Thread Rating:
  • 106 Vote(s) - 2.8 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance মিষ্টি মূহুর্ত ( উপন্যাস) সমাপ্ত :---
Update 2


প্রায় এক সপ্তাহ সুচি কলেজ কামাই করলো। এখন সুচি জানে যে তারা দুজনেই একে অপরকে ভালোবাসে ।  সুচি এটা জানে যে আকাশ তাকে ভালোবাসে কিন্তু সেটা সে বুঝতে পারে না। সুচি চায় না যে আকাশ এটা বুঝে যাক কারন এই সম্পর্ক কেউ মানবে না , কেউ মেনে নেবে না। তাই আকাশের কাছে নিজের ভালোবাসা প্রকাশ না করার সিদ্ধান্ত নিল সুচি। কিন্তু ভালোবাসার অনুভূতি কি লুকিয়ে থাকে ? না আজ পর্যন্ত কেউ রাখতে পেরেছে ?

সুচির জন্য আকাশকে দুই দিন বাসে করে ধাক্কাধাক্কি করতে করতে কলেজ যাতায়াত করতে হয়েছিল , এখন আবার আগের মতো সুচির স্কুটিতে বসে কলেজে আসতে খুব ভালো লাগলো আকাশের। সুচির অনুপস্থিতিতে লাবনী আকাশের বন্ধুদের গ্রুপের দ্বিতীয় মেয়ে সদস্যা হয়ে উঠলো। দীর্ঘ এক সপ্তাহ কলেজ কামাই করে প্রথম দিন কলেজ গিয়ে টিফিন ব্রেকেই সুচির সাথে লাবনীর পরিচয় হলো। লাবনীকে দেখে সুচির মনে হলো ‘ বড্ড গায়ে পড়া স্বভাবের। ‚

আগের মতো সবকিছু স্বাভাবিক ভাবে চললেও সুচির মন আর স্বাভাবিক নেই। কোন রহস্য নেই। কোন প্রশ্ন নেই। শুধু কি করতে হবে সেটা জানা নেই।  সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যাওয়ায় সুচি এখন মাঝে মাঝেই আকাশের দিকে দৃষ্টি ফেলতে বাধ্য হয়। অবাধ্য মন কোন কিছুই মানতে চায় না। সবসময় মনে হয় এই ছেলেটাকে দেখতে থাকি। একটু কাছে গিয়ে কথা বলি। রোজ কলেজ আসা যাওয়া , আড্ডা মারার মধ্যে দিয়ে তিন চারদিন কেটে গেল।

আজকে সুচির কলেজে লাস্ট লেকচারটা একটু বেশিই সময় ধরে চললো। ক্লাস শেষে বৈশাখীর সাথে পার্কিংয়ে এসেই সামনের দৃশ্য দেখে থমকে দাঁড়িয়ে পড়লো সুচি । সুচি দেখলো আকাশ তার স্কুটিতে বসে আছে। আর লাবনী নিচে দাড়িয়ে আকাশের মুখের উপর ঝুঁকে আছে। তারা দুজন কি করছে সেটা সুচি দেখতে পাচ্ছে না কারন লাবনীর পিঠ সুচির দিকে আছে। সুচি আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো পার্কিংয়ে আরও যারা দাঁড়িয়ে আছে কিংবা নিজেদের সাইকেল, বাইক বার করছে তারা আড়চোখে আকাশ আর লাবনীর দিকেই তাকিয়ে আছে। তাদের দৃষ্টি দেখে সুচি বুঝলো যে লাবনী আকাশকে কিস করছে। সন্দেহটা মাথায় আসতেই সুচির শরীর  রাগে রি রি করে জ্বলতে শুরু করলো । এটা কোন জায়গা ? সে কে ? কি করা উচিত ? পরিস্থিতি কি ? সব ভুলে গেল সুচি। এখন তার রন্ধ্রে রন্ধ্রে জ্বলছে হাজারটা আগ্নেয়গিরি। রাগে ফুসতে ফুসতে লম্বা লম্বা পা ফেলে সুচি এগিয়ে যেতে লাগল আকাশ আর লাবনীর দিকে। ভাবটা এমন যে গিয়ে দুজনকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেবে। তারপর যা হওয়ার হবে।

