07-11-2021, 08:02 PM
(06-11-2021, 04:23 PM)ddey333 Wrote: # অন্য_রূপকথা
অফিস থেকে ফিরছিলাম। একরাশ ক্লান্তি নিয়ে।
অটোতে আমার পাশে আরও দুটি মেয়ে ছিল। নিজেদের মধ্যে কলকল করে কথা বলছিল। প্রথমে বেশ কিছুক্ষণ কে ভাইফোঁটায় কি কিনেছে, সেই নিয়ে কথা বলছিল। কান তো আর বন্ধ রাখা যায় না, তাই সবকথাই শুনতে পাচ্ছিলাম। আর, বেশ লাগছিল শুনতে! ওই বয়সের নিজেকে, আর আমার এক বন্ধুকে খুঁজে পাচ্ছিলাম যেন!
তারমধ্যেই, হঠাৎ শুনি, একটি মেয়ে আরেকটিকে বলছে "কি রে, কাকুর কাল ফিরতে এত দেরি হল কেন বললেন কিছু?"
"হ্যাঁ রে, আর বলিস না! বাবার কান্ড তো...এক্কেবারে দুনিয়া ছাড়া মানুষ!"
"কেন রে, কাকু আবার কি করলেন?"
"আরে বাবার তো এতদিন এমনি ফোন ছিল, এখন স্মার্ট ফোন পেয়েছে...জন্মদিনে দিলাম না আমি সেই ফোনটা? এখন দোকানে কাজের ফাঁকে হোয়াটসঅ্যাপ দেখে খালি। আর রাজ্যের জিনিস একে, ওকে, তাকে ফরোয়ার্ড করে! কে যেন একটা বাবাকেও পাঠিয়েছিল, ইন্দোর না কোথায় একটা বাচ্চা অসুস্থ, তার জন্য সাহায্য চেয়ে মেসেজ... বাবা সাহায্য টাকা পয়সা দিয়ে করতে পারবে না ভেবে কাল বাজার থেকে ফেরার সময় সোজা দমদম রোডের হনুমান মন্দিরে চলে গেছে পুজো দিতে। একটা চেনা দোকানে ব্যাগ -ট্যাগ রেখে। কি না, বাচ্চাটা যেন ভাল হয়ে যায়! হনুমানজি নাকি সঙ্কটমোচন, দাদুর অপারেশানের সময়ও বাবা গেছিল, তাই এবারও...। চেনা নেই...জানা নেই, হোয়াটসঅ্যাপের খবর...ফেকই তো হয় বেশিরভাগ! তা না, উনি চললেন পুজো দিতে। কি যে বলি..." বলতে বলতেই মেয়েটি বলে উঠল "দাদা, গান ফ্যাক্টরি সাইড করবেন।"
নেমে গেল দুজনেই।
আমার মনটা ভাল করে দিয়ে।
আজকের এই আপনি-কোপনির স্বার্থপর জীবনেও এমন মানুষ আছেন... যিনি কারো অসহায়তায় আর্থিক সাহায্য করতে না পারলেও, যেটা পারবেন করতে সেটা নিজের বিশ্বাস থেকে করেছেন। এক্কেবারে অচেনা মানুষের জন্য। যে যুগে কেউ চেনা মানুষের জন্যই সময় দেন না। আর...মেয়েটি যেখানে নামল অটো থেকে, সেখানে যদি বাড়ি হয়, তবে তো হনুমান মন্দির বেশ দূরে ওখান থেকে। তাও গেছেন উনি। শুধু, একটি বাচ্চা সুস্থ হয়ে যাক...এই সদিচ্ছা আর শুভকামনা নিয়ে।
আর, আমরা ভাবি...ভালমানুষ নাকি নেই আর! সবাই নাকি স্বার্থ নিয়ে চলেন!
ধ্যাত! আমরা কিচ্ছু জানি না! আমরা নিজেরা কূপমণ্ডূক, তাই হাত বাড়াতে পারি না, দেখতে পাই না...
ভালমানুষ...মানুষের মতো মানুষের -এইই তো সম্পদ আমাদের এই মায়াময় নীলগ্রহের।
কাল মঙ্গলবার... বজরঙ্গবলি কে পুজো করার দিন। আমি মন্দিরে যাব না... কিন্তু মনে মনে চাইব এই নাম না জানা 'বাবা' যেন ভাল থাকেন, সুস্থ থাকেন, অপার আনন্দে থাকেন।
আর, যেন এমনিই থাকেন।
যেন... 'থাকেন'।
থাকাটা...আজকের সমাজে...বড্ড দরকার...
এরকম এক লোকের পাল্লায় আমি একবার পড়েছিলাম.... তখন আমি কলেজে পড়ি... সে কথা থাক.... এইসব লোকগুলো কে ভোলা যায় না সহজে.... একটা দাগ কেটে দিয়ে যায়
❤❤❤