Thread Rating:
  • 71 Vote(s) - 3.44 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica নাগপাশ - the trap (সমাপ্ত)
[Image: Screenshot-20210803-184722-2.jpg]

ঘটনাটা শোনার পর থেকে ভেতর ভেতর নন্দিনী এতটাই আশঙ্কিত হয়ে পড়েছিল যে গাড়িতে উঠে কোথায় যাচ্ছে সেটা জিজ্ঞাসা করার কথা ভুলেই গেলো সে। গোদের উপর বিষফোড়ার মতো গাড়িতে ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হলো।

একদিকে একটি মিথ্যে রটনার মাধ্যমে কলকাতা থেকে না বের হতে পারার গল্পটা ভীতসন্ত্রস্থ সরল মনের নন্দিনীর এত সহজে বিশ্বাস করে নেওয়া তার উপর গাড়িতে ওঠার পর থেকেই মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হওয়া .. এ যেন একেবারে মেঘ না চাইতেই জল। তবে এক্ষেত্রে জল অর্থাৎ বৃষ্টি পড়ার ঘটনাটি প্রবচনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে মিলে গিয়েছে। যাই হোক, গাড়ি থামলো শিয়ালদহর একটি হোটেল কাম লজের সামনে‌।

ধূর্ত এবং সুযোগসন্ধানী রাজশেখর বাবু হোটেল থেকে কিছুটা ‌প্রায় ১৫ থেকে ২০ পা' দূরে গাড়িটা দাঁড় করালো। তারপর নন্দিনীর দিকে তাকিয়ে তাকে অনুরোধ করলো গাড়ি থেকে নামার জন্য।

এতক্ষণ আশা-নিরাশার দোলাচলে অন্য এক জগতে চলে গিয়েছিল নন্দিনী .. মামাশ্বশুরের ডাকে সম্বিত ফিরলো তার। গাড়ির ভিতর থেকেই সে দেখতে পেলো যে তিনতলা বিল্ডিং এর কিছুটা দূরে তাদের গাড়িটি এসে দাঁড়িয়েছে .. সেই বিল্ডিং এর দু'তলার সামনের দিকের বারান্দার ঠিক তলায় একটি বেশ বড়সড় সাইনবোর্ডে নিওন লাইটের আভায় জ্বলজ্বল করছে একটি নাম - 'কুন্তী লজ'। এই দৃশ্য দেখার পর নন্দিনীর বুঝতে একটুও বাকি রইলো না যে তারা কোনো হোটেলে এসেছে, তার উপর গাড়ি থেকে নামতে গিয়ে দেখলো মুষলধারে বৃষ্টি পড়ে চলেছে।

নন্দিনী জিজ্ঞাসু চোখে তার মামাশ্বশুরের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করলো "আপনি বলেছিলেন শিয়ালদায় আপনার কোনো এক পরিচিত পরিবারের বাড়িতে এসে উঠেছেন, কিন্তু এটাতো একটা লজ। তাছাড়া বাইরে মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছে, গাড়ি থেকে নামলেই তো ভিজে যাবো .."

সে যে এইরকম কিছু প্রশ্নের সম্মুখীন হবে সেটা চতুর রাজশেখর বাবু ভালো করেই জানতো। নন্দিনীর কথা শেষ হওয়ার আগেই বলে উঠলো "হ্যাঁ, ভুল তো কিছু বলিনি .. এর আগেও তো আমি বহুবার কলকাতায় এসেছি, আমি যখনই এখানে আসি এই লজেই উঠি। তাই এখানকার মালিক, ম্যানেজার এবং কর্মচারীগণ আমার পরিবারের মতোই হয়ে গিয়েছে। এর থেকে আর গাড়ি এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার নিয়ম নেই। এটাই 'পার্কিং স্লট' .. গাড়ি থেকে নেমে তাড়াতাড়ি পা চালিয়ে চলো, অসুবিধা হবে না। এই বলে গাড়ির দরজা খুলে হাত ধরে একপ্রকার জোর করেই নন্দিনীকে গাড়ি থেকে নামালো রাজাবাবু।

