29-04-2019, 11:28 PM
রামু- বৌদিমনি, ও বৌদিমনি চা নিয়ে এসেছি, সন্ধ্যা সাতটা বাজে, উঠবে না।
রমলা- (ধরফর করে উঠে রামুকে দেখে সব মনে পরে যায়) তুই.. তুই আমার ঘরে ঢুকেছিস কেন? তোর কি চাই?
রামু- বৌদিমনি আমি চা দিতে এসেছি।
রমলা- তুই কেন মোক্ষদা নেই, চলে যা তুই, আমি না ডাকলে তুই আমার ঘরে আসবি না, বুঝলি।
(রামু চা নামিয়ে রেখে মুখ কাঁচুমাচু করে ঘর ছেড়ে চলে গেল। রমলা বুঝতে পারল তার রি-একশনটা একটু বেশি হয়ে গেছে, এতটা না বললেও হত। রমলা চা খেতে খেতে
ভাবল তার স্বামীর ফিরতে এখন দিন দশেক বাকি, রামুকে দেখলেই মেজাজ খিচরে যাচ্ছে তাই এই সময়টা এখানে না থাকাই ভাল আর তাছাড়া মায়ের সঙ্গে অনেকদিন
দেখা হয় নি এই সুযোগে দেখা হয়ে যাবে। এই ভেবে রমলা রাতে শ্বাশুড়ির মত নিয়ে পরেরদিন সকালে বাপের বাড়ির উদ্দ্যেশে রওয়ানা হয়ে গেল। এরপরে রমলার স্বামী
ফিরে রমলাকে বাপের বাড়ি থেকে নিয়ে আসে। দেখতে দেখতে চার মাস কেটে যায় আর এই চার মাসে রামু পারতপক্ষে রমলার সামনে আসতো না। রামুর সামনে না
আসা, সামনা সামনি পরে গেলে মুখ নামিয়ে সরে যাওয়া এইসব দেখে রমলার মন আস্তে আস্তে নরম হয়। রমলার মনে হয় সেই দিনের ঘটনায় রামু যেমন দায়ী সেও
তেমনি দায়ী, রামু তাকে জোর করে কিছু করে নি যা ঘটেছে তা পরিস্থিতির চাপে, যাক গে যা হয়েছে সেটা একটা ভুল, ভুলটার পুনরাবৃত্তি না হলেই হল। রামুর হাবভাব
দেখে রামুকে অনুতপ্ত বলে রমলার মনে হয়। রমলা সেই দিনের ঘটনাটাকে একটা ভুল হিসেবে ভেবে ভুলে যাওয়ায়ই ভাল বলে মনে করল। রমলার চেষ্টায় মাস দুয়েক
পরে রামু ও রমলা দুজনেই সেই দিনের ঘটনা পুরোপুরি ভুলে গিয়ে আগের মত স্বাভাবিক হয়ে ওঠে। এরমধ্যে শ্বশুরবাড়ির কয়েকটা ঘটনায় রমলা খুবই আশ্চর্য হয়,
একদিন মাঝরাতে রমলার ঘুম ভেঙ্গে যেতে জল খাবে বলে বাইরে এসে দেখে তার শ্বাশুড়ি কুমুদিনীকে সন্তর্পনে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে গাড়িতে উঠে চলে গেল এবং একটু
পরে তার স্বামীর জেঠা বটুককে গাড়ি নিয়ে সেইদিকে যেতে দেখল। রমলা ঘরে ঢুকে স্বামীকে তুলে পুরো ব্যাপারটা বলে।)
নকুল- মা, জেঠা নিশ্চয় জরুরি কাজেই বেরিয়েছে।
রমলা- মাঝরাতে কি এমন জরুরি কাজ যাতে লুকিয়ে বাড়ি থেকে বেরোতে হয়?
