23-11-2021, 04:04 PM
(This post was last modified: 23-11-2021, 04:06 PM by codename.love69. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
রক্তের দোষ
পর্ব ১: এক কালো ইতিহাস
এই কাহিনী শুরু করার আগে একটা ছোট্ট ভূমিকার প্রয়োজনীয়তা আছে। এতে করে পাঠকগণের সুবিধেই হবে। প্রথমেই জানিয়ে রাখা ভালো এ কাহিনীর প্রেক্ষাপট নব্বই শতক। তখনকার দিনে এখনকার মতো ইন্টারনেটের বাড়বাড়ন্ত কিংবা স্মার্টফোনের রমরমা কোনোটাই ছিল না। এমনকি সবার হাতে হাতে মোবাইল ফোনও দেখা যেত না। পাঠককূল গল্প পড়ার সময় সেটা যেন দয়া করে খেয়াল রাখেন। এ গল্পের নায়িকা রক্তিমা হালদার অরফে রমা এক দুশ্চরিত্রা স্ত্রীলোক। অবশ্য তার নষ্ট হওয়ার যথাযথ কারণও আছে। রক্তের দোষ বলে তো একটা কথা আছে। সে কার মেয়ে দেখতে হবে তো। কানাঘুষোয় শোনা যায় তার মা নাকি শহরের নিষিদ্ধপল্লিতে বেশ্যাবৃত্তি করতো। রমার নাকি ওখানেই জন্ম। তবে সে মায়ের মত লাইনে নামেনি। বরং মাত্র চোদ্দ বছর বয়সে সে শহর ছেড়ে রাজ্যের একদম শেষ প্রান্তে এক গন্ডগ্রামে পালিয়ে এসেছিলো। সেই পালানোর পিছনে কোনো কালো ইতিহাস থাকলেও কারুর সেটা জানা নেই।
তবে ওই কচি বয়সেই রমার উৎশৃঙ্খল রূপযৌবন গাঁয়ের সব ছেলেছোকরার মাথা ঘুরিয়ে দেয়। একরাশ কালো ঘন ঢেউ খেলানো চুল। দুধসাদা গায়ের রং। সুন্দর মুখশ্রী। বড় বড় কটা চোখ। টিকালো নাখ। পাতলা গোলাপী ঠোঁট। ডাগর দেহ। বুক-পাছা দুটোই ভীষণ ভারী। এত অল্প বয়সে এত উঁচু উঁচু বুক-পাছা সচরাচর দেখাই যায় না। ছেলেপুলেদের মনে ঝড় ওঠাটাই স্বাভাবিক। বিশেষ করে গ্রামের প্রধান দশানন বণিক অরফে দাশুবাবুর একমাত্র ছেলে পঞ্চানন বণিক অরফে পাঁচু তার বাড়ন্ত দেহটা ভোগ করার আশায় রমার পিছনে যাকে বলে একদম আদাজল খেয়ে লেগে পড়েছিলো। তাকে রাস্তা থেকে তুলে সোজা আপন বাড়িতে ঠাঁই দিয়েছিলো। রমাও আপত্তি জানায়নি। তার তখন একটা শক্ত খুঁটি দরকার। একজন উদ্বাস্তুর পক্ষে একটা ক্ষমতাশালী লোকের বাড়ি যথার্থই একটি যথেষ্ট সুরক্ষিত ঘাঁটি। অনেক অপ্রয়োজনীয় বিপদআপদকে সহজেই এড়িয়ে চলা যায়। পাঁচুর বাড়িতে সে পরিচারিকার কাজে নিয়োগ ছিল।
এক অল্পবয়সী চটকদার অসহায়াকে আপন গৃহে আশ্রয় দেওয়ার সুফল পাঁচু সুদে-আসলে উসুল করে ছেড়েছিল। রমার ডবকা গতরটাকে সে যথেচ্ছ ভোগ করেছিল। এমনকি সে তার গর্ভবতীও করে দেয়। বোকার মত বিয়েটাই করে ফেলতো যদি তার বিপত্নীক বাবা বাঁধ সাধতেন। দাশুবাবু ছিলেন যাকে বলে এক ধূর্ত শেয়াল। এক পূর্ণযৌবনা অচেনা অজানা অল্পবয়েসী মেয়েকে তার লম্পট ছেলে ঘরে নিয়ে এসে তুলতে তিনি কোনো আপত্তি জানালেন না ঠিকই, তবে তলে তলে সমস্ত খোঁজখবর নিয়ে রেখেছিলেন। রমার কালো ইতিহাসের কিছুটা আভাস তিনি পেয়েছিলেন। তাই অমন কলংকিত মেয়ের সাথে ছেলের বিয়ে দিতে রাজি হলেন না। তাঁর মাথাটা ছিল একটা শয়তানের বাসা। ভালো করেই জানতেন যে এতো সহজে এমন একটা খাসা মালকে হাতছাড়া করতে তার দামাল দুশ্চরিত্র ছেলে একেবারেই রাজি হবে না। তাই তিনি একটা সাংঘাতিক চাল চাললেন। ছুঁতো করে পার্টির কাজ দিয়ে ছেলেকে কিছুদিনের জন্য শহরে পাঠিয়ে দিলেন। আর সেই অবসরে, গাঁয়ের সবার অগোচরে, বিনা আড়ম্বরে, তাঁর খাস চাকর ভোলা হালদারের সাথে রমার বিয়ে দিয়ে দিলেন।
