26-04-2019, 08:24 PM
[১৭]
প্রচণ্ড ভীড়। এখন ওসব ভাবলে হবেনা। পাদানিতে পা রাখতে কণ্ডাকটর কোমরে হাত দিয়ে তুলে নিল। ভীড় ঠেলতে ঠেলতে ভেতরে ঢুকে কোন মতে রত্নাকর একটু জায়গা করে নিল। স্যাণ্ডির মধ্যে তাচ্ছিল্যের ভাব, এখন মনে হচ্ছে সেটা দেখার ভুল। মেয়েটি চমৎকার, বুদ্ধিমতী এবং শার্প মেমরি। হয়তো ওর মুখে ইংরেজি শুনে নিজের হীনমন্যতা বশত ওকে মনে হয়েছে ডেপো। বাইরে থেকে বুঝতে গিয়ে রত্নাকর আবার ধাক্কা খেলো। বাস তখনও সল্টলেকের সীমানা পার হয়নি হঠাৎ নজরে পড়ে তার একজনের পরে দাঁড়িয়ে একজন মহিলা বাসের রড ধরে পাছা দিয়ে পিছনে দাঁড়ানো ভদ্রলোকের তলপেটের নীচে চাপ দিচ্ছে। রত্নাকর দেখল মহিলার উগ্র সাজ, মুখে লিপস্টিক। পিছনে দাঁড়ানো ভদ্রলোক এপাশ ওপাশ দেখে সরে যাবার চেষ্টা করে। এত ভীড় সরার উপায় নেই। মহিলাকে দেখে মনে হয়না গেরস্থ পরিবারের। যতসব আমারই চোখে পড়ে? রত্নাকর ভাবে মনে মনে। লোকটি এতক্ষন এড়াবার চেষ্টা করছিল এবার নিজেই উরু সন্ধি দিয়ে চাপ দিতে থাকে। এত লোকের মধ্যে এসব কি হচ্ছে? এদের কি লজ্জা শরম থাকতে নেই? রত্নাকরের চোখ তবু ওদের দিকে চলে যাচ্ছে। কিছুই হয়নি এমনভাব করে দাঁড়িয়ে থাকে। লোকটির সাহস বাড়তে থাকে। এদিক ওদিক দেখল কেউ দেখছে কিনা? রত্নাকর নজর সরিয়ে নিল। উমাদার কথা ভেবে যে টেনশন হচ্ছিল সেসব ভুলে গেছে। লোকটি হাত এগিয়ে দিয়ে পাছায় চাপ দিল। মহিলা কি বুঝতে পারছে না? মনে হচ্ছে মহিলাটি ঠোট টিপে হাসছে।
বাস সল্ট লেকের সীমানা পেরিয়ে এপিসি রোডে এসে পড়েছে। একী কাণ্ড! লোকটি জিপার খুলে ফেলেছে। দু-পাশে তাকিয়ে ধোনটা বের করে পাছায় লাগিয়েছে। কোমর বেকিয়ে চাপছে মনে হল। মহিলা শক্ত করে বাসের রড ধরে শরীরের ভারসাম্য রাখার চেষ্টা করে। রত্নাকর ভাবে কাপড়ের অন্তরাল ভেদ করে ঢুকবে কি করে? শেষে কি কাপড়েই? শ্যামবাজার ছাড়িয়ে বাস টালার দিকে। উত্তেজিত হলে মানুষের স্থানকাল জ্ঞান থাকেনা।
মহিলা ঝট করে ঘুরে কড়া ধমক দিল, একি হচ্ছে? বাড়ীতে মা-বোন নেই? লোকটী থতমত, দ্রুত ধোনটা ভিতরে পুরে নিল। টালায় বাস থামতে মহিলাটি অন্যান্য যাত্রীদের সঙ্গে নেমে গেল। একজন যুবক ভীড় থেকে ফুট কাটে কাকু গরম হয়ে গেছে। রত্নাকর মহিলার আচরণে অবাক। এতক্ষন কি কিছুই বুঝতে পারেনি? কথায় বলে, স্ত্রীয়াশ্চরিত্রম দেবা জানতি কুত মনুষ্যা। ভীড়ের চাপ অনেকটা কমেছে। কণ্ডাকটর এগিয়ে এসে হাত বাড়ায়। রত্নাকর পকেট থেকে পয়সা বের করে দিল। লোকটির প্রতি এখন রাগ না মায়া হচ্ছে। কন্ডাকটর লোকটির কাছে ভাড়া চাইতে পিছনে হাত দিয়ে প্রায় কেদে ফেলে বলল, আমার পার্স? আমার পার্স কই?
একজন পিছনে দাঁড়িয়ে থাকা লোক বলল, একী আপনার পকেট ঝুলছে পাছা বেরিয়ে গেছে আপনি টের পেলেন না?
