20-12-2018, 05:09 PM
(This post was last modified: 14-05-2022, 05:42 PM by bourses. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
১।।
কড়...কড়...কড়াৎ... কান ফাটানো প্রচন্ড শব্দে কাছেই বোধহয় একটা বাজ পড়ল... চতুর্দিকটা মুহুর্তের জন্য ঝলসানো আলোয় ভরিয়ে দিয়ে... আজকাল বৃষ্টি যত না হয় তার থেকেও বাজ যেন বেশিই পড়ে...
অটো থেকে নেমেই এক দৌড়ে ফ্ল্যাটের গেটের মধ্যে ঢুকে যায় পৃথা... সবে বৃষ্টিটা নেমেছে, এর পর একটু দেরী হয়ে গেলেই আর অটোও পাওয়া যেতো না হয়তো... আটকে যেতে হতো... তারপর কখন কি ভাবে ফিরতে পারতো কে জানে? হয়তো ভিজেসিজে একসা হয়েই ফিরতে হত। যা হোক বৃষ্টিটা নামার আগেই যে ফিরতে পেরেছে এই অনেক... আর সেই সাথে ভাগ্গিস এই ফ্ল্যাটটাও তার একেবারে রাস্তার ওপরে... অটো থেকে নেমেই ঢুকে পড়া যায় ভেতরে... ছাতা খোলারও দরকার পড়ে না...
ব্যাগ সামলাতে সামলাতে উঠে আসে সিড়ি বেয়ে নিজের ফ্ল্যাটের দরজার সামনে... ‘আচ্ছা ঠিক আছে মা, এখন রাখো, আমি এবার ঢুকবো...’ বাঁ কানের সাথে কাঁধটা দিয়ে মোবাইলটাকে চেপে ধরে ব্যাগের ভেতরে চাবির গোছাটা হাতড়াতে হাতড়াতে বলে পৃথা... ‘আমি পারলে পরে তোমাকে ফোন করবো’খন... তুমি এখন রাখ... বুঝেছে? রাখছি আমি...’ ব্যাগের মধ্যে থেকে সুন্দর মনিপুরী কাজ করা চাবির রিংএ আটকানো ফ্ল্যাটের চাবিটা তুলে বের করে আনে... ফোনটা কান থেকে নামিয়ে কেটে দিয়ে চাবি ঘোরায় দরজার লকএ...
কড়... কড়... কড়াৎ... আবার বাজ পড়ার শব্দ কানে তালা লেগে যাবার যোগাড় হয়... এবারে আরো কাছে কোথাও পড়ল বোধহয়...
‘অফিস থেকে এই ফিরলে নাকি?’ পেছন থেকে ভেসে আসে অলোকবাবুর গলা।
অলোকবাবু, পাশের ফ্লাটেই থাকেন ভদ্রলোক... পৃথা খেয়াল করেছে যখনই ও ফিরে দরজার কাছে এসে দাঁড়ায়, ভদ্রলোক ঠিক বেরিয়ে এসে উপযাযক হয়ে তার সাথে কথা বলতে আসবেন... ভদ্রতা করে মাথা ঘুরিয়ে একবার অলোকবাবুর দিকে তাকিয়ে একটু ঠোঁটের কোন হাসি টেনে উত্তর দেয়, ‘হ্যা, এই তো...’ ততক্ষনে নিজের ফ্ল্যাটের দরজা খুলে ফেলেছে, ভেতরে ঢোকার উদ্যোগ করে।
‘আজ মেট্রোয় খুব ভীড় ছিল মনে হচ্ছে?’ পেছন থেকে অলোকবাবুর প্রশ্ন।
‘হ্যা, তা একটু ছিল, আপনি কি করে বুঝলেন?’ একটু অবাকই হয় পৃথা।
‘না, মানে তোমার জামার তলারদিকটা কেমন ধামসে কুঁচকে গেছে তো, তাই মনে হল আর কি... হেঃ হেঃ হেঃ...’ উত্তর দিতে দিতে দেঁতো হাসি হাসতে লাগলেন ভদ্রলোক।
শুনে গা’টা কেমন ঘিন ঘিন করে ওঠে পৃথার... বুঝতে অসুবিধা হয় না যে পেছনে দাঁড়িয়ে ওই লোকটা... ওই বিচ্ছিরি লোকটা তার শরীরের আগাপাশতলা চোখ দিয়ে গিলছিল... নয়তো পোষাক ধামসে গেছে কিনা, সেটা দেখবে কি করে... মনে হল ঘুরে একটা ঠাস করে চড়িয়ে দেয়... অনেক কষ্টে রাগটাকে চেপে রাখে নিজের মধ্যে... অলোকবাবুর সাথে আর কোন কথা বা বাড়িয়ে ঢুকে পড়ে নিজের ফ্ল্যাটের মধ্যে, দড়াম করে বন্ধ করে দেয় দরজাটাকে পেছন দিকে না তাকিয়েই।
দরজার পাশেই ডান দিকের দেওয়ালে সুইচবোর্ডে হাত দিয়ে আলো জ্বালায় ঘরের... মুহুর্তের মধ্যে অন্ধকার ঘরটা বৈদ্যুতিক আলোয় ভরে ওঠে... এগিয়ে গিয়ে ডাইনিং টেবিলের ওপরে হাতের ব্যাগ আর মোবাইটা রেখে জলের বোতলটা তুলে নিয়ে ঢকঢক করে খানিকটা জল প্রায় এক নিঃশ্বাসে খেয়ে নেয়... গলাটা শুকিয়ে কাঠ হয়ে উঠেছিল ভিষন ভাবে, ব্যাগে রাখা জলের বোতলটা ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল। আজকে সত্যিই খুব ভীড় ছিল মেট্রোতে... অবস্য কবেই বা থাকে না... আজকাল তো প্রায় প্রতিদিনই ফেরার সময় মেট্রো পেতে দেরী হয়... এত ভীড় থাকে, দরজাই বন্ধ হতে চায় না... তারপর সেখান থেকে নেমে আবার অটোর লাইন দাও... উফ্, চাকরী করা তো নয়, প্রতিদিন যুদ্ধ করতে বেরোনো... তার ওপর এই অলোকবাবু... মনে পড়তেই মাথাটা ফের গরম হয়ে ওঠে পৃথার... ঠক করে হাতের মধ্যে ধরা জলের বোতলটাকে নামিয়ে রাখে টেবিলের ওপরে।