রমাও বিনা প্রতিবাদে ভোলার গলায় মাল্যদান করেছিলো। সে বুদ্ধিমতী। ভালোই বুঝেছিলো যে তার মত এক কালিমালিপ্ত ললনাকে দাশুবাবুর মত গ্রামের এক জাঁদরেল প্রধান আপন পুত্রবধূ হিসেবে কোনোমতেই মেনে নেবেন না। তাঁর পছন্দের পাত্রের সাথে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে না চাইলে বরং তার অনিষ্ট করে ছাড়বেন। এমনিতেই এত অল্প বয়েসে তার পেটে বাচ্চা চলে এলো। বাচ্চার বাপও কাছে নেই। এমন অবস্থায় দাশুবাবুর মতো এক ঘোড়েল ঘুঘুর বিরুদ্ধে তার মতো এক অবলা অন্তঃসত্ত্বার একা রুখে দাঁড়াবার দুঃসাহস দেখানোটা কখনোই কাম্য নয়। বেশি বেগড়বাই করতে গেলে তাকে না এই ফোলা পেটেই গাঁ ছাড়া হতে হয়। তাহলে বিপদ বাড়বে বৈ কমবে না। সবদিক বিবেচনা করে রমা বিনাবাক্যব্যয়ে ভোলার সাথে সাত পাকে বাঁধা পড়েছিলো।
এদিকে ভোলা এক নেহাৎ গোবেচারা মানুষ। রমার প্রায় দ্বিগুন বয়স। যেমন নিরেট মাথামোটা, তেমন ভীষণ গরিব। তার ঘরদোর, জমিজমা, এমনকি পয়সাকড়িও নিজস্ব বলে কিছু নেই। সে দাশুবাবুর বাড়িতেই থাকতো। সেখানেই তার চার বেলার খাওয়ার ব্যবস্থা ছিল। বদলে বিনা পারিশ্রমিকে সে বাড়ির ফাইফরমাশ খেটে দিতো। এমন এক গণ্ডমূর্খ রমার মতো এক কচি রূপবতীকে বিয়ে করার সুযোগ পেয়ে যেন হাতে চাঁদ পেলো। হোক না পোয়াতি। বাচ্চাটা তো এক্কেবারে বাইরে কারুর নয়। মালিকের ছেলের। মালিক তাকে বলে রেখেছে যে বিয়ের পর এই বাড়িতেই তাকে একটা বড় দেখে ঘর দেওয়া হবে যেখানে সে বউকে নিয়ে থাকবে। বউকে খাওয়ানোপরানোর চিন্তাও তাকে করতে হবে না। সেই ভার মালিকের। এমনকি বউয়ের বাচ্চা হলে পর সেই দায়িত্বও মালিকই নেবে। তাকে কোনোকিছু নিয়েই বিশেষ ভাবতে হবে না। সে শুধু আগের মতোই বাড়ির সব কাজকামগুলো করবে। তার জন্য এবার থেকে সে পাঁচশো টাকা করে বেতনও পাবে। তবে টাকাটা তার হাতে না দিয়ে তার বউকে দিয়ে দেওয়া হবে। সে টাকা নিয়েই বা কি করবে? তার তো খাওয়াখরচের কোনো চিন্তা নেই। সবই তো মালিক দেখবে বলে কথা দিয়েছে। তার নববধূটি এক কলংকিত গর্ভবতী হতে পারে, কিন্তু তার জীবনে ভগবানের আশীর্বাদের মতো নেমে এসে হাজির হয়েছে। ভোলা বলতে গেলে একেবারে আনন্দে নাচতে নাচতে বিয়ের পিঁড়িতে গিয়ে বসেছিলো।
ওদিকে দুই সপ্তাহের মধ্যে পার্টির সকল কাজকর্ম মিটিয়ে পাঁচু গাঁয়ে ফিরে এলো। এসেই দেখলো তার অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে তার ধূর্ত পিতা তার সমস্ত আকাঙ্খায় জল ঢেলে দিয়েছে। ব্যাপারস্যাপার দেখে তার জোয়ান রক্ত টগবগ করে ফুটতে লাগলো। মাথায় যেন আগুন ধরে গেলো। বাবা যে তার পিঠে এমনভাবে ছুরি মারবে, সেটা সে আন্দাজ করেনি। পাঁচু রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে বাবার বিরুদ্ধে লড়তে প্রস্তুত হলো। কিন্তু ধড়িবাজ দাশুবাবু তলে তলে ফাঁদ পেতে রেখেছিলেন। শিকার আসতেই জালে ধরা পরলো। তিনি ছেলেকে বোঝালেন যে রমার বিয়ে হয়ে গেলেও বা কি? সে তো