লোকটী লজ্জায় পাছা হাত দিয়ে আড়াল করা চেষ্টা করে। একজন বলল, জামাটা প্যান্ট থেকে বের করে দিন।
কত টাকা ছিল?
তিন হাজারে উপর হবে।
কনডাকটরের পয়সা চাইতে ভরসা হয়না।
রত্নাকরে গন্তব্য আসতে নেমে গেল। লোকটির এত টাকা খোয়া গেল, তবু মনে মনে হাসে রত্নাকর। রহস্যটা তার অজানা নয়। সামান্য ঠেকানোর জন্য যে মূল্য দিতে হল, তা একটু বেশি বলেই মনে হল। মহিলার সঙ্গে আরও লোক ছিল নিশ্চিত রত্নাকর। উত্তেজনার বদলে শরীর মন লোকটির বিষাদে ছেয়ে আছে, মনে মনে হয়তো ধিক্কার দিচ্ছে নিজেকে।
জনার কথা মনে পড়তে রাস্তা বদল করে। কে জানে বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকতে পারে। দেরী হয়ে গেছে তবু এই ঘুর পথ বেছে নিতে হল। বাজারের কাছে তনিমার সঙ্গে দেখা। সুদিপের ফিঁয়াসে তনিমা।
তুমি যাওনি? আজতো হেভি খাওয়া দাওয়া? তনিমা জিজ্ঞেস করল।
সদীপ চলে গেছে?
আহা আমি কি করে বলব, কে গেছে কে যায়নি? তনিমার গলায় উষ্মা।
রত্নাকর দ্রুত হাটতে থাকে। তনিমার মনে পড়ল সুদীপ বলেছিল আধ-হাত লম্বা। কি সব বলেনা, অত বড় হয় নাকি? সুদীপ হলে বলতো, একটু দেখাবে? একথা রতিকে বলা যায়না। সুদীপ আর তার মধ্যে কোনো রাখঢাক নেই, সব খোলা পাতা। রতির কথা ভেবে খারাপ লাগে। ওদের বন্ধুদের মধ্যে রতির অবস্থাই সব থেকে খারাপ। সুদীপ বলছিল সোমলতার সঙ্গে কেটে গেছে। সোমলতা ফাটুস নয় কেমন যেন।
রতির সঙ্গে সত্যিই কি সোমার ছিল? দুজনকে অবশ্য কোনোদিন একসঙ্গে দেখেনি।
তনিমা ঘড়ি দেখল, কতক্ষন দাঁড়িয়ে আচ্ছে, পাত্তা নেই। ভাল্লাগে না।
সন্ধ্যেবেলা লুচি তরকারি চা দিয়ে চলে গেছে মনীষা। দরজা বন্ধ করে টিভি দেখছে কালিনাথ। পাশের ঘরে চলছে ভুতের নেত্য। কালিনাথ মুখে যতই বিরক্তি প্রকাশ করুক মনীষার মত বউ পেয়ে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করে। অফিস যাওয়া ছাড়া কিছুই করেনা, মনীষা আর তার ঠাকুর-পোই সবদিক সামলায়। উমাটা চাকরি পাওয়ায় ধকল আরও বেড়েছে অথচ ব্যবহারে সামান্য বিরক্তি নেই। অবাক লাগে তার ভাইটাকে কেড়ে নিয়ে কেমন নিজের ভাই করে নিয়েছে।
সবাই লুচি তরকারী নিয়ে বসে গেছে। পাশে ক্যারামবোর্ড হয়তো খেলা চলছিল। গান বাজছে। রতি ঢুকতেই বঙ্কা বলল, এইতো রতি, ঠিক সময়ে এসে গেছে। বৌদি তোর খোজ করছিল।
রত্নাকর রান্না ঘরে উকি দিয়ে দেখল উমাদাও সেখানে। জিজ্ঞেস করল, বৌদি তুমি খুজছিলে?
হ্যা আয় তুই আমাকে সাহায্য করবি। ঠাকুর-পো তোমার ছুটি।
বৌদি রতি একেবারে আনাড়ী, ও পারবে না। উমাদা বলল।
কে নাড়ি আর কে আনাড়ি আমি জানি। তুমি যাও।
উমানাথ বেরিয়ে যেতে রত্নাকর বলল, বৌদি উমাদা ভুল বলেনি।
আমি তোমার ভুল ভেঙ্গে দিচ্ছি। আগে খেয়ে নেও। মনীষা লুচির প্লেট এগিয়ে দিল।
খুব ক্ষিধে পেয়েছে, প্লেট হাতে পেয়ে রত্নাকর খেতে লাগল।
ছাত্রী কেমন মনে হল? মনীষা জিজ্ঞেস করে।
বৌদি আমি আবার ঠকলাম। এক পলক দেখেই ওকে বলেছিলাম ডেপো।
মনীষা মুখ টিপে হাসে। ভাল লাগে রতির সঙ্গে কথা বলতে, জিজ্ঞেস করে, এখন কেমন মনে হচ্ছে?