গায়ের থেকে ওড়নাটাকে টেনে খুলে ছুঁড়ে দেয় সোফার ওপরে... জিন্স টি-শার্ট বা প্যান্ট শার্টএ বেশী সচ্ছন্দ হলেও, মাঝে মধ্যে চুড়িদার কুর্তিও পড়ে অফিস যায় পৃথা, শুধু তাই বা কেন, শাড়ী পড়তেও ভালো বাসে, তবে চেষ্টা করে সেটা অফিসের সময় অ্যাভয়েড করতে, বড্ড যে লাট খেয়ে যায় শাড়ীগুলো যাতায়াতের ধকলে। একবার পেছন ফিরে তাকায় দরজার দিকে, বন্ধ আছে দেখে নিশ্চিন্ত হয়... কুর্তির তলাটা ধরে মাথা গলিয়ে খুলতে গিয়েও থমকায়... এগিয়ে যায় ড্রইংরুমের জানলাটার দিকে... বাইরের দিকে তাকায় সে... সন্ধ্যের অন্ধকার চেপে বসেছে বাইরেটাতে... কিছুই নজরে আসে না... অন্ধকারে কিছু গাছের কালো ঝাঁকড়া মাথার সারি... নাঃ, ওপাশ থেকে ঘরের মধ্যে দেখা সম্ভব নয় কারুর... আশে পাশে ওর ফ্ল্যাটের সমান্তরাল কোন বাড়ি বা ফ্ল্যাট নেই এই অঞ্চলে... তাও মেয়েলি সাবধানতায় জানলার পাশে ঝুলতে থাকা ভারী পর্দা টেনে দিয়ে ফিরে আসে সে... তারপর আবার কুর্তির তলাটা ধরে মাথা গলিয়ে খুলে ফেলে শরীর থেকে, ছুঁড়ে ফেলে দেয় হেলায় সোফার ওপরে, ওড়নাটার পাশে। সালোয়ারের গীঁট খোলে পৃথা... পা গলে নেমে যায় সেটি... পা তুলে ছাড়িয়ে নেয় শরীর থেকে সালোয়ারটাকে... মাটিতেই পড়ে থাকে, সেখান থেকে তোলার ইচ্ছা করে না আর... পরণে শুধু মাত্র ছোট্ট প্যান্টি আর ব্রা পড়েই এগিয়ে যায় দেওয়ালের কাছে, সুইচ টিপে ড্রইংরুমের ফ্যানটা চালিয়ে দিয়ে ফিরে এসে বসে সোফার ওপরে, পাদুটোকে এগিয়ে দেয় সামনের দিকে সোজা করে, সেই সাথে নিজের দেহটাকেও এলিয়ে দেয় সোফার ব্যাকরেস্টে... চোখ বন্ধ করে চুপচাপ খানিকক্ষন বসে থাকে সে ওই ভাবেই... ফ্যানের হাওয়ায় শরীরটা যেন একটু আরাম পায়... সোফার ওপরে আধশোয়া হয়ে সুঠাম পুরুষ্টু পা দুটোকে ছড়িয়ে রেখে ছেলেমানুষের মত করে দোলায় পৃথা।
অনেক কষ্টে এই ওয়ান রুম ফ্ল্যাটটা পেয়েছে পৃথা... অবস্য এটার জন্য সম্পূর্ণ কৃতিত্ব সুশান্তর... শিলিগুড়ির মেয়ে ও... গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করার পর প্রায় ক্যাজুয়ালিই বসেছিল ব্যাঙ্ক পিও এক্সজামে... ভাবে নি যে ক্র্যাক করে ফেলবে... ইন্টারভিউটাও খুব সহজেই পার করে ফেলেছিল... তারপর জবটা পেয়ে গেল, পোস্টিং হল কলকাতায়, এই ন্যাশানালাইজড্ ব্যাঙ্কটায়... সেই সূত্রেই কলকাতায় আসা। আগে কখনও কলকাতায় আসবে, সেটাই ভাবেনি। বাবাও সরকারী কর্মচারী, বেশ বড় পোস্টেই রয়েছে। মা তো প্রথম দিকে কেঁদে কেটে এক’শা করেছিল, অনেক কষ্টে বাবাই মা’কে বুঝিয়ে সুঝিয়ে রাজি করিয়েছিল... বাবা পৃথাকে বরাবরই স্বাধীনচেতা করে মানুষ করেছে, সবসময়ই চেয়েছে মেয়ে হয়ে জন্মেছে তো কি হয়েছে, ও নিজের পায়ে দাঁড়াক, তাই কখনও কোনদিন কোন ব্যাপারেই তাকে বাধা দেয় নি। সে এমন কি দার্জিলিংএর মাউন্টেয়ারিং ইন্সটিটিউট থেকেও ট্রানিং নিয়ে বেশ কয়’একটা এক্সপিডিশনে পার্টিসিপেট করেছে, সেখানেও ওকে সব থেকে উৎসাহ দিয়েছে ওর বাবা।
ভাবতে ভাবতে সোফার ওপরে শুয়েই শুধু পাছা সমেত কোমরটাকে একটু তুলে শরীর থেকে বিকিনি স্টাইলের ছোট্ট প্যান্টিটা টেনে খুলে নেয় পৃথা, ফেলে দেয় মেঝের ওপরে, পায়ের কাছে, হাতদুটোকে পেছন দিকে ঘুরিয়ে নিয়ে গিয়ে খুলে ফেলে ব্রায়ের হুকটাও, সেটাকেও শরীর থেকে আলাদা করে ছুঁড়ে ফেলে দেয় মেঝের ওপরে, প্যান্টির পাশে, অবহেলায়... থাক পড়ে... পরে এক সময় তুলে নেওয়া যাবে’খন... ভাবে সে। ফের নগ্ন শরীরটাকে এলিয়ে দেয় সোফার ওপরে... পা দুটোকে একটু ফাঁক করে মেলে ধরে নিজের জঙ্ঘাটাকে সোফার কিনারায়, ফ্যানের হাওয়ার নীচে।
দুম করেই প্রায় চাকরীর কলটা এসে গিয়েছিল, তাই আগে থেকে ঠিক মত প্রিপারেশেন নিতে পারেনি সে, এসে অফিস জয়েন করে কোন রকমে মহুয়া, মানে ওদেরই এক কলিগের বাড়িতে পেয়িং গেস্ট হিসাবে ছিল কয়’একমাস... কিন্তু যতই হোক, কারুর বাড়ি থাকা যায় নাকি ওই ভাবে... বড্ড অসুবিধা হচ্ছিল... বরাবরই নিজের মত করে থেকেছে, ঘুরেছে, তাই ওই ভাবে মহুয়ার বাড়ি থাকতে কেমন যেন বাধো বাধো ঠেকছিল তার। প্রায় অফিসের সবাইকেই বলে রেখেছিল, যদি একটা কোথায় থাকার জায়গা ভাড়া পেয়ে যায়, তার সন্ধান দিতে। তাই তো সুশান্ত যখন এই ফ্ল্যাট’টার খোঁজ দিয়েছিল তাকে... দেখেই পছন্দ হয়ে গিয়েছিল পৃথার। অফিস থেকে একটু দূরে ঠিকই, একটু আউটস্কার্টে... কিন্তু তাও, বেশ ভালো... তার একার পক্ষে যেন আইডিয়াল... যেন ওর থাকার জন্যই ফ্ল্যাটটা অপেক্ষা করছিল।
