05-11-2021, 06:31 PM
তৃতীয় পর্ব
নতুন বৌদির সাথে দুষ্টুমিটা চলছিলই | চলছিলো বললে কম করে বলা হয়, দিনের থেকে দিন বেড়েই চলেছিলো | ওকে অনেক নামে ডাকতাম, যখন যেটা ইচ্ছা করে –“চিরনূতন” তো ছিলই, কখনো কখনো স্রেফ নাম ধরে “মল্লিকা” বা একেবারে “মলি”বলেও ডাকতাম | আর ও আমায় মাঝে মাঝে “ছোট ঠাকুরপো”, কখনো বা আমার নিজের নাম, কখনো বা ডাকনাম “বাবু”, কখনো বা “এই দুষ্টুটা” | ভীষণ মধুর একটা সম্পর্ক, যেটা দিনের থেকে দিন গভীর হচ্ছিলো |
প্রথম মাস প্রায় শেষ হতে চললো | প্রথম মাসের মাইনে পেয়েই কি কি করবো, তা মনে মনে ঠিক করে রেখেছিলাম | যেদিন মাইনেটা পাবার কথা, সেদিন সকাল বেলা মেজদা আর বৌদির সাথে ব্রেকফাস্ট করতে করতে বললাম, “আজ আমরা খুব ভালো কোনো রেস্টুরেন্টে রাত্তিরে খাবো | প্রথম মাইনে পাবো বলে কথা” মেজদা বললো, “ও, তাহলে তোর ঘাড়টা খুব ভালো করে ভাঙব আজকে | কোথায় খাওয়াবি বল ?” নতুন বৌদিকে বললাম, মা’র জন্য একটা শাড়ি আর কুঁড়ি (আমার বোন) –র জন্য সালোয়ার সুট কিনবো | ভালো দোকানপাট কোথায় তার খোঁজ করলাম | নতুন বৌদি বললো তাহলে দাদারে যাওয়া যাক | কেনাকাটা ওখানে হবে, খাওয়াটা ওখানেই প্রীতম হোটেলে সেরে নেওয়া যাবে | মেজদা সোজা অফিস থেকে প্রীতমে চলে আসবে |
ডি’সুজার হাত থেকে পে প্যাকেটটা নিয়ে এত ভালো লাগছিলো বলার নয় | যেন সাত রাজার ধন এক মাণিক হাতে পেয়ে গেছি | মাইনের অঙ্কটা আর নাই বা বললাম | সবাই লজ্জা পাবেন, তবে তখনকার দিনে আমার অল্পস্বল্প প্রয়োজন মেটানোর পক্ষে ভালই | ট্রেনিংটা মাসের দশ তারিখ থেকে শুরু হয়েছে, তাই মাইনেটাও ছিল ভাঙ্গা মাসের | মোটামুটি যা কেনাকাটার পরিকল্পনা ছিল এবং প্রীতম হোটেলে খাওয়া – এতেই মাইনেটা মনে হয় শেষ করে দিতে পারবো | অল্পস্বল্প কিছু রেখে দেবো ট্রেনের মান্থলি, অটো ভাড়া আর হাত খরচার জন্য |
নতুন বৌদিকে সঙ্গে নিয়েই দোকানে ঢুকেছি | আগে কুঁড়ি’র টা কিনলাম , তারপর অন্যদের | সবটাই নতুন বৌদিকে পছন্দ করে দিতে হলো | মা’র টা পছন্দ মতন কেনা হয়ে যাবার পরই আমার অন্তরের একটা প্রবল ইচ্ছা নতুন বৌদিকে না বলে পারলামনা | খুব আস্তে আস্তে, দোকানদারকে শুনতে না দিয়ে ওকে বললাম,
“ও নতুন বৌদি, লিপি’র জন্য একটা শাড়ি পছন্দ করে দেবে ?”
নতুন বৌদি একেবারে আকাশ থেকে পড়ল –“লিপি ? সে আবার কে?”
খুব লাজুক মুখে বললাম, “someone so special to me”
“আচ্ছা, so sweet, so interesting!” নতুন বৌদি তো আহ্লাদে আটখানা |
“মেজদাকে বলোনা, প্লিজ | শুধু তোমাকে বললাম |”
“আচ্ছা রে বাবা আচ্ছা | কিন্তু, তোমার স্পেশাল এর কি পছন্দ, সেটা আমি কেমন করে বুঝি ?”
