Thread Rating:
  • 18 Vote(s) - 3.06 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
জীবনের সুখের জন্য by লাভদীপদা
#3
মিতা কটকট করে বলে উঠলো, ‘আর বল কেন, আজ দুদিন ধরে কতগুলো ছেলে ফোন করে বলে যাচ্ছে যে তারা নাকি আমার ফোনে নাম্বারটা কোন একটা ক্লাব মারফৎ পেয়েছে। আমি ওদের বন্ধু হতে ইচ্ছুক কিনা। বল দেখি কি ঝামেলা। কোথা থেকে আমার নাম্বার পেল কে দিলো মাঝখান থেকে আমাকে ডিস্টার্ব করা।‘

আমি আশ্চর্যের ভাব দেখিয়ে বললাম, ‘আরে এতো অদ্ভুত ব্যাপার। তুমি জানো না অথচ ছেলেগুলো তোমার নাম্বার জানে। কি করে?’

মিতা ততোধিক রাগ দেখিয়ে বলল, ‘সে আমি বলব কি করে? আমি তো আর ওদের নাম্বার দিই নি।‘

আমি ঠোঁট উলটে বললাম। ‘সে তো ঠিকই। কিন্তু নাম্বার তো আমিও দিই নি। তাহলে?’

মিতা হাত নেড়ে জবাব দিলো, ‘ছেড়ে দাও। উত্তর না পেয়ে ঠিক বন্ধ করে দেবে ফোন করা।‘

আমি একটু খুশি হলাম যে যাক আমাকে সন্দেহ করে নি। কিন্তু ও যদি কল একসেপ্ট না করে তাহলে আমার আর নিকিতার প্ল্যান তো ঠিক হোল না। তবুও কয়েকদিন ওয়েট করা যাক। দেখি কি হয়।

নিকিতাকে এ ব্যাপারে আমার খবর দেওয়া হয়ে গেছে। ও আমাকে অপেক্ষা করতে বলেছে এই বলে যে বৌদি তো এ ব্যাপারে অভ্যস্ত নয়, আরও কয়েকদিন দেখা যাক। আমিও ভাবলাম সবুরে মেওয়া ফলে। দেখাই যাক না কি হয়। অন্তত আমার রিস্ক নেই এটা তো বুঝে গেছি। কয়েকদিন বাদে মিতার ফোনে একটা কল এলো শুনলাম। মিতা ফোনটা দেখে উঠে বাইরে চলে গেল। বেশ কিছুক্ষণ পারে ফিরে এলো টিভির ঘরে। মুখে একটা পাতলা হাসি। আমি ভাবলাম হাসি তো ফাঁসি। আমরা কেউ কাউকে জিজ্ঞেস করি না কার কল এলো, কি বলল। এটা আমাদের একদম প্রথম থেকে আন্ডারস্ট্যান্ডিং। আমরা বলেই নিয়েছিলাম জিজ্ঞেস করাতে মনে হয় স্বাধীনতা হরন হচ্ছে। তাই। যাহোক আমি অবশ্য শিওর নই যে এটা ওর কোন অজানা বন্ধু।

ইতিমধ্যে আমার আর বিদিশার একটা ছোট ট্যুর হয়ে গেল। আসলে অফিসের জন্য আমাকে অনেক জায়গাতে ট্যুর করতে যেতে হয়। সেদিনকে আমার ডিরেক্টর আমাকে ডেকে বলল, ‘গৌতম তোমাকে একটা টেন্ডারের ব্যাপারে দুদিনের জন্য ঝারসুগুদাহ যেতে হবে। টেন্ডারটা আমাদের চাই। তুমি কোম্পানির প্রোফাইল নিয়ে ওদের সাথে কথা বলে আসো। কি কাজ, কতো টাকার কাজ, কবে শুরু হতে পারে, টেন্ডার কবে দেবে। সব খবর নিয়ে এসো। শার্প।‘

আমি মিতাকে খবরটা জানালাম যে দুদিন আমাকে বাইরে থাকতে হবে। মিতা এখন এই ব্যাপারগুলো নিয়ে কিছু মনে করে না। ওর অভ্যেস হয়ে গেছে। আমাকে কোম্পানির কাজ করে যেতে হবে এবং বাইরেও যেতে হবে। ও প্রশ্ন করল, ‘কবে যেতে হবে?’

আমি জবাব দিলাম, ‘ট্রেনের টিকিট কেটে তোমাকে জানাচ্ছি।‘

বিদিশার সাথে আমি নিয়মিত কথা বলে গেছি। ও আমার খুব ভালো বন্ধু হয়ে গেছে। তখনো পর্যন্ত আমরা কেউ কারোকে দেখিনি। শুধু গলার আওয়াজ শুনে গেছি। দুজনেই আমরা একমত যদি আমরা আরও ভালো করে নিজেদের বুঝতে চাই তাহলে একবার দুজনের দেখা হওয়া ভালো। আর আমার মতে এই ট্যুরের থেকে ভালো সুযোগ আর হবে না। মিতার কাছেও ব্যাপারটা অজানা থাকবে আর আমরা সুযোগ পাব নিজেদেরকে ভালো ভাবে জেনে নিতে। ওর ছেলে এখন বাইরে থেকে পড়াশুনা করছে। তাহলে ছেলে ওয়িল নট বি অ্যা প্রব্লেম। দেখি একবার ফোন করে। আমি বিদিশাকে রিং করলাম। কিছুক্ষণ রিং বাজার পর ও ফোন তুলে বলল, ‘বল। হঠাৎ এই সময়ে?’

