08-12-2021, 03:49 PM
(This post was last modified: 08-12-2021, 03:51 PM by Jaybengsl. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
কাবেরীর দিন কাটে না,কাবেরীর রাত কাটে না।
*********************
সুকুমার থাকতে ভীষণ ব্যস্ততা ছিলো কাবেরীর।সুকুমার ফ্রিজের বাসী খাবার খেতে পারে না।সাতটায় বিছানা তুলে,চা খেয়ে ঘর গুছোতে গুছোতেই সুকুমার বাজার নিয়ে ফিরতো।
সুকুমার ন'টায় অফিস বেরোবো।ঐ অল্প সময়ের মধ্যেই প্রায় ঝড়ের বেগে কাবেরী ডাল একটা ভাজা, ভাত, আর মাছ রান্না করে ফেলতো।তারপর সুকুমারের রুটি তরকারির টিফিনটাও গুছিয়ে ফেলে সুকুমারকে খেতে দিতো।
সুকুমার বেরতে না বেরতেই সুমনের কলেজের সময় হয়ে যেত।আবার সুমনকে খেতে দেওয়া,ওর কলেজ ব্যাগ গুছোনো।
আর এখন বিশ্রাম আর বিশ্রাম।সুকুমার নেই।করোনায় সুমনের কলেজও বন্ধ।
রোজ সকালে নীচের রাস্তা থেকে দোতলায় কাগজ ছুঁড়ে দিয়ে যায় পল্টু দা।
কাবেরীর কাগজ পড়তে ভালো লাগে না।সেই রাজনীতির খবর,খুন,জখম,ডাকাতি আর ;.,ের খবর।
মানুষ পশু হয়ে যাচ্ছে।নয়তো চার বছরের শিশুকে কেউ ;., করে খুন করতে পারে? সবাই মিলে ;., করে ধর্ষিতাকে চলন্ত বাস থেকে ছুঁড়ে ফেলতে পারে?
এসব খবর পড়লে কাবেরী শিউরে ওঠে।
আর এখন সবার উপর করোনার খবর।কতো আক্রান্ত হচ্ছে,কতো মারা যাচ্ছে।ডিপ্রেসন এসে যায় মাঝে মাঝেই ।
এসব খবর পড়ার চেয়ে না পড়াই ভালো।সুমন পাশের ঘরে পড়তে পড়তে কখনো খেলার খবরের পৃষ্ঠাটা নিয়ে যায়।
TV দেখতেও ভালো লাগে না।যত অবক্ষয়ের গল্প।বৌ থাকতে এক পুরুষের দু প্রেমিকা।এক মেয়ের বর থাকতে দুটো ভাতার।আর সব সিরিয়ালে একটা বিধবা পিসি বা গ্রামতুতো বোন থাকবে।সে সিরিয়ালের সতীলক্ষী বৌএর পিছনে কাঠি করবে।সব জেনেও বাড়ীর কেউ তার প্রতিবাদ করবে না।
দূর দূর।আগে কত ভালো ভালো সিরিয়াল হতো।
কাবেরীর দিন কেটে যায় এখন মোবাইলে।
রাতে একা বিছানায় কাবেরী ছটফট করে।ঘুম আসে না দিনের পর দিন।সকালে উঠে ঝিমোয় ।Sex life এ সুকুমার খুব active।কুড়ি বছরে হয়তো তার একটু ভাটা পড়েছে।
তবুও কাবেরীর কখনো নিজেকে sex life এ অতৃপ্ত মনে হয় নি।
দু একরাত বাদে বাদেই সুকুমার ওকে উল্টে পাল্টে অস্থির করে তুলতো।গায়ে একটা সুতো রাখতে দিতো না।সুকুমার সিগারেট খায় না।শোবার আগে দু পেগ হুইস্কি খেত।কাবেরীও এক আধ পেগ খেতো।
