14-11-2021, 02:59 PM
(This post was last modified: 07-05-2022, 02:48 PM by Baban. Edited 2 times in total. Edited 2 times in total.)
একা মাঠে বসে আমি. গায়ে শীতল বাতাস বয়ে যাচ্ছে মাঝে মাঝে. চারিদিকে নিস্তব্ধতা ঘিরে ধরেছে যেন. খবরের কাগজটা সাথে করে এনে একটা কলম বার বার দেখছিলাম. এখানে বসার আগে সেটাকেও হাওয়ায় উড়িয়ে দিয়ে এসেছি. শীতল এই হাওয়ায় কোথায় সেটা উড়ে গেছে জানিনা. তাকালাম ওপরের দিকে. সকালের সাদা আকাশে কে যেন কালো চাদর মুড়ি দিয়ে দিয়েছে. মাঝের ফাক ফোকর দিয়ে কয়েকটা আলোর দাগ লক্ষণীয়. শুয়ে পড়লাম মাটির বুকে. কখন আসবে তুমি? এতো দেরী তো রোজ হয়না তোমার.
তোমার আর আমার সেই প্রথম পরিচয় আজও ভুলতে পারিনা. কে বলবে এই ছেলেটাকে যে কিনা মারপিট লড়াই অসভ্যতামি এড়িয়ে চলে তাকেই কিনা তুমি ভুল বুঝেছিলে. ঠাস করে সেই চর... আজও আওয়াজটা মনে আছে. যদিও সেই ঠাসই আমার কাছে ভালোবাসার ফাঁস হয়ে জড়িয়ে ধরেছিলো. নিজের ভুল তুমিও বুঝেছিলে আর তারপরে হাত বাড়িয়েছিলে বন্ধুত্বের. সেই বন্ধুত্ব আজও অটুট... বরং সেই বন্ধুত্ব আরও প্রবল হয়েছে. অনুভূতির এক ধাপ থেকে আরেক ধাপে এগিয়েছি আমরা. ওর কথাগুলোই ভেবে চলেছি আমি তখনি...
-কতক্ষন?
ফিরে দেখি... ঐতো এসেছে মায়া. আমি হেসে বলি - এই মিনিট দশেক. মায়া এসে আমার পাশে বসলো. অসাধারণ রূপের উজ্জ্বলতা যেন আমার চরিদিক আলোকিত করে তুললো. আর যেন অন্ধকার নেই. আমার অনেকটা জুড়ে শুধুই আলো আর আলো.
আমি - তোমার কথাই ভাবছিলাম
মায়া - তাই বুঝি?
আমি - হুমম.... আসলে আমাদের কথা. তা আজ এতো দেরী যে? আমি জিজ্ঞাসা করলাম মায়া কে. মায়া সামান্য হেসে বললো - আমি ঠিক সময়ই এসেছিলাম.
আমি অবাক হয়ে - ওমা.... তাহলে এতক্ষন কোথায় ছিলে?
তোমায় দূর থেকে দেখছিলাম আমি.
আমি - দূর থেকে কেন? রোজ তো কাছ থেকেই দেখো আমায়... তাহলে আজ কেন?
মায়া নিজের মায়াভরা আঁখি আমার থেকে সামনের দিকে সরিয়ে নিলো আর বললো - দেখছিলাম.... কাছের মানুষ দূর থেকে কেমন লাগে? তুমি আমায় কখনো দূর থেকে দেখোনি?
আমি - হুমম....রোজ দেখি.... দূর থেকেই.... কাছে যেতে পারিনা যে... কারণ যাওয়ার অনুমতি নেই আমার... তাইতো দূর থেকেই........
মায়া এবারে আমার পাশে মাটির ওপর শুয়ে পড়লো. ওর শরীর থেকে বেরোনো উজ্জ্বলতার সাথে একটা আতরের গন্ধে সারা জায়গাটা ভোরে উঠলো. এই অসাধারণ গন্ধের রহস্য আমি জানিনা.... কোথায় পাওয়া যায় এমন আতর? খুব জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করে কিন্তু করিনি কোনোদিন.
আকাশের দিকে তাকিয়ে দুজনায়. আকাশের বুকে যেন একটা সদ্য কাটা নখ কেউ ফেলে রেখে গেছে.
আচ্ছা... চাঁদ পুংলিঙ্গ নাকি স্ত্রী লিঙ্গ? হটাৎ জিজ্ঞাস করলাম আমি. মায়া অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বললো - হটাৎ?