আমি জবাব দিলাম, ‘প্রয়োজন পড়লো বলে ফোন করলাম। কেন বিজি নাকি? তাহলে পড়ে ফোন করব।‘

ও তড়িঘড়ি উত্তর দিলো, ‘আরে এতো ভদ্র কেন আজ? এই ফোনটার জন্য তো ওয়েট করি। সেটাও পড়ে বলে ছেড়ে দেবে?’

আমি হেসে উত্তর দিলাম, ‘আর এ বান্দা, এ কি ওয়েট করে না? যাহোক, একটা সুযোগ আছে যদি রাজি থাক তো বলতে পারি।‘

সে উত্তর করল, ‘আরে শুনলামই না তো কি করে রাজি আছি বলব। আগে তো বল?’

আমি বললাম, ‘কোম্পানির কাজে আমাকে দুদিন বাইরে যেতে হচ্ছে। যদি বল তো একসাথে যাওয়া যেতে পারে।‘

আমি ভেবেছিলাম ও আমতা আমতা করবে। কিন্তু ও উত্তর করল, ‘কবে?’

আমি জবাব দিলাম, ‘এই ধর দুদিন বাদে।‘

ও একটু সময় নিয়ে বলল, ‘ওকে আমি রাজি। চল ঘুরে আসি।‘

ব্যাপারটা এতো সহজে মিটে যাবে আমি এক্সপেক্ট করি নি। যাহোক ওকে ধন্যবাদ জানিয়ে আমি ট্রেনের দুটো ১ম এসির টিকিট কেটে নিলাম। এটা একটু গোপনে আমাকে করতে হল কোম্পানিকে না জানিয়ে। কারন সাধারনত আমি প্লেন এ যাতায়াত করি। প্লেন এ করে ভুবনেশ্বর হয়ে তবে আমার ঝারসুগুদাহ যাওয়ার কথা। কিন্তু এখন আমি ট্রেনে যাবো যেটা কোম্পানি আমাকে প্রশ্ন করতেই পারে। তাই যখন শচিন আমাকে জিজ্ঞেস করলো প্লেনের টিকিট কাটবে কিনা আমি ওকে না করে দিলাম। বললাম আমি এখনো ঠিক করি নি কবে যাবো। দরকার পড়লে আমি নিজে টিকিট কেটে নেবো। ও ঠিক আছে বলে চলে গেল। আমি নিশ্ছিন্ত হয়ে গেলাম কোথাও কোন সন্দেহর আবকাশ না থাকায়।

বিদিশার সাথে ঠিক ছিল ও হাওড়া স্টেশনে আমার সাথে দেখা করবে। গিতাঞ্জালী ট্রেন। দুপুর ২।৩০ এ হাওড়া থেকে ছারে। আমি মিতার কাছ থেকে বেড়িয়ে হাওড়া পৌঁছে গেছি। ২০ নাম্বার প্লাটফর্মে এসে ওয়েট করছি। বিদিশা বলে দিয়েছিল ও একটা সবুজ শাড়ি পড়ে আসবে আর হাতে একটা লাল ব্যাগ থাকবে। আমি এধার অধার বিদিশাকে খুঁজছি। ঘড়িতে তখন প্রায় পৌনে দুটো বাজে। ট্রেন প্লাটফর্মে লাগিয়ে দিয়েছে। প্রায় দুটো বাজতে পাঁচ মিনিটে দূর থেকে এক সবুজ শাড়ি হাতে ঝোলানো একটা লাল ব্যাগ নিয়ে এক ভদ্রমহিলাকে আস্তে দেখলাম। আমি শিওর এটাই বিদিশা। বেশ লম্বা। দূর থেকে ফর্সাই মনে হচ্ছে। চালচলন বেশ স্মার্ট। একটু কাছে আসতেই আমি একটু এগিয়ে গেলাম। আমাকে ও দেখছিল। আমি আরেকটু এগিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, ‘বিদিশা?’

আমার দিকে তাকিয়ে একটু হাসল। বলল, ‘হ্যাঁ, আপনি গৌতম, তাই তো?’

আমি ঝুঁকে ওর হাত থেকে ব্যাগটা নিতে ও ব্যাগটা সরিয়ে নিল। বলে উঠলো, ‘আরে বাবা, খুব একটা ভারি না। আমিই পারবো। চল, ট্রেন দিয়ে দিয়েছে?’

আমি উত্তর দিলাম, ‘হ্যাঁ, ওই তো।‘

দুজনে এগিয়ে গিয়ে এইচ এ ১ কামরাতে উঠে গেলাম। টিকিট কাতবার সময় বিদিশার টাইটেল না জানা থাকায় আমারটা লিখেছিলাম। পরিণতি এটা হোল যে আমাদের দুই বার্থের একটা কুপ পেয়ে গেলাম। জেনারেলি কাপল হলে ওরা এটাই দেয়। দুজনে ঢুকে গেলাম। বিদিশা কুপ দেখে বলে উঠলো, ‘গৌতম, মনে হচ্ছে একটু চালাকি করেছো।কোন খারাপ মতলব নেই তো।‘ খুব জোরে হেসে উঠলো সে।

আমি হেসে উত্তর দিলাম, ‘কূপটা দেখে সন্দেহ করছ তো? এটা তো আমার মামার রেল নয় যে আমি বন্দোবস্ত করব। লাক ছিল পেয়ে গেলাম।‘

আমার ব্যাগ আর ওর ব্যাগটা বার্থের নিচে রেখে আমরা সিটের উপর বসলাম। আমি লক্ষ্য করে দেখি যে খাবার জল নেই। আমি ওকে ওয়েট করতে বলে নিচে নেমে দুটো জলের বোতল কিনে নিলাম। উপরে কামরাতে ঢুকে ওকে প্রশ্ন করলাম, ‘বাড়ীর থেকে খেয়ে বেরিয়েছ না খাবার কিনবো?’