লম্বা লম্বা পা ফেলে এগিয়ে গিয়ে সামনের দৃশ্য দেখে সুচি আবার থমকে দাড়িয়ে পড়লো । আকাশ আর লাবনী কিস করছে না। আকাশের চোখে কিছু একটা পড়েছে তাই লাবনী সেটা ফু দিয়ে বার করার চেষ্টা করছে। এটা দেখে সুচির রাগ কমে এলো , “ কি হয়েছে ? „

সুচির গলা শুনেই লাবনী সরে দাঁড়ালো। আকাশ চোখ ডলতে ডলতে বললো , “ চোখে কিছু একটা পড়েছে। জ্বালা করছে খুব। „

“ কই দেখি ! „বলে সুচি এগিয়ে গেল। সুচি গিয়ে আকাশের বাম চোখটা ভালো করে দেখলো। আকাশের চোখটা জবা ফুলের মত লাল হয়ে আছে। আর চোখের একদম নিচের দিকে ছোট এক টুকরো ময়লা আটকে আছে। সুচি ব্যাগ থেকে রুমালটা বার করে আঙুলে পাকিয়ে আসতে করে পরম যত্নে রুমালটা দিয়ে ময়লাটা বার করে দিল।

আকাশ চোখের জ্বালা থেকে মুক্তি পেয়ে স্কুটি থেকে নেমে চোখে জল দিতে লাগলো। এদিকে এতক্ষণ ধরে লাবনী সুচিকে দেখে যাচ্ছিল। আকাশের চোখের ময়লা বার হওয়ার পর সুচি লাবনীর দিকে চোয়াল শক্ত করে তাকালো। চোখে তার আগুন জ্বলছে। একটা ছেলে এই দৃষ্টির অর্থ না বুঝলেও একটা মেয়ে এই দৃষ্টির অর্থ খুব ভালো করে বুঝতে পারে। লাবনীও সুচির চোখের দৃষ্টির অর্থ বুঝতে পারলো। সুচির চোখ দেখে লাবনী বুঝলো ‘ আকাশের আশেপাশে ওর উপস্থিতি সুচি পছন্দ করছে না।  ‚

এদিকে বৈশাখীও সুচির আচরণ লক্ষ্য করলো। এই আচরণের মানেও তার কাছে স্পষ্ট। কিন্তু সে কিছু বললো না। বৈশাখী জানে সুচি তার কাছে আগের বারের মতোই অস্বীকার করবে ।

আকাশ চোখে জল দিয়ে বললো , “ আজ এতো দেরি করলি ! লেকচার বেশিক্ষণ চললো নাকি ! „

“ হ্যাঁ । চল ।  „ বলে স্কুটিতে উঠে স্কুটি স্টার্ট দিল। আকাশ পিছনে বসে পড়লে সুচি বৈশাখীকে বললো , “ আসি রে । „

বৈশাখী হাত নেড়ে বায় করে দিয়ে বললো , “ হ্যাঁ । সাবধানে যাস । „

স্কুটি চালিয়ে কিছুদূর যাওয়ার পরেই সুচি বুঝতে পারলো যে সে কি ভুল করলো। আকাশের আশেপাশে কোন মেয়েকে থাকতে দেখলে তার জন্য সুচির রাগ করার কোন অধিকার-ই নেই। উপরন্তু কাউকে বুঝতেই দেওয়া যাবে না তারা দুজন একে অপরকে ভালোবাসে। যদি জানাজানি হয়ে যায় তাহলে হয়তো বন্ধুত্বটাই আর থাকবে না। হয়তো আকাশের সাথে মেলামেশাটাও বন্ধ হয়ে যাবে। তখন কি নিয়ে থাকবে সুচি।

এইসব দুঃশ্চিন্তা করতে করতে সুচি কখন যে স্কুটিটাকে জোরে চালাতে শুরু করেছে সেটা আর খেয়াল নেই। একটা সাইকেলের পাশ দিয়ে হুসস করে বেরিয়ে গেল সুচির স্কুটি । আকাশ সেটা লক্ষ্য করে এবং ভয় পেয়ে চিল্লিয়ে বললো , “ এই দেখে চালা । আর একটু হলে তো সাইকেলটাকে ঠুকে দিতিস ! „