সুশান্ত অবস্য খোজ এনে দিলেও, পরে সেই সব থেকে বাধা দিয়েছিল ফ্ল্যাটটা ভাড়া নিতে, বলেছিল যে ও নাকি খবর পেয়েছে যে ভুত আছে এই ফ্ল্যাটটাতে, আর সেই জন্যই নাকি অনেক দিন ধরে খালি পড়েছিল এটা... হাঃ... যত্ত সব গাঁজাখুরি... ভুত থাকুক বা না থাকুক... এই রকম একটা ফার্নিস্ড ফ্ল্যাট, এত কম ভাড়ায় দিচ্ছেটা কে শুনি... দেখার পর আর তাই দুবার ভাবেনি ডাকাবুকো মেয়ে, পৃথা... অ্যাডভান্স করে দিয়েছিল... আর তারপর এই তো প্রায় হপ্তা দুইয়েক হতে চললো, কই... ভুত কেন ভুতের কোন ছানা এসেও তো তাকে বিরক্ত করে নি! আগে অনেকেই এই ফ্ল্যাটটা কিনতে বা ভাড়া নিতে এসেছিল নাকি, কিন্তু কোন অজ্ঞাত কারণ বশত সেটা পারে নি... অবস্য তাতে পৃথার কি? সে তো পেয়েছে... সেটাই যথেষ্ট... আগে কে পায়নি তা জেনে তার কি এলো গেলো। বেডরুমে বিছানার পাশের টেবিলটায় দেখেছে বটে একটা কাপল্ এর ছবি... বেশ সুন্দর দেখতে দুজনকেই... মেয়েটা বিদেশী, বয়স খুব বেশি বলে মনে হয় না... কত হবে, হয়তো তারই বয়সী, কিম্বা সামান্য বড়... খুব সুন্দরী... চোখ নাক খুব কাটা কাটা... সম্ভবতঃ ওদের ওটা হানিমুনে গিয়ে কোথাও তোলা ছবি হবে... বেশ রোম্যান্টিক ভাবেই তুলেছে ছবিটা... ভালো লাগছে ওদের দুজনকে, বেশ কেমন মেড ফর ইচ আদার টাইপের... মেয়েটির হাসবেন্ডটাকে দেখতেও কিন্তু দারুন হ্যান্ডসাম... দেখেই, মিথ্যা বলবে না পৃথা, একটু প্রেমেই পড়ে গিয়েছিল। লোকটির একটা অদ্ভুত বৈশিষ্ট আছে, কপালের ডান দিকে একটা কাটা দাগ, সেই দাগটা নেমে এসে প্রায় ডান ভুরু ছুয়ে গিয়েছে... এর ফলে ছেলেটার মধ্যে কেমন যেন একটা অন্য ধরণের আকর্ষণের সৃষ্টি করেছে... ছবিটার দিকে তাকালেই চোখটা অটোমেটিক গিয়ে আটকে যায় কপালের কাটা দাগটার ওপরে... গাটা কি রকম সিরসির করে ওঠে... সিরসির করে ওঠে পায়ের ফাঁকটাও... কেমন যেন জড়িয়ে ধরে চুমু খেতে ইচ্ছা করে... মাথা ভর্তি এলোমেলো চুল, টিকালো নাক, চওড়া কাঁধ, গালের ওপরে হাল্কা খোঁচা খোঁচা দাড়ি, পাতলা ঠোঁট। বেশ স্টাউট চেহারা... বোঝাই যায় রীতিমত জিম করত নিশ্চয়... হাতের গুলি আর বুকের পেশি পরণের পাতলা টি-শার্টটার ওপর দিয়ে যেন ফেটে পড়ছে। পৃথা আলমারী খুঁজে একবার দেখার চেষ্টা করেছে বটে যদি ওদের আর কোন ছবি পাওয়া যায়, মেয়েলি স্বভাব আর কি, কিন্তু পায় নি আর কোন ছবি। ওই একটাই রয়েছে। সেও আর সরিয়ে রাখে নি ছবিটাকে... যেমন বিছানার পাশে ছিল, তেমনই থাকতে দিয়েছে সেটাকে। ঘরে ঢুকলেই চোখ পড়ে যায় ছবিটার ওপরে সবসময়, এই যা। অবস্য তাতে তার কোনো ক্ষতি তো আর হচ্ছে না বরং ভালোই লাগে।
ভাবতে ভাবতে কখন একটা হাত দুই পায়ের ফাঁকে নেমে এসে নিজের রেশমী লোমে ঢাকা উরু সন্ধিটার ওপরে, হাত বোলাতে শুরু করেছিল আনমনে, খেলা করতে শুরু করেছিল দুই পায়ের ফাঁকে জোড় লাগা কোয়াগুলোকে নিয়ে কে জানে... খেয়াল হতে ভালো করে নিজের খুলে মেলে রাখা যোনিটাকে মুঠোর মধ্যে নিয়ে চটকে নেয়, আঙুলটাকে তুলে নাকের কাছে এনে শোঁকে একবার, ‘নাঃ... চানটা করেই আসি... বড্ড প্যাচপ্যাচে গরম পড়েছে...’ স্বগক্তি করে উঠে বসে সোফায়... কাঁধ অবধি নেমে আসা ঝাঁকড়া চুলগুলো এলোমেলো করে দেয় হাত তুলে... উঠে দাঁড়ায় সোফা ছেড়ে... বেডরুমের মধ্যে গিয়ে আলো জ্বালে... চোখ পড়ে বেডসাইড টেবিলে রাখা ছবিটার ওপরে... খাটের পাশের টেবিলটা এমন জায়গায় যে বেডরুমে ঢুকলেই আগে চোখে পড়ে ছবিটা... ছবির মধ্যের লোকটির দিকে তাকিয়ে একটা ফ্লাইং কিস্ ছুঁড়ে দেয় সে... তারপর ঘুড়ে দাঁড়ায় ড্রেসিংটেবিলের সামনে। মোটা দাঁড়ার চিরুনিটা হাতে তুলে নিয়ে আঁচড় দেয় এলোমেলো হয়ে থাকা চুলে।