আর অন্য কোথাও চলে যাচ্ছে না। এই বাড়িতেই থাকছে। সবকিছুই আগের মতোই আছে। পাঁচু চাইলেই যখন ইচ্ছে রমার সাথে শুতে পারবে। ভোলা তো তাদেরই চাকর। আর তার উপর মাথায় একদম গোবর পোড়া। বুদ্ধুরামটা যাতে করে কোনো বাধা দিতে না পারে, তার সব বন্দোবস্ত দাশুবাবু করে রাখবেন। বাবা হয়ে ছেলের জন্য এতটুকু তিনি অবশ্যই করবেন। পাঁচুর বরং খুব সুবিধেই হবে। এক পরিচয়হীন কলংকিনীকে বিয়ে করলে, কে বলতে পারে যে ভবিষ্যতে রাজনৈতিক জীবনে সেটা বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে না। কিন্তু রমার রূপযৌবন যদি সে বিনা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে চিরকাল ভোগ করতে পারে, তাহলে তো সেই সুব্যবস্থায় তার আপত্তি থাকার কথা নয়। পঞ্চানন তার পিতার সুচতুর ব্যবস্থাপনায় আপত্তি জানাতে যায়ওনি। ফলস্বরূপ বিয়ের পরেও রমা পরপুরুষের সান্নিধ্য লাভ করেছে।
তারপর দেখতে দেখতে উনিশটা বছর কেটে গেছে। সময়ের সাথে তাল রেখে পুরোনো সেই বন্দোবস্তের মাঝে অনেকখানি রদবদল ঘটেছে। ইতিমধ্যেই রমা ফুটফুটে এক কন্যাসন্তান প্রসব করে। দাশুবাবুই সেই মেয়ের নামকরণ করেন। একদম পুতুলের মতো দেখতে হয়েছে বলে তার নামও রাখেন পুতুল। প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে রমাদের সব ধরণের খরচখরচা তিনিই বহন করেন। তবে সেটা বেশিদিনের জন্য করে উঠতে পারেননি। বছর ঘুরতে না ঘুরতে ম্যালেরিয়ায় ভুগে দাশুবাবু পরলোক গমন করেন। যাওয়ার সময় প্রিয় ভোলাকেও বগলদাবা করে সাথে নিয়ে যান। পিতৃবিয়োগের পরেই পাঁচু সংসার পাতে। তার বাবার সেটাই অন্তিম ইচ্ছে ছিল। নতুন বউ কোনোমতেই সতীন নিয়ে ঘর করতে রাজী হয়না। সে যতই সামাজিক মতে সে বিধবা হোক না কেন। পাঁচুও বউয়ের ন্যায্য চাহিদাকে সমর্থন করে। বিয়ের পরদিনই পাপ বাড়ি থেকে বিদায় করে।
তবে রমাদের পুরোপুরি আস্তাকুড়ে ছুঁড়ে ফেলে দিতে পাঁচু পারে না। বরং গাঁয়ের একদম শেষ প্রান্তে একটা ছোট্ট বাড়িতে তাদের থাকার ব্যবস্থা করে দেয়। শত হোক পুতুল অবৈধ হলেও তারই রক্ত। একেবারে মায়া ত্যাগ করা কি সম্ভব? তার উপর বাচ্চা হওয়ার পর রমার রূপ যেন ফেটে পড়ছে। এমন একটা সরেস মাগীকে ভোগ করা এতো চট করে ছেড়ে দিলে পরে সে নিজেই অতৃপ্ত থেকে যাবে। বাড়িতে বউ রয়েছে তো কি? রমার নধর দেহের মোহ তার এত সহজে যাওয়ার নয়। এতে সাপও মরে, অথচ লাঠিও ভাঙে না। সন্তান সমেত রমাকে আপন গৃহ থেকে তাড়িয়ে সে বউয়ের চোখে নিজের দাগী ভাবমূর্তিটি পুরোদরস্তুর মেরামত করে নেয়। আবার মাথার উপর একটা ছাদ জুগিয়ে দিয়ে এতদিনের প্রণয়িনীর সামনে কিছুটা মুখরক্ষা করতে সক্ষম হয়।