এখনই বলবো?
সমস্যা কি?
যদি আবার পরে মত বদলাতে হয়?
বদলাবে। সব কিছু বদলাচ্ছে প্রতিনিয়ত।
মেয়েটি খুব ইন্টেলিজেণ্ট। বেশ সংবেদনশীল, আজকালকার মেয়েদের মত নয়।
তুমি আবার ভুল করলে। এক-আধজনকে দেখে সবাইকে দাগা মেরে দেওয়া কি ঠিক?
স্যরি বৌদি, মুখ ফসকে বেরিয়ে গেছে। আসলে আসার পথে তনিমার সঙ্গে দেখা হল। মেয়েটাকে আমার খুব হালকা প্রকৃতি মনে হয়।
খাওয়া হয়েছে? এবার এই চিংড়ি মাছগুলোর মাথা ছাড়িয়ে দেও। মনীষা একবাটি মাছ এগিয়ে দিল।
রত্নাকর অসহায় বোধ করে। দ্বিধা জড়িত গলায় বলল, বৌদি আগে আমি কখনো মাছ ছাড়াইনি।
মনীষা হেসে ফেলে। রতি বলল, আসলে কি জানো আমার মা এই অবস্থা করেছে। কোনদিন একটা কাজ করতে দেবে না। খালি বলে পারবি না, তুই হাত দিলে আর খেতে হবেনা।
ঠিক আছে আমি তোমাকে শিখিয়ে দেবো। মনীষা দেখিয়ে দেয় কিভাবে চিংড়ি মাছের খোলা ছাড়াতে হয়।
মাটিতে থেবড়ে বসে রত্নাকর সযত্নে খোলা ছাড়াতে লাগল। মনীষা লক্ষ্য করে গভীর মনোযোগ দিয়ে একটার পর একটা খোসা ছাড়াচ্ছে রতি। ঠাকুর-পো সব কিছু করে হড়বড়িয়ে রতি ধীরে সুস্থে। মনীষা বলল, তোমাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করব?
এ আবার জিজ্ঞেস করার কি আছে?
তুমি তো অনেক মেয়ে দেখেছো? মেয়েদের সম্পর্কে তোমার কি মনে হয়?
রত্নাকর হেসে বলল, তোমার সামনে বলবো?
ভুলে যাও আমি একজন মেয়ে, একজন কৌতুহলী শ্রোতা মাত্র।
ভাল বলেছো। আমরা একজন মহিলার মধ্যে কেবল মহিলাকেই সনাক্ত করি মানুষটা আড়ালে থেকে যায়। এটাই বড় বিভ্রম।
মনীষা ইচ্ছে করেই রতিকে রান্না ঘরে ডেকেছে, ওর সঙ্গে কথা বলতে ভাল লাগে। এটাই ওর বড় গুণ, বলা যায় সম্মোহন।
বৌদি আমরা যা জানি বই পড়ে অন্যের কাছে শুনে আর স্বচক্ষে দেখে তারপর উপলব্ধির টেবিলে ফেলে বিশ্লেষণ করে আয়ত্ত করি। তুমি বিরক্ত হচ্ছো নাতো?
মনীষা হাসল। তারপর বলল, সারারাত ধরে আমি শুনতে পারি কিন্তু মুস্কিল হচ্ছে ও ঘরে একদল বসে আছে তাদের কথা ভুলে গেলে চলবে না।
আচ্ছা সংক্ষেপে বলছি। এক জায়গায় তিনটে সাধন পথের কথা পড়েছিলাম। জ্ঞান কর্ম আর প্রেমের পথ। জ্ঞান কর্মের পথ ধীরে ধীরে, সেটা পুরুষের পথ। বিচার বিশ্লেষণ হিসেব করে তারা গ্রহণ করে। নারীর পথ প্রেমের পথ সেখানে ভাবাভাবির অবকাশ নেই। অনায়াসে ঝাপিয়ে পড়ে।
মনীষা জিজ্ঞেস করে, যেমন?
যেমন বিয়ের পর একটা পরিবেশ ছেড়ে অন্য পরিবেশে এসে শ্বশুর শাশুড়ি ভাসুর দেওর জা ননদনানা চরিত্রের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া কেবল মেয়েরাই পারে। এখানেই তাদের মহত্ব। বৌদি শিক্ষার উদ্দেশ্য কি? বইতে পড়েছিলাম, adjustment অর্থাৎ সঙ্গতি সাধন। মেয়েরা এই শিক্ষায় দক্ষতা নিয়েই জন্মায়। পুরুষ স্বার্থ প্রণোদিত হয়ে করে, নারী নিঃস্বার্থভাবে করে। আমার চোখে নারী অনেক অনেক বড়, পুরুষ কোনো দিন তার ধারে কাছে পৌছাতে পারবেনা।
মনীষা চিংড়ী মাছের বাটিটা তুলে নিয়ে দেখল সুন্দর করে ছাড়িয়েছে, ভাতের মধ্যে মিশিয়ে দিল। ভিনিগারে ভেজানো মাংস দেখিয়ে বলল, দেখো তো টিপে নরম হয়েছে কিনা?
