Thread Rating:
  • 13 Vote(s) - 3.15 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica উদযাপনের হৃৎপিণ্ড : --- virginia_bulls
#36
হাতে কোদাল নিয়ে চোখ লাল করা সুজন মুখে তাড়ির বিশ্রী গন্ধ ফিরে এসেছে সাগর থেকে চুপি সাড়ে ছিল না মরমী আশে পাশে লুকিয়ে দেখেছে অতসীর অভিসার

"
এই সালা সুমুন্দীর বাচ্ছা তোর তলে তলে এতো ! কোদাল দিয়ে কুপিয়েই মেরে দোবো তোকে আজ ! " গর্জে উঠেই বসিয়ে দেয় কোদাল সিদ্দের মাথা লক্ষ্য করে হাত নিয়ে প্রতিহত করতে গিয়ে ধারালো কোদালের মুখ কেটে ফালা করে দেয় সিদ্দের হাত মুহূর্তে আর হাত থেকে ছিটকে গিয়ে কোদালের পিছনের লোহার বেড় টা গিয়ে সজোরে আঘাত করে সিদ্দের কপালে গভীর ক্ষত হয়ে ফেটে গেছে কপাল সিদ্দের একটা চোখ বুঝে গেছে আঘাতে তৎক্ষণাৎ ধাক্কা মারলো সিদ্দে তার বাবা কে প্রাণের ভয়ে তাল সামলাতে পারলো না সুজন মাঝি

মাঝে অশ্রাব্য গলা গালি
"
এই শালা তোর মা খানকি , তোকে জন্ম দিযেছে বেজন্মা কোথাকার , তোর একদিন কি আমার একদিন ! তোকে বলি দেব আজ শালা রূপসার চরে !"

মাটিতে ঝুকে টাল খেয়ে লুঙ্গিটা কোনো রকমে কোমরে জড়িয়ে নিলো সিদ্দে আর দৌড়াতে শুরু করবে বলে উঠে দাঁড়ালো আঘাত সামলে পাশেই হুর মুড়িয়ে নেশার ঘোরে পরে গেছে সুজন আর সম্বিৎ ফিরে সিদ্দে কে অমন ভয়ঙ্কর রক্তাক্ত দেখে চেঁচিয়ে উঠলো ছোট মা

"
একি রে সিদ্দের বাপ্ একি করলি , নিজের ছেলে কে !"
তারই মধ্যে টলতে টলতে উঠে দাঁড়িয়ে আবার নির্মম আঘাত হানলো সুজন অতসী কে হাত দিয়ে প্রত্যাহত করা ছাড়া বসে আর কিছু করার ছিল না অতসীর , মেয়ের প্রাণ সে খাটের নিচে রাখা কাস্তে হাতে নিয়ে বার করে সুজনের কোদালের আঘাত সামলাতে চাইলেও পারলো না বসে থেকে কোদাল এসে কুপিয়ে দিলো অতসীর ঘাড় বড়ো গাছের মতো এলিয়ে পড়লো অতসী আঘাতে হাতে পড়ে রইলো ধরে থাকা কাস্তে ঘাড়ে শুধু চুইয়ে উঠলো খানিকটা রক্ত না ফিনকি দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছে না অতসীর শরীর কাঁপছে

পাগলের মতো দৌড়াচ্ছে সিদ্দে বাড়ি থেকে বেরিয়ে রূপসা নদীর পার ধরে নদীর ধার ধরে রক্তের পথ তৈরী করছে তার দৌড় সারা গায়ে মাখা রক্ত কপাল লাল সিঁদুরে মাখা ভর্তি মেঘ দু একজন হায় হায় করে চিৎকার করছে ঠাকুর দালানে দাঁড়িয়ে থাকা মরমীর হাত ধরে আছে সিদাম সবার হৈ হট্টগোলে খেয়াল পড়লো তার নদীর পাড়ের দিকে

দূরে দাঁড়িয়ে মরমী দেখছে সিদ্দে কে দৌড়াতে সিদ্দের শরীরের দিকে তাকালেই যে তাকে চিনতে পারে মরমী ওদিকে তাকালে সূর্যের আলোতে সব কালো কালো লাগে বিকেলের অন্ধকার নামে নি শরিরটা রুদ্ধশ্বাসে দৌড়াতে দৌড়াতে ঝপ করে নদীর পাড়ের কোথাও মাথা গুঁজে পড়ে গেলো না আর নড়ছে না
একটা দীর্ঘ নিঃস্বাস ফেললো মরমী

কোলাহলের উৎসবে ভালোবাসার হৃৎপিণ্ড কখনো কখনো শান্ত হয়ে যায় প্রতিধ্বনি দেয় না সে মন তুমুল আর্তনাদ আর কান্নার রোল পড়েছে মুহুর্মুহু মরমীর ঘরের চারপাশে উদ্ভ্রান্তের মতো পাগল হয়ে ছোটাছুটি করছে সুজন কোদাল হাতে না কাওকে মারতে না হায় হায় করছে সে বুকে আক্ষেপ আর চোখে শুন্য দৃষ্টি

চেঁচাচ্ছে পাগলের মতো সুজন " হ্যাঁ সব শেষ হয়ে গেছে , সব শেষ ! হা হা হা হা " আর মাঝে মাঝে আক্ষেপ করে কেঁদে উঠছে হাউ হাউ করে গায়ের লোক সুজন কে ধরে বসিয়ে দিলো এক জায়গায় ঘরের দুয়ারে হাত থেকে কোদাল তার পড়ে গেছে অনেক আগেই দৃষ্টি আগেরই মতো শুন্য কোঁচড় থেকে মুড়ে রাখা সোনার গলার হার টা চক চক করছে মাটির মেঝেতে সোনার ধর্ম নেই সোনার শুধু লোভ হয়, দুঃখ হয় না , আর সোনার হয় বেইমানি সোনাকে তাই তো ছোয়া যায় না
কিন্তু ভাগ্যের কি পরিহাস , কেউ সেটাকে তুলে নিলো সন্তর্পনে

বুক খালি করে আর দু চারটে শেষ পড়ে থাকা নিঃস্বাস ছেড়ে দেয় মরমী বাড়িটার দিকে তাকিয়ে তাকায় সুদামের দিকে নতুন সাইকেলে চড়ে পাশের গা থেকে তাকে দেখতে এসেছিলো সাইকেল সুজনেরই কিনে দেয়া পিছনে লোহার বসার জায়গায় বসে দেখে নেয় মরমী হাসি উড়ে যাওয়া মলিন সাদা মুখটায় শেষ বার চেষ্টা করে হাসতে
"
কিরে পারবি আমায় নিয়ে সাইকেল চালাতে আমি কিন্তু শুধু তোকে ধরে থাকবো ?"

সিদাম হাসে না , প্যাডেলে পা দেয় , চোখে জীবনের নতুন চমক আর প্রত্যয় নিয়ে সাইকেলটা গড়িয়ে যায় সব কিছু পিছনে ফেলে মাটির রাস্তায় কোথাও বুনো আকন্দ ফুলের গন্ধ ভেসে আসছে মাটির রাস্তার রেখা ধরে রাস্তার আগাছার উপর দিয়ে রঙিন দুটো প্রজাপতির মতো উড়ে মিলিয়ে যেতে থাকে দুটো সবে রং লাগা জীবন নাঃ বাবা মার দিকে শেষ বার তাকায় নি মরমী ঝুকে পড়ে থাকা সিদ্দের শরীরটাকে কেন যেন প্রণাম করতে ইচ্ছে হয় মরমীর হয় তো তার প্রথম ভালোবাসার উৎসবের উদযাপন

শাড়ির খুট দিয়ে এক ফোটা ফালতু উপচে পড়া চোখের জল মুছে নেয় সে রূপসার চর আর দেখা যাচ্ছে না উদযাপনের হৃৎপিণ্ডে সাইকেলের ঝাকুনি তে খসে পড়ছে ভালোবাসার গাঁথা বাসি ফুল
গুলো পাথরের বিগ্রহ আছে , কিন্ত ভগবান নেই

কোথাও উৎসবের আকাশে সিদ্দে জাল বুনছে আর ভোরের ব্যস্ততা তে বিষন্ন পাগলাটে সুজন মাঝির নৌকা ভিড়ে যাচ্ছে ঘাটে অতসীর নাম টা মুছে গেছে নূর ইসলামের মনেও
,
আর ইতিহাস ভুলে গেছে সব সময়ের অন্তরাল রূপসা আজও খোঁজে মরমীর উদযাপনের হৃদপিন্ড কে

রূপসার চরে কখনো ফাঁসির সাজা হয় না সন্ধ্যের লম্ফ জ্বালিয়ে রেডিওর গান ছাড়ে সুজন দাবায় বসে , জাল সে বুনতে পারে একদম সিদ্দেরই মতো

সমাপ্ত !
Like Reply


Messages In This Thread
RE: উদযাপনের হৃৎপিণ্ড : --- virginia_bulls - by ddey333 - 30-10-2021, 10:36 PM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)