11-01-2022, 10:03 PM
(This post was last modified: 26-03-2022, 09:28 AM by ddey333. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
দহন খাতা থেকে
জ্ঞান ফিরলো পাক্কা তিন বছর পর, বিধবার থানে দেখিনি কাজরী মাসি কে । নাহলে তো রোজই সেই হালকা সবুজ রঙের মার্কি কাপড়ের ড্রেস হাসপাতালে । মা আর আসে না ইদানিং , বিরক্ত হবারই কথা । আগে তো শুরুতে প্রতি সপ্তাহে , তার পর প্রতি মাসে , শেষ কয়েকমাস আর আসে নি । এমন আশ্চর্য ঘটনাতো ঘটতে পারে ভাবি নি । আশা ছেড়েই দিয়েছিলো সবাই । মেসোমশাই মারা গিয়েছিলেন তৎক্ষণাৎ গাড়ির ধাক্কার এতো তীব্রতা ছিল । মুকুল মাত্র ১৬ বছরের , বাবার পাশেই গাড়ির সামনে বসে । চোখে যে ট্রেলার এর হলুদ এল পড়লো আর কথা থেকে কি হয়ে গেলো । ডাক্তার বলেই দিয়েছিলো বাড়ি নিয়ে যান , শুধু হাল ছাড়ি নি আমি । কোথাও মনে আশা ছিল মাসির জ্ঞান ফিরবে ।
ডাক্তার অজেয় বোস : " চিকিৎসার কিছু নেই , সেবা সুশ্রষায় যদি পুরোনো স্মৃতি ফেরে ফিরবে , কিন্তু ইটা একটা মেন্টাল শক ! জানেন উনি সব কিছুই কিন্তু রিকল করতে পারছেন না !"
আমি: আচ্ছা , আর ওষুধ পালা ?
বোস: অরে উনি কি বৃদ্ধা নাকি যে ওষুধের উপর রাখতে হবে? অনেক জীবন বাকি আছে ওনার সবে তো ৪৪ !
আমি: আমার জ্যানেন ডাক্তার বাড়িতে কেউ নেই !
বোস: আপনাকে তো ৩ বছর থেকে দেখলাম , যা করলেন ওনার নিজের ছেলে হলেও এতো কেউ করতো না ।
আমি: না মানে মা !
বোস: না না এ আপনার বিনয় ! আচ্ছা শুনুন ব্রতেশ বাবু শুধু একটা ওষুধ দিচ্ছি এটা শুধু সন্ধ্যে বেলা ! জল আর আগুন থেকে দূরে ! খুব বেশি অন্য মনস্ক বা আনমনা দেখলে চমক ভাঙিয়ে দিতে হবে । না হলে শরীর কাঁপে এসব পেশেন্ট দের । বিকেলে ডিসচার্জ ফর্ম-এ সিগণ করে নিয়ে যাবেন ! আমি ত্যাকাউন্টস এ কথা বলে নিয়েছি সেরকম দুই কিছুই নেই । ৯০০০ -১০০০০ টাকা , ওহ আমি ডিসকাউন্ট করিয়ে দিচ্ছি বুঝলেন !
আমি: কোথায় রাখবো ?
বোস: অরে মশাই এটা কোনো প্রশ্ন হলো ! ের পরিবার চান , এরা ভালোবাসা , চান বুঝলেন । সেবা করুন তো সেবা করুন ! আর দেখবেন এসব পেশেন্ট দুঃখ পেলে সুইসাইড করে ! একাকিত্বের জন্য !
বেরিয়ে আসলাম হাসপাতাল থেকে । দেখা করেছি কাজু মাসির সঙ্গে । ছোট বেলায় কাজু মাসি বলেই ডাকতাম । তিনি জানেন নাঃ আমি কে । কি বা আমার পরিচয় । সব শব্দের মানে জানেন , কিন্তু তার অবস্থান বা বাসস্থান কি বা কোথায় তিনি জানেন না । নতুন করেই সব কিছু জানাতে হবে !
অনেক ক্ষণ বাড়ির ফোন টা বেজে যাচ্ছে !