বাড়িতে বয়স্ক শাশুড়ি এবং সর্বোপরি তার দশ বছরের শিশুপুত্র একা রয়েছে। সে যে ফিরতে পারবে না সেই ব্যাপারে এখনও তাদের কিছু জানানো হয়নি। তার স্বামীর সঙ্গেও এই ব্যাপারে আলোচনা করা হয়নি। তার উপর সম্পূর্ণ অপরিচিত জায়গায় এই হোটেল এবং সঙ্গে মাত্র গতকাল রাত্রে পরিচয় হওয়া প্রায় এক অপরিচিত ব্যক্তি, যতই তার মামাশ্বশুর হোক না কেনো‌ ..‌ আশঙ্কার মোড়কে ঢাকা এইরূপ অজস্র অনিশ্চয়তায় ভরা ভাবনার মাঝে নন্দিনীর মুখ দিয়ে মৃদু প্রতিবাদের সুরে শুধুমাত্র "কিন্তু .. কিন্তু .." এই শব্দদ্বয় বেরিয়ে এলো।

গাড়ি থেকে নেমে যত দ্রুতই হোক ১৫ - ২০ পা' পদব্রজে যাওয়ার ফলে নন্দিনী এবং তার মামাশ্বশুর দুজনেই কাক-ভেজা ভিজে গেলো। হয়তো মনে মনে এটাই চাইছিলো রাজশেখর বাবু .. তাই প্ল্যানমাফিক কাজ হচ্ছে দেখে তার ঠোঁটের কোনায় একটি ইঙ্গিতপূর্ণ মৃদু হাসি ফুটে উঠলো।

হোটেলের বাইরেটা যতটা অন্ধকার ভিতরটাও প্রায় তথৈবচ। একতলায় একটি বেশ বড় সাইজের ঘর .. ঘরটিতে টিমটিম করে মৃদু পাওয়ারের আলো জ্বলছে। ঘরটির একপাশে‌ রান্নাঘর, তার পাশে বাথরুম। রান্নাঘর থেকে হাতা-খুন্তির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে অর্থাৎ রান্না হচ্ছে। রান্নাঘরের সামনে খান দুয়েক ডাইনিং টেবিল পাতা। প্রত্যেকটি টেবিলের সঙ্গে ৬'টা করে চেয়ার দেওয়া আছে। বর্তমানে যার মধ্যে দুটি চেয়ার অধিকার করে দুজন ষন্ডামার্কা লোক মদ্যপান করছে। রান্নাঘরের ঠিক উল্টোদিকে অর্থাৎ ঘরের অপর প্রান্তে একটি কাউন্টার .. সেখানে একজন অল্পবয়সী খর্বকায় ব্যক্তি বসে আছে। সম্ভবত ইনি এই হোটেল কাম লজের ম্যানেজার।

রাজশেখর বাবু নন্দিনীর হাত ধরা অবস্থাতেই হোটেলের ভেতরে প্রবেশ করলো। বৃষ্টিস্নাতা নন্দিনীর জর্জেটের শাড়িটা ততক্ষণে শরীরে আষ্টেপিষ্টে লেপ্টে গিয়ে তার অপরূপ নারী শরীরের প্রতিটি বিভঙ্গ ধীরে ধীরে প্রকট করেছে ঘরের বাকি লোকজনদের সামনে।

মদ্যপান করতে থাকা দু'জন ষন্ডামার্কা লোক লোলুপ দৃষ্টিতে যেন গিলে খাচ্ছিলো সম্পূর্ণরূপে ভিজে যাওয়া শাড়ি পরিহিতা নন্দিনীর শরীরটাকে। উল্টোদিকের কাউন্টারে বসে থাকা খর্বকায় লোকটি আড়চোখে নন্দিনীর শারীরিক বিভঙ্গ মাপতে মাপতে রাজশেখর বাবুর দিকে তাকিয়ে বললো "আরে আসুন আসুন রাজাবাবু .. আজকেই ফিরে এলেন চন্দননগর থেকে .. তা, সঙ্গে ইনি কে? আমাদের কিন্তু আর এক্সট্রা ঘর খালি নেই .. সবকটাই ভর্তি।"