বিদিশা জানালা দিয়ে স্টেশনের দিকে তাকিয়ে জবাব দিলো, ‘হ্যাঁ বাবা তোমাকে চিন্তা করতে হবে না। এখন তুমি আমার গার্জেন। প্রয়োজন কিছু হলে বলে দেবো। আমার জন্য চিন্তা করো না।‘

ট্রেনটা একটু দুলে উঠে চলতে শুরু করলো। আমি ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ২/৩১ বাজে। দুজনে চুপচাপ জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছি। টিকিট চেকার ঢুকে টিকিট দেখতে চাইলে আমি পকেট থেকে টিকিট বার করে হাতে দিলাম। চেকার চার্টের সাথে মিলিয়ে বলে উঠলো। ‘গৌতম সেন, বিদিশা সেন। থ্যাঙ্ক উ।‘ চেকার টিকিটটা ফিরিয়ে দিয়ে বেড়িয়ে গেলে আমি টিকিটটা পকেটে রাখতে গিয়ে দেখি বিদিশা আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি টিকিটটা রাখতে রাখতে ভুরু নাচাতে ও বলল, ‘পদবী জানলে কি করে?’

আমি ধরা পড়ে গিয়ে আমতা আমতা করে বলে উঠলাম, ‘আকচুয়ালি তোমার পদবিটা তো আর জানি না আবার সেই মুহূর্তে বলতে হবে বলে নিজেরটাই বলে দিয়েছিলাম। আই এম সরি।‘

বিদিশা তার ফর্সা হাতটা আমার থাইয়ের উপর রেখে আমাকে বলল, ‘নেভার মাইন্ড। আমারও পদবী সেন।‘ বলে খুব সুন্দর করে হেসে উঠলো। আমি ওর সুন্দর দাঁতের সেট দেখে ভাবলাম ভগবান ছপ্পর ফারকে দিয়েছে।‘

ও জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে। ওর হাতটা এখনো আমার থাইয়ের উপর রাখা। আঙ্গুলগুলো পেলব। নখে সবুজ নেল পালিশ। হাতে সবুজ চুরি। সো ম্যাচিং। শরীর স্বাস্থ্য খুব ভালো। জানি না এই রকম মেয়ে একা আছে কি না আরও ছেলে বন্ধু আছে। বিশ্বাস করা মুশকিল এ ধরনের সুন্দরী মেয়ে একা লাইফ কাটাবে।

সাঁতরাগাছি পেরিয়ে যেতে ও মুখ ঘুরিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করলো, মুখে মুচকি হাসি, ‘কি বন্ধুকে পছন্দ হয়েছে?’

আমি ওর দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলাম। তারপর বললাম, ‘পছন্দ? হুম, বিশ্বাস করবে কি করবে না জানি না তবে আমি খুব লাকি তোমাকে বন্ধু পেয়ে। আমার এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না তুমি আমার পাশে বসে আছো। তোমাকে যখন প্রথম দেখলাম হেঁটে আস্তে আমি ভাবিনি ওটা তুমি হতে পারো।‘

ও একটু হেসে আবার জানালা দিয়ে বাইরে দেখতে লাগলো। আমি ওর লম্বা ঘন চুলের দিকে তাকিয়ে ভাবতে লাগলাম সত্যি বিশ্বাস হয় না যে তুমি এখনো একলাই থাক আর আমার সাথে তুমি বেড়িয়ে এসেছ। ভাগ্য কতোটা ঠিক পড়ে বোঝা যাবে।

আমি ওকে যাচাই করার জন্য জিজ্ঞেস করলাম, ‘আর আমাকে? আমাকে দেখে কেমন লাগলো তোমার?’

ও আবার আমার দিকে মুখ ঘোরালো। একটু দেখে আমাকে বলল, ‘বলতে পারছি না। বলতে হলে একটু উঠে দাঁড়াতে হবে। দাঁড়াও দেখি একটু সোজা হয়ে।‘

আমি ভাবলাম আবার ঠিক মুরগী করার তাল করেছে। তবুও আমি একটু ইতস্তত করে উঠে দাঁড়ালাম। ও উঠে দাঁড়ালো আর আমার হাত দুটো কোমরের পাশে ভাঁজ করে
রেখে বলল, ‘হ্যাঁ এই ভাবে, বি স্মার্ট।‘



বিদিশা একটু দূরে গিয়ে আমাকে দেখতে লাগলো। আমি বোকার মতো ওর দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছি আর ভাবছি এখন কি আমি সত্যি মুরগী। কিছুক্ষণ এইভাবে থাকার পর দেখলাম ও মিষ্টি হেসে আমার কাছে এলো আর আমার হাত ধরে সিটের উপর বসিয়ে দিলো। আমার গা ঘেঁসে বসে বলল, ‘সত্যি কথা বলব, তোমাকে দেখে মনেই হয় না তোমার ৫০ বছর। এখনো যে কেউ তোমাকে দেখে বলবে হার্ডলি উ আর ৪০।‘

আমি ওর চোখে চোখ রেখে বললাম। ‘বিদিশা তোমার কাছে আমার মনে হয় আমি কাফি মুরগী হয়েছি। এটাও কি আরেকবার মুরগী বানান হোল?’

