11-11-2021, 03:26 PM
ওখানে তখন হুলুস্থূলু কান্ড একদিকে টিভি, আর একদিকে দিবাকরকে সবাই গাল-মন্দ করছে, এমন কি নীপাও ছেড়ে কথা বলছে না, দিবাকার বার বার বোঝাবার চেষ্টা করছে, ও অনাদির সঙ্গে এসেছে, তবু কে বোঝে কার কথা, অনাদিরও শ্রাদ্ধ শান্তির ব্যবস্থা চলছে, আমাকে দেখে সকলে চুপ, নীপা গলা চড়িয়ে বললো কোথায় যাওয়া হয় শুনি, বাড়িতে লোকজন বলে তো কিছু আছে।
আমি আস্তে আস্তে বেঞ্চের ওপর এসে বসলাম।
-দেখছিস তো আমার অবস্থা।
-কি হয়েছে।
-তুই ফিরিস নি।
-কাকা কোথায়।
-তোকে খুঁজতে খামারে গিয়ে বসে আছে।
আমি উঠে গেলাম, খামারে গিয়ে কাকাকে নিয়ে এলাম।
-কোথায় গেছিলি।
-হারুর কালাতে।
-ওখানে কি করতে গেছিলি।
-দেখতে।
-এই রাতের বেলা, জায়গাটা ভাল নয়।
-ঠিক আছে আর যাবো না।
কাকা বারান্দায় নিজের চেয়ারে বসলেন।
-দেখেছো আমার ভাইপোর হাল, কোথায় দীঘা আড়ি কোথায় হারুর কালা, এই সব করে বেরাচ্ছে সকাল থেকে।
আমি কাকার কথায় কান দিলাম না।
কাকীমার দিকে তাকিয়ে বললাম, একটু চা খাওয়াবে।
-কেন কাকীমা বুঝি চা দেন, এইবার থেকে কাকীমাই দেবেন। নীপা বললো।
আমি চুপচাপ থাকলাম। দিবাকরকে জিজ্ঞাসা করলাম কি হয়েছে রে।
-একটু খামারে চল।
-আমি ওর সঙ্গে পায়ে পায়ে এলাম।
-তোকে একটা কথা বলি, মনে কিছু করিস না।
-কি হয়েছে বলবি তো।
-কাল আমি যেতে পারবো না।
-ঠিক আছে, তাতে কি আছে, ওরা তো আছে।
-আচ্ছা।
দিবাকর চলে গেলো।
আজকের আসরটা তাড়াতাড়ি ভেঙে দিলাম, সঞ্জীবের ছেলেটি, সব গুছিয়ে তুলে রাখলো, বললাম কাল আসিস একটু সন্ধ্যে বেলায়, লাগিয়ে দিস।
কাকা বললো- না, ঘরেরে ভেতর জায়গা করেছে তোর কাকীমা, এখনি লাগিয়ে দিক।
আমি ওকে ইশারায় তাই করতে বললাম, ও সবকিছু ঠিকঠাক করে চলে গেলো।
রাতে খাওয়ার সময় কাকাকে সব বললাম, কাকা বললেন- দুদিন পরে করলে হতো না। আমি বললাম না। আমি সব ব্যবস্থা করে ফেলেছি।
কাকীমা বললেন হ্যাঁরে অনি তুই সবার জন্য অতো জামাকাপড় কিনেছিস কেনো।
আমি কাকীমার দিকে তাকালাম। পছন্দ হয় নি।
-হ্যাঁ।
-তাহলে।
-অতো দাম দিয়ে কিনতে গেলি কেন।
-জীবনে এই প্রথম তোমাদের কিছু দিলাম। দামের কথা জানি না।
নীপা আমার দিকে তাকালো।
-কালকে একটা পরে যাবে ।
-কেনো।
-যা বলছি কোরো।
-যা বলবি।
-নীপা বলে দেবে কোনটা পরে যাবে।
কাকীমা কোন কথা বললো না।
-হ্যাঁগো সকালের সেই চিংড়িমাছের টক একটু পাওয়া যাবে।
কাকীমা আমার দিকে তাকালেন, নীপার জ্বালায় কিছু রাখার জো আছে।
নীপা গম্ভীর হয়ে গেলো।
আমি হাসলাম।
কাকীমা আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, অনি তোর ঠোঁটটা ফোলা ফোলা লাগছে কেনো রে।
-আমার, কই নাতো।
-দেখছি ফোলা, তুই না বলছিস।
-কি জানি, বাঁশঝাড়ের মধ্যে দিয়ে আসার সময় একটা পোকা চোখে উড়ে এসে বসলো, হাত দিয়ে তাড়াতে গেলাম, দেখলাম ঠোঁটে এসে বসেছে। সরিয়ে দিলাম, রুমাল বার করে চোখটা মুছতেই ঠোঁটটা জালা করে উঠলো। পুকুরে নেমে ভাল করে জল দিলাম, তারপর কোকসীমা পাতা ছিঁড়ে ওর রস লাগালাম, জালাটা একটু কমলো, তারপর জানি না। ওই সব করতে গিয়ে তখন ফিরতে দেরি হয়ে গেলো।
সুরমাসি ভাতের থালা ছেড়ে তাড়াতারি উঠে এলেন। দেখি দেখি।
-দুর, তোমরা একটুতেই………
-থাম দেখি। কাকীমা বললেন।
-আরি বাবা আমার কিছু হয় নি। এত ব্যস্ত হচ্ছ কেনো।
কাকার দিকে তাকিয়ে বললেন, হ্যাঁগো তোমার কাছে হোমিওপ্যাথ ওষুধ আছে না। ওকে একটু দাও, ছেলেটা সারারাত যন্ত্রনায় ঘুমতে পারবে না।
নীপা মাথা নীচু করে খেয়ে যাচ্ছে। আমি তাড়াতাড়ি খেয়ে উঠে পরলাম। ওঠার আগে বললাম, কালকে অনেক সকালে উঠতে হবে ওখানে সাতটার মধ্যে পোঁছানোর কথা।
কাকা বললেন, হ্যাঁরে বাড়িতে কে থাকবে।
তোমাকে ও নিয়ে ব্যস্ত হতে হবে না। আমি সব ব্যবস্থা করে দিয়েছি।
-বেশ। তাই হবে।
আমি মুখ ধুয়ে চলে এলাম। নীপা প্রায় একঘন্টা পরে এলো।
আজ ওর পরনে সালোয়ার কামিজ, যেটা পরে খেতে বসেছিল সেটাই পরা রয়েছে। আমি আজ নীপার কথা মতো খাটের এক কোনে রাখা একটা পাট ভাঙা ধুতি আর গেঞ্জি পরেছি। জানিনা এটা কার। তবে কাকার নয় এটা বুঝলাম। আমি পাশ ফিরে শুয়ে পরলাম। নীপা কোন কথা বললো না। বুঝলাম নিশব্দে ও কিছু কাজ করছে। বাইরে বেরিয়া গেলো। নীচের দরজায় ছিটকিনি দেওয়ার শব্দ পেলাম। সিঁড়ি দিয়ে উঠে আসারও শব্দ পেলাম। আমি মটকা মেরে শুয়ে আছি। কি বাবু ঘুমিয়ে পরলেন নাকি। আমি কোন কথা বললাম না। মাথাটা আজও যন্ত্রণা করছে। সারাদিন বেশ ধকল গেল। কোন সাড়া শব্দ নেই, লাইটটা নিভে গেলো। ঘরটা আধো অন্ধকার, কারেন্ট চলে গেলো নাকি, বুঝতে পারলাম না, সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে পাশ ফিরলাম। অবাক হলাম। নীপা উলঙ্গ অবস্থায় ভিঁজে গামছা দিয়ে গা মুছছে, পিঠময় চুলের রাশি কোমর ছাড়িয়ে পাছার নীচ পর্যন্ত ঝুলছে। আমি উঠে বসলাম, কেরোসিনের ডিমলাইটটা জলছে, সত্যি কারেন্ট অফ হয়েছে। আমি নিঃশব্দে উঠে বসলাম, নীপা আমার দিকে পেছন ফিরে আছে।
ঘরের মধ্যে সামান্য ডিমলাইটের আলোয় ওর নগ্ন ছায়া মাটিতে আছড়ে পরেছে। আমি এই মুহূর্তটুকু হাতছাড়া করতে চাইলাম না। কাল আমারও কষ্ট হয়েছে, কিন্তু তা আমি মুখে প্রকাশ করি নি, আজ সুদে আসলে তা তুলে নেবো। নিজে থেকেই গেঞ্জিটা খুলে বিছানায় ছুঁড়ে ফেললাম। আস্তে আস্তে পা টিপে টিপে ওর পেছনে গিয়ে দাঁড়ালাম। মিটসেফের ওপর একটা নতুন নাইটি দেখলাম, লাল সাদায় মেশানো, অপূর্ব দেখতে ও নীচু হয়ে তুলতে গেলো, আমি ওকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলাম। ওর ঠিক মাই-এর নীচে আমার হাত, ওর ঘারে ঠোঁট ছোঁয়ালাম।
নীপা কিছু বললো না। কোন সারা শব্দ দিল না। নিজেকে ছাড়াবার চেষ্টাও করলো না। আমি বেশ কিছুক্ষণ ওর ঘারে ঠোঁট রাখলাম, নীপা স্থানুর মতো চুপ করে রইলো ওর দিক থেকে কোন সাড়াশব্দ পেলাম না। ভাবলাম আমার চাওয়াটা হয়তো বেশি হয়ে গেছে, কারুর কাছ থেকে আজ পর্যন্ত জোর করে কিছু চাই নি, কেউ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে দিলে তা আমি গ্রহণ করেছি। ওকে ছেড়ে দিলাম, ধীর পায়ে বিছানায় চলে এসে শুয়ে পরলাম।
উপুর হয়ে শুয়ে জানলার দিকে তাকালাম, জ্যোতস্না রাত, একটা সিগারেট ধরালাম। সত্যি, আমি ভুল করেছি, এই প্রথম কেউ আমাকে রেসপন্স করল না। মনটা কেমন তিতকুটে হয়ে গেলো, আড়চোখে তাকিয়ে দোখলাম, নীপা চুল আঁচড়াচ্ছে, নাইটিটা পরা হয়ে গেছে, অপূর্ব মানিয়েছে ওকে, ভীষণ দেখতে ইচ্ছে করছিল, জোড় করে ঘার ঘুরিয়ে নিলাম।