20-11-2021, 10:45 AM
পর্ব ১১
আজ অভিষিক্তার বিয়ে। বাড়ীতেই হচ্ছে বিয়েটা, আত্মীয় স্বজনে বাড়ী ভর্তি। সবে সন্ধে সাড়ে ছটা, নিমন্ত্রিতরা আসতে এখোনো দেরী আছে। সন্ধা লগ্নে বিয়ে, তাড়াতাড়ি বর এসে গেছে দেখে সবাই দৌড়েছে বর দেখতে। ষিক্তা চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে জানলার ধারে…পাশে শুধু দীপা। মনটা একেবারেই ভালো নেই। বারে বারে মনে হচ্ছে কাজটা ঠিক হোলো না।
বাইরের দিকে তাকিয়ে বলল…দীপা প্লিজ একবার পারবি ওকে ডেকে নিয়ে আসতে?
দীপা জানতো ওর মনের ভেতরে কি হচ্ছে তাই আর নতুন করে কিছু জিজ্ঞেস করল না। ঠিক আছে দেখছি…কিন্তু এখন যদি তুই বিয়েটা ভেঙ্গে দিস সেটা কি ঠিক হবে?
আরো বেশি কিছু খারাপের থেকে তো ভালো হবে।
তোর আগেই এসব নিয়ে ভাবা উচিত ছিল।
জানি…প্লিজ দেখ না।
দীপা অভিষিক্তার বাবাকে বলে অভিকে ডেকে আনার ব্যাবস্থা করেছে। এই মুহুর্তে শুধু ওরা দুজনে ঘরের ভেতরে, দীপা খোলা দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে আছে, কেউ এলে যাতে আটকাতে পারে।
প্লিজ…অভি…তুমি আরো একবার ভেবে দেখো।
আমার নতুন করে কিছু ভাবার নেই তুমি তো জানো।
প্লিজ অভি… আর কিছু বলতে পারলো না, কান্নার দমকে ওর গলা বুজে এলো। অভি কিছুক্ষন অপেক্ষা করলো ওকে স্বাভাবিক হওয়ার জন্য। কিছুটা পরে অভিষিক্তা নিজেকে সামলে নিয়ে চোখের জল মুছে ওর দিকে তাকালে পর আস্তে করে বলল… ষিক্তা, কেঁদোনা…আমি আসছি।
আজ অভি আর ষিক্তার ফুলশয্যা…দক্ষিন কোলকাতার একটা অনেক উঁচু বাড়ীর দক্ষিনমুখী বারো তলার ফ্ল্যাট… জানলা দিয়ে হু হু করে হাওয়া আসছে। ষিক্তা চুপ করে জানলার পাশে দাঁড়িয়ে আছে। মনে হোল পেছনে অভি এসে দাঁড়িয়েছে।মুখ ঘুরিয়ে দেখার আগে ওর কাঁধে অভির হাতের স্পর্শ। আস্তে আস্তে অভির দিকে ফিরে তাকালো…মুখে কোনো কথা নেই… কি বলবে? যে ভুল করেছে তা কি করে শোধরাবে?
কি হোল ষিক্তা…চুপ করে আছো? কেউ কিছু বলেছে?
না।
তাহলে?
কাজটা ঠিক হোল না অভি…তুমি পারবে না…ভুলতে…আমি কি ছিলাম
কিছু না বলে ওভি ওকে বুকের কাছে টেনে নিল… ষিক্তা… একটা জায়গায় তুমি ভুল করে যাচ্ছো।
কি?
তুমি যার কথা বলতে চাইছো…সে আমার ষিক্তা নয়, তৃষা।
তাতে কি হয়েছে? নামে কি আসে যায়?
যায়… আমি তো বিয়ে করেছি অভিষিক্তাকে…তাই না…
বুঝতে পারছি না…তুমি কি
চলো না… আজ থেকে আমরা দুজন দুজনকে নতুন করে বোঝার চেষ্টা করি… সব কিছু ভুলে গিয়ে…তৃষা বা অনুভব বলে কেউ ছিল না…থাকবেও না… পারবো না আমরা?
ষিক্তা ছোটো একটা নিঃস্বাস ফেলে বলল… পারবো।
এই…একটু হাসবে? এত সুন্দর মুখে এত চিন্তার ছাপ কি ভালো লাগে বলো দেখতে? আজ আমাদের ফুলশয্যা…তাই না…
ষিক্তা কিছ না বলে অভির বুকেমাথা রেখে আস্তে আস্তে বলল… জানি।
মাঝরাত পেরিয়ে গেছে অনেক আগেই…দুজন দুজনকে জ়ড়িয়ে ধরে আছে… কারুর চোখে ঘুম নেই… কথা যেন আর শেষ হয়না… নিজেরাই জানে না… কি নিয়ে কথা বলছে… কি নিয়ে হাসছে…কোনো মানে আছে কিনা সেই কথা, হাসির…শুধু জানে ওরা দুজন দুজনের…
অভি…
উঁ
আমরা ঘুমোবো না?
উঁ হুঁ
কি করবো?
তুমি বলো
উমম…আমি কেন বলবো…তুমি বলো
অভি মুখ নামিয়ে নিয়ে এলো ষিক্তার বুকে… ষিক্তা অভির পিঠে হাত চেপে ধরে বলল… আঃ লাগে তো…
কোথায়?
উমম…জানি না।
উপর দিয়ে ভালো লাগছে না…খুলবো?
জানি না
তাহলে থাক
ইস…কেন?
ইস…কেন… সব কথায় জানি না…জানি না… বললে কি করবো?
আচ্ছা বাবা…খোলো…এই…
বলো
সে কি করছে?
কে?
ধ্যাত…বলো না
ঘুমোচ্ছে
কখন উঠবে ঘুম থেকে?
তুমি যখন ডাকবে
তাই?
হুঁ
এখন ডাকি?
ডাকো।
…………………………………………………………………………………………………
ভোর বেলা, অভির বুকের ভেতরে ষিক্তার ঘুম ভাঙ্গলো…নিজের দিকে তাকিয়ে নিজেই লজ্জা পেয়ে গেল…ইস জানলা খোলা…খুব দুষ্টু…কিছুতেই গায়ে কিছু দিতে দিলো না… ওর ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে বুকের ভেতরটা সুখের অনুভুতিতে ভরে উঠলো কাল রাতের কথা ভেবে… নিজের ঠোঁটটা ভিজিয়ে নিয়ে আলতো করে চুমু দিলো ওর ঠোঁটে…অভি হয়তো বুঝতে পারলো ওর নরম ভেজা ঠোঁটের ছোঁয়া…আরো বেশী করে বুকের ভেতরে টেনে নিয়ে এসে আবার ঘুমিয়ে পড়ল। ষিক্তা মুখ তুলে বাইরের দিকে তাকিয়ে ভাবলো…থাক, এখন উঠবো না…আর একটু থাকি ওর পাশে…
সমাপ্ত
আজ অভিষিক্তার বিয়ে। বাড়ীতেই হচ্ছে বিয়েটা, আত্মীয় স্বজনে বাড়ী ভর্তি। সবে সন্ধে সাড়ে ছটা, নিমন্ত্রিতরা আসতে এখোনো দেরী আছে। সন্ধা লগ্নে বিয়ে, তাড়াতাড়ি বর এসে গেছে দেখে সবাই দৌড়েছে বর দেখতে। ষিক্তা চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে জানলার ধারে…পাশে শুধু দীপা। মনটা একেবারেই ভালো নেই। বারে বারে মনে হচ্ছে কাজটা ঠিক হোলো না।
বাইরের দিকে তাকিয়ে বলল…দীপা প্লিজ একবার পারবি ওকে ডেকে নিয়ে আসতে?
দীপা জানতো ওর মনের ভেতরে কি হচ্ছে তাই আর নতুন করে কিছু জিজ্ঞেস করল না। ঠিক আছে দেখছি…কিন্তু এখন যদি তুই বিয়েটা ভেঙ্গে দিস সেটা কি ঠিক হবে?
আরো বেশি কিছু খারাপের থেকে তো ভালো হবে।
তোর আগেই এসব নিয়ে ভাবা উচিত ছিল।
জানি…প্লিজ দেখ না।
দীপা অভিষিক্তার বাবাকে বলে অভিকে ডেকে আনার ব্যাবস্থা করেছে। এই মুহুর্তে শুধু ওরা দুজনে ঘরের ভেতরে, দীপা খোলা দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে আছে, কেউ এলে যাতে আটকাতে পারে।
প্লিজ…অভি…তুমি আরো একবার ভেবে দেখো।
আমার নতুন করে কিছু ভাবার নেই তুমি তো জানো।
প্লিজ অভি… আর কিছু বলতে পারলো না, কান্নার দমকে ওর গলা বুজে এলো। অভি কিছুক্ষন অপেক্ষা করলো ওকে স্বাভাবিক হওয়ার জন্য। কিছুটা পরে অভিষিক্তা নিজেকে সামলে নিয়ে চোখের জল মুছে ওর দিকে তাকালে পর আস্তে করে বলল… ষিক্তা, কেঁদোনা…আমি আসছি।
আজ অভি আর ষিক্তার ফুলশয্যা…দক্ষিন কোলকাতার একটা অনেক উঁচু বাড়ীর দক্ষিনমুখী বারো তলার ফ্ল্যাট… জানলা দিয়ে হু হু করে হাওয়া আসছে। ষিক্তা চুপ করে জানলার পাশে দাঁড়িয়ে আছে। মনে হোল পেছনে অভি এসে দাঁড়িয়েছে।মুখ ঘুরিয়ে দেখার আগে ওর কাঁধে অভির হাতের স্পর্শ। আস্তে আস্তে অভির দিকে ফিরে তাকালো…মুখে কোনো কথা নেই… কি বলবে? যে ভুল করেছে তা কি করে শোধরাবে?
কি হোল ষিক্তা…চুপ করে আছো? কেউ কিছু বলেছে?
না।
তাহলে?
কাজটা ঠিক হোল না অভি…তুমি পারবে না…ভুলতে…আমি কি ছিলাম
কিছু না বলে ওভি ওকে বুকের কাছে টেনে নিল… ষিক্তা… একটা জায়গায় তুমি ভুল করে যাচ্ছো।
কি?
তুমি যার কথা বলতে চাইছো…সে আমার ষিক্তা নয়, তৃষা।
তাতে কি হয়েছে? নামে কি আসে যায়?
যায়… আমি তো বিয়ে করেছি অভিষিক্তাকে…তাই না…
বুঝতে পারছি না…তুমি কি
চলো না… আজ থেকে আমরা দুজন দুজনকে নতুন করে বোঝার চেষ্টা করি… সব কিছু ভুলে গিয়ে…তৃষা বা অনুভব বলে কেউ ছিল না…থাকবেও না… পারবো না আমরা?
ষিক্তা ছোটো একটা নিঃস্বাস ফেলে বলল… পারবো।
এই…একটু হাসবে? এত সুন্দর মুখে এত চিন্তার ছাপ কি ভালো লাগে বলো দেখতে? আজ আমাদের ফুলশয্যা…তাই না…
ষিক্তা কিছ না বলে অভির বুকেমাথা রেখে আস্তে আস্তে বলল… জানি।
মাঝরাত পেরিয়ে গেছে অনেক আগেই…দুজন দুজনকে জ়ড়িয়ে ধরে আছে… কারুর চোখে ঘুম নেই… কথা যেন আর শেষ হয়না… নিজেরাই জানে না… কি নিয়ে কথা বলছে… কি নিয়ে হাসছে…কোনো মানে আছে কিনা সেই কথা, হাসির…শুধু জানে ওরা দুজন দুজনের…
অভি…
উঁ
আমরা ঘুমোবো না?
উঁ হুঁ
কি করবো?
তুমি বলো
উমম…আমি কেন বলবো…তুমি বলো
অভি মুখ নামিয়ে নিয়ে এলো ষিক্তার বুকে… ষিক্তা অভির পিঠে হাত চেপে ধরে বলল… আঃ লাগে তো…
কোথায়?
উমম…জানি না।
উপর দিয়ে ভালো লাগছে না…খুলবো?
জানি না
তাহলে থাক
ইস…কেন?
ইস…কেন… সব কথায় জানি না…জানি না… বললে কি করবো?
আচ্ছা বাবা…খোলো…এই…
বলো
সে কি করছে?
কে?
ধ্যাত…বলো না
ঘুমোচ্ছে
কখন উঠবে ঘুম থেকে?
তুমি যখন ডাকবে
তাই?
হুঁ
এখন ডাকি?
ডাকো।
…………………………………………………………………………………………………
ভোর বেলা, অভির বুকের ভেতরে ষিক্তার ঘুম ভাঙ্গলো…নিজের দিকে তাকিয়ে নিজেই লজ্জা পেয়ে গেল…ইস জানলা খোলা…খুব দুষ্টু…কিছুতেই গায়ে কিছু দিতে দিলো না… ওর ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকিয়ে বুকের ভেতরটা সুখের অনুভুতিতে ভরে উঠলো কাল রাতের কথা ভেবে… নিজের ঠোঁটটা ভিজিয়ে নিয়ে আলতো করে চুমু দিলো ওর ঠোঁটে…অভি হয়তো বুঝতে পারলো ওর নরম ভেজা ঠোঁটের ছোঁয়া…আরো বেশী করে বুকের ভেতরে টেনে নিয়ে এসে আবার ঘুমিয়ে পড়ল। ষিক্তা মুখ তুলে বাইরের দিকে তাকিয়ে ভাবলো…থাক, এখন উঠবো না…আর একটু থাকি ওর পাশে…
সমাপ্ত