06-01-2022, 09:24 PM
নিচে আওয়াজ পেলাম, অনি আমার সাক্ষাত দেবতারে এযাত্রায় মেয়েটা বেঁচে গেলো। কাল আমায় কি গালাগালটাই না দিলে।
আমি মিত্রার দিকে তাকালাম।
-বুড়ীমাসি।
-তুই গালাগাল করেছিস।
-না।
-ওই যে বলছে।
-দাঁড়া আসুক।
-কোন কথা বলবি না। তোর প্রতি ওরও একটা অধিকার আছে।
মিত্রা মাথা নীচু করলো।
কিছুক্ষণ পর বুড়ীমাসি, ছোটমা ঢুকলেন। বুড়ীমাসির চোখের কোল ভারি, মিত্রা বুড়ীমাসির দিকে একবার তাকিয়ে মুখ নীচু করলো, বুড়ীমাসি, মাটিতে বসলো।
-তুমি জানোনা ছোটমা, পই পই করে বারণ করেছি, কে কার কথা শোনে।
আমি বুড়ীমাসির দিকে তাকালাম। বুড়ীমাসি চুপ করে গেলো। দেখেছো তোমার মিত্রাকে, যাও নিচে গিয়ে বোসো।
বুড়ীমাসি কিছুক্ষণ বসে নিচে চলে গেলো।
ছোটমার দিকে তাকিয়ে বললাম, ডাক্তার কি বললো।
-সাবালক মেয়ে, শরীরের ওপর অনেক অত্যাচার করেছে, সময় লাগবে। খাবার চার্ট দিয়ে গেলেন।
-আমি গ্যারেজ।
-দেবো কান মূলে, কি কাজ আছে রে তোর।
-দাওনা দাও মুখে বলছো কেনো।
-দেখলে তো কেসটা সকালে, তাহলে বলছো কেনো।
-সত্যি অনি আমরা তো অবাক হয়ে গেছিলাম, তুই হয়তো ত ত করবি। তোকে নিয়ে নিচে তিনজনে যা হৈ চৈ করছে না, বড়োর বুকটা ফুলে ছাপান্ন ইঞ্চি।
আমি ছোটমাকে জড়িয়ে ধরে বললাম, তোমার।
ছোটমা আমার কপালে চুমু খেলো। মিত্রার দিকে তাকিয়ে চোখ টিপলো।
-বুঝেছি। মিত্রা বললো।
-কি বুঝেছিস।
-তোকে বুঝতে হবে না।
ছোটমা মিত্রা মুচকি মুচকি হাসছে।
আমার খাওয়া শেষ ট্রেটা ছোটমার দিকে এগিয়ে দিয়ে বললাম, চা।
-নিয়ে আসা হচ্ছে। ওরটা শেষ হোক।
-ভোর হয়ে যাবে।
-তার মানে।
-কয়লার ইঞ্জিন।
-খুব কথা না। দিল আমার চুলে মুঠি ধরে।
মিত্রা হাসলো।
ছোটমা আমার ট্রেটা নিয়ে বেরিয়ে গেলো।
-দাঁড়া আজ স্নান করার সময় তোর শরীর একেবারে ঠিক করে দেবো।
-দিবি।
আমি চুপ থাকলাম।
চা এলো, ছোটমার দিকে তাকিয়ে বললাম, অনাদিরা আসতে পারে।
-কেনো।
-কাল ফোন করেছিলো, উনি বলেছেন, আমার শরীর খারাপ। বুঝলে এবার।
-কি দুষ্টু বুদ্ধিরে তোর মিত্রা।
-অতএব আমি চা খেয়েই তোমার ঘরে গিয়ে ঘুমোবো। দু রাত অনেক জ্বালাতন সহ্য করেছি। রবিন নিচে আছে, বুড়ীমাসিও এসে গেছে, ওকে বাড়ি পাঠিয়ে দাও।
-না আমি যাবো না।
-কেনো যাবি না।
-তাহলে তোকেও যেতে হবে।
-হুঁ।
-দাঁড়া নিচে গিয়ে বড়মাকে বলছি, তুই এইসব বলছিস।
-বল না বয়েই গেছে।
আমি উঠে পরলাম।
-কি রে সত্যি চলে যাচ্ছিস।
-হ্যাঁ।
-এখন ঘুমোস না, দুপুরে। তুই তো স্ট্রং ম্যান।
-ওঃ এদিকে তো টনটনে জ্ঞান আছে দেখছি।
ছোটমা আমাদের কথা শুনে মুখে কাপড় চাপা দিয়ে হাসছেন।
-দে ট্রেটা দে, নিচে অনেক কাজ। আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, তুই একটু বোস, আমি ঘন্টাখানেকের মধ্যে চলে আসবো।
অগত্যা আবার ইজি চেয়ার।
মিত্রার খাওয়া শেষ হতে ওকে ওষুধটা দিলাম।
-কিরে কত খাবো।
-রোগ বাধিয়েছিস খেতে হবে।
অনাদিরা যথাসময়ে এলো। সব জানলো। ওদের চোখ ছানাবড়া বলিস কি, কাকার সাথে ফোনে কথা বলিয়ে দিলো, কাকাকে সব জানালাম, নীপা কাঁদছে, আমি মিত্রার সঙ্গে ওকে কথা বলিয়ে দিলাম, অনাদিকে বললাম,
-আমরা যাবো আগামী সপ্তাহে, বড়মা ছোটমাও যাবে, তুই ওই কয়দিন জেনারেটরের ব্যবস্থা কর, আর একটা বাথরুম বানাবার ব্যবস্থা কর। বুড়োবুড়ী সব যাবে কোথায় কি হবে। একটা ট্রলির ব্যবস্থা রাখিস। এদিক ওদিক ঘোড়ার জন্য।
অনাদি বললো তোকে চিন্তা করতে হবে না।
বাসু মিত্রার দিকে তাকিয়ে হাসছে।
-আমাকে একেবারে জালিয়ে পুরিয়ে মারছে।
-হ্যাঁ বলেছে।
অনাদিকে বললাম, চিকনার খবর কি।
-তোর বাড়িতে বসিয়ে এসেছি, বলেছি আমি না যাওয়া পযর্ন্ত কোথাও বেরোবি না।
অনাদিকে বললাম আমি চিকনার জন্য একটা ব্যবস্থা ভেবে রেখেছি, তুই বল ঠিক না ভুল, মিত্রাকে বাসুকেও বললাম আমাকে এ্যাটাক করিস। ভুল হলে।
-আমি একটা মিনি রাইস মিলের কথা ভাবছি। এই মুহূর্তে চিকনা এখন আমাদের গ্রাম, পাসের গ্রাম থেকে ধান কিনবে কিছু নিজে চাল তৈরি করবে, বাকিটা ধান রাইস মিলে বিক্রি করবে। আমি মিত্রা চিকনা থাকবো এই ব্যবসায়। চিকনার চল্লিশ ভাগ আমার তিরিশ মিত্রার তিরিশ, তারপর যখন দেখবো একটু দাঁড়িয়েছে। রাইস মিল বানাবো, আমাদের ওখানে পঞ্চাশ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো রাইস মিল নেই।
-জায়গা। অনাদি বললো।
-কেনো আমার বাড়িটা এখন কাজে লাগাক। অতো বড়ো বাড়ি খালি পরে রয়েছে।
-স্যার রাজি হবে।
-সে আমি বুঝিয়ে বলবো।
-আর আমার ভাগের জমি জমা আমি বাসন্তীমাকে দিয়ে দেবো, ওটা নিয়ে আমার একটা প্ল্যান আছে, আমি ওখানে যাই গিয়ে বড়দের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করবো।
বাসু আমার দিকে বিস্ময় ভরা চোখে তাকালো।
-তুই ওখানে আর যাবি না।
-কেনো যাবো না।
-তাহলে সব দিয়ে দিবি বলছিস।
-ওঃ এই বুদ্ধি নিয়ে তুই কি করে ব্যবসা করিস।
মিত্রা হাসলো।
-চিকনার পয়সা কোথায়।
-তোকে কি পয়সার কথা বললাম।
-না, ওর চল্লিশ ভাগ মানে ওকে শেয়ারের চল্লিশ পার্সেন্ট দিতে হবে তো।
-কেনো, আমরা শেয়ারের ষাট ভাগ দিচ্ছি, কাজ তো আমরা কোরবো না, ও করবে, তার জন্য ও একটা মাসে মাসে মাইনে পাবে, তাছাড়া লভ্যাংশ ও নেবে না, যতোক্ষণ পযর্ন্ত ওর চল্লিশভাগ কোম্পানীতে জমা না পরছে।
-তুই এতো ভাবিস।
-ভাবতে হয়। আর একটা কথা শোন মনে পরে গেলো, অমলের কাছ থেকে তুই সাবধানে থাকিস।
-কেনো।
-মালটা তোর রাইভাল হয়ে গেছে।
-তুই জানলি কি করে।
-তুই পার্টি করিস কেনো, চাষ কর।
-বলনা বল, তোর কাছ থেকে অনেক কিছু শেখা যায়, তাই তো তুই সকলের গুরু।
-গ্যাস খাওয়াস না।
-সত্যি বলছি অনি, আমিও সেরকম বুঝছি তাই তোকে বলছি।
-কি রকম।
-ও ঠিক আগের মতো বিহেভ করছে না।
-কেনো জানিস।
-বল।
-তোর কিছু হলে অনি বেক করবে, প্রয়োজনে তোকে একলাফে অনেক ওপরেও তুলে দিতে পারে, অমল সেটা জেনে ফেলেছে।
-সত্যি বলছি অনি এতোটা ভাবি নি।
-তুই ভাবিস নি, আমি ভাবি। তোকে দিয়ে আমি একটা কাজ করাবো, যেটা কামিং ইলেকশনে আমি কাজে লাগাবো, হয়তো তোকে এমএলএ বানাতেও পারি।
-যাঃ কি বলছিস।
-যা বলছি এখানে বলছি ওখানে কিছু বলবো না। তুই খালি তোর কমিউনিকেশন বাড়িয়ে যা, এমন কোনো কাজ করবি না, যাতে ব্যাড রিপার্কেসন হয়। বাসু কথাটা যেন পাঁচ কান না হয়।
-তুই বিশ্বাস করতে পারিস আমি দিবাকর হবো না।
মিত্রা হো হো করে হেসে ফেললো।
-তোদের বাজারে, তিনকাঠা মতো জায়গা পাওয়া যাবে।
-আছে। একটু বেশি দাম পরবে।
-কতো।
-লাখ চারেক টাকা।
-কাদের জায়গা।
-সুতনু বেরা আছে না, আমাদের পাশের গ্রামের, তার।
-তুই একটু কথা বলে রাখ। জায়গাটা আমার দরকার।
-ঠিক আছে, প্রয়োজন পরলে, কিছুটাকা হাতে গুঁজে ধরে রাখ।
-কি করবি।
-সব বলে দিলে হয়। ওখানে গিয়ে বলবো। চিকনার ব্যাপারটা ফাইন্যাল কর।
-ওখানে যাই কথা বলি, কাল তোকে জানাবো।
-আমাকে না পাস মিত্রার ফোনে জানাস।
-কিরে মিত্রা, তোর কি মত বল।
-ভালোই হবে মাসে একবার করে যাওয়া যাবে, তুই তো এমনি যাবি না।
-যার যা ধান্দা, ওটা হলে তুই আর চিকনা কন্ট্রোল করবি।
-অনাদি একটা থাকার ব্যবস্থা করো, বাথরুম আগে।
-কোনো চিন্তা নেই ম্যাডাম, আপনি আসুন দেখবেন বাথরুম রেডি।
আমি দেয়াল আলমাড়ি থেকে ব্যাগটা বার করলাম, দেখলাম, বেশি পয়সা নেই। মিত্রাকে বললাম নোট দে।
-আমার পার্স নিচে, বড়মার ঘরে।
-যা নিয়ে আয়। উঠতে পারবি তো।
-পারবো।
মিত্রা নিচে গিয়ে ওর পার্স নিয়ে এলো। কতো নিবি।
-হাজার পনেরো দে।
-অতো নেই।
-কতো আছে।
-বারো।
-তাই দে।
আমি অনাদির হাতে সতেরো হাজার দিলাম। কাজ চালা তারপর আমি যাচ্ছি।
-থাক না, তোকে চিন্তা করতে হবে না।
-আরে রাখ, আমি দুপুরে এক ফাঁকে বেরিয়ে তুলে আনবো।
ওরা খাওয়া দাওয়া করে চলে গেলো।


![[+]](https://xossipy.com/themes/sharepoint/collapse_collapsed.png)