Thread Rating:
  • 13 Vote(s) - 3.15 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance কুমারী --- 'মাধুরী সেন'
#2
নামটা ভারী সুন্দর লক্ষ্মী নামটা উচ্চারণের মধ্যেই একটা নরম আদরের ছোঁয়া আছে ওর সলজ্জ ভাব, প্রতিমার মত মুখ আর সোজা সরল কথাসত্যিই চমৎকার ওর চেহারার মধ্যে গাঁয়ের এক সলজ্জ সতেজ লালিত্য পরের দিন দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর অনিমেষ শুয়ে পড়ে একটু ঘুম আসে যখন ঘুম ভাঙে তখন বিকেল পাঁচটা হাতমুখ ধোয়ার জন্য বাইরে আসে দেখে লক্ষ্মী একই জায়গায় একই রকম ভাবে বসে অনিমেষকে দেখে ওর ছড়ানো পা দুটো গুটিয়ে নেয় লক্ষ্মী আর অন্যমনস্ক ভাবে শাড়ীর খুঁট থেকে সূতো টানতে থাকে অনিমেষের জল দরকার, তাই ঘনিষ্ঠতার সঙ্গে বলে, ‘লক্ষ্নী, মুখ ধোয়ার জল দরকার
আনছিখুশি মনে লক্ষ্নী ভেতরে চলে যায় অনিমেষের মনে হয়, জন্ম নেবার সময় থেকেই তার মুখ থেকে হাসিটি আর মোছেনি সরলতম হাসি শহুরে মেয়েদের ভয়ঙ্কর অট্টহাসিও অনিমেষ দেখেছে আর লক্ষ্নী তো ফুলের মত হাসে
অনিমেষ হাত মুখ ধুয়ে ঘরে আসতেই চা নিয়ে আসে লক্ষ্মী অনিমেষের ইচ্ছা হয়, চা পান শেষে এবার একটু হাঁটা যাক ছোট ক্যামেরা নিয়ে অনিমেষ বাইরে আসে দেখে, ঠিক ওইখানে একই রকম ভাবে বসে লক্ষ্নী বাইরে এসে অনিমেষ ধন্দে পড়ে যায় কোথায় যাবে? না আজ শুধু একাই কাল থেকে পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা পর্ব আজ শুধু জঙ্গলে যাবে এই পাকদন্ডি পথ, সব্জির খেত পেরিয়ে জঙ্গলের দিকে চলে গেছে অনিমেষ কয়েক পা মাত্র হেঁটেছে দমকা হাওয়ায় ওর পাঞ্জাবির প্রান্তভাগ ঝোপ গাছে আটকে যায় পিছন ফিরে পাঞ্জাবিটা খুলতে দেখে, ঠিক ওই জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে লক্ষ্মী আরো কিছু হাঁটার পর জঙ্গল আদিম নয় এখন অনেক পরিষ্কার চারিদিকে কতরকমের গাছ অন্যান্য ফুল ফলের গাছও আছে কতরকমের পাখি আর তার শব্দ বিকেলের শেষ রোদে জঙ্গলের সৌন্দর্য অনেক খানি বেড়ে গেছে একটা ফাঁকা জায়গায় আধশোয়া গাছের একটা ডালে অনিমেষ বসে গ্যাঁট হয়ে নীরব নিস্তব্ধ সুগন্ধী জঙ্গলে ডুবু ডুবু সূর্য মন কেমন করা ঠান্ডা বাতাস মধুরতম আনন্দে অনিমেষ যেন পাখির সঙ্গে পাখি, গাছের সঙ্গে গাছ আর ফুলের সঙ্গে ফুল হয়ে যাচ্ছে গভীর আত্মমগ্ন হঠাৎ একটা শব্দ পর পর শব্দ অনিমেষ মুখ ফেরায় দেখে লক্ষ্নী ঠিক সেই মূহূর্তে সেও মাথা তুলে অনিমেষের দিকে তাকিয়ে
 
অনিমেষ লজ্জা পেয়ে যায় দেখে শুকনো ডাল এক জায়গায় জড়ো করেছে লক্ষ্নী অনিমেষের হাসি পায় উঠে দাঁড়ায় কোমরে হাত রেখে মুখ তুলে ওকে দেখে দেখতেই থাকে ওর চুড়ীর শব্দ শোনা যাচ্ছে এবারে সত্যিই লজ্জা তবুও ঘাড় ফিরিয়ে অনিমেষ দেখতে থাকে লক্ষ্নীও নিশ্চই ওকে দেখে হেসেছিল সম্ভবত সেটাই তখন ওর সারা মুখে ছড়িয়ে আছে অনিমেষ আরো লজ্জা পায় ওর মনে হয়, লক্ষ্নী যেন কিছু বলল ওকে কিন্তু এতটাই ঘাবড়ে গেছে যে ঠিক শুনতে পায় নি ওর দিকে ফিরে শুধোয়, ‘কিছু বলছ?’
আপনি উঠে দাঁড়ালেন কেন?’
এমন প্রশ্ন শুনে অনিমেষের মনে প্রচন্ড অপমানের ঝাঁঝ কী উত্তর দেওয়া উচিৎ, বুঝে উঠতে পারছে না
আবার প্রশ্ন, ‘বাড়ী ফিরবেন?’
ওর কথায় পরিহাস থাকলেও অনিমেষ রাগতে পারছে না কেন? কিন্তু ক্রোধ তো হওয়া উচিৎ অনিমেষেরই বোকামি দায়ী ওর অস্থির মানসিকতা অনিমেষ ভাবে, যাকগে এখন এই স্থান পরিত্যাজ্য ফেরার জন্য তৈরী পিছন ফিরতেই আবার ডাক, ‘বাবু অনিমেষ আবার ফিরে তাকায় দেখে লক্ষ্নীর পায়ের কাছে শুকনো ডাল একসঙ্গে বাঁধা
হঠাৎ সঙ্কোচের সঙ্গে বলে, ‘মাথায় তুলে দেবেন?’
অনিমেষ তুলে দেয় এই সাহায্য ওর খুব ভাল লাগে একটা খুশির ভাব সারা মুখে, মাথায় শুকনো ডাল শেষ রোদে যেন মায়াময় ওর এই ভঙ্গী দেখে অনিমেষ ক্যামেরা সেট করে, ওকে লক্ষ্নী বলে ডাকে
লক্ষ্নী ঘাড় ফিরে তাকায়, ‘আমায় বললেন?’
অনিমেষ হ্যাঁ বলে ওর কাছে যায় তারপর বলে, ‘তুমি ঠিক এইভাবে দাঁড়াও
লক্ষ্নী খুব অবাক মুখে সেই ছবি অনিমেষের দিকে তাকায়, হালকা রোদ্দুর ওর গালে যেন চুমু খাচ্ছে ওর মুখে সেই মজুত হাসি আর আলো অবিশ্বাস্য ভাবে মিশে যাচ্ছে ফটো তোলা শেষ হতেই অনিমেষকে শুধায়, ‘কি করলেন? কি করবেন? ওর সরল কৌতূহল
অনিমেষ বুঝতে পারছে না সত্যিই তো কি বলা উচিৎ শুধু বলে, পরে বলব
[+] 2 users Like ddey333's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: কুমারী --- 'মাধুরী সেন' - by ddey333 - 25-11-2021, 09:51 AM



Users browsing this thread: 3 Guest(s)