Thread Rating:
  • 63 Vote(s) - 2.92 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
কাজলদীঘি শ্মশান/পীরবাবার থান--মামনজাফরান (জ্যোতি বন্দোপাধ্যায়)
#47
সকাল বেলা বড়মার ডাকে ঘুম ভাঙলো। প্রথমে একটু অবাক হয়ে গিয়েছিলাম, তারপর সম্বিত ফিরে পেলাম, কাল অনেক রাতে বড়মার কাছে এসেছি। কলকাতার রাস্তা কাল জলে ভেসেছেতনুকে ট্যাক্সিতে তুলে দিয়ে আমি চলে এলাম, কাল রাতে কারুর সঙ্গেই বিশেষ কথা হয় নি। খেয়েছি আর নিজের ঘরে চলে এসে শুয়ে পরেছি।
আমি আসার আগেই ছোটমা মল্লিকদা চলে গেছেন। বড়মা বললেন, ওরা কাল সকালে চলে আসবে।
-কটা বাজে বড়মা।
-নটা বেজে গেছে। সকাল থেকে তোর ফোন খালি বেজেই যাচ্ছে। কয়েকটা তোর দাদা ধরেছিল। বাকিগুলো বিরক্ত হয়ে আর ধরে নি।
-ও।
-ছোটমা এসেছে।
-হ্যাঁ তোমার খেঁটনের জোগাড় করছেন।
-তুমি কি ঠাকুর নিয়ে ব্যস্ত।
-হ্যাঁ। অফিস যাবি না।
-না।
-কাল তোর একটা চিঠি এসেছে।
-কোথা থেকে।
-তোর বাড়ি থেকে।
-আমার বাড়ি!
-হ্যাঁ। মনা মাস্টার দিয়েছেন।
-ও।
-কি লিখেছেন।
-জানিনা। তোর দাদা খুলে পড়েছেন। তোর দাদাকেও একটা দিয়েছেন।
-কাম সারসে।
-হ্যাঁরে মিত্রার সঙ্গে কি হলো সেদিন বললি নাতো।
-কেন সবই তো বললাম।
-না, তুই কিছু গোপন করেছিস।
-এ কথাটা আবার কে বললো।
-সে তোকে বলবো কেন।
-ছোট বলেছে?
-না।
-সে ছাড়া তোমায় লাগাবার লোক এ ভূ-ভারতে কে আছে বলো।
-মিত্রা কাল তোর জন্য একটা বড় বাক্স পাঠিয়েছে। কি আছে। বড়মার চোখ চকচক করছে।
-আমার জন্য!
-হ্যাঁ।
-বড় সাহেব জানে।
-হ্যাঁ ওইতো রিসিভ করলো।
-বাবাঃ একদিনেই এতো সব। তার মানে ব্যাপারটা জটিল।
-তুই আর ফাজলামো করিস না।
-দিদি।
-ঐ ছোট ম্যাডাম এলেন, একজনে হচ্ছিল এতোক্ষণ এবার দোসর এসে হাজির।
-কি বলছে গো আমার নামে।
-না না কিছু না। বাথরুমে যেতে হবে, তো খাবার রেডি কিনা।
-কথা ঘোরাস না।
-এই দেখো জিলিপির প্যাঁচ আরম্ভ হলো।
-উরি বাবা এ কি সাংঘাতিক গো দিদি, আমরা কথা বললেই, জিলিপির প্যাঁচ।
-না না ও ……
-তুমি থামো তো, শাক দিয়ে আর মাছ ঢেকো না, তোমার জন্যই ও…….
-আচ্ছা বাবা আচ্ছা আমার ঘাট হয়েছে।
 
এই জায়গায় থাকা সুবিধাজনক নয়, আমি আস্তে আস্তে বাথরুমের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। ছোট মা আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো। বাথরুম থেকে ফ্রেস হয়ে সোজা নিচে চলে এলাম। সবাই আমার জন্য অপেক্ষা করছে। আমি সোফার একটা দিক দখল করে বসলাম। খাবার এলো। এই বাড়ির এই একটা মজা, সবাই একসঙ্গে খাবে আর গল্প-গুজব হাঁসি ঠাট্টা চলবে। এর মধ্যে মল্লিকদা অগ্রণীর ভূমিকা নেয়।
 