বিদিশা বড় বড় চোখ করে বলল, ‘মুরগী, সে আবার কি কথা। যেটা মনে হল সেটাই বললাম। তুমি বিশ্বাস করো আর নাই করো।‘

ওর চোখ মুখ দেখে মনে হোল ও সত্যি কথাই বলছে। নিজেকে খুব গর্বিত মনে হোল একজন সুন্দরীর মুখ থেকে প্রসংশা শুনতে পেয়ে। সামনে লটকানো আয়নায় নিজের মুখটা একবার উঁকি মেরে দেখে নিলাম। জানি না মনে হল যেন ইয়েস আই এম লুকিং গুড।

ওর পাশে এসে বসলাম। ওর মতো গা ঘেঁসে বসতে সাহস পেলাম না। ও জানালা থেকে মুখ ঘুরিয়ে আমাকে দেখল আর বলল, ‘হাই গুড লুকিং ওল্ড ম্যান। জানো আমি আবার বলছি উ হাভ মেনটেন উর ফিগার নাইস্লি। আই এম প্রাউড টু বি উর ফ্রেন্ড।‘
তারপর অনেক কথা বলতে বলতে খেয়াল করলাম ঝারসুগুদাহ প্রায় পৌঁছে গেছি। আমি তড়িঘড়ি ব্যাগগুলো সিটের নিচ থেকে টেনে বার করে ওকে বললাম, ‘বিদিশা হারি। স্টেশন এসে গেছে। আর কিছুক্ষণের মধ্যে আমরা পৌঁছে যাবো।‘

বিদিশা উঠে শাড়ি ঠিক করে তাকাতেই আমি কুপের দরজা খুলে বেড়িয়ে এলাম, পেছনে বিদিশা। স্টেশনে ট্রেন থামতেই আমরা নেমে গেলাম। বাইরে একটা গাড়ি ভাড়া করে চললাম হোটেলের উদ্দেশ্যে। বলাই ছিল। অর্চারড হোটেল। আমি কয়েকবার এখানে এসে থেকেছি। বাঙালি পরিচালিত। রিশেপ্সনে ঢুকতেই মেয়েটি ওয়েলকাম করলো। সুন্দর হেসে বলল বিদিশার দিকে তাকিয়ে ওকেও ওয়েলকাম ম্যাডাম বলে আমাকে বলল, ‘স্যার আপনার জন্য ২০১ রুম ঠিক করে রেখেছি। আপনার আগের দিনের রিকুয়েস্ট মনে আছে আমার।‘

আমি থ্যাঙ্ক উ বলে ওর হাত থেকে কার্ডটা নিলাম। ওটাই দরজা খোলবার চাবি। বিদিশাকে নিয়ে লিফটে ঢুকে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললাম যাক মেয়েটা প্রশ্ন করে নি বিদিশাকে নিয়ে। বিদিশার দিকে তাকাতে বিদিশা মুচকি হাসল। লিফট থেমে গেল ২নং ফ্লোরে। আমরা বেড়িয়ে এলাম আর ২০১ এর দরজা খুলে ভিতরে ঢুকলাম।

ব্যাগগুলো নামিয়ে রাখতেই বিদিশা বম্ব ছাড়ল, ‘গৌতম খুব যে একটাই ঘর নিলে। তুমি কি এই ঘরে আমার সাথেই থাকবে?’

আশা করেছিলাম বম্বটা। উত্তর দিতে গিয়ে ঢোঁক গিলতে হোল। আমি বলতে চাইলাম, ‘না মানে কি করে দুটো আলাদা রুম নিতে পারতাম বলতো? ওরা কি ভাবতো?’

বিদিশা গম্ভীর হয়ে বলল, ‘কি ভাবতো আবার? ভাবতো তোমার কোম্পানির আমিও একটা স্টাফ। ঠিক বললাম কিনা?’

আমি ঘাবড়ে উত্তর দি, ‘সেটা ঠিক বটে। তাইতো করতে পারতাম আমি। একদম খেয়াল করি নি।‘ ওর দিকে তাকিয়ে বলি, ‘তবে কি যাবো নিচে, আরেকটা রুম দিতে বলব?’

বিদিশা আয়নার দিকে এগিয়ে চুলের ভাঁজ খুলতে খুলতে বলল, ‘তুমি কি একদম বোকা? এখন যদি আরেকটা রুমের কথা বলতে যাও, তাহলে ওরা কি ভাববে যে তোমার অসৎ উদ্দ্যেশ্যে আমি রাজি হই নি বলে তুমি আরেকটা রুম নিতে এসেছ।‘

আমি স্বগতোক্তির মতো বলে উঠলাম, ‘অসৎ উদ্দ্যেশ্য?’

ও সেই চুলের জট খুলতে খুলতে বলল, ‘আর ন্যাকামো করতে হবে না। দারজা হাট করে খলে। বন্ধ করবে প্লিস?’