কথাগুলো শুনে মনে মনে যেন কিছুটা খুশিই হলো রাজশেখর বাবু। ঠোঁটের কোনে এক চিলতে হাসি এনে বললো "খালি নেই! ঠিক আছে অসুবিধা হবে না সঞ্জয় .. আমরা ম্যানেজ করে নেবো। ইনি আমার পরিচিত একজন .. বান্ধবী বলতে পারো।"

সঙ্গে সঙ্গে উল্টোদিকের টেবিলে মদ্যপান রত অবস্থায় থাকা একজন বলে উঠলো "বান্ধবী .. নাকি কোনো রেন্ডিকে তুলে নিয়ে এসেছেন, যেখানে গিয়েছিলেন সেখান থেকে। তবে দেখতে কিন্তু একেবারে ভদ্রবাড়ির সতিলক্ষী গৃহবধূর মতো .. খাসা মাল।" ঘরে উপস্থিত চারজন পুরুষমানুষ অট্টহাসিতে ফেটে পরলো।

এই ধরনের নোংরা কথা তাকে কেউ কোনোদিন বলেনি বা স্বপ্নেও ভাবেনি এই ধরনের কথা তাকে কোনদিনই শুনতে হবে। তাই কথাগুলো শুনে লজ্জায়, ঘেন্নায়, অপমানে, রাগে নন্দিনীর মাটির সঙ্গে মিশে যেতে ইচ্ছে করছিলো। তার মামাশ্বশুরের দিকে শ্লেষপূর্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে মৃদুস্বরে উক্তি করলো "এইসব কি বলছে ওরা? আর আপনিই বা ওদের এসব কথায় প্রশ্রয় দিচ্ছেন কেনো? আমি আপনার বৌমা .. আপনার ভাগ্নের স্ত্রী .. এটা না বলে আমাকে বান্ধবী বললেন কেনো?"

"খেপেছো নাকি!! বৃষ্টিতে ভিজে তোমার এই মোহময়ী রূপ দেখে ওরা এতটাই উত্তেজিত হয়ে পরেছে যে এই ধরনের উক্তি করতে শুরু করেছে। এর উপর তোমাকে বৌমা বলে পরিচয় দিলে তোমার আর আমার দু'জনের সম্মানটা বজায় থাকতো? ওরা তোমাকে নিয়ে আরো কটুক্তি করতো।" চাপাস্বরে উত্তর দিলো রাজশেখর বাবু।

তার মামাশ্বশুরের মুখে কথাগুলো শোনার পর বৃষ্টিতে ভিজে শরীরে লেপ্টে যাওয়া শাড়ি এবং বাকি পোশাক সম্বন্ধে অতিমাত্রায় সচেতন হয়ে উঠলো নন্দিনী। ওই স্থানে আর এক মুহূর্ত দাঁড়িয়ে থাকতে ভীষণরকম কুণ্ঠাবোধ হচ্ছিল তার। মামাশ্বশুরের দিকে কুণ্ঠিত ভাবে তাকিয়ে বললো "এখন এখান থেকে আমাকে নিয়ে চলুন, ভীষণ লজ্জা করছে আমার।

এই কথাটা শোনার জন্যই যেন অপেক্ষা করছিলো রাজশেখর বাবু। "হ্যাঁ অবশ্যই, এখনই নিয়ে যাচ্ছি।" নন্দিনীর দিকে তাকিয়ে এই কথা বলে ম্যানেজার সঞ্জয়বাবুর কাছ থেকে তার ঘরের চাবি চেয়ে নিয়ে বৌমাকে তার পিছুপিছু আসতে ইশারা করে কাউন্টারের পাশ দিয়ে দু'তলা এবং তিনতলাতে যাওয়ার কাঠের সিঁড়ি দিয়ে আস্তে আস্তে উপরে উঠে গেলো রাজশেখর বাবু। নন্দিনীও ঘরে উপস্থিত বাকি পুরুষদের চোখ বৃষ্টিতে ভিজে লেপ্টে যাওয়া ভেজা শাড়িতে নিজের দোদুল্যমান নিতম্বের ওপর সাঁটিয়ে রেখে তার মামাশ্বশুরের পিছু পিছু উপরে উঠে গেলো।

তারা গিয়ে পৌঁছলো জনমানব শূন্য তিনতলায়  রাজশেখর বাবুর তালাবন্ধ ঘরের সামনে। সামনের দিকের লম্বা বারান্দায় সারিবদ্ধভাবে ছ'টি ঘর তালাবন্ধ অবস্থায় আছে। তাই দেখে নন্দিনী জিজ্ঞাসা করলো "নিচের ভদ্রলোক যে বললেন প্রত্যেকটি ঘর ভর্তি .. কিন্তু এখানে তো একটা ঘরের লোক নেই, সব ঘরই তো তালা দেওয়া দেখছি।"

"তালাবন্ধ মানেই কি সে ঘর খালি? এখানে সবকটা ঘর আগের থেকেই occupied .. ঘর বন্ধ রেখে ব্যবসা সংক্রান্ত কাজে বা অন্য কোনো দরকারে কোথাও গেছে হয়তো এরা। ঠিক যেমন আমি ঘর বন্ধ রেখে গতকাল চন্দননগরে তোমাদের বাড়িতে গিয়েছিলাম।" তৎক্ষণাৎ উত্তর দিলো রাজশেখর বাবু।

"তা হোক .. তবুও আমি আপনার সঙ্গে এক ঘরে কি করে থাকবো! সে আমি পারবো না .." কুণ্ঠিত ভঙ্গিতে কথাগুলো বললো নন্দিনী।

"তাহলে আর উপায় কি .. তোমাকে তো আর চলে যেতে বলতে পারি না .. আমিই বেরিয়ে যাচ্ছি এই হোটেল থেকে। তুমি এই অবস্থায় সম্পূর্ণ অপরিচিত জায়গায় একা একা রাত কাটাও এখানে।" কথাটা বলেই চলে যেতে উদ্যত হওয়ার ভান করলো রাজশেখর বাবু।

"নাহ্ .. আমি .. মানে আমি কি করে একা থাকবো এখানে!!" চাপা আর্তনাদ করে উঠলো নন্দিনী।

"তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে চলো ভেতরে" তৎক্ষণাৎ ঘরের দরজা খুলে ভিতরে ঢুকে সুযোগসন্ধানী রাজাবাবু ঘরের ভিতরে আসতে বললো নন্দিনীকে।

১২/১৪ মাঝারি সাইজের ঘরটির এক কোণে একটি হালফ্যাশনের গদি আঁটা সাদা চাদর পাতা ডাবলবেডের কাঠের খাট। খাটের পাশে একটা ছোটো টেবিল যার উপর একটি সৌখিন টেবিল ল্যাম্প দৃশ্যমান। খাটের অপরপ্রান্তে একটি প্লাইউডের ছোটো আলমারি। তার ঠিক পাশেই অ্যাটাচ্ বাথরুমের দরজা।

বাথরুমের দরজার দিকে নির্দেশ করে রাজাবাবু নন্দিনীকে বললো "তুমি তাড়াতাড়ি বাথরুমে ঢুকে সমস্ত জামাকাপড় খুলে ফ্রেশ হয়ে নাও বৌমা। বৃষ্টিতে তো শাড়ী-সায়া-ব্লাউজ সব ভিজে গেছে তোমার। আমার তো মনে হয় ভেতরের ব্রা-প্যান্টিটাও ভিজে গেছে।" নন্দিনীকে অপ্রস্তুত করার জন্য ইচ্ছা করে অন্তর্বাসের উল্লেখ করলো রাজশেখর বাবু।

প্রচন্ড লজ্জায় পড়ে গিয়ে ইতস্তত করে নন্দিনী জবাব দিলো "না না ঠিক আছে .. আমি এইভাবেই ঠিক আছি।"