তবে রমার সাথে নিয়মিত দেখা-সাক্ষাৎ করাটা পাঁচুর আর তেমনভাবে হয়ে ওঠে না। খুব বেশি হলে মাসে দুই থেকে তিনবার। তাও সবসময় সেই সুযোগটাও আসে না। বাবা মারা যাওয়ার পর পাঁচুই এখন পার্টির প্রধান মুখ। তার সুনাম গ্রাম ছেড়ে জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। দূর দূর থেকে তার কাছে লোক আসে। কাজের চাপ শতগুন বেড়ে গেছে। দিনরাত তাকে ব্যস্ত থাকতে হয়। রমাকে দেওয়ার মতো যথেষ্ট সময় আর তার হাতে নেই। তবে তাকে ঠিকমত দৈহিক সুখ না দিতে পারার খামতি পাঁচু অন্যভাবে মেটানোর চেষ্টা করেছে। রমা ও পুতুলের থাকা-খাওয়ার খরচের পুরোটাই সে কাঁধে তুলে নিয়েছে। এছাড়াও তার অবৈধ কন্যাসন্তানের পড়াশোনার খরচ বহন করেছে। প্রতি পুজোয় পুতুলকে নতুন জামাকাপড় কিনে দিয়েছে। রমাকেও শাড়ি উপহার দিয়েছে। গয়না গড়িয়ে দিয়েছে। তার যাতে সমাজে চলতে ফিরতে তেমন অসুবিধে না হয়, তাই তার মাসোহারা এক ঝটকায় বাড়িয়ে তিন হাজার টাকা করেছে। এবং সর্বশেষে গতমাসে একটা সুপাত্র দেখে পুতুলের বিয়ে দিয়েছে। তাদের জামাই বিদেশে থাকে। একটা নামকরা বেসরকারি কোম্পানিতে কাজ করে। এখন তাদের মেয়েও বরের সাথে বিদেশেই থাকে। বেশ সুখেসাচ্ছন্দেই দিন কাটাচ্ছে।
আগের মতো এবারেও এই নয়া পন্থায় রমা কোনো আপত্তি জানায় না। সে অভাগা বিধবা। প্রবল প্রভাবশালী পুরুষের সাথে লড়াই করা তার কর্ম নয়। সে সব মুখ বুঝে মেনে নেয়। আর সেভাবে দেখতে গেলে পাঁচু তার কোনো অভাবও রাখেনি। আর কি মুখেই বা সে অভিযোগ জানাতে যাবে? সে যে ঘরের মেয়ে তাতে করে পেটের টানে তাকে যে রাস্তায় নামতে হয়নি, সেটাই ঢের। রমা যা পাচ্ছে তাতেই সন্তুষ্ট। আক্ষেপ বলতে একটাই। সে আর যথেষ্ট পুরুষসঙ্গ পায় না। দুর্ভাগ্যবশত রমার শরীরের খাই বরাবরই অত্যন্ত বেশি। পুরুষমানুষের ছোঁয়া না পেলে পরে তার গবদা দেহটা ঠিক শান্তি পায় না। অথচ পাঁচুর বাড়ি থেকে বেরোনোর পর তাকে মাসে দুই-তিনবারের বেশি কাছেই পাওয়া যায় না। অত কমে তার ডবকা শরীরটাকে ক্ষান্ত রাখা মোটেও সম্ভব নয়। এদিকে তার মেয়ের অবৈধ বাপও প্রধান হওয়ার পর ভীষণ ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। তার পক্ষে বেশি সময় দেওয়া রীতিমত দুরূহ। শারীরিক ক্ষুদার টানে কাটা ছাগলের মতো ছটফট করতে করতে রমা এতগুলো বছর কাটাতে বাধ্য হয়েছে। সে চাইলে অতি সহজে বাইরে থেকে একটা নাগর জোগাড় করে নিতে পারতো ঠিকই। কিন্তু শুধুমাত্র মেয়ের কথা ভেবে সে সেই পথে হাঁটতে সাহস করেনি। পাঁচু তাকে দৈহিক তৃপ্তি যথেচ্ছভাবে দিতে না পারলেও তার বাকি সব চাহিদা এতদিন ভালোভাবেই মিটিয়ে এসেছে।
এত উপকারকে তো সহজে উপেক্ষা করা যায় না। অবশ্য এতদিন যাবৎ পর্যাপ্ত পরিমানে শারীরিক সুখ না পেয়ে পৃঠপোষকের প্রতি রমার দুর্বলতা ধীরে ধীরে নিশ্চিতরূপে কেটে গেছে। তার মনটাও একদম যাকে বলে পুরোপুরি বিষিয়ে উঠেছে। দেহের জ্বালায় তার বিকৃত মন বিদ্রোহ করার তাল ঠুকছে। যত দিন যাচ্ছে তার মধ্যে একটা মরিয়া ভাব ফুটে উঠছে। আগে যে সব গাঁয়ের বখাটে ছেলেছোকড়াদের সে তাচ্ছিল্য করে চলতো, এখন তাদের সাথেই রাস্তায় দাঁড়িয়ে দু-চারটে ইয়ার্কি মারে, হাসতে হাসতে একটুআধটু ঢলাঢলি করে। পাঁচুর ভয় কেউ তার দিকে এখনো হাত বাড়ানোর সাহস দেখায়নি। তবে রমা বাড়ির বাইরে হলেই তার যৌনআবেদনে ভরা দেহটার টানে আজকাল সবকটা এসে মাছির মতো তার চারিপাশে ভনভন করে। জোয়ান ছেলেগুলো যে আসলে কোন মধূর অপেক্ষায় তাকে এত খাতির করছে, সেটা সে বেশ ভালোই বোঝে। তবে এখনো পর্যন্ত সে নিজেকে সামলে রেখে চলেছে। তবে তার ধৈর্যের বাঁধ আস্তেধীরে ভাঙছে। যে কোনো দিন তীর কামান ছেড়ে বেরিয়ে পড়তে পারে।