-কি বুবুন বাবু, নতুন কি খবর সংগ্রহ করলেন বলুন।
সবেমাত্র একটা ফুলকো লুচি একটা গোটা আলুর সঙ্গে মুখে তুলেছি, মল্লিকদার কথায় একটু অবাক হলাম। এই নামটা এরা জানল কি করেএদের তো জানার কথা নয়।
-একটু অবাক হলেন, খবর কি আপনি একাই সংগ্রহ করতে পারেন, আমরাও পারি।
মাথা নীচু করে খেয়ে যাচ্ছি, এখানে কথা বলা মানেই বিপদের হাতছানি।
-কালকে মিত্রা তোর জন্য একটা ল্যাপটপ পাঠিয়েছে। অমিতাভদা বললেন।
-ও ঐ বাক্সটায় ল্যাপটপ আছে। বড়মা বললেন।
-তা তুমি কি ভাবলে।
-না মানে।
-ল্যাপটপ কাকে দেয় অফিসের মালকিন, যখন সে বস হয়। মল্লিকদা বললেন।
আমি বড়মার পাশে বসেছিলাম। আলুর দমটা ছোটমা হেবি বানিয়েছে, বড়মার পাত থেকে দুটো লুচি আর আলুর দম তুলে নিলাম।
ছোটমা হাঁই হাঁই করে উঠলো তুই নিবি না, আমি তোর জন্য এনে দিচ্ছি।
ততক্ষণে একটা লুচি আমার মুখে পোরা হয়ে গেছে, বড়মা বললেন থাক থাক ছোট, আমি আর কত খাব বল।
-সাত খুন মাপ। ব্যাস। মল্লিকদা বললেন
-যাই বলিস মল্লিক অনি দারুণ ম্যানেজ করতে জানে। অমিতাভদা ফোরণ কাটলেন।
আমি বুঝলাম আজ আমার কপালে দুঃখ আছে। দুদিন আগে যে স্যেঁতস্যেঁতে ভাবটা এই বড়িতে ছিল, পরিবেশে ছিল চাপা গোঁয়ানি। আজ তা সম্পূর্ণ উধাও। এবার প্রেম বিয়ের প্রসঙ্গ আসবে। সেটা তুলবে মল্লিকদা, তাকে সপোর্ট করবে ছোটমা, বড়মা। আর আমি, অমিতাভদা নির্বাক শ্রোতা।
 
-কি হলো গেঁট হয়ে বসে রইলে যে, লুচি নিয়ে এসো। আমি বললাম।
ছোটমা লাফাতে লাফাত রান্না ঘরে চলে গেলো, কিছুক্ষণ পরে লুচির পাত্র আর আলুর দমের পাত্র নিয়ে এসে টেবিলে ঠক করে বসিয়ে দিল।
-এই যে তুই এই টোনাটা দিলি, এই জন্য এগুলো এলো না হলে এগুলো বিকেলের জন্য তোলা থাকতো। মল্লিকদা বললেন।
-কি বললে।
মল্লিকদা কাঁচুমাচু হয়ে বললেন, না কিছু না। লুচি আলুর দম , কার্টসি বাই বুবুন।
-ঠিক বলেছিস, বড়মা বলে উঠলেন, হ্যাঁরে অনি তোর নাম যে বুবুন তুই আগে তো কখনো বলিস নি।
বুঝলাম, ব্যাপারটা ডজ করে বেরিয়ে গিয়েছিলাম কিন্তু হলো না। এবার বড়মা চেপে ধরলেন।
-তোমরা জানলে কি করে।
-ছোট বললো।
-ছোট জানলো কি করে।
-হ্যাঁরে বদমাশ মিত্রার কাছ থেকে। ছোট বললো।
-তাই বলো।
এইবার ছোটমা ব্যাপারটা বললেন, মিত্রা কাল ফোন করেছিলো, প্রথমে ও বুবুনকে চেয়েছিলো, ছোটমা ফোন ধরে বলেছেন বুবুন নামে এ বাড়িতে কেউ থাকে না। তারপর অমিতাভদাকে ফোন করেছিলেন, তারপর সব জানাজানি হয়
 