রত্নাকর পরীক্ষা করে। মনীষা জিজ্ঞেস করল, আচ্ছা পরেশের বিধবা দিদি বাড়ী ছেড়ে পালিয়ে গেল। শুনেছি এখন নাকি খারাপ পথে চলে গেছে। তুমি কি বলবে?
রত্নাকরের চোখ ছলছল করে উঠল। ছবিদিকে চেনে রত্নাকর। বিয়েতেও গেছিল। বিয়ের বছর খানেক পর স্বামী বাইক দুর্ঘটনায় মারা যায়। শ্বশুরবাড়ীর লোকেরা বলল, অলক্ষুণে বউ। টিকতে না পেরে বাপের বাড়ী ফিরে আসে। পরেশদা নরেশদার তখন বিয়ে হয়ে গেছে। মাসীমাও বেচে নেই। মেশোমশায় নিজে সংসারে গলগ্রহ। দু-তিনমাস পরেই ছবিদি কোথায় যে হারিয়ে গেল, কেউ খোজ করনি।
বৌদি তুমি বললে বাড়ী ছেড়ে পালিয়ে গেল। তুমি হয়তো ভেবে বলোনি কিন্তু তুমি কি নিশ্চিত পালিয়ে গেল না পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল ছবিদি? আমরা যাদের খারাপ মেয়ে ভাবি সেটা তার বাইরের পরিচয় ভাল করে খোজ নিলে দেখা যাবে সব কিছু স্বাভাবিক মেনে নিয়ে প্রতিনিয়ত কত ত্যাগ স্বীকার করে চলেছে। আমার মাকে দেখে বুঝতে পারি, দারিদ্র্য অভাব নয় মাকে কষ্ট দেয় একমাত্র চিন্তা কবে তার বোকা ছেলেটা নিজের পায়ে দাড়াবে, যখন থাকবে না কে তাকে দেখবে। ফুপিয়ে কেদে ফেলে রত্নাকর। মনীষা বুকে জড়িয়ে ধরে বলল, ছি বোকা ছেলে কাদেনা। কেউ দেখলে কি বলবে।
বৌদি পেটে ছুচো দৌড় শুরু করেছে। অন্য ঘর থেকে আওয়াজ এল।
মনীষা চোখের জলে ভেজা বুক আচলে ঢেকে বলল, আর দশ মিনিট।
রত্নাকর লাজুক মুখে দাঁড়িয়ে থাকে। মনীষা বলল, এবার যাও বন্ধুদের সঙ্গে গল্প করো।
রত্নাকর এঘরে এসে দেখল সুদীপ নেই। বঙ্কা জিজ্ঞেস করে, তোর হাত পড়েছে ভাবছি আজ না অভুক্ত থাকতে হয়।
সুদীপকে দেখছিনা।
আমি কিছু বলব না। বঙ্কা বলল।
এতরাত অবধি তনিমাকে আটকে রেখেছে। এদের কোনো মাত্রাজ্ঞান নেই। সুদীপ ঢুকেই জিজ্ঞেস করল, ঠিক সময় এসে গেছি?
বঙ্কা বলল, আর দশ মিনিট।
উমাদা শুয়ে শুয়ে গান শুনছিল কাছে যেতে জিজ্ঞেস করল, সল্ট লেকের কি খবর?
মোটামুটী।
টিকবে মনে হয়?
আমি চেষ্টার কসুর করছিনা। আজ বাসে একটা ঘটনা ঘটেছে।
উমানাথ চোখ তুলে তাকাতে রত্নাকর বলল, অভিনব কায়দায় পকেট মারি।
মনীষা বলল, জায়গা করে বসে যাও। প্লেটে সাজিয়ে খাবার নিয়ে গেল কালিনাথের ঘরে। ইতিমধ্যে মেঝেতে শতরঞ্চি পেতে জায়গা তৈরী। বঙ্কা বলল, দারুণ গন্ধ ছেড়েছে মাইরি।
তুই যে বললি রতি হাত দিয়েছে আজ সবাইকে উপোস করতে হবে?
মনীষা পরিবেশন করতে লাগল। রত্নাকর বলল, বৌদি হেল্প করবো?