- আহা বলই না.... চাঁদ ছেলে না মেয়ে. একবার শুনি চাঁদমামা তো আবার কেউ বলে চন্দ্রমা..... কোনটা ঠিক?
মায়া হেসে আমার খুব কাছে সরে এসে বললো - চাঁদ শুধুই চাঁদ.. কেন আমরা তার অস্তিত্ব নিয়ে বেশি জানতে যাবো? সে যে আছে এটাই কি বড়ো কথা নয়? সব প্রশ্নের উত্তর হয়না, আবার সব প্রশ্নের উত্তর জানতে নেই.
আমি মায়ার দিকে তাকিয়ে - ঠিক যেমন তুমি ওই প্রশ্নের উত্তর আজও আমায় দিলেনা.... তাইনা?
-প্লিস অভিজিৎ......
আমি চুপ হয়ে গেলাম. আবার অনেক্ষন নিস্তব্ধ. দূরে ঝিঁঝিঁর ডাক, কুকুরের ডাক সব মিলে ভয়ের বেশ. কিন্তু আমি এক বিন্দুও ভয় পাচ্ছিনা.. কোনোদিনই পাইনা এখানে আসার সময়. সবাই ঘুমিয়ে পড়লে আমি বেরিয়ে আসি এখানে. পাশে শুয়ে থাকা মানুষটার সাথে দেখা করতে. ওর সাথে দেখা না করলে ভালোই লাগেনা কিছু. হয়তো ওরও আমার মতোই অবস্থা.. তাইতো এতো রাতে ও বেরিয়ে আসে নিজের ঘর থেকে আমার জন্য. অবশ্য আরেকটাও কারণ আছে.
আমি আবারো জিজ্ঞাসা করলাম - মায়া? তোমার ঠান্ডা লাগেনা?
ও না সূচক মাথা নাড়লো. তারপরে আমার দিকে তাকিয়ে বললো - তোমার ঠান্ডা লাগছে... তাইনা? মিথ্যে বলবেনা..... দেখেই বুঝতে পারছি.
আমি হেসে - তা একটু....... তা তুমি যদি চাও আমার ঠান্ডা কমাতে.... সাহায্য করতে পারো কিন্তু
অসভ্য একটা - বলে আমার গালে হালকা থাপ্পড় মারলো একটা. ওই কয়েক পলকের স্পর্শতে কি জাদু আছে জানিনা কিনা খুব ভালো লাগে আমার ওই স্পর্শ. ওই শীতল স্পর্শ আমায় উত্তপ্ত করে দেয় প্রতিবার. না এই উত্তাপ কামের নয়.... আবার হয়তো তাই.. জানিনা... কিন্তু এটা জানি যে আমি ওকে ভালোবাসি.. খুব ভালোবাসি. তাতে কোনো খাদ নেই. সেদিনও ছিলোনা.. আজও নেই. ভালোবাসা আরও বেড়েছে হয়তো আজ. ওর ঘরে ওর কাছে যেতেও চেয়েছি কিন্তু ও কোনোদিন আসতে দিলোনা....কারণ নাকি অনুমতি নেই. সঠিক সময় একদিন আসবে সেদিন আমি অনুমতি পাবো ঠিক. সেই অপেক্ষায় আমি আজও. কিন্তু একদম বঞ্চিত সে আমায় করেনি আর তাইতো প্রতি রাতে তার এই আগমন. আর তার সাথেই আজকের সেই বাকি থাকা কাজটা.....
আমাকে এইভাবে দেখোনা অভিজিৎ. মায়া বললো.
আমি হেসে - ভুল বুঝোনা.... আমি কিন্তু মোটেও ওই দৃষ্টিতে তোমায় দেখছিনা মায়া.
মায়া - সেটা বলার প্রয়োজন ছিলোনা... আমি জানি... আমি তোমায় চিনি.
আমি - তাহলে?
মায়া - ওই ভালোবাসা মাখা চোখ দুটো দিয়ে ঐভাবে তাকিয়ে থেকোনা. আমি বার বার দুর্বল হয়ে পড়ি.
আমি - দুঃখিত.... ঐটা আমি করতে পারবোনা... আমি এইভাবেই তোমায় দেখবো, দেখতাম আর ভবিষ্যতেও দেখবো.
