Thread Rating:
  • 63 Vote(s) - 2.92 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
কাজলদীঘি শ্মশান/পীরবাবার থান--মামনজাফরান (জ্যোতি বন্দোপাধ্যায়)
নাও অনেক গল্প হলো, এবার খাবার বন্দোবস্ত করো। মিত্রার দিকে তাকিয়ে বললাম, কিরে তুই কাপর ছাড়বি না।
-খেয়ে নিই।
-পেট ঠিক আছে।
-খারাপ হতে যাবে কেনো।
-ঠিক আছে।
সবাই একসঙ্গে খেতে বসলাম, আমি মাঝখানে, আমার একপাশে মিত্রা একপাশে বড়মা, আর আমাদের মুখোমুখি ছোটমা, মল্লিকদা অমিতাভদা। নিচে ভজুর আসন করা হয়েছে, ভজু নিচ ছাড়া কোথাও বসবে না, সকালেও আমি টেবিলে বসে খেয়েছি ভজু নিচে। আজ বুফে সিস্টেম যে যার ইচ্ছে মতো নিয়ে খাও। তবে বড়মা ছোটমাই সব দিচ্ছেন।
আমি মিত্রার পাতের দিকে তাকালাম।
-একবারে হাত দিবি না। নিজেরটা সামলা।
-তখন দু পিস মেরেছিস।
-বেশ করেছি তোর কি। পারলে তুইও খা।
-হাগুড়ে।
মিত্রা ডালে চুমুক দিলো।
-ডালটা দারুন বানিয়েছিস। বড়মা একবাটি আলাদা করে সরিয়ে রাখোতো
-কেনো গিলবি।
-তুই কথা বলবি না আমি বড়মার সঙ্গে কথা বলছি।
ছোটমা মল্লিকদা মুচকি মুচকি হাসছে। দাদা গম্ভীর হওয়ার অভিনয় করছে, বড়মা চুপচাপ।
-কাল যেতে হবে, রাস্তায় যদি গাড়ি থামাতে বলিস………খুব আস্তে চিবিয়ে চিবিয়ে বললাম। তবে সবাই শুনতে পেয়েছে।
-আচ্ছা তুই খা না, ওকে ওর মতো খেতে দে, ওর খুব খিদে পেয়েছে আজ। অমিতাভদা বললেন।
মিত্রা আমার দিকে তাকালো, ভাবটা এরকম বোঝ এবার।
-হ্যাঁরে অনি তুই চিলি চিকেন তৈরি করা শিখলি কোথা থেকে। বড়মা বললেন।
-ভজুরাম বলে দাও তো।
-আমরা দুজনে কয়েকমাস রামবাগানের একটা হোটেলে কাজ করেছিলাম।
বড়মা আমার মুখের দিকে তাকালেন। মিত্রা আমার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে, আমি ওর পাত থেকে একটা মাংসের টুকরো সরিয়ে দিলাম, ছোটমা দেখে মুখ টিপে হাসলো।
-তোর আর কি অভিজ্ঞতা আছে বলতো। বড়মা ভাতে ডাল মেখে বললো।
-সব একদিনে হলে হয় কি করে বলোতো, তুমি মিত্রাকে ঠ্যাং খাওয়াবে আমার জন্য কিছু রাখবে না।
-শয়তান, তুই আমার পাত থেকে তুলে নিয়েছিস। আমি এখানে রেখেছিলাম দে আগে।
আমি তখন মিত্রার পাত থেকে তুলে নেওয়া ঠ্যাংটা সাঁটাতে আরম্ভ করেছি। ও আমার মুখ থেকে ওটা কেড়ে নিয়ে বাকিটা খেয়ে নিলো।
সবাই হো হো করে হাসলো।
-যাই বল চিলি চিকেনটা হেবি বানিয়েছিস। মল্লিকদা বললেন।
-ছোটমা ভাত।
আমার পাতে ভাত পরলো।
-কিগো ডালের কোনো কমেন্টস পেলাম নাতো। বড়মার দিকে হেলে বললাম।
-তোর কাছ থেকে রান্নাটা শিখতে হবে।
-খালি আমি শিখতে গেলেই বয়েস হয়ে যায় না।
-চুপ করো। জীবনে নিউজ ছাড়া কিছু শিখেছো।
আমি মুচকি মুচকি হাসছি, কি গো মাছ কোথায় গেলো।
বড়মা জিভ বার করলেন। ছোটমা দেখে হেসে ফেললেন।
-একবারে নিয়ে আসবে না। ওটা আমাদের তিনজনের জন্য, সকালে ওরা খেয়েছে। মিত্রা চেঁচিয়ে উঠলো।
-তুই একা খা না। বুঝেছি আজ তোর শরীর ভালো হয়ে গেছে। ওষুধ পরছে তো। খিদে পাবেই। ওখানে চ পান্তা গেলাবো।
-চিংড়িমাছের টক।
-সব।
ছোটমা উঠে মাছের বাটি নিয়ে এলেন।
-উঃ সাইজ কি পাবদা মাছের। দাদাকে একটা মল্লিকদাকে একটা দিয়ে দাও, বাকিটা তোমার ও পাশে রেখে দাও। একবারে এপাশে নয়, তাহলে কিছু জুটবে না।
বড়মা হেসে ফেললেন। ও ছোটো তোরা তখন ওকে বেশি করে কচুরি খাওয়াতে পারতিস।
-ভাত নিবি না।
-না।
-কেনো।
-এগুলো খেতে হবে না।
-এতো খাবি। নির্ঘাত আজ রাতের ঘুমটা ভালো হবে না।
-না হোক।
-অনি তুই তোর অভিজ্ঞতাগুলো লিখে রাখিস?