পর্ব ১: এক কালো ইতিহাস
এই কাহিনী শুরু করার আগে একটা ছোট্ট ভূমিকার প্রয়োজনীয়তা আছে। এতে করে পাঠকগণের সুবিধেই হবে। প্রথমেই জানিয়ে রাখা ভালো এ কাহিনীর প্রেক্ষাপট নব্বই শতক। তখনকার দিনে এখনকার মতো ইন্টারনেটের বাড়বাড়ন্ত কিংবা স্মার্টফোনের রমরমা কোনোটাই ছিল না। এমনকি সবার হাতে হাতে মোবাইল ফোনও দেখা যেত না। পাঠককূল গল্প পড়ার সময় সেটা যেন দয়া করে খেয়াল রাখেন। এ গল্পের নায়িকা রক্তিমা হালদার অরফে রমা এক দুশ্চরিত্রা স্ত্রীলোক। অবশ্য তার নষ্ট হওয়ার যথাযথ কারণও আছে। রক্তের দোষ বলে তো একটা কথা আছে। সে কার মেয়ে দেখতে হবে তো। কানাঘুষোয় শোনা যায় তার মা নাকি শহরের নিষিদ্ধপল্লিতে বেশ্যাবৃত্তি করতো। রমার নাকি ওখানেই জন্ম। তবে সে মায়ের মত লাইনে নামেনি। বরং মাত্র চোদ্দ বছর বয়সে সে শহর ছেড়ে রাজ্যের একদম শেষ প্রান্তে এক গন্ডগ্রামে পালিয়ে এসেছিলো। সেই পালানোর পিছনে কোনো কালো ইতিহাস থাকলেও কারুর সেটা জানা নেই।
তবে ওই কচি বয়সেই রমার উৎশৃঙ্খল রূপযৌবন গাঁয়ের সব ছেলেছোকরার মাথা ঘুরিয়ে দেয়। একরাশ কালো ঘন ঢেউ খেলানো চুল। দুধসাদা গায়ের রং। সুন্দর মুখশ্রী। বড় বড় কটা চোখ। টিকালো নাখ। পাতলা গোলাপী ঠোঁট। ডাগর দেহ। বুক-পাছা দুটোই ভীষণ ভারী। এত অল্প বয়সে এত উঁচু উঁচু বুক-পাছা সচরাচর দেখাই যায় না। ছেলেপুলেদের মনে ঝড় ওঠাটাই স্বাভাবিক। বিশেষ করে গ্রামের প্রধান দশানন বণিক অরফে দাশুবাবুর একমাত্র ছেলে পঞ্চানন বণিক অরফে পাঁচু তার বাড়ন্ত দেহটা ভোগ করার আশায় রমার পিছনে যাকে বলে একদম আদাজল খেয়ে লেগে পড়েছিলো। তাকে রাস্তা থেকে তুলে সোজা আপন বাড়িতে ঠাঁই দিয়েছিলো। রমাও আপত্তি জানায়নি। তার তখন একটা শক্ত খুঁটি দরকার। একজন উদ্বাস্তুর পক্ষে একটা ক্ষমতাশালী লোকের বাড়ি যথার্থই একটি যথেষ্ট সুরক্ষিত ঘাঁটি। অনেক অপ্রয়োজনীয় বিপদআপদকে সহজেই এড়িয়ে চলা যায়। পাঁচুর বাড়িতে সে পরিচারিকার কাজে নিয়োগ ছিল।
এক অল্পবয়সী চটকদার অসহায়াকে আপন গৃহে আশ্রয় দেওয়ার সুফল পাঁচু সুদে-আসলে উসুল করে ছেড়েছিল। রমার ডবকা গতরটাকে সে যথেচ্ছ ভোগ করেছিল। এমনকি সে তার গর্ভবতীও করে দেয়। বোকার মত বিয়েটাই করে ফেলতো যদি তার বিপত্নীক বাবা বাঁধ সাধতেন। দাশুবাবু ছিলেন যাকে বলে এক ধূর্ত শেয়াল। এক পূর্ণযৌবনা অচেনা অজানা অল্পবয়েসী মেয়েকে তার লম্পট ছেলে ঘরে নিয়ে এসে তুলতে তিনি কোনো আপত্তি জানালেন না ঠিকই, তবে তলে তলে সমস্ত খোঁজখবর নিয়ে রেখেছিলেন। রমার কালো ইতিহাসের কিছুটা আভাস তিনি পেয়েছিলেন। তাই অমন কলংকিত মেয়ের সাথে ছেলের বিয়ে দিতে রাজি হলেন না। তাঁর মাথাটা ছিল একটা শয়তানের বাসা। ভালো করেই জানতেন যে এতো সহজে এমন একটা খাসা মালকে হাতছাড়া করতে তার দামাল দুশ্চরিত্র ছেলে একেবারেই রাজি হবে না। তাই তিনি একটা সাংঘাতিক চাল চাললেন। ছুঁতো করে পার্টির কাজ দিয়ে ছেলেকে কিছুদিনের জন্য শহরে পাঠিয়ে দিলেন। আর সেই অবসরে, গাঁয়ের সবার অগোচরে, বিনা আড়ম্বরে, তাঁর খাস চাকর ভোলা হালদারের সাথে রমার বিয়ে দিয়ে দিলেন।
রমাও বিনা প্রতিবাদে ভোলার গলায় মাল্যদান করেছিলো। সে বুদ্ধিমতী। ভালোই বুঝেছিলো যে তার মত এক কালিমালিপ্ত ললনাকে দাশুবাবুর মত গ্রামের এক জাঁদরেল প্রধান আপন পুত্রবধূ হিসেবে কোনোমতেই মেনে নেবেন না। তাঁর পছন্দের পাত্রের সাথে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে না চাইলে বরং তার অনিষ্ট করে ছাড়বেন। এমনিতেই এত অল্প বয়েসে তার পেটে বাচ্চা চলে এলো। বাচ্চার বাপও কাছে নেই। এমন অবস্থায় দাশুবাবুর মতো এক ঘোড়েল ঘুঘুর বিরুদ্ধে তার মতো এক অবলা অন্তঃসত্ত্বার একা রুখে দাঁড়াবার দুঃসাহস দেখানোটা কখনোই কাম্য নয়। বেশি বেগড়বাই করতে গেলে তাকে না এই ফোলা পেটেই গাঁ ছাড়া হতে হয়। তাহলে বিপদ বাড়বে বৈ কমবে না। সবদিক বিবেচনা করে রমা বিনাবাক্যব্যয়ে ভোলার সাথে সাত পাকে বাঁধা পড়েছিলো।
এদিকে ভোলা এক নেহাৎ গোবেচারা মানুষ। রমার প্রায় দ্বিগুন বয়স। যেমন নিরেট মাথামোটা, তেমন ভীষণ গরিব। তার ঘরদোর, জমিজমা, এমনকি পয়সাকড়িও নিজস্ব বলে কিছু নেই। সে দাশুবাবুর বাড়িতেই থাকতো। সেখানেই তার চার বেলার খাওয়ার ব্যবস্থা ছিল। বদলে বিনা পারিশ্রমিকে সে বাড়ির ফাইফরমাশ খেটে দিতো। এমন এক গণ্ডমূর্খ রমার মতো এক কচি রূপবতীকে বিয়ে করার সুযোগ পেয়ে যেন হাতে চাঁদ পেলো। হোক না পোয়াতি। বাচ্চাটা তো এক্কেবারে বাইরে কারুর নয়। মালিকের ছেলের। মালিক তাকে বলে রেখেছে যে বিয়ের পর এই বাড়িতেই তাকে একটা বড় দেখে ঘর দেওয়া হবে যেখানে সে বউকে নিয়ে থাকবে। বউকে খাওয়ানোপরানোর চিন্তাও তাকে করতে হবে না। সেই ভার মালিকের। এমনকি বউয়ের বাচ্চা হলে পর সেই দায়িত্বও মালিকই নেবে। তাকে কোনোকিছু নিয়েই বিশেষ ভাবতে হবে না। সে শুধু আগের মতোই বাড়ির সব কাজকামগুলো করবে। তার জন্য এবার থেকে সে পাঁচশো টাকা করে বেতনও পাবে। তবে টাকাটা তার হাতে না দিয়ে তার বউকে দিয়ে দেওয়া হবে। সে টাকা নিয়েই বা কি করবে? তার তো খাওয়াখরচের কোনো চিন্তা নেই। সবই তো মালিক দেখবে বলে কথা দিয়েছে। তার নববধূটি এক কলংকিত গর্ভবতী হতে পারে, কিন্তু তার জীবনে ভগবানের আশীর্বাদের মতো নেমে এসে হাজির হয়েছে। ভোলা বলতে গেলে একেবারে আনন্দে নাচতে নাচতে বিয়ের পিঁড়িতে গিয়ে বসেছিলো।
ওদিকে দুই সপ্তাহের মধ্যে পার্টির সকল কাজকর্ম মিটিয়ে পাঁচু গাঁয়ে ফিরে এলো। এসেই দেখলো তার অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে তার ধূর্ত পিতা তার সমস্ত আকাঙ্খায় জল ঢেলে দিয়েছে। ব্যাপারস্যাপার দেখে তার জোয়ান রক্ত টগবগ করে ফুটতে লাগলো। মাথায় যেন আগুন ধরে গেলো। বাবা যে তার পিঠে এমনভাবে ছুরি মারবে, সেটা সে আন্দাজ করেনি। পাঁচু রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে বাবার বিরুদ্ধে লড়তে প্রস্তুত হলো। কিন্তু ধড়িবাজ দাশুবাবু তলে তলে ফাঁদ পেতে রেখেছিলেন। শিকার আসতেই জালে ধরা পরলো। তিনি ছেলেকে বোঝালেন যে রমার বিয়ে হয়ে গেলেও বা কি? সে তো আর অন্য কোথাও চলে যাচ্ছে না। এই বাড়িতেই থাকছে। সবকিছুই আগের মতোই আছে। পাঁচু