নকুল- উফ, জ্বালিও না তো, আমি কি করে জানব, আমাকে কি বলেছে যে কি জরুরী কাজ, আর একটা কথা শুনে রাখ আমাদের ফ্যামিলির লোকেদের ব্যাপারে যত
কম জানবে তত ভাল থাকবে, রাত অনেক হয়েছে শুয়ে পর।
(স্বামীর মুখে এ কথা শুনে রমলা অবাক হয়ে গেল, বুঝতে পারল তার স্বামী আর এই বিষয়ে কথা বলতে চায় না। রমলা শুয়ে শুয়ে ভাবতে লাগল তার শ্বশুরবাড়ির
লোকগুলো কেমন অদ্ভুত রহস্যে ঘেরা, কে যে কি করছে কি ভাবছে বোঝা দায়। রমলা এতদিনে এটা বুঝে গেছে এদের ব্যবসার আয় সবটাই সাদা নয় কিছুটা কালো।
যতটুকু শুনেছে রমলা এদের ব্যবসাটা চালায় মেনলি তার শ্বাশুড়ি কুমুদিনী, তার স্বামী নকুল শ্বাশুড়ির নির্দেশ মত হিসাবপত্র দেখে আর বটুকের সে রকম কোন কাজ নেই,
মাস গেলে মোটা টাকার মাসোহারা পায়। এই ঘটনার বেশ কিছুদিন পরে রমলা একদিন দেখে তার শ্বাশুড়ির মামা হরি বাড়িতে এসেছে। শ্বাশুড়ির মামা হরি সম্পর্কে তার
দাদু হলেও সে তাকে হরিকাকা বলে ডাকে কারণ হরি তার বাবার বন্ধু ছিল আর সেই সুত্রে সে তাকে হরিকাকা বলে ডাকত। হরিকাকার তাদের বাড়িতে যাতায়াত
ভালই ছিল আর এই হরিকাকাই তার বিয়ের সম্বন্ধ এনেছিল। রমলা এটা আগেও লক্ষ করেছে হরিকাকা বাড়িতে এলে বটুক হন্তদন্ত হয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় আর
সেইদিন বাড়িতে ফেরে না, কিন্তু আজ বটুকের ঘরের পাশ দিয়ে যেতে গিয়ে রমলা শুনতে পেল)
বটুক- রামু তোকে আমি গাদা গাদা টাকা দিচ্ছি কি এমনি এমনি। কোন খবরই তো দিতে পারছিস না, এইভাবে তো চলবে না।
রামু- বিশ্বাস করুন বাবু, বাড়িতে যা যা ঘটে সব আপনাকে বলি, কিন্তু বাড়ির বাইরে কি হয় সেটা আমি কি করে জানব।
বটুক- বাইরের খবর দেবার জন্য অন্য লোক আছে, তুই শুধু বাড়ির ভেতরের খবরটা আমাকে ঠিকঠাক দিবি।
রামু- দিই তো বাবু, এইত কয়েকদিন আগে ম্যাডাম মাঝরাতে গাড়ি নিয়ে বেরল এটা আমি আপনাকে বলি নি।
বটুক- আর তারপরেই যে আমি পেছন পেছন বেরোলাম সেটা তো বলিসনি।
রামু- হে, হে আপনার খবর আপনাকেই জানাব, কি যে বলেন না।
বটুক- সেদিন রাতে বাড়ির আর কেউ দেখেনি তো আমাদের বেরোতে?
রামু- না বাবু কেউ দেখেনি, আপনারা বেরিয়ে যাবার অনেক পরে বৌদিমনি ঘর থেকে বেরিয়ে জল খেয়ে আবার ঘরে ঢুকে গেলেন।
(এইশুনে রমলা চমকে উঠল, বুঝল রামু তাকে সেদিন দেখেছিল এখন চালাকি করে সময়টা পিছিয়ে দিচ্ছে, কিন্তু কেন?)
বটুক- ঠিক আছে, এই টাকাগুলো রাখ, আজকে হরির সাথে কুমুদিনীর যা যা কথা হবে তার সব খবর আমার চাই। আমি এখন বেরোলাম, কালকে ফিরে যেন সব খবর
পাই।
(ঘর থেকে বেরিয়ে বটুক দেখল রমলাকে সিঁড়ি দিয়ে নামতে, বটুকের একবার মনে হল রমলা কি তাদের কথা কিছু শুনতে পেয়েছে, না মনে হয় আর শুনলেও কিছু
বুঝবে না।)
রমলা- আরে জেঠামশাই, বেরোচ্ছেন? ব্রেকফাস্ট করবেন না?
বটুক- না বৌমা, কাজ আছে বাইরে খেয়ে নেব। (না বৌমার মুখচোখ দেখে মনে হচ্ছে না কিছু শুনেছে বলে।)
(এইসব ভাবতে ভাবতে বটুক গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেল। চা ব্রেকফাস্ট নিয়ে রমলা কুমুদিনীর মামা হরির সামনে উপস্থিত হল।)
রমলা- কাকা ব্রেকফাস্ট। সারারাত জার্নি করে এসেছেন, ব্রেকফাস্ট খেয়ে চান করে একটু রেস্ট নিন।
হরি- আয়, আয়, তা তোদের খবর সব ভাল তো। নকুল ঘুম থেকে উঠেছে?