-হ্যাঁ।
-একটা কাজ কর।
-একবারে কাগজের জন্য লিখবি না। বড়মা বললেন।
সবাই হো হো করে হেসে ফেললেন।
-তোমরা ওকে পয়সা দেবে।
-বুঝলি কিছু অনি তোর বড়মার কথা। কার সঙ্গে ঘর করলাম বল তিরিশ বছর।
অমিতাভদা এমন করে বললো, সবাই আবার হেসে ফেললো।
-আমায় একটু চিলি চিকেন দেবে। বড্ড ভালো রেঁধেছে অনি।
মিত্রা মাতা নীচু করে মুখ টিপে হাসলো।
ছোটমা অমিতাভদার পাতে দিলেন। মল্লিকদা নিস্তব্ধে খেয়ে যাচ্ছে।
আমি কবিতা আওড়ালাম, “আমসত্ব দুধে ফেলি তাহাতে কদলি দলি/ হাপুশ হুপুশ শব্দ, চারিদিক নিস্তব্ধ/ পিঁপড়া কাঁদিয়ে যায় পাতে’’
-এটা আবার কে রে। বড়মা বললেন।
মল্লিকদার গলা পেলাম, বুঝলে না আমায় আওয়াজ দিলো।
আমি চুপ।
-বুঝলি অনি ভালো জিনিষের কদর করতে হয় নিস্তব্ধে।
ছোটমা আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো।
-শোনো বড়, অনির একটা আলাদা পাঠক আছে, তারা অনির লেখা পড়তে ভালোবাসে, ও লিখতে শুরু করলেই কাগজের সার্কুলেশন বাড়বে, সার্কুলেসন বাড়া মানেই এ্যাড আসবে। এ্যাড আসা মানে ঋণ শোধ হবে।
-ও বাবা এতো আছে, তাহলে তুই লেখ অনি।
আবার সকলে হেসে উঠলো।
-কাল কখন বেরোবে।
-পাঁচটা।
-তারমানে চারটে থেকে তোড়জোড় চলবে।
-কাকে যেতে বলেছিস। মিত্রার দিকে তাকিয়ে বললাম।
-তুই যেরকম বলেছিস সেরকম ব্যবস্থা করেছি।
-কি রকম।
-রবীন যাবে, বড় গাড়ি আসবে।
-অনাদিকে ফোন করেছিলি।
-আমি করিনি। নীপা ফোন করেছিলো। বলে দিয়েছি।
-বেশ।
-তোমাদের খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা। অমিতাভদার দিকে তাকালাম।
-ভজু আছে।
-কিরে ভজু পারবি তো।
-খুব পারবো, তোমায় চিন্তা করতে হবে না।
-ও বাড়ির কি ব্যবস্থা করলি।
-বুড়ীমাসি আসবে। সব তালা দিয়ে দিয়েছি। ওরা তো আছে।
-কিছু খুলে রেখে আসিস নি তো।
-ছোটমা তালা দিয়েছে। আমি দিই নি।
-যাক রক্ষে, না হলে তোর তালা লাগানো, তালা তালার মতো ঝুলবে, কিন্তু দেখা যাবে কেউ এসে ঢুকে গেছে।
-হ্যাঁ তোকে বলেছে।
খাওয়া শেষ হলো। আমি ওপরে উঠে এলাম। মিত্রা এলো একটু পরে।
-যাই বল বুবুন তুই আজ দারুন রান্না করেছিস, সবাই খুব তৃপ্তি করে খেলো।
-তুই।
-আমার কথা বাদ দে। আমি তো হাগুড়ে।
হাসলাম। মিত্রা কাপর খুলছে, ব্লাউজ খুললো
-দে ফিতেটা একটু আলগা করে। আমি ওর ব্রার ফিতেটা খুলে দিলাম, ব্রাটা বুক থেকে খসে পরলো, আমি ওর মাইটা একটু টিপে দিলাম।
-তুই শুরু করলি মনে থাকে যেন।
-না আজ কোনো কিছু নয়।
ও এগিয়ে এসে আমার পাজামার ওপর দিয়ে নুনুটা মুঠো করে ধরলো।
-আঃ।
-কি হলো।
-তুই তো আমার লোমটোম ছিঁড়ে দিবি।
