07-01-2022, 09:34 AM
মে মাস পড়ে গেল আর আকাশের মামা মামি আর তাদের একমাত্র ছেলে অজয় কলকাতায় চলে এলো । দিদির মুখে সব শুনেই সে এসছে। এখানে এসে আকাশের মামা মামি দেখলো কারোর দেহে প্রাণ নেই। কাউকে কিছু জিজ্ঞাসা করলে হু হ্যাঁ বলে চুপচাপ হয়ে যায় । কথা বলার ইচ্ছা নেই কারোর। সবাই একটা মানসিক আঘাত পেয়েছে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু এইভাবে তো জীবন চলে না।
রাতে খেয়ে দেয়ে সবাই ঘুমালো। অজয় আকাশের সাথে ঘুমালো। আর একটা ঘরে তার মামা মামি। বিছানায় শুয়ে আকাশের মামি জিজ্ঞাসা করলেন , “ কি ভাবছো ! যা দেখছি তাতে মনে হয় না বিয়ে তো হবে । „
আকাশের মামা কিছুক্ষণ চুপচাপ থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন , “ যখন আকাশের কুষ্ঠী দেখা হয় তখন আমি এখানেই ছিলাম। যখন পুরোহিত নিজের গাঁজাখুরি বিদ্যা দেখিয়ে বললো , ‘ এই ছেলের বিয়ে তেইশ বছর বয়সে দিতে হবে। , তখন আমি বাঁধা দিয়েছিলাম। তারপর দিদির কথায় চুপ করে যাই। কিন্তু মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম এ বিয়ে আমি হতে দেবো না। „
তারপর কিছুক্ষণ থেমে দুটো বড়ো গভীর নিশ্বাস ছেড়ে আকাশের মামা বললেন , “ কিন্তু এখন পরিস্থিতি অন্য। এখন বিয়েটা হওয়া দরকার। খুব দরকার। একটা মানসিক আঘাত পেয়েছে এরা সবাই। তার থেকে একমাত্র একটা বড়ো আনন্দই এদের বার করতে পারে। „
“ কি করবে তুমি ? „
“ জানি না। কাল দেখা যাবে। ঘুমাও। ঘুম পেয়েছে। „
পরের দিন থেকেই যেন আকাশের মামা একটা মিশনে বার হলেন। প্রথমে আকাশের বাবাকে বললেন , “ আমি তো এখানে আমার একমাত্র ভাগ্নের বিয়ের জন্য এসছিলাম। বিয়ে তো হচ্ছে না। চলে যাবো তাহলে ! ওদিকে অনেক কাজ আছে আমার । „
“ কে বলেছে বিয়ে হচ্ছে না। „
“ যা পরিস্থিতি। তাই দেখে বললাম। „
আকাশের বাবা চুপ করে থেকে বুঝতে চেষ্টা করতে লাগলেন যে সামনের মানুষটা অর্থাৎ তার শ্যালক কি বলতে চাইছে। শেষের কথাটায় কিছুটা আন্দাজ করে বললেন , “ তোমার দিদিকে বলো। বলো পাশের ফ্ল্যাটে তত্ত্ব পাঠাতে হবে। „
কথাটা শুনে আকাশের মামার মুখে হাসি ফুটে উঠলো। সে সোজা রান্নাঘরে গিয়ে দিদিকে বললো , “ কি ভাবলি ? „
মুখ না তুলে আকাশের মা জিজ্ঞাসা করলেন , “ কি নিয়ে ? „
“ বিয়ে নিয়ে। আবার কি নিয়ে ! „
“ আমি কিছু ভাবিনি। „
“ তাহলে ভাব। বোঝার চেষ্টা কর । এখন বিয়েটা দরকার। আমি তিতলি কে বলছি তত্ত্ব তৈরি করতে। „
আকাশের মার মুখ হা হয়ে গেল। আকাশের মামা সঙ্গে সঙ্গে তার স্ত্রীর কাছে গিয়ে বললেন , “ ওই , তত্ত্ব রেডি করো। „
“ এখনও তত্ত্ব পাঠানোর সময় হয়নি। তুমি গিয়ে ডেকরশন দেখো। ওটা আগে দরকার। „
এরপর দিন আরও তাড়াতাড়ি কাটতে লাগলো। আকাশের মামার কথাতে সবাই বুঝলো যে বিয়েটা হলে একটা সুখ আসবে। ডেকরশন , খাওয়া দাওয়া এইসব আয়োজন করতে করতে দিন কাটতে লাগলো।