বরাবরই একটু ছেলে ছেলে ঘেসা তার আবভাব... তাই ছোট থেকেই মাথার চুল ছেলেদের মত করে কাটতো... ঘাড় অবধি... লম্বা চুল রাখতে তার একদম না পসন্দ... ওর শরীরের কাঠামোয় এই রকম ছোট চুলের স্টাইলই ওর ভাল লাগে। এই নিয়ে মায়ের সাথে কম ঝামেলা হয়েছে? তবুও, এত ঝামেলা সত্যেও ওকে দিয়ে চুল লম্বা রাখাতে পারে নি ওর মা... বড় চুলে নাকি খুব গরম হয়... এটাই ওর যুক্তি ছিল মায়ের কাছে। আর এটাও সত্যি, যে ওকে খারাপ লাগে দেখতে, তা কিন্তু নয়... বরং ওর লুকের মধ্যে কেমন একটা বেশ আল্ট্রা মড ব্যাপারটা মিশে থাকে... লম্বা সুঠাম ফিগারের সাথে এই রকম ঘাড় অবধি ঝাঁকড়া ছোট চুলের কাটিংটা যেন খুব ভালো যায়। ভালো করে তাকায় পৃথা, আয়নার ভেতর দিয়ে নিজের পানে।
সুন্দরী... এক কথায় যে ভাবে মেয়েদের সৌন্দর্য বিবেচিত হয়ে থাকে, সেই দিক দিয়ে দেখলে সত্যিই সে সুন্দরী... সর্বাঙ্গীন সুন্দরী বোধহয় পৃথাকেই বলা যায়... কি দেখতে, কি চেহারায়... ভগবান তাকে গড়তে সম্ভবত কোন কার্পণ্য করেননি কোন জায়গাতেই। মুখটার গড়ন সামান্য একটু লম্বাটে, গায়ের রঙ অসম্ভব ফর্সা, প্রায় যাকে বলে একেবারে দুধেআলতা, সামান্যতম রাগ বা উত্তেজনায় নাকের ডগা বা কানের লতি সাথে সাথে লাল হয়ে ওঠে, এতটাই ফর্সা সে। ছোট কপাল, বাঁকানো ভুরু, সুন্দর করে ভুরু প্লাগ করে রাখার ফলে সেদুটি আরো বেশি আকর্ষনীয়। টানা টানা চোখ, বেশ বড় চোখের পাতাগুলো, মাসকারার সাহায্যে বড় দেখানোর চেষ্টা করতে হয় না পৃথাকে। চোখের মনিটা সেই দিক দিয়ে বরং কালো নয়, একটু কটা, আর তাতেই সম্ভবত একটা আলাদা আকর্ষণ সৃষ্টি করে কারুর দিকে চোখ তুলে তাকালেই। ওই চোখ থেকে তখন চোখ সরিয়ে নেওয়া যেন দুষ্কর হয়ে পরে অপর জনের। টিয়া পাখির মত টিকালো নাক, আর পাতলা একজোড়া ঠোঁট, আর সেই সাথে বেশ ধারালো চিবুক।
গড়পড়তা সাধারণ বাঙালী মেয়েদের মত গড়ন নয় তার... বরঞ্চ খানিকটা অবাঙালী ঘেঁষাই বলা যেতে পারে, কি দেখতে, কি চেহারায়... বেশ দোহারা চেহারা, গোলগাল থপথপে নয় একটুও... কাঁধ দুটো অন্য মেয়েদের থেকে যথেষ্ট চওড়া, অথচ নিটল। অবস্য তার বংশতালিকায় কেউ কখনও অবাঙালী ছিল কিনা, সেটা সে ঠিক বলতে পারবে না জিজ্ঞাসা করলে, থাকলেও থাকতে পারে। তবে হ্যা, এই দোহারা চেহারা পাবার ফলে অনেক লাভ হয়েছে তার... বিশেষতঃ তার মাউন্টেন ক্লাইম্বিংএর কোর্স করার সময়। এছাড়াও বরাবরই একটু ডাকাবুকো গোছের মেয়ে সে। ছোটবেলা থেকেই আর পাঁচটা মেয়েদের মত রান্নাবাটি না খেলে ছেলেদের সাথে ফুটবল খেলেছে মাঠে গিয়ে... আড্ডা মেরেছে ছেলেদের সাথে মন খুলে। কত ছেলেকে যে পিটিয়েছে কথায় কথায় ঝগড়া করার সময় তার ইয়ত্তা নেই। বন্ধুও মেয়েরা ছিল ঠিকই, কিন্তু ছেলেদের সংখ্যাই ছিল বেশি। কিন্তু তার মানে এই নয় যে একেবারে টমবয় টাইপের... বরং দেহের আসল জায়গাগুলোয় বেশ ভালই জিনিসপত্তর আছে, পোষাকের আড়ালে। একটি পঁচিশ বয়শি ভিষন সুন্দরী মেয়ের শারীরিয় গঠন ঠিক যেমনটা হওয়া উচিত, একেবারে সেই রকম... না একটু বেশি, না একটুও কম... পুরো শরীরটাতেই জুড়ে রয়েছে যৌবনের অবাধ্য তরঙ্গ, মাতাল করা হিল্লোল।
আয়নায় নিজের নগ্ন শরীরটা দেখতে দেখতে হাত তুলে শরীরটাকে মোচড় দিয়ে আড়মোড়া ভাঙে পৃথা... হাত নামিয়ে বুকের ওপরে রাখে... দুহাত দিয়ে নিজের সুগঠিত নরম বুকদুটোকে হাতের তালুতে ধরে চাপ দেয়... ডলে নেয় খানিক... উঁচিয়ে থাকা বুকের বোঁটাদুটোকে আঙুলের চাপে ধরে একটু মোচড় দেয়... টান দেয় সেই সাথে... ‘আহহহহ...’ নিজের মুখ দিয়ে একটা ভালো লাগার শিৎকার বেরিয়ে আসে। নিজের শরীরটা নিয়ে খেলা করতে বেশ লাগে তার। সময় সুযোগ পেলেই শরীরটার ওপরে হাত বোলায়... খেলা করে নিজের শরীরের মেয়েলি সম্পদগুলো নিয়ে। সেক্স কি, সেটা বোঝার পর থেকেই সময় সুযোগ পেলেই মাস্টার্বেট করতে শুরু করেছিল সে, সেটা কখনও চান করার সময় বাথরুমের সকলের চোখের আড়ালে, অথবা রাতের গভীরে অন্ধকারে বিছানায় শুয়ে, চাঁদরের আড়ালে। আগে বাড়িতে থাকতে একটু সাবধানে এই সব করতে হত, কে জানে, কখন কে এসে পড়বে, বা দেখে ফেলবে, কিন্তু এখানে আসা ইস্তক আর সেই অসুবিধাটা নেই, তাই এই ক’একদিনের মধ্যে প্রায় রোজই বলতে গেলে সুযোগ পেলেই নিজের গোপনতম জায়গাটা নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে বসে গিয়েছে... যেখানে খুশি সেখানে... মনের সুখে।
এরপর...