“যেটা তুমি পছন্দ করে দেবে, আমি কিনে ওর হাতে দেবো | আমি জানি, আমি যা দেবো, ওর ভীষণ পছন্দ হবে |”
“কিরকম দ্যাখাতে বলবো বলো? range ?”
“ভালই | পিওর সিল্কে দ্যাখাতে বলো”
নতুন বৌদি জিজ্ঞাসা করে নিলো,
“কি রং নেবো ? আচ্ছা, লিপি’র গায়ের রং কিরকম?”
“কালো” আমি বললাম |
“কালো?” ওর প্রশ্নটার উত্তর তৈরী ছিল |
“তা সে যতই কালো হোক, দেখেছি তার কালো হরিন চোখ”
“বাহ, বাহ, প্রেয়সীর কথায় রবি ঠাকুরের কাব্য মনে হচ্ছে ? কিন্তু, বাছাধন, তুমিও কিনা সেই ঘুরে ফিরে মেজদার মতন কালো মেয়ের পাল্লায় পড়লে ? মেজদা কে না হয় খুঁজে পেতে কালো মেয়ে এনে দেওয়া হয়েছে, আর তুমি কিনা স্বেচ্ছায় ?”
“মল্লিকার পাশাপাশি লিপিকা – বেমানান হবেনা বলো ?”
দোকানদার অধৈর্য হচ্ছে | আমার লিপিকা’র জন্য নতুন বৌদিকেই খুঁজে খুঁজে একটা খুব সুন্দর পিওর সিল্কের প্রিন্টেড শাড়ি পছন্দ করতে হলো |
“লিপি কে বেশ মানাবে বলো নতুন বৌদি ?”
নতুন বৌদি আমার হ্যাংলামো দেখে আর বাঁচেনা |
“আমি কি করে বলি তোমার লিপি’কে সব চেয়ে বেশি কোনটায় ভালো লাগবে ?”
“তুমি একটু গায়ে ফেলে দ্যাখাও”
দোকানদার সাগ্রহে নতুন বৌদি’র গায়ে শাড়িটা লাগিয়ে বললো, “ইয়ে দেখো শেঠ, কিতনা বরিয়া লাগেগী”
প্রথম মাসের মাইনে পেয়েই (তায় আবার ভাঙ্গা মাসের !) আমি বনে গেলাম শেঠ ? বেদম হাসি পেলো আর গর্বিত হয়ে লিপি’র জন্য কিনেই ফেললাম শাড়িটা|
শাড়ির দোকান থেকে রাস্তায় বেরিয়ে লজ্জা সরমের মাথা খেয়েই নতুন বৌদিকে বললাম, “একটা ম্যাচিং শায়া ব্লাউজ কিনিয়ে দেবে ?”
“আচ্ছা বিপদে ফেল্লে আমায় ? আমি না জানি ও কতটা লম্বা, না জানি ওর গায়ের মাপ-”
“ওই পাঁচ ফুট চার মতন উচ্চতা, আর গায়ের মাপটা, হু, বলা মুশকিল কারণ এখনো মেপে দেখিনি |”
নতুন বৌদি ফিক ফিক করে হাসছে | বললো, “থাক, গায়ের মাপ নিয়ে রিসার্চটা পরে করো | বাচ্চা মেয়ে তো, আমার চেয়ে কম হবারই কথা”
“না না, বোধ হয় তোমারি মতন হবে |”
“থার্টি সিক্স কিনবো ? ঠিক তো ? তোমার কপালে অশেষ দুর্গতি আছে দেবরজী |”
আবারও সাবধান করে দিলাম, “বলবেনা কিন্তু কাউকে | লিপি’র কথা শুধু তোমাকে বললাম | খুব গোপন | দাঁড়াও, তোমায় ঘুষ দিয়ে রাখি একটু, যাতে গোপনীয়তা বজায় থাকে | পাশের দোকানে ঢুকেই নতুন বৌদির হাতে ধরিয়ে দিলাম একটা বড় বাক্সো চকলেট | মা’র জন্য শাড়ি কিনলাম, কিন্তু জেঠির জন্য কিনলামনা, মনটা খারাপ লাগছিলো | প্রথম মাসে কতটাই বা হয় ?