" কখন থেকে ফোন করছি , আরে করছো টা কি ফোন তুলতে পারছো না একটু !"
মা: কে?? বটু নাঃ আরে ভিজে হাতে কাপড় ফোন ধরতে দেরি হলো ! এতো অস্থির কেন হোস বলতঃ সব ব্যাপারে ! আজ বাদে বিবাদে কাল ছেলের বাপ হবি বিয়ে করবি !
আমি: ওঃ বুঝতে পারি নি ! আচ্ছা তাহলে কাজু মাসিকে কি করি , তোমার ওখানে মুখার্জিনগরে দিয়ে আসি ?
মা: আমার সেবা নেবার বয়স হয়েছে সেবা করার নয় । কাজুকে কে দেখবে ? তার চেয়ে তুই তোর পাইকপাড়ার ঘরে রেখে একটা নার্স রেখে দে দিনের বেলা ! এখন থেকে কে হাসপাতালে নিয়ে যাবে বল !
মাথাটাই গেলো খারাপ হয়ে । আমি ব্যাচেলর , যদিও আমার ৩ কামরার ফ্ল্যাট পাইকপাড়ায় ।যাক একটা ঘরে পড়ে থাকবে । ব্যাচেলর পার্টি করার সময় একটু আলাদা থাকতে বলবো !
দুমনা করে মাকে জানিয়ে দিলাম বেশ তবে তাই হোক । মাসির কেউ নেই , শ্বশুর বাড়ি গিয়ে কিছু লাভ হবে না উল্টে অনেক ঝামেলা ঝক্কি, সম্পত্তি আরো কত কিছু । মাসির আগমন ঘটলো পাইক পাড়ার ফ্ল্যাটে যথাযত সময়ে । সে অর্থে অসুবিধা হলো না ।মাসি শুধু ভুলেছে তার পুরোনো স্মৃতি , কিন্তু জীবন যাপনের কোনো যাদব কায়দাই ভোলে নি ।কি ভালো কি খারাপ সব কিছুই জানা তার ।শুধু ভাগ্নে হওয়ার টান তার ব্যবহারে নেই ।
জ্ঞান ফিরলো পাক্কা তিন বছর পর, বিধবার থানে দেখিনি কাজরী মাসি কে । নাহলে তো রোজই সেই হালকা সবুজ রঙের মার্কি কাপড়ের ড্রেস হাসপাতালে । মা আর আসে না ইদানিং , বিরক্ত হবারই কথা । আগে তো শুরুতে প্রতি সপ্তাহে , তার পর প্রতি মাসে , শেষ কয়েকমাস আর আসে নি । এমন আশ্চর্য ঘটনাতো ঘটতে পারে ভাবি নি । আশা ছেড়েই দিয়েছিলো সবাই । মেসোমশাই মারা গিয়েছিলেন তৎক্ষণাৎ গাড়ির ধাক্কার এতো তীব্রতা ছিল । মুকুল মাত্র ১৬ বছরের , বাবার পাশেই গাড়ির সামনে বসে । চোখে যে ট্রেলার এর হলুদ এল পড়লো আর কথা থেকে কি হয়ে গেলো । ডাক্তার বলেই দিয়েছিলো বাড়ি নিয়ে যান , শুধু হাল ছাড়ি নি আমি । কোথাও মনে আশা ছিল মাসির জ্ঞান ফিরবে ।
ডাক্তার অজেয় বোস : " চিকিৎসার কিছু নেই , সেবা সুশ্রষায় যদি পুরোনো স্মৃতি ফেরে ফিরবে , কিন্তু ইটা একটা মেন্টাল শক ! জানেন উনি সব কিছুই কিন্তু রিকল করতে পারছেন না !"
আমি: আচ্ছা , আর ওষুধ পালা ?
বোস: অরে উনি কি বৃদ্ধা নাকি যে ওষুধের উপর রাখতে হবে? অনেক জীবন বাকি আছে ওনার সবে তো ৪৪ !
আমি: আমার জ্যানেন ডাক্তার বাড়িতে কেউ নেই !
বোস: আপনাকে তো ৩ বছর থেকে দেখলাম , যা করলেন ওনার নিজের ছেলে হলেও এতো কেউ করতো না ।
আমি: না মানে মা !
বোস: না না এ আপনার বিনয় ! আচ্ছা শুনুন ব্রতেশ বাবু শুধু একটা ওষুধ দিচ্ছি এটা শুধু সন্ধ্যে বেলা ! জল আর আগুন থেকে দূরে ! খুব বেশি অন্য মনস্ক বা আনমনা দেখলে চমক ভাঙিয়ে দিতে হবে । না হলে শরীর কাঁপে এসব পেশেন্ট দের । বিকেলে ডিসচার্জ ফর্ম-এ সিগণ করে নিয়ে যাবেন ! আমি ত্যাকাউন্টস এ কথা বলে নিয়েছি সেরকম দুই কিছুই নেই । ৯০০০ -১০০০০ টাকা , ওহ আমি ডিসকাউন্ট করিয়ে দিচ্ছি বুঝলেন !
আমি: কোথায় রাখবো ?
বোস: অরে মশাই এটা কোনো প্রশ্ন হলো ! ের পরিবার চান , এরা ভালোবাসা , চান বুঝলেন । সেবা করুন তো সেবা করুন ! আর দেখবেন এসব পেশেন্ট দুঃখ পেলে সুইসাইড করে ! একাকিত্বের জন্য !
বেরিয়ে আসলাম হাসপাতাল থেকে । দেখা করেছি কাজু মাসির সঙ্গে । ছোট বেলায় কাজু মাসি বলেই ডাকতাম । তিনি জানেন নাঃ আমি কে । কি বা আমার পরিচয় । সব শব্দের মানে জানেন , কিন্তু তার অবস্থান বা বাসস্থান কি বা কোথায় তিনি জানেন না । নতুন করেই সব কিছু জানাতে হবে !
অনেক ক্ষণ বাড়ির ফোন টা বেজে যাচ্ছে !
" কখন থেকে ফোন করছি , আরে করছো টা কি ফোন তুলতে পারছো না একটু !"
মা: কে?? বটু নাঃ আরে ভিজে হাতে কাপড় ফোন ধরতে দেরি হলো ! এতো অস্থির কেন হোস বলতঃ সব ব্যাপারে ! আজ বাদে বিবাদে কাল ছেলের বাপ হবি বিয়ে করবি !
আমি: ওঃ বুঝতে পারি নি ! আচ্ছা তাহলে কাজু মাসিকে কি করি , তোমার ওখানে মুখার্জিনগরে দিয়ে আসি ?
মা: আমার সেবা নেবার বয়স হয়েছে সেবা করার নয় । কাজুকে কে দেখবে ? তার চেয়ে তুই তোর পাইকপাড়ার ঘরে রেখে একটা নার্স রেখে দে দিনের বেলা ! এখন থেকে কে হাসপাতালে নিয়ে যাবে বল !
মাথাটাই গেলো খারাপ হয়ে । আমি ব্যাচেলর , যদিও আমার ৩ কামরার ফ্ল্যাট পাইকপাড়ায় ।যাক একটা ঘরে পড়ে থাকবে । ব্যাচেলর পার্টি করার সময় একটু আলাদা থাকতে বলবো !
দুমনা করে মাকে জানিয়ে দিলাম বেশ তবে তাই হোক । মাসির কেউ নেই , শ্বশুর বাড়ি গিয়ে কিছু লাভ হবে না উল্টে অনেক ঝামেলা ঝক্কি, সম্পত্তি আরো কত কিছু । মাসির আগমন ঘটলো পাইক পাড়ার ফ্ল্যাটে যথাযত সময়ে । সে অর্থে অসুবিধা হলো না ।মাসি শুধু ভুলেছে তার পুরোনো স্মৃতি , কিন্তু জীবন যাপনের কোনো যাদব কায়দাই ভোলে নি ।কি ভালো কি খারাপ সব কিছুই জানা তার ।শুধু ভাগ্নে হওয়ার টান তার ব্যবহারে নেই ।