দরকার নেই মোটে তো দশজন। তুমি বসে যাও।
উমাদা দারুণ করেছো। সুদীপ বলল।
কথা বলতে বলতে খাওয়া চলতে থাকে। বাড়ী ফেরার সময় মন খারাপ, কাল থেকে কলেজ খুলে যাবে।
প্রচণ্ড ভীড়। এখন ওসব ভাবলে হবেনা। পাদানিতে পা রাখতে কণ্ডাকটর কোমরে হাত দিয়ে তুলে নিল। ভীড় ঠেলতে ঠেলতে ভেতরে ঢুকে কোন মতে রত্নাকর একটু জায়গা করে নিল। স্যাণ্ডির মধ্যে তাচ্ছিল্যের ভাব, এখন মনে হচ্ছে সেটা দেখার ভুল। মেয়েটি চমৎকার, বুদ্ধিমতী এবং শার্প মেমরি। হয়তো ওর মুখে ইংরেজি শুনে নিজের হীনমন্যতা বশত ওকে মনে হয়েছে ডেপো। বাইরে থেকে বুঝতে গিয়ে রত্নাকর আবার ধাক্কা খেলো। বাস তখনও সল্টলেকের সীমানা পার হয়নি হঠাৎ নজরে পড়ে তার একজনের পরে দাঁড়িয়ে একজন মহিলা বাসের রড ধরে পাছা দিয়ে পিছনে দাঁড়ানো ভদ্রলোকের তলপেটের নীচে চাপ দিচ্ছে। রত্নাকর দেখল মহিলার উগ্র সাজ, মুখে লিপস্টিক। পিছনে দাঁড়ানো ভদ্রলোক এপাশ ওপাশ দেখে সরে যাবার চেষ্টা করে। এত ভীড় সরার উপায় নেই। মহিলাকে দেখে মনে হয়না গেরস্থ পরিবারের। যতসব আমারই চোখে পড়ে? রত্নাকর ভাবে মনে মনে। লোকটি এতক্ষন এড়াবার চেষ্টা করছিল এবার নিজেই উরু সন্ধি দিয়ে চাপ দিতে থাকে। এত লোকের মধ্যে এসব কি হচ্ছে? এদের কি লজ্জা শরম থাকতে নেই? রত্নাকরের চোখ তবু ওদের দিকে চলে যাচ্ছে। কিছুই হয়নি এমনভাব করে দাঁড়িয়ে থাকে। লোকটির সাহস বাড়তে থাকে। এদিক ওদিক দেখল কেউ দেখছে কিনা? রত্নাকর নজর সরিয়ে নিল। উমাদার কথা ভেবে যে টেনশন হচ্ছিল সেসব ভুলে গেছে। লোকটি হাত এগিয়ে দিয়ে পাছায় চাপ দিল। মহিলা কি বুঝতে পারছে না? মনে হচ্ছে মহিলাটি ঠোট টিপে হাসছে।
বাস সল্ট লেকের সীমানা পেরিয়ে এপিসি রোডে এসে পড়েছে। একী কাণ্ড! লোকটি জিপার খুলে ফেলেছে। দু-পাশে তাকিয়ে ধোনটা বের করে পাছায় লাগিয়েছে। কোমর বেকিয়ে চাপছে মনে হল। মহিলা শক্ত করে বাসের রড ধরে শরীরের ভারসাম্য রাখার চেষ্টা করে। রত্নাকর ভাবে কাপড়ের অন্তরাল ভেদ করে ঢুকবে কি করে? শেষে কি কাপড়েই? শ্যামবাজার ছাড়িয়ে বাস টালার দিকে। উত্তেজিত হলে মানুষের স্থানকাল জ্ঞান থাকেনা।
মহিলা ঝট করে ঘুরে কড়া ধমক দিল, একি হচ্ছে? বাড়ীতে মা-বোন নেই? লোকটী থতমত, দ্রুত ধোনটা ভিতরে পুরে নিল। টালায় বাস থামতে মহিলাটি অন্যান্য যাত্রীদের সঙ্গে নেমে গেল। একজন যুবক ভীড় থেকে ফুট কাটে কাকু গরম হয়ে গেছে। রত্নাকর মহিলার আচরণে অবাক। এতক্ষন কি কিছুই বুঝতে পারেনি? কথায় বলে, স্ত্রীয়াশ্চরিত্রম দেবা জানতি কুত মনুষ্যা। ভীড়ের চাপ অনেকটা কমেছে। কণ্ডাকটর এগিয়ে এসে হাত বাড়ায়। রত্নাকর পকেট থেকে পয়সা বের করে দিল। লোকটির প্রতি এখন রাগ না মায়া হচ্ছে। কন্ডাকটর লোকটির কাছে ভাড়া চাইতে পিছনে হাত দিয়ে প্রায় কেদে ফেলে বলল, আমার পার্স? আমার পার্স কই?
একজন পিছনে দাঁড়িয়ে থাকা লোক বলল, একী আপনার পকেট ঝুলছে পাছা বেরিয়ে গেছে আপনি টের পেলেন না?
লোকটী লজ্জায় পাছা হাত দিয়ে আড়াল করা চেষ্টা করে। একজন বলল, জামাটা প্যান্ট থেকে বের করে দিন।
কত টাকা ছিল?
তিন হাজারে উপর হবে।
কনডাকটরের পয়সা চাইতে ভরসা হয়না।
রত্নাকরে গন্তব্য আসতে নেমে গেল। লোকটির এত টাকা খোয়া গেল, তবু মনে মনে হাসে রত্নাকর। রহস্যটা তার অজানা নয়। সামান্য ঠেকানোর জন্য যে মূল্য দিতে হল, তা একটু বেশি বলেই মনে হল। মহিলার সঙ্গে আরও লোক ছিল নিশ্চিত রত্নাকর। উত্তেজনার বদলে শরীর মন লোকটির বিষাদে ছেয়ে আছে, মনে মনে হয়তো ধিক্কার দিচ্ছে নিজেকে।
জনার কথা মনে পড়তে রাস্তা বদল করে। কে জানে বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকতে পারে। দেরী হয়ে গেছে তবু এই ঘুর পথ বেছে নিতে হল। বাজারের কাছে তনিমার সঙ্গে দেখা। সুদিপের ফিঁয়াসে তনিমা।
তুমি যাওনি? আজতো হেভি খাওয়া দাওয়া? তনিমা জিজ্ঞেস করল।
সদীপ চলে গেছে?
আহা আমি কি করে বলব, কে গেছে কে যায়নি? তনিমার গলায় উষ্মা।
রত্নাকর দ্রুত হাটতে থাকে। তনিমার মনে পড়ল সুদীপ বলেছিল আধ-হাত লম্বা। কি সব বলেনা, অত বড় হয় নাকি? সুদীপ হলে বলতো, একটু দেখাবে? একথা রতিকে বলা যায়না। সুদীপ আর তার মধ্যে কোনো রাখঢাক নেই, সব খোলা পাতা। রতির কথা ভেবে খারাপ লাগে। ওদের বন্ধুদের মধ্যে রতির অবস্থাই সব থেকে খারাপ। সুদীপ বলছিল সোমলতার সঙ্গে কেটে গেছে। সোমলতা ফাটুস নয় কেমন যেন।
রতির সঙ্গে সত্যিই কি সোমার ছিল? দুজনকে অবশ্য কোনোদিন একসঙ্গে দেখেনি।
তনিমা ঘড়ি দেখল, কতক্ষন দাঁড়িয়ে আচ্ছে, পাত্তা নেই। ভাল্লাগে না।
সন্ধ্যেবেলা লুচি তরকারি চা দিয়ে চলে গেছে মনীষা। দরজা বন্ধ করে টিভি দেখছে কালিনাথ। পাশের ঘরে চলছে ভুতের নেত্য। কালিনাথ মুখে যতই বিরক্তি প্রকাশ করুক মনীষার মত বউ পেয়ে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করে। অফিস যাওয়া ছাড়া কিছুই করেনা, মনীষা আর তার ঠাকুর-পোই সবদিক সামলায়। উমাটা চাকরি পাওয়ায় ধকল আরও বেড়েছে অথচ ব্যবহারে সামান্য বিরক্তি নেই। অবাক লাগে তার ভাইটাকে কেড়ে নিয়ে কেমন নিজের ভাই করে নিয়েছে।
সবাই লুচি তরকারী নিয়ে বসে গেছে। পাশে ক্যারামবোর্ড হয়তো খেলা চলছিল। গান বাজছে। রতি ঢুকতেই বঙ্কা বলল, এইতো রতি, ঠিক সময়ে এসে গেছে। বৌদি তোর খোজ করছিল।
রত্নাকর রান্না ঘরে উকি দিয়ে দেখল উমাদাও সেখানে। জিজ্ঞেস করল, বৌদি তুমি খুজছিলে?
হ্যা আয় তুই আমাকে সাহায্য করবি। ঠাকুর-পো তোমার ছুটি।
বৌদি রতি একেবারে আনাড়ী, ও পারবে না। উমাদা বলল।
কে নাড়ি আর কে আনাড়ি আমি জানি। তুমি যাও।
উমানাথ বেরিয়ে যেতে রত্নাকর বলল, বৌদি উমাদা ভুল বলেনি।
আমি তোমার ভুল ভেঙ্গে দিচ্ছি। আগে খেয়ে নেও। মনীষা লুচির প্লেট এগিয়ে দিল।
খুব ক্ষিধে পেয়েছে, প্লেট হাতে পেয়ে রত্নাকর খেতে লাগল।
ছাত্রী কেমন মনে হল? মনীষা জিজ্ঞেস করে।
বৌদি আমি আবার ঠকলাম। এক পলক দেখেই ওকে বলেছিলাম ডেপো।
মনীষা মুখ টিপে হাসে। ভাল লাগে রতির সঙ্গে কথা বলতে, জিজ্ঞেস করে, এখন কেমন মনে হচ্ছে?