আমি তাড়াতাড়ি এগিয়ে গিয়ে দরজাটা বন্ধ করলাম। বললাম, ‘হ্যাঁ, দরজাটা হাট করে খোলা।‘

বিদিশার চুল খোলা হয়ে গেছে। চিরুনিটা নামিয়ে বলল, ‘আমি বাথরুমে যাচ্ছি। আমার পড়ে তুমি যেও।‘ ও বাথরুমের দিকে এগিয়ে গেল আর আমি বোকার মতো ওর যাওয়ার দিকে হাঁ করে তাকিয়ে থাকলাম।

ভিতরে ঢুকে ও দরজাটা বন্ধ করতেই একরাশ লজ্জা আমাকে গ্রাস করলো। ছিঃ ছিঃ কি লজ্জার কথা। মেয়েটার কাছে কি অপমানটাই না হলাম একটু বোকামির জন্য। কি ক্ষতিটা হত যদি আমি জিজ্ঞেসই করতাম। চমক ভাঙল বিদিশার গলা শুনে, ‘গৌতম আমার পার্সে আমার ব্যাগের চাবি আছে। ব্যাগটা খুললেই উপরে দেখবে আমার একটা নাইটি আছে। একটু বার করে দাও না প্লিস।‘

আমি সম্মোহনের মতো ওর পার্স খুলে ছোট চাবিটা বার করে ওর ব্যাগটা খুললাম। খুলতেই দেখি ওপরে ব্রা আর প্যান্টি রয়েছে সাজানো। আমি ভয়ে দুম করে ঢাকনাটা বন্ধ করে দিলাম আর ভাবতে থাকলাম কি করা উচিত আমার। আবার সম্বিত ফিরল

ওর গলা শুনে, ‘কি হোল, দেরি হচ্ছে কেন?’

যা থাকে কপালে বলে আবার ব্যাগটা খুললাম। ব্রা আর প্যান্টিগুলো সরিয়ে নাইটি বার করে আনলাম আর ব্রা প্যান্টি ঠিক করে সাজিয়ে রাখলাম। দরজাতে টোকা দিতেই ও একটু দরজাটা ফাঁক করে ওর সুন্দর পেলব একটা হাত বার করে দিলো। নাইটিটা হাতে দিতেই ও বলে উঠলো, ‘দাঁড়াও যেও না।‘

কিছুক্ষণ পড়ে আবার হাতটা বেড়িয়ে এলো এবার ওর হাতে শাড়ি আর সায়া। আমাকে বলল, ‘একটু হেল্প করো প্লিস, এগুলো খাটের ওপর রাখ।‘

আমি মন্ত্রমুগ্ধর মতো ওর হাত থেকে সেগুলো নিয়ে সরে এলাম ওখান থেকে। যেমন ভাবে মিতার শাড়ি আর সায়া ভাঁজ করে রাখি তেমন ভাবে ওগুলোও ভাঁজ করে রেখে দিলাম খাটের উপর। ওর কোন ব্রা পেলাম না। নিশ্চয় খোলে নি। আর শাড়ির নিচে প্যান্টি পরার তো প্রশ্নই ওঠে না। আমার তো তাই মনে হোল। যাইহোক আমার ব্যাগ খুলে আমি আমার নাইট ড্রেস বার করে নিলাম। দরজা খোলার শব্দ পেলাম। মুখ ঘুরিয়ে দেখি বিদিশা নাইটি পড়ে বেড়িয়ে এসেছে। একটা সদ্য প্রস্ফুটিত ফুলের মতো ওকে দেখতে লাগছে। চুল ছাড়া, নাইটির কালারের সাথে গায়ের রং যেন ফেটে বেরোচ্ছে। বিদিশাকে আরও সুন্দর দেখাচ্ছে। ও আমার দিকে তাকিয়ে হেসে বলল, ‘তুমি ফ্রেস হয়ে নাও।‘ বলে ও আয়নার দিকে গেল। আমি ওর স্তনের দোলা দেখতে পেলাম নাইটির নিচে। মানে ও নিচে কিছু পড়ে নি। আমি আর নজর না দিয়ে টাওয়েল কোমরে জড়িয়ে ওর দিকে পেছন ঘুরে প্যান্ট খুলে নিলাম। ভাঁজ করে দেওয়াল আলমারিতে হাঙ্গারে ঝুলিয়ে দেওয়ার পর শার্টটাও খুলে রেখে দিলাম। গেঞ্জিটা খুলে ভেতরে রেখে দিয়ে আমি বাথরুমে ঢুকলাম। ঢুকতেই নাকে বিদিশার গায়ের গন্ধ এসে লাগলো। নেশার মতো গন্ধ। মনমাতানো করা, পাগল করা একটা গন্ধ।

আমি দেখতে পেলাম দেওয়াল রডে ওর ভেজা ব্রা আর প্যান্টি ঝুলছে। ও কেঁচে শুকোতে দিয়েছে। প্যান্টির দিকে নজর দিতে মনে হোল স্টাইলিশ প্যান্টি। আস্তে করে হাতে নিলাম। সামনে মেলে ধরতে দেখি প্যান্টির সামনের দিকটা ফিশনেট লাগানো। প্যান্টিটা পড়ে যেন ওকে দেখতে পাচ্ছি। ওর যোনির সবটা দৃশ্যমান। আমার হাত কাঁপতে লাগলো। আমি যেমন ভাবে প্যান্টিটা রাখা ছিল তেমনি ভাবে রেখে দিয়ে আমিও আমার জাঙ্গিয়া খুলে কেঁচে নিলাম। আমার লিঙ্গটা থিরথির করে কাঁপছে। প্যান্টির এফেক্ট। কেঁচে দেবার পর দেখি শুকোতে দেবার জায়গা একটাই ওই রড। কিন্তু আবার রিস্ক নিতে আমি রাজি নই, আমি সওয়ারের ওপর আমারটা শুকোতে দিলাম। না রইল বাঁশ না বাজবে বাঁশী। আমি স্নান সেরে আমার নাইট প্যান্টটা পড়ে বেড়িয়ে এলাম।