কড়...কড়...কড়াৎ... কান ফাটানো প্রচন্ড শব্দে কাছেই বোধহয় একটা বাজ পড়ল... চতুর্দিকটা মুহুর্তের জন্য ঝলসানো আলোয় ভরিয়ে দিয়ে... আজকাল বৃষ্টি যত না হয় তার থেকেও বাজ যেন বেশিই পড়ে...
অটো থেকে নেমেই এক দৌড়ে ফ্ল্যাটের গেটের মধ্যে ঢুকে যায় পৃথা... সবে বৃষ্টিটা নেমেছে, এর পর একটু দেরী হয়ে গেলেই আর অটোও পাওয়া যেতো না হয়তো... আটকে যেতে হতো... তারপর কখন কি ভাবে ফিরতে পারতো কে জানে? হয়তো ভিজেসিজে একসা হয়েই ফিরতে হত। যা হোক বৃষ্টিটা নামার আগেই যে ফিরতে পেরেছে এই অনেক... আর সেই সাথে ভাগ্গিস এই ফ্ল্যাটটাও তার একেবারে রাস্তার ওপরে... অটো থেকে নেমেই ঢুকে পড়া যায় ভেতরে... ছাতা খোলারও দরকার পড়ে না...
ব্যাগ সামলাতে সামলাতে উঠে আসে সিড়ি বেয়ে নিজের ফ্ল্যাটের দরজার সামনে... ‘আচ্ছা ঠিক আছে মা, এখন রাখো, আমি এবার ঢুকবো...’ বাঁ কানের সাথে কাঁধটা দিয়ে মোবাইলটাকে চেপে ধরে ব্যাগের ভেতরে চাবির গোছাটা হাতড়াতে হাতড়াতে বলে পৃথা... ‘আমি পারলে পরে তোমাকে ফোন করবো’খন... তুমি এখন রাখ... বুঝেছে? রাখছি আমি...’ ব্যাগের মধ্যে থেকে সুন্দর মনিপুরী কাজ করা চাবির রিংএ আটকানো ফ্ল্যাটের চাবিটা তুলে বের করে আনে... ফোনটা কান থেকে নামিয়ে কেটে দিয়ে চাবি ঘোরায় দরজার লকএ...
কড়... কড়... কড়াৎ... আবার বাজ পড়ার শব্দ কানে তালা লেগে যাবার যোগাড় হয়... এবারে আরো কাছে কোথাও পড়ল বোধহয়...
‘অফিস থেকে এই ফিরলে নাকি?’ পেছন থেকে ভেসে আসে অলোকবাবুর গলা।
অলোকবাবু, পাশের ফ্লাটেই থাকেন ভদ্রলোক... পৃথা খেয়াল করেছে যখনই ও ফিরে দরজার কাছে এসে দাঁড়ায়, ভদ্রলোক ঠিক বেরিয়ে এসে উপযাযক হয়ে তার সাথে কথা বলতে আসবেন... ভদ্রতা করে মাথা ঘুরিয়ে একবার অলোকবাবুর দিকে তাকিয়ে একটু ঠোঁটের কোন হাসি টেনে উত্তর দেয়, ‘হ্যা, এই তো...’ ততক্ষনে নিজের ফ্ল্যাটের দরজা খুলে ফেলেছে, ভেতরে ঢোকার উদ্যোগ করে।
‘আজ মেট্রোয় খুব ভীড় ছিল মনে হচ্ছে?’ পেছন থেকে অলোকবাবুর প্রশ্ন।
‘হ্যা, তা একটু ছিল, আপনি কি করে বুঝলেন?’ একটু অবাকই হয় পৃথা।
‘না, মানে তোমার জামার তলারদিকটা কেমন ধামসে কুঁচকে গেছে তো, তাই মনে হল আর কি... হেঃ হেঃ হেঃ...’ উত্তর দিতে দিতে দেঁতো হাসি হাসতে লাগলেন ভদ্রলোক।
শুনে গা’টা কেমন ঘিন ঘিন করে ওঠে পৃথার... বুঝতে অসুবিধা হয় না যে পেছনে দাঁড়িয়ে ওই লোকটা... ওই বিচ্ছিরি লোকটা তার শরীরের আগাপাশতলা চোখ দিয়ে গিলছিল... নয়তো পোষাক ধামসে গেছে কিনা, সেটা দেখবে কি করে... মনে হল ঘুরে একটা ঠাস করে চড়িয়ে দেয়... অনেক কষ্টে রাগটাকে চেপে রাখে নিজের মধ্যে... অলোকবাবুর সাথে আর কোন কথা বা বাড়িয়ে ঢুকে পড়ে নিজের ফ্ল্যাটের মধ্যে, দড়াম করে বন্ধ করে দেয় দরজাটাকে পেছন দিকে না তাকিয়েই।
দরজার পাশেই ডান দিকের দেওয়ালে সুইচবোর্ডে হাত দিয়ে আলো জ্বালায় ঘরের... মুহুর্তের মধ্যে অন্ধকার ঘরটা বৈদ্যুতিক আলোয় ভরে ওঠে... এগিয়ে গিয়ে ডাইনিং টেবিলের ওপরে হাতের ব্যাগ আর মোবাইটা রেখে জলের বোতলটা তুলে নিয়ে ঢকঢক করে খানিকটা জল প্রায় এক নিঃশ্বাসে খেয়ে নেয়... গলাটা শুকিয়ে কাঠ হয়ে উঠেছিল ভিষন ভাবে, ব্যাগে রাখা জলের বোতলটা ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল। আজকে সত্যিই খুব ভীড় ছিল মেট্রোতে... অবস্য কবেই বা থাকে না... আজকাল তো প্রায় প্রতিদিনই ফেরার সময় মেট্রো পেতে দেরী হয়... এত ভীড় থাকে, দরজাই বন্ধ হতে চায় না... তারপর সেখান থেকে নেমে আবার অটোর লাইন দাও... উফ্, চাকরী করা তো নয়, প্রতিদিন যুদ্ধ করতে বেরোনো... তার ওপর এই অলোকবাবু... মনে পড়তেই মাথাটা ফের গরম হয়ে ওঠে পৃথার... ঠক করে হাতের মধ্যে ধরা জলের বোতলটাকে নামিয়ে রাখে টেবিলের ওপরে।