সুচি এবার স্কুটি চালানোয় মনোযোগ দিল। কিন্তু মাথা থেকে সেই দুঃশ্চিন্তা গুলো সরাতে পারলো না। সুচি যতোই নিজের অনুভূতি লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করুক আকাশের আশেপাশে থাকলে সেই অনুভূতি সবার দৃষ্টিগোচর হবেই।

একমাসের মধ্যে কলেজের পঞ্চাশ তম প্রতিষ্ঠা দিবস পড়ে গেল। সন্ধ্যা বেলায় হবে ফাংশন। টালিগঞ্জ থেকে একজন নামকরা উঠতি অভিনেত্রীকে চিফ গেস্ট করে আনা হয়েছে। নাম তনুশ্রী। দুটো গানে নাচবে তারপর চলে যাবে। এতেই দশ লাখ টাকা নিয়েছে। মানে একটা নাচে পাচ লাখ টাকা ইনকাম। এটাই এখন কলেজের সবথেকে বড়ো এবং জনপ্রিয় মুখরোচক খবর।

আকাশের গ্রুপের কৃষ্ণ আর প্রভাকর তাদের গার্লফ্রেন্ড নিয়ে ব্যস্ত। নন্দিনী এইসব পছন্দ করে না তাই সে আসেনি। আর লাবনী সেজেগুজে আসবে তাই দেরি হচ্ছে। একটাও বন্ধু না আসায় আকাশ সুচির ক্লাসে এসে বসলো। সন্ধ্যা হয়ে এসছে , অন্ধকার নামলেই ফাংশন শুরু হবে। সুচি আজকে স্টেজে নাচবে না । তার বদলে দর্শক হয়ে উপভোগ করবে। সুচি আজ পড়েছে একটা সাদা কুর্তি আর লাল প্লাজো । প্রায় কোমর পর্যন্ত চুল কেটে পিঠের অর্ধেক পর্যন্ত করেছে। এই নিয়ে কতো আফসোস করেছিল সুচি। আকাশ বলেছিল , “ যখন চুলের এতো মায়া ! তাহলে কাটলি কেন ? ভালোই তো দেখাচ্ছিল। „

এর জবাবে সুচি বলেছিল , “ তুই বুঝবি না এসব । „

তা এই চুল পিঠে ছড়িয়ে সুচি মেকআপের ছোট গোল আয়নায় মুখ দেখছিল। পাশের বেঞ্চেই আকাশ বসেছিল। আর সুচির সামনের বেঞ্চে উল্টো দিকে পিঠ করে গৌরব বসে সুচির সৌন্দর্য গিলছিল।

রেশমের মতো মোলায়েম কালো ঘন চুলের নিচে সরু কপাল। ধনুকের মতো বেঁকে যাওয়া সরু দুটো ভুরু। ভুরুর ঠিক নিচেই আছে কাজল টানা সরু দুটো চোখ।  চোখের মণি দুটো যেন কয়লার থেকেও কালো । মুখটা লম্বাটে আর চিবুক সুচালো বা ধারালো। ফর্সা দুই গালে সবসময় দুটো  টোল পড়ে থাকে যেটা হাসলে বা কথা বললে গর্তের আকার নেয়। সুচির মুখে চোখ আর টোলের সাথেই আছে মানানসই ওষ্ঠ্যদ্বয়। সরু কোমল দুটো ঠোঁট। মুখের ভিতর মুক্তোর মত সাদা দাঁত নিখুঁতভাবে সাজিয়ে বসানো। আর স্লিম ফিগার পুরো যেন কোন প্রোফেসনাল ট্রেনারের কাছ থেকে ট্রেনিং নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা জিমে কাটিয়ে বানানো শরীর। এই শরীর এর মুখের সৌন্দর্যই গৌরব গিলছিল।

সুচি ছোট আয়নায় লাল লিপস্টিক মাখতে মাখতে দেখলো গৌরব তার দিকে তাকিয়ে আছে আর আকাশ গৌরবের দিকে তাকিয়ে আছে। আকাশের দৃষ্টি দেখে সুচি বুঝতে পারলো যে আকাশ গৌরবের এই দৃষ্টি একদম পছন্দ করছে না। আকাশের এই ঈর্ষা দেখে সুচি খুব মজা পেলো । কিন্তু এই মজাটাই কিছুক্ষণ পর মন খারাপের কারন হয়ে দাড়ালো ।