"এইভাবে সারা রাত থাকলে কাল সকালে তোমার নিউমোনিয়া হওয়ার হাত থেকে কেউ আটকাতে পারবে না। শুধু শুধু জেদ না করে যেটা তোমার ভালোর জন্য বলছি সেটা করো। বাথরুমে ঢুকে ভালো করে ফ্রেশ হয়ে নাও। তোমার ভেজা জামা কাপড়গুলোর শুকোনোর ব্যবস্থা আমি করছি। আর হ্যাঁ, রাতে তো কিছু একটা পড়ে থাকতে হবে। সঙ্গে করে তো কিছুই আনোনি। আমার কাছেও বিশেষ কিছু নেই এই bath robe টা ছাড়া। এটা নিয়ে যাও তোমার কাজে লাগবে।" এই বলে নিজের কিট ব্যাগ থেকে সাদা রঙের সম্পূর্ণ টাওয়েলের একটা bath robe বের করে নন্দিনীর হাতে দিলো রাজাবাবু।

[Image: 2194639-HSC00001-7.jpg]

সারারাত এই ভেজা শাড়ী-ব্লাউজ পড়ে থাকলে ঠান্ডা লেগে জ্বর আসবে .. রাজশেখর বাবুর এই অকাট্য যুক্তির কাছে হার মেনে bath robe টি নিয়ে বাথরুমে ঢুকে গেলো নন্দিনী। বাথরুমের দরজা বন্ধ, কেউ তাকে দেখতে পাচ্ছে না, তবুও নিজের পরিধেয় বস্ত্রগুলি খুলতে খুলতে একটু আগে নিচের ডাইনিং হলে শোনা কথাগুলি এবং অট্টহাস্য পুনরায় কানে বেজে উঠলো নন্দিনীর। তার মনে হলো যেন সবার সামনেই তাকে বস্ত্র উন্মোচন করতে হচ্ছে, কয়েক জোড়া চোখ যেন তাকে গিলে খেতে আসছে। সে একটু বেশিই ভাবছে, সবকিছুই তার মনের ভুল, বাইরে বেরোলে রাস্তাঘাটে চলতে গেলে এরকম অনেক কথা শুনতে হয়, সবকিছু গায়ে মাখলে চলে না .. এইসব ভাবতে ভাবতে পরিধেয় সমস্ত বস্ত্র উন্মোচন করে সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে শাওয়ারের ঝর্ণাধারার নিচে দাঁড়ালো নন্দিনী। কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই তার শরীরের সঙ্গে সঙ্গে মনটাও ফ্রেশ হয়ে গেলো।

অনেকক্ষণ ধরে স্নান করে নিজের শরীর ও মনকে তরতাজা করার পর বাথরুমে রাখা টাওয়েলে গা মুছে bath robe টা পড়তে গিয়ে নন্দিনী দেখলো সেটি একেবারেই নতুন আগে কোনোদিন ব্যবহার করা হয়নি। সর্বোপরি এটি কোনো পুরুষ মানুষের বিশেষত বেশ বড়সড় চেহারার অধিকারী তার মামাশ্বশুরের হতেই পারে না। কারণ bath robe এর ঝুল তার হাঁটুর অনেক উপরে উঠে গিয়েছে এবং তার ঈষৎ ভারী চেহারা হওয়ার দরুন পোশাকটি তার গায়ে আঁটোসাঁটো হয়ে বসে আছে। bath robe টার সামনের দিকে কোনো বোতাম নেই (যেরকম হয়)। কোমরের দু'পাশে ঝুলতে থাকা দুটো ফিতে বা বেল্ট দিয়ে শক্ত করে বেঁধে শরীরের সামনের দিকের অংশ কোনোমতে ঢেকে নিলো নন্দিনী।

নন্দিনী ভেবে দেখলো এইরকম পোষাকে অন্তর্বাস ছাড়া কারোর সামনে গেলে সেটা সাংঘাতিক রকমের দৃষ্টিকটু এবং অশোভন হবে। বৃষ্টিতে তার সমস্ত পোশাক-আশাক এমনকি অন্তর্বাস পর্যন্ত ভিজে গিয়েছে। সর্বোপরি উর্ধাঙ্গের অন্তর্বাস সম্পূর্ণরূপে ভিজে যাওয়ার ফলে সেটি পড়া সম্ভবপর নয়। তবে সবকিছুর তুলনায় তার নিম্নাঙ্গের অন্তর্বাসটি অপেক্ষাকৃত অনেকটাই কম ভিজেছে। তাই সকালে পড়ে আসা তার কালো রঙের প্যান্টিটা bath robe এর নিচে পড়ে নিলো।

নন্দিনী বাথরুমে ঢোকার পরে রাজশেখর বাবু নিচে ম্যানেজার সঞ্জয়বাবুকে ফোন করে রাতের খাবারের  এবং তার সঙ্গে একটি নামি কোম্পানির হার্ড ড্রিঙ্কের অর্ডার দিয়ে দিলো। তার সঙ্গে আরো কয়েকটা ফোন করে নিলো। কিছুক্ষণের মধ্যেই খাবার এবং অর্ডার করা পানীয় আর তার সঙ্গে বরফ এবং কাঁচের  দুটি গ্লাস এসে গেলো। তবে পানীয়র বোতল এবং গ্লাস দুটো তৎক্ষণাৎ চাদরের নিচে লুকিয়ে ফেললো রাজাবাবু। তারপর প্যাকেট থেকে কাগজের প্লেটে খাবার ঢেলে নিয়ে যতটা দ্রুত সম্ভব রাতের খাবার সমাধা করলো রাজাবাবু।

এদিকে নন্দিনী তখনও বাথরুমে দাঁড়িয়ে ভেবে চলেছে এই পোশাকে তার বাইরে বেরোনো উচিত হবে কিনা। কিন্তু কাঁহাতক এইভাবে বাথরুমের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা যায়। এক সময় বাধ্য হয়ে কুণ্ঠিত চিত্তে বাথরুমের দরজা খুলে আস্তে আস্তে বেরিয়ে এলো নন্দিনী।

[Image: Screenshot-20211027-194217-1-1.jpg]

নন্দিনীকে এইরূপে দেখে নিজেকে সামলানো কঠিন হয়ে যাচ্ছিলো রাজাবাবুর পক্ষে। হাঁ করে হ্যাংলার মতো তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করছিলো তার ভাগ্নে বউয়ের অত্যন্ত ছোট সাইজের bath robe আবৃত আঁটোসাঁটো শরীরটির দিকে। তারপর নিজেকে সামলে নিয়ে নন্দিনীর দিকে তাকিয়ে বললো "একি বৌমা, তোমার ভিজে জামা কাপড়গুলো আনো নি? ঠিক আছে থাক আমি নিয়ে আসছি। খাবার এসে গেছে, তুমি বসে খেতে আরম্ভ করে দাও। আমি ততক্ষণ ফ্রেশ হয়ে নি।"

এই বলে নন্দিনীকে কোনরকম সুযোগ না দিয়েই বাথরুমে ঢুকে গেলো রাজাবাবু। তারপর বাথরুম থেকে ভেজা জামা কাপড়গুলো বের করে নিয়ে এসে ঘরের দরজা খুলে হাঁক দিলো "গোপাল" .. কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই একটি কালো, শীর্ণকায় ছেলে এসে উপস্থিত হলো। তার হাতে জামা কাপড়গুলো দিয়ে মুচকি হেসে বললো "এগুলো ড্রায়ার মেশিনে দিয়ে কাল সকালের মধ্যে শুকিয়ে এনে দিবি আর দেখিস বাবা এই সব জামাকাপড়ের সঙ্গে কোনো ছেড়খানি করিসনা যেন।"

"ছেড়খানি" শব্দ টা শুনে লজ্জায় নন্দিনীর কান লাল হয়ে গেলো। যদিও লজ্জায় রাঙা হওয়ার এখনো অনেক কিছু বাকি ছিলো।

দরজার ফাঁক দিয়ে নন্দিনীর দিকে লোলুপ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা গোপালকে বিদায় করে সশব্দে দরজা বন্ধ করে রাজাবাবু প্রশ্ন করলো "আচ্ছা বৌমা জামাকাপড়ের মধ্যে তোমার প্যান্টিটা দেখলাম না .. তুমি কি প্যান্টি পড়ো না .. নাকি আজকে পড়োনি?"  

তার মামাশ্বশুরের মুখে এই ধরনের উক্তিতে লজ্জায় অপমানে আরো সঙ্কুচিত হয়ে গেলো নন্দিনী। "হ্যাঁ .. প .. পড়ি .. ও .. ওটা সেরকম ভে .. ভেজেনি তো .. তাই .." অত্যন্ত মৃদুস্বরে মুখ দিয়ে শুধু এটুকুই বেরোলো তার।

"ওটা সেরকম ভেজেনি তাই তলায় প্যান্টি পড়ে আছো .. তাইতো? ঠিক আছে, তুমি খেতে শুরু করে দাও, আমার খাওয়া কমপ্লিট। ততক্ষনে আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।" এই বলে বাথরুমে ঢুকে গেলো রাজশেখর বাবু।

টিভিতে অনেক মডেল বা নায়িকাকে এই ধরনের পোশাক পড়তে দেখেছে। কিন্তু নিজেকে কোনোদিন পড়তে হবে সেটা স্বপ্নেও ভাবেনি তাও আবার একজন অপরিচিত পুরুষের সামনে। সেই নিয়ে তো মনে একটা অস্বস্তি ছিলোই, তার ওপর মামাশ্বশুরের মুখ থেকে এই ধরনের কথা শুনে লজ্জায় মাটির সঙ্গে মিশে যেতে ইচ্ছে করছিল নন্দিনীর। সে লক্ষ্য করলো খাটের উপর একটা জলচৌকি পাতা হয়েছে তার উপর দুটো খাবারের প্যাকেট রাখা আছে। প্যাকেট দুটো খুলে দেখলো একটাতে মিক্সড ফ্রাইড রাইস আর একটার মধ্যে ড্রাই চিলি চিকেন আছে। দেওয়াল ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো রাত ন'টা।

খাবারগুলো কাগজের প্লেটে ঢেলে নিয়ে খেতে আরম্ভ করল নন্দিনী। বেশ সুস্বাদু লাগলো খাবারগুলো তার। সেই মুহূর্তে মনে পড়লো বাড়িতে তো এখনো ফোন করে জানানো হয়নি .. ওরা নিশ্চয়ই খুব চিন্তা করছে - এই ভেবে প্রথমে শাশুড়ি মা'কে ফোন করলো নন্দিনী।

শাশুড়ির সঙ্গে কথা বলে নন্দিনী বুঝতে পারলো তাকে এর মধ্যে তার মামাশ্বশুর সবকিছু জানিয়ে দিয়েছে। অর্চিষ্মানের মা নন্দিনীকে বললেন চিন্তা না করতে তারা একটা রাত ঠিক ভালোভাবে কাটিয়ে নিতে পারবে। তার সঙ্গে জানতে চাইলো নন্দিনীরা রাজশেখর বাবুর সেই পরিচিত ব্যক্তির বাড়িতে উঠেছে তো! ঠোঁটের গোড়ায় এসে গেলেও হাজার চেষ্টা করেও নন্দিনী বলতে পারলো না তারা কোনো পরিচিত ব্যক্তির বাড়ি ওঠেনি .. তারা আসলে একটি হোটেলে উঠেছে। বেশিরভাগ টিপিকাল বাঙালি গৃহবধূদের এই ধরনের লজ্জা এবং সংকোচের ফায়দা তুলে নিয়ে যায় দুষ্টু লোকেরা। তারপর তার ছেলে বিট্টুর সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বলে তাকে অনেক আদর করে ফোন রেখে দিলো নন্দিনী।

স্বামিকে ফোন করতে যাবে সেই মুহূর্তে বাথরুমের দরজা খুলে বের হলো রাজাবাবু। নিজের মামাশ্বশুরের দিকে তাকিয়ে আঁতকে উঠলো নন্দিনী "এ কি .. আপনি এটা .. এই অবস্থায় বাইরে এলেন কেনো?"

শুধুমাত্র একটি মেরুন রঙের জাঙ্গিয়া পরিহিত রাজশেখর বাবু মুচকি হেসে উত্তর দিলো "কি করবো বলো .. তোমাকে তো আমার bath robe টা দিয়ে দিলাম। আরে বাবা আমারও তো সব জামাকাপড় ভিজে গেছে। তাহলে আমি আজ রাত্রে কি ল্যাংটো হয়ে থাকবো? তাই এই ভিআইপি ফ্রেঞ্চিটা পড়ে নিলাম।"

"তাই বলে .. তাই বলে .. এভাবে না না এটা কি করে সম্ভব!!" এটুকুই বলতে পারলে নন্দিনী।

"ধুর, ছাড়োতো এসব সেকেলে চিন্তাভাবনা। be a modern girl darling .. পোশাকে কি আসে যায়! আজকের রাতটা কাটানো নিয়ে কথা। by the way বাড়িতে নিশ্চয়ই ফোন করে কথা বলা হয়ে গেছে .. এখন কাকে ফোন করছিলে? আমার ভাগ্নে কে?" নন্দিনীর দিকে তাকিয়ে দৃঢ়ভাবে কথাগুলো বললেও রাজাবাবুর মনে একটা বিষয় নিয়ে সংশয় ছিলো। সে নন্দিনী এবং তার শ্বাশুড়ীকে নাকাবন্দির ফলে কলকাতা থেকে না বের হতে পারার গল্পটা বিশ্বাস করাতে পারলেও অর্চিষ্মানকে এই গল্প বললে সে এ কথা বিশ্বাস করবে না উল্টে তাকে সন্দেহ করবে। কারণ, নিউজ চ্যানেল খুললেই তো সবকিছু প্রমাণ হয়ে যাবে। তাই রাজাবাবু তার ভাগ্নেকে বলেছে কলকাতায় প্রচন্ড বৃষ্টি পড়ছে সেই জন্য গাড়ি ড্রাইভ করে চন্দননগর তারা যেতে পারলো না। এখানেই একজন পরিচিত পরিবারের বাড়িতে থেকে গেলো এবং এই ব্যাপারে অর্চিষ্মানের মায়ের মত আছে। এর সঙ্গে তার আকাট মূর্খ দিদি সুমিত্রা দেবীকে কথার জালে টুপি পরিয়ে convince করিয়েছে সে যেন তার ছেলেকে এইসব বন্ধের ব্যাপারে কিছু না বলে। কারণ, সে অনেক দূরে থাকে তাই দুশ্চিন্তা করবে।

কিন্তু নন্দিনীকে কি করে convince করাবে সে তো আর তার শাশুড়ির মতো মাথামোটা নয়। এইবার মোক্ষম চাল দিলো রাজাবাবু "ভালো কথা .. তোমার নতুন আশিক .. থুরি তোমাদের ল্যান্ডলর্ড আমার অনেক দিনের বন্ধু ভবেশ কুন্ডুর সঙ্গেও তোমাকে নিয়ে ফোনে কথা হলো একটু আগে।"

কথাটা শুনেই বুকটা ধ্বক করে উঠলো নন্দিনীর। হাত থেকে ফোনটা পড়ে গেলো .. তার স্বামীকে আর ফোন করা হলো না।

(ক্রমশ)

ভালো লাগলে লাইক এবং রেপু দিয়ে উৎসাহিত করবেন

[Image: Animation-resize-gif-f3b601eb23d95beeb4e...911ac0.gif]


Like Reply


Messages In This Thread
RE: নাগপাশ - the trap (চলছে) - by Bumba_1 - 30-10-2021, 09:29 PM



Users browsing this thread: 34 Guest(s)