মায়া - ভবিষ্যতেও? আচ্ছা ভবিষ্যত কি? একটা অজানা রহস্য ছাড়া কিছুই নয়... যাকে সঠিক ভাবে পেতে আমরা বর্তমান থেকে শুধু প্ল্যান টুকুই করে রাখতে পারি... তার বেশি কিছু পারিনা.... কারণ ঐটুকুই আছে আমাদের হাতে... বাকিটা অজানা এক রহস্য. এই প্ল্যান পূর্ণতা পেতেও পারে আবার নাও.
হম... তা ঠিক. তাহলে আমাদের হাতে কি আছে মায়া?
আজ, এখন, এই মুহুর্ত... ব্যাস এইটুকুই. উত্তর দিলো মায়া.
আমি - আমার কাছে আরও একটা জিনিস আছে এগুলো ছাড়াও.
মায়া - কি?
পাশে শায়িত নারিটির একটি হাত নিজের হাতে নিয়ে আঙুলের ফাঁকে নিজ আঙ্গুল গুলো গলিয়ে চেপে ধরে বললাম - তুমি.... আমার কাছে তুমি আছো... চিরকাল, চিরজীবনের জন্য তুমি আমার.
মায়ার চোখ জলে ভোরে উঠলো দেখলাম. আমায় জড়িয়ে ধরলো সে. আমিও তাকে নিজের কাছে টেনে নিলাম. সে আমার.... শুধুই আমার. আমার মুখের ওপর এক অপরূপ রূপের অধিকারিণীর মুখটা. কপালের লাল টিপ, কাজল কালো আঁখি, গোলাপের পাঁপড়ির মতো ঠোঁট. ভেতরের সব কেমন এলোমেলো হয়ে যেতে শুরু করেছে. নিজেকে হারিয়ে ফেলতে শুরু করেছি আমি. হয়তো সেও. অনেক দূরে কোনো অনুষ্ঠান বাড়ি থেকে ভেসে আসছে -
অংকের খাতা ভরা থাকতো আঁকায়,
তার ছবি তার নাম পাতায় পাতায়,
হাজার অনুষ্ঠান প্রভাত ফেরীর গান
মন দিন গুনে এই দিনে আশায় ।
রাত জেগে নাটকের মহড়ায় চঞ্চল
মন শুধু সে ক্ষনের প্রতিক্ষায়,
রাত্রির আঙ্গিনায় যদি খোলা জানালায়,
একবার একবার যদি সে দাঁড়ায়।
বোঝেনি অবুঝ মন নীলাঞ্জনা তখন,
নিজেতে ছিলো মগণ এ প্রানপণ,
হাজার কবিতা বেকার সবই তা,
হাজার কবিতা বেকার সবই তা ।
তার কথা কেউ বলে না,
সে প্রথম প্রেম আমার নীলাঞ্জনা
এর থেকে অসাধারণ মুহূর্ত কি আর হতে পারে? গায়কের প্রথম প্রেম হয়তো নীলাঞ্জনা, আর আমার মায়া. তার অসাধারণ সৃষ্টি শুনতে শুনতে আমরা দুজন যেন নিজেদের সৃষ্ট ছোট্ট জগতে হারিয়ে গেলাম. হাওয়ায় তৈরী অলীক দরজার বাইরে হয়তো ঝুলছে ডু নোট ডিস্টার্ব এর বোর্ড. ভেতরে ভালোবাসায় হারিয়ে যাওয়া দুজন অতীত বর্তমানের মিলন. হ্যা এইভাবেও দুই সময় মিলেমিশে যেতে পারে. যদি হৃদয়ে থাকে ওই ভালোবাসা.
এবারে ঘুমিয়ে পড়ো. আমাকেও তো এবারে কাজটা করতে যেতে হবে সোনা.
আমি মায়াকে টেনে নিলাম আবারো কাছে. বললাম - যেতেই হবে?
মায়া অবাক হয়ে - সেকি? একি শুনি তোমার মুখে? একদিন না তুমিই এখানে কাঁদতে কাঁদতে বলেছিলে এর শেষ দেখে ছাড়তে চাও তুমি.... আর আজ..
আমি - ভয় করে মায়া.... না নিজের জন্য নয়... তোমাকে নিয়ে ভয়. এই ভয়ানক যুদ্ধে লড়তে লড়তে তুমি যেন নিজেকে হারিয়ে ফেলনা.
