18-10-2021, 09:56 AM
ঘন্টার বিকট আওয়াজে ধড়মড় করে উঠে বসল ট্রেসি। পাশ থেকে আর্নেস্টাইন বলে উঠল, ‘খাবার সময় হয়ে গেছে!’
ট্রেসির কানে এল সেলের দরজাগুলো একের পর এক খুলে যাবার ধাতব আওয়াজ। ট্রেসি চুপচাপ শুয়ে রইল বিছানায়। তাকে এভাবে শুয়ে থাকতে দেখে লোলা বলল, ‘কি হল সখি, খেতে চলো...’
খাবারের কথা শুনেই যেন আরো অসুস্থ বোধ করতে লাগল। বলল, ‘আমার খিদে পায়নি।’
মুটকি পাউলিটা তা শুনে ফ্যাক করে হেসে উঠল। ‘হে হে, খিদে নেই তো কি হয়েছে, ওরা তোর খিদে আছে কি না তার ধার ধারে না। যেতে হবে মানে যেতে হবে। ঘন্টা যখন বেজেছে, তখন সবাইকে মেসে গিয়ে হাজির হতে হবে।’
নজরে পড়ল সামনের করিডর দিয়ে অন্যান্য কয়েদিরা লাইন করে চলেছে।
‘ভালোয় ভালোয় উঠে পড়ে চল, নয়তো ওরা এসে তুলে নিয়ে যাবে...’ আর্নেস্টাইন সাবধান করল। ট্রেসি মনে মনে বলল, ‘আমি যাচ্ছি না, আমার এখন নড়তেও ভালো লাগছে না।’
তার সেলের সাথীরা ঘর থেকে বেরিয়ে গিয়ে বাইরে লাইনে গিয়ে দাঁড়ালো। একটা বেঁটে মোটা মেট্রন এসে দেখে ট্রেসি তখনও বাঙ্কে শুয়ে। বাইরে থেকে খেঁকিয়ে উঠল, ‘এই... বেল বেজেছে, শুনতে পাসনি? চল্... বাইরে বেরো...’
ট্রেসি নিচু স্বরে বলে উঠল, ‘আমার খিদে পায়নি, আমি যাচ্ছি না।’
শুনে মেট্রনের চোখ অবিশ্বাসে বড়বড় হয়ে উঠল। দুড়দাড় করে সেলের মধ্যে ঢুকে ট্রেসির কাছে গিয়ে চিৎকার করে উঠল, ‘ওরে মাগী, নিজেকে কি ভাবছিস? রুম সার্ভিসের জন্য অপেক্ষা করছিস নাকি? চল্, লাইনে দাঁড়া। এই প্রথমবার বলে ছেড়ে দিলাম, এরপর দ্বিতীয়বার এরকম বেয়াদপী করলে শালি অন্ধকার কুঠুরীতে পাঠিয়ে দেব, বুঝছিস... আগে বাড়...’
না, বোঝে নি। বুঝতে চাইছে না আর এই যে ভাবে যা কিছু ঘটে চলেছে তার সাথে। অনেক কষ্টে নিজেকে টেনে তুলল বিছানা থেকে। তারপর আস্তে আস্তে সেলের বাইরে গিয়ে লাইনে কালো মেয়েটার পেছনেই দাঁড়ালো। “না চাইলেও কেন আমাকে...’ ‘চুপ!’ হিসিয়ে উঠল আর্নেস্টাইন, ‘লাইনে কথা বলার কোন নিয়ম নেই।’
সবাই মিলে লাইন করে দু-দুখানা সিকিউরিটির দরজা পেরিয়ে ওরা একটা বিশাল ঘরের মধ্যে এসে পৌছালো। ঘরটাতে সারি সারি কাঠের টেবিল আর বেঞ্চ পাতা। আর একদিকে একটা কাউন্টার টেবিল রয়েছে। সেখানে দুইজন কয়েদি দাঁড়িয়ে লাইনে থাকা বাকিদের খাবার পরিবেশন করে চলেছে। খাবার বলতে একটা টলটলে খিচুরী, সাথে একটা ল্যাবড়া, সেই সঙ্গে একটু দই আর হয় কফি নয়তো সিন্থেটিক ফলের জুস। একজনের পর আর একজন সেই কাউন্টারের সামনে দাঁড়াচ্ছে, আর তাকে বড় হাতা থেকে এক এক খাবলা তুলে টিনের থালায় ঢেলে দেওয়া হচ্ছে সেই খিচুরী। তারপর হাঁক পাড়ছে, ‘হয়ে গেছে, সরে যা, পরের জন এগিয়ে আয়...’
