Thread Rating:
  • 106 Vote(s) - 2.8 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance মিষ্টি মূহুর্ত ( উপন্যাস) সমাপ্ত :---
Update 8

প্রায় দু ঘন্টা দিদি আর একমাত্র বোনঝির সাথে কথা ফোন রাখলো সুচি। ফোন রাখার পর থেকে দিদির বলা কথাটাই মাথাতে ঘুরছে । কথাটা সে নিজে ভাবেনি এমন নয়। তবে এখন দিদির বলাতে সেটা আরও ভাবিয়ে তুলেছে।

কথাটা হলো পলাশের ব্যাপারে আকাশকে জানানো । এতো বড়ো একটা ঘটনা ঘটে গেছে , সেটা ওকে জানানো উচিত এটা আগেও ভেবেছিল সুচি । এখন দিদির বলাতে কথাটা আকাশকে জানাতেই হবে এই সিদ্ধান্তে এলো সুচি। কিন্তু কিভাবে বলবে সে ? কিভাবে ওই ঘটনার বর্ণনা করবে সেটাই চিন্তা ফেলছে সুচিকে । এইসব ভাবতে ভাবতে সে বাবা আর মায়ের ফিরে আসার আওয়াজ শুনতে পেল।

সঙ্গে সঙ্গে সুচির মনটা এক অজানা আনন্দে নেচে উঠলো। না অজানা আনন্দ নয় , জানা আনন্দ। বিয়ের তারিখ পাকা হওয়ার আনন্দ। তারিখ কবে সেটা জানার খুব ইচ্ছা হলো সুচির । কিন্তু মাকে জিজ্ঞাসা করতে লজ্জা পেল। তাই সে ঘরের বাইরে গিয়ে , লিভিংরুমে রাখা তাদের একমাত্র টিভিটা চালিয়ে সোফায় বসলো , যদি বাবা মায়ের কিছু কথা শোনা যায় এই আশায়। কিন্তু সদ্য রাধানাথ ঠাকুরের বলা কথা বা ভবিষ্যৎবাণীর ফলে সুচির বাবা মা থম মেরে গেছেন। কি বলবেন সেটাই ভেবে পাচ্ছেন না তারা। বাথরুমে গিয়ে মুখে জলের ঝাপটা দিয়ে এসে মেয়ের পাশে বসে সিনেমা দেখতে লাগলেন।

তিনি আকাশের বাবার মতোই এটাকে অবিশ্বাস করার চেষ্টা করতে লাগলেন। কিন্তু বিপদ শব্দটাই একজন মানুষকে কাবু করে ফেলার জন্য যথেষ্ট। মেয়ের কিরকম বিপদ হবে সেটা ভাবতেই তার মুখ শুকিয়ে গেল। সুচি সোফায় বসে টিভি দেখতে দেখতে একবার আনমনে বাবার দিকে তাকালো। সুচি দেখলো যে তার বাবার মুখে একটা দুঃশ্চিন্তার ছাপ। পিছন ফিরে মায়ের দিকে তাকিয়ে মায়ের মুখ দেখার চেষ্টা করলো সে। সুচেতা দেবী রাতের খাবার গরম করতে ব্যাস্ত , তাই সুচি মায়ের মুখ দেখতে পেল না ।

বাবা মায়ের নিস্তব্ধতা দেখে সুচির ভুরু কুঁচকে গেল ,  ‘ হঠাৎ কি এমন হলো যে বাবা এইভাবে বসে আছে ! আর মা বাবা হঠাৎ চুপ মেরে গেল কেন ? কিছুক্ষণ আগে তো খুব খুশি ছিল আমার বিয়ে নিয়ে। নিশ্চয়ই ওই ঘরে কিছু হয়েছে। , কিন্তু বাবাকে জিজ্ঞাসা করবে তারও উপায় নেই। তাই আবার ভাবলো , ‘ কাকে জিজ্ঞাসা করা যায় ! আকাশ। ,

আকাশের কথা মাথাতে আসতেই সুচি টিভির সামনে থেকে উঠে , নিজের ঘরে চলে এলো। খাট থেকে ফোনটা তুলে আকাশকে ফোন করলো। রিং হচ্ছে কিন্তু ফোন তুলছে না । বারকয়েক ফোন করার পরেও যখন আকাশ ফোন রিসিভ করলো না তখন সুচি রেগে গেল।

আকাশ ফোন তুলছে না কারন সে ডিনার করতে বসে গেছে । এদিকে সুচির মা সুচিকে ডিনার করতে ডাকলে সেও মাথা ভর্তি রাগ আর বুক ভর্তি দুঃশ্চিন্তা নিয়ে রাতের খাবার খেতে চলে গেছে।

