02-11-2021, 09:55 AM
#অন্য_রূপকথা
নিউটাউনের যে কেতাদুরস্ত বিজনেজ পার্কে আমার অফিস, সেখানে বাপু অনেক হ্যাপা পোহাতে হয়!
ঢোকার সময়ে কোম্পানির দেওয়া পরিচয়পত্র দেখিয়ে, গায়ের তাপমাত্রা মেপে, স্যানিটাইজার হাতে বুলিয়ে তারপর ছাড়পত্র মেলে। দুজন সিকিউরিটি দাদা এসব সামলানোর জন্য থাকলেও, একেকদিন তো বেজায় লাইন ও পড়ে যায়। তখন অধৈর্য্য হয়ে ঘড়ি দেখতে হয় আর মনে মনে আকুল হয়ে বলতে হয় "আজ যেন লেট না হয় ভগবান... প্লিজ প্লিজ..." (যেন আমার লেট বাঁচানো ছাড়া ওনার আর কাজ নেই)!
আজও বেশ চার পাঁচজনের পরে ছিল আমার লাইন। আমার আগে দুজন, আর তাঁদের আগে দুজন ছিলেন - বয়সে অনেকটাই ছোট হবেন আমার থেকে। ওঁদের নিজেদের মধ্যে আলোচনা থেকে বুঝতে পারছিলাম মাসের শেষ এসে গেছে বলে দুজনেই বেশ চিন্তিত। মান্থ এন্ড প্রেশার বলে কথা!
তা, এরমধ্যেই আবার একটি ছেলে নিজের আই ডি কার্ড দেখাতে পারল না। বুকপকেট, প্যান্টের পকেট হয়ে ল্যাপটপ ব্যাগ, খুঁজছিল খুব। ততক্ষণে সিকিউরিটি দাদা বলে দিয়েছেন মেইন দরজার পাশে ছোট্ট যে কাঁচে মোড়া সিকিউরিটি ঘর আছে, সেখানে গিয়ে নামধাম লিখে আসতে, কারণ সেটাই নিয়ম।
ইতিমধ্যে আমার পালা এসে গেছিল। ছেলেটি রেজিস্টার খাতায় লিখে প্রায় দৌড়ে চলে এসেছিল লাইনে। এসেই একটু অনুযোগের গলায় বলে উঠল "দাদা, আমাকে রোজ দেখেন, তাও এভাবে ওখানে পাঠালেন? দেরি হয়ে গেল!"
সিকিউরিটি দাদা বলে উঠলেন "স্যার, এটা আমাদের কাজ... না হলে ঝাড় খেতে হয়!"
ছেলেটি প্রায় সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠল "আপনাদের কোম্পানির তো আমাদের ব্যাঙ্কেই অ্যাকাউন্ট... আমিই দেখি... আপনার নাম কি?"
"কে...কেন স্যার?" একটু থেমে থেমে বলেছিলেন সিকিউরিটি দাদা।
আমি তখন চরণামৃতের মতো করে স্যানিটাইজার নিয়ে হাতে ঘষছি। তারমধ্যেই শুনি ছেলেটি বলে ওঠে "বাহ্, আপনার কোম্পানির যে স্যারের সাথে আমার চেনা, ওনাকে বলব আপনার কথা। আপনি তো কাজটা মন দিয়ে করছেন... আমার একটু দেরি হলো ঠিকই, কিন্তু দোষ তো আমারই, আপনার নয়! কোথায় যে গেল কার্ডটা... হারিয়ে গেলেই তো হয়ে গেল..." বিড়বিড় করে বলতে বলতে এগিয়ে গেল ছেলেটি।
আমার মন ভাল করে দিয়ে। নিজের অজান্তেই।
আমরা তো এরকম কত দেখি। একটু মতের অমিল হলেই রাগ... পদমর্যাদায় সমান বা উঁচু না হলেই "আপনার নামে কমপ্লেন করব! দেখে নেব!" বলা যায় অনায়াসে।
আর, সেখানে এমনি ব্যবহার - কাজের দিনে, চাপের দিনেও... বড্ড ভাল লাগল। দিনটাই যেন উজ্জ্বল হয়ে গেল।
এভাবেই... ঠিক এভাবেই তো পৃথিবীটা আরও, আরও, আরও অনেক সুন্দর হয়ে যাবে। সেই সুন্দর পৃথিবীতে সততা দিয়ে, সদিচ্ছা দিয়ে মাপা হবে পদমর্যাদা...