গায়ের থেকে ওড়নাটাকে টেনে খুলে ছুঁড়ে দেয় সোফার ওপরে... জিন্স টি-শার্ট বা প্যান্ট শার্টএ বেশী সচ্ছন্দ হলেও, মাঝে মধ্যে চুড়িদার কুর্তিও পড়ে অফিস যায় পৃথা, শুধু তাই বা কেন, শাড়ী পড়তেও ভালো বাসে, তবে চেষ্টা করে সেটা অফিসের সময় অ্যাভয়েড করতে, বড্ড যে লাট খেয়ে যায় শাড়ীগুলো যাতায়াতের ধকলে। একবার পেছন ফিরে তাকায় দরজার দিকে, বন্ধ আছে দেখে নিশ্চিন্ত হয়... কুর্তির তলাটা ধরে মাথা গলিয়ে খুলতে গিয়েও থমকায়... এগিয়ে যায় ড্রইংরুমের জানলাটার দিকে... বাইরের দিকে তাকায় সে... সন্ধ্যের অন্ধকার চেপে বসেছে বাইরেটাতে... কিছুই নজরে আসে না... অন্ধকারে কিছু গাছের কালো ঝাঁকড়া মাথার সারি... নাঃ, ওপাশ থেকে ঘরের মধ্যে দেখা সম্ভব নয় কারুর... আশে পাশে ওর ফ্ল্যাটের সমান্তরাল কোন বাড়ি বা ফ্ল্যাট নেই এই অঞ্চলে... তাও মেয়েলি সাবধানতায় জানলার পাশে ঝুলতে থাকা ভারী পর্দা টেনে দিয়ে ফিরে আসে সে... তারপর আবার কুর্তির তলাটা ধরে মাথা গলিয়ে খুলে ফেলে শরীর থেকে, ছুঁড়ে ফেলে দেয় হেলায় সোফার ওপরে, ওড়নাটার পাশে। সালোয়ারের গীঁট খোলে পৃথা... পা গলে নেমে যায় সেটি... পা তুলে ছাড়িয়ে নেয় শরীর থেকে সালোয়ারটাকে... মাটিতেই পড়ে থাকে, সেখান থেকে তোলার ইচ্ছা করে না আর... পরণে শুধু মাত্র ছোট্ট প্যান্টি আর ব্রা পড়েই এগিয়ে যায় দেওয়ালের কাছে, সুইচ টিপে ড্রইংরুমের ফ্যানটা চালিয়ে দিয়ে ফিরে এসে বসে সোফার ওপরে, পাদুটোকে এগিয়ে দেয় সামনের দিকে সোজা করে, সেই সাথে নিজের দেহটাকেও এলিয়ে দেয় সোফার ব্যাকরেস্টে... চোখ বন্ধ করে চুপচাপ খানিকক্ষন বসে থাকে সে ওই ভাবেই... ফ্যানের হাওয়ায় শরীরটা যেন একটু আরাম পায়... সোফার ওপরে আধশোয়া হয়ে সুঠাম পুরুষ্টু পা দুটোকে ছড়িয়ে রেখে ছেলেমানুষের মত করে দোলায় পৃথা।
অনেক কষ্টে এই ওয়ান রুম ফ্ল্যাটটা পেয়েছে পৃথা... অবস্য এটার জন্য সম্পূর্ণ কৃতিত্ব সুশান্তর... শিলিগুড়ির মেয়ে ও... গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করার পর প্রায় ক্যাজুয়ালিই বসেছিল ব্যাঙ্ক পিও এক্সজামে... ভাবে নি যে ক্র্যাক করে ফেলবে... ইন্টারভিউটাও খুব সহজেই পার করে ফেলেছিল... তারপর জবটা পেয়ে গেল, পোস্টিং হল কলকাতায়, এই ন্যাশানালাইজড্ ব্যাঙ্কটায়... সেই সূত্রেই কলকাতায় আসা। আগে কখনও কলকাতায় আসবে, সেটাই ভাবেনি। বাবাও সরকারী কর্মচারী, বেশ বড় পোস্টেই রয়েছে। মা তো প্রথম দিকে কেঁদে কেটে এক’শা করেছিল, অনেক কষ্টে বাবাই মা’কে বুঝিয়ে সুঝিয়ে রাজি করিয়েছিল... বাবা পৃথাকে বরাবরই স্বাধীনচেতা করে মানুষ করেছে, সবসময়ই চেয়েছে মেয়ে হয়ে জন্মেছে তো কি হয়েছে, ও নিজের পায়ে দাঁড়াক, তাই কখনও কোনদিন কোন ব্যাপারেই তাকে বাধা দেয় নি। সে এমন কি দার্জিলিংএর মাউন্টেয়ারিং ইন্সটিটিউট থেকেও ট্রানিং নিয়ে বেশ কয়’একটা এক্সপিডিশনে পার্টিসিপেট করেছে, সেখানেও ওকে সব থেকে উৎসাহ দিয়েছে ওর বাবা।
ভাবতে ভাবতে সোফার ওপরে শুয়েই শুধু পাছা সমেত কোমরটাকে একটু তুলে শরীর থেকে বিকিনি স্টাইলের ছোট্ট প্যান্টিটা টেনে খুলে নেয় পৃথা, ফেলে দেয় মেঝের ওপরে, পায়ের কাছে, হাতদুটোকে পেছন দিকে ঘুরিয়ে নিয়ে গিয়ে খুলে ফেলে ব্রায়ের হুকটাও, সেটাকেও শরীর থেকে আলাদা করে ছুঁড়ে ফেলে দেয় মেঝের ওপরে, প্যান্টির পাশে, অবহেলায়... থাক পড়ে... পরে এক সময় তুলে নেওয়া যাবে’খন... ভাবে সে। ফের নগ্ন শরীরটাকে এলিয়ে দেয় সোফার ওপরে... পা দুটোকে একটু ফাঁক করে মেলে ধরে নিজের জঙ্ঘাটাকে সোফার কিনারায়, ফ্যানের হাওয়ার নীচে।
দুম করেই প্রায় চাকরীর কলটা এসে গিয়েছিল, তাই আগে থেকে ঠিক মত প্রিপারেশেন নিতে পারেনি সে, এসে অফিস জয়েন করে কোন রকমে মহুয়া, মানে ওদেরই এক কলিগের বাড়িতে পেয়িং গেস্ট হিসাবে ছিল কয়’একমাস... কিন্তু যতই হোক, কারুর বাড়ি থাকা যায় নাকি ওই ভাবে... বড্ড অসুবিধা হচ্ছিল... বরাবরই নিজের মত করে থেকেছে, ঘুরেছে, তাই ওই ভাবে মহুয়ার বাড়ি থাকতে কেমন যেন বাধো বাধো ঠেকছিল তার। প্রায় অফিসের সবাইকেই বলে রেখেছিল, যদি একটা কোথায় থাকার জায়গা ভাড়া পেয়ে যায়, তার সন্ধান দিতে। তাই তো সুশান্ত যখন এই ফ্ল্যাট’টার খোঁজ দিয়েছিল তাকে... দেখেই পছন্দ হয়ে গিয়েছিল পৃথার। অফিস থেকে একটু দূরে ঠিকই, একটু আউটস্কার্টে... কিন্তু তাও, বেশ ভালো... তার একার পক্ষে যেন আইডিয়াল... যেন ওর থাকার জন্যই ফ্ল্যাটটা অপেক্ষা করছিল।