রমলা- হ্যা উঠেছে, অফিস যাবার জন্য রেডি হচ্ছে। (ঘরে কুমুদিনীর প্রবেশ)
কুমুদিনী- মামা, তুমি একটু ঘুমিয়ে নাও, আমি অফিস থেকে দুপুরের দিকে চলে আসব, তখন একসাথে লাঞ্চ করব আর তোমার সাথে ব্যবসা নিয়ে কিছু কথা আছে।
বৌমা, আমার জন্য মোক্ষদাকে চা দিতে বল তো।
রমলা- হ্যা মা, বলছি। (রমলা বুঝতে পারল শ্বাশুড়ি তাকে ঘুরিয়ে এখান থেকে চলে যেতে বলছে। রমলা এটা বুঝতে পারে না তার শ্বাশুড়ি তাকে হরিকাকার সাথে কেন
কথা বলতে দিতে চায় না। রমলার মনে পড়ল হরির সাথে কুমুদিনীর আজকে যা কথা হবে সেটা বটুক জানতে চায়। কিন্তু কেন? হরি ও কুমুদিনীর মধ্যে কি এমন কথা
হবে যেটা জানার জন্য বটুকের এত আগ্রহ, এমন কি টাকা দিয়ে রামুকে চর হিসেবে ফিট করে রেখেছে। রমলার একবার মনে হল রামুকে চেপে ধরে কথাটা বার করবে
কিন্তু পরক্ষনেই সেইদিনের কথা মনে পড়ে যেতেই এই প্লান ত্যাগ করল। রমলা ঠিক করল শ্বাশুড়ি বেরিয়ে যাবার পরে সে হরিকাকার সাথে কথা বলে ব্যাপারটা আঁচ
পাবার চেষ্টা করবে। কুমুদিনী ও নকুল বেরিয়ে যাবার পরেই রমলা হরির ঘরে গিয়ে উপস্থিত হল।)
রমলা- কাকা, ঘুমিয়ে পড়লেন নাকি?
হরি- না রে, আয় ভেতরে এসে বস। বল কি বলবি?
রমলা- না, তেমন কিছু না, আসলে আমার মায়ের খবর কিছু জানেন, আপনি এরমধ্যে গিয়েছিলেন আমাদের বাড়িতে?
হরি- হ্যা এই তো গত সপ্তাহে গিয়েছিলাম। তোর মা খুব ভাল আছে, তোর কথা জিজ্ঞেস করছিল। তা তুই দুদিনের জন্য নকুলকে নিয়ে বাড়ি থেকে ঘুরে আয় না।
রমলা- হ্যা ওর সময় হলে তো, শুধু কাজ আর কাজ, আচ্ছা কাকা, ব্যবসা দেখার জন্য মা, জেঠামশাই রয়েছে তো, ও জেঠামশাইকে দাযিত্ব দিয়ে আমার সাথে দুদিনের
জন্য ঘুরে আসতে পারে না?
হরি- দেখ রমলা, তুই তো আর বাইরের লোক নয়, এই বাড়ির বউ, জানবি মানুষের চরম শত্রুতা বাইরের লোকের থেকে বেশি ঘরের লোকে করে। তোর ওই জেঠামশাই
লোকটি খুব একটা সুবিধার নয়।
রমলা- কেন কাকা?
হরি- আমি বা কুমুদিনী যতদিন আছি তোদের ভয় নেই, ভয়টা তোর স্বামীকে নিয়ে, নকুলটা ওর বাপের মত হয়েছে গোবেচার ভাল মানুষ, তাই তোকে বলছি চোখ কান
খোলা রেখে চলবি, আর ওর জেঠামশাইকে খুব একটা বিশ্বাস করবি না।
রমলা- কাকা, আমার শ্বশুরমশাই ভিষন ভাল মানুষ ছিলেন বলে শুনছি, তাও কেন উনি খুন হলেন?
হরি- সেটাই তো রহস্য, খুনি ধরা পড়লে তাহলে হয়ত জানা যেত কারনটা, কিন্তু আজ পর্যন্ত পুলিশ খুনিকে ধরতে পারল না।
রমলা- আচ্ছা কাকা, খুনি কে সেটা জানা গিয়েছিল?
হরি- পুলিশ তো অনেক তদন্ত করল কিন্তু খুনিকে আইডেন্টিফাই করতে পারে নি, পুলিশী তদন্তে শুধু এটুকু জানা গেছে যে খুনি একজনই ছিল এবং সে পরিচিত লোক
ছিল, এর বেশি কিছু জানা যায় নি।
রমলা- শুনেছি এই বাড়িতে খুনটা হয়েছে, তখন মা বা জেঠা কেউ বাড়িতে ছিল না?