এখনই বলবো?
সমস্যা কি?
যদি আবার পরে মত বদলাতে হয়?
বদলাবে। সব কিছু বদলাচ্ছে প্রতিনিয়ত।
মেয়েটি খুব ইন্টেলিজেণ্ট। বেশ সংবেদনশীল, আজকালকার মেয়েদের মত নয়।
তুমি আবার ভুল করলে। এক-আধজনকে দেখে সবাইকে দাগা মেরে দেওয়া কি ঠিক?
স্যরি বৌদি, মুখ ফসকে বেরিয়ে গেছে। আসলে আসার পথে তনিমার সঙ্গে দেখা হল। মেয়েটাকে আমার খুব হালকা প্রকৃতি মনে হয়।
খাওয়া হয়েছে? এবার এই চিংড়ি মাছগুলোর মাথা ছাড়িয়ে দেও। মনীষা একবাটি মাছ এগিয়ে দিল।
রত্নাকর অসহায় বোধ করে। দ্বিধা জড়িত গলায় বলল, বৌদি আগে আমি কখনো মাছ ছাড়াইনি।
মনীষা হেসে ফেলে। রতি বলল, আসলে কি জানো আমার মা এই অবস্থা করেছে। কোনদিন একটা কাজ করতে দেবে না। খালি বলে পারবি না, তুই হাত দিলে আর খেতে হবেনা।
ঠিক আছে আমি তোমাকে শিখিয়ে দেবো। মনীষা দেখিয়ে দেয় কিভাবে চিংড়ি মাছের খোলা ছাড়াতে হয়।
মাটিতে থেবড়ে বসে রত্নাকর সযত্নে খোলা ছাড়াতে লাগল। মনীষা লক্ষ্য করে গভীর মনোযোগ দিয়ে একটার পর একটা খোসা ছাড়াচ্ছে রতি। ঠাকুর-পো সব কিছু করে হড়বড়িয়ে রতি ধীরে সুস্থে। মনীষা বলল, তোমাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করব?
এ আবার জিজ্ঞেস করার কি আছে?
তুমি তো অনেক মেয়ে দেখেছো? মেয়েদের সম্পর্কে তোমার কি মনে হয়?
রত্নাকর হেসে বলল, তোমার সামনে বলবো?
ভুলে যাও আমি একজন মেয়ে, একজন কৌতুহলী শ্রোতা মাত্র।
ভাল বলেছো। আমরা একজন মহিলার মধ্যে কেবল মহিলাকেই সনাক্ত করি মানুষটা আড়ালে থেকে যায়। এটাই বড় বিভ্রম।
মনীষা ইচ্ছে করেই রতিকে রান্না ঘরে ডেকেছে, ওর সঙ্গে কথা বলতে ভাল লাগে। এটাই ওর বড় গুণ, বলা যায় সম্মোহন।
বৌদি আমরা যা জানি বই পড়ে অন্যের কাছে শুনে আর স্বচক্ষে দেখে তারপর উপলব্ধির টেবিলে ফেলে বিশ্লেষণ করে আয়ত্ত করি। তুমি বিরক্ত হচ্ছো নাতো?
মনীষা হাসল। তারপর বলল, সারারাত ধরে আমি শুনতে পারি কিন্তু মুস্কিল হচ্ছে ও ঘরে একদল বসে আছে তাদের কথা ভুলে গেলে চলবে না।
আচ্ছা সংক্ষেপে বলছি। এক জায়গায় তিনটে সাধন পথের কথা পড়েছিলাম। জ্ঞান কর্ম আর প্রেমের পথ। জ্ঞান কর্মের পথ ধীরে ধীরে, সেটা পুরুষের পথ। বিচার বিশ্লেষণ হিসেব করে তারা গ্রহণ করে। নারীর পথ প্রেমের পথ সেখানে ভাবাভাবির অবকাশ নেই। অনায়াসে ঝাপিয়ে পড়ে।
মনীষা জিজ্ঞেস করে, যেমন?
যেমন বিয়ের পর একটা পরিবেশ ছেড়ে অন্য পরিবেশে এসে শ্বশুর শাশুড়ি ভাসুর দেওর জা ননদনানা চরিত্রের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া কেবল মেয়েরাই পারে। এখানেই তাদের মহত্ব। বৌদি শিক্ষার উদ্দেশ্য কি? বইতে পড়েছিলাম, adjustment অর্থাৎ সঙ্গতি সাধন। মেয়েরা এই শিক্ষায় দক্ষতা নিয়েই জন্মায়। পুরুষ স্বার্থ প্রণোদিত হয়ে করে, নারী নিঃস্বার্থভাবে করে। আমার চোখে নারী অনেক অনেক বড়, পুরুষ কোনো দিন তার ধারে কাছে পৌছাতে পারবেনা।
মনীষা চিংড়ী মাছের বাটিটা তুলে নিয়ে দেখল সুন্দর করে ছাড়িয়েছে, ভাতের মধ্যে মিশিয়ে দিল। ভিনিগারে ভেজানো মাংস দেখিয়ে বলল, দেখো তো টিপে নরম হয়েছে কিনা?
