05-11-2021, 03:20 PM
# # ৩২ # #
সে দিনটাও ছিলো অষ্টমীর দিন। সকাল সকাল স্নান সেরে কামেশ্বরের দেওয়া শাড়ীটা পড়েই অঞ্জলি দিতে গেলো মীনা। ছোটো ভাইয়ের হাত দিয়ে লুকিয়ে মাও একটা শাড়ী পাঠিয়েছিলো। বেশ দামীই শাড়িটা। কি মনে হতে কামুর দেওয়া সাদামাটা লালপেড়ে তাঁতের শাড়িটা পড়েই কামুর বউদি দীপার সঙ্গে মন্ডপে পৌঁছলো। মন্ডপের বাইরেই দাড়িয়ে তিন আঙ্গুলের ফাঁকে গুঁজে গাঁজা টানার ভঙ্গীতে সিগারেট টানতে টানতে আরো দু’চারজনের সঙ্গে গল্প করছিলো কামু। চোখাচুখি হতেই চোখ সরিয়ে নিলো। তার দেওয়া শাড়ীটা পড়েছে বলে খুশী হলো কি? বোঝা গেলো না। বোঝা যায়ও না। কোনো অভিব্যক্তি নেই লোকটার মধ্যে। কেমন রসকষবিহীন, নির্লিপ্ত। অথচ কর্তব্যজ্ঞান ষোলোআনা। তার প্রতি, বিধবা দীপা বৌদির প্রতি। মীনার দিকে তাকিয়ে সরাসরি কোনো কথা বলে না। হয় দীপা বৌদির মাধ্যমে, “বৌদি, ওনাকে বলো, তাড়াতাড়ি তৈরী হয়ে নিতে। কোর্টে যেতে হবে।“, অথবা ভাববাচ্যে, “এবার তাহলে বেরোনো যাক।“
তাকে দেখেই মন্ডপে উপস্থিত ‘আট থেকে আশী’ মহিলাদের গুজগুজ ফিসফিস শুরু হয়ে গেলো। সে এমন মেয়ে, যাকে বাপের বাড়ীতেও তোলে না, স্বামী বলে যাকে পরিচয় দেয় (বিয়ে হয়েছে কিনা ভগবানই জানে), সে রাষ্ট্রদোহীতার দায়ে জেলে পচছে; শ্বশুরবাড়ী স্বীকার করে না। স্বামীর বন্ধু এক মিলিটারির রক্ষিতা হয়ে আছে (হ্যাঁ, এটাই ছোট্ট শহরটায় গুঞ্জন) । পুষ্পাঞ্জলির ফুল নেওয়ার জন্য এগিয়ে যেতেই, প্রত্যাখ্যাতা হলো সে। পুরোহিত রাম ভশ্চায্যি বিড়বিড় করে কি সব বলতে বলতে, চোখ পাকিয়ে ফিরিয়ে দিলেন তাকে। চোখের জল চেপে মন্ডপের বাইরে এসে দাড়ালো সে। দীপাবৌদি ফুল পেয়েছিলো, কিন্তু তা ফিরিয়ে দিয়ে, বাইরে এসে কামুকে কি যেনো বললো।
এরপরই একটা বলিষ্ঠ হাত চেপে ধরলো মীনার বাজু। হিড়হিড় করে টেনে তাকে দাড় করিয়ে দিলো মূর্তির একদম সামনে। রাম পুরোহিতকে ইশারা করলো অঞ্জলির ফুল দিতে। একটু ইতঃস্তত করেছিলো রাম ভশ্চায্যি। একটা চাপা গলা মাইক্রোফোনে ভেসে উঠলো, “দাঁতগুলো খুলে অঞ্জলি দিয়ে দেবো”। সারা মন্ডপের আওয়াজ এক লহমায় থেমে গেলো। আর কথা বাড়াতে সাহস পাননি পাঁচ ফুট দুই ইঞ্চির পুরুত মশাই। কাঁপা কাঁপা হাতে ফুল বিলি করে, কাঁপা কাঁপা গলায় মন্ত্র উচ্চারণ শুরু করলেন।
*******************************************************************
সে দিনটাও ছিলো অষ্টমীর দিন। সকাল সকাল স্নান সেরে কামেশ্বরের দেওয়া শাড়ীটা পড়েই অঞ্জলি দিতে গেলো মীনা। ছোটো ভাইয়ের হাত দিয়ে লুকিয়ে মাও একটা শাড়ী পাঠিয়েছিলো। বেশ দামীই শাড়িটা। কি মনে হতে কামুর দেওয়া সাদামাটা লালপেড়ে তাঁতের শাড়িটা পড়েই কামুর বউদি দীপার সঙ্গে মন্ডপে পৌঁছলো। মন্ডপের বাইরেই দাড়িয়ে তিন আঙ্গুলের ফাঁকে গুঁজে গাঁজা টানার ভঙ্গীতে সিগারেট টানতে টানতে আরো দু’চারজনের সঙ্গে গল্প করছিলো কামু। চোখাচুখি হতেই চোখ সরিয়ে নিলো। তার দেওয়া শাড়ীটা পড়েছে বলে খুশী হলো কি? বোঝা গেলো না। বোঝা যায়ও না। কোনো অভিব্যক্তি নেই লোকটার মধ্যে। কেমন রসকষবিহীন, নির্লিপ্ত। অথচ কর্তব্যজ্ঞান ষোলোআনা। তার প্রতি, বিধবা দীপা বৌদির প্রতি। মীনার দিকে তাকিয়ে সরাসরি কোনো কথা বলে না। হয় দীপা বৌদির মাধ্যমে, “বৌদি, ওনাকে বলো, তাড়াতাড়ি তৈরী হয়ে নিতে। কোর্টে যেতে হবে।“, অথবা ভাববাচ্যে, “এবার তাহলে বেরোনো যাক।“
তাকে দেখেই মন্ডপে উপস্থিত ‘আট থেকে আশী’ মহিলাদের গুজগুজ ফিসফিস শুরু হয়ে গেলো। সে এমন মেয়ে, যাকে বাপের বাড়ীতেও তোলে না, স্বামী বলে যাকে পরিচয় দেয় (বিয়ে হয়েছে কিনা ভগবানই জানে), সে রাষ্ট্রদোহীতার দায়ে জেলে পচছে; শ্বশুরবাড়ী স্বীকার করে না। স্বামীর বন্ধু এক মিলিটারির রক্ষিতা হয়ে আছে (হ্যাঁ, এটাই ছোট্ট শহরটায় গুঞ্জন) । পুষ্পাঞ্জলির ফুল নেওয়ার জন্য এগিয়ে যেতেই, প্রত্যাখ্যাতা হলো সে। পুরোহিত রাম ভশ্চায্যি বিড়বিড় করে কি সব বলতে বলতে, চোখ পাকিয়ে ফিরিয়ে দিলেন তাকে। চোখের জল চেপে মন্ডপের বাইরে এসে দাড়ালো সে। দীপাবৌদি ফুল পেয়েছিলো, কিন্তু তা ফিরিয়ে দিয়ে, বাইরে এসে কামুকে কি যেনো বললো।
এরপরই একটা বলিষ্ঠ হাত চেপে ধরলো মীনার বাজু। হিড়হিড় করে টেনে তাকে দাড় করিয়ে দিলো মূর্তির একদম সামনে। রাম পুরোহিতকে ইশারা করলো অঞ্জলির ফুল দিতে। একটু ইতঃস্তত করেছিলো রাম ভশ্চায্যি। একটা চাপা গলা মাইক্রোফোনে ভেসে উঠলো, “দাঁতগুলো খুলে অঞ্জলি দিয়ে দেবো”। সারা মন্ডপের আওয়াজ এক লহমায় থেমে গেলো। আর কথা বাড়াতে সাহস পাননি পাঁচ ফুট দুই ইঞ্চির পুরুত মশাই। কাঁপা কাঁপা হাতে ফুল বিলি করে, কাঁপা কাঁপা গলায় মন্ত্র উচ্চারণ শুরু করলেন।
*******************************************************************