বিদিশাকে দেখলাম টিভি চালিয়ে দেখছে। আমার একটু মদ খাওয়া দরকার। বাড়িতে থাকলে মিতার জন্য খাওয়া যায় না, আমিই খাই না, কিন্তু বাইরে বেরোলে আমি রাজা। আমার মালিক তখন আমি নিজে। বাট নাও হেয়ার ইস শি। আমি চুল আঁচড়াতে আঁচড়াতে বললাম, ‘বিদিশা, কি নেবে?’ দেখি ও কি উত্তর দেয়। তারপরে কায়দা করে বলা যাবে।

আমার হাত থেকে চিরুনি পড়ে গেল ওর কথা শুনে। ও উত্তর দিলো, ‘ভদকা বল, সাথে যাহোক স্নাক্স।‘

সেকি, মেয়েটা কি সহজভাবে উত্তরটা দিলো আর আমি কি করি কিভাবে করি ভাবতে লেগেছিলাম। বোকাচোদা। নিজেকে খিস্তি দিলাম। একটা মেয়ে এতো সহজ হতে পারে আর আমি কিনা এনএলপিপি করে যাচ্ছি। মানে নিজ লিঙ্গম পোঁদে পুরম। ছ্যাঃ।

আমি আর কোন কথা না বলে ফোনে অর্ডারটা দিলাম। কিছুক্ষণ পড়ে ওয়েটার অর্ডারটা রুমে দিয়ে গেল। আমি দুটো গ্লাসে যখন ভদকা ঢালছি বিদিশা কাছে এসে আমার গা ঘেঁসে দাঁড়ালো, বলল, ‘অবাক হলে না আমার মুখ থেকে ভদকা শুনে? আসলে একা থেকে থেকে সময় কাটাতেই এই অভ্যেস হয়ে গেছে। এখন না খেলে যেন ঘুম হবে না।‘

আমার গা ঘেঁসে দাঁড়ানোতে আমি ওর গায়ের উত্তাপ পাচ্ছি, ধীরে ধীরে আমার শরীরে ছড়িয়ে যাচ্ছে। আমি বুঝতে পারছি আর কিছুক্ষণ ও এভাবে দাঁড়ালে আমার লিঙ্গ আমাকে অপ্রস্তুতে ফেলবে। তাই আমি দুটো গ্লাস তুলে ওর থেকে একটু দূরে সরে গিয়ে ওর হাতে একটা গ্লাস তুলে দিয়ে বললাম, ‘খারাপ কিছু না। বরং একটা বয়সে ড্রিংক করলে সেটা শরীরের জন্য ভালো।‘ আমি স্নাক্সের ডিশ হাতে তুলে নিয়ে বললাম, ‘চল ছাদে চল। ওখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ড্রিংক করা যাবে।‘

ও মুখটা বেঁকিয়ে বলল, ‘কি বলছ, আমার নাইটির নিচে কিছু পরি নি। এ অবস্থায় কি করে বাইরে যাবো?’

আমি ওকে সাহস দিয়ে বললাম, ‘আরে এই সময় উপরে কেউ থাকে না। কেউ দেখবে না তোমাকে। আমিও তো প্যান্ট এর নিচে কিছু পড়ি নি।‘

ও আমার দিকে তাকিয়ে হাসল, বলল, ‘সে আমি জানি। তোমার সম্পত্তির দোলা দেখেই বুঝেছি।‘ ও খিল খিল করে হেসে উঠলো আমাকে আবার বোকাচোদা বানিয়ে।

আমি ওর গায়ে ঠ্যালা দিয়ে বললাম, ‘অনেক দেখেছ, চল এখন বাইরে।‘

আমরা বেড়িয়ে এলাম। দরজা বন্ধ করে আমি ঘুরে দেখি ও করিডোর ধরে ছাদের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। করিডোরেরে শেষ মাথায় একটা জোরালো লাইট জ্বলছে। আমি পরিস্কার ওর নাইটির ভেতর দিয়ে ওর আবছা শারীরের অবয়ব বুঝতে পারছি। ওর পিঠ, কোমর, পাছার ঢেউ, সেই ঢেউয়ের নেমে আসা থাইয়ের সাথে সুডৌল পাছার মিলিয়ে যাওয়া, ওর লম্বা কমল পা, সব। আমার লিঙ্গরাজ এখন বাঁধন ছাড়া। ও ধীরে ধীরে জেগে উঠছে, প্যান্ট এর উপর দিয়ে ওর উত্থান পরিস্কার। এ অবস্থায় ওর সামনে দাঁড়াবো কি করে ভাবতেই ও ঘুরে দাঁড়িয়ে বলল, ‘কি হোল, এসো।‘

আর এসো। আমি নিজের উত্থানকে আড়াল করে বলে উঠলাম, ‘তুমি এগোও না। দারজাটা ঠিক লাগছে না। আমি আসছি।‘

বিদিশা কিছু না বলে ছাদের দিকে এগিয়ে গেল। আমি আরেকটু ওয়েট করে স্বাভাবিক হয়ে ওর দিকে এগোলাম। ওর কাছে আসতেই বলে উঠলাম, ‘দরজাটা বোধহয় ঠিক নেই। আনেক চেষ্টা করে লাগাতে পারলাম।‘