নিজের খাবারটা নিয়ে কোথায় যাবে ঠিক করতে পারছিলনা ট্রেসি। এদিক ওদিক তাকিয়ে সেই আর্নেস্টাইনকে খুজল সে। কিন্তু কোথায় যেন হাওয়া হয়ে গেছে মেয়েটা। তারপর নজর পড়ল লোলা আর পাউলিটার ওপর। ওদের দেখে সে ওখানে গিয়ে বসল ওদের পাশে। ওই টেবিলটাতে প্রায় জনা কুড়ি মেয়ে একসাথে বসে খাচ্ছে। খাচ্চে বলা ভুল, জন্তুর মত খাবারগুলো মুখের মধ্যে চালান করছে যেন। ট্রেসি নিজের প্লেটের দিকে তাকাতেই খাবার দেখে গাটা গুলিয়ে উঠল। ঠেলে পাশে সরিয়ে দিল খাবারের ডিসটাকে।
সাথে সাথে পাউলিটা ঝট করে ট্রেসির খাবারের ডিসটা তুলে নিয়ে নিমেশে সাফ করে দিল। ওকে কিছু বলারই দরকার পড়ল না।
লোলা বলে উঠল, ‘এই, তুই খাচ্চিস না কেন? না খেলে বাঁচবি কি করে?’
ট্রেসি মনে মনে হতাশ ভাবে বলল, ‘বাঁচতে চাইনা তো আর আমি! মরে যেতে চাই। এই মেয়েগুলো কি করে সহ্য করছে এখানে? কতদিন আছে এরা এখানে? মাস? বছর? তারপরই ওর মনে পড়ে গেল ওর সেলের বিছানার দৃশ্যটা। মনে পড়তেই ওর ইচ্ছা হল ওখানেই ডাক ছেড়ে কেঁদে ওঠে। অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে রাখল ট্রেসি। পাউলিটা বলল, ‘তুই খাচ্ছিস না দেখলে ওরা কিন্তু তোকে অন্ধ কুঠুরীতে পাঠিয়ে দেবে...’ ওর চোখ মুখ দেখে বুঝতে পারল ট্রেসি ব্যাপারটা ঠিক ধরতে পারে নি। তাই আবার বলল, ‘ওটা একটা ভিষন ছোট্ট একটা ঘর... প্রায় গর্ত বলা চলে। তোর একটুও ভালো লাগবে না ওখানে থাকতে...’ তারপর একটু ঝুঁকে ফিসফিস করে বলল, ‘তোর এখানে প্রথম, তাই তো? একটা উপদেশ দিই। এখানে পুরো ব্যাপারটা আর্নেস্টাইনের কথায় চলে। ওর সাথে ভালো হয়ে লেগে থাক, দেখবি তোর কোন কষ্ট থাকবে না।’
******
ট্রেসির কানে এল সেলের দরজাগুলো একের পর এক খুলে যাবার ধাতব আওয়াজ। ট্রেসি চুপচাপ শুয়ে রইল বিছানায়। তাকে এভাবে শুয়ে থাকতে দেখে লোলা বলল, ‘কি হল সখি, খেতে চলো...’
খাবারের কথা শুনেই যেন আরো অসুস্থ বোধ করতে লাগল। বলল, ‘আমার খিদে পায়নি।’
মুটকি পাউলিটা তা শুনে ফ্যাক করে হেসে উঠল। ‘হে হে, খিদে নেই তো কি হয়েছে, ওরা তোর খিদে আছে কি না তার ধার ধারে না। যেতে হবে মানে যেতে হবে। ঘন্টা যখন বেজেছে, তখন সবাইকে মেসে গিয়ে হাজির হতে হবে।’
নজরে পড়ল সামনের করিডর দিয়ে অন্যান্য কয়েদিরা লাইন করে চলেছে।
‘ভালোয় ভালোয় উঠে পড়ে চল, নয়তো ওরা এসে তুলে নিয়ে যাবে...’ আর্নেস্টাইন সাবধান করল। ট্রেসি মনে মনে বলল, ‘আমি যাচ্ছি না, আমার এখন নড়তেও ভালো লাগছে না।’
তার সেলের সাথীরা ঘর থেকে বেরিয়ে গিয়ে বাইরে লাইনে গিয়ে দাঁড়ালো। একটা বেঁটে মোটা মেট্রন এসে দেখে ট্রেসি তখনও বাঙ্কে শুয়ে। বাইরে থেকে খেঁকিয়ে উঠল, ‘এই... বেল বেজেছে, শুনতে পাসনি? চল্... বাইরে বেরো...’
ট্রেসি নিচু স্বরে বলে উঠল, ‘আমার খিদে পায়নি, আমি যাচ্ছি না।’
শুনে মেট্রনের চোখ অবিশ্বাসে বড়বড় হয়ে উঠল। দুড়দাড় করে সেলের মধ্যে ঢুকে ট্রেসির কাছে গিয়ে চিৎকার করে উঠল, ‘ওরে মাগী, নিজেকে কি ভাবছিস? রুম সার্ভিসের জন্য অপেক্ষা করছিস নাকি? চল্, লাইনে দাঁড়া। এই প্রথমবার বলে ছেড়ে দিলাম, এরপর দ্বিতীয়বার এরকম বেয়াদপী করলে শালি অন্ধকার কুঠুরীতে পাঠিয়ে দেব, বুঝছিস... আগে বাড়...’