কি সব অদ্ভুৎ অদ্ভুত আসনে যে সুকুমার তৃপ্তি পেত।কখনো কষ্ট হলেও কাবেরী তাতে বাধা দিতো না।
ট্রান্সফার এর মেলটা যেদিন পেল সুকুমার। সেই দিনই কাবেরীর জন্য একটা স্মার্ট ফোন কিনে এনেছিল সে।
কাবেরীর তো এমনি সাধারন মোবাইলই ভালো ছিলো।স্মার্ট ফোনে কত জটিল ব্যাপার স্যাপার।শিখতে শিখতেই তিন মাস লেগে গেল।
সুমন কাবেরীর মোবাইলে ফেসবুক,মেসেঞ্জার,ওয়াটস্যাপ খুলে দিয়ে দিয়েছে।শিখিয়ে দিয়েছে কোনটা কেমন করে চালাতে হয়।শেয়ার করা,ফরওয়ার্ড করা,কমেন্ট করা,এইসব।
মার ফেসবুক প্রোফাইল পিকচারে সুমন নিজের পছন্দের ছবিটাই দিয়েছে।
সিমলায় লাল চুড়িদার পড়ে আপেল গাছের নিচে দাড়ানো কাবেরী।
সকাল সন্ধ্যে বন্ধুদের "Good morning","Good night" আরো কত রকম খবর আসে ওয়াটস্যাপ আর মেসেঞ্জারে।
ফেসবুকে পুরনো বন্ধু,আত্মীয় স্বজনদের পেয়েছে।তবে মাঝে মাঝে অচেনা মানুষজন ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠায়, বিরক্ত করে,কেউ কেউ অসভ্যতাও করে।
ফেসবুকে গল্পের ফোরামে গল্প পড়ে।you tube এ গান শোনে।এই করেই খানিকটা সময় কেটে যায় কাবেরীর।
তবুও এখন কাবেরীর মনে হয় এসব ফেসবুক টেসবুক না থাকলেই ভালো হত।সুকুমার থাকলে ঝগড়াঝাঁটি হতো,ভালোবাসা হত।এখন ফেসবুকের ফাঁদে পড়ে সে অন্য কাবেরী হয়ে যাচ্ছে।
*********************
সুকুমার থাকতে ভীষণ ব্যস্ততা ছিলো কাবেরীর।সুকুমার ফ্রিজের বাসী খাবার খেতে পারে না।সাতটায় বিছানা তুলে,চা খেয়ে ঘর গুছোতে গুছোতেই সুকুমার বাজার নিয়ে ফিরতো।
সুকুমার ন'টায় অফিস বেরোবো।ঐ অল্প সময়ের মধ্যেই প্রায় ঝড়ের বেগে কাবেরী ডাল একটা ভাজা, ভাত, আর মাছ রান্না করে ফেলতো।তারপর সুকুমারের রুটি তরকারির টিফিনটাও গুছিয়ে ফেলে সুকুমারকে খেতে দিতো।
সুকুমার বেরতে না বেরতেই সুমনের কলেজের সময় হয়ে যেত।আবার সুমনকে খেতে দেওয়া,ওর কলেজ ব্যাগ গুছোনো।
আর এখন বিশ্রাম আর বিশ্রাম।সুকুমার নেই।করোনায় সুমনের কলেজও বন্ধ।
রোজ সকালে নীচের রাস্তা থেকে দোতলায় কাগজ ছুঁড়ে দিয়ে যায় পল্টু দা।
কাবেরীর কাগজ পড়তে ভালো লাগে না।সেই রাজনীতির খবর,খুন,জখম,ডাকাতি আর ;.,ের খবর।
মানুষ পশু হয়ে যাচ্ছে।নয়তো চার বছরের শিশুকে কেউ ;., করে খুন করতে পারে? সবাই মিলে ;., করে ধর্ষিতাকে চলন্ত বাস থেকে ছুঁড়ে ফেলতে পারে?
