17-11-2021, 10:54 AM
## ৪৮ ##
ভালবাসার রঙ কি? কিশোরী বয়সের বাছুরে প্রেমের (calf love) রঙ মনে হতো সফট পিঙ্ক। ভীষন মিষ্টি, খুব সফ্ট, দারুন কিউট এবং ভালনারেবেল। সারাটা দিন শুধু চকলেট, ক্যান্ডি, অঙ্কের খাতার মধ্যে শুকনো গোলাপের পাপড়ি এবং টেডি বিয়ার। যৌবনের খুচরো প্রেমগুলোর রঙ বোধ হয় লাল ছিলো। তীব্র কামনা-বাসনা এবং প্যাসনের রঙ। কলেজ পালিয়ে ব্যলকনির সাইড সীটে, পার্কে ঝোপঝাড়ে, অন্ধকার গলিতে শরীর ছোঁয়াছুয়ি খেলা। এরপর বিয়ের পরের স্বামীর সঙ্গে উদ্দাম দেহজ প্রেম। সে প্রেমের রঙ নিশ্চই হলুদ। এক নতুন সূর্য্যালোক, নতুন দিন, নতুন আশা, নতুন শক্তি, নতুন উদ্যম, নতুন উদ্দীপনা। দিন শুরু হতো দেহের আনাচে-কানাচে সুখের চাবিকাঠি খুঁজে নিতে আর রাত গভীর হতো একে অপরের শরীরে সোহাগের চাদর দিয়ে ঢেকে দিতে দিতে। আর আজ সেই উন্মাদনা যখন শেষ, “তবুও তো কিছু আছে বলতে যা বাধা নেই।“ আজকের প্রেম, না কি নাম দেবে একে, এই প্রেমের রঙ হয়তো নীল। অনেক বেশী ম্যাচিওরড, অনেক বেশী স্থায়িত্ব এবং বিশ্বাসযোগ্যতা দাবী করে।
আজ সকালে সায়নদীপকে কলেজে পৌঁছে দিতে যাওয়ার সময় উর্মি ভেবেছিলো জিন্স আর টপ পড়বে। কলকাতার নেকুপুষু সতীনক্ষী ইমেজ ছেড়ে ফিরে যাবে তার অভ্যস্ত লাইফস্টাইলে। টয়লেট সেরে একটা আকাশী কালারের প্যান্টির উপর জিন্সটা গলাতে গিয়েই বিপত্তি। থাইগুলো দিয়ে কোনোমতে যদি বা ঢুকালো, কোমরে গিয়েই কিচাইন। জিপারটা টেনে হিঁচড়ে লাগানো গেলেও কোমরের বোতাম কিছুতেই লাগলো না। চাপ চাপ চর্বি জমে আছে পেটে। সবই নিয়মিত দিবানিদ্রা, দুবেলা ভাত, শারিরীক পরিশ্রম না করা এবং মঝে মাঝেই মদ্যপানের ফল। কান্না পেয়ে গেলো তার। নিজের উপর নিজেরই রাগ হলো। এইজন্যই বুঝি দেবাংশুর আর তার ওপর মন নেই। অবশ্য এমনটা নয় যে দেবাংশুর মন পাবার জন্য সে হাপিত্যেশ করছে। বরং বাইরের নিষিদ্ধ ফলের প্রতিই তার লোভ বেশী। তাহলেও ……….
হাত পা ছড়িয়ে কাঁদার অবকাশ থাকলে তাই করতো উর্মি। কিন্তু সায়নের কলেজের সময় হয়ে যাচ্ছে। অগত্যা চটপট একটা তুঁতে রঙের প্রিন্টেড শাড়ী পড়ে নিলো। এই শাড়ীটা বেছে নিলো এই কারণে যে এর সঙ্গে ম্যাচিং ব্লাউজটা ডিপকাট, অনেকটা ক্লিভেজ দেখা যায়, আর পিঠের বেশীরভাগটাই খোলা থাকে। সতীলক্ষী ইমেজ ভাঙ্গার ডিশিসন যখন নিয়েই নিয়েছে, তখন আর দেরী নয়; শুভস্য শীঘ্রম, আজ থেকেই হোক। তার সঙ্গে এটাও প্রমিজ করলো নিজের কাছেই, আজ থেকে তিন মাসের মধ্যেই সে তার তন্বী ফিগার ফিরে পাবেই। তার জন্য যা করার তাই করবে। ফিরে যাবে তার যৌবনোচ্ছল দিনগুলোতে। সেদিন কোন একটা জিমের এ্যডে দেখছিলো লেখা আছে, এক মধ্যবয়সী ভদ্রমহিলা বলছেন, “আই প্রমিজ, আই স্যাল ফিট টু মাই কলেজ জীন্স।“ উর্মিও ঠোঁটে দাত চেপে সেই কসম খেয়ে নিলো।
সায়নদীপকে কলেজে পৌঁছে দিয়ে বাড়ী ফেরাটা চাপ হয়ে যায়। ম্যান্ডেভিলা গার্ডেন্স থেকে নিউ কসবা সামান্য দূরত্ব। কোনো ট্যাক্সি এই সময় উল্টোরুটে ওই সামান্য রাস্তা যেতে চায় না। বাসে গেলে কন্ডাকটর থেকে শুরু করে প্রায় প্রতিটি প্যসেঞ্জার চোখ দিয়ে গিলে খয়। ভীড়ে সূযোগ বুঝে বুকে কনুই মারে, থাইয়ে, পেটে হাত বোলায়, পাছায় বাড়া ঘষে। ডিসগাস্টিং, সেক্স ম্যানিয়াক এক-একজন। একটা ট্যাক্সি আসতেই অনেকের সাথে উর্মিও ছুটে গেলো, এবং যথারীতি পেলো না। তখনই একটা কচি কলাপাতা রঙের হোন্ডা সিটি এসে দাড়ালো এবং জানলার কাঁচ নামিয়ে একটি ক্লিন শেভেন মুখ বেরিয়ে এলো, “ম্যাডাম, চিনতে পারছেন? আপনি নিউ কসবার দিকে থাকেন তো? আমিও ওই দিকেই থাকি। আপত্তি না থাকলে, আমার সাথে আসতে পারন।“
“আপনি ….. মানে”, বিরক্ত হয় উর্মি। ভদ্রলোককে কি সে চেনে! স্ট্রীট রোমিও নয় তো! কিন্তু ভদ্রলোকের গেট আপ এবং হোন্ডা সিটি গাড়ীটা ঠিক স্ট্রীট রোমিও ইমেজর সঙ্গে ঠিক খাপ খায় না। কিন্তু একদম অপরিচিত একজনের সাথে কি করে এক গাড়ীতে যাবে! কতোরকম ঘটনা দেখা যায় চ্যানলে চ্যানলে।
“আমি নীল বসু। আমার মেয়ে হরিতা আপনার ছেলে, নাম মোস্ট প্রব্যাবলি, সায়ন, ইয়েস সায়নদীপের সাথে পড়ে। আ্যডমিশন টেস্টের দিন আপনার এবং আপনার হাসব্যান্ডের সঙ্গে আলাপ হয়েছিলো”।
চকিতে মনে পড়ে যায় উর্মির। ছ’ ফিট দু’ তিন ইঞ্চি লম্বা এই সুপুরুষটির সঙ্গে সেদিন তাদের সঙ্গে আলাপ হয়েছিলো। যতদুর মনে পড়ছে ভদ্রলোকের কিসের যেন বিজনেস, কি বিজনেস তা অবশ্য মনে নেই। বলেছিলেন হয়তো, কিন্তু তখন সায়নের আ্যডমিশনের টেনশনে মনে রাখা সম্ভব হয় নি। কি যেন একটা ব্যাপার আছে ভদ্রলোকের মধ্য, দারুন চোখ টানে। একেই বোধহয় এক্স ফ্যাক্টর বলে।
“আপনার অসুবিধা হবে না তো?”, গলার আওয়াজটাকে যতোটা সম্ভব মিষ্টি করে কথাগুলো হালকা করে ছুড়ে দিলো উর্মি।
“নট আ্যট অল ম্যাম”, নির্ভেজাল ইয়াঙ্কি আ্যকসেন্ট। একটু ঝুঁকে গাড়ীর দরজা খুলে দিলো নীল বসু। রঙ্গিনী উর্মির রঙ্গময় জীবনের একটা নতুন অধ্যায়ের দরজা খুলে গেলো কি!
################################
ভালবাসার রঙ কি? কিশোরী বয়সের বাছুরে প্রেমের (calf love) রঙ মনে হতো সফট পিঙ্ক। ভীষন মিষ্টি, খুব সফ্ট, দারুন কিউট এবং ভালনারেবেল। সারাটা দিন শুধু চকলেট, ক্যান্ডি, অঙ্কের খাতার মধ্যে শুকনো গোলাপের পাপড়ি এবং টেডি বিয়ার। যৌবনের খুচরো প্রেমগুলোর রঙ বোধ হয় লাল ছিলো। তীব্র কামনা-বাসনা এবং প্যাসনের রঙ। কলেজ পালিয়ে ব্যলকনির সাইড সীটে, পার্কে ঝোপঝাড়ে, অন্ধকার গলিতে শরীর ছোঁয়াছুয়ি খেলা। এরপর বিয়ের পরের স্বামীর সঙ্গে উদ্দাম দেহজ প্রেম। সে প্রেমের রঙ নিশ্চই হলুদ। এক নতুন সূর্য্যালোক, নতুন দিন, নতুন আশা, নতুন শক্তি, নতুন উদ্যম, নতুন উদ্দীপনা। দিন শুরু হতো দেহের আনাচে-কানাচে সুখের চাবিকাঠি খুঁজে নিতে আর রাত গভীর হতো একে অপরের শরীরে সোহাগের চাদর দিয়ে ঢেকে দিতে দিতে। আর আজ সেই উন্মাদনা যখন শেষ, “তবুও তো কিছু আছে বলতে যা বাধা নেই।“ আজকের প্রেম, না কি নাম দেবে একে, এই প্রেমের রঙ হয়তো নীল। অনেক বেশী ম্যাচিওরড, অনেক বেশী স্থায়িত্ব এবং বিশ্বাসযোগ্যতা দাবী করে।
আজ সকালে সায়নদীপকে কলেজে পৌঁছে দিতে যাওয়ার সময় উর্মি ভেবেছিলো জিন্স আর টপ পড়বে। কলকাতার নেকুপুষু সতীনক্ষী ইমেজ ছেড়ে ফিরে যাবে তার অভ্যস্ত লাইফস্টাইলে। টয়লেট সেরে একটা আকাশী কালারের প্যান্টির উপর জিন্সটা গলাতে গিয়েই বিপত্তি। থাইগুলো দিয়ে কোনোমতে যদি বা ঢুকালো, কোমরে গিয়েই কিচাইন। জিপারটা টেনে হিঁচড়ে লাগানো গেলেও কোমরের বোতাম কিছুতেই লাগলো না। চাপ চাপ চর্বি জমে আছে পেটে। সবই নিয়মিত দিবানিদ্রা, দুবেলা ভাত, শারিরীক পরিশ্রম না করা এবং মঝে মাঝেই মদ্যপানের ফল। কান্না পেয়ে গেলো তার। নিজের উপর নিজেরই রাগ হলো। এইজন্যই বুঝি দেবাংশুর আর তার ওপর মন নেই। অবশ্য এমনটা নয় যে দেবাংশুর মন পাবার জন্য সে হাপিত্যেশ করছে। বরং বাইরের নিষিদ্ধ ফলের প্রতিই তার লোভ বেশী। তাহলেও ……….
হাত পা ছড়িয়ে কাঁদার অবকাশ থাকলে তাই করতো উর্মি। কিন্তু সায়নের কলেজের সময় হয়ে যাচ্ছে। অগত্যা চটপট একটা তুঁতে রঙের প্রিন্টেড শাড়ী পড়ে নিলো। এই শাড়ীটা বেছে নিলো এই কারণে যে এর সঙ্গে ম্যাচিং ব্লাউজটা ডিপকাট, অনেকটা ক্লিভেজ দেখা যায়, আর পিঠের বেশীরভাগটাই খোলা থাকে। সতীলক্ষী ইমেজ ভাঙ্গার ডিশিসন যখন নিয়েই নিয়েছে, তখন আর দেরী নয়; শুভস্য শীঘ্রম, আজ থেকেই হোক। তার সঙ্গে এটাও প্রমিজ করলো নিজের কাছেই, আজ থেকে তিন মাসের মধ্যেই সে তার তন্বী ফিগার ফিরে পাবেই। তার জন্য যা করার তাই করবে। ফিরে যাবে তার যৌবনোচ্ছল দিনগুলোতে। সেদিন কোন একটা জিমের এ্যডে দেখছিলো লেখা আছে, এক মধ্যবয়সী ভদ্রমহিলা বলছেন, “আই প্রমিজ, আই স্যাল ফিট টু মাই কলেজ জীন্স।“ উর্মিও ঠোঁটে দাত চেপে সেই কসম খেয়ে নিলো।
সায়নদীপকে কলেজে পৌঁছে দিয়ে বাড়ী ফেরাটা চাপ হয়ে যায়। ম্যান্ডেভিলা গার্ডেন্স থেকে নিউ কসবা সামান্য দূরত্ব। কোনো ট্যাক্সি এই সময় উল্টোরুটে ওই সামান্য রাস্তা যেতে চায় না। বাসে গেলে কন্ডাকটর থেকে শুরু করে প্রায় প্রতিটি প্যসেঞ্জার চোখ দিয়ে গিলে খয়। ভীড়ে সূযোগ বুঝে বুকে কনুই মারে, থাইয়ে, পেটে হাত বোলায়, পাছায় বাড়া ঘষে। ডিসগাস্টিং, সেক্স ম্যানিয়াক এক-একজন। একটা ট্যাক্সি আসতেই অনেকের সাথে উর্মিও ছুটে গেলো, এবং যথারীতি পেলো না। তখনই একটা কচি কলাপাতা রঙের হোন্ডা সিটি এসে দাড়ালো এবং জানলার কাঁচ নামিয়ে একটি ক্লিন শেভেন মুখ বেরিয়ে এলো, “ম্যাডাম, চিনতে পারছেন? আপনি নিউ কসবার দিকে থাকেন তো? আমিও ওই দিকেই থাকি। আপত্তি না থাকলে, আমার সাথে আসতে পারন।“
“আপনি ….. মানে”, বিরক্ত হয় উর্মি। ভদ্রলোককে কি সে চেনে! স্ট্রীট রোমিও নয় তো! কিন্তু ভদ্রলোকের গেট আপ এবং হোন্ডা সিটি গাড়ীটা ঠিক স্ট্রীট রোমিও ইমেজর সঙ্গে ঠিক খাপ খায় না। কিন্তু একদম অপরিচিত একজনের সাথে কি করে এক গাড়ীতে যাবে! কতোরকম ঘটনা দেখা যায় চ্যানলে চ্যানলে।
“আমি নীল বসু। আমার মেয়ে হরিতা আপনার ছেলে, নাম মোস্ট প্রব্যাবলি, সায়ন, ইয়েস সায়নদীপের সাথে পড়ে। আ্যডমিশন টেস্টের দিন আপনার এবং আপনার হাসব্যান্ডের সঙ্গে আলাপ হয়েছিলো”।
চকিতে মনে পড়ে যায় উর্মির। ছ’ ফিট দু’ তিন ইঞ্চি লম্বা এই সুপুরুষটির সঙ্গে সেদিন তাদের সঙ্গে আলাপ হয়েছিলো। যতদুর মনে পড়ছে ভদ্রলোকের কিসের যেন বিজনেস, কি বিজনেস তা অবশ্য মনে নেই। বলেছিলেন হয়তো, কিন্তু তখন সায়নের আ্যডমিশনের টেনশনে মনে রাখা সম্ভব হয় নি। কি যেন একটা ব্যাপার আছে ভদ্রলোকের মধ্য, দারুন চোখ টানে। একেই বোধহয় এক্স ফ্যাক্টর বলে।
“আপনার অসুবিধা হবে না তো?”, গলার আওয়াজটাকে যতোটা সম্ভব মিষ্টি করে কথাগুলো হালকা করে ছুড়ে দিলো উর্মি।
“নট আ্যট অল ম্যাম”, নির্ভেজাল ইয়াঙ্কি আ্যকসেন্ট। একটু ঝুঁকে গাড়ীর দরজা খুলে দিলো নীল বসু। রঙ্গিনী উর্মির রঙ্গময় জীবনের একটা নতুন অধ্যায়ের দরজা খুলে গেলো কি!
################################