29-11-2021, 12:10 PM
বুদ্ধদেবের এই উত্তর শুনে শূন্যে হাত তুলে আঁতকে উঠেছিলেন ব্যারিস্টার সাহেব, বলেছিলেন, ‘লাভ বিটুইন আনম্যারেড মেন অ্যান্ড উইমেন? আপনি করেছেন কী? এসব কথা কি শেক্সপিয়র লিখেছেন, না মিল্টন লিখেছেন? আমরাও তো বিলেতে স্টুডেন্ট ছিলুম— কই, এ-রকম তো দেখিনি!’ এই অকল্পনীয় উত্তর শুনে মাথা ঝিমঝিম করে উঠল বুদ্ধদেবের। তিনি হাল ছেড়ে দিলেন। লালবাজারে গিয়ে তাঁকে একটি মুচলেকা দিতে হল এই মর্মে যে আগামী পাঁচ অথবা দশ বছরের মধ্যে তিনি আর বইটি প্রকাশ করবেন না। তার পরও যদি প্রকাশ করতে চান পুলিশের অগ্রিম অনুমতি নিতে হবে। লালবাজার থেকে বেরিয়ে ব্যারিস্টার সাহেব বুদ্ধদেবকে আদেশ দিলেন, ‘আমার জুনিয়রকে আট টাকা দিয়ে দিন।’ সকৌতুক বেদনার সঙ্গে লিখছেন বুদ্ধদেব, ‘আমি ভেবে পেলাম না কেন দেবো, কেননা সেই কনিষ্ঠ উকিলটি কিছুই করেননি আমার জন্য। কেন তাকে লাঙ্গুল রূপে আনা হয়েছিল তাও আমার ধারণাতীত...’ বলাবাহুল্য না দিয়ে উপায় ছিল না। শুধু টাকা নয়, আরও মজার কথা এই যে, বইটির সর্বশেষ কপিটিও তিনিই হস্তগত করলেন। বুদ্ধদেব চেয়েও পেলেন না।
তবে বুদ্ধদেবের সমর্থনে প্রতিবাদও হয়েছিল। আনন্দবাজার পত্রিকায় এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে সম্পাদকীয় লিখেছিলেন সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার। আরও অনেক কথার সঙ্গে তিনি লিখেছিলেন, ‘উপন্যাসের নর-নারীরা কিভাবে প্রেম নিবেদন বা হৃদয় বিনিময় করিবে, তাহার ‘হুদ্দা’ যদি পুলিশ-নিয়ন্ত্রিত হয় তাহা হইলে বাঙ্গলা সাহিত্যের অতি শোচনীয় দুর্দিন সমাগত হইয়াছে বুঝিতে হইবে।’
যে-বই নিয়ে এত কাণ্ড, পরে যখন আবার সেই বই ছেপে বেরোল, তখন বুদ্ধদেব লিখছেন, ‘আমার এক বন্ধুর বারো বছরের মেয়ে তা পড়ে বলে উঠলো,—ও মা! এতে আবার দোষের কী আছে! এ তো ডাবের জল।’
এখানে বলা দরকার, এই করুণ ঘটনাই বুদ্ধদেবকে প্রকাশক করে তুলেছিল। তিনি লিখেছিলেন, ‘শুনলাম এর পরে আমার প্রকাশক পাওয়া শক্ত হবে। আমার মাথায় খেলল দু’-একটা বই নিজেরা ছেপে দেখলে মন্দ হয় না—তাতে পারমার্থিক এবং আর্থিক লাভও বেশি হতে পারে।’ এই চিন্তা করে এর পরেই ‘গ্রন্থকার মণ্ডলী’ নামে প্রকাশনা সংস্থা খুললেন তিনি।
তবে বুদ্ধদেবের সমর্থনে প্রতিবাদও হয়েছিল। আনন্দবাজার পত্রিকায় এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে সম্পাদকীয় লিখেছিলেন সত্যেন্দ্রনাথ মজুমদার। আরও অনেক কথার সঙ্গে তিনি লিখেছিলেন, ‘উপন্যাসের নর-নারীরা কিভাবে প্রেম নিবেদন বা হৃদয় বিনিময় করিবে, তাহার ‘হুদ্দা’ যদি পুলিশ-নিয়ন্ত্রিত হয় তাহা হইলে বাঙ্গলা সাহিত্যের অতি শোচনীয় দুর্দিন সমাগত হইয়াছে বুঝিতে হইবে।’
যে-বই নিয়ে এত কাণ্ড, পরে যখন আবার সেই বই ছেপে বেরোল, তখন বুদ্ধদেব লিখছেন, ‘আমার এক বন্ধুর বারো বছরের মেয়ে তা পড়ে বলে উঠলো,—ও মা! এতে আবার দোষের কী আছে! এ তো ডাবের জল।’
এখানে বলা দরকার, এই করুণ ঘটনাই বুদ্ধদেবকে প্রকাশক করে তুলেছিল। তিনি লিখেছিলেন, ‘শুনলাম এর পরে আমার প্রকাশক পাওয়া শক্ত হবে। আমার মাথায় খেলল দু’-একটা বই নিজেরা ছেপে দেখলে মন্দ হয় না—তাতে পারমার্থিক এবং আর্থিক লাভও বেশি হতে পারে।’ এই চিন্তা করে এর পরেই ‘গ্রন্থকার মণ্ডলী’ নামে প্রকাশনা সংস্থা খুললেন তিনি।