হরি- না, তোর শ্বাশুড়ি সেই সময় নকুলকে নিয়ে বাপের বাড়িতে ছিল, নকুলের তখন চার বছর বয়স আর বটুক কাজের সুত্রে শহরের বাইরে ছিল। সেই সময় শুধু
কাজের লোকদের মধ্যে শুধু মোক্ষদার বাপ ছিল আর বাকি কাজের লোকদের তোর শ্বশুর ছুটি দিয়ে দিয়েছিল। খুনটা হয়েছিল দুপুরের দিকে আর সেদিন তোর শ্বশুরের
কি ঔষধ শেষ হয়ে গিয়েছিল সেটা আনতে মোক্ষদার বাপকে পাঠিয়েছিল, মোক্ষদার বাপ ফিরে এসে দেখে তোর শ্বশুর খুন হয়ে পড়ে আছে, মোক্ষদার বাপই পুলিশকে
খবর দেয়, পুলিশ এসে কুমুদিনী ও বটুককে খবর দেয়, তারপরে পুলিশ জেরায় জেরায় বাড়ির লোকেদের প্রাণ ওষ্ঠগত করে ছাড়ে। আজ প্রায় কুড়ি বছর হয়ে গেল পুলিশ
না পারল খুনিকে ধরতে না পারল খুনটা কে করেছে সেটা বার করতে।
রমলা- কাকা, মোক্ষদার বাবা যে ঠিক বলছে তার কি প্রমান ছিল?
হরি- পুলিশ তো প্রথমে মোক্ষদার বাপকেই সন্দেহ করে ধরে নিয়ে যায়, পরে পোস্টমর্টেম রিপোর্ট থেকে জানা যায় খুনির হাইট ছ ফুটের বেশি আর সে বেশ শক্তিশালী
ছিল, সেখানে মোক্ষদার বাপের হাইট সারে পাঁচ ফুটের বেশি নয় আর রোগা পাতলা লোক তাই কয়েকদিনের মধ্যে পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়।
রমলা- আচ্ছা কাকা, একটা কথা জিজ্ঞেস করব?
হরি- কি?
রমলা- পুলিশ জেঠামশাইকে সন্দেহ করে নি?
হরি- করেনি আবার, পুলিশ কাউকে সন্দেহ করতে বাকি রেখেছিল নাকি। সেই সময় জেরায় জেরায় সবাইকে অস্থির করে মারত, পুলিশ পরে প্রমান পেয়েছে সত্যি বটুক
সেই সময় শহরের বাইরে ছিল আর তাছাড়া ভাইকে মেরে বটুকের কিছু লাভ ছিল না। বটুকের আলিবাই স্ট্রং ছিল তাই বটুক পার পেয়ে যায়। সকাল সকাল এই খুন
খারাবির কথা ভাল লাগছে না, অন্য কথা বল।
রমলা- আর একটা কথা, আপনি আমাকে জেঠামশাইর থেকে সাবধান করলেন কেন?
হরি- তোদের ফ্যামিলির সাথে আমার আজকের সম্পর্ক নয় অনেকদিনের তাই তোকে সাবধান করেছি, চোখ কান খোলা রাখবি এর বেশি কিছু নয়। জানবি, অর্থই
অনর্থের মূল, বটুক ভিষন অর্থলোভী তাই সাবধান হতে বলেছি।
রমলা- আচ্ছা কাকা, এবারে আমি যাই, আপনি রেস্ট নিন।
(এইবলে রমলা ঘর থেকে বেরোতে গিয়ে দরজার ওপাশ থেকে একটা ছায়ামূর্তিকে সরে যেতে দেখল। রমলা ঘর থেকে বেরিয়ে কাউকে দেখতে পেল না। রমলা বাড়ির
দোতলার এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত খুঁজেও কাউকে দেখতে না পেয়ে রামুর নাম ধরে হাঁক দিল।)
মোক্ষদা- (হাত মুছতে মুছতে রান্নাঘর থেকে বেরল) রামু বাজারে গেছে তেল আনতে, বৌদিমনি কিছু লাগবে?
রমলা- দশরথ কোথায়?
মোক্ষদা- রান্না করছে, ডাকব।
রমলা- না আমাকে একটু চা দিতে বল। (এইবলে রমলা তাকিয়ে দেখে বাড়ির সদর দরজা দিয়ে রামু তেলের ডাব্বা নিয়ে ঢুকছে, এই দেখে রমলা ভিষন রকম অবাক
হয়ে যায়। হরিকাকার ঘরটা দোতলার সিঁড়ির মুখে এবং দোতলায় তার, কুমুদিনী ও বটুক এই তিন জনের বেডরুম আছে। রমলা ছায়ামূর্তিকে সিঁড়ির উল্টো দিকে সরে
যেতে দেখেছে কাজেই ছায়ামূর্তিকে এই তিনটে ঘরের যে কোন একটাতে ঢুকে লুকোতে হবে এছাড়া অন্য কোন রাস্তা নেই, অথচ রমলা এই তিনটে ঘরের দরজার নব
ঘুরিয়ে চেক করে দেখেছে দরজা তিনটেই লক করা আছে। তাহলে ছায়ামূর্তিটা গেল কোথায়? রমলা মহাধন্দে পড়ে গেল। রমলাকে বোকার মত দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে
রামু মনে মনে বলল, বৌদিমনি তুমি চল ডালে ডালে আমি চলি পাতায় পাতায়, পরে বুঝবে আমি কি চিজ। রমলা মনে মনে তার দেখার ভুল হয়েছে ভেবে ঘরে চলে
গেল।
রমলা- (ধরফর করে উঠে রামুকে দেখে সব মনে পরে যায়) তুই.. তুই আমার ঘরে ঢুকেছিস কেন? তোর কি চাই?