-হ্যাঁরে তোর এই মিষ্টিনামটা কে দিয়েছিলো। বড়মা বললেন।
একটু চুপ থেকে, বললাম মা এ নামে ডাকতো।
হঠাৎ পরিবেশটা কেমন ভারি হয়ে গেলো বুঝতে পারলাম। আমি নিজেই হাল্কা করে দেবার চেষ্টা করলাম, ছোটমার উদ্দেশ্যে বললাম, বেশতো নাচতে নাচতে গিয়ে লুচির হাঁড়ি নিয়ে এলে আমার আর বড়মার থালা যে খালি, ছোটমা তাড়াতাড়ি উঠে আমাদের লুচি দিলেন।
 
মল্লিকদা বললেন আমি আর বাদ যাই কেনো, ছোটমা ধমক দিয়ে বললেন, এ মাসের কোলেস্টেরলটা চেক করা হয়েছিলো।
মল্লিকদা হাসতে হাসতে বললেন, দুটো লুচি বেশি খেলে কোলেসটরেল বেড়ে যাবে না। কি বল অনি।
অমিতাভদা গম্ভীর হয়ে বললেন, তোর মনা কাকা তোর বিয়ের জন্য আমাকে মেয়ে দেখতে বলেছেন।
অমিতাভদা কথাটা এমনভাবে বললেন, সবাই হো হো করে হেসে উঠলো, বড়মা নাক সিঁটকে বললেন এই পুঁচকে ছেলেকে কে বিয়ে করবে বলোতো।
-তা ঠিক বলেছো বড়।
-না না দাদা আপনি দায়িত্বটা আমাকে দেন। মল্লিকদা বললেন।
আমি মল্লিকদার দিকে কট কট করে তাকালাম। ছোটমা মাথা নিচু করে হাসি চাপার চেষ্টা করছেন। আমার বিষম খাবর জোগাড়।
ফোনটা বেজে উঠলো।
-ওই নাও শ্যামের বাঁশী বেজেছে। ছোটমা বললেন।
-তুমি লিঙ্গে বড় ভুল করো, শ্যাম নয় শ্যাম নয় রাধার বাঁশী।
-রাধা বাঁশী বাজাতে জানতেন নাকি।
-ঐ হলো আর কি।
-হ্যাঁ বল।
-কি করছিস।
-ফ্যামিলি পিকনিক চলছে।
-চলে আসবো।
-চলে আয়।
-না থাক। পরে যাব। তোর দাদা তোর সঙ্গে একবার কথা বলতে চায়।
-কবে এলেন।
-কালকে।
-দে।
-হ্যালো।
-হ্যাঁ দাদা বলুন।
-আজ বিকেল একটু ক্লাবে এসোনা।
- কোথায়?
-ক্লাবে
-আবার ক্লাব কেনো আমার গরিবখানায় যদি বসা যায় কেমন হয়।
-আমার কোন আপত্তি নেই তোমার বন্ধুকে রজি করাও।
-দিন ওকে।
-বল।
-দাদাকে নিয়ে তুই চলে আয়।
-না। আমার কেমন যেন…..
-দূর পাগলি তুই চলে আয়, কেউ কিছু মনে করবে না।
-দাদা কিছু যদি ভাবেন।
-কিচ্ছু ভাববেন না।
-কখন যাব বল।
-লাঞ্চ থেকে ডিনার।
-যাঃ।
-আমি অফিস যাচ্ছি না। তুই একটা ভাল জিনিষ পাঠিয়েছিস, সারপ্রাইজ গিফট ওটা নিয়ে সারাদিন থাকব। এনি নিউজ।
-না। সব ঠিক ঠাক চলছে। বাকিটা গিয়ে বলবো।
-ঠিক আছে চলে আয়।
এতক্ষণ সবাই আমার মুখের দিকে তাকিয়েছিলো, ওরা বেশ বুঝতে পারছিলো আমি কার সঙ্গে কথা বলছি কিন্তু বড়মা সাথেও নেই পাঁচেও নেই তাই ফোনটা রাখতে, বড়মা বললেন, তুই কাকে আসতে বললি।
-কেনো তুমি বুঝতে পারো নি।
-না।
-মিত্রাকে।
মল্লিকদা টেবিলের ওপর জোরে একটা চাপড় মেরে চেঁচিয়ে উঠলেন কি বলিনি।
ছোটমা চোখ টিপে টিপে হাসছেন।
আমি লুচি খেয়ে চলেছি।
অমিতাভদা আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছেন। যতই হোক একজন মালিক বলে কথা, তারওপর যে সে হাউস নয়, কলকাতার একট বিগ হাউস।
-ও ছোট ও তো নেমন্তন্ন করে খালাস, কি খাওয়াবি। বড়মা বললেন।
ছোটমা বড়মার দিকে তাকাল।
আমি খেতে খেতেই বললাম এতো চাপ নিয়ো না।
-তুই থাম ।
-আমি একটা কথা বলবো।
বড়মা আমার দিকে উৎসুখ হয়ে তাকালেন।
-আজকের মেনুটা আমি যদি বানাই তোমার আপত্তি আছে।
-থাম তুই, কোনোদিন বাজারে গেছিস। ছোটমা বললেন।
-যা বাবা বাজারে না গেলে কি মেনু বানানো যায় না।
-আচ্ছা বল, অমিতাভদা বললেন।
-সরু চালের ভাত, ঘন ঘন করে মুগের ডাল, শুক্তো, পাতলা পাতলা আলু ভাজা, পাবদা মাছের ঝোল কিন্তু গোটা গোটা থাকবে, সরষে বাটা হিংয়ের বড়ি আর আমচুর দিয়ে টক, দই, মিষ্টি। ব্যাস।
মল্লিকদা ছোটমা আমার দিকে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে আছে।
বড়মা আমার কানটা মূলে বললেন, ছাগল।
সবাই হেঁসে উঠলো।
অমিতাভদা গম্ভীর গলায় বললেন, অনির মেনু ফাইন্যাল।
বড়মা ছেঁচকিয়ে উঠে বললেন, অতো আর সাউকিরি করতে হবে না।
মল্লিকদা বললেন, আমি তবে বাজারটা করে নিয়ে আসি।
-যাও। অমিতাভদা বললেন।
আসর ভাঙলো।
 
-তুই যাস না তোর সঙ্গে বসবো। অমিতাভদা বললেন
-আচ্ছা তোমরা কি ছেলেটাকে একটু শান্তিতে থাকতে দেবে না।
-তুমি না বুঝে বকো নাতো। অমিতাভ খেঁকিয়ে উঠলেন।
আমি এগিয়ে গিয়ে বড়মাকে ব্যাপারটা বোঝালাম। বড়মা শিশুসুলভ ভাবে বললেন, অনি আমি একটু শুনবো। আমি বড়মাকে একটা চেয়ার দিয়ে বললাম, ঠিক আছে তুমি বসো কিন্তু কোন কথা বলতে পারবে না। বড়মা বললেন ঠিক আছে, অমিতাভ কর্কশ নেত্রে আমার দিকে তাকালেন। মুখে কিছু বললেন না।
-ওরা খুব একটা সহজে ছেড়ে দেবে না।
-ছেড়ে দেবে না বললে ভুল, ছেড়ে দিতে হবে।
-২৫ ভাগ শেয়ার কাদের কাদের আছে।
-তিনচারজনের মধ্যে আছে। যাদের কাছে আছে তারা বিক্রি করবে।
-তুই কি করে জানলি।
-এই জন্য কয়েকদিন কাগজ দেখতে পারি নি।
আমিতাভদা কট কট করে আমার দিকে তাকালেন।
-আপনি যাদের লবির হয়ে এতদিন কাজ করেছেন তারা আজ থেকে মাস ছয়েক আগে শেয়ার বেচে দিয়েছে, -মিত্রার কাছে। আপনি তা জানতেন ?
-অমিতাভদা আমার দিকে তাকালেন।
-আমি জানতাম আপনাকে বলিনি।
-কেনো।
-আজ পরিস্থিতি এমন পজিসনে যে আপনি আমার কথা শুনছেন, ৬ মাস আগে বললে আপনি আমার কথা শুনতেন।
বড়মা মাথা নাড়ছেন, মনে মনে বেশ আনন্দ পাচ্ছেন যাক এমন একজন তাহলে তৈরি হয়েছে, যে ওর মুখের ওপর সপাটে উত্তর দিতে পারছে।
অমিতাভদা চুপ।
-আমি যদি আপনার পরিচিত না হতাম এবং মিত্রা যদি আমার পূর্ব পরিচিতা না হতো তাহলে আপনাকে আমাকে সবাইকে ঐ হাউস থেকে সরে যেতে হতো।।
অমিতাভদা মাথা নীচু করে বসে আছেন।
-আপনি হয়তো জানেন না আপনার লবির ৪০ ভাগ লোককে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, ৬০ ভাগ লোক আপনাকে ছেড়ে সুনীতদার নেওটা হয়েছে।
অমিতাভদার চোখ দুটো ছলছলে। বড়মার চোখে আগুনের হল্কা, কখন যে ছোটমা এসে দাঁড়িয়েছেন জানি না।
-আপনার ঘরে সুনীতদাকে বসাচ্ছি, মানে ওকে আমি বলির পাঁঠা করবো।
-কি বলছিস অনি। মল্লিকদা বিস্ময়ে আমার দিকে তাকিয়ে কথা বললেন।
অমিতাভদা আমার দিকে তাকালেন, চোখ দুটো স্থির।
-এই কদিনের মধ্যে ২০ পার্সেন্ট শেয়ার আমার চাই, মিত্রাকে বলেছি টাকা জোগাড় করতে।
অমিতাভদা হতাশ দৃষ্টিতে বললেন, ওরা দেবে।
-দেবে না, ছেড়ে দেবে। ওটা হিমাংশু ব্যবস্থা করছে।
-হিমাংশু কে।
-আমর বন্ধু চাটার্ড এ্যাকাউন্টেন্ট। ওকে দিয়ে সব ব্যবস্থা করছি।
-কি বলছিস তুই!
আমি ভুল করছি না। খালি আপনাদের দিকে তাকিয়ে আমি এক নোংরা খেলায় মেতেছি।
 