হবে।
হবেই।
নিউটাউনের যে কেতাদুরস্ত বিজনেজ পার্কে আমার অফিস, সেখানে বাপু অনেক হ্যাপা পোহাতে হয়!
ঢোকার সময়ে কোম্পানির দেওয়া পরিচয়পত্র দেখিয়ে, গায়ের তাপমাত্রা মেপে, স্যানিটাইজার হাতে বুলিয়ে তারপর ছাড়পত্র মেলে। দুজন সিকিউরিটি দাদা এসব সামলানোর জন্য থাকলেও, একেকদিন তো বেজায় লাইন ও পড়ে যায়। তখন অধৈর্য্য হয়ে ঘড়ি দেখতে হয় আর মনে মনে আকুল হয়ে বলতে হয় "আজ যেন লেট না হয় ভগবান... প্লিজ প্লিজ..." (যেন আমার লেট বাঁচানো ছাড়া ওনার আর কাজ নেই)!
আজও বেশ চার পাঁচজনের পরে ছিল আমার লাইন। আমার আগে দুজন, আর তাঁদের আগে দুজন ছিলেন - বয়সে অনেকটাই ছোট হবেন আমার থেকে। ওঁদের নিজেদের মধ্যে আলোচনা থেকে বুঝতে পারছিলাম মাসের শেষ এসে গেছে বলে দুজনেই বেশ চিন্তিত। মান্থ এন্ড প্রেশার বলে কথা!
তা, এরমধ্যেই আবার একটি ছেলে নিজের আই ডি কার্ড দেখাতে পারল না। বুকপকেট, প্যান্টের পকেট হয়ে ল্যাপটপ ব্যাগ, খুঁজছিল খুব। ততক্ষণে সিকিউরিটি দাদা বলে দিয়েছেন মেইন দরজার পাশে ছোট্ট যে কাঁচে মোড়া সিকিউরিটি ঘর আছে, সেখানে গিয়ে নামধাম লিখে আসতে, কারণ সেটাই নিয়ম।
ইতিমধ্যে আমার পালা এসে গেছিল। ছেলেটি রেজিস্টার খাতায় লিখে প্রায় দৌড়ে চলে এসেছিল লাইনে। এসেই একটু অনুযোগের গলায় বলে উঠল "দাদা, আমাকে রোজ দেখেন, তাও এভাবে ওখানে পাঠালেন? দেরি হয়ে গেল!"
সিকিউরিটি দাদা বলে উঠলেন "স্যার, এটা আমাদের কাজ... না হলে ঝাড় খেতে হয়!"
ছেলেটি প্রায় সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠল "আপনাদের কোম্পানির তো আমাদের ব্যাঙ্কেই অ্যাকাউন্ট... আমিই দেখি... আপনার নাম কি?"
"কে...কেন স্যার?" একটু থেমে থেমে বলেছিলেন সিকিউরিটি দাদা।
আমি তখন চরণামৃতের মতো করে স্যানিটাইজার নিয়ে হাতে ঘষছি। তারমধ্যেই শুনি ছেলেটি বলে ওঠে "বাহ্, আপনার কোম্পানির যে স্যারের সাথে আমার চেনা, ওনাকে বলব আপনার কথা। আপনি তো কাজটা মন দিয়ে করছেন... আমার একটু দেরি হলো ঠিকই, কিন্তু দোষ তো আমারই, আপনার নয়! কোথায় যে গেল কার্ডটা... হারিয়ে গেলেই তো হয়ে গেল..." বিড়বিড় করে বলতে বলতে এগিয়ে গেল ছেলেটি।
আমার মন ভাল করে দিয়ে। নিজের অজান্তেই।
আমরা তো এরকম কত দেখি। একটু মতের অমিল হলেই রাগ... পদমর্যাদায় সমান বা উঁচু না হলেই "আপনার নামে কমপ্লেন করব! দেখে নেব!" বলা যায় অনায়াসে।
আর, সেখানে এমনি ব্যবহার - কাজের দিনে, চাপের দিনেও... বড্ড ভাল লাগল। দিনটাই যেন উজ্জ্বল হয়ে গেল।
এভাবেই... ঠিক এভাবেই তো পৃথিবীটা আরও, আরও, আরও অনেক সুন্দর হয়ে যাবে। সেই সুন্দর পৃথিবীতে সততা দিয়ে, সদিচ্ছা দিয়ে মাপা হবে পদমর্যাদা...
হবে।
হবেই।