রামু- বৌদিমনি আমি চা দিতে এসেছি।
রমলা- তুই কেন মোক্ষদা নেই, চলে যা তুই, আমি না ডাকলে তুই আমার ঘরে আসবি না, বুঝলি।
(রামু চা নামিয়ে রেখে মুখ কাঁচুমাচু করে ঘর ছেড়ে চলে গেল। রমলা বুঝতে পারল তার রি-একশনটা একটু বেশি হয়ে গেছে, এতটা না বললেও হত। রমলা চা খেতে খেতে
ভাবল তার স্বামীর ফিরতে এখন দিন দশেক বাকি, রামুকে দেখলেই মেজাজ খিচরে যাচ্ছে তাই এই সময়টা এখানে না থাকাই ভাল আর তাছাড়া মায়ের সঙ্গে অনেকদিন
দেখা হয় নি এই সুযোগে দেখা হয়ে যাবে। এই ভেবে রমলা রাতে শ্বাশুড়ির মত নিয়ে পরেরদিন সকালে বাপের বাড়ির উদ্দ্যেশে রওয়ানা হয়ে গেল। এরপরে রমলার স্বামী
ফিরে রমলাকে বাপের বাড়ি থেকে নিয়ে আসে। দেখতে দেখতে চার মাস কেটে যায় আর এই চার মাসে রামু পারতপক্ষে রমলার সামনে আসতো না। রামুর সামনে না
আসা, সামনা সামনি পরে গেলে মুখ নামিয়ে সরে যাওয়া এইসব দেখে রমলার মন আস্তে আস্তে নরম হয়। রমলার মনে হয় সেই দিনের ঘটনায় রামু যেমন দায়ী সেও
তেমনি দায়ী, রামু তাকে জোর করে কিছু করে নি যা ঘটেছে তা পরিস্থিতির চাপে, যাক গে যা হয়েছে সেটা একটা ভুল, ভুলটার পুনরাবৃত্তি না হলেই হল। রামুর হাবভাব
দেখে রামুকে অনুতপ্ত বলে রমলার মনে হয়। রমলা সেই দিনের ঘটনাটাকে একটা ভুল হিসেবে ভেবে ভুলে যাওয়ায়ই ভাল বলে মনে করল। রমলার চেষ্টায় মাস দুয়েক
পরে রামু ও রমলা দুজনেই সেই দিনের ঘটনা পুরোপুরি ভুলে গিয়ে আগের মত স্বাভাবিক হয়ে ওঠে। এরমধ্যে শ্বশুরবাড়ির কয়েকটা ঘটনায় রমলা খুবই আশ্চর্য হয়,
একদিন মাঝরাতে রমলার ঘুম ভেঙ্গে যেতে জল খাবে বলে বাইরে এসে দেখে তার শ্বাশুড়ি কুমুদিনীকে সন্তর্পনে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে গাড়িতে উঠে চলে গেল এবং একটু
পরে তার স্বামীর জেঠা বটুককে গাড়ি নিয়ে সেইদিকে যেতে দেখল। রমলা ঘরে ঢুকে স্বামীকে তুলে পুরো ব্যাপারটা বলে।)
নকুল- মা, জেঠা নিশ্চয় জরুরি কাজেই বেরিয়েছে।
রমলা- মাঝরাতে কি এমন জরুরি কাজ যাতে লুকিয়ে বাড়ি থেকে বেরোতে হয়?