রত্নাকর পরীক্ষা করে। মনীষা জিজ্ঞেস করল, আচ্ছা পরেশের বিধবা দিদি বাড়ী ছেড়ে পালিয়ে গেল। শুনেছি এখন নাকি খারাপ পথে চলে গেছে। তুমি কি বলবে?
রত্নাকরের চোখ ছলছল করে উঠল। ছবিদিকে চেনে রত্নাকর। বিয়েতেও গেছিল। বিয়ের বছর খানেক পর স্বামী বাইক দুর্ঘটনায় মারা যায়। শ্বশুরবাড়ীর লোকেরা বলল, অলক্ষুণে বউ। টিকতে না পেরে বাপের বাড়ী ফিরে আসে। পরেশদা নরেশদার তখন বিয়ে হয়ে গেছে। মাসীমাও বেচে নেই। মেশোমশায় নিজে সংসারে গলগ্রহ। দু-তিনমাস পরেই ছবিদি কোথায় যে হারিয়ে গেল, কেউ খোজ করনি।
বৌদি তুমি বললে বাড়ী ছেড়ে পালিয়ে গেল। তুমি হয়তো ভেবে বলোনি কিন্তু তুমি কি নিশ্চিত পালিয়ে গেল না পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল ছবিদি? আমরা যাদের খারাপ মেয়ে ভাবি সেটা তার বাইরের পরিচয় ভাল করে খোজ নিলে দেখা যাবে সব কিছু স্বাভাবিক মেনে নিয়ে প্রতিনিয়ত কত ত্যাগ স্বীকার করে চলেছে। আমার মাকে দেখে বুঝতে পারি, দারিদ্র্য অভাব নয় মাকে কষ্ট দেয় একমাত্র চিন্তা কবে তার বোকা ছেলেটা নিজের পায়ে দাড়াবে, যখন থাকবে না কে তাকে দেখবে। ফুপিয়ে কেদে ফেলে রত্নাকর। মনীষা বুকে জড়িয়ে ধরে বলল, ছি বোকা ছেলে কাদেনা। কেউ দেখলে কি বলবে।
বৌদি পেটে ছুচো দৌড় শুরু করেছে। অন্য ঘর থেকে আওয়াজ এল।
মনীষা চোখের জলে ভেজা বুক আচলে ঢেকে বলল, আর দশ মিনিট।
রত্নাকর লাজুক মুখে দাঁড়িয়ে থাকে। মনীষা বলল, এবার যাও বন্ধুদের সঙ্গে গল্প করো।
রত্নাকর এঘরে এসে দেখল সুদীপ নেই। বঙ্কা জিজ্ঞেস করে, তোর হাত পড়েছে ভাবছি আজ না অভুক্ত থাকতে হয়।
সুদীপকে দেখছিনা।
আমি কিছু বলব না। বঙ্কা বলল।
এতরাত অবধি তনিমাকে আটকে রেখেছে। এদের কোনো মাত্রাজ্ঞান নেই। সুদীপ ঢুকেই জিজ্ঞেস করল, ঠিক সময় এসে গেছি?
বঙ্কা বলল, আর দশ মিনিট।
উমাদা শুয়ে শুয়ে গান শুনছিল কাছে যেতে জিজ্ঞেস করল, সল্ট লেকের কি খবর?
মোটামুটী।
টিকবে মনে হয়?
আমি চেষ্টার কসুর করছিনা। আজ বাসে একটা ঘটনা ঘটেছে।
উমানাথ চোখ তুলে তাকাতে রত্নাকর বলল, অভিনব কায়দায় পকেট মারি।
মনীষা বলল, জায়গা করে বসে যাও। প্লেটে সাজিয়ে খাবার নিয়ে গেল কালিনাথের ঘরে। ইতিমধ্যে মেঝেতে শতরঞ্চি পেতে জায়গা তৈরী। বঙ্কা বলল, দারুণ গন্ধ ছেড়েছে মাইরি।
তুই যে বললি রতি হাত দিয়েছে আজ সবাইকে উপোস করতে হবে?
মনীষা পরিবেশন করতে লাগল। রত্নাকর বলল, বৌদি হেল্প করবো?
দরকার নেই মোটে তো দশজন। তুমি বসে যাও।
উমাদা দারুণ করেছো। সুদীপ বলল।
কথা বলতে বলতে খাওয়া চলতে থাকে। বাড়ী ফেরার সময় মন খারাপ, কাল থেকে কলেজ খুলে যাবে।
All the contents posted by me have been downloaded from the internet. Credit goes to the original uploaders. Anyone having any issues with pictures posted, please message for removal.