অমিতাভদার গালে কেউ যেন সপাটে একটা থাপ্পর কষাল, এমনভাবে আমার দিকে তাকালেন, স্থবিরের মতো ধীর পায়ে আমার দিকে এগিয়ে এলেন। আমার হাত দুটো ধরে আমাক বুক জরিয়ে ধরে ছোট্ট শিশুর মতো ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলেন।
 
বড়মা কাপড়ের খোঁট দিয়ে চোখ মুছছেন, ছোটমা মাথা নীচু করে পায়ের বুড়ো আঙুল দিয়ে মাটি ঘষছেন, মল্লিকদা খাটের এককোনে স্থানুর মতো বসে আছেন। কাঁদতে কাঁদতে অমিতাভদা বললেন, মিনু (অমিতাভদার মুখ থেকে এই প্রথম বড়মার নাম শুনলাম, এর আগে বড়বৌ ছাড়া কোনদিন ডাকেন নি) তুমি আমার কাছে সন্তান চেয়েছিলে, তোমাকে দিতে পারি নি, এই নাও তোমার ছেলেকে, বড়মা এগিয়ে এলেন, আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন, মা বাবা কি জিনিষ জানতাম না, আজ জানলাম। ছোটমা কাছে এসে আমার কপালে চুমু খেয়ে বললেন, বুবুন, মাকে পেয়ে ছোটমাকে ভুলে যাবি নাতো!!।
[+] 2 users Like MNHabib's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: কাজলদীঘির শ্মশান/পীর সাহেবের থান--মামনজাফরান (জ্যোতি বন্দোপা্ধ্যায়)) - by MNHabib - 05-11-2021, 01:54 PM



Users browsing this thread: