16-05-2019, 02:59 PM
'কী হয়েছে ?' কলটা রিসিভ করে দেবশ্রী একটু বিরক্ত হয়েই জিজ্ঞাসা করলো। সে তখন অমিতজির কোলের উপর বসে আছে, তার গভীর সুড়ঙ্গে লাগাতার নিজের লিঙ্গ
দিয়ে মনের সুখে পাম্প করে যাচ্ছেন অমিতজি, তবে একটু ধীরে ধীরে। সৈকত ওপাশ থেকে বললো, 'কোথায় তুমি... এখনো এলে না, তাই ফোন করলাম। তোমার কি
অনেক দেরি হবে ফিরতে ?' 'না', কোনোরকমে বললো দেবশ্রী, 'আআমি এসে গেছি, আব..আআবাসনের নীচেই আছি... অমিতজির.. গাআআড়িতে, এ..একটু পরে
আআআসছি।' সৈকত একটু অধৈর্য্য হয়ে বললো, 'তাড়াতাড়ি এসো প্লিজ, একসাথে ডিনার করবো বলে ওয়েট করছি। আবাসনে চলেই এসেছো তো আবার পরে
আসছি কেন বলছো ?' অমিতজির ঠাপ নিজের মেয়েলি গর্তে নিতে নিতে চোখ বুজে গেলো দেবশ্রীর। সৈকতকে ফোনে আধো-আধো করে বললো, 'তু..তুমি খেয়েএএএ
নাওওও... আমার ডিনাআআর হ..হয়ে গেএএছে.... অঅমিতজি আঃ ... অমিতজি এখখখন আমাকে করছেন... আআআআ মা..নে.. আআমার সাথে আআলোচনা
কওওওরছেন - উউউউউফ - মাআআআ - উনি.. আমাকে.. ক..করে নিইইই..লে আআআ-সছি, রাআআ-খো তু..মি..।' সৈকত কিছু বুঝলো না ব্যাপারটা। দেবশ্রী কল
কেটে দিয়ে ফোনটা ছুড়ে ফেলে দিলো সীটের উপর। তারপর অমিতজিকে আবার জড়িয়ে ধরলো দুহাতে। অমিতজি আবার তীব্র গতিবেগে তার ক্ষুধার্ত কামদণ্ড গিঁথে
গিঁথে দিতে লাগলেন দেবশ্রীর রসসিক্ত মধুকোষে। দেবশ্রী অমিতজির মাথাটা নিজের বুকের সাথে জোরে চেপে ধরলো। কিন্তু সেইসময় তার হাতের কনুই লেগে গেলো
গাড়ির স্টিয়ারিংয়ের একদিকে - হর্নটা তীব্র শব্দে বেজে উঠলো দু-তিন সেকেন্ড। সেই শব্দে সচকিত হয়ে আবাসনের সিকিউরিটি অফিস থেকে কাউকে বেরিয়ে আসতে
দেখলো ওরা। কিছুক্ষনের জন্য এই কামলীলা থেকে নিরস্ত হতে হলো তাদের, নাহলে গাড়িটা অসম্ভব দুলছিলো।
সিকিউরিটি গার্ডটা গাড়ির সামনে এগিয়ে এসে এদিক ওদিক ভালো করে দেখলো। গাড়ির কাঁচ পুরো তোলা, কালো ফিল্ম লাগানো - তাই ভালো করে কিছু মালুম
করতে পারলো না। কিন্তু গাড়িতে যে লোক আছে সেটা বোধহয় বুঝলো। গাড়ির ইঞ্জিন চালু আছে। দেবশ্রী ওই অর্ধনগ্ন অবস্থায় অমিতজির কোলে বসে ছিলো। শুধু
মাথাটা অমিতজির ঘাড়ের কাছে গুঁজে মুখটা লুকিয়ে রাখলো। অমিতজির কোনো ভ্রূক্ষেপ নেই। ঠাপানো স্থগিত রেখেও তিনি দুহাতে দেবশ্রীর ভারী পাছা লেগিংসের উপর
দিয়ে সমানে দলাই-মলাই করতে লাগলেন। বাইরে তখনো ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি। কোনো সন্দেহজনক কিছু না দেখতে পেয়ে গার্ডটা আবার ফিরে গেলো তাদের রুমে।
অমিতজি আবার তলঠাপ দেওয়া আরম্ভ করলেন। আবার দুলতে লাগলো গাড়ি।
আরো মিনিট পাঁচেক ধরে ঠাপানোর পরে তিনি একটু থামলেন। গাড়ির ওই ছোট্ট সংকীর্ণ পরিবেশে দুজনের কারুরই তৃপ্তি হচ্ছিলো না ঠিক করে। বরং এভাবে কিছু ঠাপ
দিয়ে দেবশ্রীর শরীরের ক্ষিদে আরো দাউ-দাউ আগুনের মতো জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন অমিতজি। বুভুক্ষু বাঘিনীর মতো হয়ে উঠেছে এখন দেবশ্রী। তার দেহের শিরায় শিরায়
পুরুষ মানুষ গিলে খাবার দাবানল বইছে। অমিতজির ঠোঁটের কোণে ক্রূর হাসি খেলে গেলো একটা। এটাই চেয়েছিলেন তিনি। তার মাথায় ঘুরছিলো যে এই মেয়ের
শরীরটা দিয়ে অনেক কাজ হাসিল করতে হবে তাকে। তাই একে আপাতত অভুক্ত রাখা দরকার। শেষবারের মতো দেবশ্রীর ঠোঁটের মধু একবার ভালো করে জিভ দিয়ে
চেটে নিয়ে তিনি বললেন, 'পরশু আমি ফ্রি আছি। ওইদিন দেখা হবে।' দেবশ্রী অমিতজির চোখের দিকে একবার তাকিয়ে নিয়ে তার উপোসী যোনিদ্বার দিয়ে অমিতজির
লিঙ্গের মাথায় ঘষতে লাগলো। বললো, 'এখন একবার প্লিজ চলুন না আমাদের ফ্ল্যাটে, আমি আর পারছি না -।' অমিতজি তার শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা লিঙ্গটা দেবশ্রীর
অভ্যন্তর থেকে টেনে বের করে নিয়ে ডানদিকের দরজাটা একটু খুলে দিলেন। দেবশ্রী চাইছিলো না নেমে যেতে, তার তো স্থান-কালেরও কোনো হুঁশ ছিল না। কিন্তু
অমিতজির নির্দেশ অমান্য করার সাধ্যও নেই তার। কিছুটা নিরাশ হয়ে শেষে অমিতজির ঠোঁটের উপর গভীর একটা চুমু দিয়ে সে বললো, 'তাহলে পরশুদিন ডিনারের
নিমন্ত্রণ রইলো কিন্তু। প্লিজ আসবেন। আমি দু-পা ছড়িয়ে বসে থাকবো আপনার অপেক্ষায়। প্লিজ - আসবেন কিন্তু।' গাড়ি থেকে নেমে যাবার জন্য উঠতে গিয়েও
একবার উঁচু হয়ে নিজের দুটো স্তন অমিতজির মুখের সাথে ঠেকিয়ে ধরলো দেবশ্রী। বললো, 'আমার এই দুটো দুধের দিব্যি রইলো - আসবেন কিন্তু পরশুদিন।' বলেই
সীটের উপর থেকে মোবাইলটা কুড়িয়ে নিয়ে গাড়ি থেকে নেমে দাঁড়ালো সে। তার ছেঁড়া লেগিংসটা চুড়িদারের তলায় ঢেকে নিলো। আলুথালু হয়ে যাওয়া পোশাক আর
ওড়না ঠিক করে নিলো। সিকিউরিটি গার্ডগুলো হয়তো তাকে দেখতে পাবে এখন আবাসনে ঢোকার মুখে। তবে তাতে কিছু যায় আসে না। গাড়িতে কী কী হয়েছে তা
তো আর কেউ জানছে না। অমিতজি দেবশ্রীকে গুড নাইট জানিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে বেরিয়ে গেলেন।
চলন্ত গাড়ির উদ্দেশ্যে একবার হাত নেড়ে দেবশ্রী আবাসনের রাস্তা ধরলো... এই শীতল হাওয়া আর বৃষ্টির জলও তার শরীরকে ঠান্ডা করতে পারছিলো না।
'আরে তুমি এখনো খেয়ে নাও নি ?' ফ্ল্যাটে ঢুকে সৈকতকে চুপচাপ বসে থাকতে দেখে দেবশ্রী জিজ্ঞাসা করলো। ঝিরিঝিরি বৃষ্টির মধ্যে আসতে গিয়ে অল্প ভিজে যাওয়া
চুলটা ঝাড়ছিলো সে। উত্তরে সৈকত সত্যি কথাই বললো, 'একা একা খেতে ইচ্ছা করছিলো না, তাই ভাবলাম তোমার আসার জন্য অপেক্ষা করি।' কিছুটা বিরক্ত হয়েই
দেবশ্রী বললো, 'উফ, আচ্ছা গাড়োল তো তুমি - তোমাকে বললাম না আমি খেয়ে নিতে ?' তারপর সৈকতকে ভালো করে লক্ষ্য করে প্রশ্ন করলো, 'কখন ফিরেছো তুমি ?'
সৈকত বললো, 'এই তো, মিনিট কুড়ি হলো। ওয়েদার ভালো নয় বলে আজ তাড়াতাড়ি চলে আসবো ভাবলাম। কিন্তু ড্রাইভারটা কোথায় গিয়ে বসে তাস খেলছিল কে
জানে, ফোন করে করে ছ-সাতবারের মাথায় তবে ওকে পাই। নাহলে আরো আগেই আসতে পারতাম। ... তা তোমরা ঘুরলে ? কোথায় গিয়েছিলে অমিতজির সাথে ?'
সৈকতের প্রশ্নের জবাব না দিয়ে দেবশ্রী বৃষ্টিতে ভেজা চুড়িদারের জামাটা উপরে তুলে খুলতে খুলতে বললো, 'মিনিট কুড়ি আগে তুমি এসেছো মানে, আমি তখন মেইন
গেটের কাছেই ছিলাম তাহলে - অমিতজির গাড়িতে। অমিতজি আমাকে ছেড়ে দিতে এসেছিলেন। আমরা দরকারি কথা বলছিলাম।' 'আচ্ছা', বললো সৈকত। তারপর
একটু ভেবে নিয়ে বললো, 'বুঝতে পেরেছি, নীল অডি গাড়ি, তাই না ?' 'হ্যাঁ' - সংক্ষেপে বললো দেবশ্রী। সৈকত আরও বলতে লাগলো, 'আমি তখন ঢোকার সময়
দেখলাম একটা গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে গেটের কাছে - দামি গাড়ি - অতো আর খেয়াল করিনি কার গাড়ি। তা... তোমরা... কী নিয়ে আলোচনা করছিলে গাড়িতে এতক্ষণ ?'
দেবশ্রী জামার হাতাগুলো গা থেকে খুলতে খুলতে বললো, 'তোমাকে সব কিছু বলতে হবে ? আমরা যা নিয়েই আলোচনা করি না কেন, ওনার কোলে ঠ্যাং ছড়িয়ে বসে
তো ছিলাম না যে তোমাকে সব কৈফিয়ত দিতে হবে।' সৈকত শশব্যস্ত হয়ে উঠে বললো, 'আহাহা আমি তাই বলেছি নাকি। তোমরা নিশ্চয়ই কিছু দরকারি আলোচনাই
করছিলে, আমি জানি।' তারপর একটু থেমে আবার জিজ্ঞাসা করলো, 'আর বিকেলে কোথায় গিয়েছিলে তোমরা ?' 'পরে বলছি' বলে দেবশ্রী চুড়িদারটা নিয়ে সোফার এক
ধারে ফেলে দিয়ে ব্রা-লেগিংস পরিহিত অবস্থায় ঘরে ঢুকে গেলো পরিষ্কার একটা টাওয়েল নিয়ে আসতে। সেই সময় তার বুকের দিকে এক ঝলক দেখতে পেলো সৈকত।
ব্রা-এর আড়ালে কেমন যেন লাল লাল দাগ। চিন্তিত হলো সে।
টাওয়েলটা নিয়ে এসে দেবশ্রী ডাইনিংয়ের লাগোয়া বাথরুমে ঢুকতেই যাবে, দেখতে পেলো সৈকত উঠে এসেছে সোফা থেকে। আর তার বুকের দিকে তাকিয়ে দেখছে
একটু চোখ কুঁচকে। মানুষটাকে দেখে একটু মায়াই হলো দেবশ্রীর। নীচে সে যখন অন্য পুরুষের গাড়িতে পরকীয়ায় মত্ত - তখন এই লোকটা, তার স্বামী, তার জন্য এখানে
হা-পিত্যেশ করে বসেছিলো। আহা রে! দেবশ্রী ঘাড় কাত করে প্রশ্নচোখে সৈকতের দিকে তাকালো। সৈকত তার বুকের দিকে আঙুল দেখিয়ে বললো, 'এই লাল লাল
দাগগুলো কী হয়েছে ?' দেবশ্রী মুখ নীচু করে দেখলো গাড়িতে চুড়িদারের তলায় তার ব্রা-টা টানাটানি করে বুক থেকে অনেকটা সরিয়েই দিয়েছেন অমিতজি। কয়েকদিন
আগের সেই কামড়ের জায়গাগুলো তার ডবকা ডবকা স্তনের উপর ভালোই দেখা যাচ্ছে। ফোলাগুলো কমে গেছে, কিন্তু জায়গায় জায়গায় এখনো লাল-লাল আভা
রয়েছে। আজ আবার নতুন করে টেপাটেপির ফলে রক্ত সঞ্চালন বেড়ে গিয়ে দাগগুলো স্পষ্ট ফুটে উঠেছে তার ফর্সা স্তনের মাংসে। হাত দিয়ে সে ব্রা-টা একটু ঠিক করে
নিলো। তারপর সৈকতকে বললো, 'ও কিছু না - কামড়ের দাগ। মিলিয়ে যাবে।' সৈকত যারপরনাই বিস্মিত হয়ে বললো, 'সে কি, কীসে কামড়ালো ? বিছে-টিছে নয়তো
?' দেবশ্রী সৈকতের দিকে পুরো ঘুরে বাঁকা একটা হাসি দিয়ে তার চোখে দুটো চোখ রেখে বললো, 'না।' সৈকত বিস্ময় ও উৎকণ্ঠায় হাত বাড়িয়ে দেখতে গেলো দেবশ্রীর
বুকের কাছে। বললো, 'দেখি একবার কীরকম কামড়- ।' কিন্তু দেবশ্রী ঝটিতে সরিয়ে দিলো তার হাত। বললো, 'তোমার দেখার দরকার নেই। বলছি তো কামড়ের দাগ,
মিলিয়ে যাবে।' সৈকতের উৎকণ্ঠা বোধহয় গেলো না। সে জানতে চাইলো, 'মিলিয়ে যাবে - কিন্তু কামড়ালোটা কীসে ?' দেবশ্রী মুচকি হেসে জবাব দিলো এবার, 'শুনতে
চাও কার কামড় ?' সৈকত প্রশ্নচোখে তাও তাকিয়ে আছে দেখে দেবশ্রী কথা সমাপ্ত করলো, 'অমিতজি কামড়েছেন। কামড়ে কামড়ে খেয়েছেন। তারই দাগ।' সৈকত
অবিশ্বাসের চোখে তার স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে থাকলো হাঁ করে। দেবশ্রী তার স্বামীর সেই হতচকিত মুখের দিকে তাকিয়ে কী-যেন এক গোপন সুখের স্বাদ নিচ্ছিলো
দেহে-মনে। প্রাথমিক বিস্ময়টা কাটিয়ে উঠে সৈকত বললো, 'অমিতজি কামড়েছেন ? এরকম রোগ আছে নাকি ওনার ? কী বিচ্ছিরি স্বভাব, সত্যি! কবে হয়েছে এটা,
আজকে ?' দেবশ্রী সেসব কথার কোনো উত্তর না দিয়ে বললো, 'উনি ভাবছিলেন আমার বুকে দুধ আছে। পুরো পাগল একটা। তুমি একটু বারণ করে দিও তো ওনাকে
দেখা হলে, যেন না কামড়াতে আসেন আমাকে।' সৈকত চুপ করে রইলো। 'কী ?' দেবশ্রী আবার রসিয়ে রসিয়ে বললো, 'বারণ করে দেবে তো ওনাকে দেখা হলে ?'
সৈকত ডাইনিং টেবিলের দিকে এগিয়ে গিয়ে বললো, 'না, ওসব বলতে গেলে উনি আবার ক্ষেপে যেতে পারেন। রেগে গেলে হাত-পা চলতে থাকে ওনার। তুমি বরং ওনার
কাছে বেশি যেও না, বুঝলে ? একটু দূরত্ব রাখো।' সে একটা চেয়ারে গিয়ে বসলো। দেবশ্রীর খুব মজা লাগছিলো সৈকতের এরকম ব্যবহারে। বাথরুমের দরজায় দাঁড়িয়েই
সে বললো, 'তাহলে তোমার বউকে উনি কামড়ে খাবেন, আর মার খাওয়ার ভয়ে তুমি কিছু বলবে না ?' সৈকত মাথা তুলে দেবশ্রীর দিকে তাকিয়ে বললো, 'বলবো তো
বটেই - দেখা হলে বুঝিয়ে বলবো যাতে একটু আস্তে করেন এসব। এইভাবে কেউ কামড়ে ধরে ? লাল লাল দাগ হয়ে গেছে একদম। বুঝিয়ে বলবো।' দেবশ্রী একটু যেন
করুনার সুরে বললো, 'না গো, আমি মজা করছিলাম। সত্যি সত্যি যেন তুমি কিছু বলতে যেও না ওনাকে - তোমার হাত ভেঙে রেখে দেবেন। মানে একটাই তো হাত
ভালো আছে তোমার, কিছু বলতে গেলে সেটাও ভেঙে দেবেন উনি। তার চেয়ে খেলে নাহয় খাবেন আমাকে।' বলে সে বাথরুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিলো। চেয়ারে
বসে সৈকত নিজের ডানহাতটা তুলে ভালো করে দেখলো একবার - সত্যি এই একটা হাতই এখনো ঠিক আছে, বাঁহাতটা দিন-দিন কমজোরি হয়ে যাচ্ছে, অসাড় মতো।
আর অমিতজির মতো লোক তার এই শারীরিক দুর্বলতার সুযোগে -।
শুটিং দেখতে যাবার কথাটা দেবশ্রী ডিনার টেবিলে বসে পাড়লো। সৈকতকে সঙ্গ দিতে তার সাথে এমনিই বসেছে সে। বাইরের ওয়েদারটা আজ ভীষণ ভালো। গা ধুয়ে
এসে দারুন আরাম হচ্ছিলো তার। আজকের শুটিং দেখার অভিজ্ঞতা কিছুটা রেখে-ঢেকে সে সৈকতকে শোনালো। সৈকত খেতে খেতে অবাক হয়ে বললো, 'অমিতজি
সিনেমাও প্রডিউস করেন নাকি ?' দেবশ্রী মাথা নেড়ে বললো, 'না ঠিক সিনেমা নয়। ওরকম শুটিং নয়। ভোজপুরি শুনেছ তুমি ? ভোজপুরিতে কী যেন বললো, আইটেম
ড্যান্স টাইপের। ... হ্যাঁ, অর্কেষ্ট্রা - অর্কেষ্ট্রা ড্যান্স বলে এগুলোকে। মানে গান চলবে, আর গানের সাথে ড্যান্স।' সৈকত বললো, 'হ্যাঁ, ভোজপুরি শুনেছি আমি। এখন তো
এদিকেও বাজছে ওসব, বিশ্বকর্মা পুজোয়, গণেশ পুজোয় - ভোজপুরি গান চালায় অনেক জায়গায়। ভালো না ওগুলো।' 'কী ভালো না ?' দেবশ্রী জিজ্ঞাসা করলো।
সৈকত বললো, 'ওগুলো খুব বাজে গান। লারেলাপ্পা টাইপের। শরীর সর্বস্ব।' দেবশ্রী বুঝলো যে তার দেখার সাথে সৈকতের বর্ণনার মিল আছে। তাও সৈকত বোধহয় গান
শুধু শুনেছে, দেখেনি কোনো ভিডিও। নাহলে আরো বাজে বলতো। অবশ্য দেবশ্রী নিজেও কখনো দেখেনি। কিন্তু আজকের শুটিং দেখেই সে বুঝে গেছে যে ওই ভিডিও
কেমন হতে পারে। ব্যাপারটার মধ্যে যে একটা রগরগে যৌনতা আছে, সেটা বলাই বাহুল্য। কিন্তু সেই যৌনতা আজই দেবশ্রীর দেহপল্লবীতে ভীষণ আগুন ধরিয়ে
দিয়েছিলো। পুরুষের লালসা-ভরা চোখের সামনে স্বল্প-বসনে নাচার ব্যাপারটা ভীষণ অ্যাডভেঞ্চারাস। কজন মেয়ে পারে ? সৈকত আবার যোগ করলো, 'এইসব ভোজপুরি
গান উঠতি বয়সের ছেলেদের মাথাগুলো খাচ্ছে। কী সব লিরিকস - প্রত্যেক লাইনে অশ্লীল ইঙ্গিত - ভীষণ চটুল সব গান।' দেবশ্রী প্রতিবাদের সুরে বললো, 'চটুল হবে না
তো কি এই বয়সে লোকে ভজন শুনবে ? নাকি কীর্তন করবে ?' সৈকত নিজেকে ডিফেন্ড করলো, 'আমি তা বলছি না। হিন্দীতে ভালো রোমান্টিক গানও তো হয়। কিন্তু
এগুলো বড্ডো উগ্র, বাজে কালচার। ভোজপুরি হলো বিহারীদের কালচার। এখন আমাদের এখানেও ঢুকছে এসব।' দেবশ্রী বিরক্তি দেখিয়ে বললো, 'কিচ্ছু বাজে না।
আমার তো বেশ ভালোই লেগেছে। তুমি আসলে বুড়ো হয়ে গেছো। তোমার ওই বিচি একটা শিশিতে ভরে তুলে রেখে দাও। বুঝলে ?' সৈকত এই কথার কোনো প্রতিবাদ
জানালো না। বললো, 'হতে পারে আমি বুড়ো হচ্ছি। কিন্তু তুমি যাই বলো আর তাই বলো, এইসব গান আমাদের সংস্কৃতিকে কিন্তু নষ্ট করে দিচ্ছে।' দেবশ্রী অবাক
হচ্ছিলো। সংস্কৃতির কথায় নয়, সৈকতকে এরকম ঠেস দেয়া কথাতেও নিস্পৃহ থাকতে দেখেই অবাক হলো সে - সৈকতের কি মান-সম্মানেও লাগে না ? সে আবার মুখ
ঝামটা দিয়ে বললো, 'সংস্কৃতি ? সংস্কৃতি তোমার ওই ওইটার সাথে বেঁধে ঝুলিয়ে রেখে দাও, ড্যাং ড্যাং করে ঝুলবে। নিজের তো কিচ্ছু করার মুরোদ নেই, আবার
অন্যকে খারাপ বলো কোন সাহসে ?' সৈকত একটু অপমানিত বোধ করলেও কোনো তর্কে না গিয়ে বরং প্রসঙ্গ পাল্টে নিলো, 'আচ্ছা, সে যাইহোক, শুটিং দেখতে
গিয়েছিলে কোথায় ? কীসে গেলে ?' 'কীসে আবার, অমিতজির গাড়িতেই তো গেলাম।' সংক্ষেপে উত্তর দিলো দেবশ্রী। সৈকত ডিনার করতে করতে বিস্তারিত জানতে
চাইলো, 'তারপর ? কেমন দেখলে শুটিং ?' দেবশ্রী একটু থেমে থেকে বলতে শুরু করলো, 'নিউ টাউনের দিকে জায়গাটা, বেদিক ভিলেজ আছে জানো তো নিশ্চয়ই,
সেইটা পার হয়ে আরো কিছুটা এগিয়ে গিয়ে। পাঁচিলঘেরা একটা বিশাল ষ্টুডিও। অমিতজি আমাকে নিয়ে ড্রাইভ করে গেলেন, খুব ভালো লাগছিলো। আর জানো,
ষ্টুডিওটা কী দারুন করে সাজানো, পুরো ঠিক সিনেমায় যেমন দ্যাখো সেইরকম ছোট ছোট বাহারি গাছ, লন করা, আর ভীষণ সুন্দর।' সৈকত কী ভেবে বললো,
'অমিতজি হঠাৎ তোমাকে ওখানে নিয়ে গেলেন কেন ?' দেবশ্রী বললো, 'তা জানি না। ওনার কী দরকার ছিল। তাই উনি যাচ্ছিলেন, আর আমাকে এমনিই নিয়ে
গিয়েছিলেন। অবশ্য শুটিংয়ের ব্যাপারে আমার আগ্রহ দেখে উনি বলেছেন আমি চাইলেই আমাকে একটা চান্স উনি দিতে পারেন।' সৈকত হাত নেড়ে বললো, 'না না,
ওসবের দরকার নেই। ওসব লাইন ভালো না। তুমি একদম এসবের মধ্যে জড়িও না কিন্তু।' দেবশ্রী অবাক হবার ভাণ করে করে বললো, 'সে কি - এরকম সুযোগ জীবনে
একবারই আসে। আর তুমি আমাকে বারণ করছো ? আমি তো ভাবছি হ্যাঁ বলে দিই। আমার খুব ইচ্ছে ফিল্মে নামার।' সৈকত মাথা নেড়ে বললো, 'আমি বলছি তো
তোমাকে এসব থেকে দূরে থাকতে - এইসব গ্ল্যামারের জগৎ বাইরে থেকেই দেখতে ওরকম সুন্দর লাগে। কিন্তু ভিতরের দুনিয়াটা সম্পূর্ণ আলাদা। তুমি একদম এইসব
লোভে পা দিও না।' 'তাতে কী - আমি তো একা কিছু করতে যাচ্ছি না, অমিতজি আছেন বলেই আমি নিশ্চিন্ত। অমিতজির অনুরোধ আমি -।'
বলতে বলতেই দেবশ্রীর মনে পড়লো অমিতজির আসবার কথাটা। সে আগের প্রসঙ্গ চাপা দিয়ে সৈকতকে বললো, 'শোনো, ভালো কথা - আগের দিনের হুইস্কিটা তো
মনে হয় শেষ হয়ে গেছে, তুমি আরো কিছু ড্রিঙ্কস ভালো দেখে এনে রেখো তো কালকে। উনি এলেই তো লাগবে।' সৈকত প্লেট থেকে মুখ তুলে বললো, 'আবার আসবেন
নাকি অমিতজি ? কবে আসবেন বলেছেন ?' দেবশ্রী রাগ-রাগ ভাব দেখিয়ে বললো, 'আবার মানে ? নিজের বাড়ি মনে করে উনি আসতেই পারেন, যখন খুশি আসতে
পারেন। এই তো পরশু দিনই হয়তো আসবেন।' সৈকত আরো অবাক হয়ে বললো, 'পরশুই আবার আসবেন ?' দেবশ্রী এবার বাস্তবিকই রেগে গেলো, 'সৈকত, উনি
আমার মালিক হন, বুঝলে ? ভুলে যেও না সে কথা। উনি যেকোনো দিন যেকোনো সময় যখন ইচ্ছা আসতে পারেন। উনি যে আমার জন্য এখানে আসছেন, সেটাই
জানবে আমাদের পরম সৌভাগ্য। নাহলে উনি চাইলে উনি যেখানে আমাকে যেতে বলবেন, সেখানেই আমাকে সেজেগুজে তৈরী হয়ে যেতে হবে। উনি মালিক হন
আমার। ওনার ড্রিঙ্কস রেডি রাখবে, এটাই তোমাকে শুধু বলেছি। আর না পারলে বোলো, আমি ড্রাইভারকে দিয়ে আনিয়ে রাখবো।' সৈকত সমঝোতার সুরে বললো,
'আমি কি সেই কথা বলেছি ? হুইস্কি কি বিয়ার কিছু একটা আমি এনে রাখবো। তুমিও সত্যি আজকাল অল্পেতেই বড্ডো রেগে যাচ্ছো দেখছি।' দেবশ্রী ডাইনিং টেবিল
ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে গলা উঁচুতে তুললো, 'কী - আমি রেগে যাচ্ছি ? তুমি যে হিংসা করছো, সেটা আমি বুঝি না ভেবেছো ? তোমার নিজের বিছানায় কোনো শক্তি নেই,
তুমি একটা শক্তিশালী পুরুষ মানুষকে দেখে হিংসা করছো, তার সম্বন্ধে আমি কিছু বললেই হিংসা হচ্ছে তোমার - আর তুমি বলছো আমি নাকি রেগে যাচ্ছি ?' সৈকত
ম্লানমুখে অপরাধ স্বীকার করার ভঙ্গিতে বললো, 'ঠিক আছে বাবা - আমি আর কিছুই বলবো না। হয়েছে ? আমার চুপ থাকাই বেটার।' দেবশ্রী দেখলো এ-ই সুযোগ।
সৈকত নিজেই নিজের ফাঁদ পেতেছে। সঙ্গে সঙ্গে সুযোগটার সম্পূর্ণ সদ্ব্যবহার করলো দেবশ্রী। সে নিয়ম করে দিলো, 'হ্যাঁ, অমিতজির ব্যাপারে কিছু বলতে আসবে না
তুমি কখনো। উনি আমার মালিক। উনি যা চাইবেন, যেমন চাইবেন, তেমনটাই হবে। আর উনি চাইলে আমাকে ফিল্মের হিরোইন বানিয়েও দিতে পারেন। তুমি কিন্তু
নিজেই বলেছো যে তুমি কিচ্ছু বলতে আসবে না। মনে থাকে যেন।' সৈকত দেবশ্রীর দিকে তাকিয়ে বললো, 'এখানে ওখানে তুমি শুটিং করতে গেলে আমাকেও তো যেতে
হবে সাথে সাথে, তোমাকে এভাবে অজানা জায়গায় ছেড়ে দিতে পারি নাকি ?' তার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে দেবশ্রী বুঝলো যে সে জিতে গেছে। গলা শান্ত করে সে
বললো, 'সে তুমি যেতেই পারো। এখন খাওয়া হলে হাত ধুয়ে এসো, তোমার ওষুধগুলো আমি বার করে রাখছি।'
বেডরুমের দিকে অপসৃয়মান দেবশ্রীকে দেখতে দেখতে সৈকত ভাবতে লাগলো - তার এই বউ যেন ঠিক আর তার একার নেই, অন্য কেউ রীতিমতো ভাগ বসিয়েছে তার
অক্ষমতার সুযোগে। ভাবনাটা মনের মধ্যে ঘুরতে থাকলেও সৈকত মানসচক্ষে কোনো সমাধান দেখতে পেলো না। দেবশ্রীর কথা শুনে মনে হচ্ছিলো সে মনস্থির করেই
নিয়েছে সিনেমায়-শুটিংয়ে নামার ব্যাপারে। অবুঝ মেয়ে, জানে না বাইরের দুনিয়াটা কেমন। সৈকত একরকম নিশ্চিত যে সে লাখ বারণ করলেও দেবশ্রী এখন অমিতজির
কথাতেই চালিত হবে। তার নিজের ভূমিকা সেকেন্ডারি মাত্র। অমিতজির প্রবল পরাক্রমের সামনে সৈকত নিজেকে অসহায় বোধ করছিলো। তার ইচ্ছা করছিলো
বিছানায় গিয়ে এখন শুয়ে পড়তে।
মাঝের একটা দিন থোড়-বড়ি-খাড়া করে কাটলো। দেবশ্রী মেসেজ পাঠিয়েছিল অমিতজিকে দু-একটা, সেগুলোর উত্তরও এসেছে কখনো-কখনো। কিন্তু দেবশ্রী বুঝেছে
যে এই মানুষটাকে এইভাবে বাঁধা সম্ভব নয়। চোখের আড়ালে গেলেই তিনি অন্য মানুষ। তার জন্য তখন অপেক্ষা করে যাওয়া ছাড়া আর উপায় নেই। অফিসের কাজে
আর ঘরদোর গোছানোর কাজে মনোনিবেশ করে সে একটা দিন কাটিয়ে দিলো। তারপর এলো অমিতজির আসবার দিন। দেবশ্রী যথারীতি অফিস থেকে ছুটি নিয়ে নিলো
পরের দিন। সকাল থেকেই খুব খুশি সে। মনে মনে একটা প্ল্যান ছিল তার। তাই সৈকত অফিসে বেরিয়ে যাবার পর তাদের ফ্ল্যাটের দ্বিতীয় যে বেডরুমটা আছে, সেটাকে
পরিষ্কার করে রাখলো সে। এই ঘরটা অপেক্ষাকৃত একটু ছোট। এটার সাথে লাগোয়া বাথরুম আছে একটা। বাথরুমটা খুব কম ব্যবহার করা হয় বলে বেশ নতুন-নতুন
আছে। এই ঘরটা সাধারণত বন্ধই থাকে। তাদের তো একটা বেডরুম আর কিচেন-ডাইনিং নিয়েই কেটে যায়। এই রুমটা গেস্টরুম হিসাবেই ব্যবহার করা হয়। সৈকতের
বাবা-মা, মানে দেবশ্রীর শশুর-শাশুড়ি বর্ধমান থেকে এলে এই ঘরে থাকেন। এমনিতে তাদের অন্য বিশেষ বন্ধুস্থানীয় কেউ নেই। আত্মীয়-স্বজন কলকাতায় নামমাত্র, আর
তারা কখনোই রাত্রিবাস করতে আসে না। ঘরটা তাই পড়েই থাকে। আর শীতের লেপ-কম্বল-সোয়েটার ইত্যাদি এই ঘরের খাটের তলায় চাপা দিয়ে রাখা থাকে। বাড়িতে
কোনো লোকজন এলে দেবশ্রী কখনো কখনো এই ঘরে জামাকাপড় ছাড়বার জন্য ঢোকে। তা নাহলে এটাতে তাদের কমই আসা হয়। আজ এই ঘরটা ভালো করে গুছিয়ে
রাখলো দেবশ্রী। ঘরের বিছানার উপর নতুন একটা চাদর পেতে দিলো। বালিশের খোলগুলো পাল্টে দিলো। ঘর থেকে হাবিজাবি জিনিস সরিয়ে ঘরটা সুন্দর করে তুললো।
রুম ফ্রেশনার ছড়িয়ে দিলো। একটু যদি ফুল-টুল দিয়ে সাজিয়ে দেওয়া যেত! ইশ, নিজের ভাবনাটা নিজের কাছেই কী ভীষণ অসভ্য লাগলো দেবশ্রীর। আজ কি এই ঘরে
ফুলশয্যা হবে নাকি তার ? দ্বিতীয় ফুলশয্যা ? কী যা-তা ভাবছে সে। কিন্তু সেই আশাতেই তো সে গুছিয়ে সুন্দর করে রাখছে ঘরটা। অবশ্য অমিতজি যদি রাতটা এখানে
থেকে যেতে রাজি হন তো। হলে ফুলশয্যার মতোই তো সবকিছু হবে। অথবা তার চেয়েও হয়তো কিছু বেশি। সেরকম যদি সত্যি হয়, তাহলে এটা দ্বিতীয় ফুলশয্যাই তো
হলো তার। শুধু ফুল ছাড়া আর বাকি সব থাকবে। ভাবতে ভাবতেই শিহরিত হচ্ছিলো দেবশ্রী।
দিয়ে মনের সুখে পাম্প করে যাচ্ছেন অমিতজি, তবে একটু ধীরে ধীরে। সৈকত ওপাশ থেকে বললো, 'কোথায় তুমি... এখনো এলে না, তাই ফোন করলাম। তোমার কি
অনেক দেরি হবে ফিরতে ?' 'না', কোনোরকমে বললো দেবশ্রী, 'আআমি এসে গেছি, আব..আআবাসনের নীচেই আছি... অমিতজির.. গাআআড়িতে, এ..একটু পরে
আআআসছি।' সৈকত একটু অধৈর্য্য হয়ে বললো, 'তাড়াতাড়ি এসো প্লিজ, একসাথে ডিনার করবো বলে ওয়েট করছি। আবাসনে চলেই এসেছো তো আবার পরে
আসছি কেন বলছো ?' অমিতজির ঠাপ নিজের মেয়েলি গর্তে নিতে নিতে চোখ বুজে গেলো দেবশ্রীর। সৈকতকে ফোনে আধো-আধো করে বললো, 'তু..তুমি খেয়েএএএ
নাওওও... আমার ডিনাআআর হ..হয়ে গেএএছে.... অঅমিতজি আঃ ... অমিতজি এখখখন আমাকে করছেন... আআআআ মা..নে.. আআমার সাথে আআলোচনা
কওওওরছেন - উউউউউফ - মাআআআ - উনি.. আমাকে.. ক..করে নিইইই..লে আআআ-সছি, রাআআ-খো তু..মি..।' সৈকত কিছু বুঝলো না ব্যাপারটা। দেবশ্রী কল
কেটে দিয়ে ফোনটা ছুড়ে ফেলে দিলো সীটের উপর। তারপর অমিতজিকে আবার জড়িয়ে ধরলো দুহাতে। অমিতজি আবার তীব্র গতিবেগে তার ক্ষুধার্ত কামদণ্ড গিঁথে
গিঁথে দিতে লাগলেন দেবশ্রীর রসসিক্ত মধুকোষে। দেবশ্রী অমিতজির মাথাটা নিজের বুকের সাথে জোরে চেপে ধরলো। কিন্তু সেইসময় তার হাতের কনুই লেগে গেলো
গাড়ির স্টিয়ারিংয়ের একদিকে - হর্নটা তীব্র শব্দে বেজে উঠলো দু-তিন সেকেন্ড। সেই শব্দে সচকিত হয়ে আবাসনের সিকিউরিটি অফিস থেকে কাউকে বেরিয়ে আসতে
দেখলো ওরা। কিছুক্ষনের জন্য এই কামলীলা থেকে নিরস্ত হতে হলো তাদের, নাহলে গাড়িটা অসম্ভব দুলছিলো।
সিকিউরিটি গার্ডটা গাড়ির সামনে এগিয়ে এসে এদিক ওদিক ভালো করে দেখলো। গাড়ির কাঁচ পুরো তোলা, কালো ফিল্ম লাগানো - তাই ভালো করে কিছু মালুম
করতে পারলো না। কিন্তু গাড়িতে যে লোক আছে সেটা বোধহয় বুঝলো। গাড়ির ইঞ্জিন চালু আছে। দেবশ্রী ওই অর্ধনগ্ন অবস্থায় অমিতজির কোলে বসে ছিলো। শুধু
মাথাটা অমিতজির ঘাড়ের কাছে গুঁজে মুখটা লুকিয়ে রাখলো। অমিতজির কোনো ভ্রূক্ষেপ নেই। ঠাপানো স্থগিত রেখেও তিনি দুহাতে দেবশ্রীর ভারী পাছা লেগিংসের উপর
দিয়ে সমানে দলাই-মলাই করতে লাগলেন। বাইরে তখনো ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি। কোনো সন্দেহজনক কিছু না দেখতে পেয়ে গার্ডটা আবার ফিরে গেলো তাদের রুমে।
অমিতজি আবার তলঠাপ দেওয়া আরম্ভ করলেন। আবার দুলতে লাগলো গাড়ি।
আরো মিনিট পাঁচেক ধরে ঠাপানোর পরে তিনি একটু থামলেন। গাড়ির ওই ছোট্ট সংকীর্ণ পরিবেশে দুজনের কারুরই তৃপ্তি হচ্ছিলো না ঠিক করে। বরং এভাবে কিছু ঠাপ
দিয়ে দেবশ্রীর শরীরের ক্ষিদে আরো দাউ-দাউ আগুনের মতো জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন অমিতজি। বুভুক্ষু বাঘিনীর মতো হয়ে উঠেছে এখন দেবশ্রী। তার দেহের শিরায় শিরায়
পুরুষ মানুষ গিলে খাবার দাবানল বইছে। অমিতজির ঠোঁটের কোণে ক্রূর হাসি খেলে গেলো একটা। এটাই চেয়েছিলেন তিনি। তার মাথায় ঘুরছিলো যে এই মেয়ের
শরীরটা দিয়ে অনেক কাজ হাসিল করতে হবে তাকে। তাই একে আপাতত অভুক্ত রাখা দরকার। শেষবারের মতো দেবশ্রীর ঠোঁটের মধু একবার ভালো করে জিভ দিয়ে
চেটে নিয়ে তিনি বললেন, 'পরশু আমি ফ্রি আছি। ওইদিন দেখা হবে।' দেবশ্রী অমিতজির চোখের দিকে একবার তাকিয়ে নিয়ে তার উপোসী যোনিদ্বার দিয়ে অমিতজির
লিঙ্গের মাথায় ঘষতে লাগলো। বললো, 'এখন একবার প্লিজ চলুন না আমাদের ফ্ল্যাটে, আমি আর পারছি না -।' অমিতজি তার শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা লিঙ্গটা দেবশ্রীর
অভ্যন্তর থেকে টেনে বের করে নিয়ে ডানদিকের দরজাটা একটু খুলে দিলেন। দেবশ্রী চাইছিলো না নেমে যেতে, তার তো স্থান-কালেরও কোনো হুঁশ ছিল না। কিন্তু
অমিতজির নির্দেশ অমান্য করার সাধ্যও নেই তার। কিছুটা নিরাশ হয়ে শেষে অমিতজির ঠোঁটের উপর গভীর একটা চুমু দিয়ে সে বললো, 'তাহলে পরশুদিন ডিনারের
নিমন্ত্রণ রইলো কিন্তু। প্লিজ আসবেন। আমি দু-পা ছড়িয়ে বসে থাকবো আপনার অপেক্ষায়। প্লিজ - আসবেন কিন্তু।' গাড়ি থেকে নেমে যাবার জন্য উঠতে গিয়েও
একবার উঁচু হয়ে নিজের দুটো স্তন অমিতজির মুখের সাথে ঠেকিয়ে ধরলো দেবশ্রী। বললো, 'আমার এই দুটো দুধের দিব্যি রইলো - আসবেন কিন্তু পরশুদিন।' বলেই
সীটের উপর থেকে মোবাইলটা কুড়িয়ে নিয়ে গাড়ি থেকে নেমে দাঁড়ালো সে। তার ছেঁড়া লেগিংসটা চুড়িদারের তলায় ঢেকে নিলো। আলুথালু হয়ে যাওয়া পোশাক আর
ওড়না ঠিক করে নিলো। সিকিউরিটি গার্ডগুলো হয়তো তাকে দেখতে পাবে এখন আবাসনে ঢোকার মুখে। তবে তাতে কিছু যায় আসে না। গাড়িতে কী কী হয়েছে তা
তো আর কেউ জানছে না। অমিতজি দেবশ্রীকে গুড নাইট জানিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে বেরিয়ে গেলেন।
চলন্ত গাড়ির উদ্দেশ্যে একবার হাত নেড়ে দেবশ্রী আবাসনের রাস্তা ধরলো... এই শীতল হাওয়া আর বৃষ্টির জলও তার শরীরকে ঠান্ডা করতে পারছিলো না।
'আরে তুমি এখনো খেয়ে নাও নি ?' ফ্ল্যাটে ঢুকে সৈকতকে চুপচাপ বসে থাকতে দেখে দেবশ্রী জিজ্ঞাসা করলো। ঝিরিঝিরি বৃষ্টির মধ্যে আসতে গিয়ে অল্প ভিজে যাওয়া
চুলটা ঝাড়ছিলো সে। উত্তরে সৈকত সত্যি কথাই বললো, 'একা একা খেতে ইচ্ছা করছিলো না, তাই ভাবলাম তোমার আসার জন্য অপেক্ষা করি।' কিছুটা বিরক্ত হয়েই
দেবশ্রী বললো, 'উফ, আচ্ছা গাড়োল তো তুমি - তোমাকে বললাম না আমি খেয়ে নিতে ?' তারপর সৈকতকে ভালো করে লক্ষ্য করে প্রশ্ন করলো, 'কখন ফিরেছো তুমি ?'
সৈকত বললো, 'এই তো, মিনিট কুড়ি হলো। ওয়েদার ভালো নয় বলে আজ তাড়াতাড়ি চলে আসবো ভাবলাম। কিন্তু ড্রাইভারটা কোথায় গিয়ে বসে তাস খেলছিল কে
জানে, ফোন করে করে ছ-সাতবারের মাথায় তবে ওকে পাই। নাহলে আরো আগেই আসতে পারতাম। ... তা তোমরা ঘুরলে ? কোথায় গিয়েছিলে অমিতজির সাথে ?'
সৈকতের প্রশ্নের জবাব না দিয়ে দেবশ্রী বৃষ্টিতে ভেজা চুড়িদারের জামাটা উপরে তুলে খুলতে খুলতে বললো, 'মিনিট কুড়ি আগে তুমি এসেছো মানে, আমি তখন মেইন
গেটের কাছেই ছিলাম তাহলে - অমিতজির গাড়িতে। অমিতজি আমাকে ছেড়ে দিতে এসেছিলেন। আমরা দরকারি কথা বলছিলাম।' 'আচ্ছা', বললো সৈকত। তারপর
একটু ভেবে নিয়ে বললো, 'বুঝতে পেরেছি, নীল অডি গাড়ি, তাই না ?' 'হ্যাঁ' - সংক্ষেপে বললো দেবশ্রী। সৈকত আরও বলতে লাগলো, 'আমি তখন ঢোকার সময়
দেখলাম একটা গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে গেটের কাছে - দামি গাড়ি - অতো আর খেয়াল করিনি কার গাড়ি। তা... তোমরা... কী নিয়ে আলোচনা করছিলে গাড়িতে এতক্ষণ ?'
দেবশ্রী জামার হাতাগুলো গা থেকে খুলতে খুলতে বললো, 'তোমাকে সব কিছু বলতে হবে ? আমরা যা নিয়েই আলোচনা করি না কেন, ওনার কোলে ঠ্যাং ছড়িয়ে বসে
তো ছিলাম না যে তোমাকে সব কৈফিয়ত দিতে হবে।' সৈকত শশব্যস্ত হয়ে উঠে বললো, 'আহাহা আমি তাই বলেছি নাকি। তোমরা নিশ্চয়ই কিছু দরকারি আলোচনাই
করছিলে, আমি জানি।' তারপর একটু থেমে আবার জিজ্ঞাসা করলো, 'আর বিকেলে কোথায় গিয়েছিলে তোমরা ?' 'পরে বলছি' বলে দেবশ্রী চুড়িদারটা নিয়ে সোফার এক
ধারে ফেলে দিয়ে ব্রা-লেগিংস পরিহিত অবস্থায় ঘরে ঢুকে গেলো পরিষ্কার একটা টাওয়েল নিয়ে আসতে। সেই সময় তার বুকের দিকে এক ঝলক দেখতে পেলো সৈকত।
ব্রা-এর আড়ালে কেমন যেন লাল লাল দাগ। চিন্তিত হলো সে।
টাওয়েলটা নিয়ে এসে দেবশ্রী ডাইনিংয়ের লাগোয়া বাথরুমে ঢুকতেই যাবে, দেখতে পেলো সৈকত উঠে এসেছে সোফা থেকে। আর তার বুকের দিকে তাকিয়ে দেখছে
একটু চোখ কুঁচকে। মানুষটাকে দেখে একটু মায়াই হলো দেবশ্রীর। নীচে সে যখন অন্য পুরুষের গাড়িতে পরকীয়ায় মত্ত - তখন এই লোকটা, তার স্বামী, তার জন্য এখানে
হা-পিত্যেশ করে বসেছিলো। আহা রে! দেবশ্রী ঘাড় কাত করে প্রশ্নচোখে সৈকতের দিকে তাকালো। সৈকত তার বুকের দিকে আঙুল দেখিয়ে বললো, 'এই লাল লাল
দাগগুলো কী হয়েছে ?' দেবশ্রী মুখ নীচু করে দেখলো গাড়িতে চুড়িদারের তলায় তার ব্রা-টা টানাটানি করে বুক থেকে অনেকটা সরিয়েই দিয়েছেন অমিতজি। কয়েকদিন
আগের সেই কামড়ের জায়গাগুলো তার ডবকা ডবকা স্তনের উপর ভালোই দেখা যাচ্ছে। ফোলাগুলো কমে গেছে, কিন্তু জায়গায় জায়গায় এখনো লাল-লাল আভা
রয়েছে। আজ আবার নতুন করে টেপাটেপির ফলে রক্ত সঞ্চালন বেড়ে গিয়ে দাগগুলো স্পষ্ট ফুটে উঠেছে তার ফর্সা স্তনের মাংসে। হাত দিয়ে সে ব্রা-টা একটু ঠিক করে
নিলো। তারপর সৈকতকে বললো, 'ও কিছু না - কামড়ের দাগ। মিলিয়ে যাবে।' সৈকত যারপরনাই বিস্মিত হয়ে বললো, 'সে কি, কীসে কামড়ালো ? বিছে-টিছে নয়তো
?' দেবশ্রী সৈকতের দিকে পুরো ঘুরে বাঁকা একটা হাসি দিয়ে তার চোখে দুটো চোখ রেখে বললো, 'না।' সৈকত বিস্ময় ও উৎকণ্ঠায় হাত বাড়িয়ে দেখতে গেলো দেবশ্রীর
বুকের কাছে। বললো, 'দেখি একবার কীরকম কামড়- ।' কিন্তু দেবশ্রী ঝটিতে সরিয়ে দিলো তার হাত। বললো, 'তোমার দেখার দরকার নেই। বলছি তো কামড়ের দাগ,
মিলিয়ে যাবে।' সৈকতের উৎকণ্ঠা বোধহয় গেলো না। সে জানতে চাইলো, 'মিলিয়ে যাবে - কিন্তু কামড়ালোটা কীসে ?' দেবশ্রী মুচকি হেসে জবাব দিলো এবার, 'শুনতে
চাও কার কামড় ?' সৈকত প্রশ্নচোখে তাও তাকিয়ে আছে দেখে দেবশ্রী কথা সমাপ্ত করলো, 'অমিতজি কামড়েছেন। কামড়ে কামড়ে খেয়েছেন। তারই দাগ।' সৈকত
অবিশ্বাসের চোখে তার স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে থাকলো হাঁ করে। দেবশ্রী তার স্বামীর সেই হতচকিত মুখের দিকে তাকিয়ে কী-যেন এক গোপন সুখের স্বাদ নিচ্ছিলো
দেহে-মনে। প্রাথমিক বিস্ময়টা কাটিয়ে উঠে সৈকত বললো, 'অমিতজি কামড়েছেন ? এরকম রোগ আছে নাকি ওনার ? কী বিচ্ছিরি স্বভাব, সত্যি! কবে হয়েছে এটা,
আজকে ?' দেবশ্রী সেসব কথার কোনো উত্তর না দিয়ে বললো, 'উনি ভাবছিলেন আমার বুকে দুধ আছে। পুরো পাগল একটা। তুমি একটু বারণ করে দিও তো ওনাকে
দেখা হলে, যেন না কামড়াতে আসেন আমাকে।' সৈকত চুপ করে রইলো। 'কী ?' দেবশ্রী আবার রসিয়ে রসিয়ে বললো, 'বারণ করে দেবে তো ওনাকে দেখা হলে ?'
সৈকত ডাইনিং টেবিলের দিকে এগিয়ে গিয়ে বললো, 'না, ওসব বলতে গেলে উনি আবার ক্ষেপে যেতে পারেন। রেগে গেলে হাত-পা চলতে থাকে ওনার। তুমি বরং ওনার
কাছে বেশি যেও না, বুঝলে ? একটু দূরত্ব রাখো।' সে একটা চেয়ারে গিয়ে বসলো। দেবশ্রীর খুব মজা লাগছিলো সৈকতের এরকম ব্যবহারে। বাথরুমের দরজায় দাঁড়িয়েই
সে বললো, 'তাহলে তোমার বউকে উনি কামড়ে খাবেন, আর মার খাওয়ার ভয়ে তুমি কিছু বলবে না ?' সৈকত মাথা তুলে দেবশ্রীর দিকে তাকিয়ে বললো, 'বলবো তো
বটেই - দেখা হলে বুঝিয়ে বলবো যাতে একটু আস্তে করেন এসব। এইভাবে কেউ কামড়ে ধরে ? লাল লাল দাগ হয়ে গেছে একদম। বুঝিয়ে বলবো।' দেবশ্রী একটু যেন
করুনার সুরে বললো, 'না গো, আমি মজা করছিলাম। সত্যি সত্যি যেন তুমি কিছু বলতে যেও না ওনাকে - তোমার হাত ভেঙে রেখে দেবেন। মানে একটাই তো হাত
ভালো আছে তোমার, কিছু বলতে গেলে সেটাও ভেঙে দেবেন উনি। তার চেয়ে খেলে নাহয় খাবেন আমাকে।' বলে সে বাথরুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিলো। চেয়ারে
বসে সৈকত নিজের ডানহাতটা তুলে ভালো করে দেখলো একবার - সত্যি এই একটা হাতই এখনো ঠিক আছে, বাঁহাতটা দিন-দিন কমজোরি হয়ে যাচ্ছে, অসাড় মতো।
আর অমিতজির মতো লোক তার এই শারীরিক দুর্বলতার সুযোগে -।
শুটিং দেখতে যাবার কথাটা দেবশ্রী ডিনার টেবিলে বসে পাড়লো। সৈকতকে সঙ্গ দিতে তার সাথে এমনিই বসেছে সে। বাইরের ওয়েদারটা আজ ভীষণ ভালো। গা ধুয়ে
এসে দারুন আরাম হচ্ছিলো তার। আজকের শুটিং দেখার অভিজ্ঞতা কিছুটা রেখে-ঢেকে সে সৈকতকে শোনালো। সৈকত খেতে খেতে অবাক হয়ে বললো, 'অমিতজি
সিনেমাও প্রডিউস করেন নাকি ?' দেবশ্রী মাথা নেড়ে বললো, 'না ঠিক সিনেমা নয়। ওরকম শুটিং নয়। ভোজপুরি শুনেছ তুমি ? ভোজপুরিতে কী যেন বললো, আইটেম
ড্যান্স টাইপের। ... হ্যাঁ, অর্কেষ্ট্রা - অর্কেষ্ট্রা ড্যান্স বলে এগুলোকে। মানে গান চলবে, আর গানের সাথে ড্যান্স।' সৈকত বললো, 'হ্যাঁ, ভোজপুরি শুনেছি আমি। এখন তো
এদিকেও বাজছে ওসব, বিশ্বকর্মা পুজোয়, গণেশ পুজোয় - ভোজপুরি গান চালায় অনেক জায়গায়। ভালো না ওগুলো।' 'কী ভালো না ?' দেবশ্রী জিজ্ঞাসা করলো।
সৈকত বললো, 'ওগুলো খুব বাজে গান। লারেলাপ্পা টাইপের। শরীর সর্বস্ব।' দেবশ্রী বুঝলো যে তার দেখার সাথে সৈকতের বর্ণনার মিল আছে। তাও সৈকত বোধহয় গান
শুধু শুনেছে, দেখেনি কোনো ভিডিও। নাহলে আরো বাজে বলতো। অবশ্য দেবশ্রী নিজেও কখনো দেখেনি। কিন্তু আজকের শুটিং দেখেই সে বুঝে গেছে যে ওই ভিডিও
কেমন হতে পারে। ব্যাপারটার মধ্যে যে একটা রগরগে যৌনতা আছে, সেটা বলাই বাহুল্য। কিন্তু সেই যৌনতা আজই দেবশ্রীর দেহপল্লবীতে ভীষণ আগুন ধরিয়ে
দিয়েছিলো। পুরুষের লালসা-ভরা চোখের সামনে স্বল্প-বসনে নাচার ব্যাপারটা ভীষণ অ্যাডভেঞ্চারাস। কজন মেয়ে পারে ? সৈকত আবার যোগ করলো, 'এইসব ভোজপুরি
গান উঠতি বয়সের ছেলেদের মাথাগুলো খাচ্ছে। কী সব লিরিকস - প্রত্যেক লাইনে অশ্লীল ইঙ্গিত - ভীষণ চটুল সব গান।' দেবশ্রী প্রতিবাদের সুরে বললো, 'চটুল হবে না
তো কি এই বয়সে লোকে ভজন শুনবে ? নাকি কীর্তন করবে ?' সৈকত নিজেকে ডিফেন্ড করলো, 'আমি তা বলছি না। হিন্দীতে ভালো রোমান্টিক গানও তো হয়। কিন্তু
এগুলো বড্ডো উগ্র, বাজে কালচার। ভোজপুরি হলো বিহারীদের কালচার। এখন আমাদের এখানেও ঢুকছে এসব।' দেবশ্রী বিরক্তি দেখিয়ে বললো, 'কিচ্ছু বাজে না।
আমার তো বেশ ভালোই লেগেছে। তুমি আসলে বুড়ো হয়ে গেছো। তোমার ওই বিচি একটা শিশিতে ভরে তুলে রেখে দাও। বুঝলে ?' সৈকত এই কথার কোনো প্রতিবাদ
জানালো না। বললো, 'হতে পারে আমি বুড়ো হচ্ছি। কিন্তু তুমি যাই বলো আর তাই বলো, এইসব গান আমাদের সংস্কৃতিকে কিন্তু নষ্ট করে দিচ্ছে।' দেবশ্রী অবাক
হচ্ছিলো। সংস্কৃতির কথায় নয়, সৈকতকে এরকম ঠেস দেয়া কথাতেও নিস্পৃহ থাকতে দেখেই অবাক হলো সে - সৈকতের কি মান-সম্মানেও লাগে না ? সে আবার মুখ
ঝামটা দিয়ে বললো, 'সংস্কৃতি ? সংস্কৃতি তোমার ওই ওইটার সাথে বেঁধে ঝুলিয়ে রেখে দাও, ড্যাং ড্যাং করে ঝুলবে। নিজের তো কিচ্ছু করার মুরোদ নেই, আবার
অন্যকে খারাপ বলো কোন সাহসে ?' সৈকত একটু অপমানিত বোধ করলেও কোনো তর্কে না গিয়ে বরং প্রসঙ্গ পাল্টে নিলো, 'আচ্ছা, সে যাইহোক, শুটিং দেখতে
গিয়েছিলে কোথায় ? কীসে গেলে ?' 'কীসে আবার, অমিতজির গাড়িতেই তো গেলাম।' সংক্ষেপে উত্তর দিলো দেবশ্রী। সৈকত ডিনার করতে করতে বিস্তারিত জানতে
চাইলো, 'তারপর ? কেমন দেখলে শুটিং ?' দেবশ্রী একটু থেমে থেকে বলতে শুরু করলো, 'নিউ টাউনের দিকে জায়গাটা, বেদিক ভিলেজ আছে জানো তো নিশ্চয়ই,
সেইটা পার হয়ে আরো কিছুটা এগিয়ে গিয়ে। পাঁচিলঘেরা একটা বিশাল ষ্টুডিও। অমিতজি আমাকে নিয়ে ড্রাইভ করে গেলেন, খুব ভালো লাগছিলো। আর জানো,
ষ্টুডিওটা কী দারুন করে সাজানো, পুরো ঠিক সিনেমায় যেমন দ্যাখো সেইরকম ছোট ছোট বাহারি গাছ, লন করা, আর ভীষণ সুন্দর।' সৈকত কী ভেবে বললো,
'অমিতজি হঠাৎ তোমাকে ওখানে নিয়ে গেলেন কেন ?' দেবশ্রী বললো, 'তা জানি না। ওনার কী দরকার ছিল। তাই উনি যাচ্ছিলেন, আর আমাকে এমনিই নিয়ে
গিয়েছিলেন। অবশ্য শুটিংয়ের ব্যাপারে আমার আগ্রহ দেখে উনি বলেছেন আমি চাইলেই আমাকে একটা চান্স উনি দিতে পারেন।' সৈকত হাত নেড়ে বললো, 'না না,
ওসবের দরকার নেই। ওসব লাইন ভালো না। তুমি একদম এসবের মধ্যে জড়িও না কিন্তু।' দেবশ্রী অবাক হবার ভাণ করে করে বললো, 'সে কি - এরকম সুযোগ জীবনে
একবারই আসে। আর তুমি আমাকে বারণ করছো ? আমি তো ভাবছি হ্যাঁ বলে দিই। আমার খুব ইচ্ছে ফিল্মে নামার।' সৈকত মাথা নেড়ে বললো, 'আমি বলছি তো
তোমাকে এসব থেকে দূরে থাকতে - এইসব গ্ল্যামারের জগৎ বাইরে থেকেই দেখতে ওরকম সুন্দর লাগে। কিন্তু ভিতরের দুনিয়াটা সম্পূর্ণ আলাদা। তুমি একদম এইসব
লোভে পা দিও না।' 'তাতে কী - আমি তো একা কিছু করতে যাচ্ছি না, অমিতজি আছেন বলেই আমি নিশ্চিন্ত। অমিতজির অনুরোধ আমি -।'
বলতে বলতেই দেবশ্রীর মনে পড়লো অমিতজির আসবার কথাটা। সে আগের প্রসঙ্গ চাপা দিয়ে সৈকতকে বললো, 'শোনো, ভালো কথা - আগের দিনের হুইস্কিটা তো
মনে হয় শেষ হয়ে গেছে, তুমি আরো কিছু ড্রিঙ্কস ভালো দেখে এনে রেখো তো কালকে। উনি এলেই তো লাগবে।' সৈকত প্লেট থেকে মুখ তুলে বললো, 'আবার আসবেন
নাকি অমিতজি ? কবে আসবেন বলেছেন ?' দেবশ্রী রাগ-রাগ ভাব দেখিয়ে বললো, 'আবার মানে ? নিজের বাড়ি মনে করে উনি আসতেই পারেন, যখন খুশি আসতে
পারেন। এই তো পরশু দিনই হয়তো আসবেন।' সৈকত আরো অবাক হয়ে বললো, 'পরশুই আবার আসবেন ?' দেবশ্রী এবার বাস্তবিকই রেগে গেলো, 'সৈকত, উনি
আমার মালিক হন, বুঝলে ? ভুলে যেও না সে কথা। উনি যেকোনো দিন যেকোনো সময় যখন ইচ্ছা আসতে পারেন। উনি যে আমার জন্য এখানে আসছেন, সেটাই
জানবে আমাদের পরম সৌভাগ্য। নাহলে উনি চাইলে উনি যেখানে আমাকে যেতে বলবেন, সেখানেই আমাকে সেজেগুজে তৈরী হয়ে যেতে হবে। উনি মালিক হন
আমার। ওনার ড্রিঙ্কস রেডি রাখবে, এটাই তোমাকে শুধু বলেছি। আর না পারলে বোলো, আমি ড্রাইভারকে দিয়ে আনিয়ে রাখবো।' সৈকত সমঝোতার সুরে বললো,
'আমি কি সেই কথা বলেছি ? হুইস্কি কি বিয়ার কিছু একটা আমি এনে রাখবো। তুমিও সত্যি আজকাল অল্পেতেই বড্ডো রেগে যাচ্ছো দেখছি।' দেবশ্রী ডাইনিং টেবিল
ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে গলা উঁচুতে তুললো, 'কী - আমি রেগে যাচ্ছি ? তুমি যে হিংসা করছো, সেটা আমি বুঝি না ভেবেছো ? তোমার নিজের বিছানায় কোনো শক্তি নেই,
তুমি একটা শক্তিশালী পুরুষ মানুষকে দেখে হিংসা করছো, তার সম্বন্ধে আমি কিছু বললেই হিংসা হচ্ছে তোমার - আর তুমি বলছো আমি নাকি রেগে যাচ্ছি ?' সৈকত
ম্লানমুখে অপরাধ স্বীকার করার ভঙ্গিতে বললো, 'ঠিক আছে বাবা - আমি আর কিছুই বলবো না। হয়েছে ? আমার চুপ থাকাই বেটার।' দেবশ্রী দেখলো এ-ই সুযোগ।
সৈকত নিজেই নিজের ফাঁদ পেতেছে। সঙ্গে সঙ্গে সুযোগটার সম্পূর্ণ সদ্ব্যবহার করলো দেবশ্রী। সে নিয়ম করে দিলো, 'হ্যাঁ, অমিতজির ব্যাপারে কিছু বলতে আসবে না
তুমি কখনো। উনি আমার মালিক। উনি যা চাইবেন, যেমন চাইবেন, তেমনটাই হবে। আর উনি চাইলে আমাকে ফিল্মের হিরোইন বানিয়েও দিতে পারেন। তুমি কিন্তু
নিজেই বলেছো যে তুমি কিচ্ছু বলতে আসবে না। মনে থাকে যেন।' সৈকত দেবশ্রীর দিকে তাকিয়ে বললো, 'এখানে ওখানে তুমি শুটিং করতে গেলে আমাকেও তো যেতে
হবে সাথে সাথে, তোমাকে এভাবে অজানা জায়গায় ছেড়ে দিতে পারি নাকি ?' তার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে দেবশ্রী বুঝলো যে সে জিতে গেছে। গলা শান্ত করে সে
বললো, 'সে তুমি যেতেই পারো। এখন খাওয়া হলে হাত ধুয়ে এসো, তোমার ওষুধগুলো আমি বার করে রাখছি।'
বেডরুমের দিকে অপসৃয়মান দেবশ্রীকে দেখতে দেখতে সৈকত ভাবতে লাগলো - তার এই বউ যেন ঠিক আর তার একার নেই, অন্য কেউ রীতিমতো ভাগ বসিয়েছে তার
অক্ষমতার সুযোগে। ভাবনাটা মনের মধ্যে ঘুরতে থাকলেও সৈকত মানসচক্ষে কোনো সমাধান দেখতে পেলো না। দেবশ্রীর কথা শুনে মনে হচ্ছিলো সে মনস্থির করেই
নিয়েছে সিনেমায়-শুটিংয়ে নামার ব্যাপারে। অবুঝ মেয়ে, জানে না বাইরের দুনিয়াটা কেমন। সৈকত একরকম নিশ্চিত যে সে লাখ বারণ করলেও দেবশ্রী এখন অমিতজির
কথাতেই চালিত হবে। তার নিজের ভূমিকা সেকেন্ডারি মাত্র। অমিতজির প্রবল পরাক্রমের সামনে সৈকত নিজেকে অসহায় বোধ করছিলো। তার ইচ্ছা করছিলো
বিছানায় গিয়ে এখন শুয়ে পড়তে।
মাঝের একটা দিন থোড়-বড়ি-খাড়া করে কাটলো। দেবশ্রী মেসেজ পাঠিয়েছিল অমিতজিকে দু-একটা, সেগুলোর উত্তরও এসেছে কখনো-কখনো। কিন্তু দেবশ্রী বুঝেছে
যে এই মানুষটাকে এইভাবে বাঁধা সম্ভব নয়। চোখের আড়ালে গেলেই তিনি অন্য মানুষ। তার জন্য তখন অপেক্ষা করে যাওয়া ছাড়া আর উপায় নেই। অফিসের কাজে
আর ঘরদোর গোছানোর কাজে মনোনিবেশ করে সে একটা দিন কাটিয়ে দিলো। তারপর এলো অমিতজির আসবার দিন। দেবশ্রী যথারীতি অফিস থেকে ছুটি নিয়ে নিলো
পরের দিন। সকাল থেকেই খুব খুশি সে। মনে মনে একটা প্ল্যান ছিল তার। তাই সৈকত অফিসে বেরিয়ে যাবার পর তাদের ফ্ল্যাটের দ্বিতীয় যে বেডরুমটা আছে, সেটাকে
পরিষ্কার করে রাখলো সে। এই ঘরটা অপেক্ষাকৃত একটু ছোট। এটার সাথে লাগোয়া বাথরুম আছে একটা। বাথরুমটা খুব কম ব্যবহার করা হয় বলে বেশ নতুন-নতুন
আছে। এই ঘরটা সাধারণত বন্ধই থাকে। তাদের তো একটা বেডরুম আর কিচেন-ডাইনিং নিয়েই কেটে যায়। এই রুমটা গেস্টরুম হিসাবেই ব্যবহার করা হয়। সৈকতের
বাবা-মা, মানে দেবশ্রীর শশুর-শাশুড়ি বর্ধমান থেকে এলে এই ঘরে থাকেন। এমনিতে তাদের অন্য বিশেষ বন্ধুস্থানীয় কেউ নেই। আত্মীয়-স্বজন কলকাতায় নামমাত্র, আর
তারা কখনোই রাত্রিবাস করতে আসে না। ঘরটা তাই পড়েই থাকে। আর শীতের লেপ-কম্বল-সোয়েটার ইত্যাদি এই ঘরের খাটের তলায় চাপা দিয়ে রাখা থাকে। বাড়িতে
কোনো লোকজন এলে দেবশ্রী কখনো কখনো এই ঘরে জামাকাপড় ছাড়বার জন্য ঢোকে। তা নাহলে এটাতে তাদের কমই আসা হয়। আজ এই ঘরটা ভালো করে গুছিয়ে
রাখলো দেবশ্রী। ঘরের বিছানার উপর নতুন একটা চাদর পেতে দিলো। বালিশের খোলগুলো পাল্টে দিলো। ঘর থেকে হাবিজাবি জিনিস সরিয়ে ঘরটা সুন্দর করে তুললো।
রুম ফ্রেশনার ছড়িয়ে দিলো। একটু যদি ফুল-টুল দিয়ে সাজিয়ে দেওয়া যেত! ইশ, নিজের ভাবনাটা নিজের কাছেই কী ভীষণ অসভ্য লাগলো দেবশ্রীর। আজ কি এই ঘরে
ফুলশয্যা হবে নাকি তার ? দ্বিতীয় ফুলশয্যা ? কী যা-তা ভাবছে সে। কিন্তু সেই আশাতেই তো সে গুছিয়ে সুন্দর করে রাখছে ঘরটা। অবশ্য অমিতজি যদি রাতটা এখানে
থেকে যেতে রাজি হন তো। হলে ফুলশয্যার মতোই তো সবকিছু হবে। অথবা তার চেয়েও হয়তো কিছু বেশি। সেরকম যদি সত্যি হয়, তাহলে এটা দ্বিতীয় ফুলশয্যাই তো
হলো তার। শুধু ফুল ছাড়া আর বাকি সব থাকবে। ভাবতে ভাবতেই শিহরিত হচ্ছিলো দেবশ্রী।