নকুল- উফ, জ্বালিও না তো, আমি কি করে জানব, আমাকে কি বলেছে যে কি জরুরী কাজ, আর একটা কথা শুনে রাখ আমাদের ফ্যামিলির লোকেদের ব্যাপারে যত
কম জানবে তত ভাল থাকবে, রাত অনেক হয়েছে শুয়ে পর।
(স্বামীর মুখে এ কথা শুনে রমলা অবাক হয়ে গেল, বুঝতে পারল তার স্বামী আর এই বিষয়ে কথা বলতে চায় না। রমলা শুয়ে শুয়ে ভাবতে লাগল তার শ্বশুরবাড়ির
লোকগুলো কেমন অদ্ভুত রহস্যে ঘেরা, কে যে কি করছে কি ভাবছে বোঝা দায়। রমলা এতদিনে এটা বুঝে গেছে এদের ব্যবসার আয় সবটাই সাদা নয় কিছুটা কালো।
যতটুকু শুনেছে রমলা এদের ব্যবসাটা চালায় মেনলি তার শ্বাশুড়ি কুমুদিনী, তার স্বামী নকুল শ্বাশুড়ির নির্দেশ মত হিসাবপত্র দেখে আর বটুকের সে রকম কোন কাজ নেই,
মাস গেলে মোটা টাকার মাসোহারা পায়। এই ঘটনার বেশ কিছুদিন পরে রমলা একদিন দেখে তার শ্বাশুড়ির মামা হরি বাড়িতে এসেছে। শ্বাশুড়ির মামা হরি সম্পর্কে তার
দাদু হলেও সে তাকে হরিকাকা বলে ডাকে কারণ হরি তার বাবার বন্ধু ছিল আর সেই সুত্রে সে তাকে হরিকাকা বলে ডাকত। হরিকাকার তাদের বাড়িতে যাতায়াত
ভালই ছিল আর এই হরিকাকাই তার বিয়ের সম্বন্ধ এনেছিল। রমলা এটা আগেও লক্ষ করেছে হরিকাকা বাড়িতে এলে বটুক হন্তদন্ত হয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় আর
সেইদিন বাড়িতে ফেরে না, কিন্তু আজ বটুকের ঘরের পাশ দিয়ে যেতে গিয়ে রমলা শুনতে পেল)
বটুক- রামু তোকে আমি গাদা গাদা টাকা দিচ্ছি কি এমনি এমনি। কোন খবরই তো দিতে পারছিস না, এইভাবে তো চলবে না।
রামু- বিশ্বাস করুন বাবু, বাড়িতে যা যা ঘটে সব আপনাকে বলি, কিন্তু বাড়ির বাইরে কি হয় সেটা আমি কি করে জানব।
বটুক- বাইরের খবর দেবার জন্য অন্য লোক আছে, তুই শুধু বাড়ির ভেতরের খবরটা আমাকে ঠিকঠাক দিবি।
রামু- দিই তো বাবু, এইত কয়েকদিন আগে ম্যাডাম মাঝরাতে গাড়ি নিয়ে বেরল এটা আমি আপনাকে বলি নি।
বটুক- আর তারপরেই যে আমি পেছন পেছন বেরোলাম সেটা তো বলিসনি।
রামু- হে, হে আপনার খবর আপনাকেই জানাব, কি যে বলেন না।
বটুক- সেদিন রাতে বাড়ির আর কেউ দেখেনি তো আমাদের বেরোতে?
রামু- না বাবু কেউ দেখেনি, আপনারা বেরিয়ে যাবার অনেক পরে বৌদিমনি ঘর থেকে বেরিয়ে জল খেয়ে আবার ঘরে ঢুকে গেলেন।
(এইশুনে রমলা চমকে উঠল, বুঝল রামু তাকে সেদিন দেখেছিল এখন চালাকি করে সময়টা পিছিয়ে দিচ্ছে, কিন্তু কেন?)
বটুক- ঠিক আছে, এই টাকাগুলো রাখ, আজকে হরির সাথে কুমুদিনীর যা যা কথা হবে তার সব খবর আমার চাই। আমি এখন বেরোলাম, কালকে ফিরে যেন সব খবর
পাই।
(ঘর থেকে বেরিয়ে বটুক দেখল রমলাকে সিঁড়ি দিয়ে নামতে, বটুকের একবার মনে হল রমলা কি তাদের কথা কিছু শুনতে পেয়েছে, না মনে হয় আর শুনলেও কিছু
বুঝবে না।)
রমলা- আরে জেঠামশাই, বেরোচ্ছেন? ব্রেকফাস্ট করবেন না?
বটুক- না বৌমা, কাজ আছে বাইরে খেয়ে নেব। (না বৌমার মুখচোখ দেখে মনে হচ্ছে না কিছু শুনেছে বলে।)
(এইসব ভাবতে ভাবতে বটুক গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেল। চা ব্রেকফাস্ট নিয়ে রমলা কুমুদিনীর মামা হরির সামনে উপস্থিত হল।)
রমলা- কাকা ব্রেকফাস্ট। সারারাত জার্নি করে এসেছেন, ব্রেকফাস্ট খেয়ে চান করে একটু রেস্ট নিন।
হরি- আয়, আয়, তা তোদের খবর সব ভাল তো। নকুল ঘুম থেকে উঠেছে?
রমলা- হ্যা উঠেছে, অফিস যাবার জন্য রেডি হচ্ছে। (ঘরে কুমুদিনীর প্রবেশ)
কুমুদিনী- মামা, তুমি একটু ঘুমিয়ে নাও, আমি অফিস থেকে দুপুরের দিকে চলে আসব, তখন একসাথে লাঞ্চ করব আর তোমার সাথে ব্যবসা নিয়ে কিছু কথা আছে।
বৌমা, আমার জন্য মোক্ষদাকে চা দিতে বল তো।
রমলা- হ্যা মা, বলছি। (রমলা বুঝতে পারল শ্বাশুড়ি তাকে ঘুরিয়ে এখান থেকে চলে যেতে বলছে। রমলা এটা বুঝতে পারে না তার শ্বাশুড়ি তাকে হরিকাকার সাথে কেন
কথা বলতে দিতে চায় না। রমলার মনে পড়ল হরির সাথে কুমুদিনীর আজকে যা কথা হবে সেটা বটুক জানতে চায়। কিন্তু কেন? হরি ও কুমুদিনীর মধ্যে কি এমন কথা
হবে যেটা জানার জন্য বটুকের এত আগ্রহ, এমন কি টাকা দিয়ে রামুকে চর হিসেবে ফিট করে রেখেছে। রমলার একবার মনে হল রামুকে চেপে ধরে কথাটা বার করবে
কিন্তু পরক্ষনেই সেইদিনের কথা মনে পড়ে যেতেই এই প্লান ত্যাগ করল। রমলা ঠিক করল শ্বাশুড়ি বেরিয়ে যাবার পরে সে হরিকাকার সাথে কথা বলে ব্যাপারটা আঁচ
পাবার চেষ্টা করবে। কুমুদিনী ও নকুল বেরিয়ে যাবার পরেই রমলা হরির ঘরে গিয়ে উপস্থিত হল।)
রমলা- কাকা, ঘুমিয়ে পড়লেন নাকি?
হরি- না রে, আয় ভেতরে এসে বস। বল কি বলবি?
রমলা- না, তেমন কিছু না, আসলে আমার মায়ের খবর কিছু জানেন, আপনি এরমধ্যে গিয়েছিলেন আমাদের বাড়িতে?
হরি- হ্যা এই তো গত সপ্তাহে গিয়েছিলাম। তোর মা খুব ভাল আছে, তোর কথা জিজ্ঞেস করছিল। তা তুই দুদিনের জন্য নকুলকে নিয়ে বাড়ি থেকে ঘুরে আয় না।
রমলা- হ্যা ওর সময় হলে তো, শুধু কাজ আর কাজ, আচ্ছা কাকা, ব্যবসা দেখার জন্য মা, জেঠামশাই রয়েছে তো, ও জেঠামশাইকে দাযিত্ব দিয়ে আমার সাথে দুদিনের
জন্য ঘুরে আসতে পারে না?
হরি- দেখ রমলা, তুই তো আর বাইরের লোক নয়, এই বাড়ির বউ, জানবি মানুষের চরম শত্রুতা বাইরের লোকের থেকে বেশি ঘরের লোকে করে। তোর ওই জেঠামশাই
লোকটি খুব একটা সুবিধার নয়।
রমলা- কেন কাকা?
হরি- আমি বা কুমুদিনী যতদিন আছি তোদের ভয় নেই, ভয়টা তোর স্বামীকে নিয়ে, নকুলটা ওর বাপের মত হয়েছে গোবেচার ভাল মানুষ, তাই তোকে বলছি চোখ কান
খোলা রেখে চলবি, আর ওর জেঠামশাইকে খুব একটা বিশ্বাস করবি না।
রমলা- কাকা, আমার শ্বশুরমশাই ভিষন ভাল মানুষ ছিলেন বলে শুনছি, তাও কেন উনি খুন হলেন?
হরি- সেটাই তো রহস্য, খুনি ধরা পড়লে তাহলে হয়ত জানা যেত কারনটা, কিন্তু আজ পর্যন্ত পুলিশ খুনিকে ধরতে পারল না।
রমলা- আচ্ছা কাকা, খুনি কে সেটা জানা গিয়েছিল?
হরি- পুলিশ তো অনেক তদন্ত করল কিন্তু খুনিকে আইডেন্টিফাই করতে পারে নি, পুলিশী তদন্তে শুধু এটুকু জানা গেছে যে খুনি একজনই ছিল এবং সে পরিচিত লোক
ছিল, এর বেশি কিছু জানা যায় নি।
রমলা- শুনেছি এই বাড়িতে খুনটা হয়েছে, তখন মা বা জেঠা কেউ বাড়িতে ছিল না?
হরি- না, তোর শ্বাশুড়ি সেই সময় নকুলকে নিয়ে বাপের বাড়িতে ছিল, নকুলের তখন চার বছর বয়স আর বটুক কাজের সুত্রে শহরের বাইরে ছিল। সেই সময় শুধু
কাজের লোকদের মধ্যে শুধু মোক্ষদার বাপ ছিল আর বাকি কাজের লোকদের তোর শ্বশুর ছুটি দিয়ে দিয়েছিল। খুনটা হয়েছিল দুপুরের দিকে আর সেদিন তোর শ্বশুরের
কি ঔষধ শেষ হয়ে গিয়েছিল সেটা আনতে মোক্ষদার বাপকে পাঠিয়েছিল, মোক্ষদার বাপ ফিরে এসে দেখে তোর শ্বশুর খুন হয়ে পড়ে আছে, মোক্ষদার বাপই পুলিশকে
খবর দেয়, পুলিশ এসে কুমুদিনী ও বটুককে খবর দেয়, তারপরে পুলিশ জেরায় জেরায় বাড়ির লোকেদের প্রাণ ওষ্ঠগত করে ছাড়ে। আজ প্রায় কুড়ি বছর হয়ে গেল পুলিশ
না পারল খুনিকে ধরতে না পারল খুনটা কে করেছে সেটা বার করতে।
রমলা- কাকা, মোক্ষদার বাবা যে ঠিক বলছে তার কি প্রমান ছিল?