কলেজেরই ছোট মাঠে একটা স্টেজ করে সেখানে ফাংশনের আয়োজন করা হয়েছে। পাস ছাড়া কাউকেই ঢুকতে দিচ্ছে না। বৈশাখী , সুচি , আকাশ আর গৌরব সেখানে চলে গেল। গৌরব মনে মনে ভাবলো ‘ এই লেজুড়টা দেখছি পিছন ছাড়ছে না ! কোথায় একটু এই সুন্দরীর সাথে সময় কাটাবো সেটাও হচ্ছে না । ,

ভীড় ঠেলে একেবারে সামনের দিকে সুচি দলবল নিয়ে চলে গেল। নাচ তো শুরু হয়েই গেছিল তাই সুচি গিয়েই নাচতে শুরু করলো । কোন নির্দিষ্ট স্টেপ মেইনটেইন করে নয় , যেমন খুশি তেমন নাচো । কারন সবাই তাই করছে। এদিকে নাচ না জানায় আকাশ বেশিকিছু করছে না দেখে সুচি আকাশকে বললো , “ কি ! নাচবি না ? „

আকাশ বিরক্ত হয়ে বললো , “ আমি কি নাচ জানি যে নাচবো ! „

সুচি একটা অবজ্ঞার দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো , “ আমার সাথে থেকে নাচটাই শিখলি না তুই। ঠিক আছে। আমি যেমন করছি তেমন কর । „ বলে পা মাটি থেকে না তুলে এক জায়গা থেকে অপর জায়গায় যাওয়ার স্টেপ শেখালো ।

আকাশ সুচির দেখিয়ে দেওয়া মত কখনো গোড়ালি মাটিতে রেখে টো এগিয়ে দিয়ে তারপরেই টো মাটিতে রেখে গোড়ালি সরিয়ে এক জায়গা থেকে অপর জায়গায় চলে গেল

আকাশ খুব সহজেই স্টেপ শিখে যাওয়ায় সুচি খুব খুশি হলো। এদিকে গৌরবের মুখে রাগে বিরক্তিতে দেখার মতো হয়ে উঠলো।

গৌরব আর বৈশাখী কি করছে না দেখে সুচি আকাশকে নাচ শেখানোয় মন দিল , “ এবার এটা কর । „ বলে একটা হাত কোমড়ে দিয়ে আর একটা হাত আকাশে তুলে কোমর নাচিয়ে নাচ শেখালো ।

আকাশ সেটাও খুব ভালো ভাবে করলো। পরপর দুটো নাচের স্টেপ শিখে আকাশ বললো “ দুটো হাত তুলে কোমর নাচালে কি হবে ? „

আকাশের বোকামি দেখে সুচি হো হো করে হাসতে হাসতে বললো , “ দুটো হাত উপরে তুলে নাচলে কীর্তন হয়ে যাবে । „

অনেক দিন পর সুচিকে প্রাণ খুলে হাসতে দেখলো আকাশ। কতদিন যে এই গালে টোল পড়া হাসি সে দেখেনি তা সে জানে না। তাই এখন সুচির হাসি দেখে আকাশও হেসে ফেললো। তারপর পরপর আরও কয়েকটা নাচ শেখালো। কখনো একে অপরের কোমরে হাত দিয়ে কখনো বা সুচির শরীর টাকে চাগিয়ে। একবার গালের উপর হাতের তালু বুলিয়ে । এই শেষের নাচটা দেখে আকাশ বললো , “ এটাতো মনে হচ্ছে যেন গালে  ক্রিম লাগাচ্ছি । „

সুচি আবার হো হো করে হেসে উঠলো। আজ অনেক দিন পর সে তার ভালোবাসার মানুষটাকে এতো কাছে পেয়েছে। কেউ নেই বাঁধা দেওয়ার মতো। তাই সে মন খুলে আকাশকে নাচ শিখিয়ে এই সময়টা উপভোগ করতে লাগলো। কিন্তু মনটা খচখচ করতে লাগলো এটা ভেবে যে ‘ এইরকম সময় আর কখনো সে পাবে না। ‚