সুশান্ত অবস্য খোজ এনে দিলেও, পরে সেই সব থেকে বাধা দিয়েছিল ফ্ল্যাটটা ভাড়া নিতে, বলেছিল যে ও নাকি খবর পেয়েছে যে ভুত আছে এই ফ্ল্যাটটাতে, আর সেই জন্যই নাকি অনেক দিন ধরে খালি পড়েছিল এটা... হাঃ... যত্ত সব গাঁজাখুরি... ভুত থাকুক বা না থাকুক... এই রকম একটা ফার্নিস্ড ফ্ল্যাট, এত কম ভাড়ায় দিচ্ছেটা কে শুনি... দেখার পর আর তাই দুবার ভাবেনি ডাকাবুকো মেয়ে, পৃথা... অ্যাডভান্স করে দিয়েছিল... আর তারপর এই তো প্রায় হপ্তা দুইয়েক হতে চললো, কই... ভুত কেন ভুতের কোন ছানা এসেও তো তাকে বিরক্ত করে নি! আগে অনেকেই এই ফ্ল্যাটটা কিনতে বা ভাড়া নিতে এসেছিল নাকি, কিন্তু কোন অজ্ঞাত কারণ বশত সেটা পারে নি... অবস্য তাতে পৃথার কি? সে তো পেয়েছে... সেটাই যথেষ্ট... আগে কে পায়নি তা জেনে তার কি এলো গেলো। বেডরুমে বিছানার পাশের টেবিলটায় দেখেছে বটে একটা কাপল্ এর ছবি... বেশ সুন্দর দেখতে দুজনকেই... মেয়েটা বিদেশী, বয়স খুব বেশি বলে মনে হয় না... কত হবে, হয়তো তারই বয়সী, কিম্বা সামান্য বড়... খুব সুন্দরী... চোখ নাক খুব কাটা কাটা... সম্ভবতঃ ওদের ওটা হানিমুনে গিয়ে কোথাও তোলা ছবি হবে... বেশ রোম্যান্টিক ভাবেই তুলেছে ছবিটা... ভালো লাগছে ওদের দুজনকে, বেশ কেমন মেড ফর ইচ আদার টাইপের... মেয়েটির হাসবেন্ডটাকে দেখতেও কিন্তু দারুন হ্যান্ডসাম... দেখেই, মিথ্যা বলবে না পৃথা, একটু প্রেমেই পড়ে গিয়েছিল। লোকটির একটা অদ্ভুত বৈশিষ্ট আছে, কপালের ডান দিকে একটা কাটা দাগ, সেই দাগটা নেমে এসে প্রায় ডান ভুরু ছুয়ে গিয়েছে... এর ফলে ছেলেটার মধ্যে কেমন যেন একটা অন্য ধরণের আকর্ষণের সৃষ্টি করেছে... ছবিটার দিকে তাকালেই চোখটা অটোমেটিক গিয়ে আটকে যায় কপালের কাটা দাগটার ওপরে... গাটা কি রকম সিরসির করে ওঠে... সিরসির করে ওঠে পায়ের ফাঁকটাও... কেমন যেন জড়িয়ে ধরে চুমু খেতে ইচ্ছা করে... মাথা ভর্তি এলোমেলো চুল, টিকালো নাক, চওড়া কাঁধ, গালের ওপরে হাল্কা খোঁচা খোঁচা দাড়ি, পাতলা ঠোঁট। বেশ স্টাউট চেহারা... বোঝাই যায় রীতিমত জিম করত নিশ্চয়... হাতের গুলি আর বুকের পেশি পরণের পাতলা টি-শার্টটার ওপর দিয়ে যেন ফেটে পড়ছে। পৃথা আলমারী খুঁজে একবার দেখার চেষ্টা করেছে বটে যদি ওদের আর কোন ছবি পাওয়া যায়, মেয়েলি স্বভাব আর কি, কিন্তু পায় নি আর কোন ছবি। ওই একটাই রয়েছে। সেও আর সরিয়ে রাখে নি ছবিটাকে... যেমন বিছানার পাশে ছিল, তেমনই থাকতে দিয়েছে সেটাকে। ঘরে ঢুকলেই চোখ পড়ে যায় ছবিটার ওপরে সবসময়, এই যা। অবস্য তাতে তার কোনো ক্ষতি তো আর হচ্ছে না বরং ভালোই লাগে।
ভাবতে ভাবতে কখন একটা হাত দুই পায়ের ফাঁকে নেমে এসে নিজের রেশমী লোমে ঢাকা উরু সন্ধিটার ওপরে, হাত বোলাতে শুরু করেছিল আনমনে, খেলা করতে শুরু করেছিল দুই পায়ের ফাঁকে জোড় লাগা কোয়াগুলোকে নিয়ে কে জানে... খেয়াল হতে ভালো করে নিজের খুলে মেলে রাখা যোনিটাকে মুঠোর মধ্যে নিয়ে চটকে নেয়, আঙুলটাকে তুলে নাকের কাছে এনে শোঁকে একবার, ‘নাঃ... চানটা করেই আসি... বড্ড প্যাচপ্যাচে গরম পড়েছে...’ স্বগক্তি করে উঠে বসে সোফায়... কাঁধ অবধি নেমে আসা ঝাঁকড়া চুলগুলো এলোমেলো করে দেয় হাত তুলে... উঠে দাঁড়ায় সোফা ছেড়ে... বেডরুমের মধ্যে গিয়ে আলো জ্বালে... চোখ পড়ে বেডসাইড টেবিলে রাখা ছবিটার ওপরে... খাটের পাশের টেবিলটা এমন জায়গায় যে বেডরুমে ঢুকলেই আগে চোখে পড়ে ছবিটা... ছবির মধ্যের লোকটির দিকে তাকিয়ে একটা ফ্লাইং কিস্ ছুঁড়ে দেয় সে... তারপর ঘুড়ে দাঁড়ায় ড্রেসিংটেবিলের সামনে। মোটা দাঁড়ার চিরুনিটা হাতে তুলে নিয়ে আঁচড় দেয় এলোমেলো হয়ে থাকা চুলে।
