13-10-2021, 12:03 PM
(This post was last modified: 13-10-2021, 12:07 PM by kamonagolpo. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
(13-10-2021, 09:03 AM)Bichitravirya Wrote: কামনাগল্প দা উত্তর দিয়ে দিয়েছেন। আর ওটাই শেষ কথা হিসাবে প্রতিষ্ঠিতো ও হয়ে গেছে। সব প্রশ্নের উত্তর পেয়েছি কেবল একটি ছাড়া ----
ওই যে চার্লস ডারউইন এর প্রশ্নটা --- why sex? ঈশ্বর সেক্স সৃষ্টি করেছে তাই এটা পবিত্র । মানলাম। কিন্তু কেন সৃষ্টি করা হয়েছে? শারীরিক ভাবে মিলিত হয়েই পরবর্তী প্রজন্ম সৃষ্টি করতে হবে। কিন্তু কেন?
বাবান দা আর কামনাগল্প দা। দুজনের কাছেই এই প্রশ্নটা করলাম।
❤❤❤
এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন যে সেক্সের প্রয়োজন কি? শুধু এককোষী প্রানী নয় অন্য ধরনের বড় প্রানীও আছে যারা সেক্স ছাড়া বংশবিস্তার করতে পারে। কিন্তু বিবর্তন বা কোনো প্রজাতির সারভাইভালের জন্য সেক্স এর প্রয়োজন। সেক্স ছাড়া যদি বংশবিস্তার হয় তাহলে অপত্য শুধু তার জন্মদাতার বৈশিষ্ট্যই লাভ করে নতুন বৈশিষ্ট্য তার মধ্যে আসে না। সেক্সের ফলে পিতা ও মাতার ডিএনএ জুড়ে নতুন ডিএনএ তৈরি হয় যার ফলে দুটি আলাদা বংশের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য অপত্যের মধ্যে আসে। এটি বিবর্তন ও সারভাইভালের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। মাছেদের ক্ষেত্রে সেক্স শরীরের বাইরে হয়। মেয়ে মাছ জলের মধ্যে ডিম পাড়ে আর পুরুষ মাছ জলের মধ্যে ডিমগুলিকে নিষিক্ত করে। আবার কিছু প্রজাতির ক্ষেত্রে জলের মধ্যে স্ত্রী এবং পুরুষ জলের মধ্যেই ডিম্বাণু ও শুক্রাণু ছেড়ে দেয় ফলে এগুলি জলের মধ্যে মিলিত হয়ে ভ্রূণের সৃষ্টি করে।
যদি সিস্টেমের দিক থেকে বলেন সেক্স অসাধারন একটি প্রক্রিয়া যত জানবেন ও বুঝবেন মাথা ঘুরে যাবে। এখন এই প্রক্রিয়া একজনের পক্ষে করা সম্ভব নয় দুজন প্রয়োজন কিন্তু দুজনকে কিভাবে একসাথে আনা যাবে? তার জন্যই সেক্সুয়াল অ্যাট্রাকশনের প্রয়োজন। না হলে এই সিস্টেম টা ফেল হয়ে যাবে এবং পৃথিবীতে কোন জটিল জীবের অস্তিত্ব বিলুপ্ত হবে।
এই বিষয় নিয়ে চর্চা করলে অনেক কিছুই জানতে পারবেন। বেশিরভাগ পুরুষ কেন বড় স্তন ও নিতম্বযুক্ত মেয়েদের প্রতি আকৃষ্ট হয়? কারন হল এই প্রকার মেয়েদের গর্ভধারনের ক্ষমতা বেশি থাকে। আবার মেয়েরাও সুঠাম পেশীবহুল পুরুষদের কেন পছন্দ করে? কারন এই পুরুষের ঔরসে তার সন্তান হলে সেই সন্তানের সারভাইভাল পাওয়ার বেশি হবে। মূল উদ্দেশ্য হল জীবের ডিএনএ সংরক্ষন যাতে আমার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য আমার সন্তানদের মধ্য দিয়ে রয়ে যায়। এও এক রকমের অমরত্বের আকাঙ্খা।
জীবজগতে ইনসেস্ট প্রচুর পরিমানে দেখা যায়। কারন যদি কোন জায়গায় উপযুক্ত পুরুষ বা নারী না পাওয়া যায় তাহলে সন্তানরা তাদের পিতা মাতার সঙ্গেই মিলিত হয় বংশরক্ষার জন্য। তবে এই উপায়ে একই বংশের মধ্যে মিলন হওয়াতে ডিএনএ র মধ্যে নতুন চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য আসে না। ফলে শেষ অবধি সন্তানদের মধ্যে জেনেটিক ডিসঅর্ডার দেখা যায়। প্রাচীন মিশরে এমনকি ইউরোপেও বংশের ধনসম্পত্তি যাতে বেহাত না হয় তাই পরিবারের মধ্যে বিয়ে দেওয়া হত ফলে তাদের অনেকেই জেনেটিক ডিসঅর্ডার নিয়ে জন্মাত। ইনসেস্ট অল্প সময়ের জন্য হয়ত ঠিক আছে কিন্তু লং রানে এটি সমস্যা তৈরি করে। বাইবেলের ওল্ড টেস্টামেন্টে এরকম ইনসেস্টের কথা অনেক আছে। সে সময় পরিবারগুলি অনেক দূরে দূরে থাকত অনেক সময় উপযুক্ত পাত্র পাত্রী পাওয়া যেত না তাই পরিবারের সদস্যদেরই বংশরক্ষার দায়িত্ব নিতে হত। এর মধ্যে পবিত্র নোংরা কোন বিষয় নেই। পুরো বিষয়টিই প্র্যাকটিক্যাল দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখতে হবে। আদম আর ইভের সন্তানরা নিশ্চই নিজেদের মধ্যে মিলিত হয়েছিল না হলে পরবর্তী প্রজন্ম এল কি করে? কিন্তু এছাড়া আর কিই বা উপায় ছিল। আর তো কোন পরিবার ছিল না। তবে আদম আর ইভের গল্প কে আক্ষরিক ভাবে নেবেন না। এটা একটি অ্যানালজি। প্রকৃতপক্ষে এইভাবে মানুষের সৃষ্টি হয় নি।
প্রাচীন ভারতে অবৈধ সেক্সকে সেরকম কোন অপরাধ বলে মনে করা হত না। মহাভারতে আছে সত্যবতীর সাথে ঋষি পরাশরের অবৈধ মিলন হয় এবং সন্তান ব্যাসের জন্ম হয়। সত্যবতী পরে ভারতের অন্যতম রাজবংশে কুরুদের মহারানী হন। এবং ব্যাসদেব বিরাট ঋষি হয়ে পরবর্তীকালে মহাভারত রচনা করেন। কেউ এর জন্য তাঁদের গায়ে কালি ছেটায়নি বা তাঁদের জীবনেও কোন সমস্যা তৈরি হয়নি। সম্মান নিয়েই তাঁরা জীবিত ছিলেন।
সেক্স প্রকৃতির একটি সেরা দান। মানুষই একমাত্র প্রাণী যারা এটিকে পাপ পুণ্য বৈধ অবৈধ ভাল মন্দের সাথে জড়িয়ে অনর্থক জটিলতা তৈরি করেছে।