01-11-2021, 10:19 AM
৩
এয়ারপোর্টে নেমেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে যদি চাকরিটা হয় তাহলে দুদিন সময় নেবে অর্ক। কলকাতায় নেমেই কেমন অদ্ভুত ভালো লেগে যায় শহরটাকে। মালবিকার মাদকতাকে সাথে নিয়ে... হেঁটে হেঁটে অনুভব করতে চায় শহরটাকে। সুনয়না বার বার বলত ওকে “কলকাতার প্রান আছে... আর প্রান দেখা যায় না অনুভব করতে হয়।”
সুনয়না... অর্কর সবচেয়ে ভালো বন্ধু, যাকে বলে “বেষ্ট ফ্রেন্ড”। আলাপ হয়েছিল ফেসবুকে... একটা কবিতায় কমেন্ট করেছিল মেয়েটা... প্রোফাইল পিকচারে একটা হাতে আঁকা একটা চোখের ছবি। চোখের ওপরে লেখা “সুনয়না”। অসাধারন লেগেছিল আঁকাটা, চোখটা দেখে মনে হয়েছিল কথা বলছে। ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছিল অর্কই, প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই অ্যাক্সেপ্ট করেছিল সুনয়না। ভাগ্যিস ওই কবিতাটা লিখেছিল অর্ক। তার পর থেকে আর বন্ধুত্ব করতে হয়নি দুজনকে, হয়ে গেছিল। তারপর অর্ক জানতে পারল সুনয়না ছবি আঁকে, কলকাতায় একা থাকে। নিজের মত বাঁচে। আর সবচেয়ে বড় ব্যাপার সুনয়নার মধ্যে একটা প্রান ছিল। যেই প্রানটা আগে কোনদিনও কারো সাথে কথা বলতে গিয়ে পায়নি অর্ক। প্রথম প্রথম তানিয়ার সাথে কথা বলতেও ভালোই লাগত অর্কর। অনেক কথাও বলত, কত কি নিয়ে গল্প করত। কিন্তু আস্তে আস্তে ওদের দুজনের কথা বলার বিষয় শেষ হয়ে যাচ্ছিল। সুনয়নার সাথে কিন্তু তা হয়না। ঘন্টার পর ঘন্টা কথা বলে গেলেও কথা শেষ হতে চায়না ওদের... তাই অর্কর সব কথা শুধু একজনকেই বলতে পারে অর্ক... তার সবচেয়ে ভালো বন্ধু.... তার সবচেয়ে প্রিয় মানুষ ... সুনয়না।
সুনয়নাই ওকে প্রথম খবর দেয় যে মালবিকা রায়ের একজন অনুলেখক দরকার, খুব অবাক হয়েছিল অর্ক। একজন সুস্থ মানুষের লেখার জন্য অন্য লোকের দরকার হবে কেন? তবে খুব বেশি ভাবেনি, সঙ্গে সঙ্গে একটা মেইল করেছিল মালবিকা রায়কে। রিপ্লাইও পেয়েছিল প্রায় দু ঘন্টার মধ্যে। ডেট ও টাইম দেওয়া ছিল তাতে এবং লেখা ছিল সব মিলিয়ে চারজনকে সিলেক্ট করা হয়েছে ইন্টারভিউ এর জন্য। প্রধান ক্রাইটেরিয়া ভালো হাতের লেখা, সেদিক দিয়ে অর্ক অনেকটা এগিয়ে। “মুক্তোর মত” হাতের লেখা বলে যদি কিছু থাকে তাহলে সেটার কাছাকাছি অর্কর লেখা। তাই বেশ কনফিডেন্ট হয়েই চাকরিটা ছেড়ে দেয়। আসলে মুম্বাইটা আর ভালো লাগছিল না অর্কর। অনেক দিন ধরেই ভাবছিল কোথাও একটা চলে যাবে। কলকাতাটাই ফার্স্ট চয়েস ছিল কারন অন্য কোন শহরে সুনয়না থাকে না। তখন অবশ্য জানতো না যে কলকাতায় তার স্বপ্নের নারী অপেক্ষা করছিল তার জন্য... মনটা ভালো লাগায় ভরে আছে সেই তখন থেকে...
সুনয়না বলেছিল “আসল কলকাতা নাকি কলকাতার ভেতরে লুকিয়ে আছে” তাই সুনয়নার বলা সব অদ্ভুত অদ্ভুত জায়গায় ঘুরে বেরায় অর্ক।
খিদিরপুরের কাবাবের দোকানের সারি, রেসকোর্সের পেছন দিকে দ্বিতীয় হুগলী সেতুর নিচে এঁদো ঘোড়ার আস্তাবল, রিপন স্ট্রীটের অদ্ভুত সব বাড়ি ঘরের অদ্ভুত কিছু মানুষ, ফ্রি কলেজ স্ট্রীটের একটা পুরোনো হোটেলের ছাদ থেকে দেখতে পাওয়া এক অদ্ভুত কলকাতা, যমুনা সিনেমা হলের পেছনের অলি গলি, বো ব্যারাক, সোনাগাছির অচেনা গলির অচেনা বাড়ি। সত্যি কলকাতার প্রান আছে... শেষে কুমারটুলির পাশে গঙ্গার ঘাটে চুপ করে বসে গঙ্গার জলে পা ডুবিয়ে জলটা পায়ে ছোঁয়া মাত্র অর্কর মনে হয় সুনয়নার কথাটা “প্রান... অনুভব করতে হয়।”
এয়ারপোর্টে নেমেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে যদি চাকরিটা হয় তাহলে দুদিন সময় নেবে অর্ক। কলকাতায় নেমেই কেমন অদ্ভুত ভালো লেগে যায় শহরটাকে। মালবিকার মাদকতাকে সাথে নিয়ে... হেঁটে হেঁটে অনুভব করতে চায় শহরটাকে। সুনয়না বার বার বলত ওকে “কলকাতার প্রান আছে... আর প্রান দেখা যায় না অনুভব করতে হয়।”
সুনয়না... অর্কর সবচেয়ে ভালো বন্ধু, যাকে বলে “বেষ্ট ফ্রেন্ড”। আলাপ হয়েছিল ফেসবুকে... একটা কবিতায় কমেন্ট করেছিল মেয়েটা... প্রোফাইল পিকচারে একটা হাতে আঁকা একটা চোখের ছবি। চোখের ওপরে লেখা “সুনয়না”। অসাধারন লেগেছিল আঁকাটা, চোখটা দেখে মনে হয়েছিল কথা বলছে। ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছিল অর্কই, প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই অ্যাক্সেপ্ট করেছিল সুনয়না। ভাগ্যিস ওই কবিতাটা লিখেছিল অর্ক। তার পর থেকে আর বন্ধুত্ব করতে হয়নি দুজনকে, হয়ে গেছিল। তারপর অর্ক জানতে পারল সুনয়না ছবি আঁকে, কলকাতায় একা থাকে। নিজের মত বাঁচে। আর সবচেয়ে বড় ব্যাপার সুনয়নার মধ্যে একটা প্রান ছিল। যেই প্রানটা আগে কোনদিনও কারো সাথে কথা বলতে গিয়ে পায়নি অর্ক। প্রথম প্রথম তানিয়ার সাথে কথা বলতেও ভালোই লাগত অর্কর। অনেক কথাও বলত, কত কি নিয়ে গল্প করত। কিন্তু আস্তে আস্তে ওদের দুজনের কথা বলার বিষয় শেষ হয়ে যাচ্ছিল। সুনয়নার সাথে কিন্তু তা হয়না। ঘন্টার পর ঘন্টা কথা বলে গেলেও কথা শেষ হতে চায়না ওদের... তাই অর্কর সব কথা শুধু একজনকেই বলতে পারে অর্ক... তার সবচেয়ে ভালো বন্ধু.... তার সবচেয়ে প্রিয় মানুষ ... সুনয়না।
সুনয়নাই ওকে প্রথম খবর দেয় যে মালবিকা রায়ের একজন অনুলেখক দরকার, খুব অবাক হয়েছিল অর্ক। একজন সুস্থ মানুষের লেখার জন্য অন্য লোকের দরকার হবে কেন? তবে খুব বেশি ভাবেনি, সঙ্গে সঙ্গে একটা মেইল করেছিল মালবিকা রায়কে। রিপ্লাইও পেয়েছিল প্রায় দু ঘন্টার মধ্যে। ডেট ও টাইম দেওয়া ছিল তাতে এবং লেখা ছিল সব মিলিয়ে চারজনকে সিলেক্ট করা হয়েছে ইন্টারভিউ এর জন্য। প্রধান ক্রাইটেরিয়া ভালো হাতের লেখা, সেদিক দিয়ে অর্ক অনেকটা এগিয়ে। “মুক্তোর মত” হাতের লেখা বলে যদি কিছু থাকে তাহলে সেটার কাছাকাছি অর্কর লেখা। তাই বেশ কনফিডেন্ট হয়েই চাকরিটা ছেড়ে দেয়। আসলে মুম্বাইটা আর ভালো লাগছিল না অর্কর। অনেক দিন ধরেই ভাবছিল কোথাও একটা চলে যাবে। কলকাতাটাই ফার্স্ট চয়েস ছিল কারন অন্য কোন শহরে সুনয়না থাকে না। তখন অবশ্য জানতো না যে কলকাতায় তার স্বপ্নের নারী অপেক্ষা করছিল তার জন্য... মনটা ভালো লাগায় ভরে আছে সেই তখন থেকে...
সুনয়না বলেছিল “আসল কলকাতা নাকি কলকাতার ভেতরে লুকিয়ে আছে” তাই সুনয়নার বলা সব অদ্ভুত অদ্ভুত জায়গায় ঘুরে বেরায় অর্ক।
খিদিরপুরের কাবাবের দোকানের সারি, রেসকোর্সের পেছন দিকে দ্বিতীয় হুগলী সেতুর নিচে এঁদো ঘোড়ার আস্তাবল, রিপন স্ট্রীটের অদ্ভুত সব বাড়ি ঘরের অদ্ভুত কিছু মানুষ, ফ্রি কলেজ স্ট্রীটের একটা পুরোনো হোটেলের ছাদ থেকে দেখতে পাওয়া এক অদ্ভুত কলকাতা, যমুনা সিনেমা হলের পেছনের অলি গলি, বো ব্যারাক, সোনাগাছির অচেনা গলির অচেনা বাড়ি। সত্যি কলকাতার প্রান আছে... শেষে কুমারটুলির পাশে গঙ্গার ঘাটে চুপ করে বসে গঙ্গার জলে পা ডুবিয়ে জলটা পায়ে ছোঁয়া মাত্র অর্কর মনে হয় সুনয়নার কথাটা “প্রান... অনুভব করতে হয়।”