বরাবরই একটু ছেলে ছেলে ঘেসা তার আবভাব... তাই ছোট থেকেই মাথার চুল ছেলেদের মত করে কাটতো... ঘাড় অবধি... লম্বা চুল রাখতে তার একদম না পসন্দ... ওর শরীরের কাঠামোয় এই রকম ছোট চুলের স্টাইলই ওর ভাল লাগে। এই নিয়ে মায়ের সাথে কম ঝামেলা হয়েছে? তবুও, এত ঝামেলা সত্যেও ওকে দিয়ে চুল লম্বা রাখাতে পারে নি ওর মা... বড় চুলে নাকি খুব গরম হয়... এটাই ওর যুক্তি ছিল মায়ের কাছে। আর এটাও সত্যি, যে ওকে খারাপ লাগে দেখতে, তা কিন্তু নয়... বরং ওর লুকের মধ্যে কেমন একটা বেশ আল্ট্রা মড ব্যাপারটা মিশে থাকে... লম্বা সুঠাম ফিগারের সাথে এই রকম ঘাড় অবধি ঝাঁকড়া ছোট চুলের কাটিংটা যেন খুব ভালো যায়। ভালো করে তাকায় পৃথা, আয়নার ভেতর দিয়ে নিজের পানে।
সুন্দরী... এক কথায় যে ভাবে মেয়েদের সৌন্দর্য বিবেচিত হয়ে থাকে, সেই দিক দিয়ে দেখলে সত্যিই সে সুন্দরী... সর্বাঙ্গীন সুন্দরী বোধহয় পৃথাকেই বলা যায়... কি দেখতে, কি চেহারায়... ভগবান তাকে গড়তে সম্ভবত কোন কার্পণ্য করেননি কোন জায়গাতেই। মুখটার গড়ন সামান্য একটু লম্বাটে, গায়ের রঙ অসম্ভব ফর্সা, প্রায় যাকে বলে একেবারে দুধেআলতা, সামান্যতম রাগ বা উত্তেজনায় নাকের ডগা বা কানের লতি সাথে সাথে লাল হয়ে ওঠে, এতটাই ফর্সা সে। ছোট কপাল, বাঁকানো ভুরু, সুন্দর করে ভুরু প্লাগ করে রাখার ফলে সেদুটি আরো বেশি আকর্ষনীয়। টানা টানা চোখ, বেশ বড় চোখের পাতাগুলো, মাসকারার সাহায্যে বড় দেখানোর চেষ্টা করতে হয় না পৃথাকে। চোখের মনিটা সেই দিক দিয়ে বরং কালো নয়, একটু কটা, আর তাতেই সম্ভবত একটা আলাদা আকর্ষণ সৃষ্টি করে কারুর দিকে চোখ তুলে তাকালেই। ওই চোখ থেকে তখন চোখ সরিয়ে নেওয়া যেন দুষ্কর হয়ে পরে অপর জনের। টিয়া পাখির মত টিকালো নাক, আর পাতলা একজোড়া ঠোঁট, আর সেই সাথে বেশ ধারালো চিবুক।
গড়পড়তা সাধারণ বাঙালী মেয়েদের মত গড়ন নয় তার... বরঞ্চ খানিকটা অবাঙালী ঘেঁষাই বলা যেতে পারে, কি দেখতে, কি চেহারায়... বেশ দোহারা চেহারা, গোলগাল থপথপে নয় একটুও... কাঁধ দুটো অন্য মেয়েদের থেকে যথেষ্ট চওড়া, অথচ নিটল। অবস্য তার বংশতালিকায় কেউ কখনও অবাঙালী ছিল কিনা, সেটা সে ঠিক বলতে পারবে না জিজ্ঞাসা করলে, থাকলেও থাকতে পারে। তবে হ্যা, এই দোহারা চেহারা পাবার ফলে অনেক লাভ হয়েছে তার... বিশেষতঃ তার মাউন্টেন ক্লাইম্বিংএর কোর্স করার সময়। এছাড়াও বরাবরই একটু ডাকাবুকো গোছের মেয়ে সে। ছোটবেলা থেকেই আর পাঁচটা মেয়েদের মত রান্নাবাটি না খেলে ছেলেদের সাথে ফুটবল খেলেছে মাঠে গিয়ে... আড্ডা মেরেছে ছেলেদের সাথে মন খুলে। কত ছেলেকে যে পিটিয়েছে কথায় কথায় ঝগড়া করার সময় তার ইয়ত্তা নেই। বন্ধুও মেয়েরা ছিল ঠিকই, কিন্তু ছেলেদের সংখ্যাই ছিল বেশি। কিন্তু তার মানে এই নয় যে একেবারে টমবয় টাইপের... বরং দেহের আসল জায়গাগুলোয় বেশ ভালই জিনিসপত্তর আছে, পোষাকের আড়ালে। একটি পঁচিশ বয়শি ভিষন সুন্দরী মেয়ের শারীরিয় গঠন ঠিক যেমনটা হওয়া উচিত, একেবারে সেই রকম... না একটু বেশি, না একটুও কম... পুরো শরীরটাতেই জুড়ে রয়েছে যৌবনের অবাধ্য তরঙ্গ, মাতাল করা হিল্লোল।
আয়নায় নিজের নগ্ন শরীরটা দেখতে দেখতে হাত তুলে শরীরটাকে মোচড় দিয়ে আড়মোড়া ভাঙে পৃথা... হাত নামিয়ে বুকের ওপরে রাখে... দুহাত দিয়ে নিজের সুগঠিত নরম বুকদুটোকে হাতের তালুতে ধরে চাপ দেয়... ডলে নেয় খানিক... উঁচিয়ে থাকা বুকের বোঁটাদুটোকে আঙুলের চাপে ধরে একটু মোচড় দেয়... টান দেয় সেই সাথে... ‘আহহহহ...’ নিজের মুখ দিয়ে একটা ভালো লাগার শিৎকার বেরিয়ে আসে। নিজের শরীরটা নিয়ে খেলা করতে বেশ লাগে তার। সময় সুযোগ পেলেই শরীরটার ওপরে হাত বোলায়... খেলা করে নিজের শরীরের মেয়েলি সম্পদগুলো নিয়ে। সেক্স কি, সেটা বোঝার পর থেকেই সময় সুযোগ পেলেই মাস্টার্বেট করতে শুরু করেছিল সে, সেটা কখনও চান করার সময় বাথরুমের সকলের চোখের আড়ালে, অথবা রাতের গভীরে অন্ধকারে বিছানায় শুয়ে, চাঁদরের আড়ালে। আগে বাড়িতে থাকতে একটু সাবধানে এই সব করতে হত, কে জানে, কখন কে এসে পড়বে, বা দেখে ফেলবে, কিন্তু এখানে আসা ইস্তক আর সেই অসুবিধাটা নেই, তাই এই ক’একদিনের মধ্যে প্রায় রোজই বলতে গেলে সুযোগ পেলেই নিজের গোপনতম জায়গাটা নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে বসে গিয়েছে... যেখানে খুশি সেখানে... মনের সুখে।
এরপর...