ঠিক বিয়ের চার দিন আগের বিকাল বেলায় ছাদের একটা কোণায় দেওয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে আকাশ বসেছিল। আর সুচি আকাশের গায়ের উপর পিঠ ঠেকিয়ে বসে ছিল। দুজনেই চুপচাপ , কারোর মুখে কথা নেই। এখন আর কথা বলার দরকার হয় না। চুপচাপ বসে থেকে একে অপরের সঙ্গটাকেই উপভোগ করে দুজনে।
সুচি এখন সবসময় একটা নিরাপদ স্থান খোঁজে। মা যখন রাতে সোফায় বসে সিরিয়াল দেখে তখন মায়ের কোলে মাথা রাখলে একটা নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পায়। বাবা অফিস থেকে ফিরে খবরের চ্যানেল খুলে বসলে সেও বাবাকে জড়িয়ে ধরে খবর দেখে। বাবাকে জড়িয়ে ধরলে তখন নিজেকে খুব নিরাপদ মনে হয়। এখন যেমন আকাশের বুকে পিঠ ঠেকিয়ে রেখে বসে নিজেকে নিরাপদ মনে হচ্ছে।
কিছুক্ষণ পরেই আকাশের মামি ছাদে উঠে আসায় দুজনেই উঠে বসলো। তিলোত্তমা এসে আকাশকে বললো , “ নিচে যা । আমার সুচির সাথে কথা আছে। „
আকাশ গোমড়ামুখ করে নিচে চলে গেল। তিলোত্তমা বললো , “ আজ বাদে কাল তোর বিয়ে। এইভাবে বসে থাকলে হবে ! জানি , যা হয়েছে সেটা আমি বুঝবো না। তুই কিসের মধ্যে থেকে গেছিস সেটা আমি অনুভব করতে পারি না। কিন্তু এটা জানি যে , যারা খারাপ করে তাদের সাথেও খারাপ হয়। একদিন ওই পলাশ ঠিক নিজের শাস্তি পাবে। দেখে নিস ...
এই কথাগুলো সুচি এখন অনেকের মুখে শোনে। তাই শুনতে শুনতে সে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। কিন্তু এরপর আকাশের মামি যেটা বললো সেটা আর কেউ বলেনি। আকাশের মামি বললেন , “ পুরনো স্মৃতির দুঃখ বর্তমানকে খারাপ করতে হতে দিস না। নতুন জীবন এঞ্জয় কর। বিয়ে হবে। ঘর সংসার করবি। আর যদি আকাশ কিছু বলে তাহলে আমাকে বলবি। আমি বকে দেবো। „
কথাটা বলতেই দুজনেই হেসে উঠলো। তিলোত্তমা মনে মনে বললো , ‘ যাক। এতদিন পর মেয়েটার মুখে হাসি ফোটাতে পারলাম। ,
সোসাইটির গেট থেকে একটা রাস্তা চলে গেছে। লাল কার্পেটে মোড়া রাস্তা। শুড়িপথের মতো রাস্তাটা। মাথায় কাপড়ের ছাদ আছে। সেই রাস্তা কিছুদূর গিয়ে একটা ভাগ হয়ে কমিউনিটি হলের দিকে চলে গেছে । আর একটা এসে সোজা অর্জুন ভবনের এর সামনে এসে থামেছে। সোসাইটির গেটে বড়ো করে নাম লেখা হলো সুচিত্রা আর আকাশের। আগে বিভিন্ন উৎসব পার্বনে এই সোসাইটি সেজে উঠেছে কিন্তু এরকম সাজ কখনো হয়নি। চোখ ধাঁধানো সাজসজ্জা।
নির্দিষ্ট দিনে তত্ত্ব পৌঁছে গেল। সুমি , সুমির মা আর সুমির মামা বাড়ির মহিলারা মিলে সুচির গায়ে হলুদ মাখিয়ে স্নান করালো। এদিকে আকাশকেও তার মামি আর মা , সাথে সোসাইটির আরও কয়েকজন মিলে হলুদ মাখিয়ে স্নান করিয়ে দিল।
নির্দিষ্ট সময়ে আশীর্বাদ শেষ হলো। বলা বাহুল্য আশীর্বাদ করার সময় আকাশ তার বাবার দিকে তাকাতে পারছিল না।
পাঞ্জাবী পড়ে টোপর মাথায় দিয়ে ছাদনাতলায় আকাশ উপস্থিত হলো। পাশে দাঁড়িয়ে বিপ্লব আর কৌশিক ইয়ার্কি মারতে শুরু করলো। কিছুক্ষণ পর যখন কণের পিড়ে ধরার জন্য এই দুজনেই আগে দৌড়াল তখন আকাশ হাফ ছেড়ে বাঁচলো ।
চারিদিকে সানাইয়ের আওয়াজ , মাইকে পুরানো বাংলা সিনেমার গানের আওয়াজে কান পাতা দায়। এই কয়েকদিনের আনন্দে সুচি আকাশের পরিবার সেই জঘন্য স্মৃতির কিছুটা হলেও ভুলে থাকতে পেরেছে।
কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর সুচি সেই লাল বেনারসি পড়ে , মুখে পান পাতা ঢেকে , আকাশের সামনে এলো। পান পাতা সরাতেই সুচির মুখের থেকে আকাশ চোখ সরাতে পারলো না। লাল বেনারসি , গলায় বিশাল বড়ো একটা হার , সাথে আরো দুটো ছোট ছোট আছে। কপালে টিকলি , নাকে নথ , কানে দুল , হাতে চুড়ি। আর দুই হাতের কনুই পর্যন্ত মেহেন্দী। সুচিকে এত সুন্দর আগে কখনো লাগে নি। সুচিকে মনে হচ্ছে কোন বিখ্যাত গয়নার কোম্পানির মেডল ।
সারা শরিরে গয়না ভর্তি। মুখে বেশি মেকআপ করা নেই সেটা দেখেই বোঝা যায়। কিন্তু চোখে হালকা করে কাজল টানা। কৃষ্ণসার হরিণ চোখ। এই চোখেই আকাশের দৃষ্টি আটকে গেল। সুচিকে দেখে আকাশ না বলে থাকতে পারলো না , “ খুব সুন্দর দেখাচ্ছে তোকে। „
সুচিও বললো , “ তোকেও ভালো দেখাচ্ছে। „
এই দুজনের কথায় সবাই হাসি ঠাট্টা করতে শুরু করলো। আকাশকে এক ভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে কৌশিক বললো , “ এবার চোখটা সরালে ধন্য হই। বিয়ের আরও আচার অনুষ্ঠান বাকি আছে যে ! „
তারপর সবকিছু পালন করে ছাদনাতলায় বসলো দুজনে। সাত পাক ঘুরে , মঙ্গল সূত্র পড়িয়ে যখন আকাশ সুচির সিথিতে সিঁদুর পড়ালো তখন সুচিও আকাশের সিথিতে সিদুর পড়িয়ে দিল। এতে সবাই হেসে ফেললো। সুচির মা বললেন , “ এ কি করলি তুই ? „
“ কেন ! দুজনেই দুজনার দায়িত্ব নিচ্ছি। „
রাধানাথ ঠাকুর হেসে বললেন , “ কোন অসুবিধা নেই। „
এইসব যখন হচ্ছে তখন পাশ থেকে নব বরবধূর উদ্দেশ্যে ফুল ছুঁড়তে থাকা এক মেয়ে বললো , “ দেখেছো বাবা। এটাকে বলে unconditional love । „
সঞ্জয় মেয়ের কথা শুনে কি বলবে ভেবে পেলো না।
বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর কেউ কাঁদলো না। কেঁদে হবেটা কি ! পাশের ফ্ল্যাটেই তো যাচ্ছে। তবুও মাকে , “ তোমার সব ঋণ শোধ করে দিলাম । „ বলার সময় সুচি কেঁদে ফেললো। নব বর বধূকে আশীর্বাদ করে সবাই চলে গেল। আকাশ এবং সুচিত্রা মিত্র সিঁড়ি ভেঙে উপরে উঠে এলো।
সুচিকে আকাশের ঘরে বসিয়ে তার হাতে একটা হলুদ গোলা দুধের গ্লাস ধরিয়ে আকাশের মা চলে গেলেন। বিপ্লব , আকাশের মামা আর কৌশিকের ইয়ার্কি শেষ হলে তারা আকাশকে ছেড়ে দিল। আকাশ ঘরে ঢুকতে তার চোখ ঘুরে গেল। ফুল দিয়ে সাজানো ঘর। বিছানায় গোলাপের পাপড়ি ছড়ানো। দড়িতে ফুল বেধে দেওয়ালে ঝোলানো। আজ যেন ঘরটাকে একটু বেশিই উজ্জ্বল দেখাচ্ছে। কিন্তু এসব ছাড়াও আকাশকে যেটা সবথেকে বেশি অবাক করলো সেটা হলো সুচি খাটের কিনারায় বসে পা দুলিয়ে ফোন ঘাটছে।
আকাশ ঢুকতেই সুচি নড়ে বসলো। সঙ্গে সঙ্গে সুচির শরিরের গয়নার একটা ঝনঝন আওয়াজ হলো । সুচি বললো , “ দিদিকে ফোনটা দিয়েছিলাম ভালো ভালো ফটো তুলে দিতে । দেখ ! কেমন সব বিচ্ছিরি ফটো তুলে দিয়েছে। ও হ্যাঁ , কাকি তোর জন্য দুধ রেখে গেছে। „
আকাশ চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলো। তারপর দুধের গ্লাসটা তুলে এক নিশ্বাসে সব খেয়ে ফেললো। বড্ড খিদে পেয়েছিল তার। সারাদিন বেশি কিছু পেটে পড়েনি তার। ওদিকে সুচি বললো , “ দিদিকে বললাম। দিদি বললো ওর কাছে সব ফটো আছে। পরে দেবে। „
সুচির কথা শুনে আকাশ গিয়ে পড়ার টেবিলের ড্রয়ার খুলে একটা চাবির গোছা বার করলো। তারপর সেই চাবির গোছা থেকে একটা চাবি নিয়ে আলমারি খুললো। আলমারি থেকে বার করলো একটা অ্যালবাম। আকাশ অ্যালবামটা নিয়ে সুচির পাশে এসে বসলো। তারপর অ্যালবামের ভিতর ফটো দেখতে লাগলো । সুচিও দেখে বললো , “ এটা দিম্মার না ! „
“ হ্যাঁ , এতে দিম্মা তোর আমার আর বাদশার ফটো রাখতো। „ বলতেই সুচি কেড়ে নিল অ্যালবামটা। তারপর খাটে উপুড় হয়ে শুয়ে ফটো গুলো দেখতে লাগলো। আকাশও এসে সুচির পাশে উপুড় হয়ে শুয়ে ফটো দেখতে লাগলো।
প্রথম পৃষ্ঠায় আকাশের অন্নপ্রাশনের ফটো। সেখানে সুচি আর বাদশা আছে। তারপর আকাশের হামাগুড়ি দেওয়ার ফটো। সুচি বাদশা আর আকাশের খেলনাবাটি খেলার ফটো। সুচির সাথে আকাশ আর বাদশার খেলার ফটো। তারপর সুচির প্রথম কলেজ যাওয়ার ফটো। তাতে মুখ ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে আছে সে। তারপর আকাশ , বাদশা আর সুচির কাদা মাখা ফটো। তারপর আছে সুচির প্রথম নাচের ফটো। প্রাইজ নেওয়ার ফটো। আকাশের প্রথম কলেজ যাওয়ার ফটো। তারপর আছে আকাশের হাতে ব্যান্ডেজ এর ফটো। সুচি আকাশের হাত কাঁমড়ে দিয়েছিল। তারপরেই আছে আকাশ আর সুচির পাকা রঙ মেখে ভুত হওয়ার ফটো। দুজন দাঁড়িয়ে হাসছে। ফটো দেখে আকাশ সুচি দুজনেই হেসে উঠলো। নিজেদের ফটো দেখতে দেখতে যেমন তারা হেসে উঠছিল তেমন দিম্মার ফটো দেখে উদাস হয়ে উঠছিল।
তারপরেই আছে জাগুয়ার গাড়ির সাথে দুজনের ফটো। আকাশের প্রথম পরিক্ষার রেজাল্টের ফটো। একসাথে আচার খাওয়ার ফটো। কলেজে সুচির নাচের ফটো। তারপরেই সব খালি। আর ফটো নেই। একসাথে ফটো দেখে আর হাসি ঠাট্টা করতে করতে কখন যে দেড় ঘন্টা সময় পার হয়ে গেলো সেটা সুচি আর আকাশ বুঝতে পারলো না। অ্যালবাম দেখা শেষ হওয়ার পর যখন মুখ তুলে তাকালো তখন সাড়ে বারোটা বাজে। সুচি বললো , “ কি হলো ! আর ফটো নেই ? „
“ আছে , অন্য একটা অ্যালবামে। এরপর মা সব ফটো তুলে দিয়েছিল। „ তারপর অবাক হয়ে আকাশ বললো , “ আজকে কি তুমি শুধু অ্যালবাম দেখবে ? „
সুচি ভুরু কুঁচকে বললো , “ কেন ? আর কি করবি তুই ? „ বলতেই আকাশ সুচির ঠোঁটে ঠোঁট বসিয়ে একটা কিস করলো ।
সুচি চোখ বড়ো বড়ো করে বললো , “ অসভ্য। একটা মেয়েকে একা ঘরের মধ্যে পেয়ে এইসব । „
“ তুমি এখন আমার স্ত্রী। আইনত এবং ধর্মীয় দুই দিক থেকেই .....
“ খুব শখ না স্বামী হওয়ার। দেখাচ্ছি তোমায় । „ বলেই আকাশের পাঞ্জাবির কলার টেনে ধরে একটা চুম্বন করলো। যখন সুচির ঠোঁটের লিপস্টিক আকাশের ঠোঁটে বসে গেল তখন আকাশ সুচিকে ছেড়ে দিল । সুচি বললো , “ কি হলো ? „
“ লাইটটা জ্বলছে। „ বলে আকাশ খাটে থেকে নেমে লাইট নিভিয়ে আবার খাটে চলে এলো।
কিছু সময়ের মধ্যেই দুজনের শরীরের উষ্ণতা বিছানার চাদর গরম করে দিল। পরবর্তী কয়েক মূহুর্ত তাদের জীবনের সবথেকে মিষ্টি মূহুর্ত হয়ে রইলো।
রাতে খেয়ে দেয়ে সবাই ঘুমালো। অজয় আকাশের সাথে ঘুমালো। আর একটা ঘরে তার মামা মামি। বিছানায় শুয়ে আকাশের মামি জিজ্ঞাসা করলেন , “ কি ভাবছো ! যা দেখছি তাতে মনে হয় না বিয়ে তো হবে । „
আকাশের মামা কিছুক্ষণ চুপচাপ থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন , “ যখন আকাশের কুষ্ঠী দেখা হয় তখন আমি এখানেই ছিলাম। যখন পুরোহিত নিজের গাঁজাখুরি বিদ্যা দেখিয়ে বললো , ‘ এই ছেলের বিয়ে তেইশ বছর বয়সে দিতে হবে। , তখন আমি বাঁধা দিয়েছিলাম। তারপর দিদির কথায় চুপ করে যাই। কিন্তু মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম এ বিয়ে আমি হতে দেবো না। „
তারপর কিছুক্ষণ থেমে দুটো বড়ো গভীর নিশ্বাস ছেড়ে আকাশের মামা বললেন , “ কিন্তু এখন পরিস্থিতি অন্য। এখন বিয়েটা হওয়া দরকার। খুব দরকার। একটা মানসিক আঘাত পেয়েছে এরা সবাই। তার থেকে একমাত্র একটা বড়ো আনন্দই এদের বার করতে পারে। „
“ কি করবে তুমি ? „
“ জানি না। কাল দেখা যাবে। ঘুমাও। ঘুম পেয়েছে। „
পরের দিন থেকেই যেন আকাশের মামা একটা মিশনে বার হলেন। প্রথমে আকাশের বাবাকে বললেন , “ আমি তো এখানে আমার একমাত্র ভাগ্নের বিয়ের জন্য এসছিলাম। বিয়ে তো হচ্ছে না। চলে যাবো তাহলে ! ওদিকে অনেক কাজ আছে আমার । „
“ কে বলেছে বিয়ে হচ্ছে না। „
“ যা পরিস্থিতি। তাই দেখে বললাম। „
আকাশের বাবা চুপ করে থেকে বুঝতে চেষ্টা করতে লাগলেন যে সামনের মানুষটা অর্থাৎ তার শ্যালক কি বলতে চাইছে। শেষের কথাটায় কিছুটা আন্দাজ করে বললেন , “ তোমার দিদিকে বলো। বলো পাশের ফ্ল্যাটে তত্ত্ব পাঠাতে হবে। „
কথাটা শুনে আকাশের মামার মুখে হাসি ফুটে উঠলো। সে সোজা রান্নাঘরে গিয়ে দিদিকে বললো , “ কি ভাবলি ? „
মুখ না তুলে আকাশের মা জিজ্ঞাসা করলেন , “ কি নিয়ে ? „
“ বিয়ে নিয়ে। আবার কি নিয়ে ! „
“ আমি কিছু ভাবিনি। „
“ তাহলে ভাব। বোঝার চেষ্টা কর । এখন বিয়েটা দরকার। আমি তিতলি কে বলছি তত্ত্ব তৈরি করতে। „
আকাশের মার মুখ হা হয়ে গেল। আকাশের মামা সঙ্গে সঙ্গে তার স্ত্রীর কাছে গিয়ে বললেন , “ ওই , তত্ত্ব রেডি করো। „
“ এখনও তত্ত্ব পাঠানোর সময় হয়নি। তুমি গিয়ে ডেকরশন দেখো। ওটা আগে দরকার। „
এরপর দিন আরও তাড়াতাড়ি কাটতে লাগলো। আকাশের মামার কথাতে সবাই বুঝলো যে বিয়েটা হলে একটা সুখ আসবে। ডেকরশন , খাওয়া দাওয়া এইসব আয়োজন করতে করতে দিন কাটতে লাগলো।
ঠিক বিয়ের চার দিন আগের বিকাল বেলায় ছাদের একটা কোণায় দেওয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে আকাশ বসেছিল। আর সুচি আকাশের গায়ের উপর পিঠ ঠেকিয়ে বসে ছিল। দুজনেই চুপচাপ , কারোর মুখে কথা নেই। এখন আর কথা বলার দরকার হয় না। চুপচাপ বসে থেকে একে অপরের সঙ্গটাকেই উপভোগ করে দুজনে।
সুচি এখন সবসময় একটা নিরাপদ স্থান খোঁজে। মা যখন রাতে সোফায় বসে সিরিয়াল দেখে তখন মায়ের কোলে মাথা রাখলে একটা নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পায়। বাবা অফিস থেকে ফিরে খবরের চ্যানেল খুলে বসলে সেও বাবাকে জড়িয়ে ধরে খবর দেখে। বাবাকে জড়িয়ে ধরলে তখন নিজেকে খুব নিরাপদ মনে হয়। এখন যেমন আকাশের বুকে পিঠ ঠেকিয়ে রেখে বসে নিজেকে নিরাপদ মনে হচ্ছে।
কিছুক্ষণ পরেই আকাশের মামি ছাদে উঠে আসায় দুজনেই উঠে বসলো। তিলোত্তমা এসে আকাশকে বললো , “ নিচে যা । আমার সুচির সাথে কথা আছে। „
আকাশ গোমড়ামুখ করে নিচে চলে গেল। তিলোত্তমা বললো , “ আজ বাদে কাল তোর বিয়ে। এইভাবে বসে থাকলে হবে ! জানি , যা হয়েছে সেটা আমি বুঝবো না। তুই কিসের মধ্যে থেকে গেছিস সেটা আমি অনুভব করতে পারি না। কিন্তু এটা জানি যে , যারা খারাপ করে তাদের সাথেও খারাপ হয়। একদিন ওই পলাশ ঠিক নিজের শাস্তি পাবে। দেখে নিস ...
এই কথাগুলো সুচি এখন অনেকের মুখে শোনে। তাই শুনতে শুনতে সে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। কিন্তু এরপর আকাশের মামি যেটা বললো সেটা আর কেউ বলেনি। আকাশের মামি বললেন , “ পুরনো স্মৃতির দুঃখ বর্তমানকে খারাপ করতে হতে দিস না। নতুন জীবন এঞ্জয় কর। বিয়ে হবে। ঘর সংসার করবি। আর যদি আকাশ কিছু বলে তাহলে আমাকে বলবি। আমি বকে দেবো। „
কথাটা বলতেই দুজনেই হেসে উঠলো। তিলোত্তমা মনে মনে বললো , ‘ যাক। এতদিন পর মেয়েটার মুখে হাসি ফোটাতে পারলাম। ,
সোসাইটির গেট থেকে একটা রাস্তা চলে গেছে। লাল কার্পেটে মোড়া রাস্তা। শুড়িপথের মতো রাস্তাটা। মাথায় কাপড়ের ছাদ আছে। সেই রাস্তা কিছুদূর গিয়ে একটা ভাগ হয়ে কমিউনিটি হলের দিকে চলে গেছে । আর একটা এসে সোজা অর্জুন ভবনের এর সামনে এসে থামেছে। সোসাইটির গেটে বড়ো করে নাম লেখা হলো সুচিত্রা আর আকাশের। আগে বিভিন্ন উৎসব পার্বনে এই সোসাইটি সেজে উঠেছে কিন্তু এরকম সাজ কখনো হয়নি। চোখ ধাঁধানো সাজসজ্জা।
নির্দিষ্ট দিনে তত্ত্ব পৌঁছে গেল। সুমি , সুমির মা আর সুমির মামা বাড়ির মহিলারা মিলে সুচির গায়ে হলুদ মাখিয়ে স্নান করালো। এদিকে আকাশকেও তার মামি আর মা , সাথে সোসাইটির আরও কয়েকজন মিলে হলুদ মাখিয়ে স্নান করিয়ে দিল।
নির্দিষ্ট সময়ে আশীর্বাদ শেষ হলো। বলা বাহুল্য আশীর্বাদ করার সময় আকাশ তার বাবার দিকে তাকাতে পারছিল না।
পাঞ্জাবী পড়ে টোপর মাথায় দিয়ে ছাদনাতলায় আকাশ উপস্থিত হলো। পাশে দাঁড়িয়ে বিপ্লব আর কৌশিক ইয়ার্কি মারতে শুরু করলো। কিছুক্ষণ পর যখন কণের পিড়ে ধরার জন্য এই দুজনেই আগে দৌড়াল তখন আকাশ হাফ ছেড়ে বাঁচলো ।
চারিদিকে সানাইয়ের আওয়াজ , মাইকে পুরানো বাংলা সিনেমার গানের আওয়াজে কান পাতা দায়। এই কয়েকদিনের আনন্দে সুচি আকাশের পরিবার সেই জঘন্য স্মৃতির কিছুটা হলেও ভুলে থাকতে পেরেছে।
কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর সুচি সেই লাল বেনারসি পড়ে , মুখে পান পাতা ঢেকে , আকাশের সামনে এলো। পান পাতা সরাতেই সুচির মুখের থেকে আকাশ চোখ সরাতে পারলো না। লাল বেনারসি , গলায় বিশাল বড়ো একটা হার , সাথে আরো দুটো ছোট ছোট আছে। কপালে টিকলি , নাকে নথ , কানে দুল , হাতে চুড়ি। আর দুই হাতের কনুই পর্যন্ত মেহেন্দী। সুচিকে এত সুন্দর আগে কখনো লাগে নি। সুচিকে মনে হচ্ছে কোন বিখ্যাত গয়নার কোম্পানির মেডল ।
সারা শরিরে গয়না ভর্তি। মুখে বেশি মেকআপ করা নেই সেটা দেখেই বোঝা যায়। কিন্তু চোখে হালকা করে কাজল টানা। কৃষ্ণসার হরিণ চোখ। এই চোখেই আকাশের দৃষ্টি আটকে গেল। সুচিকে দেখে আকাশ না বলে থাকতে পারলো না , “ খুব সুন্দর দেখাচ্ছে তোকে। „
সুচিও বললো , “ তোকেও ভালো দেখাচ্ছে। „
এই দুজনের কথায় সবাই হাসি ঠাট্টা করতে শুরু করলো। আকাশকে এক ভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে কৌশিক বললো , “ এবার চোখটা সরালে ধন্য হই। বিয়ের আরও আচার অনুষ্ঠান বাকি আছে যে ! „
তারপর সবকিছু পালন করে ছাদনাতলায় বসলো দুজনে। সাত পাক ঘুরে , মঙ্গল সূত্র পড়িয়ে যখন আকাশ সুচির সিথিতে সিঁদুর পড়ালো তখন সুচিও আকাশের সিথিতে সিদুর পড়িয়ে দিল। এতে সবাই হেসে ফেললো। সুচির মা বললেন , “ এ কি করলি তুই ? „
“ কেন ! দুজনেই দুজনার দায়িত্ব নিচ্ছি। „
রাধানাথ ঠাকুর হেসে বললেন , “ কোন অসুবিধা নেই। „
এইসব যখন হচ্ছে তখন পাশ থেকে নব বরবধূর উদ্দেশ্যে ফুল ছুঁড়তে থাকা এক মেয়ে বললো , “ দেখেছো বাবা। এটাকে বলে unconditional love । „
সঞ্জয় মেয়ের কথা শুনে কি বলবে ভেবে পেলো না।
বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর কেউ কাঁদলো না। কেঁদে হবেটা কি ! পাশের ফ্ল্যাটেই তো যাচ্ছে। তবুও মাকে , “ তোমার সব ঋণ শোধ করে দিলাম । „ বলার সময় সুচি কেঁদে ফেললো। নব বর বধূকে আশীর্বাদ করে সবাই চলে গেল। আকাশ এবং সুচিত্রা মিত্র সিঁড়ি ভেঙে উপরে উঠে এলো।
সুচিকে আকাশের ঘরে বসিয়ে তার হাতে একটা হলুদ গোলা দুধের গ্লাস ধরিয়ে আকাশের মা চলে গেলেন। বিপ্লব , আকাশের মামা আর কৌশিকের ইয়ার্কি শেষ হলে তারা আকাশকে ছেড়ে দিল। আকাশ ঘরে ঢুকতে তার চোখ ঘুরে গেল। ফুল দিয়ে সাজানো ঘর। বিছানায় গোলাপের পাপড়ি ছড়ানো। দড়িতে ফুল বেধে দেওয়ালে ঝোলানো। আজ যেন ঘরটাকে একটু বেশিই উজ্জ্বল দেখাচ্ছে। কিন্তু এসব ছাড়াও আকাশকে যেটা সবথেকে বেশি অবাক করলো সেটা হলো সুচি খাটের কিনারায় বসে পা দুলিয়ে ফোন ঘাটছে।
আকাশ ঢুকতেই সুচি নড়ে বসলো। সঙ্গে সঙ্গে সুচির শরিরের গয়নার একটা ঝনঝন আওয়াজ হলো । সুচি বললো , “ দিদিকে ফোনটা দিয়েছিলাম ভালো ভালো ফটো তুলে দিতে । দেখ ! কেমন সব বিচ্ছিরি ফটো তুলে দিয়েছে। ও হ্যাঁ , কাকি তোর জন্য দুধ রেখে গেছে। „
