05-11-2021, 03:21 PM
বাড়ীতে ফিরেই কাপড়জামা না ছেড়ে বিছানায় মুখ লুকিয়ে অঝোর ধারায় কাঁদতে শুরু করে মীনা। ভালবাসার এ কি দাম দিলো মীনা! নিজের জীবনটাই নষ্ট করে ফেললো। তার এবং বিপ্লবের ভালবাসার ফসল, যে তার পেটে বাড়ছিলো, ভ্রুণেই নষ্ট হলো। না তার বাড়ী, না বিপ্লবের বাড়ী, না এই ছোট শহরের সমাজ, কেউ তাদের সম্পর্কটাকে স্বীকার করবে না। সমাজের কাছে সম্পূর্ণ ব্রাত্য হয়ে স্বামীর বন্ধুর আশ্রিতা (লোকের ধারণা রক্ষিতা) হয়ে বাঁচবে কি করে? কামু যদি তাকে তার জ্যেঠতুতো দাদার বাড়ীতে না আশ্রয় দিতো, রাস্তায় দাড়াতে হতো তাকে। জঙ্গলে আন্নাবুড়ীর কাছ থেকে তাকে নিয়ে আসার পর পক্ষীমাতার মতো সামলেছে তাকে কামু। কোনো সামাজিক সংস্কারের তোয়াক্কা না করে।
দীপাবৌদিও তাকে সহজ মনেই গ্রহণ করেছে; হয়তো বা কামেশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞতাবশতঃই। অল্প বয়সে বিধবা হবার পর, দেওর-ভাসুররা যখন তাকে স্বামীর সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করেছিলো, কেউ কেউ আবার উপকার করার অছিলায়, তার কচি বিধবা শরীরের স্বাদ নিতে চেষ্টা করেছিলো, তখনো রুখে দাড়িয়েছিলো এই ছ’ ফিট তিন ইঞ্চি বিশালস্কন্ধী পুরুষটি। লাঠালাঠি-মামলা-মোকদ্দমা সব কিছুতেই পাশে দাড়িয়ে সম্পত্তির অংশ এবং তারর স্বামীর অফিসের পাওনা টাকা পাইয়ে দিতে সমর্থ হয়েছিলো। পড়াশুনা বিশেষ একটা জানতো না দীপা। স্বামীর অফিসে চাকরির আশা ছেড়ে, তাই একটা সেলাই মেশিন কিনে বাড়ীতেই সেলাই-ফোঁড়াইয়ের কাজ শুরু করে দীপা। প্রথম প্রথম কাজ জুটিয়ে দিতো কামু। আজকাল প্রচুর অর্ডার পায় সে। মীনা এবং আরো একটি মেয়ে তাকে সাহায্য করে।
বিপ্লব কি আদৌ কোনোদিনও জেল থেকে ছাড়া পাবে? তাদের পার্টি সম্পূর্ণভাবে ভেঙ্গে গেছে। ধরা পড়ে গেছেন দলের সভাপতি কমঃ মণিকন্দন সহ সকল প্রথম সারির নেতা। পার্টি থেকে যে উকিল লড়ছিলেন বিপ্লব, শেখর, মাহী সহ অন্যান্য কমরেডদের পক্ষে, তিনিও পিছিয়ে গেছেন। Section 12a, Section 121A, Section 122, Section 124-A সহ একগাদা ধারায় রাষ্ট্রবিরোধীতা, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার্থে অস্ত্র সংগ্রহ সহ একগাদা বিপদ্জনক অভিযোগ আনা হয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে। ছাড়া পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। বিপ্লবের সমর্থনে লড়ার জন্য কামেশ্বর একজন উকিল দাঁড় করিয়েছে, কিন্তু তিনিও কোনো আশা দিতে পারছেন না।
একনাগাড়ে কেঁদে যাচ্ছিলো মীনা। যেন চোখের জল দিয়েই, সে তার জীবনের দুঃখগুলো মুছে ফেলতে চায়। হঠাৎ পিঠে একটা হাতের স্পর্শ পেতেই, মুখ ঘুরিয়ে তাকায় সে। জানলা বন্ধ, দরজা ভেজানো, জানলার পাল্লার কোনো এক ফাঁক দিয়ে, একটা রশ্মি এসে পড়েছে বাদামী কঠিন মুখের উপরে। ধড়মড় করে উঠে বসলো মীনা। আঁচলটা ঠিক করার আগেই, শরীরটা ঝুঁকিয়ে তার চোখের জল জিভ দিয়ে চেটে নিলো সেই বলিষ্ঠ পুরুষ। খুব দুর্বল হয়ে পড়লো মীনা। এইটুকু আদরই সে বহুদিন পায় নি। মরুভুমির শুস্ক বালুপ্রান্তরে শীতল বারিসিঞ্চন করলো কেউ। বসে থাকা অবস্থায় দীর্ঘকায় লোকটার কোমরের কাছে পড়ে সে। মাথা ঘষতে লাগলো তার কটিদেশে। চোখের জল আর বাঁধা মানছে না। ভিজিয়ে দিচ্ছে আপাতকঠিন মানুষটার তলপেট। পাঞ্জাবীর দুই হাত খামচে, নামালো তার মুখ। ঠোঁটজোড়া খুঁজে নিলো তার আশ্রয়। দু হাতে আঁকড়ে ধরলো তার শেষ অবলম্বন।
দীপাবৌদিও তাকে সহজ মনেই গ্রহণ করেছে; হয়তো বা কামেশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞতাবশতঃই। অল্প বয়সে বিধবা হবার পর, দেওর-ভাসুররা যখন তাকে স্বামীর সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করেছিলো, কেউ কেউ আবার উপকার করার অছিলায়, তার কচি বিধবা শরীরের স্বাদ নিতে চেষ্টা করেছিলো, তখনো রুখে দাড়িয়েছিলো এই ছ’ ফিট তিন ইঞ্চি বিশালস্কন্ধী পুরুষটি। লাঠালাঠি-মামলা-মোকদ্দমা সব কিছুতেই পাশে দাড়িয়ে সম্পত্তির অংশ এবং তারর স্বামীর অফিসের পাওনা টাকা পাইয়ে দিতে সমর্থ হয়েছিলো। পড়াশুনা বিশেষ একটা জানতো না দীপা। স্বামীর অফিসে চাকরির আশা ছেড়ে, তাই একটা সেলাই মেশিন কিনে বাড়ীতেই সেলাই-ফোঁড়াইয়ের কাজ শুরু করে দীপা। প্রথম প্রথম কাজ জুটিয়ে দিতো কামু। আজকাল প্রচুর অর্ডার পায় সে। মীনা এবং আরো একটি মেয়ে তাকে সাহায্য করে।
বিপ্লব কি আদৌ কোনোদিনও জেল থেকে ছাড়া পাবে? তাদের পার্টি সম্পূর্ণভাবে ভেঙ্গে গেছে। ধরা পড়ে গেছেন দলের সভাপতি কমঃ মণিকন্দন সহ সকল প্রথম সারির নেতা। পার্টি থেকে যে উকিল লড়ছিলেন বিপ্লব, শেখর, মাহী সহ অন্যান্য কমরেডদের পক্ষে, তিনিও পিছিয়ে গেছেন। Section 12a, Section 121A, Section 122, Section 124-A সহ একগাদা ধারায় রাষ্ট্রবিরোধীতা, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার্থে অস্ত্র সংগ্রহ সহ একগাদা বিপদ্জনক অভিযোগ আনা হয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে। ছাড়া পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। বিপ্লবের সমর্থনে লড়ার জন্য কামেশ্বর একজন উকিল দাঁড় করিয়েছে, কিন্তু তিনিও কোনো আশা দিতে পারছেন না।
একনাগাড়ে কেঁদে যাচ্ছিলো মীনা। যেন চোখের জল দিয়েই, সে তার জীবনের দুঃখগুলো মুছে ফেলতে চায়। হঠাৎ পিঠে একটা হাতের স্পর্শ পেতেই, মুখ ঘুরিয়ে তাকায় সে। জানলা বন্ধ, দরজা ভেজানো, জানলার পাল্লার কোনো এক ফাঁক দিয়ে, একটা রশ্মি এসে পড়েছে বাদামী কঠিন মুখের উপরে। ধড়মড় করে উঠে বসলো মীনা। আঁচলটা ঠিক করার আগেই, শরীরটা ঝুঁকিয়ে তার চোখের জল জিভ দিয়ে চেটে নিলো সেই বলিষ্ঠ পুরুষ। খুব দুর্বল হয়ে পড়লো মীনা। এইটুকু আদরই সে বহুদিন পায় নি। মরুভুমির শুস্ক বালুপ্রান্তরে শীতল বারিসিঞ্চন করলো কেউ। বসে থাকা অবস্থায় দীর্ঘকায় লোকটার কোমরের কাছে পড়ে সে। মাথা ঘষতে লাগলো তার কটিদেশে। চোখের জল আর বাঁধা মানছে না। ভিজিয়ে দিচ্ছে আপাতকঠিন মানুষটার তলপেট। পাঞ্জাবীর দুই হাত খামচে, নামালো তার মুখ। ঠোঁটজোড়া খুঁজে নিলো তার আশ্রয়। দু হাতে আঁকড়ে ধরলো তার শেষ অবলম্বন।