31-12-2021, 04:58 PM
আমার মেঝো বোন মৌসুমী, একটা হতাশাগ্রস্ত মেয়েই ছিলো। হঠাৎই একটা গানের রেকর্ডিং সংস্থা থেকে গানের ক্যাসেট বেড় করার প্রস্তাবটা পেতেই, মৌসুমীও খুব বদলে গিয়েছিলো। এস, এস, সি, পরীক্ষার প্রস্তুতি সহ, গানের অডিশন নিয়ে ব্যাস্ত সময়ই কাটাচ্ছিলো। যে মেয়েটি প্রতিদিন এক রাশ হতাশা নিয়ে, পত্রিকার রাশিফল নিয়েই ব্যাস্ত থাকতো, ইদানীং সে পত্রিকা ছুয়েও দেখে না।
মৌসুমীর এমন পরিবর্তনে আমিও খুব আনন্দিত ছিলাম। আমিও তার ব্যাস্ততায় ব্যাঘাত ঘটাতে চাইতাম না।
অনেক রাত হয়েছে। আমার ছোট বোন ইলাও ঘুমিয়ে পরেছে। আমিও ঘুমুনোর উদ্যোগ করছিলাম। কিন্তু সেদিন রাতে হঠাৎ মৌসুমী আমার ঘরে এসে ঢুকলো। দেয়ালের গায়ে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে নির্বাক হয়ে থাকলো। আমি বললাম, ছোট আপু, কি ব্যাপার? মন খারাপ?
মৌসুমী না বোধক মাথা নাড়লো। আমি বললাম, তাহলে এমন মন খারাপ করে রেখেছো কেনো?
মৌসুমী কোন কথা বলছে না। বোবা শূন্য দৃষ্টি মেলে তাঁকিয়ে আছে অন্যত্র। আমি বললাম, কিছু একটা হয়েছে, বলছো না কেনো?
মৌসুমী বললো, আমার খুব ভয় করছে। হাত পা কাঁপাছে এখনো।
আমি বললাম, কেনো? কিসের ভয়?
মৌসুমী বললো, ওই গুণ্ডাগুলো, আমাকে তাড়া করেছিলো। আমি অনেক কষ্টে পালিয়েছি।
আমি আতংকিত হয়েই বললাম, কোথায়, কিভাবে?
মৌসুমী ভাঙ্গা ভাঙ্গা গলাতেই বললো, আসলে, ওই সুরাঙ্গনের ডাইরেক্টর, বার বার আমাকে অনুরোধ করছিলো। আমার ব্যাংকেও টাকা জমা করে দিয়েছে। তাই আবারো গিয়েছিলাম। লোকটাকে বিশ্বাসই হলো। আমার একটা গানের রেকর্ডিংও নিলো। খুশীতেই বাড়ী ফিরছিলাম। রিক্সায় উঠার জন্যে মোড়টায় যেতেই দেখলাম, একাট রিক্সাও নেই। শুধু ওই গুণ্ডাগুলো। আমাকে দেখে বিকৃত হাসিই হাসলো। আমি হেঁটে হেঁটেই বাড়ী রওনা হলাম। ওরাও আমার পেছনে পেছনে আসতে থাকলো। দুপুর তিনটা, আর কোন লোকজনও নেই পথে। আমার যে কি ভয় লাগছিলো। আমি দৌঁড়েই পালাতে চাইলাম। পিছু ফিরে দেখলাম, ওরা আমার পেছনে দৌঁড়াচ্ছে। আমার লম্বা পা বলেই বাঁচতে পেরেছি। লম্বা লম্বা পা ফেলে শুধু অন্ধের মতো দৌঁড়েছি হুশ হারিয়ে। কিন্তু, ঘুমুতে যেতেই বার বার শুধু সেই বিকৃত হাসি, ছুটে ছুটে আসা, এগুলোই চোখের সামনে ভেসে উঠে।
আমি মৌসুমীর কাছাকাছি গিয়ে বললাম, যা হবার হয়ে গেছে। বেঁচে গেছো সেটাই ভাগ্য। এখন থেকে সাবধানে থাকবে। যদি কোথাও যাও, তাহলে আমাকে সংগে করেই নিয়ে যাবে। কাজের মেয়ে খুকী যতটা বুঝে, ততটা তুমিও বুঝো না। খুকী তোমার সামনে একটা মহা বিপদ অনুমান করতে পেরেছিলো বলেই ঐদিন চালাকী করে আমাকে পাঠিয়েছিলো। অথচ, কারো কথাই শুনলে না। নিজেকে কি মনে করো তুমি?
মৌসুমী বললো, স্যরি খোকা, আমি একটা কালো সাধারন মেয়ে, আমার কোন শত্রু থাকতে পারে বলে ভাবিনি।
আমি বললাম, কালো সাধারন কোন মেয়ে তুমি না। এসব হচ্ছে তোমার অন্তর্মনের কথা। তোমার যা মিষ্টি চেহারা, এতে করে গায়ের রং ফর্সা হলে মোটেও ভালো লাগতো না। চলো, ঘুমুবে। আমি তোমাকে ঘুম পারিয়ে দিচ্ছি।
মৌসুমী তার নিজ শোবার ঘরে এলো ঠিকই। বিছানায় বসে দেয়ালে হেলান দিয়ে মূর্তির মতোই বসে রইলো। আমি বললাম, কি হলো, শোবে না?
মৌসুমী বললো, খোকা, আমি আসলেই খুব আশাবাদী একটা মেয়ে। সেবার ক্যাসেট বেড় করার অফারটা পাবার পর, আমিও বোধ হয় একটু লোভী হয়ে পরেছিলাম। সুরাঙ্গন এর ডাইরেক্টরও যখন অফার করলো, তখন কত স্বপ্ন দেখেছি? একটার পর একটা গানের ক্যাসেট আমার বেড় হবে। কত নাম ধাম হবে?
আমি বললাম, তুমি ভুল করোনি। এমন পরিস্থিতি হলে আমারও এমন স্বপ্ন দেখতে ইচ্ছে করতো।
মৌসুমী বললো, তোমার কি ধারনা? ওই সুরাঙ্গনের ডাইরেক্টর এর সাথে গুণ্ডা গুলোর কোন সম্পর্ক আছে? লোকটাকে তো খুব ভালোই মনে হয়। ইয়াং, খুবই হ্যাণ্ডসাম। এক সময়ে ব্যাণ্ড সংগীত এরই শিল্পী ছিলো। খুব বেশী নাম করতে পারেনি। তবে, এখানে সেখানে গ্রামে গঞ্জে স্টেইজ করে প্রচুর পয়সা কামিয়েছে। এখন নিজেই রেকর্ডিং এর ব্যাবসা করছে। দুঃখ করেই বললো, নামী দামী গায়ক গায়িকারা তার রেকর্ডিং এ আসতে চায়না। আমাকে সে হিট গায়িকা বানিয়েই ছাড়বে।
আমি বললাম, আমি খোঁজ নেবো। তুমি এখন ঘুমুও।
মৌসুমীর এমন পরিবর্তনে আমিও খুব আনন্দিত ছিলাম। আমিও তার ব্যাস্ততায় ব্যাঘাত ঘটাতে চাইতাম না।
অনেক রাত হয়েছে। আমার ছোট বোন ইলাও ঘুমিয়ে পরেছে। আমিও ঘুমুনোর উদ্যোগ করছিলাম। কিন্তু সেদিন রাতে হঠাৎ মৌসুমী আমার ঘরে এসে ঢুকলো। দেয়ালের গায়ে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে নির্বাক হয়ে থাকলো। আমি বললাম, ছোট আপু, কি ব্যাপার? মন খারাপ?
মৌসুমী না বোধক মাথা নাড়লো। আমি বললাম, তাহলে এমন মন খারাপ করে রেখেছো কেনো?
মৌসুমী কোন কথা বলছে না। বোবা শূন্য দৃষ্টি মেলে তাঁকিয়ে আছে অন্যত্র। আমি বললাম, কিছু একটা হয়েছে, বলছো না কেনো?
মৌসুমী বললো, আমার খুব ভয় করছে। হাত পা কাঁপাছে এখনো।
আমি বললাম, কেনো? কিসের ভয়?
মৌসুমী বললো, ওই গুণ্ডাগুলো, আমাকে তাড়া করেছিলো। আমি অনেক কষ্টে পালিয়েছি।
আমি আতংকিত হয়েই বললাম, কোথায়, কিভাবে?
মৌসুমী ভাঙ্গা ভাঙ্গা গলাতেই বললো, আসলে, ওই সুরাঙ্গনের ডাইরেক্টর, বার বার আমাকে অনুরোধ করছিলো। আমার ব্যাংকেও টাকা জমা করে দিয়েছে। তাই আবারো গিয়েছিলাম। লোকটাকে বিশ্বাসই হলো। আমার একটা গানের রেকর্ডিংও নিলো। খুশীতেই বাড়ী ফিরছিলাম। রিক্সায় উঠার জন্যে মোড়টায় যেতেই দেখলাম, একাট রিক্সাও নেই। শুধু ওই গুণ্ডাগুলো। আমাকে দেখে বিকৃত হাসিই হাসলো। আমি হেঁটে হেঁটেই বাড়ী রওনা হলাম। ওরাও আমার পেছনে পেছনে আসতে থাকলো। দুপুর তিনটা, আর কোন লোকজনও নেই পথে। আমার যে কি ভয় লাগছিলো। আমি দৌঁড়েই পালাতে চাইলাম। পিছু ফিরে দেখলাম, ওরা আমার পেছনে দৌঁড়াচ্ছে। আমার লম্বা পা বলেই বাঁচতে পেরেছি। লম্বা লম্বা পা ফেলে শুধু অন্ধের মতো দৌঁড়েছি হুশ হারিয়ে। কিন্তু, ঘুমুতে যেতেই বার বার শুধু সেই বিকৃত হাসি, ছুটে ছুটে আসা, এগুলোই চোখের সামনে ভেসে উঠে।
আমি মৌসুমীর কাছাকাছি গিয়ে বললাম, যা হবার হয়ে গেছে। বেঁচে গেছো সেটাই ভাগ্য। এখন থেকে সাবধানে থাকবে। যদি কোথাও যাও, তাহলে আমাকে সংগে করেই নিয়ে যাবে। কাজের মেয়ে খুকী যতটা বুঝে, ততটা তুমিও বুঝো না। খুকী তোমার সামনে একটা মহা বিপদ অনুমান করতে পেরেছিলো বলেই ঐদিন চালাকী করে আমাকে পাঠিয়েছিলো। অথচ, কারো কথাই শুনলে না। নিজেকে কি মনে করো তুমি?
মৌসুমী বললো, স্যরি খোকা, আমি একটা কালো সাধারন মেয়ে, আমার কোন শত্রু থাকতে পারে বলে ভাবিনি।
আমি বললাম, কালো সাধারন কোন মেয়ে তুমি না। এসব হচ্ছে তোমার অন্তর্মনের কথা। তোমার যা মিষ্টি চেহারা, এতে করে গায়ের রং ফর্সা হলে মোটেও ভালো লাগতো না। চলো, ঘুমুবে। আমি তোমাকে ঘুম পারিয়ে দিচ্ছি।
মৌসুমী তার নিজ শোবার ঘরে এলো ঠিকই। বিছানায় বসে দেয়ালে হেলান দিয়ে মূর্তির মতোই বসে রইলো। আমি বললাম, কি হলো, শোবে না?
মৌসুমী বললো, খোকা, আমি আসলেই খুব আশাবাদী একটা মেয়ে। সেবার ক্যাসেট বেড় করার অফারটা পাবার পর, আমিও বোধ হয় একটু লোভী হয়ে পরেছিলাম। সুরাঙ্গন এর ডাইরেক্টরও যখন অফার করলো, তখন কত স্বপ্ন দেখেছি? একটার পর একটা গানের ক্যাসেট আমার বেড় হবে। কত নাম ধাম হবে?
আমি বললাম, তুমি ভুল করোনি। এমন পরিস্থিতি হলে আমারও এমন স্বপ্ন দেখতে ইচ্ছে করতো।
মৌসুমী বললো, তোমার কি ধারনা? ওই সুরাঙ্গনের ডাইরেক্টর এর সাথে গুণ্ডা গুলোর কোন সম্পর্ক আছে? লোকটাকে তো খুব ভালোই মনে হয়। ইয়াং, খুবই হ্যাণ্ডসাম। এক সময়ে ব্যাণ্ড সংগীত এরই শিল্পী ছিলো। খুব বেশী নাম করতে পারেনি। তবে, এখানে সেখানে গ্রামে গঞ্জে স্টেইজ করে প্রচুর পয়সা কামিয়েছে। এখন নিজেই রেকর্ডিং এর ব্যাবসা করছে। দুঃখ করেই বললো, নামী দামী গায়ক গায়িকারা তার রেকর্ডিং এ আসতে চায়না। আমাকে সে হিট গায়িকা বানিয়েই ছাড়বে।
আমি বললাম, আমি খোঁজ নেবো। তুমি এখন ঘুমুও।