মায়া - চিন্তা করোনা.... পাল্টানোর জন্য আর যে কিছুই অবশিষ্ট নেই আমার মধ্যে. যতটুকু ছিল তা তুমি আগেই পাল্টে ফেলেছো. আগে শুধুই আগুন ছিল আর আমার মধ্যে এখন ভালোবাসাও আছে. কি অদ্ভুত তাইনা.... বিপরীত দুই শক্তিই বর্তমান আমার মধ্যে. কিন্তু আর বেশি সময় নয়....আর তো মাত্র একটা শেষ কাজ .....তারপর থেকে শুধুই ভালোবাসা অবশিষ্ট থাকবে আমার মধ্যে. এই যুদ্ধে জিতবো আমরা. ধন্যবাদ তোমায়..... এবারে চোখ বোজো.. ঘুমিয়ে পড়ো তুমি.... আমাকে তোমার কাছে আসতে দাও.... তোমার মধ্যে আসতে দাও......
দুটো শরীর যেন মিলে গেলো. তারপরে ঘুম... শুধুই ঘুম. ঘুম যখন ভাঙলো আমি নিজেকে পেলাম এই মাঠেই. আমার বুকে মাথা রেখে মায়া শুইয়ে. ওর ঠান্ডা হাতটা আমার গায়ের ওপর.
এবারে কিভাবে করলে? জিজ্ঞাসা করলাম আমি
মায়া বুজে থাকা চোখেই হালকা হেসে বললো - প্রথমেই পেটে ঢুকিয়ে দিলাম ছুরিটা.... তারপরে ছিন্নভিন্ন করে দিলাম সব..... বিশেষ করে ওই নোংরা জিনিসটা....
তারপরে হেসে উঠে বললা- জানো... বার বার বলছিলো... আমায়.......ক্ষমা করে দাও... আর কোনোদিন এসব করবোনা, একটা সুযোগ...
আর কিচ্ছু বলতে দিইনি . ওই জিভটাও..
থাক.... থাক.. থামো মায়া.... থামো.... উফফফফফ আমি আর শুনতে চাইনা.
মায়া আর কিচ্ছু বল্লোনা. শুধুই আমার বুকে নিশ্চিন্তে শুয়ে রইলো. তারপরে জিজ্ঞেস করলো - তুমি কি আমায় ভয় পাও?
আমি - না... এক বিন্দুও নয়.. কেন পাবো? নিজের ভালোবাসার মানুষকে কেউ ভয় পায় নাকি? আমি ভয় পেতাম তোমার ভেতরের ওই আগুনটাকে.... সেই আগুন আমার মধ্যেও এতদিন ছিল... আজ সেই আগুন নিভে গেলো.... শেষ শয়তানটাও আজ...... যাইহোক..... এবারে আর আগুনের তেজ না, ভালোবাসার উত্তাপ শুধুই সেটা নিয়ে বাঁচবো আমরা.
মায়া হটাৎ মুচকি হেসে উঠলো. কেন? তাহলে ওই শেষেই 'বাঁচবো' শুনে? তাই হবে হয়তো. কিন্তু আমি জানি এভাবেও বাঁচা যায়. আবারো সেই বাকি থাকা প্রশ্নটা করে ফেললাম ওকে.
আমি - আজ তাহলে আবার ওই প্রশ্নটা করি... উত্তর দেবেতো? আমিও তো এক পুরুষ..... ওই নোংরা জিনিসটা তো আমার মধ্যেও.....
আমার কথার মাঝেই মায়া বাঁধা দিয়ে বললাম - একদম ওসব বলবেনা.... তুমি ওদের সাথে কিকরে নিজের তুলনা করতে পারো? তুমি কোথায় আর ওই কীট গুলো কোথায়? হ্যা তোমার মধ্যেও পুরুষ আছে.. কিন্তু সেই পুরুষ ভালোবাসতে জানে, আর ওই কীট গুলোর মধ্যেকার ভয়ানক ক্ষুদার্থ শয়তান লুকিয়ে. ওই শয়তানকে নিজের হাতে দমন করে এসেছি আমি. ওরা মনে করতো ওই জঘন্য কাজ তারাই করে যারা আসল পুরুষ.... ওদের ওই পুরুষত্বকে তাই চিহ্নভিন্ন করে দিয়েছি.... কিন্তু তোমার মধ্যেকার পুরুষ আমায় সবসময় ভালো বেসে এসেছে অভিজিৎ. তোমার এই শরীর আমায় ভালোবাসতে চেয়েছে সর্বদা. সেই ভালোবাসায় শরীরী টান অবশ্যই আছে কিন্তু শুধুই সেই টান নেই.... যদি শুধু ওইটুকুই হতো তাহলে সেদিন তুমি ওতো কাঁদতে না. আমার স্থির শরীরটার সামনে সেদিন তোমাকে ঐভাবেই দেখে খুব কষ্ট হচ্ছিলো আমার. নিজের ওই নিথর শরীরটা চোখের সামনে দেখার থেকেও অনেক বেশি কষ্ট.