হরি- পুলিশ তো প্রথমে মোক্ষদার বাপকেই সন্দেহ করে ধরে নিয়ে যায়, পরে পোস্টমর্টেম রিপোর্ট থেকে জানা যায় খুনির হাইট ছ ফুটের বেশি আর সে বেশ শক্তিশালী
ছিল, সেখানে মোক্ষদার বাপের হাইট সারে পাঁচ ফুটের বেশি নয় আর রোগা পাতলা লোক তাই কয়েকদিনের মধ্যে পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়।
রমলা- আচ্ছা কাকা, একটা কথা জিজ্ঞেস করব?
হরি- কি?
রমলা- পুলিশ জেঠামশাইকে সন্দেহ করে নি?
হরি- করেনি আবার, পুলিশ কাউকে সন্দেহ করতে বাকি রেখেছিল নাকি। সেই সময় জেরায় জেরায় সবাইকে অস্থির করে মারত, পুলিশ পরে প্রমান পেয়েছে সত্যি বটুক
সেই সময় শহরের বাইরে ছিল আর তাছাড়া ভাইকে মেরে বটুকের কিছু লাভ ছিল না। বটুকের আলিবাই স্ট্রং ছিল তাই বটুক পার পেয়ে যায়। সকাল সকাল এই খুন
খারাবির কথা ভাল লাগছে না, অন্য কথা বল।
রমলা- আর একটা কথা, আপনি আমাকে জেঠামশাইর থেকে সাবধান করলেন কেন?
হরি- তোদের ফ্যামিলির সাথে আমার আজকের সম্পর্ক নয় অনেকদিনের তাই তোকে সাবধান করেছি, চোখ কান খোলা রাখবি এর বেশি কিছু নয়। জানবি, অর্থই
অনর্থের মূল, বটুক ভিষন অর্থলোভী তাই সাবধান হতে বলেছি।
রমলা- আচ্ছা কাকা, এবারে আমি যাই, আপনি রেস্ট নিন।
(এইবলে রমলা ঘর থেকে বেরোতে গিয়ে দরজার ওপাশ থেকে একটা ছায়ামূর্তিকে সরে যেতে দেখল। রমলা ঘর থেকে বেরিয়ে কাউকে দেখতে পেল না। রমলা বাড়ির
দোতলার এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত খুঁজেও কাউকে দেখতে না পেয়ে রামুর নাম ধরে হাঁক দিল।)
মোক্ষদা- (হাত মুছতে মুছতে রান্নাঘর থেকে বেরল) রামু বাজারে গেছে তেল আনতে, বৌদিমনি কিছু লাগবে?
রমলা- দশরথ কোথায়?
মোক্ষদা- রান্না করছে, ডাকব।
রমলা- না আমাকে একটু চা দিতে বল। (এইবলে রমলা তাকিয়ে দেখে বাড়ির সদর দরজা দিয়ে রামু তেলের ডাব্বা নিয়ে ঢুকছে, এই দেখে রমলা ভিষন রকম অবাক
হয়ে যায়। হরিকাকার ঘরটা দোতলার সিঁড়ির মুখে এবং দোতলায় তার, কুমুদিনী ও বটুক এই তিন জনের বেডরুম আছে। রমলা ছায়ামূর্তিকে সিঁড়ির উল্টো দিকে সরে
যেতে দেখেছে কাজেই ছায়ামূর্তিকে এই তিনটে ঘরের যে কোন একটাতে ঢুকে লুকোতে হবে এছাড়া অন্য কোন রাস্তা নেই, অথচ রমলা এই তিনটে ঘরের দরজার নব
ঘুরিয়ে চেক করে দেখেছে দরজা তিনটেই লক করা আছে। তাহলে ছায়ামূর্তিটা গেল কোথায়? রমলা মহাধন্দে পড়ে গেল। রমলাকে বোকার মত দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে
রামু মনে মনে বলল, বৌদিমনি তুমি চল ডালে ডালে আমি চলি পাতায় পাতায়, পরে বুঝবে আমি কি চিজ। রমলা মনে মনে তার দেখার ভুল হয়েছে ভেবে ঘরে চলে
গেল।