ম ?
আধিকারিক: আপনি সরকার কে প্রতিলিপি দিচ্ছেন যে আপনার সুরক্ষার জন্য ভারত সরকার কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না ।
ঝুমা: মুখ ঝামটা মেরে বললেন " সব ভোঁতা বাজি বুঝি না , এই বিল্টু না সই কর !"
তিন জন্যে সই করে হন হন করে বেরিয়ে গেলেন ঝুমি দেবী নিদ্দিষ্ট শিপ বোর্ডিং জেটটি তে । জাহাজ হারার আগেই আকাশ কালো করে মেঘ করে আছে, জহির জহির বৃষ্টি পড়ছে । ভাব গতিক ভালো বুঝছিলেন না লাহিড়ী বাবু । " বলছিলাম কি আরেক বার ভেবে দেখতে !" বলে ঝুমার দিকে অপরাধ বোধ করে তাকিয়ে রইলেন লাহিড়ী বাবু । " মেনি মুখ তুমি কি পুরুষ না কি , হাতে চুরি পরে ঘরে বসে থাকলেই তো পড়তে ! বীরত্ব নিয়ে ছেলে বৌ সমেত বেড়াতে বের হলে কেন !"