আকাশ চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলো। তারপর দুধের গ্লাসটা তুলে এক নিশ্বাসে সব খেয়ে ফেললো। বড্ড খিদে পেয়েছিল তার। সারাদিন বেশি কিছু পেটে পড়েনি তার। ওদিকে সুচি বললো , “ দিদিকে বললাম। দিদি বললো ওর কাছে সব ফটো আছে। পরে দেবে। „
সুচির কথা শুনে আকাশ গিয়ে পড়ার টেবিলের ড্রয়ার খুলে একটা চাবির গোছা বার করলো। তারপর সেই চাবির গোছা থেকে একটা চাবি নিয়ে আলমারি খুললো। আলমারি থেকে বার করলো একটা অ্যালবাম। আকাশ অ্যালবামটা নিয়ে সুচির পাশে এসে বসলো। তারপর অ্যালবামের ভিতর ফটো দেখতে লাগলো । সুচিও দেখে বললো , “ এটা দিম্মার না ! „
“ হ্যাঁ , এতে দিম্মা তোর আমার আর বাদশার ফটো রাখতো। „ বলতেই সুচি কেড়ে নিল অ্যালবামটা। তারপর খাটে উপুড় হয়ে শুয়ে ফটো গুলো দেখতে লাগলো। আকাশও এসে সুচির পাশে উপুড় হয়ে শুয়ে ফটো দেখতে লাগলো।
প্রথম পৃষ্ঠায় আকাশের অন্নপ্রাশনের ফটো। সেখানে সুচি আর বাদশা আছে। তারপর আকাশের হামাগুড়ি দেওয়ার ফটো। সুচি বাদশা আর আকাশের খেলনাবাটি খেলার ফটো। সুচির সাথে আকাশ আর বাদশার খেলার ফটো। তারপর সুচির প্রথম কলেজ যাওয়ার ফটো। তাতে মুখ ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে আছে সে। তারপর আকাশ , বাদশা আর সুচির কাদা মাখা ফটো। তারপর আছে সুচির প্রথম নাচের ফটো। প্রাইজ নেওয়ার ফটো। আকাশের প্রথম কলেজ যাওয়ার ফটো। তারপর আছে আকাশের হাতে ব্যান্ডেজ এর ফটো। সুচি আকাশের হাত কাঁমড়ে দিয়েছিল। তারপরেই আছে আকাশ আর সুচির পাকা রঙ মেখে ভুত হওয়ার ফটো। দুজন দাঁড়িয়ে হাসছে। ফটো দেখে আকাশ সুচি দুজনেই হেসে উঠলো। নিজেদের ফটো দেখতে দেখতে যেমন তারা হেসে উঠছিল তেমন দিম্মার ফটো দেখে উদাস হয়ে উঠছিল।
তারপরেই আছে জাগুয়ার গাড়ির সাথে দুজনের ফটো। আকাশের প্রথম পরিক্ষার রেজাল্টের ফটো। একসাথে আচার খাওয়ার ফটো। কলেজে সুচির নাচের ফটো। তারপরেই সব খালি। আর ফটো নেই। একসাথে ফটো দেখে আর হাসি ঠাট্টা করতে করতে কখন যে দেড় ঘন্টা সময় পার হয়ে গেলো সেটা সুচি আর আকাশ বুঝতে পারলো না। অ্যালবাম দেখা শেষ হওয়ার পর যখন মুখ তুলে তাকালো তখন সাড়ে বারোটা বাজে। সুচি বললো , “ কি হলো ! আর ফটো নেই ? „
“ আছে , অন্য একটা অ্যালবামে। এরপর মা সব ফটো তুলে দিয়েছিল। „ তারপর অবাক হয়ে আকাশ বললো , “ আজকে কি তুমি শুধু অ্যালবাম দেখবে ? „
সুচি ভুরু কুঁচকে বললো , “ কেন ? আর কি করবি তুই ? „ বলতেই আকাশ সুচির ঠোঁটে ঠোঁট বসিয়ে একটা কিস করলো ।
সুচি চোখ বড়ো বড়ো করে বললো , “ অসভ্য। একটা মেয়েকে একা ঘরের মধ্যে পেয়ে এইসব । „
“ তুমি এখন আমার স্ত্রী। আইনত এবং ধর্মীয় দুই দিক থেকেই .....
“ খুব শখ না স্বামী হওয়ার। দেখাচ্ছি তোমায় । „ বলেই আকাশের পাঞ্জাবির কলার টেনে ধরে একটা চুম্বন করলো। যখন সুচির ঠোঁটের লিপস্টিক আকাশের ঠোঁটে বসে গেল তখন আকাশ সুচিকে ছেড়ে দিল । সুচি বললো , “ কি হলো ? „
“ লাইটটা জ্বলছে। „ বলে আকাশ খাটে থেকে নেমে লাইট নিভিয়ে আবার খাটে চলে এলো।
কিছু সময়ের মধ্যেই দুজনের শরীরের উষ্ণতা বিছানার চাদর গরম করে দিল। পরবর্তী কয়েক মূহুর্ত তাদের জীবনের সবথেকে মিষ্টি মূহুর্ত হয়ে রইলো।