-খোল একটু হাত বুলিয়ে দিই।
-না। বাথরুমে যাবি।
-হ্যাঁ, যা খেলাম পটি না করলে হজম হবে না।
-ছোটমার কাছ থেকে কার্মোজাইম খেয়ে আয়।
-খেয়ে এসেছি।
-যা বাথরুমে যা। আমি শুলাম।
-না এখন শুবি না। আমি ঘুরে আসি তারপর।
মিত্রা টাওয়েলটা নিয়ে বাথরুমে চলে গেলো। আমি আমার কাগজপত্র গুলো গুছিয়ে নিলাম, চিকনার ডিডটা দেখলাম, হ্যাঁ হিমাংশু বাংলায় লিখে পাঠিয়েছে। অফিসের কাগজগুলো উল্টে পাল্টে দেখে নিলাম। হ্যাঁ সব ঠিক আছে। ওখানে গিয়ে মিত্রাকে অনেক কাজ শেখাতে হবে। না হলে আমার অবস্থা একেবারে খারাপ হয়ে যাবে।
মিত্রা বাথরুম থেকে বেরোলো, বুকের ওপর টাওয়েলটা বেঁধে বেরিয়ে এসেছে। আমি ওর দিকে তাকালাম।
-তাকাস না তাকাস না। অনেক দেখেছিস।
আমি উঠে দাঁড়ালাম।
-বুবুন খারাপ হয়ে যাবে বলে দিচ্ছি, একবারে কাছে আসবি না।
-তখন খামচে ধরেছিলি না।
-ঠিক আছে আর করবো না, প্রমিস।
মাথা দুলিয়ে দুলিয়ে বললাম প্রমিস, প্রমিস দেখানো হচ্ছে।
-আমি চেঁচাবো।
-চেঁচা। দেখি কত তোর গলার জোর।
-আমি বাথরুমে ঢুকে যাবো।
-ছিটকিনি দিয়ে দেবো, সারারাত থাকতে হবে।
-ঠিক আছে ঠিক আছে, আর কোনো দিন হবে না।
-ছেড়ে দিলাম মনে রাখবি।
-ওই হোল্ডঅলটার ওপরের চেন টেনে আমার ম্যাক্সিটা দে।
-নিজে নিয়ে নে।
-দে না।
-আমি ম্যাক্সিটা বার করে ওর দিকে ছুঁড়ে ফেলে দিলাম। খাটের ওপর গিয়ে বসলাম, কাগজগুলো গুছিয়ে একটা ফাইল টেনে নিলাম।
মিত্রা ম্যাক্সিটা পরে চুল আঁচড়াচ্ছে।
-এগুলো কি আজ বুঝবি, না ওখানে গিয়ে বুঝবি।
-কি বলতো।
-চিকনার ব্যাপারটা।
-ওখানে গিয়ে।
-টাকা তুলেছিস।
-হ্যাঁ।
-কতো।
-২ লাখ। তুইতো তাই বলেছিলি।
-ঠিক আছে। লাগলে আবার এসে নিয়ে যাবো।
-সনাতনবাবু ব্যাঙ্কে টাকা জমা দেওয়ার স্লিপগুলো তোকে দিয়ে সই করাচ্ছে।
-হ্যাঁ।
-তুই লিখে রাখছিস ডাইরিতে।
-হ্যাঁ। তুই যা যা বলেছিস আমি তাই করছি, একেবারে অক্ষরে অক্ষরে।
আমি টেবিলে গিয়ে ফাইলটা রাখলাম। মিত্রা মুখে লোসন লাগাচ্ছে। শুলাম, কালকে রেডি হয়ে ডাকবি, তার আগে ডাকবি না।
-দাঁড়া তোকে শোয়াচ্ছি।
-আবার শুরু করলি।
-আমি কিন্তু এখন টাওয়েল পরে নেই।
হাসলাম।
মিত্রা নিজের কাজ শেষ করে বিছানায় এলো, সরে শো।
-বিরক্ত করিস না, তুই ওই পাসে গিয়ে শো।
-না আমি ধারে শোবো, তুই সরে যা।
আমি সরে গেলাম, ও শুলো।
[+] 3 users Like MNHabib's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: কাজলদীঘি শ্মশান/পীর সাহেবের থান--মামনজাফরান (জ্যোতি বন্দোপাধ্যায়) - by MNHabib - 26-01-2022, 08:52 AM



Users browsing this thread: