31-12-2021, 11:03 AM
(This post was last modified: 31-12-2021, 12:29 PM by Jaybengsl. Edited 5 times in total. Edited 5 times in total.)
পুরানো সেই দিনের কথা
*****************
আঙুলে চাপ দিয়ে মেসেজের একদম শুরুতে চলে গেল সুমন।প্রায় ছ'মাস আগে মানে মাকে মোবাইলে facebook খুলে দেবার পরের মাসেই প্রথম মেসেজ করেছে বিমান," Hi "দিয়ে।
মা উত্তর দেয় নি।
আবার দুদিন পর Hi সঙ্গে ইমোজি।
দুদিন বাদে বাদে রোজ Hi সঙ্গে ইমোজি।কখনো হাসির,কখনো কান্নার।প্রায় একমাস বাদে মা Hi এর উত্তরে লিখেছে "হুম"
বিমান লিখছে "আমায় চিনতে পারছো না?"
মা এবারও উত্তর দেয়নি।
বিমান ক'দিন পর পর লিখে গেছে "সত্যি আমায় চিনতে পারছো না?"
এবার মা লিখছে," চিনেছি,আমার facebook address তোমায় কে দিল?"
কে আর দেবে?রোজ কাবেরী চক্রবতী লিখে সার্চ করেছি।মনেই ছিলো না তোমার সারনেম পাল্টে গেছে।শেষে কাবেরী লিখে সার্চ করে অনেক কাবেরীর মধ্যে থেকে তোমায় পেয়ে গেলাম।ভাগ্যিস profile pics টা স্পষ্ট ছিলো। তুমি যে মুখার্জি হয়েছো সেটা তো মনেই ছিলো না।"
মা লিখেছে "তাই?"
"তুমি কিন্তু আগের চেয়ে অনেক সুন্দর হয়েছো "
"Thank you"
"কেমন আছো ?"
"ভালো,তুমি?"
"ভালো আছি,পুরনো দিনগুলোর কথা মনে পড়ে?"
"আমি এখন একজনে স্ত্রী,একজনের মা ।পুরনো দিনের কথা মনে করতে চাই না।"
বেশ এখনকার কথাই বলো।এখন কোথায় থাকো?Facebook profile এ কিছু লেখোনি তো।"
" তমলুক"
" মেদিনীপুর? বাহ।তোমার হাসব্যান্ড তো Astt engr,না?"
"চিফ ইঞ্জিনিয়ার।"
আর একবার পড়লো সুমন।তার মানে বাবাকে বড় করার জন্য মা মিথ্যে বলেছিলো।বাবা তো Asst engr ই।
বাহ,তাহলে প্রমোশন হয়েছে?
হ্যা
কটি বাচ্চা তোমার?
এক ছেলে।এবার হায়ার সেকেন্ডারি দেবে।
বাবার মতোই ইঞ্জিনিয়ারিং পড়বে নিস্চয়ই।
আমাদের ইচ্ছা ডাক্তারি।
বাহ,খুব ভালো ।
তোমার ক'টি?
এক ছেলে,এক মেয়ে।মেয়ে বড়,এবার কলেজ ফাইনাল দেবে।আমি তো বিয়েতে তোমার চেয়ে দুবছর পিছিয়ে(একটা হাসির স্মাইলি)।
আমি যাই এখন।
কাল আসবে তো?
জানি না।
প্লিজ, কতো কথা জমে আছে।
আর কোনো কথা নেই।
এরপর বিমান প্রতিদিন এসেছে।এক একদিন
"আছো?
কোথায় ?
কি হোলো?
কোথায় গেলে"বলে গেছে।
মা দেখেছে, ইচ্ছে করেই উত্তর দেয়নি।
বিমান বোধহয় হাল ছেড়ে দিয়েছিল।দিন দশেক পরে আবার Hi লিখতেই মা উত্তর দেযেছে,"বলো"।
এতোদিন আসো নি কেন? আমি রোজ তোমাকে মেসেজ করেছি।
এমনি।কেন রোজ রোজ বিরক্ত করো বলতো? বলেছি না পুরোনো কথা মনে করতে চাই না।
রেগে যাচ্ছ কেন।আমরা কি গল্প করতে পারি না।
কিসের গল্প?
কতো গল্প থাকে।আমাদের জীবনে কত ঘটনা ঘটে গেছে।
যা গেছে তো গেছে।তুমি তোমার সংসার করো ।আমাকেও সংসার করতে দাও।
আচ্ছা,তোমরা যখন প্রথম আমাদের পাড়ায় এসে বাড়ি করলে,আমাদের আড্ডায় আমি তোমার কি নাম দিয়েছিলাম জানো?
জানি।স্ট্রবেরি।
কি করে জানলে?
মেয়েরা সব জানে।মাথা নিচু করে হাঁটলেও সব দেখতে পায়।
তাই?আগে কখনো বল নি তো?
অনেক কিছুই তো বলিনি।আমার সাথে মেশার আগে তুমি যে ইন্দ্রাণীর সাথে প্রেম করতে তাও জানি।তোমায় বলেছি কখনো?
আরে দূর।ওকি প্রেম নাকি।কলেজ জীবনে প্রেম হলো culf love।বঙ্কিমচন্দ্র বলতেন বাছুরে প্রেম।
তাই!! তুমি কিন্তু আমাকে ইন্দ্রাণীর কথা কখনো বলোনি।কেন বলোনি?
দুর,ওটা কি বলার মতো কিছু নাকি।
প্রেমটা
হলো না কেন?
আরে তখন তো আর মেসেঞ্জার,হোয়াটসআপ ছিল না।ইন্দ্রাণীর চিঠি আমার অঙ্ক বইয়ের মধ্যে রেখেছিলাম ।বাবার কাছে অঙ্ক করতে গিয়ে বাবা সেই চিঠি দেখে ফেললো।তারপর উদোম ক্যালানি।
তুমি তো চিরকালই ভীতু ছিলো।আমাকেও তাই ফিরে আসতে হয়েছে।
না সোনা।আমাদের তো অন্য problem ছিল।
আমাকে সোনা বলে ডাকবেনা প্লিজ।ঐ নামটা এখন অতীত।কাপুরুষ একটা।
তোমরা ', আমরা সাহা।cast আলাদা তাই কোনো বাড়িতেই তো মেনে নিলো না।কি করতাম?তোমার বাড়িতেই তো বেশি আপত্তি ছিলো।
আমাকে নিয়ে পালিয়ে যেতে পারতে যদি সত্যি ভালবাসতে।
পারতাম না।তখন আমি এম কম শেষ করে একটা ছোট প্রাইভেট কোম্পানীতে চাকরি করি।কি মাইনে ছিলো তুমি তো সবই জানো।বাড়িভাড়া করতে হতো । তোমাকে খাওয়াতাম কি?
ছাড়ো তো।অজুহাত দিয়োনা।আমি যাচ্ছি।কাপুরুষ কোথাকার।আমি মোবাইল অফ করছি।
আর একটু কথা বলি।
না,আমার এখন অনেক কাজ আছে
প্লিজ,প্লিজ,যেও না।
বাইরে কলিং বেল বাজছে।"বাবু,দরজাটা খোল।"
সুমন কোনো রকমে মার মোবাইল অফ করে বালিশের তলায় রেখে পালিয়ে এলো।দরজা খুললো।আর মনে মনে ঠিক করে ফেললো
"কাকিমা এলে আমার পড়াশনার ডিস্টার্ব হয়।তুমি কাকিমার বাড়ি গিয়েই আড্ডা মারো" বলে মাকে কাকিমার বাড়ি পাঠাতেই হবে।এখনো অনেক পড়া বাকি।
ভেতরে ভেতরে তুমুল উত্তেজনা হতে লাগলো ।কি করে এখন পড়ায় মন বসাবে সুমন।
*****************
আঙুলে চাপ দিয়ে মেসেজের একদম শুরুতে চলে গেল সুমন।প্রায় ছ'মাস আগে মানে মাকে মোবাইলে facebook খুলে দেবার পরের মাসেই প্রথম মেসেজ করেছে বিমান," Hi "দিয়ে।
মা উত্তর দেয় নি।
আবার দুদিন পর Hi সঙ্গে ইমোজি।
দুদিন বাদে বাদে রোজ Hi সঙ্গে ইমোজি।কখনো হাসির,কখনো কান্নার।প্রায় একমাস বাদে মা Hi এর উত্তরে লিখেছে "হুম"
বিমান লিখছে "আমায় চিনতে পারছো না?"
মা এবারও উত্তর দেয়নি।
বিমান ক'দিন পর পর লিখে গেছে "সত্যি আমায় চিনতে পারছো না?"
এবার মা লিখছে," চিনেছি,আমার facebook address তোমায় কে দিল?"
কে আর দেবে?রোজ কাবেরী চক্রবতী লিখে সার্চ করেছি।মনেই ছিলো না তোমার সারনেম পাল্টে গেছে।শেষে কাবেরী লিখে সার্চ করে অনেক কাবেরীর মধ্যে থেকে তোমায় পেয়ে গেলাম।ভাগ্যিস profile pics টা স্পষ্ট ছিলো। তুমি যে মুখার্জি হয়েছো সেটা তো মনেই ছিলো না।"
মা লিখেছে "তাই?"
"তুমি কিন্তু আগের চেয়ে অনেক সুন্দর হয়েছো "
"Thank you"
"কেমন আছো ?"
"ভালো,তুমি?"
"ভালো আছি,পুরনো দিনগুলোর কথা মনে পড়ে?"
"আমি এখন একজনে স্ত্রী,একজনের মা ।পুরনো দিনের কথা মনে করতে চাই না।"
বেশ এখনকার কথাই বলো।এখন কোথায় থাকো?Facebook profile এ কিছু লেখোনি তো।"
" তমলুক"
" মেদিনীপুর? বাহ।তোমার হাসব্যান্ড তো Astt engr,না?"
"চিফ ইঞ্জিনিয়ার।"
আর একবার পড়লো সুমন।তার মানে বাবাকে বড় করার জন্য মা মিথ্যে বলেছিলো।বাবা তো Asst engr ই।
বাহ,তাহলে প্রমোশন হয়েছে?
হ্যা
কটি বাচ্চা তোমার?
এক ছেলে।এবার হায়ার সেকেন্ডারি দেবে।
বাবার মতোই ইঞ্জিনিয়ারিং পড়বে নিস্চয়ই।
আমাদের ইচ্ছা ডাক্তারি।
বাহ,খুব ভালো ।
তোমার ক'টি?
এক ছেলে,এক মেয়ে।মেয়ে বড়,এবার কলেজ ফাইনাল দেবে।আমি তো বিয়েতে তোমার চেয়ে দুবছর পিছিয়ে(একটা হাসির স্মাইলি)।
আমি যাই এখন।
কাল আসবে তো?
জানি না।
প্লিজ, কতো কথা জমে আছে।
আর কোনো কথা নেই।
এরপর বিমান প্রতিদিন এসেছে।এক একদিন
"আছো?
কোথায় ?
কি হোলো?
কোথায় গেলে"বলে গেছে।
মা দেখেছে, ইচ্ছে করেই উত্তর দেয়নি।
বিমান বোধহয় হাল ছেড়ে দিয়েছিল।দিন দশেক পরে আবার Hi লিখতেই মা উত্তর দেযেছে,"বলো"।
এতোদিন আসো নি কেন? আমি রোজ তোমাকে মেসেজ করেছি।
এমনি।কেন রোজ রোজ বিরক্ত করো বলতো? বলেছি না পুরোনো কথা মনে করতে চাই না।
রেগে যাচ্ছ কেন।আমরা কি গল্প করতে পারি না।
কিসের গল্প?
কতো গল্প থাকে।আমাদের জীবনে কত ঘটনা ঘটে গেছে।
যা গেছে তো গেছে।তুমি তোমার সংসার করো ।আমাকেও সংসার করতে দাও।
আচ্ছা,তোমরা যখন প্রথম আমাদের পাড়ায় এসে বাড়ি করলে,আমাদের আড্ডায় আমি তোমার কি নাম দিয়েছিলাম জানো?
জানি।স্ট্রবেরি।
কি করে জানলে?
মেয়েরা সব জানে।মাথা নিচু করে হাঁটলেও সব দেখতে পায়।
তাই?আগে কখনো বল নি তো?
অনেক কিছুই তো বলিনি।আমার সাথে মেশার আগে তুমি যে ইন্দ্রাণীর সাথে প্রেম করতে তাও জানি।তোমায় বলেছি কখনো?
আরে দূর।ওকি প্রেম নাকি।কলেজ জীবনে প্রেম হলো culf love।বঙ্কিমচন্দ্র বলতেন বাছুরে প্রেম।
তাই!! তুমি কিন্তু আমাকে ইন্দ্রাণীর কথা কখনো বলোনি।কেন বলোনি?
দুর,ওটা কি বলার মতো কিছু নাকি।
প্রেমটা

আরে তখন তো আর মেসেঞ্জার,হোয়াটসআপ ছিল না।ইন্দ্রাণীর চিঠি আমার অঙ্ক বইয়ের মধ্যে রেখেছিলাম ।বাবার কাছে অঙ্ক করতে গিয়ে বাবা সেই চিঠি দেখে ফেললো।তারপর উদোম ক্যালানি।
তুমি তো চিরকালই ভীতু ছিলো।আমাকেও তাই ফিরে আসতে হয়েছে।
না সোনা।আমাদের তো অন্য problem ছিল।
আমাকে সোনা বলে ডাকবেনা প্লিজ।ঐ নামটা এখন অতীত।কাপুরুষ একটা।
তোমরা ', আমরা সাহা।cast আলাদা তাই কোনো বাড়িতেই তো মেনে নিলো না।কি করতাম?তোমার বাড়িতেই তো বেশি আপত্তি ছিলো।
আমাকে নিয়ে পালিয়ে যেতে পারতে যদি সত্যি ভালবাসতে।
পারতাম না।তখন আমি এম কম শেষ করে একটা ছোট প্রাইভেট কোম্পানীতে চাকরি করি।কি মাইনে ছিলো তুমি তো সবই জানো।বাড়িভাড়া করতে হতো । তোমাকে খাওয়াতাম কি?
ছাড়ো তো।অজুহাত দিয়োনা।আমি যাচ্ছি।কাপুরুষ কোথাকার।আমি মোবাইল অফ করছি।
আর একটু কথা বলি।
না,আমার এখন অনেক কাজ আছে
প্লিজ,প্লিজ,যেও না।
বাইরে কলিং বেল বাজছে।"বাবু,দরজাটা খোল।"
সুমন কোনো রকমে মার মোবাইল অফ করে বালিশের তলায় রেখে পালিয়ে এলো।দরজা খুললো।আর মনে মনে ঠিক করে ফেললো
"কাকিমা এলে আমার পড়াশনার ডিস্টার্ব হয়।তুমি কাকিমার বাড়ি গিয়েই আড্ডা মারো" বলে মাকে কাকিমার বাড়ি পাঠাতেই হবে।এখনো অনেক পড়া বাকি।
ভেতরে ভেতরে তুমুল উত্তেজনা হতে লাগলো ।কি করে এখন পড়ায় মন বসাবে সুমন।