এসব খবর পড়লে কাবেরী শিউরে ওঠে।
আর এখন সবার উপর করোনার খবর।কতো আক্রান্ত হচ্ছে,কতো মারা যাচ্ছে।ডিপ্রেসন এসে যায় মাঝে মাঝেই ।
এসব খবর পড়ার চেয়ে না পড়াই ভালো।সুমন পাশের ঘরে পড়তে পড়তে কখনো খেলার খবরের পৃষ্ঠাটা নিয়ে যায়।
TV দেখতেও ভালো লাগে না।যত অবক্ষয়ের গল্প।বৌ থাকতে এক পুরুষের দু প্রেমিকা।এক মেয়ের বর থাকতে দুটো ভাতার।আর সব সিরিয়ালে একটা বিধবা পিসি বা গ্রামতুতো বোন থাকবে।সে সিরিয়ালের সতীলক্ষী বৌএর পিছনে কাঠি করবে।সব জেনেও বাড়ীর কেউ তার প্রতিবাদ করবে না।
দূর দূর।আগে কত ভালো ভালো সিরিয়াল হতো।
কাবেরীর দিন কেটে যায় এখন মোবাইলে।
রাতে একা বিছানায় কাবেরী ছটফট করে।ঘুম আসে না দিনের পর দিন।সকালে উঠে ঝিমোয় ।Sex life এ সুকুমার খুব active।কুড়ি বছরে হয়তো তার একটু ভাটা পড়েছে।
তবুও কাবেরীর কখনো নিজেকে sex life এ অতৃপ্ত মনে হয় নি।
দু একরাত বাদে বাদেই সুকুমার ওকে উল্টে পাল্টে অস্থির করে তুলতো।গায়ে একটা সুতো রাখতে দিতো না।সুকুমার সিগারেট খায় না।শোবার আগে দু পেগ হুইস্কি খেত।কাবেরীও এক আধ পেগ খেতো।
কি সব অদ্ভুৎ অদ্ভুত আসনে যে সুকুমার তৃপ্তি পেত।কখনো কষ্ট হলেও কাবেরী তাতে বাধা দিতো না।
ট্রান্সফার এর মেলটা যেদিন পেল সুকুমার। সেই দিনই কাবেরীর জন্য একটা স্মার্ট ফোন কিনে এনেছিল সে।
কাবেরীর তো এমনি সাধারন মোবাইলই ভালো ছিলো।স্মার্ট ফোনে কত জটিল ব্যাপার স্যাপার।শিখতে শিখতেই তিন মাস লেগে গেল।
সুমন কাবেরীর মোবাইলে ফেসবুক,মেসেঞ্জার,ওয়াটস্যাপ খুলে দিয়ে দিয়েছে।শিখিয়ে দিয়েছে কোনটা কেমন করে চালাতে হয়।শেয়ার করা,ফরওয়ার্ড করা,কমেন্ট করা,এইসব।
মার ফেসবুক প্রোফাইল পিকচারে সুমন নিজের পছন্দের ছবিটাই দিয়েছে।
সিমলায় লাল চুড়িদার পড়ে আপেল গাছের নিচে দাড়ানো কাবেরী।
সকাল সন্ধ্যে বন্ধুদের "Good morning","Good night" আরো কত রকম খবর আসে ওয়াটস্যাপ আর মেসেঞ্জারে।
ফেসবুকে পুরনো বন্ধু,আত্মীয় স্বজনদের পেয়েছে।তবে মাঝে মাঝে অচেনা মানুষজন ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠায়, বিরক্ত করে,কেউ কেউ অসভ্যতাও করে।
ফেসবুকে গল্পের ফোরামে গল্প পড়ে।you tube এ গান শোনে।এই করেই খানিকটা সময় কেটে যায় কাবেরীর।
তবুও এখন কাবেরীর মনে হয় এসব ফেসবুক টেসবুক না থাকলেই ভালো হত।সুকুমার থাকলে ঝগড়াঝাঁটি হতো,ভালোবাসা হত।এখন ফেসবুকের ফাঁদে পড়ে সে অন্য কাবেরী হয়ে যাচ্ছে।