না, বোঝে নি। বুঝতে চাইছে না আর এই যে ভাবে যা কিছু ঘটে চলেছে তার সাথে। অনেক কষ্টে নিজেকে টেনে তুলল বিছানা থেকে। তারপর আস্তে আস্তে সেলের বাইরে গিয়ে লাইনে কালো মেয়েটার পেছনেই দাঁড়ালো। “না চাইলেও কেন আমাকে...’ ‘চুপ!’ হিসিয়ে উঠল আর্নেস্টাইন, ‘লাইনে কথা বলার কোন নিয়ম নেই।’
সবাই মিলে লাইন করে দু-দুখানা সিকিউরিটির দরজা পেরিয়ে ওরা একটা বিশাল ঘরের মধ্যে এসে পৌছালো। ঘরটাতে সারি সারি কাঠের টেবিল আর বেঞ্চ পাতা। আর একদিকে একটা কাউন্টার টেবিল রয়েছে। সেখানে দুইজন কয়েদি দাঁড়িয়ে লাইনে থাকা বাকিদের খাবার পরিবেশন করে চলেছে। খাবার বলতে একটা টলটলে খিচুরী, সাথে একটা ল্যাবড়া, সেই সঙ্গে একটু দই আর হয় কফি নয়তো সিন্থেটিক ফলের জুস। একজনের পর আর একজন সেই কাউন্টারের সামনে দাঁড়াচ্ছে, আর তাকে বড় হাতা থেকে এক এক খাবলা তুলে টিনের থালায় ঢেলে দেওয়া হচ্ছে সেই খিচুরী। তারপর হাঁক পাড়ছে, ‘হয়ে গেছে, সরে যা, পরের জন এগিয়ে আয়...’
নিজের খাবারটা নিয়ে কোথায় যাবে ঠিক করতে পারছিলনা ট্রেসি। এদিক ওদিক তাকিয়ে সেই আর্নেস্টাইনকে খুজল সে। কিন্তু কোথায় যেন হাওয়া হয়ে গেছে মেয়েটা। তারপর নজর পড়ল লোলা আর পাউলিটার ওপর। ওদের দেখে সে ওখানে গিয়ে বসল ওদের পাশে। ওই টেবিলটাতে প্রায় জনা কুড়ি মেয়ে একসাথে বসে খাচ্ছে। খাচ্চে বলা ভুল, জন্তুর মত খাবারগুলো মুখের মধ্যে চালান করছে যেন। ট্রেসি নিজের প্লেটের দিকে তাকাতেই খাবার দেখে গাটা গুলিয়ে উঠল। ঠেলে পাশে সরিয়ে দিল খাবারের ডিসটাকে।
সাথে সাথে পাউলিটা ঝট করে ট্রেসির খাবারের ডিসটা তুলে নিয়ে নিমেশে সাফ করে দিল। ওকে কিছু বলারই দরকার পড়ল না।
লোলা বলে উঠল, ‘এই, তুই খাচ্চিস না কেন? না খেলে বাঁচবি কি করে?’
ট্রেসি মনে মনে হতাশ ভাবে বলল, ‘বাঁচতে চাইনা তো আর আমি! মরে যেতে চাই। এই মেয়েগুলো কি করে সহ্য করছে এখানে? কতদিন আছে এরা এখানে? মাস? বছর? তারপরই ওর মনে পড়ে গেল ওর সেলের বিছানার দৃশ্যটা। মনে পড়তেই ওর ইচ্ছা হল ওখানেই ডাক ছেড়ে কেঁদে ওঠে। অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে রাখল ট্রেসি। পাউলিটা বলল, ‘তুই খাচ্ছিস না দেখলে ওরা কিন্তু তোকে অন্ধ কুঠুরীতে পাঠিয়ে দেবে...’ ওর চোখ মুখ দেখে বুঝতে পারল ট্রেসি ব্যাপারটা ঠিক ধরতে পারে নি। তাই আবার বলল, ‘ওটা একটা ভিষন ছোট্ট একটা ঘর... প্রায় গর্ত বলা চলে। তোর একটুও ভালো লাগবে না ওখানে থাকতে...’ তারপর একটু ঝুঁকে ফিসফিস করে বলল, ‘তোর এখানে প্রথম, তাই তো? একটা উপদেশ দিই। এখানে পুরো ব্যাপারটা আর্নেস্টাইনের কথায় চলে। ওর সাথে ভালো হয়ে লেগে থাক, দেখবি তোর কোন কষ্ট থাকবে না।’
******