চাইলেই যখন ইচ্ছে রমার সাথে শুতে পারবে। ভোলা তো তাদেরই চাকর। আর তার উপর মাথায় একদম গোবর পোড়া। বুদ্ধুরামটা যাতে করে কোনো বাধা দিতে না পারে, তার সব বন্দোবস্ত দাশুবাবু করে রাখবেন। বাবা হয়ে ছেলের জন্য এতটুকু তিনি অবশ্যই করবেন। পাঁচুর বরং খুব সুবিধেই হবে। এক পরিচয়হীন কলংকিনীকে বিয়ে করলে, কে বলতে পারে যে ভবিষ্যতে রাজনৈতিক জীবনে সেটা বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে না। কিন্তু রমার রূপযৌবন যদি সে বিনা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে চিরকাল ভোগ করতে পারে, তাহলে তো সেই সুব্যবস্থায় তার আপত্তি থাকার কথা নয়। পঞ্চানন তার পিতার সুচতুর ব্যবস্থাপনায় আপত্তি জানাতে যায়ওনি। ফলস্বরূপ বিয়ের পরেও রমা পরপুরুষের সান্নিধ্য লাভ করেছে।
তারপর দেখতে দেখতে উনিশটা বছর কেটে গেছে। সময়ের সাথে তাল রেখে পুরোনো সেই বন্দোবস্তের মাঝে অনেকখানি রদবদল ঘটেছে। ইতিমধ্যেই রমা ফুটফুটে এক কন্যাসন্তান প্রসব করে। দাশুবাবুই সেই মেয়ের নামকরণ করেন। একদম পুতুলের মতো দেখতে হয়েছে বলে তার নামও রাখেন পুতুল। প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে রমাদের সব ধরণের খরচখরচা তিনিই বহন করেন। তবে সেটা বেশিদিনের জন্য করে উঠতে পারেননি। বছর ঘুরতে না ঘুরতে ম্যালেরিয়ায় ভুগে দাশুবাবু পরলোক গমন করেন। যাওয়ার সময় প্রিয় ভোলাকেও বগলদাবা করে সাথে নিয়ে যান। পিতৃবিয়োগের পরেই পাঁচু সংসার পাতে। তার বাবার সেটাই অন্তিম ইচ্ছে ছিল। নতুন বউ কোনোমতেই সতীন নিয়ে ঘর করতে রাজী হয়না। সে যতই সামাজিক মতে সে বিধবা হোক না কেন। পাঁচুও বউয়ের ন্যায্য চাহিদাকে সমর্থন করে। বিয়ের পরদিনই পাপ বাড়ি থেকে বিদায় করে।
তবে রমাদের পুরোপুরি আস্তাকুড়ে ছুঁড়ে ফেলে দিতে পাঁচু পারে না। বরং গাঁয়ের একদম শেষ প্রান্তে একটা ছোট্ট বাড়িতে তাদের থাকার ব্যবস্থা করে দেয়। শত হোক পুতুল অবৈধ হলেও তারই রক্ত। একেবারে মায়া ত্যাগ করা কি সম্ভব? তার উপর বাচ্চা হওয়ার পর রমার রূপ যেন ফেটে পড়ছে। এমন একটা সরেস মাগীকে ভোগ করা এতো চট করে ছেড়ে দিলে পরে সে নিজেই অতৃপ্ত থেকে যাবে। বাড়িতে বউ রয়েছে তো কি? রমার নধর দেহের মোহ তার এত সহজে যাওয়ার নয়। এতে সাপও মরে, অথচ লাঠিও ভাঙে না। সন্তান সমেত রমাকে আপন গৃহ থেকে তাড়িয়ে সে বউয়ের চোখে নিজের দাগী ভাবমূর্তিটি পুরোদরস্তুর মেরামত করে নেয়। আবার মাথার উপর একটা ছাদ জুগিয়ে দিয়ে এতদিনের প্রণয়িনীর সামনে কিছুটা মুখরক্ষা করতে সক্ষম হয়।
তবে রমার সাথে নিয়মিত দেখা-সাক্ষাৎ করাটা পাঁচুর আর তেমনভাবে হয়ে ওঠে না। খুব বেশি হলে মাসে দুই থেকে তিনবার। তাও সবসময় সেই সুযোগটাও আসে না। বাবা মারা যাওয়ার পর পাঁচুই এখন পার্টির প্রধান মুখ। তার সুনাম গ্রাম ছেড়ে জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। দূর দূর থেকে তার কাছে লোক আসে। কাজের চাপ শতগুন বেড়ে গেছে। দিনরাত তাকে ব্যস্ত থাকতে হয়। রমাকে দেওয়ার মতো যথেষ্ট সময় আর তার হাতে নেই। তবে তাকে ঠিকমত দৈহিক সুখ না দিতে পারার খামতি পাঁচু অন্যভাবে মেটানোর চেষ্টা করেছে। রমা ও পুতুলের থাকা-খাওয়ার খরচের পুরোটাই সে কাঁধে তুলে নিয়েছে। এছাড়াও তার অবৈধ কন্যাসন্তানের পড়াশোনার খরচ বহন করেছে। প্রতি পুজোয় পুতুলকে নতুন জামাকাপড় কিনে দিয়েছে। রমাকেও শাড়ি উপহার দিয়েছে। গয়না গড়িয়ে দিয়েছে। তার যাতে সমাজে চলতে ফিরতে তেমন অসুবিধে না হয়, তাই তার মাসোহারা এক ঝটকায় বাড়িয়ে তিন হাজার টাকা করেছে। এবং সর্বশেষে গতমাসে একটা সুপাত্র দেখে পুতুলের বিয়ে দিয়েছে। তাদের জামাই বিদেশে থাকে। একটা নামকরা বেসরকারি কোম্পানিতে কাজ করে। এখন তাদের মেয়েও বরের সাথে বিদেশেই থাকে। বেশ সুখেসাচ্ছন্দেই দিন কাটাচ্ছে।
আগের মতো এবারেও এই নয়া পন্থায় রমা কোনো আপত্তি জানায় না। সে অভাগা বিধবা। প্রবল প্রভাবশালী পুরুষের সাথে লড়াই করা তার কর্ম নয়। সে সব মুখ বুঝে মেনে নেয়। আর সেভাবে দেখতে গেলে পাঁচু তার কোনো অভাবও রাখেনি। আর কি মুখেই বা সে অভিযোগ জানাতে যাবে? সে যে ঘরের মেয়ে তাতে করে পেটের টানে তাকে যে রাস্তায় নামতে হয়নি, সেটাই ঢের। রমা যা পাচ্ছে তাতেই সন্তুষ্ট। আক্ষেপ বলতে একটাই। সে আর যথেষ্ট পুরুষসঙ্গ পায় না। দুর্ভাগ্যবশত রমার শরীরের খাই বরাবরই অত্যন্ত বেশি। পুরুষমানুষের ছোঁয়া না পেলে পরে তার গবদা দেহটা ঠিক শান্তি পায় না। অথচ পাঁচুর বাড়ি থেকে বেরোনোর পর তাকে মাসে দুই-তিনবারের বেশি কাছেই পাওয়া যায় না। অত কমে তার ডবকা শরীরটাকে ক্ষান্ত রাখা মোটেও সম্ভব নয়। এদিকে তার মেয়ের অবৈধ বাপও প্রধান হওয়ার পর ভীষণ ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। তার পক্ষে বেশি সময় দেওয়া রীতিমত দুরূহ। শারীরিক ক্ষুদার টানে কাটা ছাগলের মতো ছটফট করতে করতে রমা এতগুলো বছর কাটাতে বাধ্য হয়েছে। সে চাইলে অতি সহজে বাইরে থেকে একটা নাগর জোগাড় করে নিতে পারতো ঠিকই। কিন্তু শুধুমাত্র মেয়ের কথা ভেবে সে সেই পথে হাঁটতে সাহস করেনি। পাঁচু তাকে দৈহিক তৃপ্তি যথেচ্ছভাবে দিতে না পারলেও তার বাকি সব চাহিদা এতদিন ভালোভাবেই মিটিয়ে এসেছে।
এত উপকারকে তো সহজে উপেক্ষা করা যায় না। অবশ্য এতদিন যাবৎ পর্যাপ্ত পরিমানে শারীরিক সুখ না পেয়ে পৃঠপোষকের প্রতি রমার দুর্বলতা ধীরে ধীরে নিশ্চিতরূপে কেটে গেছে। তার মনটাও একদম যাকে বলে পুরোপুরি বিষিয়ে উঠেছে। দেহের জ্বালায় তার বিকৃত মন বিদ্রোহ করার তাল ঠুকছে। যত দিন যাচ্ছে তার মধ্যে একটা মরিয়া ভাব ফুটে উঠছে। আগে যে সব গাঁয়ের বখাটে ছেলেছোকড়াদের সে তাচ্ছিল্য করে চলতো, এখন তাদের সাথেই রাস্তায় দাঁড়িয়ে দু-চারটে ইয়ার্কি মারে, হাসতে হাসতে একটুআধটু ঢলাঢলি করে। পাঁচুর ভয় কেউ তার দিকে এখনো হাত বাড়ানোর সাহস দেখায়নি। তবে রমা বাড়ির বাইরে হলেই তার যৌনআবেদনে ভরা দেহটার টানে আজকাল সবকটা এসে মাছির মতো তার চারিপাশে ভনভন করে। জোয়ান ছেলেগুলো যে আসলে কোন মধূর অপেক্ষায় তাকে এত খাতির করছে, সেটা সে বেশ ভালোই বোঝে। তবে এখনো পর্যন্ত সে নিজেকে সামলে রেখে চলেছে। তবে তার ধৈর্যের বাঁধ আস্তেধীরে ভাঙছে। যে কোনো দিন তীর কামান ছেড়ে বেরিয়ে পড়তে পারে।