11-10-2021, 04:25 PM
সপ্তত্রিংশ পর্ব
প্রাণকৃষ্ণবাবুর বড়োছেলে রমেনের দ্বারা অন্তঃস্বত্তা সুচরিতার শ্লীলতাহানির কেসটা নাগরিক কমিটিতে রেফার করা হলো। এটাই মাধবপুর নাগরিক কমিটির প্রথম সালিশীসভা। খুব সূচারূভাবে প্রফেসর রতিকান্ত এবং ডক্টর স্বস্তিকা সভা পরিচালনা করলেন। মাত্র আধঘন্টার এই মিটিং-এ সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো, যে প্রাণকৃষ্ণবাবুর ছেলে রমেন সুচরিতার শ্লীলতাহানি ঘটিয়েছে এবং প্রাণকৃষ্ণবাবু এবং তার পরিবারের সকলে এই কাজে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মদত জুগিয়েছেন এবং অপরাধী রমেনকে পালাতে সাহায্য করেছেন। সুতরাং তিনি এবং তার পরিবারের সকলেই অনৈতিক কার্য্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত। অতএব তারা এই পাড়ায় বসবাসের অনুপযুক্ত; তাদের পাড়া ছেড়ে চলে যেতে হবে।
হাত তুলে রীতিমতো ভোটাভুটির মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো। এই সভায় লাল্টু চৌধুরি বা পার্টির কোনো পরিচিত মুখ উপস্থিত ছিলেন না। যদিও এই সভায় কাকে কখন কি বলতে হবে, কাকে পক্ষে ভোট দিতে হবে, কাকেই বা বিপক্ষে, সব স্ক্রীপ্ট রচিত হয়েছিলো জোনাল কমিটির অফিসে এবং সকলকে পাখিপড়া করিয়ে দেওয়ার দায়িত্বে ছিলেন লাল্টু। এ যেন ইন্দ্রের মতো, মেঘের আড়াল থেকে যুদ্ধ করা। সকলেই তার ভূমিকায় ভালোভাবে অভিনয় করেছিলো। ফলে নারীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় এলাকার সুধীজন সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক উপায়ে দোষীকে শাস্তি দিয়েছে, এই নির্যাসটাই দিকে দিকে প্রচারিত এবং প্রশংসিত হলো। মিডিয়াও ব্যাপারটাকে নিয়ে দু-পাঁচদিন খুব নাড়াচাড়া করলো। এখনকার মতো টক শো-এর নামে অপদার্থ রাজনীতিবিদ, অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার এবং খায় না গায়ে মাখে টাইপের বুদ্ধিজীবিদের নিয়ে সান্ধ্যবাসরের প্রচলন তখনকার দিনে ছিলো না, থাকলে সেটাও হয়ে যেতো। সবথেকে বড়ো কথা, কালিমুদ্দিন স্ট্রীটের পথে আরো দু’কদম এগিয়ে গেলেন লাল্টু চৌধুরি।
কিন্তু নারীর শ্লীলতাহানির শাস্তি দেওয়া তো তার উদ্দেশ্য নয়, তার আসলি ধান্দা প্রাণকৃষ্ণবাবুর বাড়ি এবং জমি জলের দরে হাতানো। প্রাণকৃষ্ণবাবু পড়লেন মহা ফাঁপড়ে, পাড়া ছেড়ে চলে যাওয়ার রায় যে নড়চড় হবে না তা তিনি বুঝতে পারলেন। এ যেনো সুপ্রীম কোর্টেরও বাড়া, সুপ্রীম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধেও রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করা যায়। অবশেষে তিনি ঠিক করলেন বাড়ী বেচেই দেবেন। ছ’ কাঠা কর্ণার প্লটের জমি সহ দোতলা বাড়ি, ভালোই দাম পাওয়া যাবে, তাই দিয়ে তিনি আরেকটু দক্ষিণের দিকে গিয়ে ফ্ল্যাট কিনে নেবেন। কিন্তু বাড়ী বেচতে গিয়েও বিভ্রাট; খদ্দের পান না, যদি বা পান, সঠিক দাম পান না। কারণ ততোদিনে সকলেই জেনে গেছে তাকে পাড়া থেকে উচ্ছেদের নির্দেশ দিয়েছে নাগরিক কমিটি, এবং এই নাগরিক কমিটি হলো সর্বশক্তিমান পার্টির মুখোশ। তাছাড়া তাদের কাছে এই সংবাদও সুচতুর ভাবে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে যে, এই জমি-বাড়ীর উপর নজর রয়েছে লাল্টু চৌধুরির, আর কে না জানে যে বাড়ী অথবা নারীর উপরে লাল্টু চৌধুরির নজর রয়েছে, তার দিকে চোখ দিলে, সে চোখ গালিয়ে দেওয়া হয়। কেই বা চায় জলে বাস করে কুমীরের সাথে বিবাদে জড়াতে।
প্রাণকৃষ্ণবাবুর বড়োছেলে রমেনের দ্বারা অন্তঃস্বত্তা সুচরিতার শ্লীলতাহানির কেসটা নাগরিক কমিটিতে রেফার করা হলো। এটাই মাধবপুর নাগরিক কমিটির প্রথম সালিশীসভা। খুব সূচারূভাবে প্রফেসর রতিকান্ত এবং ডক্টর স্বস্তিকা সভা পরিচালনা করলেন। মাত্র আধঘন্টার এই মিটিং-এ সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো, যে প্রাণকৃষ্ণবাবুর ছেলে রমেন সুচরিতার শ্লীলতাহানি ঘটিয়েছে এবং প্রাণকৃষ্ণবাবু এবং তার পরিবারের সকলে এই কাজে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মদত জুগিয়েছেন এবং অপরাধী রমেনকে পালাতে সাহায্য করেছেন। সুতরাং তিনি এবং তার পরিবারের সকলেই অনৈতিক কার্য্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত। অতএব তারা এই পাড়ায় বসবাসের অনুপযুক্ত; তাদের পাড়া ছেড়ে চলে যেতে হবে।
হাত তুলে রীতিমতো ভোটাভুটির মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো। এই সভায় লাল্টু চৌধুরি বা পার্টির কোনো পরিচিত মুখ উপস্থিত ছিলেন না। যদিও এই সভায় কাকে কখন কি বলতে হবে, কাকে পক্ষে ভোট দিতে হবে, কাকেই বা বিপক্ষে, সব স্ক্রীপ্ট রচিত হয়েছিলো জোনাল কমিটির অফিসে এবং সকলকে পাখিপড়া করিয়ে দেওয়ার দায়িত্বে ছিলেন লাল্টু। এ যেন ইন্দ্রের মতো, মেঘের আড়াল থেকে যুদ্ধ করা। সকলেই তার ভূমিকায় ভালোভাবে অভিনয় করেছিলো। ফলে নারীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় এলাকার সুধীজন সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক উপায়ে দোষীকে শাস্তি দিয়েছে, এই নির্যাসটাই দিকে দিকে প্রচারিত এবং প্রশংসিত হলো। মিডিয়াও ব্যাপারটাকে নিয়ে দু-পাঁচদিন খুব নাড়াচাড়া করলো। এখনকার মতো টক শো-এর নামে অপদার্থ রাজনীতিবিদ, অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার এবং খায় না গায়ে মাখে টাইপের বুদ্ধিজীবিদের নিয়ে সান্ধ্যবাসরের প্রচলন তখনকার দিনে ছিলো না, থাকলে সেটাও হয়ে যেতো। সবথেকে বড়ো কথা, কালিমুদ্দিন স্ট্রীটের পথে আরো দু’কদম এগিয়ে গেলেন লাল্টু চৌধুরি।
কিন্তু নারীর শ্লীলতাহানির শাস্তি দেওয়া তো তার উদ্দেশ্য নয়, তার আসলি ধান্দা প্রাণকৃষ্ণবাবুর বাড়ি এবং জমি জলের দরে হাতানো। প্রাণকৃষ্ণবাবু পড়লেন মহা ফাঁপড়ে, পাড়া ছেড়ে চলে যাওয়ার রায় যে নড়চড় হবে না তা তিনি বুঝতে পারলেন। এ যেনো সুপ্রীম কোর্টেরও বাড়া, সুপ্রীম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধেও রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করা যায়। অবশেষে তিনি ঠিক করলেন বাড়ী বেচেই দেবেন। ছ’ কাঠা কর্ণার প্লটের জমি সহ দোতলা বাড়ি, ভালোই দাম পাওয়া যাবে, তাই দিয়ে তিনি আরেকটু দক্ষিণের দিকে গিয়ে ফ্ল্যাট কিনে নেবেন। কিন্তু বাড়ী বেচতে গিয়েও বিভ্রাট; খদ্দের পান না, যদি বা পান, সঠিক দাম পান না। কারণ ততোদিনে সকলেই জেনে গেছে তাকে পাড়া থেকে উচ্ছেদের নির্দেশ দিয়েছে নাগরিক কমিটি, এবং এই নাগরিক কমিটি হলো সর্বশক্তিমান পার্টির মুখোশ। তাছাড়া তাদের কাছে এই সংবাদও সুচতুর ভাবে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে যে, এই জমি-বাড়ীর উপর নজর রয়েছে লাল্টু চৌধুরির, আর কে না জানে যে বাড়ী অথবা নারীর উপরে লাল্টু চৌধুরির নজর রয়েছে, তার দিকে চোখ দিলে, সে চোখ গালিয়ে দেওয়া হয়। কেই বা চায় জলে বাস করে কুমীরের সাথে বিবাদে জড়াতে।