আমরা ঘুরছিলাম দাদর টি টি’র কাছে | কোনো এক যুগে বোম্বেতে ট্রাম চলতো, তখন জায়গাটা ছিল ট্রাম টার্মিনাস, সংক্ষেপে টি টি | নামটা এখনো রয়ে গেছে | জায়গাটা আমি আর নতুন বৌদি ঘুরে ঘুরে দেখছিলাম | সময় কাটানোর জন্য একটু পানিপুরি খেলাম | প্রীতমে আসতেই মেজদার গাড়িটাও এলো | দারুন রেস্তরেন্ট, বুঝলাম গলাটা পুরো কেটে ফাঁক হয়ে যাবে, সে যাক | মেজদার সাথে ঢুকে, সাজানো টেবিলের সামনে বসে মেনু কার্ড নিয়ে মেজাজে অর্ডার করলাম | Fried prawn,রেশমী কাবাব, রুমালি রোটি, মাটন দো-পিয়ান্জা, বাটার চিকেন – কোনো কিছুই বোধ হয় বাদ দিইনি | আজ আমি কিনা শেঠ ! নতুন বৌদি বসেছিলো মেজদার পাশে, আমি উল্টো দিকে | গায়ে সবুজ সিল্কের শাড়ি, গলায় মুক্তর মালা, কানে মুক্তর ঝোলা দুল, হাতে মুক্তর বালা | আমিই পরতে বলেছিলাম| মেজদা একবার নাকি এনে দিয়েছিলো হায়দ্রাবাদ থেকে, এতদিন তোলা ছিল বাক্সে | ভীষণ সুন্দর লাগছিলো নতুন বৌদিকে |আজ সব ভাইবোনেরা একসাথে থাকলে কতই না ভালো হত | সব চেয়ে বেশি missকরছিলাম কুঁড়িকে | ছোড়দা বসে আছে আমেরিকার ইঠাকায়, তখন ও কর্নেলে পি-এইচ-ডি করে | আর বড়দা, বড় বৌদি ইউরোপে, দিদি ইন্দোরে | সব কেমন ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাচ্ছি, যে যার মতন |
নতুন বৌদির সাথে দুষ্টুমিটা চলছিলই | চলছিলো বললে কম করে বলা হয়, দিনের থেকে দিন বেড়েই চলেছিলো | ওকে অনেক নামে ডাকতাম, যখন যেটা ইচ্ছা করে –“চিরনূতন” তো ছিলই, কখনো কখনো স্রেফ নাম ধরে “মল্লিকা” বা একেবারে “মলি”বলেও ডাকতাম | আর ও আমায় মাঝে মাঝে “ছোট ঠাকুরপো”, কখনো বা আমার নিজের নাম, কখনো বা ডাকনাম “বাবু”, কখনো বা “এই দুষ্টুটা” | ভীষণ মধুর একটা সম্পর্ক, যেটা দিনের থেকে দিন গভীর হচ্ছিলো |
প্রথম মাস প্রায় শেষ হতে চললো | প্রথম মাসের মাইনে পেয়েই কি কি করবো, তা মনে মনে ঠিক করে রেখেছিলাম | যেদিন মাইনেটা পাবার কথা, সেদিন সকাল বেলা মেজদা আর বৌদির সাথে ব্রেকফাস্ট করতে করতে বললাম, “আজ আমরা খুব ভালো কোনো রেস্টুরেন্টে রাত্তিরে খাবো | প্রথম মাইনে পাবো বলে কথা” মেজদা বললো, “ও, তাহলে তোর ঘাড়টা খুব ভালো করে ভাঙব আজকে | কোথায় খাওয়াবি বল ?” নতুন বৌদিকে বললাম, মা’র জন্য একটা শাড়ি আর কুঁড়ি (আমার বোন) –র জন্য সালোয়ার সুট কিনবো | ভালো দোকানপাট কোথায় তার খোঁজ করলাম | নতুন বৌদি বললো তাহলে দাদারে যাওয়া যাক | কেনাকাটা ওখানে হবে, খাওয়াটা ওখানেই প্রীতম হোটেলে সেরে নেওয়া যাবে | মেজদা সোজা অফিস থেকে প্রীতমে চলে আসবে |
ডি’সুজার হাত থেকে পে প্যাকেটটা নিয়ে এত ভালো লাগছিলো বলার নয় | যেন সাত রাজার ধন এক মাণিক হাতে পেয়ে গেছি | মাইনের অঙ্কটা আর নাই বা বললাম | সবাই লজ্জা পাবেন, তবে তখনকার দিনে আমার অল্পস্বল্প প্রয়োজন মেটানোর পক্ষে ভালই | ট্রেনিংটা মাসের দশ তারিখ থেকে শুরু হয়েছে, তাই মাইনেটাও ছিল ভাঙ্গা মাসের | মোটামুটি যা কেনাকাটার পরিকল্পনা ছিল এবং প্রীতম হোটেলে খাওয়া – এতেই মাইনেটা মনে হয় শেষ করে দিতে পারবো | অল্পস্বল্প কিছু রেখে দেবো ট্রেনের মান্থলি, অটো ভাড়া আর হাত খরচার জন্য |
নতুন বৌদিকে সঙ্গে নিয়েই দোকানে ঢুকেছি | আগে কুঁড়ি’র টা কিনলাম , তারপর অন্যদের | সবটাই নতুন বৌদিকে পছন্দ করে দিতে হলো | মা’র টা পছন্দ মতন কেনা হয়ে যাবার পরই আমার অন্তরের একটা প্রবল ইচ্ছা নতুন বৌদিকে না বলে পারলামনা | খুব আস্তে আস্তে, দোকানদারকে শুনতে না দিয়ে ওকে বললাম,
“ও নতুন বৌদি, লিপি’র জন্য একটা শাড়ি পছন্দ করে দেবে ?”
নতুন বৌদি একেবারে আকাশ থেকে পড়ল –“লিপি ? সে আবার কে?”
খুব লাজুক মুখে বললাম, “someone so special to me”
“আচ্ছা, so sweet, so interesting!” নতুন বৌদি তো আহ্লাদে আটখানা |
“মেজদাকে বলোনা, প্লিজ | শুধু তোমাকে বললাম |”
“আচ্ছা রে বাবা আচ্ছা | কিন্তু, তোমার স্পেশাল এর কি পছন্দ, সেটা আমি কেমন করে বুঝি ?”
“যেটা তুমি পছন্দ করে দেবে, আমি কিনে ওর হাতে দেবো | আমি জানি, আমি যা দেবো, ওর ভীষণ পছন্দ হবে |”
“কিরকম দ্যাখাতে বলবো বলো? range ?”
“ভালই | পিওর সিল্কে দ্যাখাতে বলো”
নতুন বৌদি জিজ্ঞাসা করে নিলো,
“কি রং নেবো ? আচ্ছা, লিপি’র গায়ের রং কিরকম?”
“কালো” আমি বললাম |
“কালো?” ওর প্রশ্নটার উত্তর তৈরী ছিল |
“তা সে যতই কালো হোক, দেখেছি তার কালো হরিন চোখ”
“বাহ, বাহ, প্রেয়সীর কথায় রবি ঠাকুরের কাব্য মনে হচ্ছে ? কিন্তু, বাছাধন, তুমিও কিনা সেই ঘুরে ফিরে মেজদার মতন কালো মেয়ের পাল্লায় পড়লে ? মেজদা কে না হয় খুঁজে পেতে কালো মেয়ে এনে দেওয়া হয়েছে, আর তুমি কিনা স্বেচ্ছায় ?”
“মল্লিকার পাশাপাশি লিপিকা – বেমানান হবেনা বলো ?”
দোকানদার অধৈর্য হচ্ছে | আমার লিপিকা’র জন্য নতুন বৌদিকেই খুঁজে খুঁজে একটা খুব সুন্দর পিওর সিল্কের প্রিন্টেড শাড়ি পছন্দ করতে হলো |
“লিপি কে বেশ মানাবে বলো নতুন বৌদি ?”
নতুন বৌদি আমার হ্যাংলামো দেখে আর বাঁচেনা |
“আমি কি করে বলি তোমার লিপি’কে সব চেয়ে বেশি কোনটায় ভালো লাগবে ?”
“তুমি একটু গায়ে ফেলে দ্যাখাও”
দোকানদার সাগ্রহে নতুন বৌদি’র গায়ে শাড়িটা লাগিয়ে বললো, “ইয়ে দেখো শেঠ, কিতনা বরিয়া লাগেগী”
প্রথম মাসের মাইনে পেয়েই (তায় আবার ভাঙ্গা মাসের !) আমি বনে গেলাম শেঠ ? বেদম হাসি পেলো আর গর্বিত হয়ে লিপি’র জন্য কিনেই ফেললাম শাড়িটা|
শাড়ির দোকান থেকে রাস্তায় বেরিয়ে লজ্জা সরমের মাথা খেয়েই নতুন বৌদিকে বললাম, “একটা ম্যাচিং শায়া ব্লাউজ কিনিয়ে দেবে ?”
“আচ্ছা বিপদে ফেল্লে আমায় ? আমি না জানি ও কতটা লম্বা, না জানি ওর গায়ের মাপ-”
“ওই পাঁচ ফুট চার মতন উচ্চতা, আর গায়ের মাপটা, হু, বলা মুশকিল কারণ এখনো মেপে দেখিনি |”
নতুন বৌদি ফিক ফিক করে হাসছে | বললো, “থাক, গায়ের মাপ নিয়ে রিসার্চটা পরে করো | বাচ্চা মেয়ে তো, আমার চেয়ে কম হবারই কথা”
“না না, বোধ হয় তোমারি মতন হবে |”
“থার্টি সিক্স কিনবো ? ঠিক তো ? তোমার কপালে অশেষ দুর্গতি আছে দেবরজী |”
আবারও সাবধান করে দিলাম, “বলবেনা কিন্তু কাউকে | লিপি’র কথা শুধু তোমাকে বললাম | খুব গোপন | দাঁড়াও, তোমায় ঘুষ দিয়ে রাখি একটু, যাতে গোপনীয়তা বজায় থাকে | পাশের দোকানে ঢুকেই নতুন বৌদির হাতে ধরিয়ে দিলাম একটা বড় বাক্সো চকলেট | মা’র জন্য শাড়ি কিনলাম, কিন্তু জেঠির জন্য কিনলামনা, মনটা খারাপ লাগছিলো | প্রথম মাসে কতটাই বা হয় ?
আমরা ঘুরছিলাম দাদর টি টি’র কাছে | কোনো এক যুগে বোম্বেতে ট্রাম চলতো, তখন জায়গাটা ছিল ট্রাম টার্মিনাস, সংক্ষেপে টি টি | নামটা এখনো রয়ে গেছে | জায়গাটা আমি আর নতুন বৌদি ঘুরে ঘুরে দেখছিলাম | সময় কাটানোর জন্য একটু পানিপুরি খেলাম | প্রীতমে আসতেই মেজদার গাড়িটাও এলো | দারুন রেস্তরেন্ট, বুঝলাম গলাটা পুরো কেটে ফাঁক হয়ে যাবে, সে যাক | মেজদার সাথে ঢুকে, সাজানো টেবিলের সামনে বসে মেনু কার্ড নিয়ে মেজাজে অর্ডার করলাম | Fried prawn,রেশমী কাবাব, রুমালি রোটি, মাটন দো-পিয়ান্জা, বাটার চিকেন – কোনো কিছুই বোধ হয় বাদ দিইনি | আজ আমি কিনা শেঠ ! নতুন বৌদি বসেছিলো মেজদার পাশে, আমি উল্টো দিকে | গায়ে সবুজ সিল্কের শাড়ি, গলায় মুক্তর মালা, কানে মুক্তর ঝোলা দুল, হাতে মুক্তর বালা | আমিই পরতে বলেছিলাম| মেজদা একবার নাকি এনে দিয়েছিলো হায়দ্রাবাদ থেকে, এতদিন তোলা ছিল বাক্সে | ভীষণ সুন্দর লাগছিলো নতুন বৌদিকে |আজ সব ভাইবোনেরা একসাথে থাকলে কতই না ভালো হত | সব চেয়ে বেশি missকরছিলাম কুঁড়িকে | ছোড়দা বসে আছে আমেরিকার ইঠাকায়, তখন ও কর্নেলে পি-এইচ-ডি করে | আর বড়দা, বড় বৌদি ইউরোপে, দিদি ইন্দোরে | সব কেমন ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাচ্ছি, যে যার মতন |