ও গ্লাসটা উঁচু করে ধরে বলে উঠলো, ‘চিয়ার্স, আমাদের দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্তের জন্য।‘
আমিও চিয়ার্স বলে একটা সিপ দিলাম। তারপর এগিয়ে গেলাম স্বুমিং পুলের দিকে। আমি জানি এ সময় কিছু মেয়ে এখানে সাঁতার কাটে। মানে আগে দেখেছি আরকি। দেখলাম আমার অনুমান সত্যি। তিনটে মেয়ে বিকিনি পড়ে সাঁতার কাটছে। জলটা একদম নীল, নীল আলো চারপাশে জ্বলছে। কেমন একটা মোহময় পরিবেশ। ২/৩টে হোটেলের ছেলে এধার ওধার ঘুরে বেড়াচ্ছে। মেয়েগুলোর তাতে ভ্রুক্ষেপ নেই। ওরা হাসছে, সাঁতরাচ্ছে, একে অন্য জনের দিকে জল ছুঁড়ছে। আমরা ওপরে দাঁড়িয়ে দেখছি।

বিদিশা জিজ্ঞেস করলো, ‘ছেলেরা সাঁতার কাটতে পারে না এদের মধ্যে?’

আমি বললাম, ‘কেন পারে না। নিশ্চয় পারে। এটা সকলের জন্য।‘ ও আর কিছু না বলে অন্য দিকে এগিয়ে গেল। বেশ ভালই লাগছিল ব্রা প্যান্টি পরা মেয়েগুলোকে দেখতে, বেশ ডাগর ডগর। পাছাগুলো ভরাট, বুকগুলো বেশ উন্নত। কিন্তু বিদিশা যে আরও ভালো। তাই ইচ্ছে না থাকলেও আমিও এগোলাম।

এবার একটু সাহস করে বিদিশার কাছে দাঁড়ালাম আমার গা ওর গায়ের সাথে লাগিয়ে। একটু ওয়েট করলাম কিছু বলে কিনা। ওকে দেখলাম নিজের শরীরকে আমার উপর এলিয়ে দিতে যাতে আরও ভালোভাবে ওর দেহের ভার আমার দেহের ওপর পড়ে। আমি ওর গায়ের ওম নিতে নিতে গ্লাসে চুমুক দিলাম। বিদিশা একটা সিপ দিয়ে বলল, ‘ব্রা প্যান্টি পরা মেয়ে দেখতে ভালো লাগে কি বোলো?’

আমি মানে মানে করে বলে উঠলাম, ‘তা বৈকি। বয়স হলেও ছেলে ধর্ম তো আর হারিয়ে যায় নি। দেখতে তো একটু মন চায়। তুমি কি রাগ করেছো নাকি?’

ও বলে উঠলো, ‘রাগ করব কেন। দেখার জিনিস তো দেখবেই।‘

সেই মুহূর্তে আমার ফোনটা বেজে উঠলো। বিদিশা মন্তব্য করলো, ‘দেখ বউয়ের ফোন কিনা।‘

আমি ফোনে বার করে দেখলাম সত্যি মিতার ফোন। ওর দিকে তাকিয়ে আমি উত্তর করলাম, ‘বোলো।‘

মিতা ফোনে উত্তর দিলো, ‘কখন পৌঁছালে? কোন খবর দাও নি যে। কারোকে সাথে নিয়ে গেছ নাকি?’

আমি অবাক হলাম এই ভেবে মেয়েরা কি সত্যি অন্তর্যামী। বিদিশা ঠিক বলছে, মিতা ঠিক বলছে। আমি জবাব দিলাম, ‘কেন এ কথা বলছ? তোমার সন্দেহ হচ্ছে নাকি?’

ওদিক থেকে মিতার গলা ভেসে এলো, ‘না ঠিক তা না। অন্য সময় পৌঁছেই ফোন করো কিনা।‘

আমি মিথ্যে বললাম, ‘না ট্রেনটা একটু লেট ছিল। গা ধুয়ে ঠিক করছিলাম তোমাকে ফোন করব, তোমার ফোন এসে গেল।‘

মিতা উত্তর দিলো, ‘ট্রেনে কোন কষ্ট হয় নি তো? ঠিক সময়ে খেয়ে নিও। দেরি করো না কেমন। ভালো থেকো। রাখলাম।‘

আমি ফোনটা বন্ধ করতেই বিদিশা প্রশ্ন করলো, ‘কাউকে সাথে নিয়ে এসেছ কিনা জিজ্ঞেস করছিলো তো?’

আমি বললাম, ‘তোমরা মেয়েরা কি অন্তর্যামী। সব কিছু ঠিক বোলো।‘

বিদিশা বলল, ‘অন্তর্যামী হবার কি আছে? ট্রেন লেট ছিল বলে তুমি মিথ্যে বললে, তাতেই মনে হোল।‘

আমি আবার বললাম, ‘আর মিতার ফোন এসেছে কি করে জানলে?’

ও জবাব দিলো, ‘সোজা ব্যাপার। তুমি দুপুর থেকে আমার সাথে আছো। একবারও মিতাকে ফোন করো নি। খুব স্বাভাবিক যে ও ফোন করবে। আমিও হলে তাই করতাম।‘

আমি মনে মনে ভাবলাম বালের তোমাদের হিসেব সব ঠিক আছে শুধু আমি একটা গ্রেট বোকাচোদা আছি যে এগুলো কিছুই বোঝে না।

আমরা দুজনে মদ খেতে খেতে এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত হাঁটছিলাম। দুপেগ শেষ হয়ে গেছে এবং আমি আরেকটু সাহসী হয়ে উঠেছি। সাহসী বলতে বিদিশাকে ছুঁয়ে বা ঠেলে কথা বলছি এই রকম আর কি। তিনটে পেগ ঢালার পর আমি বিদিশাকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘আমার একটা প্রশ্ন করতে খুব ইচ্ছে করছে জানো।‘

বিদিশা ওর বাঁ হাতের আঙুলগুলো আমার ডান হাতের আঙুলে আঁকড়ে ধরে প্রশ্ন করলো, ‘আমার ব্যাপারে?’

আমি বললাম, ‘হ্যাঁ, তোমার ব্যাপারে।‘

ও হেসে উঠে বলল, ‘এতদিন পরিচয় হবার পরও কথা হবার পরও তোমার আমার সম্বন্ধে প্রশ্ন আছে?’

আমরা আবার সেই সুইমিং পুলের কাছে এসে দাঁড়ালাম। মেয়েগুলো আর নেই। পুলটা এখন ফাঁকা। নীল জলের উপর মৃদু বাতাসের তরঙ্গ খেলে যাচ্ছে। আমি জলের দিকে চোখ রেখে বললাম, ‘হ্যাঁ আছে। তুমি আমাকে বোলো আমি সময় কাটানোর বন্ধু খুঁজে তোমাকে পেয়েছি। আমার ভালো লেগেছে। কিন্তু তোমার মতো একটা সুন্দরী, যার স্বাস্থ্য আছে, ভালো কথা বলতে পারে সে কি আর এতদিন বন্ধু ছাড়া থাকতে পারে?’

বিদিশা ওর পাছাটা ছাদের পাঁচিলের দিকে ঠেসান দিয়ে আমার দিকে ঘুরে দাঁড়ালো। কিছুক্ষণ চুপ করে থাকার পর একটা নিঃশ্বাস নিয়ে বলল, ‘স্বামী মারা যাবার পর আমি আমার বাপের বাড়িতে ফিরে যায় নি কারন দাদাদের অত্যাচারের জন্য। বিয়ে হবার আগে থেকে দাদারা আমাকে ভালো চোখে দেখত না বোধহয় সুন্দরী ছিলাম বলে কিংবা পাড়ার ছেলেরা আমার জন্য লাইন লাগাতো বলে। সুতরাং সেই বাড়িতে ফিরে যাবার প্রশ্ন ছিল না। শ্বশুর বাড়ি থেকে ও বিয়ের পরে পরে বেড়িয়ে এসেছিল। আমার শ্বশুর বাড়ীর ধারনা ছিল আমি বুঝি আমার স্বামীর মাথা বিগড়ে দিয়েছিলাম। তাই সে বাড়িতে ফিরে যাবার প্রশ্নটাও দুরেই ছিল। হ্যাঁ, আমার স্বামী ভালো চাকরি করতো। শ্বশুর বাড়ি ছেড়ে আসার পর খুব তাড়াতাড়ি আমরা আমাদের নিজের বাড়ি তৈরি করি। তাই নিজের ঘর ছেড়ে অন্য কোথাও যাবার ব্যাপারটা দিমাগেই আসেনি।‘

আমি জানতেও পারিনি ও ওর পেগ কখন শেষ করে দিয়েছে। ও গ্লাসটা বাড়িয়ে দিতে বুঝলাম। আমি বললাম, ‘আজ একটু বেশি হয়ে যাচ্ছে না বিদিশা? দু পেগ তো হয়ে গেছে।‘

বিদিশা বলল, ‘না আজ তুমি যে সাথে আছো। একটু লাগাম ছাড়া হতে দোষ কি। দাও আজ একটু মনের সুখে মদ খাই।‘
কথা না বাড়িয়ে আমি আরেকটা পেগ ঢেলে দিলাম আর জল মিশিয়ে দিলাম। ও একটা সিপ মেরে আবার বলতে শুরু করলো, ‘ বেশ ছিলাম ছেলেকে নিয়ে। ওকে কলেজে নিয়ে যাওয়া, নিয়ে আসা, বাজার করা এর মধ্যে দিন কেটে যাচ্ছিলো। বন্ধুত্ব যে হয় নি ভুল কথা। বাট অল আর বিহাইনড মাই ফিগার। ওরা ভেবেছিল যেহেতু আমার স্বামী নেই সেহেতু আমি দেহের সুখের খোঁজে ফিরি। কতো প্রস্তাব, কতো লোভ, কতো ইংগিত। আনেক কিছু পিছনে ফেলে এসেছি গৌতম বাবু। দেহের সুখের তৃষ্ণা আছে ঠিকই তবে তার জন্য বন্ধু খোঁজা না সেটা আমার আসে নি। জানো, একজনের সাথে খুব বন্ধুত্ব হয়েছিল। প্রায় দুবছর আমরা খুব ঘনিষ্ঠ হয়ে ছিলাম। দুজনে দুজনকে ছুঁয়েছিলাম পর্যন্ত।‘ হঠাৎ বিদিশা কেমন উদাস হয়ে গেল।

আমি ফিসফিস করে বলে উঠলাম, ‘তারপর…।।‘
Like Reply


Messages In This Thread
RE: জীবনের সুখের জন্য by লাভদীপদা - by ronylol - 08-05-2019, 04:45 PM



Users browsing this thread: 3 Guest(s)