আমার বুকে মাথা রেখে মায়া আবারো বলতে লাগলো - পুরোটাই আমাদের নিজেদের ওপর অভিজিৎ... আমরা কি বেছে নেবো. আমরা কার পক্ষ নেবো. রিপুর দাস হয়ে নিজের মনুষত্ব হারিয়ে অন্যকে শেষ করে বিকৃত সুখ নেবার মধ্যে হয়তো কেউ কেউ নেশা খুঁজে পায়, আবার অন্যের জন্য নিজের জীবনের তোয়াক্কা না করে ঝাঁপিয়ে পড়ার মধ্যেও কেউ কেউ নেশা খুঁজে পায়. এক নেশায় জীবন ধ্বংস হয় আরেকটায় হয়তো রক্ষা. এবারে কোন নেশায় জড়াবো তা আমাদের ওপর. যতই প্রলোভন আসুক না কেন.... যদি নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখা যায় তাহলে এই রিপুকেও দেখিয়ে দেওয়া সম্ভব ভালোবাসা কি... তার ক্ষমতা কতটা. এই ভালোবাসার জোর কতটা তা আজ আমি বুঝি. দেখোনা আমার মধ্যেকার সেই অনুভূতি শুধুই এখন জানে একটাই জিনিস ভালোবাসা, চেনে একজনকেই...তোমাকে. কারণ তুমি আজও আমায় বাঁচিয়ে রেখেছো নিজের অন্তরে. একদিন তোমার ভালোবাসার ওপর হয়তো সামান্য সন্দেহ হতো.... কেউ কিকরে একজনকে এতটা ভালোবাসতে পারে, কিন্তু আজ আর কোনো সন্দেহ নেই. তুমি আমার শক্তির উৎস...তাইতো আবারো এসেছি তোমার হতে ... কিন্তু অনেক দেরী হয়ে গেছে.
আমি মায়ার হাত ধরে বললাম - না মায়া.... কোনো দেরী হয়নি. সব ভালোবাসার পরীক্ষা যে শরীরী ভাষায় দিতে হবে কে বলেছে? আমাদের পরীক্ষায় আমরা সফল. তাইতো আজ আমরা এতো নিকট. তুমি না থেকেও আমার এতো কাছে. এবার থেকে এইভাবেই আমার কাছে থেকো.... ব্যাস... আর কিচ্ছু চাইনা আমি..... একদিন আসবে... যেদিন আর কোনো শরীরী বাঁধা থাকবেনা... সব বাঁধা পেরিয়ে তোমার ঘরে আসার পূর্ণ অনুমুতি পাবো... কিন্তু ততদিন এইভাবেই থাকবো পাশাপাশি.... একে ওপরের হয়ে.
জড়িয়ে ধরলাম আমার মায়ার নগ্ন রক্তমাখা শরীরটা. ওটাকে যারা অপবিত্র করতে চেয়েছিলো তারা নিজেরাই আজ শেষ. শরীরের মূল্য কার কাছে কেমন আমি জানিনা, আমি শুধু জানি আমার বুকে মাথা রাখা এই নারী শরীর সবচেয়ে পবিত্র. চোখ বুজলাম আমি, মুখে একটা শান্তির হাসি আমার.
ওই অনুষ্ঠান বাড়ি থেকে এখন ভেসে আসছে -
যত ব্যাথা ছিলো গো আমার
তোমার পরশে দূর হলো
হৃদয়ের মনো-বীনা
নিমেষে গানের সুর হলো,
নিমেষে গানের সুর হলো
তোমার দেওয়া সে গান আজ
তোমাকেই গেয়ে যে শোনাই।
তুমি আছো এতো কাছে তাই
পৃথিবীতে স্বর্গকে পাই
তোমার চোখে যে স্বপ্ন
তাই দেখি যেদিকে তাকাই।
তুমি আছো এতো কাছে তাই
সমাপ্ত