এদিকে সুচিকে আকাশকে নাচ শেখাতে দেখে গৌরব রাগে কাঁপতে লাগলো। প্রায় চার বছর হলো সুচির সাথে গৌরব একই ক্লাসে পড়ছে। কলেজের-ই কয়েকটা ফাংশনে নেচেছে দুজনে। কিন্তু সুচি কখনোই গৌরবকে নাচ শেখানো তো দূরের কথা তার সাথে নাচেনি পর্যন্ত। আকাশকে নাচ শেখাতে দেখে গৌরব মনে মনে ভাবলো কিছু একটা করতেই হবে। এই উড়ে এসে জুড়ে বসা পাবলিককে কিছুতেই তার এতদিনের আগলে রাখা সুন্দরী কে নিয়ে যেতে দেবে না সে।

প্রায় সাত আটটা নাচের স্টেপ শেখানোর পর লাবনী চলে এলো । সে একটা হাটুর উপর পর্যন্ত নিল রঙের ওয়ান পিস ড্রেস পড়ে এসেছে । মাঠে ঢুকতেই সবাই আড়চোখে লাবনীকে দেখতে লাগলো। কয়েকজন ভিড়ের সুযোগ নিয়ে লাবনীর শরীর স্পর্শ করলো। লাবনী সেসব না দেখে ভিড়ের মধ্যে আকাশকে খুজতে লাগলো । কিছুক্ষণ খোঁজার পর যখন খুঁজে পেল তখন দেখলো সুচি আকাশকে নাচ শেখাচ্ছে। কিছুক্ষণ ওদের দিকে তাকিয়ে থেকে লাবনী এগিয়ে গেল। আকাশ লাবনীর ড্রেস দেখে বললো , “ খুব সুন্দর দেখাচ্ছে তোমাকে। „

লাবনীর ড্রেস দেখে সুচি তার উদ্দেশ্য বুঝতে পারলো ‘ এইরকম ড্রেস পড়েই লাবনী আকাশের সাথে নাচবে। , কথাটা ভাবতেই সুচির মুখটা তেতো হয়ে উঠলো। এতক্ষণ ধরে যে একান্ত ব্যক্তিগত সুখের সময়টা সুচি কাটালো সেটা মিথ্যা হয়ে গেল । সুচি কখনোই এই মেয়েটার সাথে আকাশকে নাচতে দিতে রাজি নয়। তাই সে তাড়াহুড়ো করার নাটক করে হাতের ঘড়ি দেখে বললো , “ চল । এখন না বার হলে বাড়ি যেতে দেরি হয়ে যাবে। বাবা তাহলে বকবে খুব ! „

সুচি যখন মেকআপ করছিল তখন গৌরব সুচির দিকে তাকিয়ে ছিল। গৌরবের দৃষ্টি আকাশের সহ্য হয়নি। আকাশের মনে হচ্ছিল কেউ যেন ওর প্রিয় জিনিস কেড়ে নিচ্ছে। এখন সুচির তাড়ায় আকাশ ভেবে নিল যে ‘ এখন চলে গেলে গৌরব সুচির সাথে নাচতে পারবে না। , তাই সেও তাড়া লাগালো , “ হ্যাঁ বাবাও বাড়ি চলে এসছে হয়তো। „

আকাশের কথা শুনে লাবনী বললো , “ তনুশ্রী তো এখনও আসে নি । নাচ না দেখেই চলে যাবে ! „

লাবনীর কথার উত্তরে আকাশ বললো , “ বেশি দেরি করলে মা বকবে খুব। আসি আমি। „ বলে সবাইকে বিদায় জানিয়ে সুচি আকাশ বাড়ি রওনা দিল।

আকাশকে চলে যেতে দেখে লাবনী ওই ভিড়ের মধ্যে পাথরের মতো দাড়িয়ে রইলো। লাবনীর এতো সাজগোজ করে আসাটাই মাটি হয়ে গেল। যার জন্য এতো সেজে আসা সে একবারও তার সাথে না নেচে চলে গেল। সবকিছু হয়েছে এই রোগা পাটকাঠি সুচির জন্য। যকের মতো গুপ্তধন আগলে বসে আছে। লাবনী বুঝলো আকাশের কাছে যাওয়ার জন্য আগে সুচিকে দূরে সরাতে হবে।
[Image: 20220401-214720.png]
[+] 8 users Like Bichitro's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: মিষ্টি মূহুর্ত ( উপন্যাস) চলছে :--- - by Bichitro - 16-11-2021, 09:04 AM



Users browsing this thread: