Thread Rating:
  • 114 Vote(s) - 2.66 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
কিছু মনের সত্যি কথা
রানামামার কান গরম হয়ে গেলেও চুপ করে রইলেন। বৈষ্ণবের রাগতে নেই। কিন্তু পরিস্থিতি রাগরাগিণীর ধারকাছ দিয়েও না গিয়ে সোজা বিরক্তিতে চলে গেল। তখন ঘড়িতে সাড়ে পাঁচটা। রানামামার সেজমাসি অর্থাৎ কিনা আবিরের সেজদিদু তাঁর মোবাইলে রঘুরাজপুরে তৈরি একলাখি পটচিত্রের ছবি পেয়ে ফোন করে জিজ্ঞেস করছেন, হ্যাঁ লা, ওই কী বলে বুটিক না কী যেন ওই সব খুললি না কি?
বিরক্তি পর্যবসিত হল ভয়ে যখন একতলার ফ্ল্যাটের অঘোর বড়াল ফোন করে জানতে চাইলেন, আপনার রেডিফ মেইলের ইউজ়ার আইডি আর পাসওয়ার্ড আমায় পাঠাচ্ছেন কেন মশাই? টুকে রাখব?
জরুরি তলবে সবাই পৌনে টাতেই বাগবাজার ঘাটে এসে জুটেছে। রানামামা হাঁ করে গঙ্গার দিকে তাকিয়ে বসে আছেন। আবির কাঁচুমাচু। পল্লব রানামামার ফোনটা নিয়ে দেখতে দেখতে জিজ্ঞেস করল, সফ্টওয়্যার পেলে কোথায়?
রানামামার চটকা ভাঙল। আবিরের দিকে তাকিয়ে ফুঁসে উঠলেন, এই যে, গুণধর! পেয়ারের ভাগ্নে আমার। দ্বাপরে চিমটি কেটেছিলাম। তখন আমায় শেষ করেও আশ মেটেনি। কলিতেও বাঁশ দিয়ে চলেছে।
বংশী আবিরকে একটা মৃদু ধমক দিয়ে বলল, কোত্থেকে যে সব আপদ যাক গে, পুলু আগে ওটা ডিঅ্যাক্টিভেট কর।
পল্লব কিছুক্ষণ নেড়েচেড়ে বলল, পারছি না।
কী কথা!
ফটিক বলল, দাঁড়া দাঁড়া, হিসেব ছিল পঞ্চাশটা যাওয়ার তাই তো?
হ্যাঁ।
বেশি গেলে?
পয়সা কাটবে?
সব্বোনাশ! তা হলে এই যে একশো সাতচল্লিশ নম্বর যাচ্ছে, এতে কাটছে না কিছু?
কী ভাবে? রানামামার মাথায় বাজ পড়ল
আবির ঢোঁক গিলে বলল, তাই তো! আচ্ছা, তুমি কোনও ব্যাঙ্ক ডিটেলস কিছু…”
কই না তো।
কখনও অনলাইন ট্রানজ়্যাকশন করেছ ফোনে? মানে কার্ড দিয়ে…”
হ্যাঁ, তা তো মানে হামেশাই…”
সে সব এরা কোনও ভাবে রিড করে টাকা কেটে নিচ্ছে না তো?
মামা শিউরে উঠলেন, এটাই বাকি ছিল! তার পর ফের গঙ্গার দিকে তাকিয়ে হাল ছেড়ে দেওয়ার ভঙ্গিতে বললেন, গেল প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাচুইটি, সব চলে গেল!
পল্লব আরও কষে মেল থামানোর উপায় খোঁজা শুরু করল এবং সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ প্রায় লুকিয়ে থাকা ডিঅ্যাক্টিভেট বোতামটা খুঁজে পেয়ে, সেটা টিপে দিয়ে তার পর নিঃশ্বাস নিল। পৌনে আটটায় নিকুঞ্জর দোকান থেকে চা খেয়ে সবাই বাড়ি চলে গেল
আর সোয়া আটটায় রানামামা দেখলেন দুশো তেরো নম্বর মেল নতুন অ্যাকাউন্টে এসে ঢুকছে
সাড়ে আটটায় ফোনে কনফারেন্স। রানামামা চেঁচাচ্ছেন, অশৈলী ব্যাপার। থামেনি! পুলু, থামেনি।
আবার যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি। পল্লব বলল, তুমি কম্পিউটারে বসে রিমোট ডেস্কটপ অন করো শিগগিরি। ওহ্, কী যে পাকিয়ে বসলে…”
ফটিক, আবির, বংশী যে যার বাড়িতে স্ট্যান্ডবাই মোডে মেশিন অন করে বসে। ডিনার মাথায়
প্রায় সোয়া ঘণ্টা গরু খোঁজার পর সবেধন নীলমণি রিমুভ বোতামটা পাওয়া গেল। পল্লব সেটা টিপে দিতেই স্ক্রিনে দেখা গেল গেঁড়িগুগলি রিমুভড ঘরে তখন শুধু টেবিল ঘড়ির টিকটিক। রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতি। রানামামা ভয়ে ভয়ে বললেন, আবার কিছু হবে না তো?
পল্লব বলল, লক্ষ রাখছি।
এক মিনিট, দুমিনিট, পাঁচ মিনিট, পনেরো মিনিট নাহ্, আর কোনও মেল কোথাও যাচ্ছে না
নিশ্চিন্ত!
Like Reply


Messages In This Thread
RE: কিছু মনের সত্যি কথা - by ddey333 - 16-11-2021, 05:49 PM



Users browsing this thread: 18 Guest(s)