আধ ঘন্টা পর আকাশ ডিনার করে এসে ফোনটা হাতে তুলে নিল। তারপর ফোনের স্ক্রিনে চোখ রাখতেই সুচির চারটে মিসকল দেখে খুব অবাক হলো। সঙ্গে সঙ্গে সে সুচিকে ফোন করলো। দুবার ফোন করার পর সুচি ফোনটা ধরলো। এতক্ষণ পর আকাশের কলব্যাক দেখে রাগে গর্জে উঠে সুচি বললো , “ এতক্ষণ কি করছিলি তুই ? চার বার ফোন করেছি। চুরি করতে গেছিলি বুঝি ! „

সুচির রাগ দেখে আকাশ ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে খেল , “ চুরি করতে যাবো কেন ? ডিনার করছিলাম । বল কি বলবি ? „

“ তোদের ঘর থেকে আসার পর থেকে মা বাবা চুপ করে আছে । কি হয়েছে ওখানে ? সত্যি করে বলবি। „

আকাশ বুঝতে পারলো নিশ্চয়ই পুরোহিতের কথাতেই জেঠু আর জেঠিমা এরকম আচরণ করছে। কিন্তু পুরোহিতের কথা সুচিকে বলবে কি করে সেটাই আকাশ ভেবে পেল না। তাই সে আমতা আমতা করে বললো , “ তেমন কিছু তো হয়নি । ওই তোর আর আমার কুষ্ঠি দেখলো । তারপর পঞ্জিকা দেখে বিয়ের তারিখ বললো । „

আকাশকে আমতা আমতা করতে দেখে সুচি বুঝতে পারলো যে সে নিশ্চয়ই কিছু লুকাচ্ছে , “ তুই কিছু লুকাচ্ছিস । সত্যি করে বল ওখানে কি হয়েছে ? „

নিরুপায় হয়ে মিইয়ে যাওয়া গলায় আকাশ সব বলে দিল। সব শুনে সুচি হাসতে হাসতে বিছানায় লুটোপুটি খেতে লাগলো। হাসির জন্য পেটে ব্যাথা করতে শুরু করলো। হাসির চোটে চোখ দিয়ে এক ফোটা জলও বেরিয়ে এলো। হাসি যখন সয়ে এলো তখন সুচি বললো , “ তুই এইসব কুসংস্কার বিশ্বাস করিস না কি ! „

আকাশ এতক্ষণ চুপচাপ সুচির হাসি শুনছিল। যে কথাটা নিয়ে মা বাবা জেঠু জেঠিমা সবাই দুঃশ্চিন্তা করছে , সুচি সেই কথাটাকেই হাসির কথা বানিয়ে ফেলেছে। তাই সে রেগে গিয়ে বললো , “ এই কুসংস্কারের জন্যেই কিন্তু আমার আর তোর বিয়ে হচ্ছে। „

আকাশের রাগ দেখে সুচি শান্ত হলো। খাটের উপর রাখা পাশ বালিশটা জড়িয়ে ধরে সুচি বললো  , “ আচ্ছা ঠিক আছে। বিয়ের তারিখ কবে ঠিক হলো সেটা বল ? „

আকাশ এবার লজ্জা পেতে শুরু করলো , “ মে মাসের নয় থেকে এগারোর মধ্যে যেকোন একটা দিন বেছে নিতে বলেছে। „

কোলবালিশটাকে আরও ভালো করে জড়িয়ে ধরে তার নিশ্বাস বন্ধ করে দিয়ে সুচি বললো , “ ও , মানে এখানও প্রায় আড়াই মাস। „ তারপর গম্ভীর হয়ে বললো , “ ও হ্যাঁ , তোর সাথে একটা জরুরি বিষয়ে কথা ছিল । „

কি এমন জরুরি বিষয় থাকতে পারে সেটা ভেবে আকাশের ভুরু কুঁচকে গেল , “ কি বিষয়ে ? „

“ এই যে আমি আর তুই , তুই তোকারি করে কথা বলি। ওটা আর চলবে না। বন্ধ করতে হবে। „

সুচির কথা শুনে আকাশের ভুরু চোখের উপর চলে এলো , “ মানে ! তাহলে কি বলে ডাকবো ? „

“ কেন ! তুমি করে বলবি । „

“ আমি পারবো না । এইভাবে বললে হয় নাকি ! ছোটবেলা থেকে তুই তুই করে বলে এসছি । কতো মারপিট করেছি একসাথে। এখন হঠাৎ লাতুপুতু হয়ে তুমি করে বলবো। ধুর ভাবতেই কেমন একটা গা গুলিয়ে উঠছে। „

“ বলতে তো তোকে হবেই। এমনিতেও আমি তোর থেকে সাড়ে তিন বছরের বড়ো। তাই উচিত তোর উচিত আমাকে তুমি করে বলা। „

“ আমি পারবো না। আমার ঘুম পাচ্ছে। কালকে ঘুমাইনি। রাখছি । „ বলে সুচির মুখের উপর ফোনটা কেটে দিয়ে , ঘরের লাইট নিভিয়ে , মশারি না টাঙিয়েই শুয়ে পড়লো। আর সঙ্গে সঙ্গে ঘুমিয়েও পড়লো।

আকাশ মুখের উপর ফোন কেটে দেওয়ায় সুচি রেগে গেল না। সত্যি আকাশ গতকাল ঘুমায়নি। আজ মাঝে মাঝে আকাশকে হাই তুলতে দেখছিল সুচি । ‘ তুমি করে তো ওকে বলতেই হবে। হ্যাঁ , প্রথম প্রথম একটু কেমন একটা লাতুপুতু মতো লাগবে। এত বছরের অভ্যাস রাতারাতি তো বদলানো যায় না। , এইসব ভাবতে ভাবতেই সুচিও ঘুমিয়ে পড়লো।

এদিকে সুচেতা দেবী বিয়ের খবর জানানোর জন্য তার ভাইদের অর্থাৎ সুচির মামাদের ফোন করলেন। আজ দিনের বেলায় ফোন করার কথা ছিল। কিন্তু আকাশের মায়ের সাথে কথা বলতে গিয়ে আর ফোন করা হয়নি। তাই এখন সময় পেয়ে তিনি ফোন করলেন। প্রথম ফোনটা করলেন বড়দাকে। ও প্রান্তে বৌদি অর্থাৎ সুচির বড় মামি ফোনটা ধরে বললো , “ হ্যাঁ , বলো ।  „

সুচির মা --- বৌদি , দাদা কোথায় ?

বড়ো মামি --- আমাকে বললে হবে না !

বৌদির খোটা দেওয়া কথা গায়ে না মেখে সুচির মা বললেন , “ আজকে সুচির জন্য পাত্র ঠিক করলাম। সেটা বলতেই ফোন করেছি । „

বড়ো মামি --- ও এতো খুবই সুখবর । পাত্র কি করে ।

সুচির মা --- তোমরা কালকে এসো না সবাই মিলে। তখন সব শুনবে। এমনিতেও অনেক দিন আসোনি তোমরা।

বড়ো মামি --- ঠিক আছে । আমি বলছি তোমার দাদাকে ।

সুচির মা --- কাল মনে করে এসো কিন্তু তোমরা। মেজদা আর ছোটদাকেও খবরটা জানাতে হবে। রাখছি।

বড়ো মামি --- ঠিক আছে রাখো

পরের দিন সকালে আকাশকে কিছু না বলে নিজের স্কুটি নিয়ে সুচি অফিস চলে গেল। ‘ আগের দিন রাস্তায় যেভাবে অসভ্যের মতো প্রেক্ষিতে মারছিল ইসসস। আর ওর বাইকে চড়া যাবে না। , ঠিক এই কথাটা নিজের মনে বলে সুচি স্কুটি স্টার্ট দিয়েছিল ।

সুচি অফিস চলে গেলেও সুচির বাবা গেলেন না। বাড়িতে আত্মীয় আসবে এটা জেনেও উনি অফিস কিভাবে যাবেন । ঠিক এগারোটার দিকে সুচির বড়ো মামা মামী , তাদের একমাত্র ছেলে আর মেজ মামা এলো।

সুচির মা চা করে বিস্কুট আর গরম গরম সিঙাড়া সহযোগে , ট্রেতে সাজিয়ে আত্মীয়ের সামনে আনলেন।

সুচির বড়ো মামার বয়স প্রায় পঁচাত্তর হতে যায়। চেহারা দেখলেই বয়সের আন্দাজ পাওয়া যায়। তিনি একটা কাপ তুলে নিয়ে সুচির বাবাকে জিজ্ঞাসা করলেন , “ ছেলের নাম কি ? „

সুচির বাবা বললেন , “ আকাশ। এইতো পাশের ফ্ল্যাটে থাকে । „

সুচির বড়ো মামা অবাক হয়ে বললো , “ পাশের ফ্ল্যাটে ! আর কোথাও ছেলে পেলি না ? পুরো পাশের বাড়ি ! „

সুচির বাবা চোখ নামিয়ে বললেন , “ সুচির ওকেই পছন্দ। „

“ পছন্দ মানে ভালোবেসে বিয়ে ! „

সুচির বাবা একটা সম্মতি সূচক ঘাড় নেড়ে বললেন , “ হ্যাঁ । ছোটবেলা থেকে দেখে এসছি। ভালো ছেলে । কোন বাজে অভ্যাস নেই। „

“ আজকালকার ছেলে মেয়ে সব। ছেলে কি করে ? „

সুচির বাবা তার বড়ো শ্যালককে একটু সমীহ করেন। সরকারি অফিসের খুব বড়ো কর্মচারী ছিল তার এই শ্যালক। সেখান থেকেই এই অতিরিক্ত সম্মান। তাই এই ধরনের জিজ্ঞাসাবাদে বিরক্ত হলেও সেটা প্রকাশ না করে তিনি বললেন , “ আকাশের বাবার বিজনেস আছে। ওখানেই বাবাকে সাহায্য করে। „

আরও কিছুক্ষণ এদিক ওদিকের কথা বলে সুচির মেজ মামা জিজ্ঞাসা করলেন , “ আকাশের বয়স কতো ? মানে চার পাঁচ বছরের পার্থক্য এখন থাকা ভালো। না হলে বিয়েটা ইমমেচিউর হয়ে যায়। টেকে না । „

সুচির বাবা কিছুটা সংকোচ করে বললেন , “ আকাশের বয়স তেইশ । „

“ তেইশ ! „ সুচির বড়ো মামি যেন লাফিয়ে উঠল । এতক্ষণ পর একটা খুদ চোখে পড়ায় সেটা তিনি হাতছাড়া করতে রাজি হলো না  , “ আমাদের সুচির বয়স তো ছাব্বিশ সাতাশ মতো হবে। „

সুচির বাবা এবার একটু বেশি বিরক্ত হলেন “ হ্যাঁ , পাঁচ মাস পর সুচি সাতাশে পড়বে । „

সুচির বড়ো মামা বললো , “ আক্কেলটা কবে হবে শুনি ! একটা বাচ্চার সাথে বিয়ে দিচ্ছিস। যদি মেয়ে বিয়ে দেওয়ার এতোই তাড়া থাকে , তাহলে আমাকে বল । আমি ছেলে দেখে দিচ্ছি। আমাদের ওখানে অনেক অনেক ভালো ভালো ছেলে আছে । „

এতোক্ষণ পর সুচির মা মুখ খুললেন , “ তুমিই তো আমার বাইশ বছর বয়সে বিয়ে দিয়েছিলে । তখন তোমার আক্কেল কোথায় ছিল ! হ্যাঁ সুচি আর আকাশ একে অপরকে ভালোবাসে। এই গত কয়েক বছর ওদের মধ্যে কথা বন্ধ ছিল। তখন আমি দেখেছি আমার মেয়ের মুখ । আর আমি সেই মুখ দেখতে চাই না। মে মাসের দশ তারিখ বিয়ে। সময় হলে এসো। এমনিতেও তো আমি মরে গেছি কি বেঁচে আছি সে খবর নাও না। „ সুচির মা একটানা এতো গুলো কথা বলে গরম নিশ্বাস ছাড়তে লাগলেন ।

সুচির বড়ো মামি ব্যাঙ্গ করে বললো , “ বিয়ের তারিখ পর্যন্ত যখন ঠিক করে ফেলেছো ! তখন আমাদের ডাকলে কেন ? বিয়েটাও তো দিয়ে দিতে পারতে । „

“ আমি তোমার মতো সব সম্পর্ক চুকিয়ে দিতে পারি নি। তাই তোমাদের ডেকেছি। ....


ঠিক আড়াই কি তিন বছর আগে , সুচেতা দেবীর বাপের বাড়ির জমি ভাগাভাগি নিয়ে একটা ঝামেলা হয়েছিল। তিন ভাই নিজের নিজের সুবিধা মতো ভাগ করে নিয়ে , একমাত্র বোনের জন্য যা রেখেছিল তা খুবই সামান্য। তখন মায়ের হয়ে সুমি প্রতিবাদ করে । তখন সুমিকে অনেক ছোট বড়ো কথা শোনায় সুমির এই বড়ো মামি। পরে সুমি আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললে একরকম বাধ্য হয়ে সুচির বড়ো মামাকে নিজের ভাগ থেকে কিছুটা অংশ দিয়ে দিতে হয়। তখন থেকেই এই ননদ বৌদির মধ্যে একটা ঝামেলা লেগেই আছে।

এখন আবার সেইসব পুরানো কথা শুরু হচ্ছে দেখে শান্তশিষ্ট সুচির বাবা দুজনকে থামাতে গেলেন। সুচির মাকে বললেন , “ তুমি একটু শান্ত হও। অতিথিদের সাথে এইরকম করো না। „

কোনওরকমে সবাইকে শান্ত করিয়ে , তাদেরকে খালি মুখে নেমন্তন্ন করে এবং , “ তোমরা না আসলে বিয়ে সম্পূর্ণ হবে না । „ এই ধরনের কথা বলে সবাইকে বিদায় জানালেন সুচির বাবা।

এদিকে আকাশের মাও তার একমাত্র ভাইকে বিয়ের খবর জানালেন। আকাশের মামার কাজ থাকায় তিনি বিয়ের সময়েই যেতে পারবেন বলে দিলেন। এতে আকাশের মা তার ভাইয়ের উপর রেগে গেলেন এটা বলার অপেক্ষা রাখে না।

এদিকে সারাদিনে সুচি আকাশকে একটাও মেসেজ করে নি। যেমন একা একা নিজের স্কুটিতে অফিস চলে গেছিল তেমন একা একাই চলেও এসছিল। সুচির এরকম আচরণের কোন অর্থ আকাশ ভেবে পেল না। তাই অফিস থেকে ফিরে , ফ্রেশ হয়ে , সুচির ঘরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল। সেই মত আকাশ সুচির ফ্ল্যাটে ঢুকেও পড়লো। সুচির ফ্ল্যাটে ঢুকে দেখলো সুচির মা বাংলা সিরিয়াল দেখছে। আকাশ জিজ্ঞাসা করলো , “ জেঠিমা , সুচি কোথায় ? „

সুচির মা আনমনে জবাব দিলেন , “ সুচি নিজের ঘরে আছে। „

আকাশ সুচির ঘরের দিকে পা বাড়াতেই , সুচির মা হঠাৎ তেড়েফুড়ে সোফা থেকে উঠে এসে , আকাশকে বাধা দিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন “ কোথায় যাচ্ছিস ? „

আকাশ জেঠিমার এমন ব্যাবহারে খুব অবাক হলো , “ সুচির কাছে । একটা দরকারী কথা বলবো । „

“ সব বুঝি তোদের দরকারী কথা। এসব দরকারী কথা বিয়ের পর বলবি । যা , নিজের ঘরে যা । „ বলে আকাশকে একরকম খেদিয়ে দিলেন।

আকাশ লজ্জা পেয়ে নিজের ঘরে চলে এলো। কি বলতে গেছিল ! আর জেঠিমা কি ভেবে তাকে তাড়িয়ে দিল। নিজের ঘরে এসে সোজা সুচিকে ফোন করলো । সুচি ফোনটা ধরে বললো , “ কি হয়েছে ? মায়ের সাথে কি নিয়ে কথা বলছিলি ? „

“ কি হয়েছে সেটা তো তুই বলবি। সকালে একা অফিস চলে গেলি ...

আকাশের কথার মাঝে সুচি বলে উঠলো , “ যতক্ষণ না তুই আমাকে তুমি করে বলছিস , ততক্ষণ তোর সাথে আমার কোন কথা নেই । „ রাখ ফোন। „ বলে ফোনটা কাটতে গেল। তখনই আবার সেই কথাটা মনে পড়তেই সে বললো , “ ছাদে আয় কথা আছে। „

“ কি কথা ? „

সুচি অধৈর্য হয়ে বললো , “ আয় না ছাদে। সব জানতে পারবি । „

“ আসছি । „ বলে ফোনটা কেটে দিয়ে আকাশ ছাদে চলে এলো।

সুচিও কয়েক মিনিটের মধ্যে ছাদে এসে দেখলো অন্ধকারে আকাশ দাঁড়িয়ে আছে। তার পায়ের আওয়াজ শুনে আকাশ পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখলো , “ বল কি বলবি ? „

সুচি , অন্ধকার কালো আকাশে তাকিয়ে , উজ্জ্বল নক্ষত্রদের আলোর ঝিকিমিকি খেলা দেখতে দেখতে বললো , “ আমি জানি না তুই কিভাবে রিয়েক্ট করবি ! কিন্তু তোকে কথাটা বলাটা দরকার । „

আকাশের ভুরু কুঁচকে গেল , “ কি কথা ? „

সুচি আবার রাতের অন্ধকার আকাশের দিকে তাকিয়ে মনটাকে শক্ত করে বললো , “ কয়েক মাস আগে আমার পলাশের সাথে দেখা হয়েছিল । „

সুচির কথার মাঝখানে আকাশ জিজ্ঞাসা করলো , “ কে পলাশ ? „

“ বলছি সব । „ বলে সব বলতে শুরু করলো। কলেজ ফাংশনে পলাশের সাথে দেখা। পলাশের যেচে এসে আলাপ করা। ওর বারবার মেসেজ করা। আকাশের সাথে গোধূলিকে দেখে পলাশের সাথে ডেটে যাওয়া । একসাথে খাবার খাওয়ার পর কিস করা ....

এতোটা চুপচাপ শোনার পরেই আকাশের মনটা বিষিয়ে উঠলো। মুখটা ঘৃণায় কুঁচকে গেল । পলাশের সাথে ঘটা পরের ঘটনা শোনার আগেই আকাশ বললো , “ এতো কিছু করার পর আমাকে না বললেই পারতিস । „

কথাটা বলে আকাশ নিচে নিজের ঘরে চলে এলো। পিছন ঘুরে যদি একবার সুচির মুখের দিকে তাকাতো তাহলে সেই মুখে চোখের জল  দেখতে পেত। সুচি জানে , আকাশ এখনও জীবনের এইসব বিষয়ে কিছু বোঝেনা। এখন আকাশের বলা কথায় সুচির মনে ভয় ঢুকে গেল। যদি আকাশ বিয়েটাই ভেঙে দেয়।

আকাশ নিজের ঘরে এসে , ডান কনুই দিয়ে চোখ ঢেকে , বিছানার উপর শুয়ে পড়লো। আর মনে মনে ভাবতে লাগলো ‘ ছি্ আমার অনুপস্থিতিতে একজন অচেনা মানুষের সাথে এইসব ছি্ ... এটা কিভাবে করলো ও ! ,

হঠাৎ একটা যান্ত্রিক কর্কশ আওয়াজে আকাশের ধ্যান ভাঙলো। চোখ খুলে দেখলো সুচি ফোন করেছে। ধরতে ইচ্ছা হলো না। এদিকে চোখে জল নিয়ে সুচি বারবার ফোন করে যেতে লাগলো। সুচি বারবার ফোন করায় আকাশ ফোন সাইলেন্ট করে দিল। একসময় ক্লান্ত হয়ে সুচি ফোন করা বন্ধ করে দিল।

দুই তিন ঘন্টা পর ডিনার করার জন্য মায়ের ডাক কানে আসলে , সে উঠে বাথরুমে গিয়ে চোখে জলের ঝাপটা দিল। বারবার চোখে মুখে জলের ঝাপটা দিয়ে এসে ডাইনিং টেবিলে বসলো। কিছুক্ষণ খাওয়ার পর তার মাথাতে এলো , ‘ আজ যদি নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে থাকতো ! তাহলে এই দিন দেখতে হতো না। সুচিকে অনেক আগেই নিজের করে নিতে পারতো। অপবিত্র হতে হতো না। , কথাটা ভাবতেই সে বাবাকে বললো , “ আমার জন্য একটা অন্য পোস্ট দেখো। আমি এই কাজ আর করবো না । „

হঠাৎ ছেলের মুখে এইসব শুনে আকাশের বাবা একটু বেশিই অবাক হলেন। তার ছেলে প্রতিবাদী নয়। কিন্তু আজ প্রতিবাদ করছে। তাই অবাক হয়ে মাছের কাঁটাটা মুখ থেকে বার করে বললেন , “ হঠাৎ এই কথা ! „

“ আমি ওই কাজ করতে পারবো না। আমার অসুবিধা হচ্ছে । „

“ আমার কিন্তু সুবিধা হচ্ছে । „

আকাশ বুঝতে না পেরে এক দৃষ্টিতে বাবার দিকে তাকিয়ে রইলো। ছেলের দৃষ্টির অর্থ অনুধাবন করতে পেরে তিনি বললেন , “ তোর অফিসে আসার আগেই আমাদের একটা ডিল হাতছাড়া হয়েছিল। সিঙ্গাপুরে তখন একটা হোটেল লিজে নেওয়ার কথা চলছিল। কি করে খবরটা লিক হয়ে গেছিল জানি না । মাত্র দশ লাখ অর্থাৎ সিঙ্গাপুরের ডলারের হিসাবে পনের না সতেরো হাজার ডলারের জন্য আমাদের কাছ থেকে হোটেলটা হাত ছাড়া হয়ে যায়। খুব সুন্দর ফাইভ স্টার হোটেল ছিল। আমাদের বলিউডের নায়ক নায়িকাদের পছন্দের তালিকায় ছিল হোটেলটা। „ একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন , “ সেই আফসোস এখনও আছে। তোর আসার পর আর কোন খবর লিক হয়নি। „

আকাশ বাবার কথায় হতভম্ব হয়ে গেল , “ মানে তুমি নিজের লাভের জন্য আমাকে দিয়ে ওই কাজ করাচ্ছো ! „

“ আমার লাভ ! আমি কোম্পানির লাভের কথা বলছি। যার ভবিষ্যতের মালিক তুই। তার জন্য এতোটা তো কন্ট্রিবিউট করতেই পারিস । „

আকাশ কখনোই বাবার সাথে কথায় পেড়ে উঠবে না সেটা সে জানে। তাই হার মেনে বললো , “ তুমি অন্য একজন বিশ্বস্ত কাউকে নাও। আমাকে অন্য একটা পোস্টে দাও । „

“ কোন পোস্ট ? কোন পোস্ট খালি নেই । „

“ তাহলে নতুন একটা বিভাগ খোলা। „

কিছুক্ষণ ভেবে নিয়ে আকাশের বাবা বললেন , “ এই কিছুদিন আগেই একটা নতুন সেকশন খোলা হয়েছে....

বাবার কথার মাঝখানে আকাশ উৎসাহে প্রায় লাফিয়ে উঠে বললো , “ কোন বিভাগ? „

“ সুইজারল্যান্ড .....

ফের বাবার কথা শেষ হওয়ার আগেই বললো , “ আমাকে নাও , আমাকে নাও , প্লিজ ! „

“ ওটা এখনও খোলা হয়নি। শুধু কথা হয়েছে। আর সঞ্জয় আগে থেকেই ওই সেকশনের হেড নিজের মেয়েকে করে দিয়েছে। তাই আমি আর কিছু করতে পারবো না। গোধূলির সাথে কথা বল । „

আকাশের মা এতক্ষণ চুপচাপ স্বামী আর ছেলের কথা শুনছিলেন। এখন হঠাৎ এদের দুজনের কথার মাঝে ঠোঁট বেকিয়ে ভুরু নাচিয়ে বলে উঠলেন , “ সুইজারল্যান্ড ! সিঙ্গাপুর ! আমাকে তো একবারও নিয়ে গেলে না কোথাও ! „

এই কথার উত্তর আকাশের বাবার কাছে নেই। কারন তিনি একবার  মাত্র সিঙ্গাপুর গেছেন। তাই আজ গিয়ে কাল চলে এসছিলেন। সুইজারল্যান্ড এখনও যাননি। আগে ইয়াং বয়সে ঘোরার শখ থাকলেও এখন ঘরকুনো হয়ে গেছেন। তাই চুপচাপ বাকি খাবার খাওয়া শেষ করতে লাগলেন।

ডিনার করে আকাশের বাবা ঘুমাতে চলে গেলেন। আকাশ প্রায় রাতে এঁটো বাসন ধুতে , মায়ের সাহায্য করে। আজকেও করছিল আর মাথার মধ্যে সুচিকে অন্য একজনের সাথে কিস করার কথাটা ভাবছিল। ঘৃণা যে হচ্ছিল সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। হঠাৎ একটা গভীর দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে আকাশের মা বললেন , “ মাঝে মাঝে ভাবি আমি ভুল করছি। তোর বিয়ে এখন এই বয়সে দেওয়া উচিত হচ্ছে না। আবার পরক্ষণেই যখন ভাবি যে এই বয়সে তোর বিয়ে না দিলে তুই সুখী হবি না , তখন বুকটা কেঁপে ওঠে। মায়ের মন ! .....

মা হঠাৎ এইসব কি বলছে ! কেন বলছে ? এইসব ভাবতে ভাবতে আকাশ মায়ের কথা শুনতে লাগলো। আকাশের মা বলে চলেছেন “ তোর বয়স তেইশ। এখনও দুনিয়া দেখিস নি। দুনিয়ার নিয়ম কানুন শিখিস নি। এই বয়সে একজনের দায়িত্ব নেওয়া সহজ না। আবার যখন সন্তান নিবি তখনও সহজ হবে না। এতো বড়ো দায়িত্ব তুই পারবি কি না জানি না। তবে সুচি বয়সে। ও সামলাতে পারবে বলে মনে হয়। „

তারপর কিছুক্ষণ চুপ থেকে আবার বলতে শুরু করলেন , " জীবনে অনেক চাপানউতোর আসবে। সবসময় একে অপরের পাশে থাকবি। যেকোনো পরিস্থিতিতে ওর পাশে হাঁটবি । মনোমালিন্য হলে , ভুল বোঝাবুঝি হলে , কথা বলে মিটিয়ে নিবি কিন্তু চুপচাপ থাকবি না। „ তারপর আকাশের দিকে তাকিয়ে বললেন , “ আমাকে ভুল প্রমাণ করবি না কখনো। তোর মাকে যেন রাস্তায় শুনতে না হয় ‘ কম বয়সে ছেলের বিয়ে দিয়ে ভুল করেছি । ,

এবার আকাশের চোখে জল চলে এলো। কতো কথা মাথায় ঘুরতে লাগলো। আপাতত সে মাকে জড়িয়ে ধরে বললো , “ কখনো তোমার মাথা নিচু হতে দেবো না মা। „

আরও কিছুক্ষণ মায়ের সাহায্য করার পর , মায়ের চুমু কপালে নিয়ে খাটে এসে শুলো । ‘ একি ভুল করতে যাচ্ছিলাম আমি। কি ভাবছিলাম এসব ? সিনেমায় , সিরিয়ালে এসব কথা অনেকবার শুনেছি। কিন্তু নিজের সাথে যখন ঘটলো তখন ভিলেনের মতো  আচরণ কেন করছি ? সুচি তো কোন খাবার নয় যে কেউ ওকে খেয়ে এঁটো করে গেছে। কিন্তু আমি তো ওকে খাবারই ভাবছিলাম এতক্ষণ । আমার সুচি সবসময় পবিত্র ছিল আজও আছে। বিয়ের আগে কথাগুলো বলে ও ভালো করলো আর উল্টে আমিই ওকে খারাপ ... এমনকি এক মূহুর্তের জন্য নষ্টা ... ইসসস নিজের উপরেই ঘৃণা হচ্ছে ! „ নিজের মনে এইসব ভাবতে ভাবতে সে ঘুমিয়ে পড়লো।

পরের দিন সে আর সুচিকে মেসেজ করলো না। সুচিও সারাদিন আকাশকে কোন মেসেজ করলো না । অফিসে গিয়ে আকাশ গোধূলির অপেক্ষা করতে লাগলো। কিন্তু গোধূলি এলো না। সারাদিন অফিসে কাজ করে আকাশ বাড়ি ফিরে এলো। হাতমুখ ধুয়ে মায়ের বানানো টিফিন খেলো । তারপর একটু অন্ধকার হয়ে এলে সুচিকে ফোন করলো। সুচি ফোন ধরলেই আকাশ বললো , “ ছাদে আয় কথা আছে । „

একপ্রকার আদেশ দিয়েই আকাশ ফোনটা রেখে ছাদে চলে এলো। সুচি প্রায় দশ মিনিট পর ছাদে এলো। অন্ধকার হয়ে গেছে। আগের দিনের মতোই আজও আকাশে তারাদের আলোর ঝিকিমিকি খেলা চলছে। কিন্তু আজ মনে হয় পূর্ণিমা।

গোল চাঁদের জোৎস্নায় সুচিকে চিনতে অসুবিধা হলো না আকাশের। সুচি এসে দাঁড়াতেই কোন কিছু না বলে সুচিকে টেনে কাছে নিয়ে নিল। সুচিকে কিছু বলতে দেওয়ার আগেই তার কোমরে বাঁ হাত দিয়ে তাকে চাগিয়ে , নিজের ঠোঁটাটা সুচির ঠোঁটের ভিতর দিয়ে দিল। মুখের ভিতর তার প্রেয়সীর কোমল সরু ঠোঁটের স্পর্শ পেতেই নিজের ডান হাতটা দিয়ে সুচির মাথার পিছনে দিয়ে তাকে আরও কাছে টেনে নিল। সেই প্রথমবারের মতোই এবারও মনে হলো যেন প্রেয়সীর কোমল ঠোঁটটা মাখনের মতো তার মুখের ভিতর গলে যাবে।

এবার সুচিও আকাশের মাথা দুই হাত দিয়ে ধরে আকাশের গরম পুরু শুস্ক ওষ্ঠ্য নিয়ে নিজের মুখের ভিতর খেলতে লাগলো। আকাশের ঘন কালো চুলের ভিতর সুচির সরু আঙুল বিচরণ করতে লাগলো।

ভরা পূর্ণিমার চাঁদের জোৎস্নায় সুচি নিজের হবু বরের গরম নিশ্বাস মুখের উপর পেতে লাগলো। একজনের গায়ের গন্ধ অপর জনের কাছে কোন সুগন্ধি সৌরভের মতো নেশা জাগিয়ে দিতে লাগলো। আকাশ সুচিকে চাগিয়ে তুলে রাখায় তার পা ছাদের উপর নেই। হাওয়ায় ভাসছে। এক সুখের সাগরে ভাসছে সুচি । চোখ বন্ধ করে মুখের ভিতর আকাশের পুরু ঠোঁট চুষছে ।

আকাশ সুচির ঠোঁটের উপর নিজের অধিকার ফলানোর জন্য এই চুম্বন করছে না। এমনকি অপবিত্র ওষ্ঠ্যদ্বয় কে পবিত্র করার জন্যেও সে এই চুম্বন করছে না। কাল রাতে নিজের করা ভুলের জন্য , ভুল ভাবনার জন্য , সুচিকে ভুল ভাবার জন্য , এক শাস্তি হিসেবে বা নিজেকে সমর্পণ করার জন্য সে এই চুম্বন করছে।

দুজনেই হাফিয়ে গেলে একে অপরকে ছেড়ে দিল। সুচি হবু বরের ঠোঁটটা নিজের মুখ থেকে বার করে , এক দৃষ্টিতে চোখের পলক না ফেলে  আকাশের দিকে তাকিয়ে রইলো। আকাশ দেখলো সুচির চোখের পাতা কাঁপছে। আর চোখের মনি দুটো এই জোৎস্নার আলোয় স্নান করে চকচক করছে।

আফসোসের ভঙ্গিতে আকাশ বললো , “ আমায় ক্ষমা করে দে। কাল তোর সাথে ওইভাবে ব্যবহার করা ঠিক হয়নি। „ সুচির পা তখনও মাটিতে নেই। আকাশ তাকে চাগিয়ে রেখেছে।

“ ও , নিজের ভুল বুঝতে পেরেছিস তাহলে। আমি তো ভাবছিলাম তুই এখনও বাচ্চা রয়ে গেলি। হয়তো বিয়েটাই ভেঙে দিবি এটাও ভাবছিলাম । „

“ আমায় ক্ষমা করে দে। „

“ সে করলাম। এখন আমায় ছাড় । আর এইভাবে হঠাৎ করে ....

“ এটা আমার ক্ষমা চাওয়ার স্টাইল ছিল। বিয়ের পর যখনই কোন ভুল করবো তখন এইভাবে ক্ষমা চাইবো। ঠিক আছে ! „

“ মানে তুই ইচ্ছা করে আরও ভুল করবি । „

“ হ্যাঁ করবো ।  এই যেমন এখন করছি । „ বলে আবার সুচির উপরের ঠোঁট নিজের মুখের ভিতর নিয়ে নিল। সুচির পা তখনও ছাদ থেকে প্রায় 15-20 CM উপরে। সুচি আবার চোখ বন্ধ করে সুখের সাগরে ভাসতে লাগলো।
[Image: 20220401-214720.png]
[+] 8 users Like Bichitro's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: মিষ্টি মূহুর্ত ( উপন্যাস) চলছে :--- - by Bichitro - 07-01-2022, 09:32 AM



Users browsing this thread: 151 Guest(s)